M’Cheyne Bible Reading Plan
শিশু মোশি
2 লেবি পরিবারের একজন পুরুষ লেবি পরিবারেরই এক কন্যাকে বিয়ে করেছিল। 2 সে সন্তানসম্ভবা হল এবং একটা সুন্দর ফুট-ফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম দিল। পুত্র সন্তান দেখতে এত সুন্দর হয়েছিল যে তার মা তাকে তিন মাস লুকিয়ে রেখেছিল। 3 তিন মাস পরে যখন সে তাকে আর লুকিয়ে রাখতে পারছিল না, তখন সে একটি ঝুড়িতে আলকাতরা মাখালো এবং তাতে শিশুটিকে রেখে নদীর তীরে লম্বা ঘাসবনে রেখে এলো। 4 শিশুটির বড় বোন তার ভাইয়ের কি অবস্থা হতে পারে দেখবার জন্য দূরে দাঁড়িয়ে ভাইয়ের ঝুড়ির দিকে লক্ষ্য রাখছিল। 5 ঠিক তখনই ফরৌণের মেয়ে নদীতে স্নান করতে এসেছিল। সে দেখতে পেল ঘাসবনে একটি ঝুড়ি ভাসছে। তার সহচরীরা তখন নদী তীরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তাই সে তার সহচরীদের একজনকে ঝুড়িটা তুলে আনতে বলল। 6 তারপর রাজকন্যা ঝুড়িটা খুলে দেখল যে তাতে রয়েছে একটি শিশুপুত্র। শিশুটি তখন কাঁদছিল। আর তা দেখে রাজকন্যার বড় দয়া হল। ভাল করে শিশুটিকে লক্ষ্য করার পর সে বুঝতে পারল যে শিশুটি হিব্রু।
7 এবার শিশুটির দিদি আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে রাজকন্যাকে বলল, “আমি কি আপনাকে সাহায্যের জন্য কোনও হিব্রু ধাত্রীকে ডেকে আনব যে অন্তত শিশুটিকে দুধ খাওয়াতে পারবে?”
8 রাজকন্যা বলল, “বেশ যাও।”
সুতরাং মেয়েটি গেল এবং শিশুটির মাকে ডেকে আনল।
9 রাজকন্যা তাকে বলল, “আমার হয়ে তুমি এই শিশুটিকে দুধ পান করাও। এরজন্য আমি তোমাকে টাকা দেব।” তারই মা শিশুটিকে যত্ন করে বড় করে তুলতে লাগল। 10 শিশুটি বড় হয়ে উঠলে মহিলাটি তার সন্তানকে রাজকন্যাকে দিয়ে দিল। রাজকন্যা শিশুটিকে নিজের ছেলের মতোই গ্রহণ করে তার নাম দিল মোশি। শিশুটিকে সে জল থেকে পেয়েছিল বলে তার নামকরণ করা হল মোশি।
মোশি তার লোকদের সাহায্য করল
11 একদিন, মোশি বড় হয়ে যাবার পর সে তার নিজের লোকদের দেখবার জন্য বাইরে গেল এবং দেখল তাদের ভীষণ কঠিন কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। সে এও দেখল যে একজন মিশরীয় একজন হিব্রু ছোকরাকে প্রচণ্ড মারধর করছে। 12 মোশি চারিদিকে তাকিয়ে দেখল কেউ ব্যাপারটা লক্ষ্য করছে না। তখন মোশি সেই মিশরীয়কে হত্যা করে তাকে বালিতে পুঁতে দিল।
13 পরদিন মোশি দেখল দুজন ইস্রায়েলীয় নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে। তাদের মধ্যে একজন অন্যায়ভাবে আরেকজনকে মারছে। মোশি তখন সেই অন্যায়কারী লোকটির উদ্দেশ্যে বলল, “কেন তুমি তোমার প্রতিবেশীকে মারছো?”
14 লোকটি উত্তরে জানাল, “তোমাকে কে আমাদের শাস্তি দিতে পাঠিয়েছে? বলো, তুমি কি আমাকে মারতে এসেছ যেমনভাবে তুমি গতকাল ঐ মিশরীয়কে হত্যা করেছিলে?”
