M’Cheyne Bible Reading Plan
22 “যে ব্যক্তি ষাঁড় বা মেষ চুরি করেছে তাকে কিভাবে শাস্তি দেবে? যদি সে প্রাণীটিকে হত্যা করে বা বিক্রি করে দেয় তবে সে সেটা ফেরৎ দিতে পারবে না, তাই তাকে একটা চুরি করা ষাঁড়ের বদলে পাঁচটা ষাঁড় কিনে দিতে হবে বা একটা মেষের বদলে চারটি মেষ দিতে হবে। তাকে চুরির জন্য জরিমানা দিতে হবে। 2-4 যদি তার কাছে কিছু না থাকে তাহলে তাকে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হবে। যদি তুমি লোকটির কাছে জন্তুটিকে দেখতে পাও, তবে চোরকে অবশ্যই চুরি করা জন্তুটির মূল্যের দ্বিগুণ মূল্য দিতে হবে। প্রাণীটি ষাঁড় বা গাধা বা মেষ যাই হোক্ না কেন নিয়ম একই থাকবে।
“যদি সিঁধ কেটে চুরি করার সময় কোনও চোর মারা যায় তবে কেউই দোষী হবে না। কিন্তু যদি এটা দিনের বেলায় হয় তাহলে যে হত্যা করবে সে দায়ী হবে।
5 “যখন একটি ব্যক্তি তার গৃহপালিত জন্তুদের তার নিজের ক্ষেতে অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতে চরতে দেয়, কিন্তু তারা যদি বিপথে গিয়ে অন্য কারো ক্ষেতে অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতে চরে বেড়ায় তাহলে তাকে তার ক্ষেতের অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতের সবচেয়ে ভালো ফসল দিয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
6 “কেউ যদি তার প্রতিবেশীর শস্যের গাদা অথবা যে শস্য কাটা হয়নি তা অথবা পুরো ক্ষেতটি পুড়িয়ে ফেলে, তাহলে যা কিছু পুড়ে গেছে তার ক্ষতিপূরণ তাকে দিতে হবে।
7 “কোনও ব্যক্তি তার টাকা বা অন্য কিছু তার প্রতিবেশীর কাছে রাখতে দিতে পারে। কিন্তু যদি প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে সেই জিনিস চুরি হয়ে যায় তবে কি করবে? চোরকে খুঁজে বার করার চেষ্টা করবে। যদি চোরকে পাওয়া যায় তবে চোর চুরি করা জিনিসের মূল্যের দ্বিগুণ জরিমানা দেবে। 8 যদি চোরকে খুঁজে পাওয়া না যায়, তাহলে ঈশ্বর বিচার করবেন যেখান থেকে চুরি হয়েছে সেই বাড়ির মালিক দোষী কি না। বাড়ির মালিক ঈশ্বরের কাছে যাবে এবং ঈশ্বর বিচার করবেন যে সে কিছু চুরি করেছে কি না।
9 “যদি কোনও দুই ব্যক্তি উভয়েই কোনও ষাঁড় বা গাধা বা মেষ বা কোনও হারানো বস্তুকে নিজের বলে দাবী করে তাহলে তারা দুজনেই ঈশ্বরের কাছে যাবে। ঈশ্বর যাকে দোষী করবেন সে অপর ব্যক্তিকে সেই জিনিসটির মূল্যের দ্বিগুণ দাম দেবে।
10 “কোনও ব্যক্তি তার কোন প্রাণীর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তার প্রতিবেশীকে অল্প সময়ের জন্য ভার দিতে পারে। সেটা গাধা বা ষাঁড় বা মেষ হতে পারে কিন্তু যদি সেই প্রাণী আহত হয় বা মারা যায় বা কারো অলক্ষ্যে চুরি হয়ে যায় তাহলে কি করবে? 11 তখন সেই প্রতিবেশীকে প্রভুর নামে শপথ করে বলতে হবে যে সে চুরি করে নি। তখন প্রাণীর মালিক সেই শপথ গ্রাহ্য করবে এবং প্রতিবেশীকে সেই মৃত প্রাণীর জন্য কোন জরিমানা দিতে হবে না। 12 কিন্তু যদি সেই প্রতিবেশী চুরি করে থাকে তবে তাকে জরিমানা দিতে হবে। 13 যদি কোন বন্য জন্তু প্রাণীটিকে মেরে ফেলে তবে তার দেহ প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হবে। তাহলে প্রতিবেশীকে জরিমানা দিতে হবে না।
