M’Cheyne Bible Reading Plan
মোশির শ্বশুরের পরামর্শ
18 মোশির শ্বশুর যিথ্রো ছিল মিদিয়নীয়র যাজক। ঈশ্বর যে একাধিকভাবে মোশিকে এবং ইস্রায়েলের লোকদের সাহায্য করেছেন তা সে শুনেছিল। যিথ্রো শুনেছিল যে প্রভু ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে বার করে এনেছেন। 2 তাই যিথ্রো মোশির স্ত্রী সিপ্পোরাকে নিল এবং মোশির সঙ্গে দেখা করতে গেল। মোশি তখন ঈশ্বরের পর্বতের কাছে শিবির করে রয়েছে। মোশির স্ত্রী সিপপোরা তখন বাপের বাড়ীতে থাকত কারণ মোশিই তার স্ত্রীকে বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছিল। 3 যিথ্রো তার সঙ্গে শুধু মোশির স্ত্রীকেই নয়, মোশির দুই পুত্রকেও নিয়ে গিয়েছিল। প্রথম পুত্রের নাম গের্শোন কারণ সে যখন জন্মায় তখন মোশি বলেছিল, “আমি পরদেশে প্রবাসী।” 4 দ্বিতীয় পুত্রের নাম ইলীয়েষর। নামকরণের কারণ হিসেবে দ্বিতীয় পুত্রের জন্মের সময় মোশি বলেছিল, “আমার পিতার ঈশ্বর, আমাকে সাহায্য করেছেন এবং ফরৌণের তরবারি থেকে রক্ষা করেছেন।” 5 যিথ্রো মোশির স্ত্রী ও দুই পুত্রকে নিয়ে মোশির শিবিরে পৌঁছালো। মোশি তখন ঈশ্বরের পর্বতের কাছে মরুভূমিতে শিবিরে ছিল।
6 যিথ্রো মোশির উদ্দেশ্যে একটি বার্তায় বলে পাঠাল, “আমি তোমার শ্বশুর যিথ্রো। আমি তোমার স্ত্রী ও দুই পুত্রকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি।”
7 তখন মোশি তাঁবু থেকে বেরিয়ে এসে শ্বশুরকে হাঁটু গেড়ে প্রণাম ও চুম্বন করল। দুজনে দুজনের শরীর ও স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নিয়ে মোশির তাঁবুতে প্রবেশ করল। 8 ইস্রায়েলের লোকদের জন্য প্রভু যা যা করেছেন মোশি তা বিস্তারিতভাবে যিথ্রোকে বলল। মোশি জানাল, প্রভু ফরৌণ ও মিশরের লোকদের কি অবস্থা করেছেন। যাত্রাপথে যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল সে সমস্ত সমস্যার কথাও সে বলল। প্রত্যেকটি সমস্যার ক্ষেত্রে প্রভু কিভাবে ইস্রায়েলের লোকদের রক্ষা করেছেন তাও সে শ্বশুরকে খুলে বলল।
9 মিশরীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলীয়দের উদ্ধার করবার সময় প্রভু তাদের জন্য যে সমস্ত ভাল কাজগুলি করেছিলেন সে সম্বন্ধে শুনে যিথ্রো খুশী হল। 10 যিথ্রো বলল, “প্রভুর প্রশংসা করো! তিনিই তোমাদের মিশরীয়দের কবল থেকে মুক্ত করেছেন। ফরৌণের হাত থেকেও প্রভু তোমাদের রক্ষা করেছেন। 11 এখন আমি জানি সকল দেবতার থেকে প্রভুই মহান! তারা ভাবত তারাই একমাত্র ক্ষমতার অধিকারী কিন্তু দেখ ঈশ্বর কি করে দেখালেন!”
12 মোশির শ্বশুর যিথ্রো ঈশ্বরের প্রতি সম্মানার্থে নৈবেদ্য ও বলি দিল। তখন হারোণ ও ইস্রায়েলের অন্যান্য প্রবীণ নেতারা এসে ঈশ্বরের সামনে মোশি ও যিথ্রোর সঙ্গে একসঙ্গে আহার করল।
13 পরদিন মোশি লোকদের বিচার করতে বসল। বিচার সভায় এত লোক হয়েছিল যে সবাইকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হল।
14 মোশিকে লোকদের বিচার করতে দেখে যিথ্রো তাকে জিজ্ঞেস করল, “তুমি কেন একা বিচারকের দায়িত্ব পালন করছো? এবং সবাই সারাদিন ধরে কেনই বা শুধু তোমার কাছেই আসছে?”
