Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যাত্রা 6

প্রভু তখন মোশিকে বললেন, “ফরৌণের এখন আমি কি অবস্থা করব তা তুমি দেখতে পাবে। আমি তার বিরুদ্ধে আমার মহান ক্ষমতা ব্যবহার করব এবং সে আমার লোকদের চলে যেতে বাধ্য করবে। সে যে শুধু আমার লোকদের ছেড়ে দেবে তা নয়, সে তার দেশ থেকে তাদের জোর করে পাঠিয়ে দেবে।”[a]

ঈশ্বর তখন মোশিকে আবার বললেন, “আমিই হলাম প্রভু। আমি অব্রাহাম, ইস‌্হাক এবং যাকোবের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতাম। তারা আমায় এল্সদাই (সর্বশক্তিমান ঈশ্বর) বলে ডাকত। আমার নাম যে যিহোবা তা তারা জানত না। আমি তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম। আমি তাদের কনান দেশ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। ঐ দেশে তারা বাস করলেও দেশটি কিন্তু তাদের নিজস্ব দেশ ছিল না। এখন, আমি ইস্রায়েলীয়দের বিলাপ শুনেছি। আমি জানি মিশরীয়রা তাদের ক্রীতদাস করে রেখেছিল এবং আমি আমার চুক্তিকে মনে রাখব। সুতরাং ইস্রায়েলের লোকদের গিয়ে বলো আমি তাদের বলেছি, ‘আমি হলাম প্রভু। আমি তোমাদের রক্ষা করব। আমিই তোমাদের মুক্ত করব। তোমরা আর মিশরীয়দের ক্রীতদাস থাকবে না। আমি আমার মহান শক্তি ব্যবহার করব এবং মিশরীয়দের ভয়ঙ্কর শাস্তি দেব। তখন আমি তোমাদের উদ্ধার করব। আমি তোমাদের আমার লোক করে নিলাম এবং আমি হব তোমাদের ঈশ্বর। তোমরা জানবে যে আমি হলাম তোমাদের প্রভু, ঈশ্বর, যে তোমাদের মিশর থেকে মুক্ত করেছে। আমি অব্রাহাম, ইস‌্হাক এবং যাকোবের কাছে একটি মহান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আমি তাদের একটি বিশেষ দেশ দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তাই আমার নেতৃত্বে তোমরা ঐ দেশে যাবে। আমি তোমাদের ঐ দেশটি দিয়ে দেব। সেই দেশটি একান্তভাবে তোমাদেরই হবে। আমিই হলাম প্রভু।’”

মোশি এই কথাগুলো ইস্রায়েলীয়দের বলল, কিন্তু তাদের ধৈর্য্যহীনতা ও কঠোর পরিশ্রমের দরুণ তারা তার কথা শুনতে অস্বীকার করল।

10 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 11 “যাও মিশরের রাজা ফরৌণকে বলো যে তার উচিৎ‌ ইস্রায়েলীয়দের তার দেশ থেকে মুক্তি দেওয়া।”

12 কিন্তু মোশি উত্তরে জানাল, “ইস্রায়েলের লোকরাই আমার কথা শুনতে অস্বীকার করছে, সেক্ষেত্রে ফরৌণ আর কি শুনবে! সেও আমার কথা শুনতে রাজি হবে না। এ ব্যাপারে আমি একরকম নিশ্চিত। তার উপর আমি ভালোভাবে কথা বলতেও পারি না।”

13 কিন্তু প্রভু মোশি এবং হারোণের সঙ্গে কথা বললেন এবং তাদের ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ও ফরৌণের সঙ্গে কথা বলতে আদেশ দিলেন। ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে উদ্ধার করে আনতে প্রভু তাদের আদেশ দিলেন।

ইস্রায়েলের কয়েকটি পরিবার

14 ইস্রায়েলীয় পরিবারগুলির নেতাদের নাম ক্রমানুসারে এইরূপ:

ইস্রায়েলের জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম ছিল রূবেণ। তার পুত্ররা ছিল: হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্ম্মি।

15 শিমিয়োনোর পুত্ররা ছিল: যিমুয়েল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর এবং শৌল (যে ছিল এক কনানীয়া মহিলার গর্ভজাত সন্তান।)