14 “যদি কোনও ব্যক্তি তার প্রতিবেশীর কাছ থেকে ধার নেয় তবে সে তার জন্য দায়ী থাকবে। যদি কোন প্রাণী আহত হয় বা মারা যায় তবে প্রতিবেশী প্রাণীর মালিককে জরিমানা দেবে। প্রতিবেশীই দায়ী কারণ মালিক সেখানে উপস্থিত ছিল না। 15 কিন্তু যদি প্রাণীর মালিক সেখানে উপস্থিত থাকে তাহলে প্রতিবেশীকে জরিমানা দিতে হবে না। যদি প্রতিবেশী প্রাণীটিকে ব্যবহারের জন্য টাকা দেয় তাহলে তাকে প্রাণীটি আহত হলে বা মারা গেলে জরিমানা দিতে হবে না। সে ঐ প্রাণীটি ব্যবহারের জন্য যা মূল্য দিয়েছে তাই যথেষ্ট।
16 “যদি, কোনও ব্যক্তি একজন অবাগদত্তা কুমারী মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় তাহলে সে অবশ্যই তার পিতাকে পুরো যৌতুক দেবে এবং তাকে বিয়ে করবে। 17 যদি তার পিতা মেয়েটিকে সেই ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দিতে নাও চান তাহলেও তাকে মেয়েটির জন্য পুরো অর্থ দিতে হবে।
18 “যদি কোন স্ত্রীলোক দুষ্ট কূহক করে তবে তাকে বাঁচতে দিও না।
19 “কোন মানুষ যদি কোন পশুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করে তবে তাকে অবশ্যই হত্যা করবে।
20 “যদি কোন ব্যক্তি মূর্ত্তিকে নৈবেদ্য দেয় তবে তাকে হত্যা করবে। তোমরা অবশ্যই কেবলমাত্র প্রভুর কাছেই নৈবেদ্য উৎসর্গ করবে।
21 “মনে রাখবে তোমরা ইতিপূর্বে মিশরে বিদেশী ছিলে তাই তোমরা কোন বিদেশীকে ঠকাবে না বা আঘাত করবে না। 22 “কোন বিধবা বা অনাথ শিশুর কখনও কোনও ক্ষতি করো না। 23 যদি তুমি বিধবা ও অনাথদের নির্যাতন কর তাহলে আমি তাদের দুর্দশার কথা জেনে যাব। 24 এতে আমি রেগে গিয়ে তোমাকে হত্যা করব, যার ফলে তোমার স্ত্রী বিধবা হবে এবং তোমার সন্তানরা অনাথ হবে।
25 “যদি আমার লোকদের মধ্যে কেউ দরিদ্র হয় এবং তাকে তুমি কিছু টাকা ধার দাও, তাহলে ঐ টাকার ওপর কোন সুদ দাবী করো না অথবা তাকে সুদ দিতে বাধ্য করো না। সুদ নিয়ে যে টাকা দেয় তার মতো ব্যবহার করো না। 26 যদি কোনও ব্যক্তি তোমার কাছে ধার শোধ করার প্রমাণ হিসেবে তার গায়ের শীতবস্ত্র বন্ধক রাখে তবে তুমি সূর্যাস্তের আগে তাকে সেটা ফিরিয়ে দেবে। 27 যদি তার শীতবস্ত্র না থাকে তবে সে শীতে কষ্ট পাবে এবং তার কান্না আমি শুনতে পাবো কারণ আমি দয়ালু।
28 “ঈশ্বর বা জনগণের নেতাদের কখনও অভিশাপ দিও না।
29 “ফসল কাটার সময় প্রথম শস্যের দানা ও প্রথম ফলের রস বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই আমাকে দেবে।
“তোমাদের প্রথম সন্তানকে আমার কাছে উৎসর্গ করবে। 30 তোমাদের প্রথমজাত গরু বা মেষও আমাকে দেবে। প্রথম নবজাতককে তার মায়ের কাছে সাত দিন রেখে অষ্টম দিনে আমাকে দিয়ে দেবে।
31 “তোমরা আমার বিশেষ লোক, কোন বন্য প্রাণীর মেরে ফেলা পশুর মাংস খাবে না। সেই মাংস কুকুরকে খেতে দেবে।
যীশুর পৃথিবীতে আগমন
