M’Cheyne Bible Reading Plan
ঈশ্বর এবং ইস্রায়েলের চুক্তি
24 প্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি, হারোণ, নাদব, অবীহূ এবং ইস্রায়েলের 70 জন প্রবীণ নেতৃবৃন্দ পর্বতের ওপর উঠে এসে দূর থেকে আমার উপাসনা করো। 2 কিন্তু মোশি একাই প্রভুর কাছে আসবে। অন্যরা যেন প্রভুর কাছে না যায়। এমনকি বাকী লোকরা মোশির সঙ্গে পর্বতে উঠবে না।”
3 প্রভুর সমস্ত নির্দেশ ও সমস্ত বিধি মোশি লোকদের বলল। তখন সবাই রাজী হল এবং বলল, “আমরা প্রভুর সমস্ত নির্দেশ মেনে চলব।”
4 তখন মোশি একটি খাতায় প্রভুর সমস্ত নির্দেশ লিখে রাখল। পরদিন সকালে সে জেগে উঠল এবং পর্বতের পাদদেশে একটি বেদী এবং ইস্রায়েলের দ্বাদশ পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে বারোটি স্তম্ভ নির্মাণ করল। 5 তারপর মোশি ইস্রায়েলের যুবকদের পাঠাল প্রভুর বেদীতে কিছু উৎসর্গের জন্য। এই যুবকরা হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য স্বরূপ প্রভুর কাছে ষাঁড়গুলি উৎসর্গ করল।
6 পশু বলির সময় মোশি পাত্রগুলিতে অর্ধেক রক্ত রাখল এবং বাকী রক্ত বেদীর ওপর ঢেলে দিল।
7 মোশি তখন খাতাটি নিয়ে তাতে লেখা চুক্তিগুলি চেঁচিয়ে পড়তে থাকল। লোকরা তা শুনে বলে উঠল, “আমরা প্রভুর দেওয়া বিধিগুলি শুনেছি এবং আমরা তা মানতে রাজি আছি।”
8 তখন মোশি লোকদের মাঝে উঠে দাঁড়াল এবং ঐ পাত্রগুলিতে রাখা রক্ত ছিটিয়ে দিল। সে বলল, “দেখ, এই হচ্ছে সেই রক্ত যা তোমাদের সঙ্গে প্রভুর চুক্তির সূচনা করে। চুক্তিটিকে ব্যাখ্যা করার জন্যই ঈশ্বর তোমাদের জন্য বিধি প্রণয়ন করেছেন।”
9 এরপর মোশি, হারোণ, নাদব, অবীহূ এবং ইস্রায়েলের 70 জন প্রবীণ নেতৃবৃন্দ সেই পর্বতে চড়ল। 10 পর্বতের ওপর তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে দেখতে পেল। ঈশ্বর নীল আকাশের মতো স্বচ্ছ নীলকান্ত মণির রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। 11 ইস্রায়েলের প্রবীণদের প্রত্যেকে ঈশ্বরকে দেখতে পেল। কিন্তু ঈশ্বর তাদের ধ্বংস করেন নি।[a] পরিবর্তে তারা সবাই একত্রে ভোজন ও পান করল।
মোশি ঈশ্বরের বিধির জন্য গেল
12 প্রভু মোশিকে বললেন, “পর্বতের ওপর আমার কাছে এসো এবং ওখানে থাকো। আমি লোকদের জন্য আমার শিক্ষামালা ও বিধিগুলি দুটো প্রস্তর ফলকে লিখে রেখেছি। আমি এই প্রস্তর ফলকগুলি তোমাকে দিতে চাই।”
13 তখন মোশি ও তার পরিচারক যিহোশূয় ঈশ্বরের কাছে যাওয়ার জন্য পর্বতে চড়লো। 14 মোশি প্রবীণ নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলল, “এখানে তোমরা আমাদের দুজনের জন্য অপেক্ষা করো। আমরা তোমাদের কাছে ফিরে আসব। আমি যাবার পর তোমাদের কারো কোন সমস্যা হলে হারোণ ও হূরের কাছে যাবে।”
মোশি ঈশ্বরের সাক্ষাৎ পেল
15 মোশি যখন পর্বতে উঠল তখন পর্বত মেঘে আচ্ছন্ন ছিল। 16 সীনয় পর্বতে প্রভুর মহিমা স্থায়ী হল। ছয় দিন পর্বত মেঘে ঢেকে রইল এবং সপ্তম দিনে ঈশ্বর মেঘের ভেতর থেকে মোশির সঙ্গে কথা বললেন। 17 আর তখন ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর মহিমা দেখতে পেল। যেন এক আগুনের গোলা জ্বলছিল পর্বতের চূড়ায়।
18 তখন মোশি মেঘের মধ্যে দিয়েই পর্বতের চূড়ায় উঠতে লাগল। মোশি ঐ পর্বতে 40 দিন ও 40 রাত কাটিয়েছিল।
যীশু ও নীকদীম
3 ফরীশীদের মধ্যে নীকদীম নামে একজন লোক ছিলেন। তিনি ইহুদী সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা। 2 একদিন রাতে তিনি যীশুর কাছে এসে বললেন, “গুরু, আমরা জানি আপনি একজন শিক্ষক, ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন। ঈশ্বর সহায় না হলে কেউ কি ঐরূপ অলৌকিক কাজ করতে পারে, যা আপনি করছেন?”
