M’Cheyne Bible Reading Plan
ধূপ জ্বালাবার বেদী
30 প্রভু মোশিকে বললেন, “বাবলা কাঠের একটা বেদী তৈরী করবে। ধূপদান হিসাবে এই বেদী ব্যবহার করবে। 2 বেদীটি হবে চারকোণা। বেদীর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হবে 1 হাত করে এবং উচ্চতা হবে 2 হাত। বেদীর এই শৃঙ্গগুলি বেদীর সঙ্গে একটি অখণ্ড টুকরো হবে। 3 ওটিকে খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দাও—এর উপরিভাগে, বেদীকে ঘিরে তার চার ধারে এবং বেদীর চারধারে তার শৃঙ্গগুলি সোনার নিকেল দাও। 4 সোনার নিকেলের নীচে বেদীর বিপরীত দুদিকে দুটো সোনার আংটা লাগাবে। এই আংটায় দণ্ড ঢুকিয়ে বেদীকে বয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। 5 দণ্ডও বাবলা কাঠের হবে এবং দণ্ডকে সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে। 6 ধূপবেদীটি বিশেষ পর্দার সামনে বসাও। ঐ পর্দাটি সাক্ষ্যসিন্দুকের ওপর যে আচ্ছাদন আছে তার সামনে থাকবে। এটা সেই স্থান সেখানে আমি তোমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব।
7 “প্রতি সকালে হারোণ যখন বাতিগুলো ঠিক করতে আসবে তখন সে বেদীতে সুগন্ধি ধূপ জ্বালাবে। 8 সন্ধ্যায় যখন সে প্রদীপ জ্বালাতে আসবে তখনও তাকে বেদীতে ধূপ জ্বালাতে হবে। এখন থেকে, এই ধূপ নিয়মিতভাবে প্রভুর সামনে অর্পণ করতে হবে। 9 এই বেদীর ওপর অন্য কোন ধূপ অথবা হোমবলি উৎসর্গ করবে না। কোন রকম শস্য নৈবেদ্য ও পেয় নৈবেদ্যর জন্য এই বেদী ব্যবহার করা হবে না।
10 “বছরে একবার হারোণ প্রভুর প্রতি একটি বিশেষ পশু উৎসর্গ করবে। মানুষের পাপমোচনের উদ্দেশ্যে সে পাপ বলির রক্ত দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করবে। পাপমোচনের নৈবেদ্যর রক্ত দিয়ে এই প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। এটি প্রভুর কাছে সবচেয়ে পবিত্র। এই দিনটি চিহ্নিত হবে প্রায়শ্চিত্তের দিন হিসেবে। এই দিনটি হবে প্রভুর কাছে একটি বিশেষ দিন।”
মন্দিরের কর
11 প্রভু মোশিকে বললেন, 12 “ইস্রায়েলের জনসংখ্যা গণনা করো তাহলে বুঝতে পারবে কতজন ইস্রায়েলে বসবাস করে। তাদের প্রত্যেকে প্রভুকে কিছু না কিছু অর্থ দান করবে। যদি প্রত্যেকে এটা মেনে চলে তাহলে তাদের জীবনে কোন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে না। 13 এই লোকদের প্রত্যেককে আমলাতান্ত্রিক মান অনুযায়ী 1/2 শেকেল দিতে হবে। এই আমলাতান্ত্রিক শেকেলের ওজন হল 20 গেরা। এই 1/2 শেকেল প্রভুর প্রতি একটি নৈবেদ্য। 14 কুড়ি বছর হলে তাকে গণনার আওতায় আনা হবে। এবং গণনার আওতায় চলে আসা প্রত্যেকে এই নৈবেদ্য দেবে প্রভুর প্রতি। 