Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যাত্রা 25

পবিত্র বিষয়ে উপহার

25 প্রভু মোশিকে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকদের বলো আমার জন্য উপহার নিয়ে আসতে। তারা ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের মনে মনে ঠিক করে নেবে তারা আমাকে কি দিতে চায়। আমার হয়ে তুমি সেই উপহারগুলি গ্রহণ করো। এই হল তার ফর্দ যা যা তুমি তাদের থেকে গ্রহণ করবে: সোনা, রূপো এবং পিতল, নীল, বেগুনী এবং লাল সূতো ও মসৃণ শনের কাপড় এবং ছাগলের লোম, মেষের লাল রঙের চামড়া, মসৃণ চামড়া, বাবলা কাঠ, প্রদীপের তেল, অভিষেকের তেল, সুগন্ধি মশলা, সুগন্ধি ধূপ তৈরির মশলা। এগুলি ছাড়াও অলীক মণি এবং অন্যান্য মনিমাণিক্য যেগুলো যাজক দ্বারা পরিহিত এফোদ এবং বক্ষাবরণের ওপর ব্যবহৃত হবে তা গ্রহণ করো।”

পবিত্র তাঁবু

ঈশ্বর আরও বললেন, “লোকরা আমার জন্য একটি পবিত্র স্থান তৈরী করবে। তখন আমি তাদের মধ্যে থাকতে পারব। আমি তোমাদের পবিত্র তাঁবু এবং তার আসবাবপত্রাদি কেমন দেখতে হওয়া উচিৎ‌ দেখাব। এবং আমি যেমনটি দেখাব ঠিক তেমনি একটি তাঁবু তৈরী করবে।

সাক্ষ্য সিন্দুক

10 “একটি বিশেষ সিন্দুক তৈরী করবে। সিন্দুকটি তোমরা বাবলা কাঠ দিয়ে তৈরী করবে। পবিত্র সিন্দুকটির দৈর্ঘ্য হবে 2.5 হাত, প্রস্থ 1.5 হাত এবং উচ্চতা 1.5 হাত। 11 পুরো সিন্দুকটির ভেতরে বাইরে সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে। তোমরা অবশ্যই তার চারধারে সোনার ঝালর দেবে। 12 তোমরা সিন্দুকটিকে বয়ে নেওয়ার জন্য চারটি সোনার আংটা সিন্দুকটির চারদিকে লাগাবে। দুদিকে দুটো করে সোনার কড়া বা আংটা থাকবে। 13 এরপর সিন্দুকটিকে বহন করার জন্য দুটো বাবলা কাঠের দণ্ড বানাবে। এই দণ্ডটিও সোনা দিয়ে মোড়া থাকবে। 14 এরপর সিন্দুকটির দু প্রান্তের আংটার মধ্যে দণ্ডগুলি ঢোকাবে এবং সিন্দুকটিকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করবে। 15 এই দণ্ডগুলি অবশ্যই সিন্দুকটির হাতার ভেতরদিকে দৃঢ় হয়ে থাকবে এবং সেগুলো কখনও খুলে নেওয়া হবে না।”

16 ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমাদের চুক্তিটি দেব। তা ঐ সিন্দুকে রেখে দেবে। 17 আড়াই হাত লম্বা ও দেড় হাত চওড়া একটি সোনার আচ্ছাদন তৈরী করবে। 18 পেটানো সোনা দিয়ে দুইটি করূব দূত বানাও এবং সোনার আচ্ছাদনের দুই প্রান্তে তাদের রাখো। 19 আচ্ছাদনের দুই কোণায় তাদের রেখে একই আচ্ছাদনের নীচে ওদের স্থাপন করবে। এরপর দূতদের এবং আচ্ছাদনটিকে একটি অখণ্ড বস্তু করবার জন্য তাদের যুক্ত করো। 20 দূতদের ডানা দুটিকে অবশ্যই আকাশের দিকে বিস্তৃত করে দিতে হবে। এবার ডানা সমেত দূতের মূর্তিকে সিন্দুকে এমনভাবে রাখবে যেন দুজনেই মুখোমুখি আচ্ছাদনের দিকে তাকিয়ে থাকে।

