Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যাত্রা 15

মোশির সঙ্গীত

15 এরপর মোশি এবং ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর উদ্দেশ্যে এই গানটি গাইল:

“আমি প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাইব!
    তিনি মহান কাজ করেছেন।
তিনি ঘোড়া এবং ঘোড়সওয়ারদের
    সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন।
প্রভুই আমার শক্তি।
    তিনি আমার পরিত্রাতা
    এবং আমি তাঁর প্রশংসার গান গাইব।
প্রভু আমার ঈশ্বর,
    আমি তাঁর প্রশংসা করব।
প্রভু হলেন আমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর।
    এবং আমি তাঁকে সম্মান করব।
প্রভু হলেন মহান যোদ্ধা।
    তাঁর নাম হল প্রভু।
ফরৌণের রথ এবং সেনাদের
    তিনি সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন।
ফরৌণের সেরা সৈন্যরা
    সূফ সাগরে ডুবে গেছে।
জলের গভীরে তারা তলিয়ে গেছে।
    পাথরের মতো তারা জলে ডুবে গেছে।

“প্রভু আপনার ডান হাত অসম্ভব শক্তিশালী।
    প্রভু আপনার ডান হাত শত্রুবাহিনীকে চুরমার করে দিয়েছে।
আপনি আপনার মহান রাজকীয় ঢঙে
    আপনার বিরুদ্ধাচারীদের ধ্বংস করেছেন।
আগুনের শিখা যেমন করে ঘর পুড়িয়ে দেয়,
    তেমনি আপনার ক্রোধ তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
আপনার নিঃশ্বাসের একটি সজোর ফুৎকারে জল জমে উঠেছিল।
    সেই জলোচ্ছ্বাস একটি নিরেট দেওয়ালে পরিণত হয়েছিল
    এবং সমুদ্রের গভীরতাও ঘন হয়ে উঠেছিল।

“শত্রুরা বলেছিল,
    ‘আমি তাদের তাড়া করে ধরে ফেলব।
আমি তাদের সমস্ত ধন-সম্পত্তি লুঠ করব।
    আমি তরবারি ব্যবহার করে সব লুঠ করে নেব।
    সবকিছু আমার নিজের জন্য নিয়ে যাব।’
10 কিন্তু আপনি আপনার নিঃশ্বাস দিয়ে সমুদ্রকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন
    এবং তাদের ঢেকে দিয়েছিলেন।
তারা সীসার মতো
    সেই ক্রুদ্ধ সমুদ্রের নীচে চলে গেছে।

11 “প্রভুর মতো আর কোনও ঈশ্বর আছে?
    না! আপনার মতো আর কোনও ঈশ্বর নেই।
    আপনি অত্যন্ত পবিত্র।
    আপনি আশ্চর্যজনক শক্তিশালী।
    আপনি মহান অলৌকিক ঘটনা ঘটান।
12 আপনি আপনার ডান হাত প্রসারিত করেছিলেন,
    তাই পৃথিবী তাদের গিলে ফেলেছিল।
13 আপনি আপনার মহান করুণা দিয়ে
    লোকদের রক্ষা করেছেন।
এবং আপনার শক্তি দিয়ে
    ঐ লোকদের আপনার পবিত্র ও সুন্দর দেশে আপনি নিয়ে এসেছেন।

14 “অন্যান্য দেশ এই কাহিনী শুনে ভয় পাবে।
    পলেষ্টীয়রা ভয়ে কেঁপে উঠবে।
15 ইদোমের নেতারা ভয়ে কাঁপবে।
    মোয়াবের নেতারা ভয়ে কাঁপবে।
    কনানবাসীরা উদ্যম হারাবে।
16 ঐ শক্তিশালী লোকরা যখন আপনার ক্ষমতার প্রমাণ পাবে
    তখন তারা ভয় পেয়ে যাবে।
ওরা পাথরের মতো অনড় হয়ে থাকবে, প্রভু
    যতক্ষণ না আপনার লোকরা চলে যায়:
17 তাদের আপনার পর্বতে নিয়ে যান
    যেখানে আপনার বাসস্থান এবং সেখানে তাদের স্থাপন করুন।
আমার প্রভু, ঐ জায়গাটাই হচ্ছে সেই জায়গা যেটা আপনি তৈরী করেছেন।
    পবিত্র স্থান যেটাকে আপনার হাত প্রতিষ্ঠা করেছে।

