M’Cheyne Bible Reading Plan
13 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের প্রতিটি নারীর প্রথমজাত পুত্র সন্তানকে আমার উদ্দেশ্যে দান কর। এমনকি প্রত্যেকটি পশুর প্রথম পুরুষ শাবকটিও আমার হবে।”
3 মোশি লোকদের বলল, “এই দিনটিকে মনে রেখো। তোমরা মিশরের ক্রীতদাস ছিলে। কিন্তু প্রভু তাঁর মহান শক্তি দিয়ে এই দিনে তোমাদের দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছেন। তোমরা খামিরবিহীন রুটি খাবে। 4 আজ আবীব মাসের (বসন্তকালের) এই দিনে তোমরা মিশর ত্যাগ করেছ। 5 প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের দেশ তোমাদের দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রভু তোমাদের এই বিশাল সম্পদে ভরা শস্য শ্যামল দেশে নিয়ে আসার পর তোমরা অবশ্যই প্রতি বছর প্রথম মাসের এই বিশেষ দিনে উপাসনা করবে।
6 “সাতদিন ধরে তোমরা খামিরবিহীন রুটি খাবে। সাত দিনের দিন ভোজন উৎসব করবে। এই মহাভোজ উৎসব হবে প্রভুকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে। 7 তাই সাতদিন ধরে তোমরা খামিরবিহীন রুটি খাবে। তোমাদের দেশের কোথাও কোন খামিরবিশিষ্ট রুটি অবশ্যই থাকবে না। 8 সেইদিন তোমরা তোমাদের সন্তানদের বলবে, ‘প্রভু আমাদের মিশর দেশ থেকে উদ্ধার করে এনেছেন বলে আমরা এই মহাভোজ উৎসব পালন করি।’
9 “এই বিশ্রামের দিনটিকে কোনও বিশেষ দিনে হাতে বাঁধা সুতোর মতো তোমাদের মনে রাখা উচিৎ।[a] মনে রাখবে দুই চোখের মাঝখানে কপালে লাগানো তিলকের মতো। এই ছুটির দিনটি তোমাদের প্রভুর শিক্ষামালাকে মনে রাখতে সাহায্য করবে। এটা তোমাদের সাহায্য করবে প্রভুর মহান শক্তিকে মনে রাখতে যিনি তোমাদের মিশর থেকে মুক্ত করেছেন। 10 সুতরাং প্রতি বছর ছুটির দিনটিকে তোমরা প্রতি বছর সঠিক সময় স্মরণ করবে।
11 “তোমাদের পূর্বপুরুষদের এবং তোমাদের কাছে প্রতিশ্রুতি মতো প্রভু তোমাদের কনানীয়দের দেশে নিয়ে যাবেন। কিন্তু প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তোমাদের তিনি এই দেশ দিয়ে দেবেন। ঈশ্বর তোমাদের এই দেশ দেওয়ার পর, 12 তোমরা কিন্তু তাঁকে তোমাদের প্রথম পুত্র সন্তান এবং ভূমিষ্ট হওয়া প্রথম পুরুষ শাবককে প্রভুর উদ্দেশ্যে দান করবে। 13 প্রতিটি গাধার প্রথমজাত পুরুষ শাবককে প্রতিটি মেষ শাবকের বিনিময়ে প্রভুর কাছ থেকে কিনে মুক্ত করে আনতে পারবে। যদি মুক্ত করতে না পারো তাহলে গাধার শাবকটিকে ঘাড় মটকে হত্যা করবে। এবং সেটাই হবে প্রভুর প্রতি নৈবেদ্য। কিন্তু মানুষের প্রথমজাত পুত্র সন্তানদের অবশ্যই প্রভুর কাছ থেকে ফেরৎ নিয়ে আসতে হবে।
