Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যাত্রা 23

23 “অন্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপবাদ রটিও না। যদি তুমি আদালতে সাক্ষী দিতে যাও তাহলে একজন খারাপ লোককে সাহায্যের জন্য মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না।

“সবাই যা করছে তুমিও তাই করতে যেও না। যদি একটি গোষ্ঠীর মানুষ অন্যায় করে তাহলে তুমিও তাদের দলে গিয়ে ভিড়ে যেও না, বরং তুমি তাদের ইন্ধন না জুগিয়ে যা সঠিক এবং ন্যায্য তাই করো।

“কোন মামলা-মকদ্দমায় কোন দরিদ্র লোককে তোমার বিশেষ অনুগ্রহ করা অবশ্যই উচিৎ‌ নয়।

“যদি কোনও ব্যক্তির বলদ অথবা গাধা হারিয়ে যায় আর তা যদি তুমি খুঁজে পাও তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তুমি হারিয়ে যাওয়া বলদ বা গাধাটিকে তার মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেবে। এমনকি সে যদি তোমার শত্রু হয় তাহলেও তুমি এটাই করবে।

“যদি কোন মালবাহী পশু মালের ভারে আর চলতে না পারার মতো অবস্থায় পৌঁছে যায় তাহলে তুমি সেই পশুটির ভার লাঘব করতে সচেষ্ট হবে। সেই পশুটি যদি তোমার শত্রুও হয় তাহলেও তুমি তা করবে।

“কোনও দরিদ্রের সঙ্গে কোনরকম অন্যায় হতে দিও না। সাধারণ মানুষদের মতোই একই বিধানে সেই দরিদ্রের বিচার হওয়া উচিত।

“কাউকে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করার আগে সচেতন থেকো। কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিও না। কোনও নির্দোষ মানুষকে শাস্তি পেতে দেখলে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাবে। যে একজন নির্দোষ মানুষকে হত্যা করে সে একজন পাপী এবং আমি কখনই তাকে ক্ষমা করব না।

“যদি কেউ তোমাকে তার অন্যায় কাজকর্মের সঙ্গী হবার জন্য ঘুষ দিতে চায় তাহলে তুমি সেই ব্যক্তির প্রস্তাব গ্রহণ করবে না। কারণ ঘুষের অর্থ সত্যকে দেখার দৃষ্টি ঢেকে দেয় এবং এই ধরণের ঘুষের অর্থ ভাল মানুষদের মিথ্যা বলতে প্রলুদ্ধ করে।

“কোনও বিদেশীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে না কারণ এক সময় তোমরা যখন মিশরে ছিলে তোমরাও তখন সে দেশে বিদেশী হিসেবেই বাস করতে।

বিশেষ ছুটির দিন

10 “ছয় বছর ধরে জমিতে চাষ করো, বীজ বোনো, ফসল ফলাও। 11 কিন্তু সপ্তম বছরে আর নিজের জমিকে চাষের জন্য ব্যবহার করবে না। সপ্তম বছরটি হবে জমির বিশেষ বিশ্রামের সময়। তাই জমিতে সে বছর আর কোনও চাষ করবে না। তবু যদি সেই জমিতে কোনও ফসল ফলে তাহলে সেই ফসল গরীব মানুষদের দিয়ে দিতে হবে এবং বাকী যা পড়ে থাকবে তা খেতে দেবে বন্য প্রানীদের। তোমাদের দ্রাক্ষাক্ষেত ও জলপাই গাছগুলির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম খাটাবে।

12 “সপ্তাহে ছদিন কাজ করার পর সপ্তম দিনটি ছুটির দিন হিসাবে ঘোষণা করো। ছুটির দিন শুধু বিশ্রামের জন্য তুলে রাখবে। তুমি অবশ্যই তোমার ক্রীতদাসদের এবং বিদেশীদের এবং এমন কি তোমার গৃহপালিত ষাঁড় এবং গাধাদের সাময়িক অবকাশ দেবে।

13 “এই সমস্ত নিয়মগুলো তুমি সাবধানে মেনে চলবে। অন্য দেবতাদের নামও উচ্চারণ করো না; তোমার মুখে যেন ওগুলো না শুনতে পাওয়া যায়।