1 আদিতে বাক্য[a] ছিলেন, বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন আর সেই বাক্যই ছিলেন ঈশ্বর। 2 সেই বাক্য আদিতে ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন। 3 তাঁর মাধ্যমেই সব কিছুর সৃষ্টি হয়েছিল এবং এর মধ্যে তাঁকে ছাড়া কোন কিছুরই সৃষ্টি হয় নি। 4 তাঁর মধ্যে জীবন ছিল; আর সেই জীবন জগতের মানুষের কাছে আলো নিয়ে এল। 5 সেই আলো অন্ধকারের মাঝে উজ্জ্বল হয়ে উঠল; আর অন্ধকার সেই আলোকে জয় করতে পারে নি।
6 একজন লোক এলেন তাঁর নাম যোহন; ঈশ্বর তাঁকে পাঠিয়েছিলেন। 7 তিনি সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য সাক্ষী রূপে এলেন যাতে তাঁর মাধ্যমে সকল লোক সেই আলোর কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারে। 8 যোহন নিজে সেই আলো ছিলেন না; কিন্তু তিনি এসেছিলেন যাতে লোকদের কাছে সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারেন। 9 প্রকৃত যে আলো, তা সকল মানুষকে আলোকিত করতে পৃথিবীতে এসেছিলেন।
10 সেই বাক্য জগতে ছিল এবং এই জগত তাঁর দ্বারাই সৃষ্ট হয়েছিল; কিন্তু জগত তাঁকে চিনতে পারে নি। 11 যে জগত তাঁর নিজস্ব সেখানে তিনি এলেন, কিন্তু তাঁর নিজের লোকরাই তাঁকে গ্রহণ করল না। 12 কিন্তু কিছু লোক তাঁকে গ্রহণ করল এবং তাঁকে বিশ্বাস করল। যারা বিশ্বাস করল তাদের সকলকে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হবার অধিকার দান করলেন। 13 ঈশ্বরের এই সন্তানরা প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে কোন শিশুর মতো জন্ম গ্রহণ করে নি। মা-বাবার দৈহিক কামনা-বাসনা অনুসারেও নয়, ঈশ্বরের কাছ থেকেই তাদের এই জন্ম।
14 বাক্য মানুষের রূপ ধারণ করলেন এবং আমাদের মধ্যে বসবাস করতে লাগলেন। পিতা ঈশ্বরের একমাত্র পুত্র হিসাবে তাঁর যে মহিমা, সেই মহিমা আমরা দেখেছি। সেই বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পরিপূর্ণ ছিলেন। 15 যোহন তাঁর সম্পর্কে মানুষকে বললেন, “ইনিই তিনি যাঁর সম্বন্ধে আমি বলেছি। ‘যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি আমার থেকে মহান, কারণ তিনি আমার অনেক আগে থেকেই আছেন।’”
16 সেই বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পূর্ণ ছিলেন। আমরা সকলে তাঁর থেকে অনুগ্রহের ওপর অনুগ্রহ পেয়েছি। 17 কারণ মোশির মাধ্যমে বিধি-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু অনুগ্রহ ও সত্যের পথ যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে এসেছে। 18 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি; কিন্তু একমাত্র পুত্র, যিনি পিতার কাছে থাকেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন।
যোহন যীশু সম্পর্কে লোকেদের বললেন
(মথি 3:1-12; মার্ক 1:1-8; লূক 3:1-9, 15-17)
19 জেরুশালেমের ইহুদীরা কয়েকজন যাজক ও লেবীয়কে যোহনের কাছে পাঠালেন। তাঁরা এসে যোহনকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কে?” 20 যোহন একথার জবাব খোলাখুলিভাবেই দিলেন; তিনি উত্তর দিতে অস্বীকার করলেন না। তিনি স্পষ্টভাবে স্বীকার করলেন, “আমি সেই খ্রীষ্ট নই।”
21 তখন তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “তাহলে আপনি কে? আপনি কি এলিয়?”
যোহন বললেন, “না, আমি এলিয় নই।”
ইহুদীরা জিজ্ঞেস করলেন, “তবে আপনি কি সেই ভাববাদী?”