14 “ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তানরা জিজ্ঞাসা করবে, তোমরা এগুলো কেন করলে, ‘এগুলোর মানেই বা কি?’ তখন তোমরা বলবে, ‘আমরা মিশরে দাসত্ব করতাম। কিন্তু প্রভুই তাঁর মহান শক্তি প্রয়োগ করে আমাদের মিশর দেশ থেকে উদ্ধার করে এনেছিলেন। 15 মিশরে ফরৌণ ছিলেন ভীষণ জেদী। তিনি কিছুতেই আমাদের মুক্তি দিচ্ছিলেন না। তাই প্রভু তখন সে দেশের প্রত্যেক প্রথমজাত সন্তানদের হত্যা করেছিলেন। প্রভু মানুষ ও পশু উভয়েরই প্রথমজাত পুরুষ সন্তানদের হত্যা করেছিলেন। সেইজন্যই আমরা সমস্ত প্রথমজাত পুং পশুদের প্রভুর কাছে উৎসর্গ করি এবং প্রভুর কাছ থেকে আমাদের প্রথমজাত পুত্র সন্তানদের কিনে নিই।’ 16 এরই চিহ্ন হিসাবে তোমাদের হাতে সুতো বাঁধা এবং দুই চোখের মাঝখানে তিলক, যাতে তোমরা মনে রাখতে পার যে প্রভু তাঁর পরাক্রম শক্তি প্রয়োগ করে আমাদের মিশর দেশ থেকে উদ্ধার করে এনেছেন।”
মিশর দেশ ত্যাগ করার যাত্রাপথ
17 ফরৌণ যখন লোকদের চলে যেতে দিলেন, ঈশ্বর তাদের পলেষ্টীয় দেশের মধ্যে দিয়ে ভূমধ্যসাগর বরাবর সহজ সমুদ্র পথ ব্যবহার করতে দেন নি, যদিও সেটা রাস্তা ছিল। ঈশ্বর বলেছিলেন, “ঐ দিক দিয়ে গেলে যুদ্ধ করতে হবে। তখন লোকরা মত পরিবর্তন করে আবার মিশরেই ফিরে যেতে পারে।”
18 তাই ঈশ্বর তাদের সূফ সাগরের দিকবর্তী মরুভূমির মধ্যে দিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। মিশর ত্যাগ করার সময় ইস্রায়েলের লোকরা যুদ্ধের পোশাকে নিজেদের সজ্জিত করল।
যোষেফ ঘরে গেল
19 মোশি যোষেফের অস্থি বয়ে নিয়ে চলল। (যোষেফ মারা যাবার আগে ইস্রায়েলের পুত্রদের এই কাজ করার প্রতিশ্রুতি করিয়ে নিয়েছিল। যোষেফ বলেছিল, “ঈশ্বর তোমাদের যখন রক্ষা করবেন তখন তোমরা মিশর দেশ থেকে আমার অস্থি সকল বয়ে নিয়ে এসো।”)
প্রভু তাঁর লোকদের নেতৃত্ব দিলেন
20 ইস্রায়েলীয়রা সুক্কোৎ ছেড়ে এসেছিল এবং এথমে, যেটা মরুভুমির কাছে ছিল, সেখানে তাঁবু গাড়ল। 21 প্রভু সেই সময় তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে এলেন। সেই যাত্রার সময় প্রভু পথ দেখানোর জন্য দিনের বেলায় লম্বা মেঘ স্তম্ভ এবং রাতের বেলায় আগুনের শিখা ব্যবহার করতেন। ঐ আগুনের শিখা রাতের বেলায় তাদের পথ চলার আলো যোগাতো। 22 লম্বা মেঘ স্তম্ভ সারাদিন তাদের সঙ্গে থাকত এবং রাতে থাকত আগুনের শিখা।
