M’Cheyne Bible Reading Plan
7 প্রভু তখন মোশিকে বললেন, “আমি তোমাকে ফরৌণের কাছে একজন ঈশ্বর করে তুলেছি। আর হারোণ, তোমার ভাই হবে তোমার ভাববাদী। 2 তোমার ভাই হারোণকে আমার সমস্ত আদেশগুলো বলো। তাহলে হারোণ রাজাকে আমার কথাগুলো জানাবে। ফরৌণ ইস্রায়েলীয়দের তার দেশ থেকে চলে যেতে অনুমতি দেবে। 3 কিন্তু আমি ফরৌণকে জেদী করে তুলব। তাই সে তোমাদের কথা মানবে না। তখন আমি নিজেকে প্রমাণের উদ্দেশ্যে মিশরে নানারকম অলৌকিক অথবা অদ্ভুত কাজ করবে। 4 তবুও সে তোমাদের কথা শুনবে না। তখন আমি মিশরকে কঠিন শাস্তি দেব এবং আমি মিশর থেকে আমার লোকদের বাইরে বের করে আনব। 5 যখন আমি তাদের বিরোধিতা করব তখন মিশরের লোকরাও জানতে পারবে যে আমিই হলাম প্রভু। সেই মুহুর্তে আমি আমার লোকদের মিশরীয়দের দেশ থেকে বের করে আনব।”
6 প্রভু তাদের যা বলেছিলেন মোশি এবং হারোণ তা মেনে চলেছিল। 7 যখন তারা ফরৌণের সঙ্গে কথা বলেছিল সেই সময় মোশির বয়স ছিল 80 এবং হারোণের বয়স ছিল 83 বছর।
মোশির পথ চলার লাঠি সাপে পরিণত হল
8 মোশি এবং হারোণকে প্রভু বললেন, 9 “ফরৌণ তোমাদের শক্তির পরিচয়ের প্রমাণ হিসাবে কোনও অলৌকিক কাজ ঘটিয়ে দেখাতে বলবে। তখন হারোণকে বলবে তোমার পথ চলার লাঠিটি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলতে। ফরৌণের চোখের সামনে মাটিতে পড়ে থাকা ঐ লাঠি নিমেষের মধ্যে সাপে পরিণত হবে।”
10 তাই মোশি এবং হারোণ প্রভুর কথামতো ফরৌণের কাছে গেল। হারোণ তার সামনে লাঠিটি মাটিতে ছুঁড়ে ফেলেছিল। ফরৌণ এবং তার সভাসদদের চোখের সামনেই লাঠি সাপের রূপ নিল।
11 রাজা এই ঘটনা দেখে তার জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি ও যাদুকরদের ডাকলেন। রাজার নিজস্ব যাদুকররা তাদের মায়াবলে হারোণের মতো তাদের লাঠিটিও সাপে পরিণত করে দেখাল। 12 সেইসব যাদুকররাও নিজের নিজের হাতের লাঠিকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে মুহুর্তে লাঠিগুলিকে সাপে রূপান্তরিত করে দেখাল। কিন্তু হারোণের লাঠি তাদের লাঠিগুলোকে গ্রাস করে নিল। 13 তবুও ফরৌণ উদ্ধত হয়ে থাকলেন। প্রভুর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী রাজা মোশি এবং হারোণের কথায় কান দিলেন না।
জল রক্তে পরিণত হল