15 তখন মোশি তার শ্বশুরকে বলল, “লোকরা আমার কাছে ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত জানতে আসে। 16 যখন মানুষদের মধ্যে কোন বিবাদ তৈরী হয় তখন তারা আমার কাছে আসে। আমিই ঠিক করে দিই কে সঠিক আর কে বেঠিক। এই উপায়ে আমি মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের বিধি ও শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিই।”
17 কিন্তু মোশির শ্বশুর তাকে বলল, “এটা ঐ কাজের সঠিক উপায় নয়। 18 এটা তোমার একার কাজ নয়। তুমি একা এই কাজ করতে পারবে না। এভাবে তুমিও উদ্যম হারাবে এবং লোকরাও ক্লান্ত হয়ে পড়বে! 19 এখন মন দিয়ে আমার কথা শোন। আমার কিছু উপদেশ গ্রহণ করো। এবং আমি প্রার্থনা করি ঈশ্বর যেন সর্বদা তোমার সঙ্গে থাকেন। তুমি সর্বদা লোকদের সমস্যা শুনে যাবে এবং সেগুলো নিয়ে তুমি সর্বদা ঈশ্বরের কাছে বলবে। 20 তুমি ঈশ্বরের বিধি ও শিক্ষামালাকে লোকদের মধ্যে জাগিয়ে তুলবে। তাদের বলবে তারা যেন ঈশ্বর প্রদত্ত বিধিকে না ভাঙ্গে। তাদের বলবে সঠিক পথে চলতে। তাদের কি করা উচিৎ তাও বলে দেবে। 21 কিন্তু তোমাকে কিছু মানুষকে বিচারক হিসাবে এবং নেতা হিসেবে নির্বাচন করতে হবে।
“কিছু ভাল মানুষ যাদের তুমি বিশ্বাস করতে পারো তাদের নির্বাচন করো—তারা ঈশ্বরকে সম্মান করবে। তাদেরই নির্বাচন করবে যারা অর্থের জন্য নিজেদের সিদ্ধান্ত বদল করবে না এবং এদের মানুষদের শাসক হিসাবে তৈরি করো। 1000 জন প্রতি, 100 জন প্রতি, 50 জন প্রতি এবং 10 জন প্রতি শাসক মনোনীত করো। 22 এবার ঐ লোকেদের শাসনের ভার এই শাসকদের হাতে ছেড়ে দাও। যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ মামলা থাকে তাহলে সেই শাসকরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তোমার কাছে আসবে। কিন্তু সাধারণ মামলার সিদ্ধান্তগুলি অবশ্য তারা নিজেরাই করে নেবে। এইভাবে তোমার বেশ কিছু কাজের ভার তারা বহন করবে এবং তার ফলে লোকদের নেতৃত্ব দিতে তোমারও সুবিধা হবে। 23 যদি তুমি এভাবে এগোতে পারো, আর ঈশ্বর যদি চান তাহলে তুমি তোমার দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে এবং একইভাবে লোকরাও তাদের সমস্যার সমাধান করে ঘরে ফিরে যেতে পারবে।”