প্রকৃত সম্পদ
16 এরপর যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, “কোন একজন ধনী ব্যক্তির একজন দেওয়ান ছিল; আর এই দেওয়ান তার মনিবের সম্পদ নষ্ট করছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল। 2 তখন সেই ধনী ব্যক্তি ঐ দেওয়ানকে ডেকে বললেন, ‘তোমার বিষয়ে আমি এ কি শুনছি? তোমার কাজের হিসাব আমায় দাও, কারণ তুমি আর আমার দেওয়ান থাকতে পারবে না।’
3 “তখন সেই দেওয়ান মনে মনে বলল, ‘এখন আমি কি করব? আমার মনিব তো আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করলেন। আমি যে মজুরের কাজ করে খাব তার ক্ষমতাও আমার নেই, আর ভিক্ষা করতেও আমার লজ্জা লাগে। 4 আমার দেওয়ানী পদ গেলেও লোকে যাতে তাদের বাড়িতে আমায় থাকতে দেয় সে জন্য আমায় কি করতে হবে তা আমি জানি।’
5 “তখন তার মনিবের কাছে যারা ধারে জিনিস নিয়েছিল তাদের প্রত্যেককে সে ডেকে তাদের প্রথম জনকে বলল, ‘আমার মনিবের কাছে তুমি কত ধার?’ 6 সে বলল, ‘একশো মন অলিভ তেল।’ তখন সেই দেওয়ান তাকে বলল, ‘এই নাও তোমার হিসাবের কাগজটা, তাড়াতাড়ি করে লেখ, পঞ্চাশ মন।’
7 “এরপর আর একজন লোককে সে বলল, ‘আর তুমি, তুমি কত ধার?’ সে বলল, ‘একশো মন গম।’ সেই দেওয়ান তাকে বলল, ‘তোমার রসিদটা দেখি, এটাতে আশি মন লেখ।’
8 “সেই মনিব তাঁর অসৎ দেওয়ানের প্রশংসা করলেন, কারণ সে বুদ্ধিমানের মত কাজ করেছিল। এ জগতের লোকেরা নিজেদের মত লোকেদের সঙ্গে আচার আচরণে আত্মিক লোকদের থেকে বেশী বিচক্ষণ।
9 “আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের জাগতিক সম্পদ দিয়ে নিজেদের জন্য বন্ধু লাভ কর, যেন যখন তা শেষ হয়ে যাবে, তখন তারা তোমাদের অনন্ত আবাসে স্বাগত জানায়। 10 যে সামান্য বিষয়ে বিশ্বস্ত হতে পারে, বড় ব্যাপারেও তাকে বিশ্বাস করা চলে। যে ছোটখাটো বিষয়ে অবিশ্বস্ত, সে বড় বড় বিষয়েও অবিশ্বস্ত হবে। 11 তাই জাগতিক সম্পদ সম্বন্ধে তুমি যদি বিশ্বস্ত না হও, তবে প্রকৃত সত্য সম্পদের বিষয়ে কে তোমাকে বিশ্বাস করবে। 12 অপরের জিনিসের ব্যাপারে তোমাদের যদি বিশ্বাস করা না যায়, তবে তোমাদের যা নিজস্ব সম্পদ তাই বা কে তোমাদের দেবে?