14 “তোমাদের জন্য বছরে তিনটি বিশেষ ছুটির দিন থাকবে। তোমাদের আমাকে উপাসনার জন্য নির্দিষ্ট স্থানে আসতে হবে। 15 প্রথম ছুটির দিনটি হবে খামিরবিহীন রুটির উৎসব। আমার নির্দেশ মতো তা পালন করা হবে। এই সময় তোমরা যে রুটি খাবে তা হবে খামিরবিহীন। সাত দিন এইভাবে চলবে। তোমরা এই নির্দেশ পালন করবে আবীব মাসে। কারণ এই সময়ই তোমরা মিশর থেকে ফিরে এসেছিলে। এই আবীব মাসে তোমরা প্রত্যেকে আমাকে উৎসর্গ করার জন্য কিছু না কিছু নিয়ে আসবে।

16 “দ্বিতীয় ছুটির দিনটি হবে ফসল কাটার উৎসব। গ্রীষ্মের প্রথম দিকে এই দ্বিতীয় ছুটির দিন হবে। সে সময় তোমরা ক্ষেতের ফসল কাটবে।

“তৃতীয় ছুটির দিনটি হবে ফসল তোলার উৎসব। বছরের শেষে যখন তোমরা জমি থেকে সব শস্য ঘরে তুলবে তখনই এই উৎসব পালিত হবে।

17 “সুতরাং প্রত্যেক বছরে তিনদিন সকলে সেই নির্দিষ্ট বিশেষ স্থানে জড়ো হয়ে তোমাদের প্রভুর সঙ্গে কাটাবে।

18 “যখন তোমরা পশু বলি দিয়ে তার রক্ত প্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবে তখন আর খামির দেওয়া রুটি উৎসর্গ করবে না। এবং ঐ বলির মাংস তোমরা একদিনে খেয়ে নেবে, পরের দিনের জন্য জমিয়ে রাখবে না।

19 “ক্ষেত থেকে ফসল তোলার সময় সব ফসল তুলে প্রথমে নিয়ে আসবে তোমাদের ঈশ্বরের গৃহে।

“কোন ছাগ শিশুকে তার মায়ের দুধে ফুটিয়ো না।”

ইস্রায়েলকে তার স্বদেশ ফিরিয়ে দিতে ঈশ্বর সাহায্য করবেন

20 ঈশ্বর বললেন, “দেখ তোমাদের জন্য আমি একজন দূত পাঠাচ্ছি। আমি তোমাদের জন্য যে স্থান নির্বাচন করেছি তোমাদের সেইখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার পাঠানো দূত তোমাদের নেতৃত্ব দেবে। ঐ দূত তোমাদের রক্ষা করবে। 21 ঐ দূতকে অমান্য না করে তাকে অনুসরণ করো। তার বিরুদ্ধে কখনও অসন্তোষ প্রকাশ করো না। ঐ দূতের শরীরে আমার শক্তি আছে; সুতরাং সে কোনরকম অন্যায় বরদাস্ত করবে না। 22 তোমরা তার সব কথা মেনে চলবে। আমার সব কথাও অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। যদি তোমরা তা করো তাহলে আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব। তোমাদের শত্রুদের বিরোধিতা করব এবং যারা তোমার বিরুদ্ধে যাবে আমি তাদেরও শত্রুতে পরিণত হব।”

23 ঈশ্বর বললেন, “আমার প্রেরিত দূত তোমাদের আগে আগে যাবে। সে তোমাদের নেতৃত্ব দেবে—ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, কনানীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে। কিন্তু আমি তাদের প্রত্যেককে পরাজিত করব।

24 “তাদের দেবতাদের তোমরা পূজা করবে না। তোমরা সেইসব দেবতাদের কাছে নতজানু হবে না। তাদের জীবনযাপনের সঙ্গে তোমরা নিজেদের জড়াবে না। তোমরা তাদের মূর্তিদের ধ্বংস করবে এবং তোমরা তাদের দেবতাকে মনে রাখার সমস্ত স্তম্ভ ভেঙ্গে ফেলবে। 25 তোমরা সর্বদা তোমাদের প্রভুর সেবা অবশ্যই করবে। আমি তোমাদের রুটি ও জলকে আশীর্বাদ করব। আমি তোমাদের কাছ থেকে সমস্ত রোগ সরিয়ে নেব। 26 তোমাদের মহিলারা সন্তান ধারণে সক্ষম হয়ে উঠবে। তাদের কেউই সন্তান প্রসবকালে মারা যাবে না। আমি তোমাদের দীর্ঘ জীবন দেব।