3 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, নতুন জন্ম না হলে কোন ব্যক্তি ঈশ্বরের রাজ্য দেখতে পাবে না।”
4 নীকদীম তাঁকে বললেন, “মানুষ বৃদ্ধ হয়ে গেলে কেমন করে তার আবার নতুন জন্ম হতে পারে? সে নিশ্চয়ই দ্বিতীয় বার মায়ের গর্ভে প্রবেশ করে আবার জন্মাতে পারে না!”
5 যীশু তাঁকে বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি কোন লোক জল ও আত্মা থেকে না জন্মায়, তবে সে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না। 6 শরীর থেকেই শরীরের জন্ম হয় আর আত্মা থেকে জন্ম হয় আধ্যাত্মিকতার। 7 আমি তোমাকে যা বললাম, তাতে আশ্চর্য হয়ো না, ‘তোমাদের নতুন জন্ম হওয়া অবশ্যই দরকার।’ 8 বাতাস যেদিকে ইচ্ছা সেদিকে বয় আর তুমি তার শব্দ শুনতে পাও; কিন্তু কোথা থেকে আসে আর কোথায় বা তা বয়ে যায় তুমি তা জানো না। আত্মা থেকে যাদের জন্ম হয় তাদের সকলের বেলাও সেইরকম হয়।”
9 এর উত্তরে নীকদীম তাঁকে বললেন, “এটা কেমন করে হতে পারে?”
10 তখন যীশু তাঁকে বললেন, “তুমি ইস্রায়েলীয়দের একজন গুরুত্বপূর্ণ গুরু; আর তুমি এটা জানো না? 11 যা সত্য আমি তোমাকে তাই বলছি, আমরা যা জানি তাই বলি, আমরা যা দেখেছি সেই বিষয়েই সাক্ষ্য দিই: কিন্তু আমরা যাই বলি না কেন তোমরা তা গ্রহণ করো না। 12 আমি তোমাদের কাছে পার্থিব বিষয়ের কথা বললে তোমরা যদি বিশ্বাস না করো, তবে আমি স্বর্গীয় বিষয়ে কোন কথা বললে তোমরা তা কেমন করে বিশ্বাস করবে? 13 যিনি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছেন সেই মানবপুত্র ছাড়া কেউ কখনও স্বর্গে ওঠেনি।
14 “মরুভূমির মধ্যে মোশি যেমন সাপকে উঁচুতে তুলেছিলেন, তেমনি মানবপুত্রকে অবশ্যই উঁচুতে ওঠানো হবে। 15 সুতরাং যে কেউ মানবপুত্রকে বিশ্বাস করে সেই অনন্ত জীবন পায়।”
16 কারণ ঈশ্বর এই জগতকে এতোই ভালবাসেন যে তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে দিলেন, যেন সেই পুত্রের ওপর যে কেউ বিশ্বাস করে সে বিনষ্ট না হয় বরং অনন্ত জীবন লাভ করে। 17 ঈশ্বর জগতকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য তাঁর পুত্রকে এ জগতে পাঠাননি, বরং জগত যেন তাঁর মধ্য দিয়ে মুক্তি পায় এইজন্য ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠিয়েছেন। 18 যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে তার বিচার হয় না। কিন্তু যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে না, সে দোষী সাব্যস্ত হয়, কারণ সে ঈশ্বরের একমাত্র পুত্রের ওপর বিশ্বাস করে নি। 19 আর এটাই বিচারের ভিত্তি। জগতে আলো এসেছে, কিন্তু মানুষ আলোর চেয়ে অন্ধকারকে বেশী ভালবেসেছে, কারণ তারা মন্দ কাজ করেছে। 20 যে কেউ মন্দ কাজ করে সে আলোকে ঘৃণা করে, আর সে আলোর কাছে আসে না, পাছে তার কাজের স্বরূপ প্রকাশ হয়ে পড়ে। 21 কিন্তু যে কেউ সত্যের অনুসারী হয় সে আলোর কাছে আসে, যাতে সেই আলোতে স্পষ্ট বোঝা যায় যে তার সমস্ত কাজ ঈশ্বরের মাধ্যমে হয়েছে।