15 বড় লোকরা 1/2 শেকেলের বেশী দেবে না, আবার গরীবরা 1/2 শেকেলের কম দেবে না। তাদের জীবনের প্রায়শ্চিত্তের জন্য প্রত্যেককে অবশ্যই সমপরিমাণ নৈবেদ্য প্রভুকে অর্পণ করতে হবে। 16 প্রায়শ্চিত্ত নৈবেদ্যর সমস্ত অর্থ জমা কর এবং ঐ অর্থ সমাগম তাঁবুর যাবতীয় খরচের জন্য ব্যবহার কর। এই নৈবেদ্য এরকমভাবে প্রভুকে তাঁর লোকদের কথা মনে রাখাবার জন্য। তারা তাদের নিজেদের জীবনের জন্য মূল্য দেবে।”
পরিষ্কার করার পাত্র
17 প্রভু মোশিকে বললেন, 18 “পিতলের একটি পায়া তৈরী করে তার ওপর একটি পিতলের পাত্র বসাবে। এই পাত্রে অন্য সব কিছু পরিষ্কার করে ধোয়া হবে। সমাগম তাঁবু ও বেদীর মাঝখানে ঐ পাত্র বসিয়ে তাতে জল ভর্ত্তি করবে। 19 হারোণ ও তার পুত্ররা ঐ পাত্রের জলে তাদের হাত পা ধোবে। 20 যখনই তারা সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করবে অথবা প্রভুর কাছে নৈবেদ্য পোড়াবার জন্য বেদীর কাছে আসবে তখনই তাদের ঐ পাত্রের জল দিয়ে নিজেদের পরিষ্কার করতে হবে যাতে তারা মারা না যায়। এটা মেনে চললে তারা মারা যাবে না। 21 যদি তারা মরতে না চায় তাহলে এই বিধি তাদের মেনে চলতে হবে। এই বিধি হারোণ এবং তার উত্তরপুরুষদের চিরকাল মেনে চলতে হবে।”
অভিষেকের তেল
22 প্রভু মোশিকে বললেন, 23 “সুগন্ধি মশলা খুঁজে আনো। 12 পাউণ্ড ওজনের তরল মস্তকি, 6 পাউণ্ড ওজনের সুগন্ধি দারুচিনি, 6 পাউণ্ড ওজনের সুগন্ধি এবং 24 বারো পাউণ্ড ওজনের সূক্ষ্ম ধরণের দারুচিনি নিয়ে এসো। এগুলিকে প্রচলিত শেকেলের মান অনুযায়ী ওজন কর। 1 গ্যালন জলপাইয়ের তেলও এনো।
25 “সুগন্ধি অভিষেকের তেল তৈরী করবার জন্য এই জিনিসগুলি বিশেষজ্ঞের মতো মেশাও। 26 সমাগম তাঁবুর ওপর ও সাক্ষ্যসিন্দুকের ওপর ঐ তেল ছিটিয়ে দাও। এর ফলে ঐ জিনিসগুলোর বিশেষত্ব প্রকাশ পাবে। 27 টেবিল এবং টেবিলের ওপর রাখা প্লেটে ওই তেল ছিটোবে। দীপদান ও তার সকল পাত্র ও ধূপবেদীতেও ঐ তেল ছিটোবে। 28 হোমবলির বেদীতে এবং হোমবলির জন্য ব্যবহৃত সমস্ত পাত্রে এবং হাত পা ধোয়ার সেই পাত্র ও পাত্রের নীচে রাখা পায়াতেও ঐ তেল ছিটিয়ে দাও। 29 প্রভুর সেবার জন্য এই সমস্ত জিনিসগুলোকে তোমাকে পবিত্র করে তুলতে হবে। তাহলেই তারা পবিত্র হয়ে উঠবে। এই জিনিসগুলোকে অন্য কিছু স্পর্শ করলে সেগুলোও পবিত্র হয়ে উঠবে।
30 “যাজকরূপে বিশেষ উপায়ে আমাকে সেবার জন্য হারোণ ও তার পুত্রদের গায়েও ঐ তেল ছিটিয়ে দেবে। 31 ইস্রায়েলের লোকদের বলো যে এই অভিষেকের তেল হল পবিত্র। ইস্রায়েলের লোকদের বলো যে এই তেল অবশ্যই তাদের বংশ পরম্পরায় একমাত্র আমার জন্যই ব্যবহৃত হবে। 32 সাধারণ সুগন্ধি হিসেবে কেউ যেন এই তেল ব্যবহার না করে। এই সূত্র অনুসারে অন্য কোন তেল তৈরী করবে না। এই তেল পবিত্র এবং তোমাদের কাছে এর বিশেষ অর্থ আছে। 33 যদি কেউ এই পবিত্র তেল সাধারণ সুগন্ধি হিসাবে তৈরী করে অথবা এটি কারো ওপর আরোপ করে, তার লোকদের থেকে তাকে বিতাড়িত করে দেওয়া হবে।”