18 “প্রভু চিরকালের জন্য যুগে যুগে শাসন করবেন।”

19 যখন ফরৌণের সমস্ত ঘোড়া, রথ ও অশ্বারোহী সমুদ্রের নীচে চলে গেল, তখন প্রভু আবার সমুদ্রের জল তাদের ওপর ফেরৎ‌ আনলেন। কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা সমুদ্রের মাঝখান দিয়ে শুকনো পথে হেঁটে গিয়েছিল।

20 তারপর হারোণের বোন মরিয়ম, মহিলা ভাববাদিনী, হাতে একটি খঞ্জনী তুলে নিল। মরিয়ম ও তার মহিলা সঙ্গীরা নাচতে ও গাইতে শুরু করল। গানের যে কথাগুলো মরিয়ম উচ্চারণ করছিল তা হল:

21 “প্রভুর উদ্দেশ্যে গান কর!
    তিনি মহান কাজ করেছেন।
তিনি ঘোড়া এবং ঘোড়াসওয়ারীদের
    সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন।”

ইস্রায়েলীয়রা মরুপ্রান্তরে গিয়ে পড়ল

22 ইস্রায়েলের লোকদের সূফ সাগর পেরোতে মোশি নেতৃত্ব দিয়েছিল। তিন দিন ধরে শূর মরুভূমি অতিক্রম করতে করতে তারা জলের সন্ধান পেল না। 23 তিন দিন পর তারা মারাতে এসে পৌঁছালো। মারাতে জলের সন্ধান মিললেও সেই জল এত তেঁতো ছিল যে তা পানের অযোগ্য। (এরজন্য এই জায়গার নাম রাখা হয়েছিল মারা বা তিক্ততা।)

24 লোকরা মোশির কাছে এসে নালিশ জানালো। তারা বলল, “এখন আমরা কি পান করব?”

25 মোশি প্রভুর কাছে কেঁদে পড়ল। প্রভু তাকে এক গাছের সন্ধান দিলেন। মোশি সেই গাছ ঐ তেঁতো জলে ডুবিয়ে দিতেই সেই জল সুস্বাদু হয়ে উঠল।

ঐ স্থানে প্রভু লোকদের বিচার করে তাদের জন্য একটি আইন প্রণযনও করেছিলেন। প্রভু তাদের বিশ্বাসেরও পরীক্ষা নিলেন। 26 প্রভু বললেন, “তোমরা অবশ্যই তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে মেনে চলবে। তিনি যেটা সঠিক মনে করবেন সেটাই তোমরা করবে। তোমরা যদি প্রভুর সমস্ত নির্দেশ ও বিধি মেনে চলো তাহলে তোমরা মিশরীয়দের মতো অসুস্থ থাকবে না। আমি প্রভু, তোমাদের মিশরীয়দের মতো অসুস্থ করে তুলব না। আমিই সেই প্রভু যিনি তোমাদের আরোগ্য দান করেছেন।”

27 তারপর লোকরা এলীমে এসে উপস্থিত হল। সেখানে বারোটি জলের ঝর্ণা এবং 70টি তাল গাছ ছিল। তারা সেই জায়গায় জলের ধারে তাদের শিবির তৈরি করল।

লূক 18

ঈশ্বর তাঁর লোকদের উত্তর দেবেন

18 নিরাশ না হয়ে তাদের যে সব সময় প্রার্থনা করা উচিত, তা বোঝাতে গিয়ে যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি দিলেন, তিনি বললেন, “কোন এক শহরে একজন বিচারক ছিলেন। তিনি ঈশ্বরকে ভয় করতেন না, আবার মানুষকেও গ্রাহ্য করতেন না। সেই শহরে একজন বিধবা ছিল। সে বার বার সেই বিচারকের কাছে এসে বলত, ‘আপনাকে দেখতে হবে যেন আমার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমি ন্যায় বিচার পাই!’ কিছু দিন ধরে সেই বিচারক তার কোন কথাই শুনতে চাইলেন না। কিন্তু এক সময় তিনি মনে মনে বললেন, ‘যদিও আমি ঈশ্বরকে ভয় করি না আর মানুষকে মানি না, তবু এই বিধবা যখন আমায় এত বিরক্ত করছে তখন আমি দেখব সে যেন ন্যায় বিচার পায়, তাহলে সে আর বার বার এসে আমাকে জ্বালাতন করবে না।’”