14 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণ লোকদের ছেড়ে না দেবার জেদ ধরে রইল। 15 সকালে ফরৌণ নদীর দিকে যায়। তুমিও তার সঙ্গে দেখা করার জন্য নীল নদের তীরে দাঁড়াবে। সাপে পরিণত হয় ঐ লাঠিকে সঙ্গে নেবে। 16 ফরৌণকে বলবে: ‘প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন। আমায় আপনাকে বলতে বলেছেন যে তাঁর লোকদের যেন তাঁর উপাসনার জন্য মরুপ্রান্তরে যেতে দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত অবশ্য আপনি প্রভুর কথা শোনেন নি। 17 তাই প্রভু আপনার সম্মুখে নিজের স্বরূপ প্রমাণের উদ্দেশ্যে কিছু কাণ্ড ঘটাবেন। এবার দেখুন আমি আমার পথ চলার লাঠি দিয়ে নীল নদের জলে আঘাত করব এবং সঙ্গে সঙ্গে নদীর জল রক্তে পরিণত হবে। 18 নদীর সমস্ত মাছ মারা যাবে এবং নদীর জলে দুর্গন্ধ ছড়াবে। ফলে মিশরীয়রা আর এই নদীর জল পান করতে পারবে না।’”
19 প্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে বলো এই লাঠি নিয়ে সে যেন মিশরের সমস্ত জলাশয়, নদী, খাল, বিল, হ্রদ প্রত্যেকটি জায়গার জলে স্পর্শ করে। লাঠির স্পর্শে সমস্ত জলাশয়ের জল রক্তে পরিণত হবে। এমনকি কাঠ ও পাথরের পাত্রে সংগ্রহ করে রাখা পানীয় জলও রক্তে পরিণত হবে।”
20 সুতরাং মোশি এবং হারোণ প্রভুর আদেশ কার্যকর করল। হারোণ ফরৌণ ও তার সভাসদগণের সামনেই তার হাতে লাঠি উঁচিয়ে ধরে নীল নদের জলে আঘাত করল। আর সঙ্গে সঙ্গে নদীর জল রক্তে পরিণত হল। 21 নদীর সমস্ত মাছ মারা গেল এবং নদীর জলে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করল। ফলে মিশরীয়রা আর সেই নদীর জল পান করতে পারল না। মিশরের সমস্ত জলাধারের জলই রক্তে পরিণত হল।
22 হারোণ ও মোশির মতো রাজার যাদুকররাও তাদের মায়াবলে একই ঘটনা ঘটিয়ে প্রমাণ করল তারাও কম জানে না। ফলে প্রভুর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ফরৌণ আবার মোশি ও হারোণের কথা শুনতে অস্বীকার করলেন। 23 ফরৌণ মোশি ও হারোণের ঐ কথায় মনোযোগ না দিয়ে নিজের প্রাসাদে ঢুকে গেলেন।
24 মিশরীয়রা নদীর জল পান করতে না পেরে তারা পানীয় জলের সন্ধানে নদীর চারপাশে কুঁয়ো খুঁড়তে লাগল।
ব্যাঙরা
25 প্রভুর নীলনদের জলকে রক্তে পরিণত করার পর সাতদিন পার হল।
যীশু বাহাত্তর জন লোককে পাঠালেন
10 এরপর প্রভু আরও বাহাত্তর[a] জন লোককে মনোনীত করলেন। তিনি নিজে যে সমস্ত নগরে ও যে সমস্ত জায়গায় যাবেন বলে ঠিক করেছিলেন, সেই সব জায়গায় তাঁদের দুজন দুজন করে পাঠিয়ে দিলেন। 2 তিনি তাঁদের বললেন, “শস্য প্রচুর হয়েছে, কিন্তু তা কাটার জন্য মজুরের সংখ্যা অল্প, তাই শস্যের যিনি মালিক তাঁর কাছে প্রার্থনা কর, যেন তিনি তাঁর ফসল কাটার জন্য মজুর পাঠান।
