Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যাত্রা 29

যাজক নিয়োগের উৎসব

29 প্রভু মোশিকে বললেন, “এখন আমি তোমাকে বলব আমার সেবায় বিশেষ যাজক হিসেবে নিয়োগ করার জন্য হারোণ ও তার পুত্রদের কি কি করতে হবে। একটি নির্দোষ ছোট বলদ ও দুটি মেষশাবক জোগাড় করে আনো। তারপর উৎকৃষ্ট মানের গমের আটা থেকে খামিরবিহীন রুটি তৈরী করো এবং একই আটা বা ময়দা দিয়ে জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে পিঠে তৈরী করবে। তেলে ভাজা সরুচাকলী পিঠেও বানাবে। এই রুটি ও পিঠেগুলি ঝুড়িতে ভরবে। এবার এই ঝুড়িটি এবং ষাঁড় ও মেষ দুটি সমাগম তাঁবুতে নিয়ে এসো।

“এরপর হারোণ ও তার পুত্রদের সমাগম তাঁবুর দরজায় নিয়ে আসবে। পরিষ্কার জলে তাদের স্নান করাবে। বিশেষভাবে বানানো পোশাকটি হারোণকে পরাবে। তাকে বোনা সাদা পোশাকটি এবং নীল বস্ত্র সমেত এফোদ পরাবে। এফোদের সঙ্গে যুক্ত করবে বক্ষাবরণ। এরপর সুদৃশ্য কোমরবন্ধনী লাগিয়ে দেবে। তার মাথায় পাগড়ি পরাও এবং পাগড়িটি ঘিরে বিশেষ পবিত্র মুকুটটি পরাও। এবার অভিষেকের তেল হারোণের মাথায় ছিটিয়ে দেবে। এইভাবে হারোণ যাজকরূপে অভিষিক্ত হবে।

“এরপর হারোণের পুত্রদের ঐ স্থানে নিয়ে এসে সাদা আলখাল্লা পরাবে। তাদের কোমরে বাঁধবে কোমরবন্ধনী। তাদের মাথায় পরাবে শিরোভূষণ। এইভাবে তারা যাজক হিসাবে চিহ্নিত হবে। চিরস্থায়ী অধিকার বিধি অনুযায়ী তারা যাজক পদে উত্তীর্ণ হবে। এইভাবে তুমি হারোণ ও তার পুত্রদের যাজক হিসাবে অভিষিক্ত করবে।

10 “এবার সেই বলদকে সমাগম তাঁবুর সামনে আনো। হারোণ ও তার পুত্ররা সেই বলদের ওপর তাদের হাত রাখবে। 11 সমাগম তাঁবুর প্রবেশপথে ঐ বলদটিকে প্রভুর উপস্থিতিতে বলি দাও। প্রভু তা দেখবেন। 12 সেই বলদ বলির কিছু পরিমাণ রক্ত নাও এবং তোমার আঙ্গুল দিয়ে বেদীর শৃঙ্গগুলির ওপরে ঐ রক্তের প্রলেপ লাগিয়ে দাও। বাকি রক্ত বেদীর নীচে ছড়িয়ে দেবে। 13 এবার বলি দেওয়া সেই বলদের শরীরের সমস্ত চর্বি, যকৃৎ এবং চর্বি এবং দুটো মুত্রগ্রন্থী ও তার চারপাশের চর্বি জড়ো করে বেদীর ওপর জ্বালাবে। 14 এবার ঐ বলদের মাংস, চামড়া এবং গোবর তাঁবুর বাইরে নিয়ে যাও এবং তা আগুনে পুড়িয়ে দাও। এই পদ্ধতিতে যাজকদের পাপমোচনের হোমবলি হবে।

15 “এবার হারোণ ও তার পুত্রদের বলো একটি মেষের ওপর হাত রাখতে। 16 ঐ মেষটিকে কেটে ফেল। তার এবং বলির রক্ত সংগ্রহ কর এবং ঐ রক্ত বেদীর চারপাশে লাগিয়ে দাও। 17 এরপর মেষটিকে খণ্ড খণ্ড করে কাটো। মেষের অভ্যন্তর ভাগ এবং পা-গুলি ধোও। এই অংশগুলি অন্যান্য অংশের সঙ্গে এবং মাথার সঙ্গে রাখো। 18 এবার সেগুলি বেদীতে এনে পুড়িয়ে দেবে। বেদীতে পোড়ালে তা হবে হোমবলি। প্রভুর উদ্দেশ্যে আগুনের উপহার। প্রভু এর গন্ধে খুশী হবেন।