ধূপ
34 এরপর প্রভু মোশিকে বললেন, “এই সুগন্ধি মশলাগুলো জোগাড় করে আনো: ধুনো, নখী, গুগ্গুল, কুন্দুরু। মনে রাখবে প্রত্যেকটি মশলার পরিমাণ হবে সমান। 35 পরিষ্কার লবনের সঙ্গে এই সুগন্ধি মশলাগুলো মেশাও এবং সুগন্ধি তৈরী করার মতো সুগন্ধি ধূপ বানাও। এই প্রক্রিয়া ধূপকে খাঁটি এবং পবিত্র করবে। 36 খানিকটা পাউডারের মতো ধূপের গুঁড়ো করে নিয়ে সেই মিহি করা ধূপের গুঁড়ো যে সমাগম তাঁবুতে আমি তোমাদের দর্শন দেব তার মধ্যে রাখা সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে রাখবে। বিশেষ প্রয়োজনেই শুধুমাত্র এই ধূপের গুঁড়ো ব্যবহার করবে। 37 প্রভুর জন্য বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এর ব্যবহার হবে না। 38 সুগন্ধি ধূপের গন্ধ অনুভব করতে কেউ যদি নিজের জন্য এই ধূপের গুঁড়ো নিয়ে যায় তাহলে সে সমাজচ্যূত হবে।”
একজন জন্মান্ধকে যীশুর আরোগ্যদান
9 যীশু পথে হাঁটছিলেন, সেই সময় তিনি একজন লোককে দেখতে পেলেন যে জন্ম থেকেই অন্ধ। 2 যীশুর অনুগামীরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “গুরু, কার পাপে এ অন্ধ হয়ে জন্মেছে? এর পাপে অথবা এর বাবা-মার পাপে?”
3 যীশু বললেন, “এই লোকটির বা এর বাবা-মার পাপের জন্য যে এ অন্ধ হয়ে জন্মেছে তা নয়, বরং এই ব্যক্তি অন্ধ হয়ে জন্মেছে যাতে আমি যখন তাকে সুস্থ করি, তখন লোকে ঈশ্বরের শক্তির প্রকাশ দেখতে পায়। 4 যতক্ষণ দিন আছে ততক্ষণ যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর কাজ আমাদের করে যেতে হবে। যখন রাত আসবে তখন আর কেউ কাজ করতে পারবে না। 5 আমি যতক্ষণ এই জগতে আছি, আমিই এই জগতের আলো।”
6 এই কথা বলার পর তিনি মাটিতে থুতু ফেললেন। আর মুখের সেই লালা দিয়ে মণ্ড তৈরী করে, তা অন্ধ লোকটির চোখে লাগিয়ে দিলেন। 7 এরপর যীশু সেই অন্ধ লোকটিকে বললেন, “শীলোহ সরোবরে গিয়ে ধুয়ে ফেল।” (শীলোহ অনুবাদ করলে এই নামের অর্থ “প্রেরিত।”) তখন সে গিয়ে ধুয়ে ফেলল আর দৃষ্টিশক্তি লাভ করে ফিরে এল।
8 তখন সেই লোকটির প্রতিবেশীরা ও যারা তাকে ভিক্ষা করতে দেখত তারা বলল, “এ কি সেই লোক নয় যে বসে বসে ভিক্ষা করত?”
9 কেউ কেউ বলল, “হ্যাঁ, সেই তো।” আবার অন্যরা বলল, “না, এই লোকটা তারই মতো দেখতে।”
কিন্তু সে বলল, “আমি সেই একই লোক।”
10 তখন তারা তাকে বলল, “তুমি কি করে দৃষ্টিশক্তি লাভ করলে?”