13 “কোন দাস দুজন কর্তার দাসত্ব করতে পারে না, হয় সে একজনকে ঘৃণা করবে ও অন্যজনকে ভালবাসবে, অথবা একজনের অনুগত হয়ে অন্য জনকে তুচ্ছ করবে। তোমরা ঈশ্বর ও ধন-সম্পদ উভয়েরই দাসত্ব করতে পার না।”
ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা অপরিবর্তনীয়
(মথি 11:12-13)
14 অর্থলোভী ফরীশীরা যীশুর এইসব কথা শুনে যীশুকে ব্যঙ্গ করতে লাগল। 15 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা সেই রকম লোক, যারা লোকচক্ষে নিজেদের খুব ধার্মিক বলে জাহির করে থাকে, কিন্তু তোমাদের অন্তরে কি আছে ঈশ্বর তা জানেন। মানুষের চোখে যা মহান, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তা ঘৃন্য।
16 “যোহন বাপ্তাইজকের সময় পর্যন্ত বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষার প্রচলন ছিল। তারপর থেকে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় সুসমাচার প্রচার করা শুরু হয়েছে। আর সেই রাজ্যে প্রবেশ করার জন্য সবাই প্রবলভাবে চেষ্টা করছে। 17 তবে বিধি-ব্যবস্থার এক বিন্দু বাদ পড়ার চেয়ে বরং আকাশ ও পৃথিবীর লোপ পাওয়া সহজ।
বিবাহ বিচ্ছেদ ও পুনর্বিবাহ
18 “যে কেউ নিজের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে, সে ব্যভিচার করে; আর যে সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিয়ে করে সেও ব্যভিচার করে।”
ধনী ব্যক্তি ও লাসারের কাহিনী
19 “এক সময় একজন ধনী ব্যক্তি ছিল, সে বেগুনী রঙের কাপড় ও বহুমূল্য পোশাক পরত; আর প্রতিদিন বিলাসে দিন কাটাতো। 20 তারই দরজার সামনে লাসার নামে একজন ভিখারী পড়ে থাকত, যার সারা শরীর ঘায়ে ভরে গিয়েছিল। 21 সেই ধনী ব্যক্তির টেবিল থেকে টুকরো-টাকরা যে খাবার পড়ত তাই খেয়ে সে পেট ভরাবার আশায় থাকত, এমনকি কুকুররা এসে তার ঘা চেটে দিত।
22 “একদিন সেই গরীব ভিখারী মারা গেল, আর স্বর্গদূতরা এসে তাকে নিয়ে গেল এবং সে অব্রাহামের কোলে স্থান পেল। সেই ধনী ব্যক্তিও একদিন মারা গেল, আর তাকে সমাধি দেওয়া হল। 23 সেই ধনী ব্যক্তি পাতালে নরকে খুব যন্ত্রণার মধ্যে কাটাতে থাকল। এই অবস্থায় সে মুখ তুলে তাকাতে বহুদূরে অব্রাহামকে দেখতে পেল; আর অব্রাহামের কোলে সেই লাসারকে দেখতে পেল। 24 সেই ধনী ব্যক্তি তখন চিৎকার করে বলে উঠল, ‘হে পিতা, অব্রাহাম, আমার প্রতি দয়া করুন, লাসারকে এখানে পাঠিয়ে দিন, যেন সে এখানে এসে ওর আঙ্গুলের ডগা জলে ডুবিয়ে আমার জিভ জুড়িয়ে দেয়, কারণ আমি এই আগুনের মধ্যে বড়ই কষ্ট পাচ্ছি!’
25 “কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘হে আমার বৎস, মনে করে দেখ, জীবনে সুখের সব কিছুই তুমি ভোগ করেছ আর সেই সময় লাসার অনেক কষ্ট পেয়েছে। কিন্তু এখন এখানে সে সুখ পাচ্ছে আর তুমি কষ্ট পাচ্ছ। 26 এছাড়া তোমাদের ও আমাদের মাঝে এক মহাশূন্য স্থান আছে, যাতে ইচ্ছা থাকলেও কেউ এখানে থেকে পার হয়ে তোমাদের কাছে যেতে না পারে, আর ওখান থেকে পার হয়ে কেউ আমাদের কাছে আসতে না পারে।’
27 “সেই ধনী ব্যক্তি তখন বলল, ‘তাহলে পিতা দয়া করে লাসারকে আমার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিন! 28 যেন আমার যে পাঁচ ভাই সেখানে আছে, তাদের সে সাবধান করে দেয়, যাতে তারা এই যন্ত্রণার জায়গায় না আসে।’
29 “কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘মোশি ও অন্যান্য ভাববাদীরা তো তাদের জন্য আছেন, তাঁদের কথা তারা শুনুক।’
30 “তখন ধনী লোকটি বলল, ‘না, না, পিতা অব্রাহাম মৃতদের মধ্য থেকে কেউ যদি তাদের কাছে যায়, তবে তারা অনুতাপ করবে।’
31 “অব্রাহাম তাকে বললেন, ‘তারা যদি মোশি ও ভাববাদীদের কথা না শোনে, তবে মৃতদের মধ্য থেকে উঠে গিয়েও যদি কেউ তাদের সঙ্গে কথা বলে তবু তারা তা শুনবে না।’”
31 “আমি আমার চোখের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি।
এমন দৃষ্টি দিয়ে আমি কোন মেয়েকে দেখবো না যে দৃষ্টি আমার কামলালসাকে চরিতার্থ করবার জন্য ঐ মেয়েকে পেতে আমায় বাধ্য করবে।
2 উচেচর ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, মানুষের জন্য কি করেন?