19 “এবার অন্য একটি মেষ নিয়ে এসো এবং হারোণ ও তার পুত্রদের বলো মাথায় হাত রাখতে। 20 ছাগলটিকে বলি দাও ও তার একটু রক্ত নাও এবং সেটি হারোণ ও তার পুত্রদের ডান কানের লতিতে লাগিয়ে দাও। একটু রক্ত লাগাও ডান হাতের বুড়ো আঙুলে এবং কিছু রক্ত লাগাবে ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে। এরপর বাকী রক্ত বেদীর চারদিকে ঢেলে দেবে। 21 এবার বেদী থেকে একটু রক্ত তুলে নাও এবং একটি বিশেষ অভিষেকের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে হারোণ ও তার পুত্রদের ওপর ও তাদের পোশাকের ওপর ছিটিয়ে দেবে। এতে বোঝা যাবে যে হারোণ ও তার পুত্রদের পোশাকগুলি প্রভুর কাছে উৎসর্গীকৃত।

22 “এরপর সেই মেষের চর্বি ছাড়িয়ে নেবে। (এটা সেই ছাগল বা মেষ যেটা হারোণের মহাযাজকরূপে অভিষেকের সময় ব্যবহৃত হয়েছে।) বলি দেওয়া ছাগলের লেজের এবং শরীরের ভেতরের চর্বি ছাড়িয়ে নেবে। যকৃত্‌ ও মুত্রগ্রন্থীর ওপরের চর্বি এবং ডান পায়ের চর্বিও সংগ্রহ করবে। 23 এবার প্রভুর সামনে রাখার জন্য খামিরবিহীন রুটি এবং তেলে ভাজা পিঠে ভর্ত্তি ঝুড়িটিকে আনবে। ঝুড়ি থেকে একটি রুটি, একটি তেলেভাজা পিঠে ও একটি ছোট সরুচাকলী পিঠে তুলে নেবে। 24 এই জিনিসগুলি হারোণ ও তার পুত্রদের দেবে এবং ওদের বলবে এইগুলি হাতে নিতে এবং প্রভুর সামনে সেগুলি দোলাতে। এটা হবে দোলনীয় নৈবেদ্য। 25 এবার এই জিনিসগুলি তাদের কাছ থেকে নিয়ে নাও এবং তাদের বেদীর ওপর রাখো এবং এইগুলি মেষের সঙ্গে পুড়িয়ে দাও। এটি একটি হোমবলি। এর গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে।

26 “এরপর বলি দেওয়া মেষটির বক্ষ কেটে নেবে। (হারোণের মহাযাজকের পদে অভিষেক উৎসবে এই মেষটিকে ব্যবহার করা হয়েছিল।) মেষটির বক্ষ প্রভুর সামনে দোলনীয় নৈবেদ্যর মত দোলাও এবং তারপরে রেখে দাও। এটি তোমার খাবার জন্য থাকবে। 27 হারোণের মহাযাজকরূপে অভিষেকের শিষ্টাচারে ব্যবহৃত ছাগলের পা ও স্তন এই বিশেষ অঙ্গ দুটি পবিত্র হল। এবার ঐ দুটি অঙ্গ হারোণ ও তার পুত্রদের দিয়ে দেবে। 28 এরপর থেকে সর্বদা ইস্রায়েলের জনগণ প্রভুকে যাজকের মাধ্যমে ঐ বিশেষ অঙ্গ দুটি উৎসর্গ করবে। তারা যখন যাজককে ঐ অঙ্গ দুটি দেবে তা হবে প্রভুকে দেওয়ারই সমান।

29 “বিশেষভাবে তৈরী করা বিশেষ পোশাকগুলো হারোণের জন্য তৈরী করা হলেও সেগুলো যত্ন করে রেখে দেবে। কারণ হারোণের পর যে মহাযাজক হবে সে ঐ পোশাকগুলো পরেই প্রভুর সেবা করবে। 30 হারোণের পর তার ছেলেদের মধ্যে থেকেই একজন মহাযাজকের দায়়ভার সামলাবে। সে যখন সমাগম তাঁবুতে পবিত্র স্থানের সেবায় নিয়োজিত হবে তখন সে সাতদিন ঐ পোশাকগুলোই পরবে।

31 “হারোণের মহাযাজকরূপে অভিষেক উৎসবে ব্যবহৃত মেষের মাংস সেদ্ধ কর। পবিত্রস্থানেই ঐ মাংস রান্না হবে। 32 সমাগম তাঁবুর সামনের দরজায় বসে হারোণ ও তার পুত্ররা ঐ রান্না করা মাংস খাবে। ঝুড়ির রুটি দিয়ে তারা মাংস খাবে। 33 এই পদ্ধতিতে তাদের পাপমোচন হবে এবং তারা প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে যাজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আর কাউকে ওগুলো খেতে দেওয়া হবে না, কারণ সেগুলি পবিত্র। 34 যদি কোন খাবার রুটি বা মাংস অবশিষ্ট থাকে তাহলে পরদিন সকালে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলতে হবে। কেউ এ খাবার খাবে না কারণ এই খাবার বিশেষ উপায়ে বিশেষ সময়ে খেতে হয়।