21 “আমি তোমাদের চুক্তিটি দেব এবং তোমরা তা সিন্দুকে রাখবে এবং সিন্দুকের ওপর ঐ ঢাকনাটি দিয়ে দেবে। 22 আমি যখন তোমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব তখন আমি পরস্পর মুখোমুখি ঐ দূতদের মাঝখানে আচ্ছাদনের ওপর থেকে কথা বলব। ইস্রায়েলবাসীকে দেবার জন্য আমি আমার সমস্ত আদেশসমূহ তোমাদের দেব।

টেবিল

23 “বাবলা কাঠের একটি টেবিল তৈরী করবে। টেবিলটি দৈর্ঘ্যে হবে 2 হাত, প্রস্থে 1 হাত এবং উচ্চতায় 1.5 হাত। 24 টেবিলটি খাঁটি সোনা দিয়ে মোড়া থাকবে এবং টেবিলের চারদিকে সোনার নিকেল করা থাকবে। 25 তারপর টেবিলের চারিদিকে 1 হাত চওড়া একটি কাঠের কাঠামো তৈরী করবে এবং ঐ কাঠের কাঠামোতে সোনার নিকেল করা থাকবে। 26 টেবিলের চার পায়ায় চারটি সোনার কড়া তৈরী করে রাখবে। 27 পায়ায় সোনার কড়া চারটি টেবিলের ওপর রাখা কাঠামো বরাবর সোজা তুলে আনবে। এবার চারটি কড়ায দণ্ড ঢুকিয়ে টেবিলটিকে বহন করা যাবে। 28 বাবলা কাঠেরই দণ্ড তৈরী করে যেগুলি সোনারপাতে মুড়ে টেবিলটিকে বহন করবে। 29 সোনার থালা, চামচ, মগ ও পাত্র তৈরী করবে। মগ ও পাত্র পেয় নৈবেদ্যর জন্য ব্যবহার করা হবে। 30 টেবিলের ওপর আমার জন্য বিশেষ রুটি রাখবে। এবং তা যেন সর্বক্ষণই আমার সামনে রাখা থাকে।

দীপদান

31 “এরপর একটি দীপদান বানাবে। খাঁটি সোনাকে পিটিয়ে একটি সুদৃশ্য দীপদান তৈরী করবে। এই দীপদানের কাণ্ড, শাখা, গোলাধার প্রভৃতি সব অখণ্ড হবে।

32 “এই দীপদানে অবশ্যই ছয়টি শাখা থাকতে হবে। তিনটি শাখা একদিকে প্রসারিত থাকবে এবং অন্যদিকে থাকবে তিনটি শাখা। 33 প্রত্যেক শাখায় তিনটি ফুল থাকবে। ঐ দীপদানের ফুলগুলি বাদাম ফুলের মতো হবে এবং তাতে মুকুলও থাকবে। 34 দীপদানের জন্য আরও চারটে ফুল তৈরী করবে। এই ফুলগুলি হবে বাদাম ফুলের মতো, সঙ্গে মুকুলও থাকবে। 35 দীপদানের ছয়টি শাখা থাকবে। হাতলের বা দীপদানের কাণ্ডের দুদিক থেকে যথাক্রমে তিনটি করে শাখা বেরিয়ে আসবে। কাণ্ডের যেখানে শাখাগুলি মিশছে সেখানে ফুল ও মুকুল তৈরী করে লাগাবে। 36 পুরো দীপদানটি, এবং শাখা ফুলগুলিও খাঁটি সোনার হওয়া চাই। এবং পুরোটাই একছাঁচে অর্থাৎ‌ অখণ্ড হতে হবে। 37 এরপর সাতটি প্রদীপ বানাবে দীপদানে রাখার জন্য। এই প্রদীপগুলিই দীপদানের সামনে আলোকিত করে রাখবে। 38 প্রদীপের চিমটাটিও সোনার হওয়া চাই। যে থালাটিতে দীপদানটি রাখা হবে সেটিকেও সোনার হতে হবে। 39 ঐ দীপদান ও দীপদানের আনুষঙ্গিক অংশ তৈরী করতে অবশ্যই 75 পাউণ্ড সোনা ব্যবহার করতে হবে। 40 পর্বতের ওপর আমি তোমাদের যা যা দেখিয়েছি তা তৈরী করার সময় সর্বদা সতর্ক থেকো, যেন কোন ভুল না হয়।”