27 “তোমরা যখন তোমাদের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে তখন আমি তোমাদের শক্তি জোগাবো। তোমাদের শত্রুদের যাতে তোমরা হারাতে পারো তাতে আমি সাহায্য করব। তোমাদের শত্রুরা হতচকিত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাতে শুরু করবে। 28 আমি তোমাদের আগে একটা ভীমরুল[a] পাঠাব। সেই তোমাদের শত্রুদের জোর করে তাড়িয়ে দেবে। হিব্বীয়, কনানীয় ও হিত্তীয়রা তোমাদের দেশ ত্যাগ করে পালাবে। 29 কিন্তু আমি শীঘ্রই ঐ সমস্ত মানুষগুলোকে জোর করে তোমাদের দেশ থেকে তাড়াব না। অন্তত এক বছর আমি ওদের তাড়াব না। কারণ তাহলে খুব তাড়াতাড়ি তোমাদের দেশ জনমানব শূন্য হয়ে পড়বে। ফলে সে সময় বন্য প্রানীরা ঢুকে পড়ে বংশবৃদ্ধির দ্বারা দেশটাকে দখল করে নেবে এবং তখন সেই সমস্ত প্রানীরাই তোমাদের সমস্যা সৃষ্টি করবে। 30 তাই আমি খুব ধীরে ধীরে ঐ মানুষগুলোকে তোমাদের দেশ থেকে তাড়াব। তোমরাও ক্রমশঃ দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে থাকবে আর আমিও ওদের একে একে তাড়াতে থাকব।

31 “সূফ সাগর থেকে ফরাৎ নদী পর্যন্ত সমস্ত জমি তোমাদের দিয়ে দেব। তোমাদের দেশের পশ্চিম সীমান্ত হবে পলেষ্টীয়দের সমুদ্র পর্যন্ত। আর পূর্ব দিকের সীমান্ত হবে আরব দেশের মরুভূমি। এই সীমানার মধ্যে বসবাসকারী প্রত্যেককে আমি তোমাদের দিয়েই পরাজিত করে তাড়িয়ে ছাড়ব।

32 “তোমরা ঐ সমস্ত লোকদের সঙ্গে অথবা তাদের দেবতাদের সঙ্গে কোনরকম চুক্তি করবে না। 33 তাদের তোমাদের দেশে একদম থাকতে দেবে না। যদি থাকতে দাও তাহলে তাদের ফাঁদে পা দিয়ে তোমরা আমার বিরুদ্ধে পাপ করবে এবং তোমরা ঐ লোকদের দেবতাদের পূজা করতে বাধ্য হবে।”

যোহন 2

কান্না নগরে বিবাহ

তৃতীয় দিনে গালীলের কান্না নগরে একটা বিয়ে হচ্ছিল এবং যীশুর মা সেখানে ছিলেন। সেই বিয়ে বাড়িতে যীশু ও তাঁর শিষ্যদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। যখন সমস্ত দ্রাক্ষারস ফুরিয়ে গেল, তখন যীশুর মা তাঁর কাছে এসে বললেন, “এদের আর দ্রাক্ষারস নেই।”

যীশু বললেন, “হে নারী, তুমি আমায় কেন জিজ্ঞাসা করছ কি করা উচিত? আমার সময় এখনও আসেনি।”

তাঁর মা চাকরদের বললেন, “ইনি তোমাদের যা কিছু করতে বলেন তোমরা তাই কর।”

ইহুদী ধর্মের রীতি অনুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে হাত পা ধোয়ার জন্য সেই জায়গায় ছটা পাথরের জলের জালা বসানো ছিল। এই জালাগুলির প্রতিটিতে আশি থেকে একশ লিটার জল ধরত।