35 “আমার আদেশ মতো তুমি হারোণ ও তার পুত্রদের এগুলি করাবে। আমি যা যা বলেছি তুমি তাদের জন্য ঠিক তাই করবে। তাদের যাজক পদে অভিষেকের শিষ্টাচার সাত দিন ধরে চলবে। 36 সাতদিন ধরে তুমি প্রত্যেকদিনে একটি করে বলদ বলি দেবে। হারোণ ও তার পুত্রদের পাপমোচনের জন্য এই উপায় অবলম্বন করতে হবে। এই প্রায়শ্চিত্ত বেদীকে পূণ্য করার জন্য করতে হবে। এবং বেদীকে পবিত্র করার জন্য জলপাইয়ের তেল ঢালবে। 37 তুমি সাত দিন ধরে প্রায়শ্চিত্ত করে সাতদিন ধরে বেদীকে পূণ্য ও পবিত্র করে তুলবে। সে সময় বেদীটি অতি পবিত্র স্থান হয়ে উঠবে। বেদীর সংস্পর্শে যা আসবে তাই-ই পবিত্র হয়ে যাবে।

38 “প্রত্যেকদিন তুমি বেদীতে কিছু না কিছু নৈবেদ্য দেবে। তোমাকে এক বছর বয়সের দুটো মেষ বলি দিতেই হবে। 39 একটা মেষকে সকালে ও অন্যটিকে সন্ধ্যায় বলি দেবে। 40 যখন তুমি প্রথম মেষটিকে বলি দেবে তখন তার সঙ্গে এক পোয়া খাঁটি জলপাই তেল আর তিন পোয়া দ্রাক্ষারসের সঙ্গে আট বাটি ভাল গমের আটাও উৎসর্গ করো। 41 এবার দ্বিতীয় মেষটি গোধূলি বেলায় বলি দেবে। এটির শস্য নৈবেদ্য এবং এটির পেয় নৈবেদ্য হবে সকালের নৈবেদ্যর মতোই। এটা হবে একটি সুগন্ধ সৌরভ, প্রভুকে নিবেদিত একটি হোমবলি। এবং প্রভু তা নিঃশ্বাসে গ্রহণ করবেন এবং তার গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে।

42 “প্রভুর প্রতিদিনের নৈবেদ্যগুলোকেই পুড়িয়ে ফেলতে হবে। সমাগম তাঁবুর দরজাতেই এটা করবে। প্রভুকে নৈবেদ্য দেবার সময় সর্বদা এটাই করবে। আমি, প্রভু তোমাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ওখানেই দর্শন দেব। 43 ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব ঐ স্থানেই এবং আমার মহিমা ঐ স্থানকে পবিত্র করে তুলবে।

44 “তাই সমাগম তাঁবুকে আমি পবিত্র করে তুলব এবং বেদীকেও পবিত্র করে তুলব। হারোণ ও তার পুত্ররা যাতে আমাকে যাজক হয়ে সেবা করতে পারে তার জন্য আমি ওদেরও পবিত্র করে তুলব। 45 ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গেই আমি থাকব। আমিই হব তাদের ঈশ্বর। 46 লোকরা জানবে আমিই তাদের প্রভু এবং ঈশ্বর। তারা জানতে পারবে যে আমিই ‘সেই জন’ যে তাদের নেতৃত্ব দিয়ে মিশর থেকে বাইরে এনেছে তাই আমি তাদের মাঝেই বাস করব। আমিই তাদের প্রভু, আমিই তাদের ঈশ্বর।”

যোহন 8

এরপর যীশু সেখান থেকে জৈতুন পর্বতমালায় চলে গেলেন। খুব ভোরে তিনি আবার মন্দিরে ফিরে গেলে লোকেরা আবার তাঁর কাছে এসে জড়ো হল, তখন তিনি সেখানে বসে তাদের কাছে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন।

সেই সময় ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা, ব্যভিচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছে এমন একজন স্ত্রীলোককে তাঁর কাছে নিয়ে এল। তারা সেই স্ত্রীলোককে তাদের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে যীশুকে বলল, “গুরু, এই স্ত্রীলোকটি ব্যভিচার করার সময় হাতে নাতেই ধরা পড়েছে। বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে মোশি আমাদের বলছেন, এই ধরণের স্ত্রীলোককে যেন আমরা পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলি। এখন আপনি এবিষয়ে কি বলবেন?”