এরপর প্রভু বললেন, “লক্ষ্য কর! ঐ অধার্মিক বিচারকর্তা কি বলল। তাহলে ঈশ্বর কি তাঁর মনোনীত লোকেরা, যাঁরা দিন-রাত তাঁকে ডাকছে, তারা যেন ন্যায় বিচার পায় তা দেখবেন না? তিনি কি তাদের সাহায্য করতে অযথা দেরী করবেন? আমি তোমাদের বলছি, তিনি তাদের পক্ষে ন্যায় বিচার করবেনই আর তা তাড়াতাড়িই করবেন। যাইহোক্, মানবপুত্র যখন আসবেন, তখন কি তিনি এই পৃথিবীতে বিশ্বাস দেখতে পাবেন?”

ঈশ্বরের চোখে ধার্মিকহওয়া

যাঁরা নিজেদের ধার্মিক মনে করত আর অন্যকে তুচ্ছ করত, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এই দৃষ্টান্তটি দিলেন, 10 “দুজন লোক মন্দিরে প্রার্থনা করার জন্য গেল; তাদের মধ্যে একজন ফরীশী আর অন্য জন কর-আদায়কারী। 11 ফরীশী দাঁড়িয়ে নিজের সম্বন্ধে এইভাবে প্রার্থনা করতে লাগল, ‘যে ঈশ্বর, আমি তোমায় ধন্যবাদ দিচ্ছি যে আমি অন্য সব লোকদের মতো নই; দস্যু, প্রতারক, ব্যভিচারী অথবা এই কর-আদায়কারীর মতো নই। 12 আমি সপ্তাহে দুদিন উপোস করি, আর আমার আয়ের দশ ভাগের একভাগ দান করি।’

13 “কিন্তু সেই কর-আদায়কারী দাঁড়িয়ে স্বর্গের দিকে মুখ তুলে তাকাতেও সাহস করল না, বরং সে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বলল, ‘হে ঈশ্বর, আমি পাপী! আমার প্রতি দয়া কর!’ 14 আমি তোমাদের বলছি, এই কর-আদায়কারী ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়ে বাড়ি চলে গেল কিন্তু ঐ ফরীশী নয়। যে কেউ নিজেকে বড় করে তাকে ছোট করা হবে; আর যে নিজেকে ছোট করে তাকে বড় করা হবে।”

ঈশ্বরের রাজ্যে কে প্রবেশ করবে?

(মথি 19:13-15; মার্ক 10:13-16)

15 লোকেরা একসময় তাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল যেন তিনি তাদের স্পর্শ করে আশীর্বাদ করেন। এই দেখে শিষ্যরা তাদের খুব ধমক দিলেন। 16 কিন্তু যীশু সেই ছেলেমেয়েদের তাঁর কাছে ডাকলেন, আর বললেন, “ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আমার কাছে আসতে দাও, তাদের বারণ করো না, কারণ এই শিশুদের মতো লোকদের জন্যই তো ঈশ্বরের রাজ্য। 17 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি কেউ শিশুর মতো ঈশ্বরের রাজ্যকে গ্রহণ না করে তবে সে কোনমতে তার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না!”

এক ধনী লোকের প্রশ্ন

(মথি 19:16-30; মার্ক 10:17-31)

18 ইহুদীদের একজন দলনেতা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “হে সদগুরু, অনন্ত জীবন পেতে হলে আমাকে কি করতে হবে?”