উচেচর ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, মানুষকে কি দেন?
3 মন্দ লোকদের জন্য ঈশ্বর সমস্যা ও ধ্বংস প্রেরণ করেন
এবং যারা মন্দ কাজ করে তাদের জন্য পাঠান বিপর্যয়।
4 আমি যা করি ঈশ্বর সবই জানেন
এবং তিনি আমার প্রতিটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করেন।
5 “আমি মানুষকে মিথ্যা বলিনি
ও তাদের প্রতারিত করতে চাইনি!
6 ঈশ্বর যদি যথাযথ মানদণ্ডও ব্যবহার করেন,
তিনি দেখবেন আমি নির্দোষ।
7 যদি আমার পদক্ষেপ যথার্থ পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়ে থাকে,
যদি আমার চোখ আমায় মন্দ কাজ করতে পরিচালিত করে থাকে,
যদি আমার হস্তদ্বয় পাপে কলঙ্কিত হয়ে থাকে,
8 তাহলে, আমার চাষের ফসল যেন অন্যরা খায়
এবং আমার চাষের ফসল যেন তারা তোলে।
9 “যদি আমি কখনো অন্য কোন নারীকে কামনা করে থাকি
বা আমার প্রতিবেশীর দরজায় তার স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করে থাকি,
10 তাহলে আমার স্ত্রী যেন অন্য পুরুষের জন্য রান্না করে
এবং অন্য পুরুষরা যেন তার সঙ্গে শয়ন করে।
11 কেন? কারণ যৌনপাপ হল লজ্জাকর।
এটা শাস্তিযোগ্য পাপ।
12 যৌনপাপ হল এমন এক আগুন যা সবকিছু ধ্বংস হওয়া পর্যন্ত জ্বলতে থাকে।
আমি সারা জীবন যা করেছি এটা তা ধ্বংস করে দিতে পারে।
13 “যখন আমার বিরুদ্ধে আমার ক্রীতদাসরা অভিযোগ করেছিল
তখন আমি যদি তাদের প্রতি ন্যায়বিচার না করে থাকি,
14 তাহলে ঈশ্বরের মুখোমুখি হয়ে আমি কি করবো?
যখন ঈশ্বর জিজ্ঞাসা করবেন আমি কি করেছি, তখন আমি কি বলবো?