11 সে এর উত্তরে বলল, “যীশু নামের লোকটি মণ্ড তৈরী করে, আমার চোখে তা লাগিয়ে দিলেন, আর বললেন শীলোহ সরোবরে যাও ও তোমার চোখ ধুয়ে ফেল। তখন আমি গেলাম ও ধুয়ে ফেললাম আর তখনই দৃষ্টিশক্তি লাভ করলাম।”
12 তারা তাকে বলল, “সেই যীশু কোথায়?”
সে বলল, “আমি জানি না।”
যে লোকটিকে যীশু আরোগ্যদান করলেন ইহুদীরা তাকে প্রশ্ন করল
13 যে লোকটি আগে অন্ধ ছিল তাকে তারা ফরীশীদের কাছে নিয়ে গেল। 14 যে দিন যীশু মণ্ড তৈরী করে ঐ লোকটির চোখে লাগিয়ে তাকে দৃষ্টিশক্তি দান করেন, সে দিনটি ছিল বিশ্রামবার। 15 তাই ফরীশীরা আবার তাকে জিজ্ঞেস করল, “তুমি কিভাবে তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলে?”
লোকটি উত্তর দিল, “তিনি মণ্ড তৈরী করে আমার চোখে লাগিয়ে দিলেন, আমি চোখ ধুয়ে ফেলবার পর দেখতে পেলাম।”
16 ফরীশীদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, “এই লোক ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে নি, কারণ এ বিশ্রামবারের নিয়ম মানে না।”
আবার অন্যরা বলল, “একজন পাপী কিভাবে এইসব অলৌকিক কাজ করতে পারে?” তাই এই নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিল।
17 এরপর ইহুদী নেতারা অন্ধ লোকটিকে আবার জিজ্ঞেস করল, “যে লোকটি তোমার দৃষ্টিশক্তি দিয়েছে, তার বিষয়ে তুমি কি বল?”
লোকটি বলল, “তিনি একজন ভাববাদী।”
18 লোকটির বাবা-মাকে না ডাকা পর্যন্ত ইহুদীরা বিশ্বাস করতে চাইল না যে, সে অন্ধ ছিল আর এখন দৃষ্টিশক্তি লাভ করেছে। 19 তারা তার বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করল, “এই কি তোমাদের সেই ছেলে যার বিষয়ে তোমরা বলে থাক যে, সে অন্ধ হয়ে জন্মেছে? তাহলে এ কিভাবে এখন দেখতে পাচ্ছে?”
20 এর উত্তরে তার বাবা-মা বলল, “আমরা জানি এ আমাদের ছেলে, আর এ অন্ধই জন্মেছিল। 21 কিন্তু এখন কিভাবে দেখতে পাচ্ছে আমরা জানি না, আর এও জানি না যে কে একে দৃষ্টিশক্তি দিয়েছেন। একেই জিজ্ঞেস করুন! এর যথেষ্ট বয়স হয়েছে, নিজের বিষয় নিজে ভালোই বলতে পারবে।” 22 ইহুদী নেতাদের ভয়ে, তার বাবা-মা এই কথা বলল। কারণ ইহুদী নেতারা আগেই স্থির করেছিল যে কেউ যদি যীশুকে মশীহ বলে স্বীকার করে, তবে সে প্রার্থনা সভা থেকে বিতাড়িত হবে। 23 এ জন্যই তার বাবা-মা বলেছিল, “এর যথেষ্ট বয়স হয়েছে, আপনারা একেই জিজ্ঞেস করুন।”
24 তাই যে অন্ধ ছিল, ইহুদী নেতারা তাকে দ্বিতীয় বার ডেকে বলল, “ঈশ্বরকে মহিমা প্রদান কর। সত্য বল, আমরা জানি ঐ লোকটা পাপী।”
25 তখন যে অন্ধ ছিল সে বলল, “তিনি পাপী কি না তা আমি জানি না। আমি কেবল একটা বিষয় জানি, যে আমি অন্ধ ছিলাম, কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি।”
26 তখন ইহুদী নেতারা তাকে বলল, “সে তোমাকে কি করেছিল? সে কিভাবে তোমাকে দৃষ্টিশক্তি দিল?”
27 সে তাদের বলল, “আমি আগেই তোমাদের বলেছি, কিন্তু তোমরা আমার কথা শোন নি। তবে আবার কেন শুনতে চাইছ? তোমরাও কি তাঁর শিষ্য হতে চাও?”