যোহন 4

শমরীয়ার এক স্ত্রীলোকের সঙ্গে যীশুর কথাবার্তা

ফরীশীরা জানতে পারল যে যীশু যোহনের চেয়ে বেশী শিষ্য করেছেন ও বাপ্তাইজ করছেন। যদিও যীশু নিজে বাপ্তাইজ করছিলেন না, বরং তাঁর শিষ্যরাই তা করছিলেন। তারপর তিনি যিহূদিয়া ছেড়ে চলে গেলেন এবং গালীলেই ফিরে গেলেন। গালীলে যাবার সময় তাঁকে শমরিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হল।

যাকোব তাঁর ছেলে যোষেফকে যে ভূমি দিয়েছিলেন তারই কাছে শমরীয়ার শুখর নামে এক শহরে যীশু গেলেন। এখানেই যাকোবের কুয়াটি ছিল, যীশু সেই কুয়ার ধারে এসে বসলেন কারণ তিনি হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তখন বেলা প্রায় দুপুর। একজন শমরীয়া স্ত্রীলোক সেখানে জল তুলতে এল। যীশু তাকে বললেন, “আমায় একটু জল খেতে দাও তো।” সেই সময় শিষ্যরা শহরে কিছু খাবার কিনতে গিয়েছিল।

সেই শমরীয় স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, “একি আপনি একজন ইহুদী হয়ে আমার কাছ থেকে খাবার জন্য জল চাইছেন? আমি একজন শমরীয় স্ত্রীলোক!” (ইহুদীরা শমরীয়দের সঙ্গে কোনরকম মেলামেশা করত না।)

10 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “তুমি যদি জানতে যে ঈশ্বরের দান কি আর কে তোমার কাছ থেকে খাবার জন্য জল চাইছেন তাহলে তুমিই আমার কাছে জল চাইতে আর আমি তোমাকে জীবন্ত জল দিতাম।”

11 স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, “মহাশয়, আপনি কোথা থেকে সেই জীবন্ত জল পাবেন? এই কুয়াটি যথেষ্ট গভীর। জল তোলার কোন পাত্রও আপনার কাছে নেই। 12 আপনি কি আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোবের চেয়ে মহান? তিনি আমাদের এই কুয়াটি দিয়ে গেছেন। তিনি নিজেই এই কুয়ার জল খেতেন এবং তাঁর সন্তানরা ও তাঁর পশুপালও এর থেকেই জল পান করত।”

13 যীশু তাকে বললেন, “যে কেউ এই জল পান করবে তার আবার তেষ্টা পাবে। 14 কিন্তু আমি যে জল দিই তা যে পান করবে তার আর কখনও পিপাসা পাবে না। সেই জল তার অন্তরে এক প্রস্রবনে পরিণত হয়ে বইতে থাকবে, যা সেই ব্যক্তিকে অনন্ত জীবন দেবে।”

15 স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, “মশায়, আমাকে সেই জল দিন, যেন আমার আর কখনও পিপাসা না পায় আর জল তুলতে আমায় এখানে আসতে না হয়।”

16 তিনি তাকে বললেন, “যাও, তোমার স্বামীকে এখানে ডেকে নিয়ে এস।”

17 তখন সেই স্ত্রীলোকটি বলল, “আমার স্বামী নেই।”

যীশু তাকে বললেন, “তুমি ঠিকই বলেছ যে তোমার স্বামী নেই। 18 তোমার পাঁচ জন স্বামী হয়ে গেছে; আর এখন যে লোকের সঙ্গে তুমি আছ সে তোমার স্বামী নয়, তাই তুমি যা বললে তা সত্যি।”