19 যীশু তাঁকে বললেন, “তুমি আমায় সৎ‌ বলছ, কেন? ঈশ্বর ছাড়া আর কেউ সৎ‌ নয়। 20 তুমি তো ঈশ্বরের সব আজ্ঞা জান, ব্যভিচার করো না, নরহত্যা করো না, চুরি করো না, মিথ্যা সাক্ষী দিও না, তোমার বাবা-মাকে সম্মান করো।”(A)

21 সে বলল, “আমি ছোটবেলা থেকেই সে সব পালন করে আসছি।”

22 একথা শুনে যীশু তাকে বললেন, “কিন্তু তোমার মধ্যে একটি বিষয়ের এখনও ত্রুটি আছে। তোমার যা কিছু আছে সে সব বিক্রি করে তা গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাহলে স্বর্গে তোমার ধন-সম্পদ জমা হবে, তারপর আমায় অনুসরণ কর।” 23 কিন্তু এই কথা শুনে তার খুবই দুঃখ হল, কারণ তার প্রচুর ধন-সম্পদ ছিল।

24 যীশু তাকে দুঃখিত হতে দেখে বললেন, “যাদের ধন-সম্পদ আছে তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কত কঠিন! 25 হ্যাঁ, একজন ধনীর পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা অপেক্ষা ছুঁচের মধ্য দিয়ে উটের পার হওয়া সহজ।”

কারা উদ্ধার পাবে?

26 যে সব লোক একথা শুনল তারা বলে উঠল, “তাহলে কে উদ্ধার পেতে পারে?”

27 যীশু বললেন, “মানুষের পক্ষে যা সম্ভব নয় ঈশ্বরের পক্ষে তা সম্ভব।”

28 তখন পিতর বললেন, “দেখুন, আমরা তো সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে আপনার অনুসারী হয়েছি।”

29 যীশু তখন তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি যারা ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য ঘর-বাড়ি, স্ত্রী, ভাই-বোন, মা-বাবা কিংবা ছেলে-মেয়ে ত্যাগ করেছে, 30 তারা প্রত্যেকে এ জীবনেই সেই সব বহুগুণে ফিরে পাবে, এছাড়া আগামী যুগে লাভ করবে অনন্ত জীবন।”

যীশু মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হবেন

(মথি 20:17-19; মার্ক 10:32-34)

31 যীশু তাঁর বারোজন প্রেরিতকে একপাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন, “শোন! আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি; আর ভাববাদীরা মানবপুত্রের বিষয়ে যা কিছু লিখে গেছেন, সে সবই পূর্ণ হবে। 32 হ্যাঁ, অইহুদীদের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হবে, তারা তাঁকে উপহাস করবে, গালাগালি দেবে, তাঁর গায়ে থুতু ছেটাবে। 33 তারা তাঁকে কশাঘাত করবে ও শেষ পর্যন্ত হত্যাই করবে; আর তৃতীয় দিনে মৃত্যুর মধ্য থেকে তিনি পুনরুত্থিত হবেন।” 34 তিনি কি বলতে চাইছেন, প্রেরিতেরা কিন্তু তার কিছুই বুঝতে পারলেন না। তিনি যে কি বলছেন তা তাঁরা বুঝতে পারলেন না, কারণ এসব কথার অর্থ তাদের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল।

যীশু অন্ধকে দৃষ্টি দান করলেন

(মথি 20:29-34; মার্ক 10:46-52)

35 যীশু যখন যিরীহোর কাছাকাছি পৌঁছালেন, তখন সেখানে রাস্তার ধারে বসে একজন অন্ধ ভিক্ষা করছিল। 36 অনেক লোকজন যাওযার আওয়াজ শুনে সেই ভিখারী ব্যাপার কি তা জিজ্ঞাসা করল।

37 লোকেরা তাকে বলল, “নাসরতীয় যীশু সেখান দিয়ে যাচ্ছেন।”

38 তখন সে চিৎকার করে বলে উঠল, “হে দায়ূদের বংশধর যীশু, আমাকে দয়া করুন।”

39 যে সব লোক সেই ভীড়ের সামনে ছিল তারা তাকে চুপ করতে বলল, কিন্তু সে আরও চিৎকার করে বলল, “হে দায়ূদের বংশধর, আমায় দয়া করুন!”

40 যীশু থেমে গেলেন, তিনি সেই অন্ধকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে বললেন। সেই অন্ধ তাঁর কাছে এলে পর তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, 41 “তুমি কি চাও? তোমার জন্য আমি কি করব?”