যীশু সেই চাকরদের বললেন, “এই জালাগুলিতে জল ভরে আন।” তখন তারা জালাগুলি কানায় কানায় ভরে দিল।

তারপর যীশু তাদের বললেন, “এর থেকে কিছুটা নিয়ে ভোজের কর্তার কাছে নিয়ে যাও।”

তখন তারা তাই করল। জল, যা দ্রাক্ষারসে পরিণত হয়েছিল, ভোজের কর্তা তা আস্বাদ করলেন। সেই দ্রাক্ষারস কোথা থেকে এল তা তিনি জানতেন না; কিন্তু যে চাকররা জল এনেছিল তারা তা জানত। তারপর তিনি বরকে ডাকলেন। 10 তিনি বললেন, “সাধারণতঃ প্রথমে লোকে ভাল দ্রাক্ষারস পরিবেশন করে আর অতিথিরা যখন মাতাল হয়ে ওঠে তখন তাদের নিম্নমানের দ্রাক্ষারস পরিবেশন করা হয়, অথচ আমি দেখছি তোমরা ভাল দ্রাক্ষারস এখনও রেখে দিয়েছ।”

11 এই প্রথম অলৌকিক চিহ্ন করে গালীলের কান্না নগরে যীশু তাঁর মহিমা প্রকাশ করলেন; আর তাঁর শিষ্যেরা তাঁর ওপর বিশ্বাস করল।

12 পরে তিনি তাঁর মা, ভাইদের ও শিষ্যদের সঙ্গে কফরনাহূম শহরে গেলেন। সেখানে তাঁরা অল্প কিছু দিন থাকলেন।

যীশু মন্দিরে

(মথি 21:12-13; মার্ক 11:15-17; লূক 19:45-46)

13 ইহুদীদের নিস্তারপর্ব পালনের সময় এগিয়ে এলে যীশু জেরুশালেমে গেলেন। 14 তিনি দেখলেন মন্দিরের মধ্যে লোকেরা গরু, ভেড়া ও পায়রা বিক্রি করছে; আর পোদ্দাররা বসে আছে, এরা লোকের টাকা নিয়ে বদল ও ব্যবসা করত। 15 তখন তিনি কিছু দড়ি দিয়ে একটা চাবুক তৈরী করে তা দিয়ে গরু, ভেড়া সমেত এইসব লোকদের মন্দির চত্বর থেকে বাইরে বার করে দিলেন আর পোদ্দারদের টাকা পয়সা সব ছড়িয়ে টেবিল উল্টিয়ে দিলেন। 16 যারা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের বললেন, “এখান থেকে এসব নিয়ে যাও! আমার পিতার এই গৃহকে বাজারে পরিণত কোরো না!”

17 তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল শাস্ত্রে লেখা আছে:

“তোমার গৃহের প্রতি আমার উৎসাহ আমাকে গ্রাস করবে।”(A)

18 ইহুদীরা তখন এর জবাবে তাঁকে বলল, “তোমার যে এসব করার অধিকার আছে তার প্রমাণ স্বরূপ কি কোন অলৌকিক চিহ্ন আমাদের দেখাতে পার?”

19 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “তোমরা এই মন্দির ভেঙে ফেলো, আমি তিন দিনের মধ্যে একে আবার গড়ে তুলব।”

20 তখন ইহুদীরা বলল, “এই মন্দির নির্মাণ করতে ছেচল্লিশ বছর লেগেছিল আর তুমি কিনা তিন দিনের মধ্যে এটা গড়ে তুলবে?”