তখন মোশি ভয় পেয়ে মনে মনে বলল, “তাহলে এখন ব্যাপারটা সবাই জেনে গেছে।”
15 একদিন রাজা ফরৌণ মোশির কীর্তি জানতে পারলেন; তিনি তাকে হত্যা করতে চাইলেন। কিন্তু মোশি মিদিয়ন দেশে পালিয়ে গেল।
মিদিয়নে মোশি
মিদিয়নে এসে একটি কুয়োর সামনে মোশি বসে পড়ল। 16 সেখানে এক যাজক ছিল। তার ছিল সাতটি মেয়ে। কুয়ো থেকে জল তুলে পিতার পোষা মেষপালকে জল খাওয়ানোর জন্য সেই সাতটি মেয়ে কুয়োর কাছে এল। তারা মেষদের জল পানের পাত্রটি ভর্ত্তি করার চেষ্টা করছিল। 17 কিন্তু কিছু মেষপালক এসেছিল এবং তরুণীদের তাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই মোশি তাদের সাহায্য করতে এলো এবং তাদের পশুর পালকে জল পান করালো।
18 তখন তরুণীরা তাদের পিতা রূয়েলের কাছে ফিরে গেল। সে বলল, “তোমরা আজ তাড়াতাড়ি ফিরে এসেছ দেখছি!” 19 তরুণীরা উত্তর দিল, “হ্যাঁ, ওখানে কুয়ো থেকে জল তোলার সময় কিছু মেষপালক আমাদের তাড়িয়ে দিল। কিন্তু একজন অচেনা মিশরীয় এলো এবং আমাদের সাহায্য করল। সে আমাদের জন্য জলও তুলে দিল এবং আমাদের মেষের পালকে জল পান করালো।” 20 রূয়েল তার মেয়েদের বলল, “সেই লোকটি কোথায়? তোমরা তাকে ওখানে ছেড়ে এলে কেন? যাও তাকে আমাদের সঙ্গে খাবার নেমতন্ন করে এসো।”
21 মোশি রূয়েলের সঙ্গে থাকবার জন্য খুশীর সঙ্গে রাজী হল। রূয়েল তার মেয়ে সিপ্পোরার সঙ্গে মোশির বিয়ে দিল। 22 বিয়ের পর সিপ্পোরা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিল। মোশি তার নাম দিল গের্শোম কারণ সে ছিল প্রবাসে থাকা একজন অপরিচিত ব্যক্তি।
ঈশ্বর ইস্রায়েলকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিলেন
23 দেখতে দেখতে অনেক বছর পেরিয়ে গেল। মিশরের রাজাও ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের তখনও জোর করে কাজ করানো হচ্ছিল। তারা সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি শুরু করল। এবং সেই কান্না স্বয়ং ঈশ্বর শুনতে পাচ্ছিলেন। 24 ঈশ্বর তাদের গভীর আর্তনাদ শুনলেন এবং তিনি স্মরণ করলেন সেই চুক্তির কথা যা তিনি অব্রাহাম, ইস্হাক এবং যাকোবের সঙ্গে করেছিলেন। 25 ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের দেখেছিলেন এবং তিনি জানতেন তিনি কি করতে যাচ্ছেন এবং তিনি স্থির করলেন যে শীঘ্রই তিনি তাঁর সাহায্যের হাত তাদের দিকে বাড়িয়ে দেবেন।
পিতর, যাকোব এবং যোহন যীশুকে অনুসরণ করলেন
(মথি 4:18-22; মার্ক 1:16-20)
5 একদিন যীশু গিনেষরত হ্রদের ধারে দাঁড়িয়েছিলেন। বহুলোক তাঁর চারপাশে ভীড় করে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের শিক্ষা শুনছিল। 2 তিনি দেখলেন, হ্রদের ধারে দুটি নৌকা দাঁড়িয়ে আছে আর জেলেরা নৌকা থেকে নেমে জাল ধুচ্ছে। 3 তিনি একটি নৌকায় উঠলেন, সেই নৌকাটি ছিল শিমোনের। যীশু তাঁকে তীর থেকে নৌকাটিকে একটু দূরে নিয়ে যেতে বললেন। তারপর তিনি নৌকায় বসে সেখান থেকে লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন।
4 তাঁর কথা শেষ হলে তিনি শিমোনকে বললেন, “এখন গভীর জলে নৌকা নিয়ে চল, আর সেখানে মাছ ধরার জন্য তোমাদের জাল ফেল।”