সে বলল, “প্রভু, আমি যেন দেখতে পাই।”

42 যীশু তাকে বললেন, “বেশ! তুমি চোখে দেখতে পাও, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করল।”

43 সঙ্গে সঙ্গে সে দেখতে পেল আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে যীশুর পেছনে পেছনে চলল। যাঁরা এই ঘটনা দেখল তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল।

ইয়োব 33

33 “ইয়োব, এখন আমার কথা শুনুন।
    আমি যা বলি তা মন দিয়ে শুনুন।
আমি বলবার জন্য প্রস্তুত।
আমার অন্তর সৎ‌ তাই আমি সৎ‌ বাক্যই বলবো।
    আমি যা জানি সে বিষয়ে আমি সত্যই বলবো।
ঈশ্বরের আত্মা আমায় সৃষ্টি করেছে।
    ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের নিঃশ্বাস আমাকে জীবন দিয়েছে।
ইয়োব, আমার কথা শুনুন এবং যদি পারেন আমার প্রশ্নর উত্তর দিন।
    আপনার উত্তর তৈরী করে রাখুন যাতে আপনি তর্ক করতে পারেন।
ঈশ্বরের সামনে আপনি এবং আমি উভয়েই সমান।
    আমাদের দুজনকে ঈশ্বর মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন।
ইয়োব, আমাকে ভয় পাবেন না।
    আমি আপনার প্রতি কঠোর হব না।

“কিন্তু ইয়োব, আমি শুনেছি,
    আপনি কি বলেছেন,
আপনি বলেছেন: ‘আমি শুচিশুদ্ধ; আমি নিষ্পাপ।
    আমি কোন ভুল করি নি; আমি অপরাধী নই!
10 আমি কোন ভুল করি নি, কিন্তু ঈশ্বর আমার বিরুদ্ধে।
    ঈশ্বর আমার সঙ্গে শত্রুর মত ব্যবহার করেছেন।
11 ঈশ্বর আমার পায়ে শিকল পরিয়েছেন।
    আমার সব পথগুলি ঈশ্বর লক্ষ্য করেন।’

12 “কিন্তু ইয়োব, এ ক্ষেত্রে আপনি ভুল করেছেন।
    আমি প্রমাণ করবো যে আপনি ভুল করেছেন।
    কেন? কারণ, যে কোন লোকের চেয়ে ঈশ্বর মহান।
13 আপনি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ আনেন?
    কেন আপনি দাবী করেন, ঈশ্বর কোন লোকের অভিযোগের উত্তর দেন না?
    আপনি ভেবেছেন ঈশ্বর সবকিছুই আপনার কাছে ব্যাখ্যা করে দেবেন?
14 হতে পারে ঈশ্বর যা করেন তিনি তার ব্যাখ্যা দেন।
    কিন্তু ঈশ্বর যে ভাবে কথা বলেন লোকে তা বোঝে না।
15 রাত্রে যখন লোকরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন
    ঈশ্বর হয়তো তখন স্বপ্নে কথা বলেন।
16 তখন তারা ভীষণ ভয় পায়।
    তখন তারা ঈশ্বরের সাবধান বাণী শোনে।
17 ভুল কাজ করার থেকে বিরত হতে ঈশ্বর তাদের সতর্ক করে দেন
    এবং তাদের অহঙ্কারী হওয়া থেকে বিরত রাখেন।
18 মৃত্যুলোক থেকে উদ্ধার করবার জন্য ঈশ্বর মানুষকে সতর্ক করে দেন।
    ধ্বংসোন্মুখ লোকদের পরিত্রাণ করার জন্য ঈশ্বর তা করেন।