24 যিথ্রো যা বলল মোশি তাই করল। 25 ইস্রায়েলের লোকদের থেকে কিছু ভাল লোককে সে মনোনীত করল। তারপর সে তাদের নেতা হিসেবে তুলে ধরল। মোশি প্রতি 1000 জনের জন্য, প্রতি 100 জনের জন্য, প্রতি 50 জনের জন্য, এবং প্রতি 10 জনের জন্য শাসক নিযুক্ত করল। 26 এরপর থেকে সেই প্রধানরাই সাধারণ লোকদের শাসন করতে শুরু করল। লোকদের মধ্যে বিবাদ দেখা দিলে তারা নিজের নিজের অঞ্চলের নির্দিষ্ট প্রধানের কাছে যেতে লাগল সমস্যা সমাধানের জন্য। কেবলমাত্র গুরুত্বপূর্ণ কোন সমস্যা বা মামলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হত মোশিকে।
27 কিছুদিন পর মোশি তার শ্বশুর যিথ্রোকে বিদায় জানাল এবং যিথ্রো তার দেশে ফিরে গেল।
প্রকৃত দান
(মার্ক 12:41-44)
21 যীশু তাকিয়ে দেখলেন, ধনী লোকেরা মন্দিরের দানের বাক্সে তাদের দান রাখছে। 2 এরই মাঝে একজন অতি গরীব বিধবা তাতে খুব ছোট্ট ছোট্ট তামার মুদ্রা রাখল। 3 তখন যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই গরীব বিধবা অন্য আর সকলের থেকে অনেক বেশী দান করল। 4 আমি একথা বলছি কারণ অন্য আর সব লোক তাদের সম্পত্তির বাড়তি অংশ ঐ বাক্সে ফেলে গেল, কিন্তু এই বিধবার অভাব থাকা সত্ত্বেও জীবন ধারণের জন্য তার যা সম্বল ছিল, তার সবটাই দিয়ে গেল।”
মন্দির ধ্বংস
(মথি 24:1-14; মার্ক 13:1-13)
5 শিষ্যদের মধ্যে কেউ কেউ সেই মন্দিরের বিষয়ে এই মন্তব্য করলেন যে, “সুন্দর সুন্দর পাথর দিয়ে ও ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দানের জিনিস দিয়ে এই মন্দিরকে কেমন সাজানো হয়েছে!”
6 যীশু তাঁদের বললেন, “এই যে সব জিনিস তোমরা দেখছ, সময় আসবে যখন এর একটা পাথর আর একটার ওপর থাকবে না, সব ভেঙে ফেলা হবে।”
7 শিষ্যরা তখন যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “গুরু এসব কখন ঘটবে? এবং কি চিহ্ন দেখে বোঝা যাবে এসব ঘটবার সময় এসে গেছে?”
8 যীশু বললেন, “সাবধান! কেউ যেন তোমাদের না ভোলায়, কারণ অনেকেই আমার নাম ধারণ করে আসবে আর বলবে, ‘আমিই তিনি’ আর তারা বলবে, ‘সময় ঘনিয়ে এসেছে।’ তাদের অনুসারী হয়ো না! 9 তোমরা যখন যুদ্ধ ও বিদ্রোহের কথা শুনতে পাবে, তাতে ভয় পেও না, কারণ প্রথমে নিশ্চয়ই এসব হবে; কিন্তু তখনও শেষ সময় আসতে বাকী থাকবে!”
10 এরপর তিনি তাদের বললেন, “এক জাতি আর এক জাতির বিরুদ্ধে, এক রাজ্য আর এক রাজ্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। 11 মহা ভূমিকম্প হবে, বিভিন্ন জায়গায় দুর্ভিক্ষ ও মহামারী দেখা দেবে; আর আকাশের বুকে ভয়াবহ ঘটনা ও মহৎ চিহ্ন দেখতে পাবে।