তাঁকে পরীক্ষা করার ছলেই তারা একথা বলছিল, যাতে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তারা খুঁজে পায়। কিন্তু যীশু হেঁট হয়ে মাটিতে আঙ্গুল দিয়ে লিখতে লাগলেন। ইহুদী নেতারা যখন বার বার তাঁকে জিজ্ঞেস করতে লাগল, তখন তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, “তোমাদের মধ্যে যে নিস্পাপ সেই প্রথম একে পাথর মারুক।” এরপর তিনি আবার হেঁট হয়ে আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন।

তারা ঐ কথা শোনার পর বুড়ো লোক থেকে শুরু করে সকলে এক এক করে সেখান থেকে চলে গেল। কেবল যীশু সেখানে একা থাকলেন আর সেই স্ত্রীলোকটি মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিল। 10 তখন যীশু মাথা তুলে সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, “হে নারী, তারা সব কোথায়? কেউ কি তোমায় দোষী সাব্যস্ত করল না?”

11 স্ত্রীলোকটি উত্তর দিল, “কেউ করে নি, মহাশয়।”

তখন যীশু বললেন, “আমিও তোমায় দোষী করছি না, যাও এখন থেকে আর পাপ কোরো না।”

যীশুই জগতের আলো

12 এরপর যীশু আবার লোকদের সাথে কথা বলতে শুরু করলেন এবং বললেন, “আমিই জগতের আলো। যে কেউ আমার অনুসারী হয় সে কখনও অন্ধকারে থাকবে না কিন্তু এমন আলো পাবে যা জীবন দেয়।”

13 তখন ফরীশীরা তাঁকে বলল, “তুমি নিজেই নিজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছ। তোমার সাক্ষ্য গ্রাহ্য হবে না।”

14 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “আমি যদি নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দিই, তবু আমার সাক্ষ্য সত্য, কারণ আমি জানি আমি কোথা থেকে এসেছি, আর কোথায় বা যাচ্ছি; কিন্তু আমি কোথা থেকে এসেছি বা কোথায় যাচ্ছি তা তোমরা জানো না। 15 মানুষের বিচারবোধের মাপকাঠিতে তোমরা আমার বিচার করছ। আমি কারো বিচার করি না। 16 কিন্তু আমি যদি বিচার করি, তবে আমার বিচার সত্য, কারণ আমি একা নই। পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি আমার সঙ্গেই আছেন। 17 তোমাদের নিয়মে লেখা আছে, যখন দুই ব্যক্তি একই সাক্ষ্য দেয় তখন তা সত্যি। 18 আমি নিজেই নিজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিই। আর পিতা, যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনিও আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন।”

19 তখন তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “তোমার পিতা কোথায়?”

যীশু বললেন, “তোমরা না জানো আমাকে, না জানো আমার পিতাকে। তোমরা যদি আমাকে জানতে, তবে আমার পিতাকেও জানতে।” 20 মন্দিরের দানের বাক্সের কাছে দাঁড়িয়ে শিক্ষা দেবার সময় যীশু এইসব কথা বললেন। কিন্তু কেউ তাঁকে গ্রেপ্তার করল না, কারণ তখনও তাঁর নিরূপিত সময় আসে নি।

ইহুদীরা যীশুর বিষয় বোঝে নি

21 তিনি তাদের আর একবার বললেন, “আমি যাচ্ছি, আর তোমরা আমার খোঁজ করবে; কিন্তু তোমরা তোমাদের পাপেই মরবে। আমি যেখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে আসতে পারবে না।”

22 তখন ইহুদীরা বলছিল, “তিনি কি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন? কেন তিনি বললেন, ‘আমি যেখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে আসতে পারবে না’?”

23 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা এই নিম্নলোকের আর আমি উর্দ্ধলোকের। তোমরা এজগতের, আমি এ জগতের নই। 24 তাই আমি তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের পাপেই মরবে। তোমরা যদি বিশ্বাস না কর যে আমিই তিনি, তবে তোমরা তোমাদের পাপের জন্যই মরবে।”

25 তখন তারা জিজ্ঞেস করল, “তুমি কে?”

যীশু তাদের বললেন, “আমি যা, তা তো শুরু থেকেই তোমাদের বলে আসছি। 26 তোমাদের বিষয়ে বলার ও বিচার করার অনেক কিছুই আমার আছে। যা হোক্, যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনি সত্য। আর আমি তাঁর কাছ থেকে যা কিছু শুনি, পৃথিবীর মানুষের কাছে তাই বলি।”

27 তারা বুঝতে পারে নি যে, তিনি তাদের কাছে পিতার বিষয়ে বলছেন। 28 তখন যীশু তাদের বললেন, “যখন তোমরা মানবপুত্রকে উঁচুতে তুলবে, তখন জানবে যে আমিই তিনি এবং আমি নিজের থেকে কিছুই করি না। পিতা যেমন আমায় শিখিয়েছেন, আমি সেরকমই বলছি। 29 আর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তিনি আমার সঙ্গে আছেন। তিনি আমাকে একা ফেলে রাখেন নি, কারণ আমি সব সময় সন্তোষজনক কাজই করি।” 30 যীশু যখন এইসব কথা বললেন তখন অনেকেরই তাঁর ওপর বিশ্বাস হল।