19 সেই স্ত্রীলোকটি তখন তাঁকে বলল, “মহাশয়, আমি দেখতে পাচ্ছি যে আপনি একজন ভাববাদী। 20 আমাদের পিতৃপুরুষরা এই পর্বতের ওপর উপাসনা করতেন। কিন্তু আপনারা ইহুদীরা বলেন যে জেরুশালেমই সেই জায়গা যেখানে লোকেদের উপাসনা করতে হবে।”

21 যীশু তাকে বললেন, “হে নারী, আমার কথায় বিশ্বাস কর! সময় আসছে যখন তোমরা পিতা ঈশ্বরের উপাসনা এই পাহাড়ে করবে না, জেরুশালেমেও নয়। 22 তোমরা শমরীয়রা কি উপাসনা কর তোমরা তা জানো না। আমরা ইহুদীরা কি উপাসনা করি আমরা তা জানি, কারণ ইহুদীদের মধ্য থেকেই পরিত্রাণ আসছে। 23 সময় আসছে, বলতে কি, তা এসে গেছে, যখন প্রকৃত উপাসনাকারীরা আত্মায় ও সত্যে পিতা ঈশ্বরের উপাসনা করবে। পিতা ঈশ্বরও এইরকম উপাসনাকারীদেরই চান। 24 ঈশ্বর আত্মা, যাঁরা তাঁর উপাসনা করে তাদের আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করতে হবে।”

25 তখন সেই স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, “আমি জানি, মশীহ আসছেন। মশীহকে তারা খ্রীষ্ট বলে। যখন তিনি আসবেন, তখন আমাদের সব কিছু জানাবেন।”

26 যীশু তাকে বললেন, “তোমার সঙ্গে যে কথা বলছে আমিই সেই মশীহ।”

27 সেই সময় তাঁর শিষ্যরা ফিরে এলেন। একজন স্ত্রীলোকের সঙ্গে যীশুকে কথা বলতে দেখে তাঁরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তবু কেউ তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন না, “আপনি কি চাইছেন?” বা “আপনি কি জন্য ওর সঙ্গে কথা বলছেন?”

28 সেই স্ত্রীলোকটি তখন তার কলসী ফেলে রেখে গ্রামে গেল, আর লোকদের বলল, 29 “তোমরা এস, একজন লোককে দেখ, আমি যা কিছু করেছি, তিনি আমাকে সে সব বলে দিলেন। তিনিই কি সেই মশীহ নন?” 30 তখন লোকেরা শহর থেকে বার হয়ে যীশুর কাছে আসতে লাগল।

31 এরই মাঝে তাঁর শিষ্যরা তাঁকে অনুরোধ করে বললেন, “গুরু, আপনি কিছু খেয়ে নিন!”

32 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “আমার কাছে এমন খাবার আছে যার কথা তোমরা কিছুই জান না।”

33 তখন তাঁর শিষ্যরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, “তাহলে কি কেউ তাঁকে কিছু খাবার এনে দিয়েছে?”

34 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তাঁর ইচ্ছা পালন করা ও তাঁর যে কাজ তিনি আমায় করতে দিয়েছেন তা সম্পন্ন করাই হল আমার খাবার। 35 তোমরা প্রায়ই বলে থাক, ‘আর চার মাস বাকী আছে, তারপরই ফসল কাটার সময় হবে।’ কিন্তু তোমরা চোখ মেলে একবার ক্ষেতের দিকে তাকিয়ে দেখ, ফসল কাটবার মতো সময় হয়েছে। 36 যে ফসল কাটছে সে এখনই তার মজুরী পাচ্ছে, আর সে তা করছে অনন্ত জীবন লাভের জন্য। তার ফলে বীজ যে বোনে আর ফসল যে কাটে উভয়েই একই সঙ্গে আনন্দিত হয়। 37 এই প্রবাদ বাক্যটি সত্য যে, ‘একজন বীজ বোনে আর অন্যজন কাটে।’ 38 আমি তোমাদের এমন ফসল কাটতে পাঠিয়েছি, যার জন্য তোমরা কোন পরিশ্রম করনি। তার জন্য অন্যরা খেটেছে আর তোমরা তাদের কাজের ফসল তুলছ।”