যীশু এবং বাপ্তিস্মদাতা যোহন
22 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে যিহূদিয়া প্রদেশে এলেন। তিনি সেখানে তাঁদের সঙ্গে থাকতে লাগলেন ও বাপ্তাইজ করতে লাগলেন। 23 যোহনও শালীমের নিকট ঐনোন নামক স্থানে বাপ্তাইজ করছিলেন, কারণ সেখানে প্রচুর জল ছিল; আর লোকেরা তাঁর কাছে এসে বাপ্তিস্ম নিচ্ছিল। 24 যোহন তখনও কারাগারে বন্দী হন নি।
25 সেই সময় ইহুদী রীতি অনুসারে শুচি হওয়ার বিষয়ে যোহনের শিষ্যদের সঙ্গে একজন ইহুদীর তর্ক বাধে। 26 পরে তারা যোহনের কাছে এসে বলল, “গুরু, তাঁকে মনে পড়ে যিনি যর্দন নদীর ওপারে আপনার সঙ্গে ছিলেন এবং যাঁর বিষয়ে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন? তিনি লোকেদের বাপ্তাইজ করছেন আর সবাই তাঁর কাছে যাচ্ছে।”
27 এর উত্তরে যোহন বললেন, “স্বর্গ থেকে দেওয়া না হলে কেউই কোন কিছু লাভ করতে পারে না। 28 তোমরা নিজেরাই শুনেছ যে আমি বলেছিলাম, ‘আমি খ্রীষ্ট নই; কিন্তু আমাকে তাঁর আগেই পাঠানো হয়েছে।’ 29 কনে বরেরই জন্য, কিন্তু বরের বন্ধু পাশে দাঁড়িয়ে থাকে বরের কথা শোনার জন্য। আর সে যখন বরের গলা শুনতে পায় তখন খুবই আনন্দিত হয়। তাই আজ আমার সেই আনন্দ পূর্ণ হল। 30 তিনি উত্তরোত্তর বড় হবেন, আর আমি অবশ্যই নগন্য হয়ে যাব।
একজন যিনি স্বর্গ থেকে আসেন
31 “একজন যিনি উর্দ্ধ থেকে আসেন তিনি সবার উর্দ্ধে। যে এই জগতের মধ্য থেকে আসে সে জগতের, তাই সে যা কিছু বলে তা জগতের বিষয়েই বলে। যিনি স্বর্গ থেকে আসেন তিনি সবার উপরে। 32 তিনি যা দেখেছেন আর শুনেছেন তারই সাক্ষ্য দেন; কিন্তু কেউই তাঁর সাক্ষ্য মেনে নিতে রাজী নয়। 33 যে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করে সে তার দ্বারা প্রমাণ করে যে ঈশ্বরই সত্য, 34 কারণ ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন তিনি ঈশ্বরের কথাই বলেন। ঈশ্বর তাঁকে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ করেছেন। 35 পিতা তাঁর পুত্রকে ভালবাসেন, আর তিনি তাঁর হাতেই সব কিছু সঁপে দিয়েছেন। 36 যে কেউ পুত্রের ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবনের অধিকারী হয়; কিন্তু যে পুত্রকে অমান্য করে সে সেই জীবন কখনও লাভ করে না, বরং তার ওপরে ঈশ্বরের ক্রোধ থাকে।”
প্রভুর প্রতি ইয়োবের উত্তর
42 তখন ইয়োব প্রভুকে উত্তর দিলেন। ইয়োব বললেন,
2 “প্রভু, আমি জানি আপনি সব কিছু করতে পারেন।
আপনি পরিকল্পনা করেন, কোন কিছুই আপনার পরিকল্পনাকে পরিবর্তিত করতে বা রোধ করতে পারে না।
3 প্রভু, আপনি এই প্রশ্ন করেছেন: ‘কে সেই অজ্ঞ লোক যে এমন বোকা বোকা কথা বলছে?’