যোহন এর জবাবে বললেন, “না।”
22 তখন তাঁরা বললেন, “তাহলে আপনি কে? আমাদের বলুন যাতে যারা আমাদের পাঠিয়েছে তাদের জবাব দিতে পারি। আপনার নিজের বিষয়ে আপনি কি বলেন?”
23 ভাববাদী যিশাইয় যা বলেছিলেন তা উল্লেখ করে যোহন বললেন,
“আমি তাঁর রব, যিনি মরু প্রান্তরে চিৎকার করে বলছেন,
‘তোমার প্রভুর জন্য পথ সোজা কর!’”(A)
24 যাদের পাঠানো হয়েছিল তাদের মধ্যে কিছু ফরীশী সম্প্রদায়ের লোক ছিল। 25 তাঁরা যোহনকে বললেন, “আপনি যদি সেই খ্রীষ্ট নন, এলিয় নন, ভাববাদীও নন, তাহলে আপনি বাপ্তাইজ করছেন কেন?”
26 এর উত্তরে যোহন বললেন, “আমি জলে বাপ্তাইজ করছি। তোমাদের মধ্যে একজন দাঁড়িয়ে আছেন যাঁকে তোমরা চেন না। 27 তিনিই সেই লোক যিনি আমার পরে আসছেন। আমি তাঁর পায়ের চটির ফিতে খোলবার যোগ্য নই।”
28 যর্দন নদীর অপর পারে বৈথনিয়াতে যেখানে যোহন লোকেদের বাপ্তাইজ করছিলেন, সেইখানে এইসব ঘটেছিল।
যীশু, ঈশ্বরের মেষশাবক
29 পরের দিন যোহন যীশুকে তাঁর দিকে আসতে দেখে বললেন, “ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপরাশি বহন করে নিয়ে যান! 30 ইনিই সেই লোক, যাঁর বিষয়ে আমি বলেছিলাম, ‘আমার পরে একজন আসছেন, কিন্তু তিনি আমার থেকে মহান, কারণ তিনি আমার অনেক আগে থেকেই আছেন।’ 31 এমনকি আমিও তাঁকে চিনতাম না, কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা যেন তাঁকে খ্রীষ্ট বলে চিনতে পারে এইজন্য আমি এসে তাদের জলে বাপ্তাইজ করছি।”
32-34 এরপর যোহন তাঁর সাক্ষ্যে বললেন, “আমি নিজেও খ্রীষ্ট কে তা জানতাম না। কিন্তু লোকদের জলে বাপ্তাইজ করতে ঈশ্বর আমাকে পাঠালেন। ঈশ্বর আমাকে বললেন, ‘তুমি দেখতে পাবে এক ব্যক্তির উপর পবিত্র আত্মা এসে অধিষ্ঠান করছেন। আর তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি পবিত্র আত্মাতে বাপ্তাইজ করবেন।’” যোহন বললেন, “আমি পবিত্র আত্মাকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখেছি। সেই আত্মা কপোতের আকারে এসে যীশুর উপর বসলেন। আমি তা দেখেছি আর তাই আমি লোকদের বলি, ‘তিনিই ঈশ্বরের পুত্র।’”
যীশুর প্রথম শিষ্যদল
35 পরদিন যোহন তাঁর দুজন শিষ্যের সঙ্গে আবার সেখানে এলেন। 36 যীশুকে সেখান দিয়ে যেতে দেখে তিনি বললেন, “ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক!”
37 তাঁর সেই দুজন শিষ্য যোহনের কথা শুনে যীশুর অনুসরণ করতে লাগলেন। 38 যীশু পিছন ফিরে সেই দুজনকে অনুসরণ করতে দেখে তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা কি চাও?”