15 প্রত্যেকে তার মায়ের গর্ভে জন্মায়।
আমি আমার মায়ের গর্ভে জন্মেছি, আমার ক্রীতদাসরা তাদের মায়ের গর্ভে।
অতএব সেই দিক থেকে আমাতে আর আমার ক্রীতদাসদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
16 “দরিদ্র লোকদের সাহায্য করতে আমি কখনও বিমুখ ছিলাম না।
আমি বিধবাদের সাহায্য করতে কখনো অস্বীকার করিনি।
17 খাদ্যের বিষয়ে আমি কখনও স্বার্থপর হইনি।
আমি সর্বদাই অনাথদের খাবার দিয়েছি।
18 আমার সারা জীবন ধরে আমি পিতৃহীন সন্তানদের পিতার মত ছিলাম।
আমার সারা জীবন ধরে আমি বিধবাদের সাহায্য করেছি।
19 আমি যখনই বস্ত্রহীন মানুষকে,
দরিদ্র মানুষকে, জামার অভাবে কষ্ট পেতে দেখেছি,
20 আমি সর্বদাই তাদের বস্ত্র দিয়েছি।
ওদের উষ্ণ রাখার জন্য আমার নিজের ভেড়া থেকে আমি পশম দিয়েছি।
এবং ওরা ওদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে আমায় আশীর্বাদ করেছে।
21 যদিও আমি জানতাম যে আমি আদালতের সমর্থন পাবো,
তবু আমি কখনো অনাথদের ভয় দেখাই নি।
22 আমি যদি কখনও তা করে থাকি,
তাহলে আমার বাহু কাঁধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যাবে।
23 আমি ঈশ্বরের শাস্তিকে ভয় পাই।
তিনি যখন উঠে দাঁড়ান
আমি তাঁর সামনে দাঁড়াতে পারি না।
24 “আমি আমার সম্পদের ওপর কখনই ভরসা করি নি।
ঈশ্বর আমায় সাহায্য করবেন এটাই আমার বড় ভরসা।
খাঁটি সোনাকেও আমি কখনও বলি নি, ‘তুমিই আমার ভরসা।’
25 আমি বিত্তবান ছিলাম।
কিন্তু তা আমাকে অহঙ্কারী করে নি।
আমি অনেক ধনসম্পদ উপার্জন করেছি।
কিন্তু অর্থ আমাকে সুখী করে নি।
26 আমি কখনও উজ্জ্বল সূর্য
বা সুন্দর চাঁদের পূজো করি নি।
27 চাঁদ ও সূর্যকে পূজো করার মতো
অতখানি বোকা আমি ছিলাম না।
28 ওটাও শাস্তিযোগ্য পাপ।
যদি আমি ওইগুলোর পূজো করতাম তাহলে আমি উচ্চে অবস্থিত ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের প্রতি অবিশ্বস্ততার কাজ করতাম।
29 “আমার শত্রুরা যখন ধ্বংসপ্রাপ্ত হল
আমি কখনই সুখী হই নি।
যখন আমার শত্রুদের জীবনে অঘটন ঘটেছে,
তখন আমি তাদের প্রতি কখনও উপহাস করিনি।
30 আমার শত্রুদের অভিশাপ দিয়ে বা তাদের মৃত্যু কামনা করে
আমি কখনও নিজের মুখকে পাপ করতে দিই নি।
31 আমার তাঁবুর প্রত্যেকেই জানে যে
আমি সর্বদাই আমার অতিথিদের যথেষ্ট খাদ্য দিয়েছি।
32 আমি সর্বদাই ভবঘুরেদের আমার ঘরে ডেকে এনেছি
যাতে ওদের রাস্তায় ঘুমাতে না হয়।
33 অন্য লোকরা তাদের পাপ গোপন করার চেষ্টা করে।
কিন্তু আমি আমার অপরাধ গোপন করি নি।
34 লোকে কি বলতে পারে সে নিয়ে আমি কোন দিনই ভীত হই নি।
সেই ভয় কোন দিন আমাকে চুপ করাতে পারে নি।
আমি কোন দিনই বাইরে যেতে দ্বিধাবোধ করি নি।
আমি লোকের ঘৃণায কোন দিন বিচলিত হইনি।
35 “এই যে, আমি চাই কেউ আমার কথা শুনুক!
এই রইল আমার স্বাক্ষর আমার অভিযোগের ওপর।
এখন ঈশ্বর সর্বশক্তিমান যেন আমায় একটা আধিকারিকী উত্তর দেন।
আমি চাই, তাঁর মতে আমি যা ভুল করেছি, তা তিনি লিখে ফেলুন।
36 তারপর আমি সেটা কাঁধে পরে নেব।
মাথার মুকুটের মত আমি তা ধারণ করবো।
37 যদি ঈশ্বর তা করতেন, তাহলে আমিও আমার সব কাজের ব্যাখ্যা দিতে পারতাম।
আমি একজন রাজপুত্রের মত তাঁর কাছে যেতে পারতাম।
38 “আমার জমি আমি কারও কাছ থেকে চুরি করি নি।
কেউ আমার সম্পর্কে চুরির অভিযোগ তুলতে পারবে না।
39 জমি থেকে যে খাদ্য আমি পেয়েছিলাম তার জন্য
আমি আমার কৃষককে মূল্য দিয়েছিলাম।
আমি কখনো জমির ভাড়াটেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করিনি।
40 যদি আমি কখনও এইসব মন্দ কাজ করে থাকি,
তাহলে আমার জমিতে গম এবং বার্লির বদলে যেন কাঁটা-ঝোপ ও দুর্গন্ধ লতাপাতা জন্মায়!”