3 “যাও! আর মনে রেখো, নেকড়ে বাঘের মধ্যে ভেড়ার মতোই আমি তোমাদের পাঠাচ্ছি। 4 তোমরা টাকার বটুয়া, থলি বা জুতো সঙ্গে নিও না এবং পথের মধ্যে কাউকে শুভেচ্ছা জানিও না। 5 যে বাড়িতে তোমরা প্রবেশ করবে সেখানে প্রথমে বলবে, ‘এই গৃহে শান্তি হোক্!’ 6 সেখানে যদি শান্তির পাত্র কেউ থাকে, তবে তোমাদের শান্তি তার সহবর্তী হবে। কিন্তু যদি সেরকম কেউ না থাকে, তাহলে তোমাদের শান্তি তোমাদের কাছে ফিরে আসবে। 7 যে বাড়িতে যাবে সেখানেই থেকো, আর তারা যা খেতে দেয় তাই খেও, কারণ যে কাজ করে সে বেতন পাবার যোগ্য। এ বাড়ি সে বাড়ি করে ঘুরে বেড়িও না।
8 “তোমরা যখন কোন নগরে প্রবেশ করবে তখন সেই নগরের লোকেরা যদি তোমাদের স্বাগত জানায়, তবে সেখানকার লোকেরা তোমাদের সামনে যা কিছু ধরে, তা খেও। 9 সেই নগরের রোগীদের সুস্থ করো ও সেখানকার লোকদের বলো, ‘ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে এসে পড়েছে।’
10 “তোমরা কোন নগরে প্রবেশ করলে যদি সেই নগরের লোকেরা তোমাদের স্বাগত না জানায়, তবে সেখানকার রাস্তায় বেরিয়ে এসে তোমরা বলো, 11 ‘এমনকি তোমাদের নগরের যে ধূলো আমাদের পায়ে লেগেছে তা আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে ঝেড়ে ফেললাম; তবে একথা জেনে রেখো যে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে এসে গেছে।’ 12 আমি তোমাদের বলছি, সেই দিন এই নগরের থেকে সদোমের লোকদের অবস্থা অনেক বেশী সহনীয় হবে।
অবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে যীশুর সতর্কবাণী
(মথি 11:20-24)
13 “কোরাসীন ধিক্ তোমাকে! বৈৎসৈদা ধিক্ তোমাকে! তোমাদের মধ্যে যে সব অলৌকিক কাজ করা হয়েছে তা যদি সোর ও সীদোনে করা হত, তবে সেখানকার লোকেরা অনেক আগেই চটের বস্ত্র পরে মাথায় ভস্ম ছিটিয়ে অনুতাপ করতে বসত। 14 যাইহোক্, বিচারের দিনে সোর সীদোনের অবস্থা বরং তোমাদের চেয়ে অনেক সহনীয় হবে। 15 তুমি কফরনাহূম! তুমি কি স্বর্গ পর্যন্ত উন্নীত হবে? না! তোমাকে নরক পর্যন্ত নামানো হবে!
16 “যারা তোমাদের কথা শোনে, তারা আমারই কথা শোনে; আর যারা তোমাদের অগ্রাহ্য করে, তারা আমাকেই অগ্রাহ্য করে। যারা আমাকে অগ্রাহ্য করে, তারা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকেই অগ্রাহ্য করে।”
শয়তানের পতন
17 এরপর সেই বাহাত্তরজন আনন্দের সঙ্গে ফিরে এসে বললেন, “প্রভু, আপনার নামে এমন কি ভূতরাও আমাদের বশ্যতা স্বীকার করে!”
