M’Cheyne Bible Reading Plan
মনঃশি ও ইফ্রয়িমের জন্য আশীর্বাদ
48 কিছু সময় পরে যোষেফ জানতে পারলেন যে তাঁর পিতা খুব অসুস্থ। তাই যোষেফ তাঁর দুই পুত্র মনঃশি ও ইফ্রয়িমকে নিয়ে তাঁর পিতার কাছে গেলেন। 2 যোষেফ সেখানে পৌঁছালে ইস্রায়েলকে কেউ খবর দিলেন, “আপনার পুত্র যোষেফ আপনাকে দেখতে এসেছেন।” ইস্রায়েল খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তিনি খুব চেষ্টা করে কোন মতে বিছানায় উঠে বসলেন।
3 তখন ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “কনান দেশের লূস নামক জায়গায় সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন। সেখানে ঈশ্বর আমায় আশীর্বাদ করেছিলেন। 4 ঈশ্বর আমায় বলেছিলেন, ‘আমি তোমাকে বহু বংশ করব। তোমার অনেক সন্তান-সন্ততি হবে এবং তারা মহান হবে। এই দেশ তোমার বংশধররা চিরকালের জন্য তাদের অধিকারে রাখবে।’ 5 আর এখন তোমার দুই পুত্র, আমার আসার আগেই মিশর দেশে এদের জন্ম হয়েছিল। তোমার দুই পুত্র মনঃশি ও ইফ্রয়িম আমার কাছে নিজের পুত্রের মতই হোক্। তারা আমার কাছে রূবেণ ও শিমিয়োনের মত হোক্। 6 সুতরাং ঐ দুই জন পুত্র আমারই হোক্। তারা আমার সব কিছুর অংশীদার হবে। কিন্তু এছাড়া তোমার যদি আর অন্য পুত্র থাকে তবে তা তোমারই হোক্। আর তারা ইফ্রয়িম ও মনঃশির কাছে সন্তানের মতই হোক্ অর্থাৎ ভবিষ্যতে তারা ইফ্রয়িম ও মনঃশির অধিকারভুক্ত সব কিছুরই অংশীদার হবে। 7 পদ্দম্-অরাম থেকে আসার সময় রাহেল মারা গেলেন। এই ঘটনায় আমি অত্যন্ত দুঃখ পেলাম। আমরা যখন ইফ্রাথের দিকে যাচ্ছিলাম তখন কনান দেশে তিনি মারা গেলেন। আমি তাকে সেখানে ইফ্রাথ যাবার পথের ধারে কবর দিলাম।” (ইফ্রাথ বৈৎলেহেমের অপর নাম।)
8 তখন ইস্রায়েল যোষেফের পুত্রদের দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই বালকরা কারা?”
9 যোষেফ তাঁর পিতাকে বললেন, “এরা আমার পুত্ররা, ঈশ্বরই এদের আমায় দিয়েছেন।”
ইস্রায়েল বললেন, “তোমার ছেলেদের আমার কাছে নিয়ে এস। আমি তাদের আশীর্বাদ করব।”
10 ইস্রায়েল বৃদ্ধ হয়েছিলেন এবং চোখেও ভালো দেখতে পেতেন না। তাই যোষেফ দুই পুত্রকে পিতার খুব কাছে নিয়ে এলেন। ইস্রায়েল তাদের গলা জড়িয়ে চুমু খেলেন। 11 তারপর ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “আমি ভাবতেই পারি নি যে কখনও তোমার মুখ দেখতে পাব। কিন্তু দেখ ঈশ্বর আমাকে, তোমায় এমনকি তোমার পুত্রদেরও দেখতে দিলেন।”
12 তারপর যোষেফ ইস্রায়েলের কোল থেকে তাঁর পুত্রদের নিলেন এবং তারা ইস্রায়েলের সামনে মাথা নত করল। 13 যোষেফ ইফ্রয়িমকে তাঁর ডানদিকে এবং মনঃশিকে তার বাঁ দিকে রাখলেন। (সুতরাং ইফ্রয়িম ইস্রায়েলের বাম দিকে ও মনঃশি তার ডান দিকে রইল।) 14 কিন্তু ইস্রায়েল তাঁর হাত আড়াআড়ি ভাবে রেখে তাঁর ডান হাত ছোট পুত্র ইফ্রয়িমের মাথায় রাখলেন। ইস্রায়েল তাঁর বাম হাত বড় পুত্র মনঃশির মাথায় রাখলেন। মনঃশি প্রথমজাত হলেও তিনি বাম হাত তার উপরে রাখলেন। 15 ইস্রায়েল যোষেফকে আশীর্বাদ করে বললেন,
“আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইস্হাক আমাদের ঈশ্বরের উপাসনা করতেন।
আর সেই ঈশ্বরই সারা জীবন আমায় বহন করেছেন।
16 তিনিই সেই দেবদূত যিনি আমায় সব সমস্যা থেকে রক্ষা করেছেন।
আমার প্রার্থনা, তিনিই এই পুত্রদের আশীর্বাদ করবেন।
এখন এই পুত্ররা আমার এবং আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইস্হাকের নামে আখ্যাত হোক্।