16 লেবি 137 বছর জীবিত ছিলেন। লেবির পুত্রদের নাম হল গের্শোন, কহাৎ‌ ও মরারি।

17 গের্শোনের আবার দুই পুত্র ছিল লিব্‌নি ও শিমিয়ি।

18 কহাৎ‌ 133 বছর পর্যন্ত জীবিত ছিল। কহাতের পুত্ররা হল অম্রম, যিষ্‌হর, হিব্রোণ এবং উষীয়েল।

19 মরারির দুই পুত্র হল মহলি ও মুশি। এই প্রত্যেকটি পরিবারের প্রথম পূর্বপুরুষ ছিল ইস্রায়েলের সন্তান লেবি।

20 অম্রম বেঁচে ছিল 137 বছর। অম্রম তার আপন পিসি যোকেবদকে বিয়ে করেছিল। অম্রম ও যোকেবদের দুই সন্তান হল যথাক্রমে হারোণ এবং মোশি।

21 যিষ্‌হরের পুত্ররা হল কোরহ, নেফগ ও সিখ্রি।

22 আর উষীয়েলের সন্তান হল মীশায়েল, ইল‌্সাফন ও সিথ্রি।

23 হারোণ অম্মীনাদবের কন্যা, নহোশনের বোন ইলীশেবাকে বিয়ে করেছিল। হারোণ ও ইলীশেবার সন্তানরা হল নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর ও ইথামর।

24 কোরহের পুত্র অসীর, ইল‌্কানা ও অবীয়াসফ হল কোরহীয় গোষ্ঠীর পূর্বপুরুষ।

25 হারোণের পুত্র ইলিয়াসর পূটীয়েলের এক কন্যাকে বিয়ে করার পরে তাদের যে সন্তান হয় তার নাম দেওয়া হয় পীনহস।

এরা প্রত্যেকেই ইস্রায়েলের পুত্র লেবির বংশজাত।

26 হারোণ এবং মোশি ছিল এই পরিবারগোষ্ঠীর। প্রভু তাদের দুজনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং বলেছিলেন, “আমার লোকদের মিশর থেকে দলে দলে বাইরে নিয়ে এসো।” 27 হারোণ এবং মোশি উভয়েই মিশরের রাজা ফরৌণের সঙ্গে কথা বলেছিল। তারাই ফরৌণকে বলেছিল ইস্রায়েলের লোকদের মিশর থেকে ছেড়ে দেওয়া হোক্।

ঈশ্বর পুনরায় মোশিকে আহ্বান জানালেন

28 মিশরে যেদিন প্রভু মোশির সঙ্গে কথা বললেন, 29 তিনি তাকে বলেছিলেন, “আমিই হলাম প্রভু। আমি তোমাকে যা কিছু বলেছি তা মিশরের রাজা ফরৌণকে গিয়ে বলো।”

30 কিন্তু মোশি উত্তর দিল, “আমি ভালোভাবে কথা বলতে পারি না। রাজা আমার কথা শুনবে না।”

লূক 9

যীশু সেই বারোজন প্রেরিতকে পাঠালেন

(মথি 10:5-15; মার্ক 6:7-13)

যীশু সেই বারোজন প্রেরিতকে ডেকে তাঁদের সব রকমের ভূত তাড়াবার ক্ষমতা ও নানান রোগ ভাল করার ক্ষমতা দিলেন। এরপর তিনি তাঁদের ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় প্রচার করতে ও রোগীদের সুস্থ করার জন্য পাঠালেন। তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা যাত্রা পথের জন্য কিছুই নিও না, পথে যাবার জন্য লাঠি, ঝুলি, খাবার বা টাকা পয়সা কিছুই নিও না, এমন কি দুটো জামাও না। যে বাড়িতে তোমরা প্রবেশ করবে, সেই গ্রাম ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্ত সেই বাড়িতেই থেকো। যেখানে লোকেরা তোমাদের স্বাগত জানাবে না সেখানে শহর ছেড়ে অন্যত্র যাবার সময় তাদের বিরুদ্ধে প্রামাণিক সাক্ষ্যস্বরূপ তোমাদের পায়ের ধূলো ঝেড়ে ফেলো।”