19 “ঈশ্বর হয়ত একজন ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দিয়ে শুধরে দেন,
    তাদের হাড়েও ক্রমাগত ব্যথা হতে পারে।
20 তখন সে লোকটি খেতে পারে না,
    সেই লোকটির এত যন্ত্রণা থাকে যে সে সব চেয়ে ভালো খাবারকেও ঘৃণা করে।
21 ঐ লোকটির গায়ের মাংস আর দেখা যায় না।
    ঐ লোকটির হাড়গুলো বেরিয়ে পড়ে।
22 ঐ লোকটি ‘গহবর’ এর কাছাকাছি পৌঁছে যায়।
    ওর জীবনও মৃত্যুর কাছাকাছি চলে আসে।
23 ঈশ্বরের হাজার হাজার দেবদূত আছে; হয়তো তাদের একজন দূত ঐ লোকের ওপর নজর রাখছে।
    সেই দূত হয়তো ঐ লোকটার জন্যই বলে এবং সে যা ভালো কাজ করেছে সে সম্পর্কেই বলে।
24 হয়তো ঐ দূত ঐ লোকটির প্রতি সদয় হয়ে ঈশ্বরকে বলবে:
    ‘এই লোকটাকে গহবর থেকে উদ্ধার করে দিন!
    আমি ওর জীবনের জন্য একটি মুক্তিপন পেয়েছি।’
25 তখন ঐ লোকটির দেহ আবার তারুণ্যে ভরে উঠবে।
    যুবকাবস্থায় তার দেহ যেমন ছিল, ঠিক সে রকম হয়ে যাবে।
26 ঐ লোকটি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবে এবং ঈশ্বর ওর প্রার্থনার উত্তর দেবেন।
    ঐ লোকটি আনন্দে চিৎকার করবে এবং ঈশ্বরের পূজো করবে।
    তার সৎজীবনের জন্য ঈশ্বর তাকে পুরস্কৃত করবেন ও আবার সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করবে।
27 ঐ ব্যক্তিটি লোকদের কাছে তার দোষ স্বীকার করবে।
    সে বলবে, ‘আমি পাপ করেছিলাম।
আমি ভালোকে মন্দে পরিণত করেছিলাম।
    কিন্তু আমার যে শাস্তি প্রাপ্য ছিল, সে কঠিন শাস্তি ঈশ্বর আমাকে দেন নি!
28 আমার আত্মাকে ঈশ্বর পাতালের মধ্যে পতন থেকে রক্ষা করেছেন।
    আমি এখন আবার জীবনকে উপভোগ করতে পারি।’

29 “ঐ লোকটার জন্য ঈশ্বর বার বার এইসব করেছেন।
30 কেন? ঐ লোকটিকে গহবর থেকে উদ্ধার করবার জন্য,
    যাতে ঐ লোকটি আবার তার জীবনকে উপভোগ করতে পারে।

31 “ইয়োব, আমার দিকে মনোযোগ দিন; আমার কথা শুনুন।
    চুপ করুন এবং আমাকে কথা বলতে দিন।
32 কিন্তু ইয়োব, আপনি যদি আমার সঙ্গে একমত না হন তাহলে আপনি কথা বলে যান।
    আমাকে আপনার যুক্তিগুলি বলুন
    কারণ আমি দেখাতে উদ্‌গ্রীব যে আপনি নির্দোষ।
33 কিন্তু ইয়োব, যদি আপনার কিছু বলবার না থাকে, তাহলে আমার কথা শুনুন।
    চুপ করে থাকুন, আমি আপনাকে প্রজ্ঞা বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে দেবো।”

2 করিন্থীয় 3

ঈশ্বরের সেবকদের নতুন চুক্তি

আমরা এসব বলে কি আবার নিজেদের বিষয়ে প্রশংসা করতে শুরু করেছি? অথবা কোন কোন লোক যেমন করে থাকে তেমনি তোমাদের কাছে আমাদেরও কি কোন পরিচয় পত্র নিয়ে যেতে হবে, বা তোমাদের সুপারিশের কি আমাদের কোন প্রয়োজন আছে? তোমরাই আমাদের পরিচয় পত্র, যা আমাদের হৃদয়ে লেখা আছে, যা সমস্ত মানুষ জানতে ও পড়তে পারে। তোমরা যে খ্রীষ্টের লেখা পত্র এবং আমরাই তা পৌঁছে দিয়েছি তা তো দেখতেই পাওয়া যাচ্ছে। তা কালি দিয়ে লেখা নয়, কিন্তু জীবন্ত ঈশ্বরের আত্মা দিয়ে লেখা; পাথরের ফলকে লেখা নয়, মানুষের হৃদয়ের ফলকের ওপরেই লেখা।

খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের ওপর আমাদের এই রকম দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আমরা নিজেরা নিজেদের যোগ্যতায় একাজ করতে পারি, তা করার শক্তি ঈশ্বরই দিয়ে থাকেন। তিনিই আমাদের নতুন চুক্তির সেবক করেছেন। এই নতুন চুক্তি কোন লিখিত বিধি-ব্যবস্থা নয় কিন্তু আত্মিক ব্যবস্থা, কারণ লিখিত যে বিধি-ব্যবস্থা তা মৃত্যু নিয়ে আসে কিন্তু আত্মা জীবন দান করে।

নতুন চুক্তি মহামহিমা আনে

যদি পাথরের ফলকের[a] ওপর লেখা ব্যবস্থা, যার পরিণতি মৃত্যু, তা দেবার সময় এমন ঔজ্জ্বল্যের সাথে এসেছিল যে ইস্রায়েলের লোকেরা ঔজ্জ্বল্যের জন্য মোশির মুখের দিকে সোজা তাকাতে পারছিল না, যদিও সেই উজ্জ্বলতা ম্লান হয়ে যাচ্ছিল, তবে আত্মার কাজ কি অনেক বেশী মহিমামণ্ডিত হবে না? যে বিধি-ব্যবস্থায় মানুষ দোষী প্রতিপন্ন হচ্ছিল তা যদি মহিমামণ্ডিত হয়ে থাকে, তবে যে বিধি-ব্যবস্থা মানুষকে ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন করে তার মহিমা আরও কত না বেশী হবে। 10 বাস্তবিক, তুলনায় নতুন বিধি-ব্যবস্থার মহিমার উজ্জ্বলতার কাছে পুরানো বিধি-ব্যবস্থার মহিমা ম্লান হয়ে যায়। 11 যে বিধি-ব্যবস্থা অল্প দিনের মধ্যে লোপ পেয়ে গেল তার মহিমা যদি এত উজ্জ্বল হয়ে থাকে, তবে যে বিধি-ব্যবস্থা চিরস্থায়ী তার মহিমা আরও কত না বেশী উজ্জ্বল হবে!

12 অতএব আমাদের এই ধরণের প্রত্যাশা থাকাতে আমরা খুব নির্ভীক হতে পারি। 13 আমরা মোশির মত নই। মোশি তো নিজের মুখ ঢেকে রাখতেন যাতে ইস্রায়েলীয়রা সেই উজ্জ্বলতা দেখতে না পায়, কারণ সেই মহিমা কমতে কমতে মিলিয়ে যাচ্ছিল। 14 তাদের মন কঠোর হয়ে গিয়েছিল, কারণ যখন শাস্ত্র পড়া হয় তখন মনে হয় আজও তাদের সেই আবরণ রয়েই গেছে। সেই আবরণ এখনও সরে নি, একমাত্র খ্রীষ্টের মাধ্যমেই সেই আবরণ সরিয়ে দেওয়া সম্ভব। 15 হ্যাঁ, আজও মোশির বিধি-ব্যবস্থার পুস্তক পড়ার সময় তাদের হৃদয়ের ওপরে আবরণ থাকে। 16 কিন্তু যখনই কেউ প্রভুর দিকে ফেরে তখন সেই আবরণ সরে যায়। 17 এই প্রভু হলেন আত্মা, আর প্রভুর আত্মা যেখানে সেখানেই স্বাধীনতা। 18 তাই, যখন আমরা অনাদৃত মুখে আয়নায় দেখা ছবির মত করে প্রভুর মহিমা দেখতে থাকি, তখন তা দেখতে দেখতে আমরা সকলেই তাঁর সেই (মহিমাময়) রূপে রূপান্তরিত হতে থাকি। সেই রূপান্তর আমাদের মহিমা থেকে উজ্জ্বলতর মহিমার মধ্যে নিয়ে যায়। এই মহিমা আমরা প্রভু, যিনি আজ্ঞা করেন তাঁর কাছ থেকে লাভ করি।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International