যীশু পাপ থেকে মুক্তি লাভের কথা বললেন

31 ইহুদীদের মধ্যে যাঁরা তাঁর ওপর বিশ্বাস করল, তাদের উদ্দেশ্যে যীশু বললেন, “তোমরা যদি সকলে আমার শিক্ষা মান্য করে চল তবে তোমরা সকলেই আমার প্রকৃত শিষ্য। 32 তোমরা সত্যকে জানবে, আর সেই সত্য তোমাদের স্বাধীন করবে।”

33 তারা তাঁকে বলল, “আমরা অব্রাহামের বংশধর। আর আমরা কখনও কারোর দাসে পরিণত হই নি। আপনি কিভাবে বলছেন যে আমাদের স্বাধীন করা হবে?”

34 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি-যে ক্রমাগত পাপ করে চলে, সে পাপের দাস। 35 কোন দাস পরিবারের স্থায়ী সদস্য হয়ে থাকতে পারে না; কিন্তু পুত্র পরিবারে চিরকাল থাকে। 36 তাই পুত্র যদি তোমাদের স্বাধীন করে, তবে তোমরা প্রকৃতই স্বাধীন হবে। 37 আমি জানি তোমরা অব্রাহামের বংশধর; কিন্তু তোমরা আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছ, কারণ তোমরা আমার শিক্ষাগ্রহণ করো না। 38 আমি আমার পিতার কাছে যা দেখেছি সেই বিষয়েই বলে থাকি, আর তোমরা তোমাদের পিতার কাছ থেকে যা যা শুনেছ তাই তো করে থাক।”

39 এর জবাবে তারা তাঁকে বলল, “আমাদের পিতা অব্রাহাম।”

যীশু তাদের বললেন, “তোমরা যদি অব্রাহামের সন্তান হতে, তাহলে অব্রাহাম যা করেছেন তোমরাও তাই করতে; 40 কিন্তু এখন তোমরা আমায় হত্যা করতে চাইছ। আমি সেই লোক যে ঈশ্বরের কাছ থেকে সত্য শুনেছি এবং তোমাদের তা বলেছি। অব্রাহাম তো এরকম কাজ করেন নি। 41 তোমাদের পিতা যে কাজ করে, তোমরা তাই করো।”

তখন তারা তাঁকে বলল, “আমরা জারজ সন্তান নই। ঈশ্বর হচ্ছেন আমাদের একমাত্র পিতা।”

42 যীশু তাদের বললেন, “ঈশ্বর যদি তোমাদের পিতা হতেন, তাহলে তোমরা আমায় ভালবাসতে, কারণ আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছি আর এখন তোমাদের মাঝে এখানে আছি। আমি নিজে থেকে আসিনি, ঈশ্বর আমায় পাঠিয়েছেন। 43 আমি যা বলি, তোমরা তা বুঝতে পারো না, কারণ তোমরা আমার কথা গ্রহণ করো না। 44 দিয়াবল তোমাদের পিতা এবং তোমরা তার পুত্র। তোমরা তোমাদের পিতার ইচ্ছাই পূর্ণ করতে চাও। দিয়াবল শুরু থেকেই খুনী; আর সত্যের পক্ষে সে কখনও দাঁড়ায় নি, কারণ তার মধ্যে তো সত্যের লেশমাত্র নেই। সে যখন মিথ্যা কথা বলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই তার মধ্য থেকে তা বেরিয়ে আসে, কারণ সে মিথ্যাবাদী ও মিথ্যার পিতা।

45 “আমি সত্য বলি বলে তোমরা আমায় বিশ্বাস করো না। 46 তোমাদের মধ্যে কে আমাকে পাপী বলে দোষী করতে পারে? আমি যখন সত্য বলছি তখন তোমরা কেন বিশ্বাস করছ না? 47 যে ঈশ্বরের লোক, সে ঈশ্বরের কথা শোনে। আর এই কারণেই তোমরা শুনতে চাও না, কারণ তোমরা ঈশ্বরের নও।”

যীশু অব্রাহাম এবং নিজের সম্বন্ধে বললেন

48 এর উত্তরে ইহুদীরা বলল, “আমরা কি ঠিক বলিনি যে তুমি একজন শমরীয়, আর তোমার মধ্যে এক ভূত রয়েছে?”