ইয়োবের কথা শেষ হল।
1 আমি পৌল, ঈশ্বরের ইচ্ছায় খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত হয়েছি।
আমি এবং আমাদের বিশ্বাসী ভাই তীমথিয়, করিন্থ শহরের ঈশ্বরের খ্রীষ্ট মণ্ডলী ও সমগ্র আখায়া প্রদেশে ঈশ্বরের সব লোকদের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখছি:
2 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তোমাদের সকলকে অনুগ্রহ ও শান্তি দান করুন।
পৌলের ঈশ্বরকে ধন্যবাদজ্ঞাপন
3 ধন্য আমাদের ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা। তিনি করুণাময় পিতা ও সকল সান্ত্বনার ঈশ্বর। 4 তিনি আমাদের সমস্ত দুঃখ কষ্টের মধ্যে সান্ত্বনা দেন, যেন অপরে যখন দুঃখ কষ্টের মধ্যে পড়ে তখন ঈশ্বরের কাছ থেকে আমরা যে সান্ত্বনা লাভ করেছি তাদের সেই সান্ত্বনা দিতে পারি। 5 কারণ আমরা যতই খ্রীষ্টের দুঃখ কষ্টের সহভাগী হব, ততই তাঁর মধ্য দিয়ে সান্ত্বনাও পাব। 6 আমরা যদি কষ্ট পাই তবে তা তোমাদের সান্ত্বনার ও পরিত্রাণের জন্য; আর যদি সান্ত্বনা পাই তবে তা তোমাদের সান্ত্বনার উদ্দেশ্যেই পাই। এই সান্ত্বনা আমাদের মত তোমাদেরও একই দুঃখ সহ্য করার শক্তি ও ধৈর্য্য যোগায়। 7 তোমাদের বিষয়ে আমরা সুনিশ্চিত, কারণ আমরা জানি তোমরা যেমন আমাদের দুঃখ কষ্টের সহভাগী, সেই রকম আমাদের সান্ত্বনার সহভাগী।
8 ভাই ও বোনেরা, এশিয়াতে থাকার সময় আমাদের যে কষ্ট হয়েছিল তা তোমাদের জানাতে চাইছি। সেই দুঃখ কষ্টের চাপ আমাদের সহ্যের অতিরিক্ত হয়ে উঠেছিল। আমরা বাঁচার সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। 9 আমরা নিজেদের অন্তরে অনুভব করেছিলাম যে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য; কিন্তু এটা এইজন্য ঘটেছিল যাতে আমরা নিজেদের ওপর নির্ভর না করে, ঈশ্বর, যিনি মৃতকে জীবিত করে তোলেন তাঁর ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করি। 10 তিনিই আমাদের এত ভয়ঙ্কর মৃত্যু থেকে উদ্ধার করলেন। আমরা তাঁর ওপর প্রত্যাশা রাখি যে তিনি ভবিষ্যতেও আমাদের উদ্ধার করবেন; 11 তোমরা প্রার্থনা করে আমাদের সাহায্য করতে পার। তাহলে অনেকের প্রার্থনার উত্তরে ঈশ্বর আমাদের যে আশীর্বাদ করবেন, তার দরুন আমাদের জন্য অনেকেই ধন্যবাদ দেবে।
পৌলের মত বদল