12 “কিন্তু এসব ঘটনা ঘটার আগে, তারা তোমাদের গ্রেপ্তার করবে, তোমাদের প্রতি নির্যাতন করবে। তারা বিচারের জন্য তোমাদের সমাজ-গৃহে সঁপে দেবে ও তোমাদের কারাগারে ভরবে। আমারই কারণে তারা তোমাদের রাজাদের ও রাজ্যপালদের সামনে টেনে নিয়ে যাবে। 13 তাতে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য তোমরা সুযোগ পাবে। 14 তোমরা মনের দিক থেকে তৈরী থেকো; আত্মপক্ষ সমর্থন করতে তখন কি বলবে, কি জবাবদিহি করবে তার জন্য চিন্তা করো না। 15 কারণ সেই সময় আমি তোমাদের বুদ্ধি দেব, তোমাদের মুখে এমন কথা যোগাব যে তোমাদের বিপক্ষরা তা অস্বীকার করতে পারবে না আবার তার প্রতিবাদও করতে পারবে না। 16 কিন্তু তোমাদের আপন বাবা-মা ভাই ও আত্মীয় বন্ধুরাই তোমাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে তোমাদের ধরিয়ে দেবে; এমন কি তোমাদের কাউকে কাউকে মেরেও ফেলবে। 17 আমারই কারণে তোমরা সকলের কাছে ঘৃণার পাত্র হবে। 18 কিন্তু তোমাদের মাথায় একটা চুলও নষ্ট হবে না। 19 তোমরা যদি বিশ্বাসে স্থির থাক, তবেই তোমাদের প্রাণ রক্ষা পাবে।
জেরুশালেমের ধ্বংসের দিন
(মথি 24:15-21; মার্ক 13:14-19)
20 “তোমরা যখন দেখবে যে সৈন্যসামন্তরা জেরুশালেমকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেছে, তখন বুঝবে যে তার ধ্বংসের সময় ঘনিয়ে এসেছে। 21 তখন যারা যিহূদিয়ায় থাকবে তারা যেন পালিয়ে যায়। যারা জেরুশালেমে থাকবে তারা যেন অবশ্যই নগর ছেড়ে পালায়; আর যারা গ্রামে থাকবে তারা যেন নগরে না আসে। 22 কারণ এই দিনগুলো হচ্ছে শাস্তির দিন, যা শাস্ত্রের বাণী অনুসারে পূর্ণ হবে। 23 ঐ দিনগুলোতে যাদের প্রসবকাল ঘনিয়ে এসেছে ও যাদের কোলে দুধের বাচ্চা আছে, সেই সব স্ত্রীলোকদের ভয়ঙ্কর দুর্দশা হবে। আমি একথা বলছি কারণ দেশে মহাসংকট আসছে ও এই লোকদের ওপর ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে আসছে। 24 তরবারির আঘাতে তারা মারা পড়বে, আর তাদের বন্দী করে সকল জাতির কাছে নিয়ে যাওযা হবে। যতদিন না অইহুদীদের নিরুপিত সময় পূর্ণ হচ্ছে, জেরুশালেম অইহুদীদের দ্বারা অবজ্ঞা ভরে পদদলিত হবে।
ভয় করো না
(মথি 24:29-31; মার্ক 13:24-27)
25 “তখন চাঁদ, সূর্য্য ও তারাগুলিতে অনেক বিস্ময়কর জিনিস দেখা যাবে। পৃথিবীতে সমস্ত জাতি হতাশায় ভুগবে। তারা সমুদ্র গর্জন শুনে ও প্রচণ্ড ঢেউ দেখে ভয়ে বিহ্বল হয়ে পড়বে। 26 পৃথিবীতে যে ভয়ঙ্কর অবস্থা আসছে তার কথা ভেবে ভয়েতে লোকে অজ্ঞান হয়ে যাবে, কারণ আকাশের সব শক্তিগুলি ওলোট-পালট হয়ে যাবে। 27 এর পরই তারা মহাপরাক্রমে ও মহিমামণ্ডিত হয়ে মানবপুত্রকে মেঘের মধ্যে আসতে দেখবে। 28 এসব ঘটনা ঘটতে দেখলে মাথা তুলে উঠে দাঁড়িও, কারণ জেনো যে তখন তোমাদের মুক্তি আসছে!”