28 তখন তারা তাকে তাচ্ছিল্য করে বলল, “তুই তার শিষ্য, কিন্তু আমরা মোশির শিষ্য। 29 আমরা জানি ঈশ্বর মোশির সঙ্গে কথা বলেছিলেন, কিন্তু এই লোকটা কোথা থেকে এসেছে তা আমরা জানি না।”
30 এর জবাবে লোকটি তাদের বলল, “কি আশ্চর্যের বিষয় যে, তিনি কোথা থেকে এসেছেন তা আপনারা জানেন না অথচ তিনি আমায় দৃষ্টিশক্তি দান করলেন। 31 আমরা জানি যে ঈশ্বর পাপীদের কথা শোনেন না। কিন্তু ঈশ্বর তাঁর কথা শোনেন যে ঈশ্বরের উপাসনা করে এবং ঈশ্বর যা চান তাই করে। 32 একজন জন্মান্ধকে কেউ যে দৃষ্টিশক্তি দান করেছে, একথা কেউ কোন দিন শোনে নি। 33 ঐ মানুষটি যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে না আসতেন তবে তিনি কিছুই করতে পারতেন না।”
34 এর উত্তরে তারা তাকে বলল, “তুই তো পাপেই জন্মেছিস! আর তুই কিনা আমাদের শিক্ষা দিতে চাইছিস?” তারপর তারা তাকে তাড়িয়ে দিল।
আত্মিক অন্ধত্ব
35 যীশু শুনতে পেলেন যে ইহুদী নেতারা তাকে সমাজ-গৃহ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তখন যীশু তার দেখা পেয়ে তাকে বললেন, “তুমি কি মানবপুত্রের ওপর বিশ্বাস কর?”
36 সে উত্তর দিল, “মহাশয়, তিনি কে? আমায় বলুন, আমি যেন তাঁকে বিশ্বাস করতে পারি।”
37 যীশু তাকে বললেন, “তুমি তাঁকে দেখেছ আর তিনিই এখন তোমার সঙ্গে কথা বলছেন।”
38 তখন সে বলল, “প্রভু, আমি বিশ্বাস করছি।” এবং সে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে উপাসনা করল।
39 যীশু বললেন, “বিচার করতে আমি এ জগতে এসেছি। আমি এসেছি যাতে যারা দেখতে পায় না তারা দেখতে পায়, আর যারা দেখতে পায় তারা যেন অন্ধে পরিণত হয়।”
40 ফরীশীদের মধ্যে কয়েকজন যারা যীশুর সঙ্গে ছিল, তারা একথা শুনে তাঁকে বলল, “নিশ্চয়ই আপনি বলতে চান নি যে আমরাও অন্ধ?”
41 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা যদি অন্ধ হতে তাহলে তোমাদের কোন পাপই হত না। কিন্তু তোমরা এখন বলছ আমরা দেখতে পাচ্ছি, তাই তোমাদের পাপ রয়ে গেছে।”
অপরকে একটি ঋণ পেতে সাহায্য করবার বিপদসমূহ
6 পুত্র, অপরের ঋণের জন্য কখনও দায়ী থেকো না। অন্য কোন ব্যক্তি তার ঋণ শোধ করতে না পারলে তুমি কি তাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছ? 2 তাহলে তুমি ফেঁসে গিয়েছ। তুমি নিজের প্রতিশ্রুতি জালেই জড়িয়ে পড়েছ। 3 তুমি নিজেকে ঐ ব্যক্তিটির ক্ষমতার অধীনে রেখেছ। শীঘ্র তার কাছে গিয়ে নিজেকে মুক্ত কর। তার ঋণের বোঝা থেকে তোমাকে মুক্ত করবার জন্য তার কাছে অনুরোধ জানাও। 4 বিশ্রাম করো না এবং ঘুমিয়ো না। 5 হরিণের মত শিকারীর ফাঁদ থেকে পালিয়ে এসো। জাল কেটে পালিয়ে যাওয়া পাখির মতো নিজেকে মুক্ত কর।
অলস হওয়ার বিপদ