18 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “আমি শয়তানকে বিদ্যুৎ ঝলকের মতো আকাশ থেকে পড়তে দেখলাম। 19 শোন! সাপ ও বিছেকে পায়ে দলবার ক্ষমতা আমি তোমাদের দিয়েছি; আর তোমাদের শত্রুর সমস্ত শক্তির ওপরে ক্ষমতাও আমি তোমাদের দিয়েছি; কোন কিছুই তোমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। 20 তবু আত্মারা যে তোমাদের বশীভূত হয়, এ জেনে আনন্দ করো না; কিন্তু স্বর্গে তোমাদের নাম লেখা হয়েছে বলে আনন্দ কর।”
পিতার নিকট যীশুর প্রার্থনা
(মথি 11:25-27; 13:16-17)
21 ঠিক সেই মুহূর্তে পবিত্র আত্মার আনন্দে পূর্ণ হয়ে যীশু বললেন, “পিতা, আমি তোমার প্রশংসা করি, কারণ স্বর্গ ও পৃথিবীর প্রভু, তুমি এসব বিষয় জ্ঞানীগুণী ও বুদ্ধিমান লোকদের কাছে গোপন রেখে শিশুদের কাছে প্রকাশ করেছ। হ্যাঁ, পিতা, এতেই তোমার আনন্দ।
22 “আমার পিতা আমায় সবই দিয়েছেন। পিতা ছাড়া আর কেউ জানে না পুত্র কে, আমার পুত্র ছাড়া আর কেউ জানে না পিতা কে। এছাড়া পুত্র যার কাছে পিতাকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন, কেবল সে-ই জানে।”
23 এরপর শিষ্যদের দিকে ফিরে তিনি একান্তে তাঁদের বললেন, “তোমরা যা দেখছ, যে চোখ তা দেখতে পায় তা ধন্য! 24 কারণ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা যা দেখছ, অনেক ভাববাদী ও রাজা তা দেখার ইচ্ছা করলেও তা দেখতে পান নি; তোমরা যা শুনছ, তা শোনার ইচ্ছা করলেও তাঁরা তা শুনতে পান নি।”
দয়ালু শমরীয়ের দৃষ্টান্তমূলক কাহিনী
25 এরপর একজন ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুকে পরীক্ষার ছলে জিজ্ঞাসা করল, “গুরু, অনন্ত জীবন লাভ করার জন্য আমায় কি করতে হবে?”
26 যীশু তাকে বললেন, “বিধি-ব্যবস্থায় এ বিষয়ে কি লেখা আছে? সেখানে তুমি কি পড়েছ?”
27 সে জবাব দিল, “‘তোমার সমস্ত অন্তর, মন, প্রাণ ও শক্তি দিয়ে অবশ্যই তোমার প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসো।’(A) আর ‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসো।’(B)”
28 তখন যীশু তাকে বললেন, “তুমি ঠিক উত্তরই দিয়েছ; ঐ সবই কর, তাহলে অনন্ত জীবন লাভ করবে।”
29 কিন্তু সে নিজেকে ধার্মিক দেখাতে চেয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করল, “আমার প্রতিবেশী কে?”
30 এর উত্তরে যীশু বললেন, “একজন লোক জেরুশালেম থেকে যিরীহোর দিকে নেমে যাচ্ছিল, পথে সে ডাকাতের হাতে ধরা পড়ল। তারা লোকটির জামা কাপড় খুলে নিয়ে তাকে মারধোর করে আধমরা অবস্থায় সেখানে ফেলে রেখে চলে গেল।
31 “ঘটনাক্রমে সেই পথ দিয়ে একজন ইহুদী যাজক যাচ্ছিল, যাজক তাকে দেখতে পেয়ে পথের অন্য ধার দিয়ে চলে গেল। 32 সেই পথে এরপর একজন লেবীয়[b] এল। তাকে দেখে সেও পথের অন্য ধার দিয়ে চলে গেল।
33 “কিন্তু একজন শমরীয় ঐ পথে যেতে যেতে সেই লোকটির কাছাকাছি এল। লোকটিকে দেখে তার মমতা হল। 34 সে ঐ লোকটির কাছে গিয়ে তার ক্ষতস্থান দ্রাক্ষারস দিয়ে ধুয়ে তাতে তেল ঢেলে বেঁধে দিল। এরপর সেই শমরীয় লোকটিকে তার নিজের গাধার ওপর চাপিয়ে একটি সরাইখানায় নিয়ে এসে তার সেবা যত্ন করল। 35 পরের দিন সেই শমরীয় দুটি রৌপ্যমুদ্রা বার করে সরাইখানার মালিককে দিয়ে বলল, ‘এই লোকটির যত্ন করবেন আর আপনি যদি এর চেয়ে বেশী খরচ করেন, তবে আমি ফিরে এসে আপনাকে তা শোধ করে দেব।’”
36 এখন বল, “এই তিন জনের মধ্যে সেই ডাকাত দলের হাতে পড়া লোকটির প্রকৃত প্রতিবেশী কে?”