5 শিমোন উত্তর দিলেন, “প্রভু, আমরা সারা রাত ধরে কঠোর পরিশ্রম করে কিছুই ধরতে পারি নি; কিন্তু আপনি যখন বলছেন তখন আমি জাল ফেলব।” 6 তাঁরা জাল ফেললে প্রচুর মাছ জালে ধরা পড়ল। মাছের ভারে তাদের জাল ছিঁড়ে যাবার উপক্রম হল। 7 তখন তাঁরা সাহায্যের জন্য ইশারা করে অন্য নৌকার সঙ্গীদের ডাকলেন। সঙ্গীরা এসে দুটো নৌকায় এত মাছ বোঝাই করলেন যে সেগুলো ডুবে যাবার উপক্রম হল।
8-9 এই দেখে পিতর যীশুর পায়ে পড়ে বললেন, “প্রভু আমি একজন পাপী। আপনি আমার কাছ থেকে চলে যান।” কারণ জালে এত মাছ ধরা পড়েছে দেখে তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা সকলে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। 10 সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও যোহন যাঁরা তাঁর ভাগীদার ছিলেন তাঁরাও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
তখন যীশু শিমোনকে বললেন, “ভয় পেও না, এখন থেকে তুমি মাছ নয় বরং মানুষ ধরবে।”
11 এরপর তাঁরা নৌকাগুলো তীরে এনে সব কিছু ফেলে রেখে যীশুর সঙ্গে চললেন।
একজন কুষ্ঠ রোগীকে যীশু আরোগ্যদান করলেন
(মথি 8:1-4; মার্ক 1:40-45)
12 একবার যীশু কোন এক নগরে ছিলেন, সেখানে একজন লোক যার সর্বাঙ্গ কুষ্ঠরোগে ভরে গিয়েছিল, সে যীশুকে দেখে তাঁর সামনে উপুড় হয়ে পড়ে মিনতি করে বলল, “প্রভু, আপনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলেই আমাকে ভালো করতে পারেন।”
13 তখন যীশু হাত বাড়িয়ে তাকে ছুঁয়ে বললেন, “আমি তা-ই চাই। তুমি আরোগ্য লাভ কর!” আর সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ ভালো হয়ে গেল। 14 তখন যীশু তাকে আদেশ করলেন, “দেখ, একথা কাউকে বোলো না; কিন্তু যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও, আর শুচি হবার জন্য মোশির নির্দেশ মতো বলি উৎসর্গ কর। তুমি যে আরোগ্য লাভ করেছ, সবার সামনে এইভাবে তা প্রকাশ কর।”[a]
15 যীশুর বিষয়ে নানা খবর চতুর্দিকে আরো ছড়িয়ে পড়তে লাগল, আর বহুলোক ভীড় করে তাঁর কথা শুনতে ও রোগ থেকে সুস্থ হবার জন্য তাঁর কাছে আসতে লাগল। 16 কিন্তু যীশু প্রায়ই নির্জন জায়গায় প্রান্তরের মধ্যে গিয়ে প্রার্থনা করতেন।
যীশু একজন পঙ্গুকে সুস্থ করেন
(মথি 9:1-8; মার্ক 2:1-12)
17 একদিন তিনি যখন শিক্ষা দিচ্ছেন তখন সেখানে কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক বসেছিল। এরা গালীল ও যিহূদিয়ার প্রতিটি নগর ও জেরুশালেম থেকে এসেছিল। রোগীদের সুস্থ করার জন্য প্রভুর শক্তি যীশুর মধ্যে ছিল। 18 সেই সময় কয়েকজন লোক খাটে করে একজন পঙ্গুকে বয়ে নিয়ে এল। তারা তাকে ভেতরে যীশুর কাছে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল; 19 কিন্তু ভীড়ের জন্য ভেতরে যাবার পথ পেল না। তখন তারা ছাদে উঠে ছাদের টালি সরিয়ে তাকে তার খাটিযা সমেত লোকদের মাঝে যেখানে যীশু ছিলেন সেখানে নামিয়ে দিল। 20 তাদের এই বিশ্বাস দেখে যীশু বললেন, “তোমার পাপ ক্ষমা করা হল।”
21 এই শুনে ইহুদী ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা নিজেদের মধ্যে মনে মনে ভাবতে লাগল, “এই লোকটা কে যে ঈশ্বর নিন্দা করছে! একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে?”