39 সেই শহরের অনেক শমরীয় তাঁর ওপর বিশ্বাস করল, কারণ সেই স্ত্রীলোকটি সাক্ষ্য দিচ্ছিল, “আমি যা যা করেছি সবই তিনি আমাকে বলে দিয়েছেন।” 40 শমরীয়রা তাঁর কাছে এসে যীশুকে তাদের সঙ্গে থাকতে অনুরোধ করল। তখন তিনি দুদিন সেখানে থাকলেন। 41 আরও অনেক লোক তাঁর কথা শুনে তাঁর ওপর বিশ্বাস করল।

42 তারা সেই স্ত্রীলোকটিকে বলল, “প্রথমে তোমার কথা শুনে আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, কিন্তু এখন আমরা নিজেরা তাঁর কথা শুনে বিশ্বাস করেছি ও বুঝতে পেরেছি যে ইনি সত্যিই জগতের উদ্ধারকর্তা।”

এক রাজকর্মচারীর ছেলেকে যীশু সুস্থ করলেন

(মথি 8:5-13; লূক 7:1-10)

43 দুদিন পর তিনি সেখান থেকে গালীলে চলে গেলেন। 44 কারণ যীশু নিজেই বলেছিলেন যে একজন ভাববাদী কখনও তাঁর নিজের দেশে সম্মান পান না। 45 তাই তিনি যখন গালীলে এলেন, গালীলের লোকরা তাঁকে সাদরে গ্রহণ করল। জেরুশালেমে নিস্তারপর্বের সময় তিনি যা যা করেছিলেন তা তারা দেখেছিল, কারণ তারাও সেই পর্বের সময় সেখানে গিয়েছিল।

46 পরে যীশু আবার গালীলের কান্না নগরে গেলেন। এখানেই তিনি জলকে দ্রাক্ষারসে পরিণত করেছিলেন। কফরনাহূম শহরে একজন রাজকর্মচারীর ছেলে খুবই অসুস্থ ছিল। 47 তিনি যখন শুনলেন যে যীশু যিহূদিয়া থেকে গালীলে এসেছেন, তখন যীশুর কাছে গিয়ে তাঁকে মিনতি করে বললেন, তিনি যেন কফরনাহূমে গিয়ে তাঁর ছেলেকে সুস্থ করেন, কারণ তাঁর ছেলে তখন মৃত্যুশয্যায় ছিল। 48 যীশু তাঁকে বললেন, “তোমরা কেউই কোন অলৌকিক চিহ্ন ও বিস্ময়কর কাজের নিদর্শন না পেলে আমার উপর বিশ্বাস করবে না।”

49 সেই রাজকর্মচারী তাঁকে বললেন, “মহাশয়, আমার ছেলেটি মারা যাবার আগে অনুগ্রহ করে আসুন!”

50 যীশু তাঁকে বললেন, “বাড়ি যাও, তোমার ছেলে বেঁচে গেল।”

যীশু তাঁকে যে কথা বললেন, সে কথা তিনি বিশ্বাস করে বাড়ি চলে গেলেন। 51 তিনি যখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন তখন পথে তাঁর চাকররা তাঁর সঙ্গে দেখা করে বলল, “আপনার ছেলে ভাল হয়ে গেছে।”

52 তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “সে কখন ভাল হয়েছে?”

তারা বলল, “গতকাল দুপুর একটার সময় তার জ্বর ছেড়েছে।”

53 ছেলেটির বাবা বুঝতে পারলেন যে ঠিক সেই সময়ই যীশু তাঁকে বলেছিলেন, “তোমার ছেলে বাঁচল।” তখন সেই রাজকর্মচারী ও তাঁর পরিবারের সকলে যীশুর ওপর বিশ্বাস করলেন।