প্রভু, আমি যা বুঝি নি আমি তা বলেছি।
আমি সেই সব বিষয়ের কথা বলেছি যেগুলো বুঝতে গেলে আমি বিস্ময়-বিহবল হয়ে যাই।
4 “প্রভু, আপনি আমায় বলেছেন, ‘শোন ইয়োব, এখন আমি বলবো।
আমি তোমাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবো এবং তুমি আমাকে তার উত্তর দেবে।’
5 প্রভু, অতীতে আমি আপনার সম্বন্ধে শুনেছিলাম,
কিন্তু এখন আমার নিজের চোখে আমি আপনাকে দেখলাম।
6 তাই, আমার জন্য আমি লজ্জিত।
আমি ছাই ও ধূলার মধ্যে দুঃখের সঙ্গে
আমার অপরাধ স্বীকার করছি।”
প্রভু ইয়োবকে তার সম্পদ ফিরিয়ে দিলেন
7 ইয়োবের সঙ্গে কথা শেষ করার পর, প্রভু তৈমন থেকে আসা ইলীফসের সঙ্গে কথা বললেন। প্রভু ইলীফসকে বললেন, “আমি তোমার প্রতি ও তোমার দুই বন্ধুর প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছি। কেন? কারণ তোমরা আমার সম্পর্কে সঠিক কথা বলো নি। কিন্তু ইয়োব আমার সেবক এবং ইয়োব আমার সম্পর্কে সঠিক কথা বলেছে। 8 তাই ইলীফস, এখন তুমি সাতটা বলদ ও সাতটা ভেড়া নাও। আমার সেবক ইয়োবের কাছে তা নিয়ে যাও। ওদের হত্যা কর এবং তোমাদের জন্য হোমবলি হিসেবে উৎসর্গ কর। আমার সেবক ইয়োব তোমাদের জন্য প্রার্থনা করবে এবং আমি তার প্রার্থনার উত্তর দেবো। তাহলে তোমাদের যা শাস্তি প্রাপ্য তা আমি দেব না। তোমাদের শাস্তি পাওয়া উচিৎ কারণ তোমরা ভীষণ নির্বোধ। তোমরা আমার সম্পর্কে সঠিক কথা বলনি। কিন্তু আমার সেবক ইয়োব আমার সম্পর্কে সঠিক কথা বলেছে।”
9 তখন তৈমনীয় ইলীফস, শূহীয় বিল্দদ এবং নামাথীয় সোফর প্রভুর আদেশ পালন করলেন এবং তারপর ইয়োব তাঁদের জন্য যে প্রার্থনা করেছিলেন, প্রভু তার উত্তর দিলেন।
10 ইয়োব তাঁর বন্ধুদের জন্য প্রার্থনা করলেন। প্রভু ইয়োবকে আবার সাফল্য দিলেন। ইয়োবের যা ছিলো, ঈশ্বর তাকে তার দ্বিগুণ দিলেন। 11 তখন ইয়োবের সব ভাইবোন এবং অন্য সবাই যারা ইয়োবকে জানতো, তারা তাঁর বাড়ীতে এলো। তারা ইয়োবকে সান্ত্বনা দিলো, প্রভু যে ইয়োবকে এত কষ্ট দিয়েছেন তার জন্য তারা দুঃখিত হল। প্রত্যেকে ইয়োবকে এক টুকরো করে রূপো[a] ও একটি করে সোনার আংটি দিল।
12 শুরুতে ইয়োবের যা ছিলো, তার থেকে অনেক বেশী সম্পদ দিয়ে প্রভু ইয়োবকে আশীর্বাদ করলেন। ইয়োব 14,000 মেষ, 6000 উট, 2000 গাভী এবং 1000 স্ত্রী গাধা পেলেন। 13 ইয়োব সাত পুত্র এবং তিন কন্যাও পেলেন। 14 ইয়োব প্রথম কন্যার নাম রাখলেন যিমীমা। দ্বিতীয় কন্যার নাম রাখলেন কৎসীয়া এবং তৃতীয় কন্যার নাম রাখলেন কেরণহপপূক। 15 ইয়োবের কন্যারা সারা দেশের মধ্যে সব চেয়ে সুন্দরী নারী ছিল। ইয়োব তাঁর সম্পত্তির একটি অংশ তাঁর কন্যাদের দিলেন—ওরা ওদের ভাইদের মতোই সম্পত্তির অংশ পেল।