22 কিন্তু যীশু তাদের মনের চিন্তা বুঝতে পেরে বললেন, “তোমরা মনে মনে কেন ঐ কথা ভাবছ? 23 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল,’ না ‘তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও?’ 24 কিন্তু তোমরা যেন জানতে পারো যে পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা মানবপুত্রের[b] আছে।” তাই তিনি পঙ্গু লোকটিকে বললেন, “আমি তোমায় বলছি, ওঠো! তোমার খাটিয়া তুলে নিয়ে বাড়ি যাও।”
25 আর লোকটি সঙ্গে সঙ্গে তাদের সামনে উঠে দাঁড়াল আর যে খাটিয়ার ওপর সে শুয়েছিল তা তুলে নিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বাড়ি চলে গেল। 26 এই দেখে সবাই খুব আশ্চর্য হয়ে গেল, আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল। তারা ভয় ও ভক্তিতে পূর্ণ হয়ে বলতে লাগল, “আজ আমরা এক বিস্ময়কর ঘটনা দেখলাম।”
লেবির যীশুকে অনুসরণ
(মথি 9:9-13; মার্ক 2:13-17)
27 এই ঘটনার পর যীশু সেখান থেকে বাইরে গেলে কর আদায় করার জায়গায় লেবি নামে একজন কর আদায়কারীকে বসে থাকতে দেখলেন। যীশু তাকে বললেন, “আমার সঙ্গে এস!” 28 আর লেবি সব কিছু ফেলে রেখে উঠে পড়লেন ও যীশুর সঙ্গে চললেন।
29 যীশুর জন্য লেবি তাঁর বাড়িতে একটা বড় ভোজের আয়োজন করলেন। তাদের সঙ্গে অনেক কর আদায়কারী ও অন্যান্য আরো অনেকে খেতে বসল। 30 তখন ফরীশী ও তাদের ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুর অনুগামীদের কাছে অভিযোগ করে বলল, “তোমরা কেন কর আদায়কারী ও মন্দ লোকদের সঙ্গে ভোজন পান কর?”