আমার প্রার্থনা তারা যেন পৃথিবীতে বৃদ্ধি পযে বহু বংশ ও বহু জাতি হয়।”
17 যোষেফ যখন দেখলেন তাঁর পিতা ডান হাত ইফ্রয়িমের মাথায় রেখেছেন, তখন তিনি খুশী হলেন না। যোষেফ পিতার হাত ইফ্রয়িমের মাথা থেকে তুলে ধরে মনঃশির মাথায় রাখতে চাইলেন। 18 যোষেফ তাঁর পিতাকে বললেন, “আপনি আপনার ডান হাত ভুল জনের মাথার উপর রেখেছেন। মনঃশিই প্রথমজাত। তার উপরেই ডান হাত রাখুন।”
19 কিন্তু তাঁর পিতা তর্ক করে বললেন, “আমি জানি বৎস, আমি জানি। মনঃশি প্রথমজাত, সে মহান হবে, বহুলোকের পিতা হবে কিন্তু ছোট জন বড় জনের চেয়েও মহান হবে আর তার বংশ আরও অনেক হবে।”
20 তাই ইস্রায়েল সেই দিন এই বলে আশীর্বাদ করলেন,
“ইস্রায়েল কাউকে আশীর্বাদ করতে
তোমাদেরই নাম ব্যবহার করবে।
তারা বলবে, ‘ঈশ্বর তোমাকে যেন
মনঃশি ও ইফ্রয়িমের মতো করেন।’”
এইভাবে ইস্রায়েল মনঃশির চাইতে ইফ্রয়িমকে বড় করলেন।
21 তারপর ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “দেখ আমার মৃত্যুর সময় কাছে এসে গেছে। কিন্তু ঈশ্বর তোমার সঙ্গে থাকবেন। তিনিই তোমাকে আবার তোমার পূর্বপুরুষদের দেশে নিয়ে যাবেন। 22 আমি তোমাকে যা দিলাম তা তোমার ভাইদের দিই নি। ইমোরীয়দের হাত থেকে যে পাহাড় আমি জয় করে নিয়েছিলাম তা তোমায় দিচ্ছি। আমি সেই পাহাড় জয় করতে আমার তরবারি ও ধনুক ব্যবহার করেছিলাম এবং আমি জয়ী হয়েছিলাম।”
সখরিয় ও ইলীশাবেতের সঙ্গে মরিয়মের সাক্ষাৎ
39 তখন মরিয়ম উঠে তাড়াতাড়ি করে যিহূদার পার্বত্য অঞ্চলের একটি নগরে গেলেন। 40 সেখানে সখরিয়র বাড়িতে গিয়ে ইলীশাবেতকে অভিবাদন জানালেন। 41 ইলীশাবেৎ যখন মরিয়মের সেই অভিবাদন শুনলেন, তখনই তাঁর গর্ভের সন্তানটি আনন্দে নেচে উঠল; আর ইলীশাবেৎ পবিত্র আত্মাতে পূর্ণ হলেন।
42 এরপর তিনি খুব জোরে জোরে বলতে লাগলেন, “সমস্ত স্ত্রীলোকের মধ্যে তুমি ধন্যা, আর তোমার গর্ভে যে সন্তান আছেন তিনি ধন্য। 43 কিন্তু আমার প্রভুর মা যে আমার কাছে এসেছেন, এমন সৌভাগ্য আমার কি করে হল? 44 কারণ যে মুহূর্তে তোমার কন্ঠস্বর আমি শুনলাম, আমার গর্ভের শিশুটি তখনই নড়ে উঠল। 45 আর তুমি ধন্যা, কারণ তুমি বিশ্বাস করেছ যে প্রভু তোমায় যা বলেছেন তা পূর্ণ হবে।”
মরিয়ম ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন
46 তখন মরিয়ম বললেন,
47 “আমার আত্মা প্রভুর প্রশংসা করছে,
আর আমার আত্মা আমার ত্রাণকর্তা ঈশ্বরকে পেয়ে আনন্দিত।
48 কারণ তাঁর এই তুচ্ছ দাসীর দিকে
তিনি মুখ তুলে চেয়েছেন।
হ্যাঁ, এখন থেকে সকলেই
আমাকে ধন্যা বলবে।
49 কারণ সেই একমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার জীবনে কত না মহত্ কাজ করেছেন।
পবিত্র তাঁর নাম।
50 আর যাঁরা বংশানুক্রমে তাঁর উপাসনা করে
তিনি তাদের দয়া করেন।
51 তাঁর বাহুর যে পরাক্রম, তা তিনি দেখিয়েছেন।
যাদের মন অহঙ্কার ও দম্ভপূর্ণ চিন্তায় ভরা, তাদের তিনি ছিন্নভিন্ন করে দেন।
52 তিনিই শাসকদের সিংহাসনচ্যুত করেন,
যারা নতনম্র তাদের উন্নত করেন।
53 ক্ষুধার্তকে তিনি উত্তম দ্রব্য দিয়ে তৃপ্ত করেন;
আর বিত্তবানকে নিঃস্ব করে বিদায় করেন।
54 তিনি তাঁর দাস ইস্রায়েলকে সাহায্য করতে এসেছেন।
55 যেমন তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি তেমনই করবেন।
অব্রাহাম ও তাঁর বংশের লোকদের চিরকাল দয়া করার কথা তিনি মনে রেখেছেন।”