16 ইয়োব আরও 140 বছর বেশী বেঁচেছিলেন। তিনি তাঁর সন্তানদের চারটি প্রজন্ম দেখবার জন্য বেঁচে ছিলেন। 17 ইয়োব খুব বৃদ্ধ বয়সে মারা গেলেন।
পৌলের জীবনে এক বিশেষ আশীর্বাদ
12 গর্ব করা আমার প্রয়োজন, যদিও এর দ্বারা কোন লাভই হয় না। কিন্তু প্রভুর দেওয়া নানা দর্শন ও প্রকাশের সম্পর্কে আমাকে বলতে হবে। 2 আমি খ্রীষ্টে আশ্রিত একটি লোককে জানি, চোদ্দ বছর আগে যাকে তৃতীয় স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সশরীরে না অশরীরে তা জানি না, ঈশ্বর জানেন। 3-4 এই লোকটির ব্যাপার আমি জানি, সশরীরে কি অশরীরে, তা আমি জানি না, ঈশ্বর জানেন। সে স্বর্গোদ্যানে থাকায় এমন সব বিস্ময়কর কথা শুনেছিল, যা নিয়ে মানুষের কথা বলা উচিত নয়। 5 এমন লোকের জন্য গর্ব করব; কিন্তু নিজের জন্য গর্ব করব না। কেবল নানা দুর্বলতার জন্য গর্ব করব।
6 যদি আমি নিজের বিষয়ে গর্ব করি তাতেও মূর্খতার পরিচয় দেব না, কারণ আমি সত্যি কথাই বলব। তবুও নিজের বিষয়ে বড়াই করব না কারণ আমাকে তারা যেমন দেখছে এবং আমার কথা যেমন শুনছে, আমাকে যেন তার থেকে মহান বলে মনে না করে।
7 ঐসব অসাধারণ প্রকাশের অভিজ্ঞতার জন্য আমি যেন গর্ব না করি, সেইজন্য আমার দেহে একটা কাঁটা (কষ্টদায়ক সমস্যা) দেওয়া হল। যেন শয়তানের এক দূত আমাকে আঘাত করে, যাতে আমি অতি মাত্রায় গর্ব না করি। 8 এই ব্যাপারে আমি প্রভুর কাছে তিনবার প্রার্থনা করেছিলাম, যাতে ওর থেকে আমি মুক্তি পাই। 9 কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, “আমার অনুগ্রহ তোমার জন্য যথেষ্ট; কারণ দুর্বলতার মধ্যে আমার শক্তি সম্পূর্ণতা লাভ করে।” এজন্য আমি বরং অত্যধিক আনন্দের সঙ্গে নানা দুর্বলতার গর্ব করব, যাতে খ্রীষ্টের পরাক্রম আমার ওপরে অবস্থান করে। 10 যখন কোন সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাই তখনও আমি আনন্দ পাই। যখন অন্যরা আমায় নির্যাতন করে তাতে আমি আনন্দ পাই; যখন আমার সমস্যা থাকে তখনও আমি আনন্দ পাই। এইসব আমি খ্রীষ্টের জন্য সহ্য করি, কারণ যখন আমি দুর্বল, তখনই আমি বলবান।
করিন্থীয় খ্রীষ্টীয়ানদের জন্য পৌলের ভালবাসা