37 সে বলল, “যে লোকটি তার প্রতি দয়া করল।”
তখন যীশু তাকে বললেন, “সে যেমন করল, যাও তুমি গিয়ে তেমন কর।”
মরিয়ম ও মার্থা
38 এরপর যীশু ও তাঁর শিষ্যরা জেরুশালেমের পথে যেতে যেতে কোন এক গ্রামে প্রবেশ করলেন। সেখানে মার্থা নামে একজন স্ত্রীলোক তাঁদের সাদর অভ্যর্থনা করলেন। 39 মরিয়ম নামে তাঁর একটি বোন ছিল, তিনি যীশুর পায়ের কাছে বসে তাঁর শিক্ষা শুনছিলেন। 40 কিন্তু খাওয়া-দাওয়ার নানা রকম আয়োজন করতে মার্থা খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি যীশুর কাছে এসে বললেন, “প্রভু, আপনি কি দেখছেন না, আমার বোন সমস্ত কাজ একা আমার ঘাড়ে ফেলে দিয়েছে? ওকে বলুন ও যেন আমায় সাহায্য করে।”
41 প্রভু তখন মার্থাকে বললেন, “মার্থা, মার্থা তুমি অনেক বিষয় নিয়ে বড়ই উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত হয়ে পড়েছ। 42 কিন্তু কেবলমাত্র একটা বিষয়ের প্রয়োজন আছে। আর মরিয়ম সেই উত্তম বিষয়টি মনোনীত করেছে, যা তার কাছ থেকে কখনও কেড়ে নেওয়া হবে না।”
24 “এমন কেন হয় যে মানুষের জীবনে যখন মন্দ ঘটনা ঘটতে চলেছে তা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর জানেন,
কিন্তু তাঁর অনুগামীরা এমনকি অনুমানও করতে পারে না যে কখন তিনি সে বিষয়ে কিছু করতে চলেছেন?”
2 “লোকে তাদের জমির সীমারেখা সরিয়ে দেয় আরও জমি দখল করার জন্য।
লোকে মেষের পাল চুরি করে তাদের অন্য চারণক্ষেত্রে নিয়ে চলে যায়।
3 তারা অনাথদের গাধা চুরি করে।
তারা বিধবাদের বলদগুলো বন্ধক রাখে।
4 তারা দরিদ্র লোকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।
সব গরীব লোকই এই মন্দ লোকগুলোর কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হয়।
5 “দরিদ্র লোকগুলো খাবারের সন্ধানে বুনো গাধার মত মরুভূমিতে ঘুরে বেড়ায়।
খাদ্যের সন্ধানে তারা খুব সকালে উঠে পড়ে।
তাদের ছেলেমেয়েদের খাদ্যের জন্য তারা জনহীন স্থানে খাবার খুঁজে বেড়ায়।
6 দরিদ্র লোকরা মন্দ লোকেদের মাঠে গবাদি পশুর জাব কাটে।
মন্দ লোকেদের দ্রাক্ষা ক্ষেত থেকে তারা পড়ে থাকা দ্রাক্ষা নিজেদের জন্য জোগাড় করে।
7 দরিদ্র লোককে সারা রাত্রি বিনা বস্ত্রে শুতে হয়।
শীত থেকে নিজেদের রক্ষা করার মত কোন আবরণ তাদের নেই।
8 তারা পাহাড়ের বৃষ্টিতে ভিজে যায়।
তাদের কোন আশ্রয় নেই, তাই তারা বড়বড় পাথরগুলোর কাছে গা ঘেঁসাঘেঁসি করে দাঁড়িয়ে থাকে।
9 মন্দ লোকরা কচি কচি বাচ্চাগুলোকে তাদের মায়ের বুক থেকে টেনে নিয়ে যায়।
দুষ্ট লোকরা ধারশোধের টাকা হিসেবে গরীবদের কাছ থেকে তাদের শিশুদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