21 কিন্তু যে মন্দিরের কথা তিনি বলছিলেন তা হচ্ছে তাঁর দেহ। 22 যখন তিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হলেন, তখন তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল যে তিনি এই কথাই বলেছিলেন, তখন তাঁরা যীশুর বিষয়ে শাস্ত্রের কথা ও যীশুর বাক্যে বিশ্বাস করলেন।

23 নিস্তারপর্বের জন্য যীশু যখন জেরুশালেমে ছিলেন, তখন বহুলোক তাঁর ওপর বিশ্বাস করল, কারণ যীশু সেখানে যেসব অলৌকিক চিহ্নকার্য করছিলেন তা তারা দেখল। 24 কিন্তু যীশু নিজে তাদের ওপর কোন আস্থা রাখেন নি, কারণ তিনি এইসব লোকদের ভালভাবেই জানতেন। 25 কোন লোকের কাছ থেকে মানুষের সম্বন্ধে কিছু জানার তাঁর প্রয়োজন ছিল না, কারণ মানুষের অন্তরে কি আছে তিনি তা জানতেন।

ইয়োব 41

41 “ইয়োব, তুমি কি দানবাকৃতি সামুদ্রিক প্রাণী লিবিয়াথনকে মাছ ধরার বঁড়শি দিয়ে ধরতে পারো?
    একটা দড়ি দিয়ে ওর জিভকে কি বাঁধতে পারো?
তুমি কি ওর নাকে দড়ি দিতে পারো
    অথবা ওর চোয়ালে বঁড়শি বিঁধিয়ে দিতে পারো?
লিবিয়াথন কি তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য তোমার কাছে আকুতি জানাবে?
    সে কি ভদ্র ভাষায় তোমার সঙ্গে কথা বলবে?
চিরদিন তোমার সেবা করার জন্য
    লিবিয়াথন কি তোমার সঙ্গে কোন চুক্তি করবে?
যেমন করে তুমি একটি পাখির সঙ্গে খেলা কর, তেমন করে কি তুমি লিবিয়াথনের সঙ্গে খেলা করবে?
    তুমি কি তাকে দড়িতে বাঁধতে পারবে যাতে তোমার ছোট মেয়েরা ওর সঙ্গে খেলা করতে পারে?
ব্যবসাদাররা কি তোমার কাছ থেকে লিবিয়াথনকে কেনার চেষ্টা করবে?
    ওরা কি তাকে টুকরো টুকরো করে কেটে সওদাগরের কাছে বিক্রি করতে পারবে?
তুমি কি লিবিয়াথনের চামড়ায বা মাথায় মাছ ধরবার বর্শা বা হারপূন বেঁধাতে পারো?

“ইয়োব, যদি তুমি একবার লিবিয়াথনের গায়ে হাত দাও তুমি আর কখনো সে কাজ করবে না!
    সেই ভয়ঙ্কর যুদ্ধের কথাটা একবার ভাবো তো!
তুমি কি মনে কর তুমি লিবিয়াথনকে পরাজিত করতে পারবে?
    সে কথা ভুলে যাও! তার কোন আশাই নেই।
    ওর দিকে তাকালেই তুমি ভয়ে শিউরে উঠবে!
10 তাকে জাগিয়ে দিয়ে
    রাগিয়ে দেবার সাহস কারো নেই।

“তাই, কে আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সাহস করবে?
11 আমাকে কারো কাছ থেকে কিছুই কিনতে হয়নি।
    ওগুলো সব আমারই অধিকারভুক্ত।