31 এর জবাবে যীশু তাদের বললেন, “সুস্থ লোকেদের জন্য চিকিৎসকের প্রয়োজন নেই; কিন্তু যারা অসুস্থ তাদের জন্য চিকিৎসকের দরকার আছে। 32 আমি ধার্মিকদের নয় কিন্তু মন্দ লোকদের ডাকতে এসেছি; যেন তারা পাপের পথ থেকে ফেরে।”
যীশু উপবাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিলেন
(মথি 9:14-17; মার্ক 2:18-22)
33 তারা যীশুকে বলল, “যোহনের অনুগামীরা প্রায়ই প্রার্থনা ও উপবাস করে, ফরীশীদের অনুগামীরাও তা করে; কিন্তু আপনার অনুগামীরা তো সব সময়ই ভোজন পান করছে।”
34 যীশু তাদের বললেন, “বর সঙ্গে থাকতে কি তোমরা বর যাত্রীদের উপোস করে থাকতে বলতে পার? 35 কিন্তু এমন সময় আসছে যখন বরকে তাদের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে আর সেই সময় তারা উপোস করবে।”
36 তিনি তাদের কাছে একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে বললেন, “নতুন জামা থেকে একটি টুকরো ছিঁড়ে নিয়ে কেউ কি পুরানো জামায় তালি দেয়? যদি কেউ তা করে তবে সে তার নতুন জামাটি ছিঁড়ল, আবার সেই ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো পুরানোর সঙ্গে মানাবে না। 37 পুরানো চামড়ার থলিতে কেউ টাটকা দ্রাক্ষারস রাখে না, রাখলে টাটকা দ্রাক্ষারস চামড়ার থলিটি ফাটিয়ে দেবে তাতে রস ও পড়ে যাবে আর থলি ও নষ্ট হবে। 38 টাটকা দ্রাক্ষারস নতুন চামড়ার থলিতে রাখাই উচিত; 39 আর পুরানো দ্রাক্ষারস পান করার পর কেউ টাটকা দ্রাক্ষারস পান করতে চায় না, কারণ সে বলে ‘পুরাতনটাই ভাল।’”
ইয়োব উত্তর দিলেন
19 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন:
2 “আর কতক্ষণ তোমরা আমায় আঘাত করবে
এবং বাক্য বাণে আমায় জর্জরিত করবে?
3 এখন তোমরা আমাকে দশবার অপমান করেছো।
আমায় আক্রমণের সময় তোমরা লজ্জার লেশমাত্র দেখাও নি!
4 এমনকি যদি আমি অপরাধ করে থাকি,
তা আমার সমস্যা।
5 তোমরা শুধুমাত্র নিজেকে আমার চেয়ে ভালো বলে দেখাতে চাইছো।
তোমরা বলছো যে আমার সমস্যাগুলি আমারই ত্রুটির ফল।
6 কিন্তু আমি চাই তোমরা জান যে ঈশ্বর আমার প্রতি ভুল করেছেন।
আমাকে ধরার জন্য তিনি ফাঁদ পেতেছেন।
7 আমি চিৎকার করি, ‘ও আমায় আঘাত করেছে!’ কিন্তু আমি কোন উত্তর পাই না।
এমনকি যদি আমি সাহায্যের জন্য উচ্চস্বরে ডাক দিই, সুবিচার হয় না।
8 ঈশ্বর আমার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছেন তাই আমি এগিয়ে যেতে পারি না।
তিনি আমার পথকে অন্ধকারে আচ্ছন্ন করে দিয়েছেন।
9 ঈশ্বর আমার সম্মান হরণ করে নিয়েছেন।
আমার মাথা থেকে তিনি মুকুট কেড়ে নিয়েছেন।
10 আমি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঈশ্বর চারদিক থেকে আমার দেওয়ালে আঘাত করবেন।
শিকড় সমেত উপড়ে দেওয়া গাছের মত
তিনি আমার সব আশা উৎপাটিত করেছেন।
11 আমার বিরুদ্ধে ঈশ্বরের ক্রোধ জ্বলছে।
তিনি আমাকে তাঁর শত্রু বলে অভিহিত করেন।
12 আমাকে আক্রমণ করার জন্য ঈশ্বর তাঁর সৈন্যদের পাঠিয়েছেন।
আমার বিরুদ্ধে তারা আক্রমণের মঞ্চ গড়েছে।
আমার তাঁবুর চারদিকে ওরা আস্তানা গেড়েছে।
13 “ঈশ্বর আমার আত্মীয়দের আমার থেকে দূরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এমনকি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা আমার প্রতি অচেনা লোকের মত ব্যবহার করে।
14 আমার আত্মীয়রা আমায় ছেড়ে চলে গেছে।
বন্ধুরাও আমায় ভুলে গেছে।
15 আমার বাড়ীর দর্শনার্থী এবং দাসীরা এমন ভাবে আমার দিকে তাকায়
যেন আমি আগন্তুক এবং বিদেশী।
16 আমি আমার ভৃত্যকে ডাকি কিন্তু সে সাড়া দেয় না।
এখন আমাকে আমার ভৃত্যের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করতে হবে।
17 আমার স্ত্রী আমার শ্বাসের ঘ্রাণকে ঘৃণা করে।
আমার নিজের ভাইরা আমাকে ঘৃণা করে।
18 এমনকি ছোট ছোট শিশুরা আমায় নিয়ে মজা করে।
আমি যখন ওদের কাছে আসি ওরা আমায় বাজে কথা বলে।
19 আমার সব ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমায় ঘৃণা করে।
এমনকি যাদের আমি ভালোবাসি তারাও আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।
20 “আমি এতই শীর্ণ হয়েছি যে আমার হাড়ে আমার চামড়া ঝুলছে।
খুবই সামান্য জীবন আমাতে অবশিষ্ট আছে।
21 “দয়া কর, বন্ধুরা আমার, আমায় দয়া কর!