12 একটি বিষয়ে আমরা গর্বিত এবং আমাদের বিবেকও এই সাক্ষী দিচ্ছে যে আমরা ঈশ্বরের দেওয়া আন্তরিকতা ও সরলতায় জগতের মানুষের প্রতি, বিশেষ করে তোমাদের প্রতি আচরণ করে এসেছি। সংসারের জ্ঞান বুদ্ধি ব্যবহার করে নয়, ঈশ্বরের অনুগ্রহে আমরা তা করেছি। 13 হ্যাঁ, তোমরা যা পড়তে বা বুঝতে পারবে না এমন কোন কিছু আমি তোমাদের লিখছি না। আশা করি তোমরা সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারবে। 14 যেমন তোমরা আমাদের সম্বন্ধে কিছুটা বুঝেছ। আমাদের প্রভু যীশুর পুনরাবির্ভাবের দিনে তোমরা যেমন আমাদের গর্বের বিষয় হবে, তেমনি আমরাও তোমাদের গর্বের বিষয় হব।
15 আমার মনে এই বিষয়ে এতটা আত্মবিশ্বাস ছিল যে আমি প্রথমেই তোমাদের কাছে যাব বলে ঠিক করেছিলাম, যাতে তোমরা দ্বিতীয়বার উপকৃত হও। 16 আমি ঠিক করেছিলাম মাকিদনিয়ায় যাওয়ার পথে তোমাদের ওখানে যাব; আবার মাকিদনিয়া থেকে ফেরার পথেও তোমাদের কাছেই যাব। তাহলে তোমরা সকলে প্রয়োজনীয় সব জিনিস সমেত আমার যিহূদিয়ায় যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দেবে। 17 এই পরিকল্পনা করার সময় কি আমি মনস্থির করি নি? আমি কি জগতের সেই লোকদের মত যাঁরা একই সঙ্গে “হ্যাঁ-হ্যাঁ,” আবার “না-না” বলে, তেমনি করে কি আমি কিছু ঠিক করি?
18 ঈশ্বর বিশ্বস্ত, একথা যেমন সত্যি তেমনি এটাও সত্যি যে তোমাদের কাছে আমাদের কথা একই সঙ্গে “হ্যাঁ” এবং “না” দুই হয় না। 19 ঈশ্বরের পুত্র, যীশু খ্রীষ্টের কথা আমি, তীমথিয় এবং শীল তোমাদের কাছে প্রচার করেছিলাম, সেই যীশু একই সময়ে “হ্যাঁ” এবং “না” নন। তিনি সব সময়েই “হ্যাঁ”। 20 ঈশ্বরের সমস্ত প্রতিশ্রুতি তাঁর মধ্য দিয়ে “হ্যাঁ” হয়ে ওঠে। সেইজন্য ঈশ্বরের গৌরব করতে আমরা খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে “আমেন” বলি। 21 ঈশ্বরই একজন, যিনি তোমাদের ও আমাদের খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত করে সুদৃঢ় করে তোলেন। 22 আমরা যে তাঁর নিজস্ব এই কথা নিশ্চিতভাবে বুঝতে তিনি আমাদের ওপর তাঁর ছাপ দিয়েছেন; এবং তাঁর সব প্রতিশ্রুতির জামিন হিসাবে পবিত্র আত্মাকে আমাদের অন্তরে দিয়েছেন।
23 কিন্তু আমি ঈশ্বরকে সাক্ষী রেখে বলছি, তোমাদের শাস্তি থেকে রেহাই দেবার জন্যই আমি এখন পর্যন্ত করিন্থে ফিরে যাই নি। 24 তোমাদের বিশ্বাসের বিষয়ে আমরা যা বলে দেব তাই-ই তোমাদের মেনে চলতে হবে, এমনটা আমরা চাই না, বরং তোমরা যেন আনন্দ পাও তাই তোমাদের সহকর্মী হয়ে কাজ করতে চাই, কারণ তোমরা বিশ্বাসে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছ।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International