12 “ইয়োব, আমি তোমাকে লিবিয়াথনের পা,
    তার শক্তি এবং তার চেহারার কথা বলবো।
13 কেউই তার চামড়ার দাম দিতে পারে না।
    ওর চামড়া বর্মের মত শক্ত।
14 কোন লোকই জোর করে লিবিয়াথনের মুখ খোলাতে পারে না।
    ওর মুখের দাঁত দেখলে লোকে ভয় পায়।
15 ওর পিঠের পেশী সারিবদ্ধ ভাবে
    দৃঢ়সংবদ্ধ হয়ে আছে।
16 বর্মগুলি এত কাছাকাছি বসানো
    যে ওগুলোর মধ্যে বাতাসও বইতে পারে না।
17 বর্মগুলি একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত।
    বর্মগুলি এতই ঘন, সংবদ্ধ যে ওদের টেনে আলাদা করা যায় না।
18 লিবিয়াথন যখন হাঁচি দেয় তখন আলো ঝলক দিয়ে ওঠে।
    ওর চোখ প্রত্যুষের আলোর মত জ্বলতে থাকে।
19 ওর মুখ থেকে লেলিহান অগ্নি বেরিয়ে আসে।
    আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছিটকে আসে।
20 ফুটন্ত কেটলির তলা দিয়ে যেমন জ্বলন্ত ঘাসের ধোঁয়া বার হয়,
    লিবিয়াথনের নাক দিয়েও তেমনি ধোঁয়া বার হয়।
21 লিবিয়াথনের নিঃশ্বাসে কয়লা জ্বলে যায়,
    ওর মুখ থেকে আগুনের শিখা বার হয়।
22 লিবিয়াথনের গলা ভীষণ শক্তিশালী,
    লোকে তাকে ভয় পায় ও ছুটে পালিয়ে যায়।
23 ওর চামড়ায় কোন কোমল স্থান নেই।
    তা যেন লোহার মত শক্ত।
24 লিবিয়াথনের হৃদয় পাথরের মত।
    তা যেন যাঁতা কলের পাথরের মত শক্ত।
25 যখন লিবিয়াথন জেগে ওঠে, দেবতারাও তখন ভয় পান।
    লিবিয়াথন যখন তার লেজ ঝাপটা দেয়, তখন তাঁরা সন্ত্রস্ত হন।
26 তরবারি, বল্লম বা বর্শা যা দিয়েই লিবিয়াথনকে আঘাত করা হোক্ না কেন তা প্রতিহত হয়ে ফিরে আসে।
    ওই সব অস্ত্র তাকে একদম আঘাত করতে পারে না।
27 লোহাকে লিবিয়াথন খড়কুটোর মত গুঁড়িয়ে দিতে পারে।
    পচা কাঠের মত সে কাঁসাকে ভেঙে দেয়।
28 তীরের ভয়ে লিবিয়াথন পালিয়ে যায় না।
    ওর গা থেকে পাথর খড়কুটোর মতো ছিটকে চলে আসে।
29 যদি মুগুর দিয়ে লিবিয়াথনকে আঘাত করা হয়, তা যেন খড়ের টুকরোর মতো তার গায়ে লাগে।
    লোকে যখন তার দিকে বল্লম ছোঁড়ে তখন সে হাসে।
30 লিবিয়াথনের পেটের চামড়া ধারালো খোলামকুচির মতো।
    সে কাদার ওপর দাগ করে দিয়ে যায়, যেমন তক্তা দিয়ে ফসল মাড়াই করলে দাগ পড়ে—তেমন দাগ।
31 ফুটন্ত জলের মতো লিবিয়াথন জলকে নাড়া দেয়।
    সে জলের ওপর ফুটন্ত তেলের বুদবুদের মতো বুদবুদ সৃষ্টি করে।
32 যখন লিবিয়াথন সাঁতার দেয় তখন সে তার পেছনে একটি চকচকে পথরেখা রেখে যায়।
    সে জলকে ঝাঁকিয়ে দিয়ে যায় এবং জলকে ফেনায়িত করে।
33 পৃথিবীর কোন প্রাণীই লিবিয়াথনের মতো নয়।
    সে ভয়শূন্য প্রাণী।
34 যে প্রাণী সব থেকে বেশী গর্ব করে, লিবিয়াথন তাকেও নীচু নজরে দেখে।
    সে সমস্ত বুনো পশুদের রাজা এবং আমি (ঈশ্বর) লিবিয়াথন সৃষ্টি করেছি।”

2 করিন্থীয় 11

পৌল এবং ভণ্ড প্রেরিতরা

11 যখন তোমরা আমার নির্বুদ্ধিতা দেখতে পাও তখন একটু ধৈর্য্য্ ধরে আমাকে সহ্য করবে এই আমি চাই। দয়া করে আমার প্রতি সহিষ্ণু হও। আমি অন্তরে তোমাদের জন্য জ্বালা অনুভব করছি। এই অন্তর্জ্বালা স্বয়ং ঈশ্বরের অন্তর থেকে আসে। আমি তোমাদের এক বরের সঙ্গে বিয়ে দিতে প্রতিজ্ঞা করেছি, যেন সতী কন্যা রূপে তোমাদের খ্রীষ্টের কাছে উপহার দিতে পারি। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে দুষ্ট সাপ যেমন নিজের চাতুরীতে হবাকে ভুলিয়েছিল, সেইরকম কেউ যেন তোমাদের মন কলুষিত না করে এবং খ্রীষ্টের প্রতি তোমাদের যে পূর্ণ ও বিশুদ্ধ অনুরাগ আছে তা থেকে তোমাদের যেন দূরে সরিয়ে নিয়ে না যায়। কোন আগন্তুক যদি এমন আর এক যীশুকে প্রচার করে, যাকে আমরা প্রচার করি নি, অথবা আগেই গ্রহণ করেছ এমন আত্মা ছাড়া যদি তোমরা অন্য কোন আত্মা পাও, বা আগে গ্রহণ কর নি এমন কোন অন্য রকমের সুসমাচার পাও তবে তা ভালভাবে সহ্য করো।