54 যিহূদিয়া থেকে গালীলে আসার পর যীশু এই দ্বিতীয় বার অলৌকিক কাজ করলেন।

হিতোপদেশ 1

ভূমিকা

এই নীতি কথাগুলি দায়ূদের পুত্র শলোমনের জ্ঞানগর্ভ শিক্ষামালা। শলোমন ছিলেন ইস্রায়েলের রাজা। মানুষকে জ্ঞানী করে তোলা এবং তাদের সঠিক পথের সন্ধান দেওয়াই এই কথাগুলির উদ্দেশ্য। এই কথাগুলির মাধ্যমে লোকে জ্ঞানগর্ভ শিক্ষামালা অনুধাবন করতে পারবে। এই কথাগুলি লোকদের সঠিক পথ বুঝতে সাহায্য করে। মানুষ সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও ধার্মিকতার পথ শিখবে। যাঁরা জ্ঞান অর্জন করতে চান সেই লোকদের এই কথাগুলি শিক্ষা প্রদান করবে। এই জ্ঞান কি করে প্রয়োগ করতে হবে এই শিক্ষামালা যুবসম্প্রদায়কে তাও শিখিয়ে দেবে। এমনকি জ্ঞানী ব্যক্তিদেরও এই নীতি কথাগুলি শোনা উচিৎ‌। এই শিক্ষামালার মাধ্যমে তাঁদের জ্ঞানের ব্যপ্তি বৃদ্ধি পাবে, তাঁরা আরো পণ্ডিত হয়ে উঠবেন। যে সব লোক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে দক্ষ তাঁরা আরও বেশী বোধ লাভ করবেন। তখন ঐসব লোকরা জ্ঞানপূর্ণ রচনাবলী এবং কাহিনীসমূহ যাদের মধ্যে রূপক অর্থ রয়েছে সেগুলো বুঝতে পারবেন। তাঁরা জ্ঞানবানদের কথাগুলি অনুধাবন করতে সফল হবেন।

প্রভুকে মান্য করা এবং শ্রদ্ধা করাই হল মানুষের সর্বপ্রথম কর্তব্য। এটা তাদের প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করে। কিন্তু শয়তান বোকারা অনুশাসন এবং যথার্থ জ্ঞানকে ঘৃণা করে।

পুত্রের উদ্দেশ্যে শলোমনের উপদেশ

আমার পুত্র,[a] তোমার পিতা যখন তোমাকে সংশোধন করেন তখন তাঁর উপদেশ শোন। তোমার মায়ের পরামর্শও অবহেলা কোরো না। তোমার পিতামাতার দেওয়া শিক্ষাসমূহ তোমার মাথার ওপর একটি সুন্দর মালার মত অথবা একটি কন্ঠহারের মতো যেটা তোমাকে দেখতে আকর্ষক করে তোলে।

10 পুত্র আমার, পাপীরা তোমাকেও পাপের পথে টানতে চেষ্টা করবে। ঐ পাপীদের কথায় কর্ণপাত কোরো না। 11 ঐসব পাপী লোকরা হয়তো তোমাকে বলবে, “আমাদের দলে এসো! আমরা একটি লোককে হঠাৎ‌‌ আক্রমণ ও হত্যা করতে যাচ্ছি। আমরা একজন নিরীহ লোককে আক্রমণ করব। 12 আমরা তাকে হত্যা করব। আমরা ঐ লোকটিকে মৃত্যুস্থলে পাঠিয়ে দেব। আমরা তাকে কবরে পাঠাব। 13 আমরা সর্বপ্রকার বহুমূল্য সামগ্রী চুরি করব। আমরা সেই চুরি করা ধনসম্পত্তি দিয়ে আমাদের গৃহ পরিপূর্ণ করব। 14 তাই আমাদের সঙ্গে চলে এসো, আমাদের সাহায্য কর। ঐ লুন্ঠিত ধন আমরা সবাই ভাগাভাগি করে নেব!”