6 অলস মানুষ, তোমাদের পিঁপড়েদের মতো হওয়া উচিৎ। দেখো, পিঁপড়েরা কি করে। পিঁপড়েদের কাছ থেকে শেখো এবং জ্ঞানী হও। 7 পিঁপড়েদের কোনও মালিক নেই, শাসক নেই, নেতা নেই। 8 কিন্তু গ্রীষ্মকালে পিঁপড়েরা তাদের যাবতীয় খাবার সংগ্রহ করে। ঐ খাদ্য তারা বাঁচিয়ে রাখে এবং শীতের সময়ও তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার থাকে।
9 অলস মানুষ, আর কতক্ষণ তুমি ঘুমিয়ে থাকবে? তোমার শয্যায় বিশ্রাম নেওয়ার থেকে কখন তুমি উঠবে? 10 একজন অলস ব্যক্তি বলে, “আমাকে কিছুক্ষণের জন্য ঘুমোতে দাও এবং একটু বিশ্রাম নিতে দাও।” 11 তার অলসতার ফলস্বরূপ, একজন চোর যেমন সব কিছু চুরি করে নেয় সে রকম ভাবে তার ওপর দারিদ্র্য আসবে! অচিরেই সে কপর্দকহীন হয়ে পড়বে!
পাপী লোকরা
12 একজন পাপী এবং অকর্মণ্য ব্যক্তি মিথ্যে কথা বলে এবং খারাপ কাজ করে। 13 সে চোখ টিপে এবং হাত ও পায়ের সাহায্যে নানা ধরণের ইঙ্গিত করে লোকদের ঠকায়। 14 ঐ ব্যক্তিটি দুষ্ট। সে সর্বদাই অপরের বিরুদ্ধে দুষ্ট পরিকল্পনা করে। সে সদাসর্বদা অশান্তি সৃষ্টি করে। 15 কিন্তু সে শাস্তি পাবে। আকস্মিক বিপর্যয় তার ওপর আসবে। অকস্মাৎ সে ধ্বংস হবে! এবং তাকে সাহায্য করবার কেউ থাকবে না!
সাতটি জিনিষ যা প্রভু ঘৃণা করেন
16 প্রভু, সাতটি নয়, ছয়টি জিনিসকে ঘৃণা করেন:
17 যে চোখগুলো একজন লোকের গর্ব দেখায়,
যে জিহ্বা মিথ্যে কথা বলে,
হাতগুলো যেগুলো নির্দোষ লোকদের হত্যা করে,
18 হৃদয়সমূহ, যারা অন্যদের বিরুদ্ধে অনিষ্ট পরিকল্পনা করে,
পা, যেগুলো কু-কাজ করতে ছোটে,
19 যে ব্যক্তি আদালতে মিথ্যা সাক্ষী দেয় এবং যা সত্যি নয় তাই বলে,
যে ব্যক্তি ভাইদের মধ্যে তর্কাতর্কির কারণ ঘটায়।
20 পুত্র আমার, তোমার পিতার আদেশসমূহ শোন। তোমার মাতার শিক্ষাগুলি ভুলো না। 21 সদা তাঁদের কথা স্মরণ কোরো। তোমার অভিভাবকদের আদেশ তোমার কন্ঠে জড়িয়ে রাখো। তোমার হৃদয়ে লিখে রাখো। 22 যেখানেই যাও তাঁদের শিক্ষামালা তোমাকে পথ দেখাবে। এমনকি তুমি যখন শুয়ে থাকবে তখনও ঐ উপদেশগুলি তোমার ওপর নজর রাখবে। জেগে ওঠার পর তোমার সঙ্গে সেগুলো কথা বলবে এবং তোমাকে সঠিক পথে চালিত করবে।
23 তোমার অভিভাবকদের আদেশ এবং শিক্ষা আলোর মত তোমাকে পথ দেখাবে। সেগুলি তোমাকে সংশোধন করবে এবং সঠিক পথ চেনার ক্ষমতা প্রদান করবে। 24 তাঁদের শিক্ষাসমূহ তোমাকে একজন নষ্ট স্ত্রীলোকের কাছে যাওয়া থেকে নিবৃত্ত করবে। ঐ শিক্ষাগুলি তোমাকে, যে নারী তার স্বামীকে পরিত্যাগ করেছে, তার মধুর বচন থেকে নিরাপদে রাখবে। 25 সেই পরস্ত্রী অসাধারণ রূপসী হতে পারে। কিন্তু তার সৌন্দর্য্যের জন্য তোমার হৃদয়ে কাম-লালসা রেখো না। তার নয়নবান যেন তোমাকে ফাঁদে না ফেলতে পারে। 