11 আমি বোকার মতো কথা বলছি; তোমরাই আমাকে জোর করে বোকা বানালে। কারণ আমার প্রশংসা করা তোমাদের উচিত ছিল, যদিও আমি কিছু নই, তবু সেই “মহান প্রেরিতদের” থেকে কোন অংশে ছোট নই। 12 আমি যে একজন প্রেরিত তার সমস্ত প্রমাণ আমি তোমাদের দিয়েছি এবং প্রকৃত প্রেরিতদের মত ধৈর্য্যের সঙ্গে নানা অলৌকিক চিহ্ন ও আশ্চর্য কাজ সম্পন্ন করেছি। 13 অন্য সমস্ত মণ্ডলী যা পেয়েছে তোমরাও সেই একই জিনিস পেয়েছ। তবে তোমরা কোন্ বিষয়ে অন্য মণ্ডলীর থেকে ছোট হলে? কেবল একটি বিষয়ে তোমরা ভিন্ন। আমি তোমাদের গলগ্রহ হই নি, এ যদি অন্যায় হয়ে থাকে তবে আমাকে সেই ভুলের জন্য ক্ষমা করো।
14 দেখ, এই তৃতীয়বার আমি তোমাদের কাছে যেতে প্রস্তুত হয়েছি। আমি তোমাদের বোঝা হব না, কারণ আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন কিছু চাই না, আমি কেবল তোমাদেরই চাই। কারণ বাবা-মায়ের জন্য অর্থ সঞ্চয় করা ছেলেমেয়েদের কর্তব্য নয়, বরং ছেলেমেয়েদের জন্য বাবা-মায়েরই সঞ্চয় করা কর্তব্য। 15 আমার যা কিছু আছে সে সবই তোমাদের অতি আনন্দের সঙ্গে দেব, এমন কি তোমাদের জন্য আমি নিজেকেও ব্যয় করব। তোমাদের জন্য আমার ভালবাসা যখন বেড়েই চলেছে, তখন আমার প্রতি তোমাদের ভালবাসা কি কমে যাবে?
16 যাই হোক্, একথা ঠিক যে আমি তোমাদের ওপর খরচের বোঝা হয়ে দাঁড়াই নি; কিন্তু তোমরা বলো আমি চালাক বলে নাকি ছলেবলে তোমাদের ধরেছি। 17 আমি যাদের তোমাদের কাছে পাঠিয়েছিলাম, তাদের মধ্য দিয়ে আমি কি তোমাদের ঠকিয়েছি? তোমরা জান যে আমি তা করি নি। 18 আমি তীতকে অনুরোধ করেছিলাম এবং তাঁর সাথে অপর এক ভাইকে পাঠিয়েছিলাম। তীত কি তোমাদের ঠকিয়েছেন? তোমরা জান যে তীত ও আমি, আমরা একই মনোভাব নিয়ে কাজ করি, এবং একই রকম আচরণ করি।
19 তোমরা কি মনে কর যে, আমরা নিজেদের রক্ষা করতে তোমাদের কাছে এতদিন ধরে এইসব কথা বলেছি? না, খ্রীষ্টের অনুগামী হিসেবে আমরা এইসব কথা ঈশ্বরের সামনে থেকেই বলেছি। প্রিয় বন্ধুরা, তোমাদের আত্মিকভাবে সবল করার জন্য আমরা এইসব কাজ করেছি। 20 কারণ আমার ভয় হয়, পরে আমি তোমাদের যেরকম দেখতে চাই, গিয়ে সেরকম দেখতে না পাই, এবং তোমরা আমাকে যেরকম দেখতে চাও না পাছে সেরকম দেখ। আমার ভয় হয় যে আমি গিয়ে হয়তো তোমাদের মধ্যে ঝগড়া, হিংসা, ক্রোধ, শত্রুতা, গালাগালি, জল্পনা, অহংকার ও বিশৃঙ্খলা দেখতে পাব। 21 আমার ভয় হচ্ছে পাছে আমি আবার তোমাদের ওখানে গেলে আমার ঈশ্বর তোমাদের সামনে আমার মাথা নীচু করে দেন। যারা আগে পাপ করেছিল, এবং নিজেদের দুষ্টতা, অশুচিতা, যৌন পাপ ও অশোভন কাজের বিষয়ে যাদের মনে কোন অনুতাপ নেই, এদের সকলের জন্য আমাকে হয়তো অনেক দুঃখ ও ব্যথা বহন করতে হবে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International