কারণ আমার মনে হয় না যে আমি তথাকথিত সেই “মহান প্রেরিতদের” থেকে কোন অংশে পিছিয়ে পড়ে আছি। কিন্তু যদিও আমি খুব ভাল বক্তা নই, তবুও আমার জ্ঞান সীমিত নয় এবং তা সবরকমেই পরিষ্কারভাবেই তোমাদের দেখিয়ে দিয়েছি।

তোমরা যেন উন্নত হতে পার তাই নিজেকে নত করে আমি কি পাপ করেছি? তোমাদের মধ্যে বিনা পারিশ্রমিকে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করে কি ভুল করেছি? তোমাদের মধ্যে সেবার জন্য অন্য মণ্ডলী থেকে টাকা নিয়ে আমি তাদের লুঠ করেছি; এবং যখন তোমাদের কাছে ছিলাম তখন আমার অভাব হলেও আমি কাউকে ভারগ্রস্ত করি নি, কারণ মাকিদনিয়া থেকে ভাইরা এসে আমার প্রয়োজন মেটালেন। হ্যাঁ, আমি যাতে কোন বিষয়ে তোমাদের কাছে হাত না পাতি, নিজেকে সেইভাবে রক্ষা করেছি এবং করব। 10 সত্যই খ্রীষ্টের সততা যখন নিশ্চিতভাবে আমার মধ্যে আছে, তখন আখায়ার কোন অঞ্চলে কেউ এই গর্ব করা থেকে আমায় বিরত করবে না। আমি তোমাদের বোঝা হতে চাই না। 11 তার মানে কি এই যে আমি তোমাদের ভালবাসি না? ঈশ্বর জানেন আমি তোমাদের ভালবাসি।

12 কিন্তু এখন আমি যা করছি, সেই কাজ আরও করব যাতে যারা গর্ব করার সুযোগ খোঁজে, তাদের বিরত করতে পারি। যারা গর্ব করে তাদের যেন তোমরা আমাদের সমান ভাব; 13 কারণ তারা ভণ্ড প্রেরিত, তারা মিথ্যা বলে। তারা প্রবঞ্চক কর্মী, তারা প্রেরিতের ছদ্মবেশ ধরেছে। তারা এমনভাব দেখায় যাতে লোকে মনে করে যে তারা খ্রীষ্টের প্রেরিত। 14 এটা আশ্চর্য নয়, কারণ শয়তান নিজেও নিজেকে দীপ্তিময় স্বর্গদূত হিসাবে দেখাবার জন্য বদলে ফেলে। 15 অতএব তার সেবকরাও যে ধার্মিকতার সেবকদের বেশ ধারণ করে, এতে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই, পরিণামে তাদের কাজের জন্য তারা শাস্তিভোগ করবে।