10 দরিদ্র লোকদের কোন কাপড়-চোপড় নেই। তারা উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
তারা শস্যের বোঝা বয়ে নিয়ে যায়।
11 দরিদ্র লোকরা জলপাই পিষে তার তেল বার করে।
যেখানে আঙ্গুর পেষা হয় সেখানে তারা দ্রাক্ষা মর্দন করে।
কিন্তু তারা কিছু পান করতে পায় না।
12 এই শহরে যারা মারা যাচ্ছে এমন লোকদের দুঃখের বিষাদময় কান্না তুমি শুনতে পাবে।
ওই আহত লোকরা সাহায্যের জন্য কাতর হয়ে কাঁদে।
কিন্তু ঈশ্বর তাতে মনোযোগ দেন না।
13 “কিছু লোক আলোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
তারা জানে না ঈশ্বর কি চান।
ঈশ্বর যে পথে চান, তারা সে পথে জীবন ধারণ করে না।
14 একজন হত্যাকারী খুব সকালে ওঠে এবং সে দরিদ্র অসহায় লোকদের হত্যা করে।
রাত্রিবেলা সে একজন চোর হয়ে যায়।
15 যে লোক যৌন অপরাধ করে সে রাত্রির প্রতীক্ষায় থাকে।
সে মনে করে, ‘কোন লোকই আমাকে দেখতে পাবে না।’
কিন্তু তখনও সে তার মুখ আবৃত করে রাখে।
16 রাতে যখন অন্ধকার নামে, মন্দ লোকরা বাইরে আসে এবং অন্য লোকের ঘর ভেঙে প্রবেশ করে।
কিন্তু দিনের আলোয়, তারা নিজেদের ঘরে নিজেদের বন্দী করে রাখে এবং আলোকে এড়াতে চায়।
17 মন্দ লোকদের কাছে অন্ধকারতম রাত্রিই সকালের মত মনে হয়।
হ্যাঁ, তারা ঐ সাংঘাতিক অন্ধকারের ভয়ঙ্করতাকে খুব ভালো করে জানে!
18 “তুমি দাবী কর যে মন্দ লোকরা শুধু জলে ভাসমান খড়ের মত।
তারা যে জমি অর্জন করে তা অভিশপ্ত, তাই তারা তাদের জমি থেকে দ্রাক্ষা সংগ্রহ করতে পারে না।
19 শীতের তুষার থেকে খরা এবং তাপ জল শুষে নেয়।
একই রকম ভাবে, পাতাল পাপীদের হরণ করে নেয়।
20 তার নিজের মা পর্যন্ত তাকে ভুলে যাবে।
পোকাদের কাছে ওর দেহটা মিষ্টি লাগবে।
লোকে তাকে মনে রাখবে না।
অতএব মন্দত্ব একটা লাঠির মত ভেঙে যাবে।
21 মন্দ লোকরা সন্তানহীন নারীদের আঘাত করে।
তারা বিধবা নারীদের সাহায্য করতে অস্বীকার করে।
22 মহানুভব লোকদের ধ্বংস করার জন্য মন্দ লোকরা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করে।
মন্দ লোকরা শক্তিশালী হতে পারে কিন্তু ওদের নিজের জীবন সম্পর্কে ওরা নিশ্চিত হতে পারবে না।
23 মন্দ লোকরা খুব অল্প সময়ের জন্য নিরাপদ ও সুনিশ্চিত হতে পারে।
ওরা ক্ষমতাসম্পন্ন হতে চাইতে পারে।
24 মন্দ লোকরা অল্প সময়ের জন্য সফল হতে পারে, কিন্তু তারাও চলে যাবে।
আর লোকদের মত তাদেরও ফসলের মত কেটে ফেলা হবে।
25 “কিন্তু আমি বলি
কে আমাকে ভুল বলে প্রমাণ করতে পারে?
এবং আমার কথাগুলো কে ঈশ্বরের কাছে বহন করে নিয়ে যাবে?”