তখন তাঁরা গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে যেতে যেতে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার ও রোগীদের সুস্থ করতে লাগলেন।

হেরোদ যীশু সম্পর্কে সন্দিহান

(মথি 14:1-12; মার্ক 6:14-29)

সেই সময় যে সব ঘটনা ঘটছিল রাজ্যপাল হেরোদ তা শুনে খুবই বিচলিত হয়ে পড়লেন। কারণ কেউ কেউ বলছিল, “যোহন আবার বেঁচে উঠেছেন।” আবার অনেকে বলছিল, “এলিয় পুনরায় আবির্ভূত হয়েছেন।” কেউ কেউ বলছিল, “প্রাচীনকালের ভাববাদীদের মধ্যে কোন একজন পুনরায় মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত হয়েছেন।” কিন্তু হেরোদ বললেন, “আমি যোহনের মাথা কেটে ফেলেছি; কিন্তু যার বিষয়ে আমি এসব কথা শুনছি, এ তবে কে?” আর তিনি যীশুকে দেখবার চেষ্টা করতে লাগলেন।

যীশু পাঁচ হাজারের বেশী লোককে খাওয়ালেন

(মথি 14:13-21; মার্ক 6:30-44; যোহন 6:1-14)

10 প্রেরিতরা ফিরে এসে তাঁরা কি কি করেছেন তা যীশুকে জানালেন। তখন যীশু তাঁদের নিয়ে নিভৃতে বৈৎসৈদা নগরে চলে গেলেন। 11 কিন্তু লোকেরা জানতে পেরে গেল যে তিনি কোথায় যাচ্ছেন, আর তারা যীশুর পিছু পিছু চলল। যীশুও তাদের সাদরে গ্রহণ করে তাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে বললেন, আর যে সব লোকের রোগ-ব্যাধি ভাল হবার প্রয়োজন ছিল, তাদের সুস্থ করলেন।

12 দিন প্রায় শেষ হয়ে আসছে, এমন সময় সেই বারোজন প্রেরিত যীশুর কাছে ফিরে এসে বললেন, “আমরা যেখানে আছি এটা একটা নির্জন স্থান, তাই এই লোকদের বিদায় দিন যেন এরা আশপাশের গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য থাকবার স্থান ও খাবার জোগাড় করে নিতে পারে।”

13 কিন্তু যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরাই এদের খেতে দাও।”

কিন্তু তারা বললেন, “আমাদের কাছে তো পাঁচখানা রুটি আর দুটো মাছ ছাড়া আর কিছুই নেই। আমরা গিয়ে কি এইসব লোকদের জন্য খাবার কিনে আনব?” 14 (সেখানে পুরুষ মানুষই ছিল প্রায় পাঁচ হাজার।)

কিন্তু যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “ওদেরকে এক এক দলে পঞ্চাশ জন করে বসিয়ে দাও।”

15 তারা সেই রকমই করলেন; তাদের সকলকেই বসিয়ে দিলেন। 16 এরপর যীশু সেই পাঁচখানা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে সেগুলোর জন্য স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। পরে তিনি সেগুলোকে টুকরো টুকরো করে তা পরিবেশন করার জন্য শিষ্যদের হাতে দিলেন। 17 সকলে বেশ তৃপ্তি করে খেল, বাকি যা পড়ে রইল তা একসঙ্গে জড় করলে বারোটি টুকরি ভরে গেল।

যীশুই খ্রীষ্ট

(মথি 16:13-19; মার্ক 8:27-29)

18 একদিন যীশু কোন এক জায়গায় নিভৃতে প্রার্থনা করছিলেন। তাঁর শিষ্যরা সেখানে এলে তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, “লোকেরা কি বলে, আমি কে?”

19 তাঁরা বললেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন, কেউ বা বলে এলিয়, আবার কেউ কেউ বলে প্রাচীনকালের ভাববাদীদের মধ্যে একজন বেঁচে উঠেছেন।”

20 তিনি তাঁদের বললেন, “কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?”