কেন? কারণ ঈশ্বর আমার বিরুদ্ধে রয়েছেন।
22 যেমন করে ঈশ্বর আমায় তাড়া করেছেন তোমরাও কেন তেমনি করছো?
তোমরা কি আমায় যথেষ্ট আক্রমণ করনি?
23 “আমার বড় ইচ্ছে করে যে আমার কথাগুলো লেখা থাকবে।
আমার খুব ইচ্ছে করে সেগুলি গোটানো কাগজে লেখা থাকবে।
24 আমার কথাগুলি যেন সীসা ও লৌহশলাকা দিয়ে
পাথরে খোদাই করা থাকে যাতে কথাগুলো চিরদিন থাকে।
25 আমি জানি একজন আমার স্বপক্ষে আছে।
আমি জানি সে বেঁচে আছে।
এবং শেষ কালে সে এই মাটিতে দাঁড়াবে এবং আমায় প্রতিরক্ষা করবে।
26 আমি আমার দেহ ত্যাগ করে চলে যাবার পরে
এবং আমার দেহের চামড়া নষ্ট হওয়ার পরেও আমি ঈশ্বরকে দেখবো, আমি তা জানি।
27 আমি নিজের চোখে ঈশ্বরকে দেখবো।
অন্য কেউ নয়, আমি নিজে ঈশ্বরকে দেখবো, এবং তা আমাকে কতখানি অভিভূত করবে তা আমি বলতে পারবো না!
আমার শক্তি সম্পূর্ণভাবে চলে গেছে।
28 “তোমরা হয়তো বলবে, ‘আমরা এ বিষয়ে চিন্তা করবো
এবং আমরা তাকে দোষ দেওয়ার কারণ খুঁজে বার করবো!’
29 কিন্তু একটি তরবারীকে তোমাদের প্রত্যেকেরই নিজের থেকে ভয় পাওয়া উচিৎ!
কেন? কারণ তরবারিই তোমাদের ক্রোধের প্রাপ্য।
তখন তোমরা বুঝবে, বিচারের সময় বলে কিছু আছে।”
খ্রীষ্টীয়ানদের মধ্যে বিচারের সমস্যা
6 তোমাদের মধ্যে কারো যদি অপরের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকে তবে সে কোন্ সাহসে ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের কাছে না গিয়ে আদালতে বিচারকদের অর্থাৎ অধার্মিকদের কাছে যায়? 2 তোমরা নিশ্চয় জান যে ঈশ্বরের লোকরা জগতের বিচার করবে। তোমাদের দ্বারাই যখন জগতের বিচার হবে, তখন তোমরা কি এই সামান্য বিষয়ের বিচার করার অযোগ্য? 3 তোমরা কি জান না যে আমরা স্বর্গদূতদেরও বিচার করব? তাই যদি হয় তবে তো এই জীবনের বিষয়গুলি সম্পর্কেও আমরা নিশ্চিতভাবে বিচার করতে পারি। 4 তাই তোমাদের নিজেদের মধ্যে যদি কোন নালিশ থাকে, তবে যারা মণ্ডলীর লোক নয় তাদেরই কি তোমরা বিচার করার জন্য ঠিক করবে? 5 তোমাদের লজ্জা দেবার জন্য আমি এই কথা বলছি: এটা খুব খারাপ, তোমাদের মধ্যে সত্যিই কি এমন কোন জ্ঞানী লোক নেই যে ভাইদের মধ্যে বিবাদ বাধলে তার মীমাংসা করে দিতে পাবে? 6 কিন্তু এক ভাই অন্য ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছে, তাও আবার অবিশ্বাসীদের সামনে!