তাঁরা যীশুকে বললেন, “রব্বি, আপনি কোথায় থাকেন?” (“রব্বি” কথাটির অর্থ “গুরু।”)
39 যীশু তাঁদের বললেন, “এস দেখবে।” তখন তাঁরা গিয়ে দেখলেন তিনি কোথায় থাকেন। আর সেই দিনের বাকি সময়টা তাঁরা যীশুর কাছে কাটালেন। তখন সময় ছিল প্রায় বিকাল চারটে।
40 যোহনের কথা শুনে যে দুজন লোক যীশুর পিছনে পিছনে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন হচ্ছেন শিমোন পিতরের ভাই আন্দ্রিয়। 41 আন্দ্রিয় সঙ্গে সঙ্গে তাঁর ভাই শিমোনের দেখা পেয়ে তাকে বললেন, “আমরা মশীহের দেখা পেয়েছি।” (“মশীহ” কথাটির অর্থ “খ্রীষ্ট।”)
42 আন্দ্রিয়, শিমোন পিতরকে যীশুর কাছে নিয়ে এলেন। যীশু তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, “তুমি যোহনের ছেলে শিমোন, তোমাকে কৈফা বলে ডাকা হবে।” (“কৈফা” কথাটির অর্থ “পিতর।”)
43 পরের দিন যীশু গালীলে যাবেন বলে ঠিক করলেন। সেখানে তিনি ফিলিপের দেখা পেয়ে তাঁকে বললেন, “আমার অনুসরণ কর।” 44 আন্দ্রিয় ও পিতর যে অঞ্চলে থাকতেন ফিলিপ ছিলেন সেই বৈৎসৈদার লোক। 45 ফিলিপ এবার নথনেলকে দেখতে পেয়ে বললেন, “আমরা এমন একজনের দেখা পেয়েছি যার কথা মোশি ও ভাববাদীরা বিধি-ব্যবস্থায় লিখে রেখে গেছেন। তিনি নাসরৎ নিবাসী যোষেফের ছেলে যীশু।”
46 নথনেল তাঁকে বললেন, “নাসরৎ! নাসরৎ থেকে কি ভাল কিছু আসতে পারে?”
ফিলিপ বললেন, “এস দেখে যাও।”
47 যীশু দেখলেন নথনেল তাঁর দিকে আসছেন। তখন তিনি তাঁর বিষয়ে বললেন, “এই দেখ একজন প্রকৃত ইস্রায়েলীয়, যার মধ্যে কোন ছলনা নেই।”
48 নথনেল তাঁকে বললেন, “আপনি কেমন করে আমাকে চিনলেন?”
এর উত্তরে যীশু বললেন, “ফিলিপ আমার সম্পর্কে তোমায় বলার আগে তুমি যখন ডুমুর গাছের তলায় বসেছিলে, আমি তখনই তোমায় দেখেছিলাম।”
49 নথনেল বললেন, “গুরু, আপনিই ঈশ্বরের পুত্র, আপনিই ইস্রায়েলের রাজা।”
50 যীশু উত্তরে বললেন, “আমি তোমাকে ডুমুর গাছের তলায় দেখেছিলাম বলেই কি তুমি আমাকে বিশ্বাস করলে? এর চেয়েও আরো অনেক মহত্ জিনিস তুমি দেখতে পাবে!” 51 পরে যীশু তাঁকে আরও বললেন, “সত্যি সত্যিই আমি তোমাদের বলছি। তোমরা একদিন দেখবে স্বর্গ খুলে গেছে, আর ‘ঈশ্বরের দূতরা’ মানবপুত্রের ওপর দিয়ে উঠে যাচ্ছেন আর নেমে আসছেন।”[b]
40 প্রভু ইয়োবকে উত্তর দিলেন এবং বললেন:
2 “ইয়োব, তুমি ঈশ্বর, সর্বশক্তিমানের সঙ্গে তর্ক করেছো।
তুমি কি আমাকে সংশোধন করবে?
যে ব্যক্তি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তর্ক করে সে তাঁর কাছে উত্তর দেবে!”
3 তখন ইয়োব প্রভুকে উত্তর দিয়ে বললেন:
4 “আমি কথা বলার যোগ্য নই;
আমি আপনাকে কি বা বলতে পারি?
আমার মুখ হাত দিয়ে চাপা দিলাম।
5 আমার যা বলা উচিৎ ছিল আমি ইতিমধ্যেই তার চেয়ে অনেক বেশী বলে ফেলেছি।
আমি আর কিছু বলব না।”
6 তখন ঝড়ের ভেতর থেকে প্রভু আবার কথা বললেন। তিনি বললেন:
7 “ইয়োব, নিজেকে প্রস্তুত কর এবং আমি যে প্রশ্ন করবো তার উত্তর দেওয়ার জন্য তৈরী হও।
8 “ইয়োব, তুমি কি এখনও আমার সিদ্ধান্ত নাকচ করবার চেষ্টা করবে?
তুমি নিজের সততা প্রতিপালন করবার জন্য আমাকে মন্দ কাজের দরুণ দোষী বলে ঘোষণা করেছ।
9 তোমার বাহু কি ঈশ্বরের বাহুর মতো শক্তিশালী?