পিতর বললেন, “ঈশ্বরের সেই খ্রীষ্ট।”

21 তখন তিনি তাঁদের সতর্ক করে দিলেন যেন একথা তাঁরা কারো কাছে প্রকাশ না করেন।

যীশু বললেন যে তাঁকে মৃত্যুবরণ করতেই হবে

(মথি 16:21-28; মার্ক 8:31–9:1)

22 তিনি আরো বললেন, “মানবপুত্রের অনেক দুঃখ ও যাতনা ভোগ করার প্রয়োজন আছে; ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, তারা তাঁকে হত্যা করবে; আর তিন দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুলোক থেকে পুনরুত্থিত হবেন।”

23 পরে তিনি তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যে বললেন, “যদি কেউ আমার সঙ্গে আসতে চায়, তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক; আর প্রতিদিন নিজের ক্রুশ তুলে নিক এবং আমায় অনুসরণ করুক। 24 যে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায় সে তা হারাবে, কিন্তু যে কেউ আমার জন্য নিজের জীবন হারায় সে তা রক্ষা করবে। 25 সমগ্র জগৎ‌ লাভ করে কেউ যদি নিজেকে ধ্বংস করে তবে তার কি লাভ হল? 26 যদি কেউ আমার জন্য ও আমার শিক্ষার জন্য লজ্জা বোধ করে, তবে যখন মানবপুত্র নিজ মহিমায় এবং পিতা ও পবিত্র স্বর্গদূতদের মহিমায় আসবেন তখন তিনিও তার জন্য লজ্জিত হবেন। 27 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে এমন কয়েকজন আছে যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্য না দেখা পর্যন্ত মৃত্যুর মুখ দেখবে না।”

মোশি, এলিয় ও যীশু

(মথি 17:1-8; মার্ক 9:2-8)

28 এইসব কথা বলার প্রায় আট দিন পর, তিনি পিতর, যাকোব ও যোহনকে নিয়ে প্রার্থনা করার জন্য একটা পর্বতে গেলেন। 29 যীশু যখন প্রার্থনা করছিলেন, তখন তাঁর মুখের চেহারা অন্যরকম হয়ে গেল, তাঁর পোশাক আলোক শুভ্র হয়ে উঠল। 30 দুই ব্যক্তি, মোশি ও এলিয় মহিমান্বিত হয়ে সেখানে এসে যীশুর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন। 31 তাঁরা ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযায়ী জেরুশালেমে কিভাবে যীশুর মৃত্যু হবে তাই নিয়ে কথা বলছিলেন। 32 কিন্তু পিতর ও তাঁর অন্য সঙ্গীরা সেই সময় ঢুলতে ঢুলতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাঁরা জেগে উঠে যীশুকে মহিমান্বিত রূপে দেখতে পেলেন, আর ঐ দুই ব্যক্তিকে যীশুর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন। 33 সেই ব্যক্তিরা যখন যীশুর কাছ থেকে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পিতর যীশুকে বললেন, “গুরু, ভালোই হয়েছে যে আমরা এখানে আছি। আমরা এখানে তিনটে কুটীর তৈরী করি, একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য আর একটা এলিয়র জন্য।” তিনি জানতেন না যে তিনি কি বলছিলেন।

34 কিন্তু তিনি যখন এইসব কথা বলছিলেন, সেই সময় এক খণ্ড মেঘ এসে তাঁদের ঢেকে ফেলল, মেঘের মধ্যে প্রবেশ করে তাঁরা ভীত হলেন। 35 সেই মেঘের মধ্য থেকে এক রব শোনা গেল। সেই রব বলল, “এই আমার পুত্র, আমার মনোনীত পাত্র, তাঁর কথা শোন।”

36 সেই রব মিলিয়ে যাবার পরই দেখা গেল কেবল যীশু একা সেখানে রয়েছেন আর শিষ্যরা যা দেখলেন সে বিষয়ে কাউকে কিছু না বলে চুপ করে রইলেন।

অশুচি আত্মায় পাওয়া একটি বালককে যীশু সুস্থ করলেন

(মথি 17:14-18; মার্ক 9:14-27)