আমার বাক্য চিরজীবি
(মথি 24:32-35; মার্ক 13:28-31)
29 এরপর যীশু তাদের একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, “ডুমুর গাছ ও অন্যান্য গাছের দিকে দেখ। 30 যে মুহূর্তে তাদের নতুন পাতা গজায়, তা দেখে তোমরা বুঝতে পার যে গ্রীষ্মকাল এসে পড়ল বলে। 31 ঠিক সেই রকম এইসব ঘটতে দেখলে তোমরা বুঝবে যে ঈশ্বরের রাজ্য এসে পড়েছে।
32 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতক্ষণ না এসব ঘটছে, এই বংশ লোপ পাবে না। 33 আকাশ ও পৃথিবী লোপ পাবে, কিন্তু আমার বাক্য কখনও লোপ পাবে না।
সর্বদাই প্রস্তুত থেকো
34 “তোমরা সতর্ক থেকো। উচ্ছৃঙ্খল আমোদ-প্রমোদে, মত্ততায়, জাগতিক ভাবনা চিন্তায় তোমাদের মন যেন আচ্ছন্ন না হয়ে পড়ে, আর সেই দিন হঠাৎ ফাঁদের মতো তোমাদের ওপর এসে না পড়ে। 35 বাস্তবিক, পৃথিবীর সব লোকের জন্যই সেই দিন আসবে। 36 তাই সব সময় সজাগ থেকো, আর প্রার্থনা করো যেন যাই ঘটুক না কেন তা কাটিয়ে উঠবার ও মানবপুত্রের সামনে দাঁড়াবার শক্তি তোমাদের থাকে।”
37 তিনি মন্দিরের মধ্যে প্রতিদিন শিক্ষা দিতেন কিন্তু সন্ধ্যা হলে রাতে থাকার জন্য জৈতুন পর্বতে চলে যেতেন। 38 প্রতিদিন খুব ভোরে উঠে লোকেরা তাঁর কথা শোনার জন্য মন্দিরে যেত।
36 ইলীহূ বলে চলল। সে বলল:
2 “আরো কিছুক্ষণ ধৈর্য্য ধরুন এবং আমি আপনাকে শিক্ষা দেব।
ঈশ্বরের স্বপক্ষে বলবার মত আরো অনেক জিনিষ রয়েছে।
3 আমার জ্ঞান আমি সবার সঙ্গে ভাগ করে নেবো।
ঈশ্বর আমায় সৃষ্টি করেছেন এবং আমি প্রমাণ করব ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ।
4 ইয়োব, আমি সত্যি কথা বলছি।
আমি জানি আমি কি বলছি।
5 “ঈশ্বর প্রচণ্ড শক্তিমান,
কিন্তু তিনি মানুষকে ঘৃণা করেন না।
ঈশ্বর প্রচণ্ড শক্তিমান
কিন্তু তিনি ভীষণ রকমের জ্ঞানীও বটে।
6 ঈশ্বর মন্দ লোকদের বাঁচতে দেবেন না।
ঈশ্বর গরীব লোকদের সঙ্গে সর্বদাই ভালো ব্যবহার করেন।
7 যারা সৎপথে জীবনযাপন করে ঈশ্বর তাদের ওপর নজর রাখেন।
তিনি সৎ লোকদেরই শাসক হতে দেন। সৎ লোকদেরই ঈশ্বর চির দিনের জন্য সম্মান দেন।
8 তাই যদি মানুষকে শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে
এবং যদি তাদের শিকল ও দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়ে থাকে, তাহলে তারা নিশ্চয় কিছু ভুল কাজ করেছে।
9 তারা কি করেছিলো তা ঈশ্বর ওদের বলবেন।
ওরা কি পাপ করেছিলো তা ঈশ্বর ওদের বলবেন।
ঈশ্বর ওদের বলবেন যে ওরা ভীষণ অহঙ্কারী ছিলো।
10 ঈশ্বর ওই লোকগুলিকে তাঁর সতর্কবাণী শুনতে বাধ্য করবেন।
তিনি ওদের পাপ বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেবেন।
11 যদি তারা ঈশ্বরের কথা শোনে এবং তাঁকে মান্য করে,
তাহলে তারা তাদের জীবনের বাকী দিনগুলো সুখে ও সমৃদ্ধিতে যাপন করবে।
12 কিন্তু এই লোকগুলো যদি ঈশ্বরকে মানতে অস্বীকার করে তাহলে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।
তাদের নির্বোধের মত মৃত্যু হবে।
13 “যে লোকরা ঈশ্বরের তোয়াক্কা করে না তারা সর্বদাই তিক্ত স্বভাবের হয়।
এমনকি ঈশ্বর যখন ওদের শাস্তি দেন তখনও ওরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে চায় না।
14 ঐ লোকগুলো পুরুষ দেহ-জীবীর মত
অল্প বয়সেই মারা যাবে।
15 কিন্তু বিনীত লোকদের ঈশ্বর সংকট থেকে উদ্ধার করবেন।
মানুষ জেগে উঠবে এবং ঈশ্বরের কথা শুনবে বলে ঈশ্বর মানুষকে সমস্যা দেন।
16 “ইয়োব, ঈশ্বর আপনাকে সাহায্য করতে চান।
ঈশ্বর আপনাকে সমস্যা থেকে মুক্ত করতে চান।
আপনার জীবনকে ঈশ্বর আরও সাবলীল করতে চান।
ঈশ্বর আপনার সামনে প্রচুর খাদ্য দিতে চান।
17 কিন্তু ইয়োব, আপনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
তাই একজন মন্দ লোকের মত আপনি শাস্তি পেয়েছিলেন।
18 ইয়োব, সম্পদের দ্বারা আপনি নির্বোধ হয়ে যাবেন না।
অর্থ যেন আপনার মনের পরিবর্তন না করে।
19 আপনার অর্থ এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না।
এবং শক্তিশালী লোকরাও এখন কোন ভাবে সাহায্য করতে পারবে না!