15 পুত্র, ঐ পাপীদের অনুসরণ কোরো না। তাদের পাপের পথে এক পাও অগ্রসর হয়ো না। 16 ঐসব খারাপ লোকরা পাপ কাজ করতে সর্বদাই প্রস্তুত। তারা সর্বদা লোকদের হত্যা করতে চায়।

17 লোকরা পাখী ধরতে জাল পাতে। কিন্তু জাল যখন পাতা হচ্ছে তখন যদি পাখীরা দেখে ফেলে তাহলে কোন লাভ হবে না। 18 তাই পাপীরা কাউকে হত্যা করার আগে তার জন্য লুকিয়ে প্রতীক্ষা করে। কিন্তু ওরা নিজেদের পাতা ফাঁদে পা দিয়েই ধ্বংস হবে! 19 লোভী লোকরা তাদের নিজেদের কুকর্মের জন্য তাদের জীবন হারায়।

প্রজ্ঞা—এক গুণবতী রমণী

20 শোন! প্রজ্ঞা মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সে (প্রজ্ঞা) পথেঘাটে এবং জনবহুল বাজারে চিৎকার করছে। 21 সে জনবহুল রাস্তার বাঁকগুলিতে চিৎকার করছে। সে শহরের ফটকগুলির কাছে লোকদের উদ্দেশ্য করে চেঁচাচ্ছে। প্রজ্ঞা বলছে:

22 “ওহে বোকা লোকরা, আর কতদিন ধরে তোমরা তোমাদের নির্বোধের মত জীবনযাপন করাকে ভালবেসে চলবে? আরও কতকাল প্রজ্ঞাকে[b] উপহাস করা উপভোগ করবে? হীনবুদ্ধিরা কতদিন জ্ঞানকে ঘৃণা করবে? 23 আমার শিক্ষামালার প্রতি তোমাদের যথাযোগ্য মনোযোগ দেওয়া উচিৎ‌ ছিল। আমি তোমাদের আমার জ্ঞান দিয়ে দিতাম। আমি আমার ভাবনাগূলোকে তোমাদের জ্ঞাত করতাম।

24 “কিন্তু তোমরা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিলে। আমি তোমাদের সাহায্য করতে চেয়েছিলাম। আমি তোমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম—কিন্তু তোমরা আমার সাহায্য গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলে। 25 তোমরা আমার তিরস্কার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলে। তোমরা আমার সঙ্গে এক মত হতে সম্মত হলে না। 26 অতএব, তোমরা যখন সংকটে পড়বে তখন আমি তোমাদের নিয়ে পরিহাস করব। তোমাদের কাছে যখন সন্ত্রাস আসবে তখন আমি তোমাদের উপহাস করব। 27 সন্ত্রাস ভয়ঙ্কর ঝড়ের মত তোমাদের অতর্কিতে গ্রাস করবে। সংকটসমূহ প্রবল বাতাসের মত তোমাদের ওপর আঘাত হানবে। তোমরা নিদারুণ যন্ত্রণা ও দুঃখে পড়বে।

28 “যখনই এই ধরণের বিপর্যয় ঘটবে তোমরা আমার সাহায্য চাইবে। কিন্তু আমি তোমাদের সাহায্য করব না। তোমরা আমাকে খুঁজবে কিন্তু পাবে না। 29 আমি তোমাদের সাহায্য করব না। কারণ তোমরা জ্ঞানকে অস্বীকার করেছো। তোমরা প্রভুকে ভয় ও ভক্তি করতে রাজি হও নি। 30 তোমরা আমার উপদেশে কর্ণপাত কর নি। আমি যখন তোমাদের সঠিক পথের সন্ধান দিতে চেয়েছি, তোমরা রাজি হও নি। 31 তোমরা তোমাদের ইচ্ছে মত বাঁচতে চেয়েছ। তোমরা নিজেদের মতই অনুসরণ করেছ। তাই তোমাদের কৃতকর্মের ফল তোমরাই ভোগ করবে।

32 “নির্বোধরা ধ্বংস হয় কারণ তারা জ্ঞানের পথ অনুসরণ করতে অস্বীকার করে। তারা বিপথে চালিত হয় এবং নিজেদের পতন ডেকে আনে। 33 কিন্তু যে ব্যক্তি আমাকে মেনে চলে সে নিরাপদে বাস করবে। সে সর্বদা স্বাচ্ছন্দে থাকবে, সে কখনও কোন মন্দকে ভয় করবে না।”