37 পরদিন তাঁরা পর্বত থেকে নেমে এলে বহু লোক যীশুর সঙ্গে দেখা করতে এল, 38 আর সেই সময় ঐ ভীড়ের মধ্য থেকে একটি লোক চিৎকার করে বলল, “গুরু, আমি আপনাকে মিনতি করছি আপনি আমার এই একমাত্র সন্তানের দিকে একটু দেখুন। 39 হঠাৎ‌, একটা অশুচি আত্মা তাকে ধরে, আর সে চিৎকার করতে থাকে। সেই আত্মা যখন তাকে মুচড়ে ধরে তখন তার মুখ থেকে ফেনা কাটতে থাকে। এটা সহজে তাকে ছেড়ে যেতে চায় না, তাকে একবারে ঝাঁঝরা করে দেয়। 40 আমি আপনার শিষ্যদের কাছে মিনতি করেছিলাম যেন তাঁরা ঐ অশুচি আত্মাকে তাড়িয়ে দেন, কিন্তু তাঁরা পারলেন না।”

41 যীশু বললেন, “হে অবিশ্বাসী ও পথভ্রষ্ট লোকেরা, আমি আর কতকাল তোমাদের নিয়ে ধৈর্য্য ধরব, কতকালই বা তোমাদের সঙ্গে থাকব?” যীশু লোকটিকে বললেন, “তোমার ছেলেকে এখানে আন।”

42 ছেলেটা যখন আসছিল, তখন সেই ভূত তাকে আছাড় মারল আর তাতে সে প্রবলভাবে হাত-পা ছোঁড়াছুঁড়ি করতে লাগল। যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমক দিলেন। তারপর ছেলেটিকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তার বাবার কাছে ফেরৎ দিলেন। 43 ঈশ্বর যে কত মহান তা দেখে লোকেরা অবাক হয়ে গেল।

যীশু তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে বললেন

(মথি 17:22-23; মার্ক 9:30-32)

যীশু যা করলেন তা দেখে লোকেরা আশ্চর্য হচ্ছিল, তখন যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, 44 “আমি তোমাদের যা বলছি তা মন দিয়ে শোন, শীঘ্রই মানবপুত্রকে মানুষের হাতে সঁপে দেওয়া হবে।” 45 কিন্তু এ কথার অর্থ কি শিষ্যরা তা বুঝতে পারলেন না। এটা তাঁদের কাছে গুপ্ত রয়ে গেল, তাই তাঁরা এর কিছুই উপলদ্ধি করতে পারলেন না।

শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি

(মথি 18:1-5; মার্ক 9:33-37)

46 সেই সময়ই তাঁদের মধ্যে এই বিতর্কের সূত্রপাত হল যে কে তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। 47 কিন্তু যীশু তাঁদের মনোভাব বুঝতে পেরে একটি শিশুকে এনে নিজের পাশে দাঁড় করালেন। 48 তিনি তাঁদের বললেন, “যে কেউ আমার নামে এই শিশুকে সাদরে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে; আর যে আমাকে সাদরে গ্রহণ করে, সে আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন তাঁকেই গ্রহণ করে। তোমাদের মধ্যে যে সবচেয়ে ছোট, সেই শ্রেষ্ঠ।”

যে কেউ তোমার বিপক্ষে নয় সে তোমার পক্ষে

(মার্ক 9:38-40)

49 যোহন বললেন, “প্রভু আমরা আপনার নামে একজনকে ভূত তাড়াতে দেখেছি। সে আমাদের সঙ্গী নয় বলে আমরা তাকে বারণ করেছি।”

50 কিন্তু যীশু তাঁকে বললেন, “তাকে বারণ করো না, কারণ যে তোমাদের বিপক্ষ নয়, সে তোমাদের সপক্ষ।”

শমরীয় শহর

51 যীশুর স্বর্গে যাবার সময় হয়ে এলে তিনি স্থির চিত্তে জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে চললেন। 52 তিনি তাঁর পৌঁছাবার আগেই সেখানে কিছু বার্তবাহক পাঠালেন। তাঁরা গিয়ে শমরীয়দের এক গ্রামে উঠলেন, যেন যীশুর জন্য সব কিছু ব্যবস্থা করতে পারেন। 53 কিন্তু যীশু জেরুশালেমে যাবেন বলে স্থির করায় শমরীয়রা তাঁকে গ্রহণ করল না। 54 যীশুর অনুগামী যাকোব ও যোহন এই দেখে বললেন, “প্রভু, আপনি কি চান যে এদের ধ্বংস করার জন্য আমরা আকাশ থেকে আগুন নামিয়ে আনি?”[a]