20 রাত্রির আগমনের প্রত্যাশা করবেন না।
লোকে অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে যেতে চায়।
তারা ভাবে তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকবে।
21 ইয়োব, আপনি প্রচুর কষ্টভোগ করেছেন, কিন্তু মন্দকে পছন্দ করবেন না।
ভুল করবেন না, সতর্ক থাকবেন।
22 “দেখুন, ঈশ্বরের শক্তি তাঁকে মহান করেছে।
ঈশ্বর প্রত্যেকেরই মহানতম শিক্ষক।
23 কি করতে হবে তা কোন লোকই ঈশ্বরকে বলতে পারে না।
কোন লোকই ঈশ্বরকে বলতে পারে না, ‘আপনি ভুল করেছেন।’
24 ঈশ্বর যা করেছেন তার জন্য তাঁকে প্রশংসা করার কথা মনে রাখবেন।
ঈশ্বরের প্রশংসা করে লোকে অনেক গান লিখেছে।
25 ঈশ্বর কি করেছেন তা প্রত্যেকেই দেখতে পায়।
কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের কাজ শুধু মাত্র দূর থেকে দেখে।
26 হ্যাঁ, আমাদের কল্পনার চেয়েও ঈশ্বর মহান।
ঈশ্বর কতদিন ধরে বেঁচে আছেন, আমরা জানি না।
27 “ঈশ্বর পৃথিবী থেকে জল নিয়ে
তাকে বৃষ্টিতে পরিণত করেন।
28 তাই মেঘ জল দেয়
এবং বহু লোকের ওপর বৃষ্টি পড়ে।
29 কেমন করে ঈশ্বর মেঘকে ছড়িয়ে দেন,
কেমন করে আকাশে বজ্র খেলে যায় তা কেউই জানে না, বুঝতে পারে না।
30 দেখুন, ঈশ্বর তাঁর বিদ্যুৎকে আকাশে পাঠিয়েছেন
এবং সমুদ্রের গভীরতম অংশকে আবৃত করে দিয়েছেন।
31 জাতিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য
এবং তাদের প্রচুর খাবার দেওয়ার জন্য ঈশ্বর ওগুলিকে ব্যবহার করেন।
32 ঈশ্বর তাঁর হাতে বিদ্যুৎকে ধরে থাকেন
এবং যেখানে তিনি চান, সেখানেই বিদ্যুৎকে আছড়ে ফেলেন।
33 বজ্রপাত মানুষকে সতর্ক করে দেয় যে ঝড় আসছে।
তাই গবাদি পশুরাও জানতে পারে ঝড় আসছে।
6 ঈশ্বরের সহকর্মী হিসাবে আমরা তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা ঈশ্বরের যে অনুগ্রহ লাভ করেছ তা নিষ্ফল হতে দিও না। 2 কারণ ঈশ্বর বলেন,
“আমি উপযুক্ত সময়ে তোমাদের প্রার্থনা শুনলাম
এবং পরিত্রাণের দিনে আমি তোমাদের সাহায্য করলাম।”(A)
আমি যা বলছি শোন, এখনই সেই “উপযুক্ত সময়।” আজই “পরিত্রাণের দিন।”
3 আমরা চেষ্টা করি যেন আমাদের কোন কাজের দ্বারা কেউ বিঘ্নিত না হয়। যেন আমাদের কাজের কোন রকম নিন্দা কেউ করতে না পারে। 4 আমরা সব বিষয়ে নিজেদের ঈশ্বরের সেবক বলে প্রমাণ করি। আমরা ধৈর্য্যের সঙ্গে দুঃখভোগ করে সবসময় কষ্ট ও নির্যাতন সহ্য করেছি। 5 আমাদের মারধোর করা হয়েছে, কারাগারে দেওয়া হয়েছে, মারমুখী জনতার সামনে আমাদের দাঁড়াতে হয়েছে। কাজ করতে করতে অবসন্ন হয়েছি, কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি, এমনকি অনাহারেও কতদিন কেটেছে। 6-7 এসব সত্ত্বেও আমরা আমাদের জীবনের পবিত্রতা, জ্ঞান, ধৈর্য্য, স্নেহ, মমতা, পবিত্র আত্মা, প্রকৃত ভালবাসা ও সত্যের প্রচার দ্বারা এবং ঈশ্বরের পরাক্রমের দ্বারা, কি আক্রমণে কি আত্মরক্ষায় উভয় ক্ষেত্রেই সদাচারের অস্ত্র ব্যবহার করে প্রমাণ দিয়েছি যে আমরা ঈশ্বরের সেবক।