2 করিন্থীয় 13

শেষ সতর্ক বার্তা ও শুভেচ্ছা

13 এই তৃতীয়বার আমি তোমাদের কাছে যাচ্ছি। “দুই বা তিন জন সাক্ষীর প্রমাণ দ্বারা প্রত্যেক মামলার নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।”(A) দ্বিতীয় বার আমি যখন তোমাদের ওখানে গিয়েছিলাম, তখন যারা পাপ জীবনযাপন করছিল তাদের আমি তখনই সতর্ক করে দিয়েছিলাম। এখন যখন আমি দূরে তখন আবার তোমাদের সাবধান করছি। যখন আমি পুনরায় তোমাদের দেখতে আসব, তখন সেইসব পাপীদের অথবা অন্য যে কেউ পাপ করে তাকে রেহাই দেব না। কারণ খ্রীষ্ট, যিনি আমার মাধ্যমে কথা বলেন, তোমরা তো তাঁরই প্রমাণ চাও। তিনি তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে দুর্বল নন, বরং তিনি তোমাদের মধ্যে শক্তিমান। কারণ এটা সত্য যে তিনি তাঁর দুর্বলতার জন্য ক্রুশের ওপর পেরেক বিদ্ধ হয়েছিলেন; কিন্তু ঈশ্বরের পরাক্রমে তিনি এখন জীবিত। এও সত্য যে আমরাও তাঁতে (খ্রীষ্টে) দুর্বল, কিন্তু তোমাদের জন্য আমরা ঈশ্বরের পরাক্রম দ্বারা তাঁর সাথে বাস করব।

নিজেদের পরীক্ষা করে দেখ, তোমাদের বিশ্বাস আছে কি না; প্রমাণের জন্য নিজেদের যাচাই কর। তোমরা কি জান না যে খ্রীষ্ট যীশু তোমাদের মধ্যে আছেন? কিন্তু এ বিষয়ে যদি তোমাদের অন্তরে সেই প্রমাণ না পাও, তবে খ্রীষ্ট তোমাদের মধ্যে নেই। আশা করি তোমরা একথা স্বীকার করবে যে আমরা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। আমরা ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করি, যেন তোমরা কোন অন্যায় না কর। এর অর্থ এই নয় যে আমরা যে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি সেটা স্পষ্ট হোক্ বরং আমরা ব্যর্থ হয়েছি মনে হলেও যেন যা ন্যায় তোমরা তাই কর। কারণ আমরা সত্যের বিপক্ষে কিছুই করতে পারি না, কেবল সত্যের সপক্ষে করতে পারি। তোমরা শক্তিশালী হলে আমরা দুর্বল হলেও আনন্দ করি। আমরা প্রার্থনাও করি, যেন তোমাদের খ্রীষ্টীয় জীবন উত্তরোত্তর শক্তিশালী হয়ে ওঠে। 10 এই কারণে যখন আমি তোমাদের থেকে দূরে তখন আমি এই সমস্ত লিখছি; যাতে আমি যখন তোমাদের সাথে থাকব, তখন আমাকে যেন তোমাদের শাস্তি দিতে বা তিরস্কার করতে না হয়। সেই ক্ষমতা তোমাদের ভেঙে ফেলবার জন্য নয়, কিন্তু তোমাদের আত্মিক জীবন গড়ে তোলবার জন্যই প্রভু আমাকে দিয়েছেন।

11 আমার ভাই ও বোনেরা, সব শেষে বলি, বিদায়। সিদ্ধি লাভের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা কর, আমি যা বলেছি সেই অনুসারে কাজ কর, একমনা হও, মিলে মিশে শান্তিতে থাক, তাতে প্রেমের ও শান্তির ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে থাকবেন।

12 পবিত্র চুম্বন দিয়ে পরস্পরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিও। ঈশ্বরের পবিত্র লোকেরা তোমাদের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

13 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ, ঈশ্বরের প্রেম এবং পবিত্র আত্মার সহভাগীতা তোমাদের সকলের সহবর্তী হোক্।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International