55 কিন্তু যীশু ফিরে দাঁড়িয়ে তাদের ধমক দিলেন।[b] 56 তখন তাঁরা অন্য গ্রামে গেলেন।

যীশুকে অনুসরণ

(মথি 8:19-22)

57 তাঁরা যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, সেই সময় একজন লোক যীশুকে বলল, “আপনি যেখানেই যান না কেন আমিও আপনার সঙ্গে যাব।”

58 যীশু তাকে বললেন, “শেয়ালের গর্ত আছে, আকাশের পাখিদেরও বাসা আছে, কিন্তু মানবপুত্রের কোথাও মাথা রাখার ঠাঁই নেই।”

59 আর একজনকে তিনি বললেন, “আমায় অনুসরণ কর।”

কিন্তু সেই লোকটি বলল, “আগে গিয়ে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসতে দিন।”

60 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, “মৃতরাই তাদের মৃতদের কবর দেবে। তুমি গিয়ে বরং ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় ঘোষণা কর।”

61 আর একজন লোক বলল, “প্রভু, আমি আপনার অনুসারী হব: কিন্তু প্রথমে আমার বাড়ির সকলকে বিদায় জানিয়ে আসতে দিন।”

62 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, “লাঙ্গলে হাত রেখে যে পেছন ফিরে তাকায়, সে ঈশ্বরের রাজ্যের যোগ্য নয়।”

ইয়োব 23

ইয়োবের উত্তর

23 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন:

“আমি আজ পর্যন্ত অভিযোগ করে যাচ্ছি।
    কেন? কারণ আমি এখনও ভুগছি।
আমার ইচ্ছা হয়, ঈশ্বরকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যায় তা যদি জানতাম,
    তাহলে আমি সেই জায়গায় যেতাম।
আমি আমার কথা ঈশ্বরের কাছে বলতাম,
    আমি যে নির্দোষ এটা প্রমাণ করার জন্য আমি আমার যুক্তিগুলো সাজাতাম।
কেমন করে ঈশ্বর আমার প্রশ্নের জবাব দেবেন সেটাই আমি জানতে চাই।
    আমি ঈশ্বরের উত্তরকে বুঝতে চাই।
ঈশ্বর কি আমার বিরুদ্ধে তাঁর শক্তিকে ব্যবহার করবেন?
    না, তিনি আমার কথা শুনবেন!
সেখানে একটি ন্যায়পরায়ণ লোক ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করতে পারে।
    তখন আমার বিচারক আমাকে মুক্তি দিতে পারেন।

“কিন্তু আমি যদি পূর্ব দিকে যাই সেখানে ঈশ্বর নেই।
    আমি যদি পশ্চিমে যাই, তখনও আমি ঈশ্বরকে দেখতে পাই না।
যখন ঈশ্বর উত্তরে কর্মরত থাকেন আমি তাঁকে দেখি না।
    যখন ঈশ্বর দক্ষিণে আসেন, তখনও তাঁকে দেখতে পাই না।
10 কিন্তু ঈশ্বর জানেন আমি কেমন লোক।
    তিনি আমাকে পরীক্ষা করছেন এবং তিনি দেখবেন যে আমি সোনার মতোই পবিত্র।
11 আমি সর্বদাই ঈশ্বরের চাওয়া পথে জীবনধারণ করেছি।
    আমি কখনও ঈশ্বরকে অনুসরণ করা থেকে বিরত হইনি।
12 আমি সর্বদাই ঈশ্বরের নির্দেশ মেনে এসেছি।
    আমি আমার খাবারকে যত না ভালোবাসি, তার থেকে বেশী ভালোবাসি ঈশ্বরের মুখ নিঃসৃত বাণী।