8 আমরা সম্মানিত হয়েছি, আবার অসম্মানিতও হয়েছি। আমরা অপমানিত হয়েছি, আবার প্রশংসিতও হয়েছি। আমাদের মিথ্যাবাদী হিসেবে ধরা হয়েছে যদিও আমরা সত্য বলি। 9 কিছু লোক আমাদের প্রেরিত বলে স্বীকার করে না, কিন্তু তবুও আমরা স্বীকৃত। মনে হচ্ছিল আমরা মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি, কিন্তু দেখ আমরা মরিনি। আমাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু মেরে ফেলা হচ্ছে না। 10 একদিকে মনে হয় আমরা দুঃখ পাচ্ছি কিন্তু আমরা সদাই আনন্দ করছি। মনে হয় আমরা নিঃস্ব, তবু সবকিছুই আমাদের আছে। ধরে নেওয়া হয় আমরা দরিদ্র কিন্তু আমরা অপরকে ধনবান করি।
11 হে করিন্থীয়গণ, খোলাখুলিভাবেই আমরা তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের হৃদয় তোমাদের জন্য সম্পূর্ণ খোলা রয়েছে। 12 তোমাদের প্রতি আমাদের ভালবাসা অটুট আছে; কিন্তু তোমরা তোমাদের ভালবাসা থেকে আমাদের দূরে রেখেছ। 13 আমি তোমাদের সন্তান মনে করে বলছি, আমরা যেমন তোমাদের ভালবেসেছি তোমরাও যেন তেমনি মনপ্রাণ খুলে আমাদের ভালবাস।
অবিশ্বাসীদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সতর্কবাণী
14 তোমরা অবিশ্বাসীদের থেকে আলাদা, তাই তাদের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করো না, কারণ ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে কোন যোগ থাকতে পারে না। অন্ধকারের সাথে আলোর কি কোন যোগাযোগ থাকতে পারে? 15 খ্রীষ্ট এবং দিয়াবলের মধ্যে কি কোন সম্পর্ক থাকতে পারে? অবিশ্বাসীর সাথে বিশ্বাসীরই বা কি সম্পর্ক? 16 ঈশ্বরের মন্দিরের সাথে প্রতিমারই বা কি সম্পর্ক? কারণ আমরাই তো জীবন্ত ঈশ্বরের মন্দির; যেমন ঈশ্বর বলেছেন:
“আমি তাদের মধ্যে বাস করব এবং তাদের মধ্যে যাতায়াত করব;
আমি তাদের ঈশ্বর হবো ও তারা আমার লোক হবে।”(B)
17 প্রভু বলেন, “তোমরা তাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে এস,
তাদের থেকে পৃথক হও
এবং অশুচি জিনিস স্পর্শ করো না,
তাহলে আমি তোমাদের গ্রহণ করব।”(C)
18 “আমি তোমাদের পিতা হব
ও তোমরা আমার পুত্র কন্যা হবে।” একথা সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন।(D)
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International