49 যীশু জবাব দিলেন, “দেখ, আমায় ভূতে গ্রাস করে নি, বরং আমি আমার পিতাকে সম্মান করি। কিন্তু তোমরা আমার অসম্মান করেছ। 50 আমি নিজের জন্য সম্মান চাইছি না। একজন আছেন যিনি আমার জন্য সম্মান চান, তিনিই বিচার করেন। 51 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি আমার শিক্ষা অনুসারে চলে, সে কখনও মরবে না।”

52 ইহুদীরা তাঁকে বলল, “এখন আমরা বুঝেছি যে তোমায় ভূতে গ্রাস করেছে। অব্রাহাম ও ভাববাদীরা মারা গেছে আর তুমি বলছ, ‘যদি কেউ আমার শিক্ষা অনুসারে চলে, তবে সে মৃত্যুর আস্বাদ পাবে না।’ 53 তুমি কি মনে কর যে তুমি আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহামের চেয়ে মহান? অব্রাহাম মারা গেছেন, আর ভাববাদীরাও মারা গেছেন। তুমি নিজেকে কি মনে করছ?”

54 এর উত্তরে যীশু বললেন, “আমি যদি নিজেকে সম্মানিত করি তবে সেই সম্মানের কোন মূল্য নেই। যিনি আমায় সম্মানিত করেন তিনি আমাদের পিতা, যাঁর সম্পর্কে তোমরা বল, তিনি আমাদের ঈশ্বর। 55 আর তোমরা তাঁকে জানো না, কিন্তু আমি তাঁকে জানি। আমি যদি বলি যে আমি তাঁকে জানি না, তাহলে আমি তোমাদেরই মতো মিথ্যাবাদী হয়ে যাবো। কিন্তু আমি তাঁকে অবশ্যই জানি, আর তিনি যা কিছু বলেন আমি সে সকল পালন করি। 56 তোমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম আমার আগমনের দিন দেখতে পাবেন বলে খুশী হয়েছিলেন। তিনি সেই দিন দেখে খুশী হয়েছিলেন।”

57 তখন ইহুদীরা তাঁকে বলল, “তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বছর হয়নি আর তুমি বলছ যে তুমি অব্রাহামকে দেখেছ!”

58 যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি। অব্রাহামের জন্মের আগে থেকেই আমি আছি।” 59 তখন তারা তাঁকে পাথর ছুঁড়ে মারবার জন্য পাথর তুলে নিল; কিন্তু যীশু নিজেকে লুকিয়ে ফেললেন ও মন্দির চত্বর ছেড়ে চলে গেলেন।

হিতোপদেশ 5

ব্যভিচার এড়ানোর প্রজ্ঞা বা জ্ঞান

পুত্র আমার, আমার জ্ঞানগর্ভ শিক্ষামালা শোন। আমার সুবিবেচনামূলক কথাবার্তার প্রতি মনোযোগ দাও। তাহলেই তুমি বিবেচকের মত বাঁচতে শিখবে। ভেবেচিন্তে কথা বলতে পারবে। অন্য একজন লোকের স্ত্রী হয়তো অসামান্য সুন্দরী হতে পারে; তার কথাবার্তা মধুর এবং প্রলোভনসূচক হতে পারে। কিন্তু পরিশেষে সে শুধু তিক্ততা এবং যন্ত্রনাই বয়ে আনবে। সে তিক্ত বিষ কিংবা ধারালো তরবারির মত। সে মৃত্যুর পথে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সে তোমাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে। তাকে অনুসরণ কোরো না! সে পথভ্রষ্ট হয়েছে। সাবধান! জীবনের পথ বেছে নাও।

আমার পুত্রগণ, এখন আমার কথা শোন। আমি যা বলছি ভুলে যেও না। ব্যাভিচারিণী থেকে দূরে থেকো। তার বাড়ির ছায়াও মাড়িও না। যদি যাও তোমার প্রাপ্য সম্মান অন্যরা কেড়ে নেবে। কোনও অপরিচিত ব্যক্তি তোমার পরিশ্রমের ফল ভোগ করবে। 10 তুমি যাদের চেনো না তারাই তোমার ধনসম্পদ কেড়ে নেবে। তারা তোমার শ্রমের সুফল ভোগ করবে। 11 পরিশেষে, তুমি দুঃখিত হবে কারণ তুমি তোমার স্বাস্থ্য নষ্ট করেছ এবং তোমার যা কিছু ছিল সব হারিয়েছ। 12-13 তখন তুমি বলবে, “আমি আমার অভিভাবকদের কথায় কেন কর্ণপাত করিনি! কেন আমার শিক্ষকদের কথা কানে তুলি নি! আমি শৃঙ্খলা মানতে রাজি হই নি। আমি তিরস্কার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছি। 14 তাই আমি এখন প্রায় সবরকম সংকট ভোগ করছি আর তা সবাই জানে!”