13 “কিন্তু ঈশ্বর কখনও পরিবর্তিত হন না।
    ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে পারে না।
    ঈশ্বর যা চান তাই করতে পারেন।
14 আমার প্রতি ঈশ্বরের যা পরিকল্পনা আছে তিনি তাই করবেন।
    এবং আমার সম্পর্কে তাঁর অনেক পরিকল্পনা আছে।
15 সেই কারণেই আমি ঈশ্বরের দ্বারা আতঙ্কিত।
    আমি এই জিনিসগুলো বুঝতে পারি।
    সেই কারণেই আমি ঈশ্বরের সম্পর্কে ভীত।
16 ঈশ্বর আমার হৃদয়কে দুর্বল করে দেন এবং আমি সাহস হারিয়ে ফেলি।
    সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাকে ভীত করেন।
17 যে মন্দ ঘটনাগুলো আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে তা আমার মুখে কালো মেঘের মত ছেয়ে আছে।
    সেই অন্ধকার আমাকে চুপ করে থাকতে দেবে না।”

1 করিন্থীয় 10

ইহুদীদের মতো হোয়ো না

10 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি চাই যে তোমরা একথা জান যে আমাদের পিতৃপুরুষরা যখন মোশিকে অনুসরণ করেছিলেন তখন তাঁদের কি হয়েছিল। তাঁরা সকলে মেঘের নীচে ছিলেন, সকলেই সাগর পার হয়েছিলেন। তাঁরা সকলে মোশির অনুগামী হয়ে মেঘে ও সমুদ্রে বাপ্তাইজ হয়েছিলেন। তাঁরা সকলে একই ধরণের আত্মিক খাদ্য খেয়েছিলেন; আর একই আত্মিক পানীয় পান করেছিলেন। তাঁরা এক আত্মিক শৈল থেকে সেই পানীয় পান করতেন যা তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল, সেই শৈলই হচ্ছেন খ্রীষ্ট। কিন্তু তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ লোকের প্রতিই ঈশ্বর সন্তুষ্ট ছিলেন না, আর তাঁরা পথে প্রান্তরের মধ্যে মারা পড়েছিলেন।

এসব ঘটনা আমাদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ ঘটল, যাতে তারা যেমন মন্দ বিষয়ে অভিলাষ করেছিল আমরা তা না করি। তাদের মধ্যে কিছু লোক যেমন প্রতিমা পূজা শুরু করেছিল তেমন তোমরা প্রতিমা পূজা শুরু করো না। কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে: “লোকেরা ভোজন পান করতে বসল আর উঠে দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করল।”(A) তাদের মধ্যে যেমন কতক লোক যৌন পাপে পাপী হয়েছিল আর একদিনে তেইশ হাজার লোক তাদের পাপের জন্য মারা পড়েছিল, আমরা যেন তেমনি যৌন পাপ না করি। তাদের মধ্যে যেমন কিছু লোক প্রভুকে পরীক্ষা করে সাপের কামড়ে মারা পড়েছিল, আমরা যেন তেমন পরীক্ষা না করি। 10 আবার তাদের মধ্যে কিছু লোক যেমন অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আর ধ্বংসকারী স্বর্গদূতের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়েছিল, তোমরা তেমনি অসন্তোষ প্রকাশ করো না।

11 তাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছিল তা দৃষ্টান্তস্বরূপ রয়ে গেছে। আমাদের সাবধান করে দেবার জন্য এসব কথা লেখা হয়েছে, কারণ আমরা শেষ যুগে এসে পৌঁছেছি। 12 তাই যে মনে করে যেন শক্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে, সে সাবধান হোক্, পাছে পড়ে মারা যায়। 13 যে প্রলোভনগুলি স্বাভাবিকভাবে লোকদের কাছে আসে তার থেকে বেশী কিছু তোমাদের কাছে আসেনি। তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বস্ত থাক, যে সব প্রলোভন প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তোমাদের নেই, তিনি তা তোমাদের জীবনে আসতে দেবেন না; কিন্তু প্রলোভনের সাথে সাথে তার থেকে উদ্ধারের পথ তিনিই করে দেবেন, যেন তোমরা সহ্য করতে পার।