7 তোমরা যে একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করছ এতে প্রমাণ হচ্ছে যে তোমরা পরাস্ত হয়েছ। তার চেয়ে ভাল হয় যদি তুমি কাউকে তোমার বিরুদ্ধে অন্যায় করতে দাও। ভাল হয় কাউকে যদি তোমায় প্রতারণা করতে দাও। 8 কিন্তু তোমরা নিজেরাই অন্যায় করছ, তোমরাই বঞ্চনা করছ! আর তা তোমাদের বিশ্বাসী খ্রীষ্টীয়ান ভাইদের প্রতিই করছ!
9-10 তোমরা নিশ্চয় জানো যে ঈশ্বরের রাজ্যে অধার্মিক লোকদের কোন স্থান নেই? নিজেদের ঠকিও না! যারা ব্যভিচারী, অনৈতিক যৌনচারী, যারা প্রতিমার পূজা করে, যারা পুংশ্চলী ও পুংসমকামী, ঈশ্বরের রাজ্যে এদের কোন অধিকার নেই। সেই রকম যারা চোর, লোভী, মাতাল, যারা পরনিন্দা করে ও যারা প্রতারক তারা ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হবে না। 11 তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এই ধরণের লোক ছিলে, কিন্তু তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে ও ঈশ্বরের আত্মায় নিজেদের ধৌত করেছ, পবিত্র হয়েছ, তোমরা ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছ।
নিজের দেহ ঈশ্বরের গৌরবের জন্য ব্যবহার কর
12 “সব কিছু করার অধিকার আমার আছে,” কিন্তু সব কিছু করা যে হিতকর তা নয়। হ্যাঁ, “সব কিছু করার অধিকার আমার আছে,” কিন্তু আমি কোন কিছুর দাস হব না। 13 খাবার তো পেটের জন্য, আর পেট তো খাবারের জন্য, কিন্তু ঈশ্বর এদের উভয়েরই লোপ করবেন। আমাদের দেহ যৌন পাপ কার্যের জন্য নয়, প্রভুরই জন্য আর প্রভুও এই দেহের জন্য। 14 ঈশ্বর আপন পরাক্রমের দ্বারা প্রভু যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে উত্থিত করেছেন, তিনি আমাদেরও ওঠাবেন। 15 তোমরা কি জান না যে তোমাদের দেহ খ্রীষ্টের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ স্বরূপ? তাহলে কি তোমরা খ্রীষ্টের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে বেশ্যার দেহের সঙ্গে যুক্ত করবে? 16 না, কখনই না। তোমরা কি জান না, যে বেশ্যার সঙ্গে যুক্ত হয় সে তার সঙ্গে এক দেহ হয়? কারণ শাস্ত্র বলছে, “তারা দুজন এক দেহ হবে।”(A) 17 কিন্তু যে প্রভুর সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে, সে তাঁর সঙ্গে আত্মায় এক হয়।
18 যৌন পাপ থেকে দূরে থাক। যে ব্যক্তি পাপকার্য্য করে তা তার দেহের বাইরে করে, কিন্তু যে যৌন পাপ করে সে তার দেহের বিরুদ্ধেই পাপ করে। 19 তোমরা কি জান না, তোমাদের দেহ পবিত্র আত্মার মন্দির, তিনি তোমাদের মধ্যে বাস করেন, যাকে তোমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে পেয়েছ? তোমরা তো আর নিজেদের নও। 20 কারণ তোমাদের মূল্য দিয়ে কেনা হয়েছে; তাই তোমাদের দেহের দ্বারা ঈশ্বরের গৌরব কর।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International