15 তোমার নিজের কুয়ো থেকে যে জল পাও, তাই পান কর। 16 তোমার জলকে রাস্তার ওপর বয়ে যেতে দিও না। কেবল মাত্র নিজের স্ত্রীর সঙ্গেই শুধু তোমার যৌন সম্পর্ক থাকা উচিৎ‌। তোমার নিজের পরিবারের বাইরে কোন ছেলেমেয়ের পিতা হয়ো না। 17 তোমার সন্তানরা যেন কেবল তোমারই হয়। তোমার পরিবারের বাইরে অন্য লোকদের সঙ্গে তোমার সন্তানদের ভাগ করে নেবার দরকার নেই। 18 তাই নিজের স্ত্রীকে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকো। যৌবনে যে নারীকে বিয়ে করেছিলে তাকেই ভালোবাস এবং তার প্রেমেই তৃপ্ত হও। 19 সে একটি অপরূপা হরিণীর মতো। তার ভালোবাসায় সম্পূর্ণ তৃপ্ত হও। তার প্রেম তোমাকে সদা প্রমত্ত রাখুক। 20 আমার পুত্র, অন্য রমনীর দ্বারা প্রমত্ত হয়ো না। অন্য স্ত্রীলোকের বক্ষ আলিঙ্গন করো না!

21 তুমি যাই কর না কেন কিছুই প্রভুর অগোচর নয়। তুমি কোথায় যাও তাও প্রভু জানেন। 22 পাপী তার নিজের ফাঁদেই জড়িয়ে পড়বে। তার পাপসমূহ হবে দড়ির মত যা তাকে বেঁধে রেখেছে। 23 সেই পাপীর মৃত্যু অনিবার্য। কারণ সে অনুশাসিত হতে অস্বীকার করেছে। সে তার নিজের কামনার নাগপাশেই বদ্ধ হবে।

গালাতীয় 4

আমি তোমাদের একথা বলতে চাইছি—উত্তরাধিকারী যতদিন শিশু থাকে ততদিন তার সঙ্গে একজন দাসের কোন তফাত্ থাকে না; যদিও সেই শিশু সব কিছুর মালিক। কারণ সে যত দিন শিশু অবস্থায় থাকে তাকে অভিভাবক এবং সংসার পরিচালকের কথা অনুযায়ী চলতে হয়। সাবালক হবার জন্য যে বয়স তার পিতা নির্ধারণ করে দেন, সেই বয়সে পৌঁছলে সে স্বাধীন হয়। একথা আমাদের পক্ষে একইভাবে প্রযোজ্য। আমরা যখন শিশুদের পর্যায়ে ছিলাম, তখন আমরা এই জগতের কতকগুলি প্রাথমিক নিয়ম কানুনের অধীন ছিলাম, কিন্তু নিরুপিত সময়ে ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন। ঈশ্বরের পুত্র একজন স্ত্রীলোকের গর্ভজাত হলেন এবং বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবন কাটালেন, যাতে তিনি বিধি-ব্যবস্থার অধীন সমস্ত লোকদের স্বাধীন করতে পারেন এবং যেন আমরা সকলে তাঁর পুত্ররূপে স্বীকৃতি পেতে পারি।

তোমরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান, সেইজন্যই তাঁর পুত্রের আত্মাকে তিনি তোমাদের অন্তরে পাঠিয়েছেন। সেই আত্মা ডেকে ওঠে, “আব্বা, পিতা” বলে। তাই তোমরা আগের মতো আর দাস নও কিন্তু ঈশ্বরের পুত্র। আর যেহেতু তোমরা পুত্র তাই ঈশ্বর তাঁর প্রতিশ্রুত বিষয়গুলি তোমাদের দেবেন।

গালাতীয় খ্রীষ্টানদের জন্য পৌলের ভালবাসা

অতীতে যখন তোমরা ঈশ্বরকে জানতে না, তখন তোমরা যে সমস্ত দেবতার সেবা করতে, তারা ঈশ্বর নয়। কিন্তু তোমরা এখন সত্য ঈশ্বরকে জেনেছ অথবা এটা বলা ভাল যে ঈশ্বরই তোমাদের জেনেছেন। তাই পূর্বে যে সব নিরর্থক ও দুর্বল নিয়ম-কানুন ছিল সেদিকে আবার কেন ফিরছ? তোমরা কি আবার ঐ সকলের দাস হতে চাও? 10 তোমরা কেবল বিশেষ বিশেষ দিন, মাস, ঋতু ও বছর পালন করছ। 11 তোমাদের দেখে আমার ভয় হয় যে, তোমাদের মধ্যে হয়তো আমি বৃথাই পরিশ্রম করছি।

12 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের মতো ছিলাম, তাই মিনতি করি তোমরা আমার মতো হও। তোমরা আমার সঙ্গে কোন খারাপ ব্যবহার কর নি। 13 তোমরা তো জান, আমি অসুস্থ ছিলাম বলে প্রথমেই তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করি। 14 যদিও আমার অসুস্থতা তোমাদের সবার কাছে এক পরীক্ষাস্বরূপ হয়েছিল, তবু তোমরা এমনভাবে আমাকে গ্রহণ করেছিলে যেন আমি ঈশ্বর হতে আগত স্বর্গদূত, যেন স্বয়ং যীশু খ্রীষ্ট। 15 এখন তোমাদের সেই আনন্দ কোথায়? আমি তোমাদের সম্বন্ধে এই সাক্ষ্য দিতে পারি যে তখন সম্ভব হলে তোমরা আমার জন্য নিজের নিজের চোখ উপড়ে আমাকে দিতে দ্বিধা করতে না। 16 এখন তোমাদের কাছে সত্য বলছি বলে কি আমি তোমাদের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছি?