11 আমি যেমন খ্রীষ্টের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করি, তোমরাও তেমনি আমার দৃষ্টান্ত অনুসরণ কর।
কর্ত্তৃত্বের অধীনে থাকা
2 আমি তোমাদের প্রশংসা করছি, কারণ তোমরা সব সময় আমার কথা স্মরণ করে থাক, আর তোমাদের আমি যে শিক্ষা দিয়েছি তা তোমরা বেশ ভালভাবে পালন করছ। 3 কিন্তু আমি চাই একথা তোমরা বোঝ যে প্রত্যেক পুরুষের মস্তক হচ্ছেন খ্রীষ্ট। স্ত্রীর মস্তক তার স্বামী, আর খ্রীষ্টের মস্তক হলেন ঈশ্বর।
4 যদি কোন পুরুষ তার মাথা ঢেকে রেখে প্রার্থনা করে অথবা ভাববাণী বলে তবে সে তার মাথার অসম্মান করে। 5 কিন্তু যে স্ত্রীলোক মাথা না ঢেকে প্রার্থনা করে বা ভাববানী বলে, সে তার নিজের মাথার অপমান করে, সে মাথা মোড়ানো স্ত্রীলোকের মত হয়ে পড়ে। 6 স্ত্রীলোক যদি তার মাথা না ঢাকে তবে তার চুল কেটে ফেলাই উচিত। কিন্তু চুল কেটে ফেলা বা মাথা নেড়া করা যদি স্ত্রীলোকের পক্ষে লজ্জার বিষয় হয়, তবে সে তার মাথা ঢেকে রাখুক।
7 আবার পুরুষ মানুষের মাথা ঢেকে রাখা উচিত নয়, কারণ সে ঈশ্বরের স্বরূপ ও মহিমা প্রতিফলন করে। কিন্তু স্ত্রীলোক হল পুরুষের মহিমা। 8 কারণ স্ত্রীলোক থেকে পুরুষের সৃষ্টি হয় নি; কিন্তু পুরুষ থেকেই স্ত্রীলোক এসেছে। 9 স্ত্রীলোকের জন্য পুরুষের সৃষ্টি হয় নি, কিন্তু পুরুষের জন্য স্ত্রীলোকের সৃষ্টি হয়েছিল। 10 এই কারণে এবং স্বর্গদূতগণের জন্য অধীনতার চিহ্ন হিসাবে একজন স্ত্রীলোক তার মাথা ঢেকে রাখবে।
11 যাই হোক্ প্রভুতে স্ত্রীলোক ছাড়া পুরুষ নয়, এবং পুরুষ ছাড়া স্ত্রীলোক নয়। 12 যেমন পুরুষ থেকে স্ত্রীলোকের সৃষ্টি হল, তেমন আবার পুরুষের জন্ম স্ত্রীলোক থেকে হল, বাস্তবে এ সবকিছুই ঈশ্বর থেকে হয়।
13 তোমরা নিজেরাই বিচার করে দেখ, মাথা না ঢেকে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা কি স্ত্রীলোকের শোভা পায়? 14 স্বাভাবিক বিবেচনাও বলে যে পুরুষ মানুষ যদি লম্বা চুল রাখে তবে তার সম্মান থাকে না। 15 কিন্তু স্ত্রীলোকের লম্বা চুল তার গৌরবের বিষয় কারণ সেই লম্বা চুল তার মাথা ঢেকে রাখার জন্য তাকে দেওয়া হয়েছে। 16 কেউ কেউ হয়তো এ নিয়ে তর্ক করতে চাইবে, কিন্তু আমরা ও ঈশ্বরের সকল মণ্ডলী, এই প্রথা মেনে চলি না।
প্রভুর ভোজ
17 কিন্তু এখন আমি যে বিষয়ে তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি সেই বিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করতে পারি না, কারণ তোমরা যখন একত্রিত হও তাতে ভাল না হয়ে শুনছি তোমাদের ক্ষতি হচ্ছে। 18 প্রথমতঃ আমি শুনেছি যে তোমরা যখন মণ্ডলীতে সমবেত হও, তখন তোমাদের মধ্যে অনেক দল থাকে, আর আমি এই ব্যাপারে কিছুটা বিশ্বাস করি। 19 তোমাদের মধ্যে ভিন্নতা অবশ্যই থাকবে, যাতে তোমাদের মধ্যে যারা যথার্থ খাঁটি তারা স্পষ্ট হয়।