পৌল নিজের দুঃখভোগের কথা বললেন

16 আমি আবার বলছি, কেউ আমাকে মূর্খ মনে না করুক, কিন্তু যদি তোমরা মনে কর, তবে আমাকে মূর্খ বলেই গ্রহণ কর; তাতে আমিও একটু গর্ব করতে পারব। 17 আমি নিজেকে জানি তাই আমি গর্ব করি। এখন আমি যা বলছি তা প্রভুর আদেশ মত বলছি না কিন্তু এক নির্বোধের মতোই এই গর্ব করছি। 18 যেহেতু অনেকেই জাগতিক বিষয়ে গর্ব করে, তাই আমিও গর্ব করব। 19 কারণ তোমরা যারা বুদ্ধিমান তারা নির্বোধ লোকদের প্রতি আনন্দের সাথে সহিষ্ণুতা দেখিয়ে থাক। 20 আমি জানি তোমরা সহিষ্ণু, এমন কি, তাদের প্রতিও যারা তোমাদের আদেশ করে, শোষণ করে, ফাঁদে ফেলে, নিজেদের তোমাদের থেকে ভাল বলে মনে করে অথবা তোমাদের গালে চড় মারে। 21 একথা বলতে আমার লজ্জা বোধ হয় যে আমরা তোমাদের প্রতি নিতান্ত “দুর্বল” বলেই দুরকম ব্যবহার করি নি!

কিন্তু গর্ব করার মতো যথেষ্ট সাহস যদি কারো থাকে, তবে আমি সাহসী হব ও গর্ব করব। আমি মূর্খের মতো কথা বলছি। 22 তারা কি ইব্রীয়? আমিও তাই। তারা কি ইস্রায়েলী? আমিও তাই। তারা কি অব্রাহামের বংশধর? আমিও তাই। 23 তারা কি খ্রীষ্টের সেবক? এমন গর্ব করা পাগলের মত শোনালেও আমি তাদের থেকে অনেক বেশী খ্রীষ্টের সেবা করছি। আমি তাদের থেকে অনেক বেশী কঠোর পরিশ্রম করেছি, তাদের থেকে বহুবার বেশী কারাদণ্ড ভোগ করেছি, অনেকবার চাবুকের মার সহ্য করেছি, অনেকবার মৃত্যুমুখে পড়েছি।

24 ইহুদীদের কাছ থেকে পাঁচবার উনচল্লিশটি করে চাবুকের মার খেতে হয়েছে। 25 তিনবার আমাকে লাঠিপেটা করেছে, একবার আমার ওপর পাথর ছোঁড়া হয়েছে, তিনবার ঝড়ে জাহাজ ডুবিতে আমি কষ্ট পেয়েছি এবং সারা দিনরাত অগাধ জলের মধ্যে কাটিয়েছি। 26 স্থলপথে যাত্রাকালে বহুবার বিপদে পড়েছি, নদী থেকে বিপদ এসেছে, কতবার ডাকাতের হাতে, কতবার আমার আপনজন, ইহুদী ও অইহুদীদের দ্বারা বিপদগ্রস্ত হয়েছি। শহরের মধ্যে মহা বিপদে পড়তে হয়েছে, কখনও গ্রামাঞ্চলে, কখনও বিপদ সঙ্কুল সমুদ্রের মধ্যে এবং ভণ্ড খ্রীষ্টীয়ানদের কাছ থেকে।

27 অনেকবার অনাহারে দিন কাটিয়েছি, যথেষ্ট পোশাকের অভাবে প্রচণ্ড শীতে কষ্ট পেয়েছি। 28 আর সব সমস্যা যাক, একটি সমস্যা প্রতিদিন আমার ওপরে চেপে রয়েছে, তা হল সমস্ত মণ্ডলীর চিন্তা। 29 কেউ দুর্বল হলে আমি কি সেই দুর্বলতার সহভাগী হই না? কেউ বাধা পেয়ে পাপের পথে নেমে গেলে আমি কি রাগে জ্বলে উঠি না?

30 যদি গর্ব করতে হয়, তবে আমার নানা দুর্বলতার বিষয়ে গর্ব করব। 31 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতা, যিনি যুগে যুগে প্রশংসিত তিনি জানেন যে আমি মিথ্যা বলছি না। 32 যখন আমি দম্মেশকে ছিলাম, তখন রাজা আরিতার অধীনস্থ রাজ্যপাল আমাকে বন্দী করার জন্য দম্মেশকীয়দের সেই শহরের চারপাশে পাহারা বসিয়েছিলেন। 33 কিন্তু আমার বন্ধুরা শহরের পাঁচিলের একটা ফাঁক দিয়ে একটা ঝুড়িতে করে আমাকে নামিয়ে দিয়েছিলেন। এইভাবে সেই রাজ্যপালের হাত থেকে পালিয়েছিলাম।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International