তোমার কি ঈশ্বরের মত বজ্রগম্ভীর কণ্ঠস্বর আছে?
10 যদি তুমি ঈশ্বরের মত হও তুমি গর্ব করতে পারো।
যদি তুমি ঈশ্বরের মত হও তবে মহিমা এবং সম্মান তোমাকে বস্ত্রের মত জড়িয়ে থাকবে।
11 যদি তুমি ঈশ্বরের মত হও তুমি ক্রোধ প্রদর্শন করে অহঙ্কারী লোকেদের শাস্তি দিতে পারো।
ওই অহঙ্কারীদের নম্র করে তুলতে পারো।
12 হ্যাঁ, ইয়োব, ওই অহঙ্কারী লোকদের দেখ এবং ওদের নম্র করে তোলো।
মন্দ লোকরা যেখানে দাঁড়ায়়, ওদের গুঁড়িয়ে দাও।
13 সব অহঙ্কারী লোকদের কবর দাও।
ওদের দেহ আবৃত করে ওদের কবরে পাঠিয়ে দাও।
14 ইয়োব, যদি তুমি এইসব করতে পারো, তাহলে আমিও তোমার প্রশংসা করবো।
এই আমি স্বীকার করবো যে তোমার নিজের শক্তিতেই তুমি নিজেকে রক্ষা করতে পারবে।
15 “ইয়োব, বহেমোতের[a] দিকে দেখ।
আমি বহেমোৎ এবং তোমাকে সৃষ্টি করেছি।
বহেমোৎ গরুর মত ঘাস খায়।
16 বহেমোতের গায়ে প্রচুর শক্তি আছে।
ওর পাকস্থলীর পেশীগুলি প্রচণ্ড শক্তিশালী।
17 বহেমোতের লেজ এরস গাছের মতই শক্ত।
ওর পায়ের পেশীগুলিও খুব শক্ত।
18 ওর হাড়গুলো কাঁসার মতই শক্ত।
ওর হাত পাগুলো লোহার দণ্ডের মত।
19 বিস্ময় সৃষ্টিকারী প্রাণীদের মধ্যে আমি বহেমোতকে সৃষ্টি করেছি।
কিন্তু আমি তাকে পরাজিতও করতে পারি।
20 পাহাড়ে যেখানে বন্য পশুরা খেলা করে,
সেখানে যে ঘাস জন্মায়, বহেমোৎ তা খায়।
21 সে পদ্ম বনের নীচে ঘুমিয়ে থাকে।
জলাভূমির নলখাগড়ার ভিতর সে নিজেকে লুকিয়ে রাখে।
22 ঘন পাতা যুক্ত গাছ তার ছায়াতে বহেমোতকে লুকিয়ে ফেলে।
নদীর ধারে উইলো গাছের নীচে সে থাকে।
23 নদীতে বন্যা এলেও বহেমোৎ পালিয়ে যায় না।
যদি যর্দ্দন নদীর জলোচ্ছাস ওর মুখে ভেঙ্গে পড়ে, তবু বহেমোৎ তাতে ভয় পায় না।
24 ওর চোখকে কেউ অন্ধ করতে পারে না
বা ফাঁদ পেতে ওকে ধরতেও পারে না।
নিজের কাজের পক্ষে পৌল
10 আমি পৌল নিজে খ্রীষ্টের বিনয় ও সৌজন্যের দোহাই দিয়ে তোমাদের অনুনয় করছি। আমি নাকি তোমাদের সামনে বিনম্র কিন্তু পেছনে চিঠিতে তোমাদের কড়া কড়া কথা বলি। 2 কিছু কিছু লোক মনে করে যে আমরা জাগতিক ভাবে চলি। আমি মিনতি করি যখন আমি আসব তখন যেন আমাকে সেই দৃঢ় সাহস দেখাতে না হয়, যে সাহস আমি সেইসব লোকদের কাছে দেখানো আবশ্যক মনে করি। 3 আমরা জগতেই বাস করি কিন্তু জগৎ যেভাবে যুদ্ধ করে আমরা সেইভাবে করি না। 4 জগৎ যে যুদ্ধের অস্ত্র ব্যবহার করে, আমরা তার থেকে স্বতন্ত্র যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করি। আমাদের যুদ্ধের অস্ত্র ঈশ্বরের পরাক্রম; এই যুদ্ধাস্ত্র শত্রুর সুদৃঢ় ঘাঁটি ধ্বংস করতে পারে। লোকদের বাজে বিতর্ক আমরা বিফল করতে পারি। 5 যে সমস্ত গর্বজনক বিষয় ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞানের বিরুদ্ধে যায়, আমরা তাদের প্রত্যেককে ধ্বংস করি এবং সমস্ত চিন্তাকে বশীভূত করে খ্রীষ্টের অনুগত করি। 6 যখন তোমরা সম্পূর্ণভাবে আমাদের অনুগত হবে, তখনই আমরা অবাধ্যতার প্রতিটি কাজকে শাস্তি দিতে প্রস্তুত হব।