14 আমার প্রিয় বন্ধুরা, সব রকম প্রতিমা পূজা থেকে দূরে থাক। 15 আমি তোমাদের বুদ্ধিমান জেনে একথা বলছি। আমি যা বলি তা তোমরা নিজেরাই বিচার করে দেখ। 16 আশীর্বাদের পানপাত্র, যা নিয়ে আমরা ধন্যবাদ দিই তা কি খ্রীষ্টের রক্তের সহভাগীতা নয়? যে রুটি ভেঙে টুকরো টুকরো করে খাওয়া হয়, তা কি খ্রীষ্টের দেহের সহভাগীতা নয়? 17 রুটি একটাই কিন্তু আমরা সকলেই সেই একটা রুটি থেকেই অংশ গ্রহণ করি। তাই আমরা অনেক হলেও আসলে আমরা এক দেহ।

18 ইস্রায়েল জাতির কথা চিন্তা কর। যারা বলির মাংস খায় তারা কি সেই যজ্ঞবেদীর নৈবেদ্যর সহভাগী হয় না? 19 তাহলে আমার কথার অর্থ কি হল? আমি কি এই কথা বলছি যে, প্রতিমার কাছে যেসব ভোগ উৎসর্গ করা হয় তার কোন তাৎপর্য আছে অথবা প্রতিমার কোন বাস্তবতা আছে? 20 কিন্তু আমার কথার অর্থ এই লোকেরা যা কিছু প্রতিমার উদ্দেশ্যে বলিদান করে, তারা তা ভূতদের উদ্দেশ্যেই করে, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নয়; আর আমি চাই না যে তোমাদের কোনভাবে ভুতদের সঙ্গে সংযোগ থাকে। 21 তোমরা প্রভুর পানপাত্র ও ভুতদের পানপাত্র, উভয় থেকে পান করতে পার না। আবার তোমরা প্রভুর টেবিল ও ভুতদের টেবিল উভয় টেবিলে অংশ নিতে পার না। 22 তোমরা কি প্রভুকে ঈর্ষান্বিত করতে চাইছ? আমরা কি তাঁর থেকে শক্তিশালী? কখনই না।

তোমাদের স্বাধীনতা ঈশ্বরের মহিমার জন্য ব্যবহার কর

23 “আমাদের সব কিছু করার স্বাধীনতা আছে।” তবে সব কিছুই যে মঙ্গলজনক তা নয়। “হ্যাঁ, যে কোন কিছু করার স্বাধীনতা আমাদের দেওয়া আছে।” তবে সব কিছুই যে গড়ে তোলে তা নয়। 24 কেউ যেন স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা না করে; বরং প্রত্যেকে যেন অপরের মঙ্গল চায়।

25 বিবেকের প্রশ্ন না তুলে যে কোন মাংস বাজারে বিক্রি হয় তা খাও। 26 কারণ শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে: “পৃথিবী ও তার মধ্যেকার সব কিছুই প্রভুর।”(B)

27 যদি কোন অবিশ্বাসী ভাই তোমাকে নিমন্ত্রণ করে আর যদি তুমি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে চাও, তবে নিজের বিবেকের কাছে কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করে যে কোন খাদ্যদ্রব্য পরিবেশন করে সামনে রাখা হয়, তা খেও। 28 কিন্তু কেউ যদি বলে যে, “এ হল প্রতিমার প্রসাদ” তবে যে জানালো, তার কথা চিন্তা করে ও বিবেকের কথা মনে রেখে, তা খেও না। 29 আমি কোন ব্যক্তির নিজের বিবেকের নয়, কিন্তু অপর ব্যক্তির বিবেকের বিষয় বলছি। আমার স্বাধীনতা কেন অপরের বিবেক বিচার করবে? 30 যদি আমি ধন্যবাদ জানিয়ে খাই, তাহলে যে বিষয়ের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়েছি সে বিষয়ে আমার সমালোচনা হবে এ আমি চাই না।

31 তাই তোমরা আহার কর, কি পান কর বা যা কিছু কর, সব কিছুই ঈশ্বরের মহিমার জন্য কর। 32 কি ইহুদী, কি গ্রীক, কি ঈশ্বরের মণ্ডলী, কারো বিঘ্নের কারণ হয়ো না। 33 যেমন আমি নিজের ভাল চাই না কিন্তু অপরের ভাল চাই, যেন তারা উদ্ধার লাভ করে।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International