17 সেই লোকরা তোমাদের প্রতি আগ্রহী হয়েছে, কিন্তু তা কোন ভাল উদ্দেশ্যে নয়। তারা তোমাদের কাছ থেকে আমাদের আলাদা করতে চায়, যাতে তোমরা তাদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ কর। 18 অবশ্য আগ্রহ দেখানো ভাল কেবল যদি সৎ‌ উদ্দেশ্যে তা করা হয়। আমি যখন তোমাদের মধ্যে উপস্থিত থাকি কেবল তখনই নয় বরং সবসময়েই তা থাকা ভাল। 19 হে আমার প্রিয় সন্তানরা, তোমাদের জন্য আমি আর একবার প্রসব যন্ত্রণা ভোগ করছি। তোমাদের নিয়ে আমাকে এই যন্ত্রণা ভোগ করতেই হবে যতদিন পর্যন্ত না তোমরা খ্রীষ্টের মতো হয়ে ওঠো। 20 এখন তোমাদের কাছে যেতে আমার খুব ইচ্ছা করছে, তাহলে ভিন্নভাবে এসব নিয়ে আলোচনা করতে পারতাম। আমি জানি না তোমাদের নিয়ে আমি কি করব।

হাগার এবং সারার উদাহরণ

21 আমাকে বলতো, তোমাদের মধ্যে কে মোশির বিধি-ব্যবস্থার অধীন থাকতে চাও? তোমরা কি জান না বিধি-ব্যবস্থা কি বলে? 22 শাস্ত্র বলছে যে অব্রাহামের দুটি পুত্র ছিল, একটি পুত্রের মা ছিল দাসী স্ত্রী, অপর পুত্রের মা ছিল স্বাধীন স্ত্রী। 23 দাসী স্ত্রীর গর্ভে অব্রাহামের যে সন্তান জন্মেছিল তার জন্ম স্বাভাবিকভাবেই হয়েছিল, কিন্তু স্বাধীন স্ত্রীর গর্ভে অব্রাহামের যে সন্তান জন্মেছিল, সে অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির ফলেই জন্মেছিল।

24 এই বিষয়গুলি রূপকের মতো ব্যাখ্যা করা যায়। এই দুই মহিলা দুটি চুক্তির প্রতিনিধিত্ব করে, একটি চুক্তি যেটা সীনয় পর্বত থেকে এসেছিল, সেটা একদল লোকের জন্ম দিয়েছিল দাসত্বের জন্যে। যে মাতার নাম হাগার, সে এই চুক্তির সঙ্গে তুলনীয়। 25 হাগার হলেন আরবের সীনয় পর্বতের মতো। তিনি বর্তমান ইহুদীদের জেরুশালেমের প্রতিরূপ, কারণ সেই জেরুশালেম তার লোকদের সাথে দাসত্বের বন্ধনে বদ্ধ। 26 কিন্তু স্বর্গীয় জেরুশালেম স্বাধীন মহিলা স্বরূপ। সেই জেরুশালেম আমাদের মাতৃসম। 27 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:

“হে বন্ধ্যা নারী, তোমরা যারা সন্তানের জন্ম দাও নি,
    তোমরা আনন্দ কর, উল্লসিত হও!
তোমরা যারা কখনই প্রসব যন্ত্রণা ভোগ কর নি;
    তোমরা উল্লাস কর,
কারণ স্বামীর সঙ্গে বসবাসকারী স্ত্রীর চাইতে
    নিঃসঙ্গ স্ত্রীর অনেক বেশী সন্তান হবে।”(A)

28 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরাও সেই ইস‌্হাকের মতো প্রতিশ্রুতির সন্তান। 29 কিন্তু ঠিক এখনকার মতোই তখনও যে পুত্র স্বাভাবিকভাবে জন্মেছিল, সে অন্য পুত্রকে অর্থাৎ পবিত্র আত্মার শক্তিতে যার জন্ম হয়েছিল তাকে নির্যাতন করত। 30 কিন্তু শাস্ত্র কি বলে? “দাসী স্ত্রী ও তার পুত্রকে তাড়িয়ে দাও! কারণ দাসীর পুত্র স্বাধীন স্ত্রীর পুত্রের সাথে কিছুরই উত্তরাধিকারী হবে না।”(B) 31 তাই বলি আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা সেই দাসীর সন্তান নই, আমরা স্বাধীন স্ত্রীর সন্তান।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International