20 তাই যখন তোমরা সমবেত হও, তখন তোমরা প্রকৃতপক্ষে প্রভুর ভোজ খাও না। 21 কারণ খাবার সময় প্রত্যেকে নিজের নিজের খাবার আগে খেয়ে নেয়, তাতে কেউ বা ক্ষুধার্ত থাকে; আর কেউ কেউ অতিরিক্ত পানাহার করে বেহুঁস হয়ে যায়। 22 পানাহার করার জন্য তোমাদের কি নিজেদের বাড়ীঘর নেই? তোমরা কি ঈশ্বরের মণ্ডলীকে তুচ্ছ জ্ঞান কর? আর যাদের কিছু নেই তাদের কি লজ্জায় ফেলতে চাও? আমি তোমাদের কি বলব? এমন কাজ করার জন্য আমি কি তোমাদের প্রশংসা করব? এবিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করব না।
23 আমি প্রভুর কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি তোমাদের তা দিয়েছি। যে রাত্রে প্রভু যীশুকে হত্যার জন্য শত্রুর হাতে সঁপে দেওয়া হয়, সেই রাত্রে তিনি একটি রুটি নিয়ে, 24 ধন্যবাদ দিলেন ও তা ভেঙে বললেন, “এ আমার দেহ; এ তোমাদের জন্য, আমার স্মরণে এটি করো।” 25 খাওয়া শেষ হলে, সেইভাবে তিনি পানপাত্র তুলে নিয়ে বললেন, “এই পানপাত্র হল আমার রক্তে স্থাপিত নতুন চুক্তি। তোমরা যতবার এই পানপাত্র থেকে পান করবে আমার স্মরণে তা করো।” 26 কারণ তোমরা যতবার এই রুটি খাবে ও এই পানপাত্রে পান করবে, ততবার তোমরা প্রভুর মৃত্যুর কথাই প্রচার করতে থাকবে, যতদিন পর্যন্ত না তিনি ফিরে আসেন।
27 তাই যে কেউ অযোগ্যভাবে প্রভুর এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে প্রভুর দেহের ও রক্তের জন্য দায়ী হবে। 28 এই রুটি খাওয়ার ও সেই পানপাত্রে পান করার আগে প্রত্যেকের উচিত নিজের হৃদয় পরীক্ষা করা। 29 কারণ যে অযোগ্যভাবে এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে যদি দেহের অর্থ কি তা না বোঝে তবে সেই খাদ্য পানীয় ঈশ্বরের বিচারদণ্ডেই পরিণত হয়। 30 সেই জন্য তোমাদের মধ্যে অনেকে আজ দুর্বল ও অসুস্থ, অনেকে মারাও পড়েছে। 31 কিন্তু যদি নিজেদের ঠিক মতো পরীক্ষা করতাম, তাহলে ঈশ্বরকে আমাদের বিচার করতে হত না। 32 কিন্তু যখন প্রভু আমাদের বিচার করেন, তিনি আমাদের শাসনও করেন, যাতে আমরা জগতের জন্য লোকদের সঙ্গে বিচারপ্রাপ্ত না হই।
33 তাই, আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন খাওয়া-দাওয়া করার জন্য সমবেত হও, তখন একজন অন্য জনের জন্য অপেক্ষা করো। 34 যদি কারোর খিদে পায়, তবে সে তার বাড়িতে খেয়ে নিক্। এমনভাবে চল যেন তোমরা একত্রিত হলে তোমাদের ওপর ঈশ্বরের দণ্ডাজ্ঞা না আসে; আর আমি যখন যাব তখন অন্য বিষয়গুলির সমাধান করব।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International