26 একজন বারবণিতার জন্য হয়তো তোমাকে একটি রুটির মূল্য দিতে হবে। কিন্তু অন্য লোকের স্ত্রী তোমার প্রাণসংহারিণী হয়ে উঠতে পারে! 27 যে ব্যক্তি আগুনের খুব কাছে যায় সে তার জামাকাপড় ঐ আগুনে পোড়ায়। 28 জ্বলন্ত কয়লায় পা দিলে পা নিশ্চিত পুড়বে। 29 যে ব্যক্তি পরস্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে লিপ্ত হয় তার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ঐ ব্যক্তি শাস্তি ভোগ করবে।
30-31 ক্ষুধার্ত ব্যক্তি খাদ্য চুরি করতে পারে। চুরি করার সময় ধরা পড়লে, সে যা চুরি করেছে তার সাতগুণ মূল্য তাকে দিতে হবে! ঐ মূল্য দিতে গিয়ে হয়তো সে সর্বস্বান্ত হবে! কিন্তু যারা তার প্রকৃত অবস্থা বোঝে তারা তার প্রতি শ্রদ্ধা হারাবে না। 32 কিন্তু যে ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় সে নির্বোধ। সে তার নিজের পতন ডেকে আনছে এবং নিজেকেই ধ্বংস করছে! 33 মানুষ তার সম্পর্কে শ্রদ্ধা হারাবে। সে নিজে ওই লজ্জা থেকে কোন দিন পরিত্রাণ পাবে না। 34 ওই ব্যভিচারিণীর স্বামী হিংসা ও ক্রোধে উন্মত্ত হবে। সে যখন তার স্ত্রীর প্রেমিকের প্রতি প্রতিশোধ নেবে তখন সে করুণা দেখাবে না। 35 যত অর্থ, যত ধনসম্পদই তাকে দেওয়া হোক্ না কেন তার ক্রোধ প্রশমিত হবে না!
স্বাধীন হয়ে থেকো
5 খ্রীষ্ট আমাদের স্বাধীন করেছেন, যেন আমরা স্বাধীনভাবে থাকতে পারি; তাই শক্ত হয়ে দাঁড়াও, দাসত্বে ফিরে যেও না। 2 শোন! আমি পৌল বলছি। যদি তোমরা সুন্নতের মাধ্যমে আবার বিধি-ব্যবস্থায় ফিরে যাও, তবে তোমরা খ্রীষ্টেতে লাভবান হবে না। 3 আবার আমি প্রত্যেক মানুষকে সতর্ক করে দিচ্ছি। তোমরা যদি সুন্নত করাতে চাও, তবে বিধি-ব্যবস্থার সবটাই তোমাদের পালন করতে হবে। 4 তোমরা যারা বিধি-ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ গণিত হতে চেষ্টা করছ, তারা খ্রীষ্টের কাছ থেকে নিজেদের আলাদা করেছ এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়েছ। 5 কিন্তু আমরা বিশ্বাসের দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ বলে গণিত হবার জন্য অধীর আগ্রহে আত্মায় অপেক্ষা করছি। 6 কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে যুক্ত থাকলে সুন্নত হওয়া বা না হওয়া এ প্রশ্ন মূল্যহীন; কিন্তু দরকারি বিষয় হল বিশ্বাস, যে বিশ্বাস ভালবাসার মধ্য দিয়ে কাজ করে।
7 তোমরা বেশ ভালই দৌড়োচ্ছিলে, তাহলে সত্যের বাধ্য হয়ে চলতে কে তোমাদের বাধা দিল? 8 যিনি তোমাদের আহ্বান করেছেন, সেই ঈশ্বরের কাছ থেকে এই ধরণের প্ররোচনা আসে নি। 9 সাবধান হও! “সামান্য একটু খামির গোটা ময়দার তালকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলে!” 10 তোমাদের জন্য প্রভুতে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে যে তোমরা আমার শিক্ষা ছাড়া ভিন্ন কোন শিক্ষার দিকে ফিরবে না; কিন্তু যে লোক তোমাদের বিরক্ত করছে, সে যেই হোক্ না কেন, শাস্তি সে পাবেই।