7 তোমাদের সামনের বিষয়গুলির দিকে দেখ, কেউ যদি নিজেদের ওপরে বিশ্বাস রেখে বলে, আমি খ্রীষ্টের লোক, তবে তার আবার একথাও বোঝা উচিত যে তার মত আমরাও খ্রীষ্টের লোক। 8 একথা ঠিক যে প্রভু যে কর্ত্তৃত্ব আমাদের দিয়েছেন তাই নিয়ে আমরা বেশ গর্ব করি। তোমাদের ব্যথা দিতে নয়, কিন্তু তোমাদের শক্তিশালী করে তুলতেই তিনি আমাদের এই অধিকার দিয়েছেন, আর তা নিয়ে আমরা লজ্জা পাচ্ছি না। 9 আমি চিঠিগুলি দিয়ে যে তোমাদের ভয় দেখাচ্ছি এরকম মনে করো না। 10 কেউ কেউ বলে, “তার চিঠিগুলো মনে রেখাপাত করে এবং শক্তিশালী, কিন্তু লোক হিসাবে তিনি দুর্বল এবং তাঁর কথা বলার ধরণ একেবারেই হৃদয়গ্রাহী নয়।” 11 এই ধরণের লোক বুঝুক যে অনুপস্থিত থাকাকালীন আমাদের চিঠির মধ্যে যে শক্তি প্রকাশ পেয়েছে, আমরা যখন তোমাদের সামনে উপস্থিত হব তখন আমাদের কাজেও সেই একই শক্তি দেখতে পাবে।
12 কারণ এমন কোন লোকের সাথে আমরা নিজেদের গণনা বা তুলনা করতে সাহস করি না, যাঁরা নিজেরাই নিজেদের উচ্চ প্রশংসা করে থাকে। তারা পরস্পরের মধ্যে নিজেদের পরিমাপ করে এবং নিজেদের সাথে নিজেদের তুলনা করে।
13 নিজেদের বিষয়ে যতটুকু গর্ব করার অধিকার আমাদের আছে, আমরা তার বেশী করব না, বরং ঈশ্বর আমাদের কর্মক্ষেত্রে যে সীমা নিরূপণ করেছেন সেই সীমার মধ্যে থাকব। সেই সীমার মধ্যে তোমরাও আছো। 14 তোমাদের কাছে গিয়েছিলাম বলে তোমাদের নিয়ে আমরা যখন গর্ব করি, তখন সীমার বাইরে কিছু বলি না, কারণ খ্রীষ্টের সুসমাচার নিয়ে আমরাই তোমাদের কাছে প্রথম পৌঁছেছিলাম। 15 আমাদের কাজ নিয়ে গর্ব করার যে সীমা তা আমরা ছাড়িয়ে যাব না। অন্যেরা কি করছে তা আমাদের গর্বের বিষয় নয়; পরিবর্তে আমরা আশা করি যে তোমাদের বিশ্বাস বাড়বার সাথে সাথে আমরা তোমাদের মধ্যে আরও কাজ করতে পারব। 16 তখন আমরা তোমাদের নগর ছাড়িয়েও জায়গায় জায়গায় সুসমাচার প্রচার করতে পারব। অপরের এলাকার করা কাজের জন্য আমরা গর্ব করব না। 17 তবে, “যে গর্ব করতে চায় সে প্রভুকে নিয়েই গর্ব করুক।”(A) 18 কারণ যে মানুষ নিজের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষন করে সে নয়, কিন্তু প্রভু যার সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষন করেন সে-ই ভাল বলে প্রমাণিত হয়।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International