11 আমার ভাই ও বোনেরা, যদি আমি এখনও সুন্নতের প্রয়োজন সম্বন্ধে শিক্ষা নিই, তবে আমি এখনও এতো নির্যাতন ভোগ করছি কেন? এবং আমি সুন্নতের প্রয়োজন সম্বন্ধে যদি এখনও বলি তাহলে ক্রুশের কথা বলতে কোন সমস্যাই হত না। 12 যাঁরা তোমাদের অস্থির করে তুলছে, আমি চাই তারা যেন নিজেদের ছিন্নাঙ্গও করে।
13 আমার ভাই ও বোনেরা, স্বাধীন মানুষ হবার জন্যই ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন, কেবল দেখ তোমাদের পাপ প্রবৃত্তিকে তৃপ্তি দিয়ে সেই স্বাধীনতার সুযোগ নিও না, বরং প্রেমে একে অপরের দাস হও। 14 যেহেতু সমস্ত বিধি-ব্যবস্থাকে এক করলে এটাই দাঁড়ায়: “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত করে ভালবাস।”(A) 15 কিন্তু তোমরা যদি নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি, ছেঁড়াছেড়ি কর, তবে সাবধান! যেন তোমরা একে অপরের দ্বারা ধ্বংস না হও।
মানব প্রকৃতি এবং আত্মা
16 তাই আমি বলি যে, তোমরা সেই আত্মার পরিচালনায় চল, তাহলে তোমরা আর তোমাদের পাপ প্রকৃতির ইচ্ছা পূর্ণ করবে না। 17 কারণ আমাদের পাপ প্রকৃতি যা চায়, তা আত্মার বিরুদ্ধে এবং আত্মা যা চায় তা পাপ প্রকৃতির ইচ্ছার বিরুদ্ধে। এরা পরস্পরের বিরোধী, ফলে তোমরা যা চাও তা করতে পার না। 18 কিন্তু তোমরা যদি আত্মা দ্বারা পরিচালিত হও তবে তোমরা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে নও।
19 পাপ প্রবৃত্তির কাজগুলি স্পষ্ট: সেগুলি হল ব্যভিচার, অশুচিতা, স্বেচ্ছাচারিতা, 20 প্রতিমা পূজা, ডাইনি বিদ্যা, ঘৃণা, স্বার্থপরতা, হিংসা, ক্রোধ, নিজেদের মধ্যে বিতর্ক, মতভেদ, দলাদলি, ঈর্ষা, 21 মাতলামি, লাম্পট্য আর একই ধরণের অন্য অপরাধ। এর বিরুদ্ধে তোমাদের সাবধান করে দিচ্ছি যেমন এর আগেও করেছি। যারা এইসব কুকাজ করবে তাদের ঈশ্বরের রাজ্যে জায়গা হবে না। 22 কিন্তু আত্মার ফল হল ভালবাসা, আনন্দ, শান্তি, ধৈর্য্য, দয়া, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা ও আত্মসংযম। 23 এই সবের বিরুদ্ধে কোন বিধি-ব্যবস্থা নেই। 24 যারা যীশু খ্রীষ্টে রয়েছে, তারা তাদের পাপ প্রকৃতিকে কামনা বাসনা সমেত ক্রুশে বিদ্ধ করেছে, অর্থাৎ তাদের পুরানো জীবনের সব মন্দ লালসা ও প্রবৃত্তি ত্যাগ করেছে। 25 সুতরাং আত্মাই যখন আমাদের নতুন জীবনের উৎস তখন এস আমরা আত্মার অধীনে চলি। 26 এস আমরা যেন অযথা অহঙ্কার না করি, পরস্পরকে জ্বালাতন ও হিংসা না করি।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International