56 ইলীশাবেতের ঘরে মরিয়ম প্রায় তিন মাস থাকলেন। পরে তিনি তাঁর নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন।
যোহনের জন্ম
57 ইলীশাবেতের প্রসবের সময় হলে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলেন। 58 তাঁর প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরা যখন শুনল যে প্রভু তাঁর প্রতি কি মহা দয়া করেছেন, তখন তারা তাঁর আনন্দে আনন্দিত হল।
59 শিশুটি যখন আট দিনের, সেই সময় তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে সুন্নত করাতে এলেন। সবাই শিশুটির বাবার নাম অনুসারে শিশুর নাম সখরিয় রাখার কথা চিন্তা করছিলেন। 60 কিন্তু তার মা বলে উঠলেন, “না! ওর নাম হবে যোহন।”
61 তখন তাঁরা ইলীশাবেতকে বললেন, “আপনার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে তো কারও ঐ নাম নেই!” 62 এরপর তারা ইশারা করে ছেলেটির বাবার কাছে জানতে চাইলেন তিনি কি নাম দিতে চান।
63 সখরিয় ইশারা করে লেখার ফলক চেয়ে নিলেন ও তাতে লিখলেন, “ওর নাম যোহন।” এতে তাঁরা সকলে আশ্চর্য হয়ে গেলেন, 64 তখনই সখরিয়র জিভের জড়তা চলে গেল ও মুখ খুলে গেল, আর তিনি ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন। 65 আশপাশের সকলে এতে খুব ভয় পেয়ে গেল, যিহূদিয়ার পার্বত্য অঞ্চলের লোকরা সকলে এবিষয়ে বলাবলি করতে লাগল। 66 যারা এসব কথা শুনল তারা সকলেই আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল, “ভবিষ্যতে এই ছেলেটি কি হবে? কারণ প্রভুর শক্তি এর সঙ্গে আছে।”
সখরিয় ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন
67 পরে ছেলেটির বাবা সখরিয় পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ভাববাণী বলতে লাগলেন:
68 “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা হোক্,
কারণ তিনি তাঁর নিজের লোকদের সাহায্য করতে
ও তাদের মুক্ত করতে এসেছেন।
69 আমাদের জন্য তিনি তাঁর দাস দায়ূদের বংশে
একজন মহাশক্তিসম্পন্ন ত্রাণকর্তাকে দিয়েছেন।
70 এ বিষয়ে তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের[a] মাধ্যমে
তিনি বহুপূর্বেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
71 শত্রুদের হাত থেকে ও যারা আমাদের ঘৃণা করে
তাদের কবল থেকে উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি।
72 তিনি বলেছিলেন, আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি দয়া করবেন
এবং তিনি সেই প্রতিশ্রুতি স্মরণে রেখেছেন।
73 এ সেই প্রতিশ্রুতি যা তিনি আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহামের কাছে করেছিলেন।
74 শত্রুদের হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি
যেন আমরা নির্ভয়ে তাঁর সেবা করতে পারি:
75 আর আমাদের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর দৃষ্টিতে পবিত্র ও ধার্মিক থেকে তাঁর সেবা করে যেতে পারি।
76 “এখন হে বালক, তোমাকে বলা হবে পরমেশ্বরের ভাববাদী;
কারণ তুমি প্রভুর পথ প্রস্তুত করবার জন্য তাঁর আগে আগে চলবে।
77 তুমি তাঁর লোকদের বলবে, ঈশ্বরের দয়ায়
তোমরা পাপের ক্ষমা দ্বারা উদ্ধার পাবে।
78 “কারণ আমাদের ঈশ্বরের দয়া ও করুণার উর্দ্ধ থেকে
এক নতুন দিনের ভোরের আলো আমাদের ওপর ঝরে পড়বে।
79 যারা অন্ধকার ও মৃত্যুর ছায়ায় বসে আছে তাদের ওপর সেই আলো এসে পড়বে;
আর তা আমাদের শান্তির পথে পরিচালিত করবে।”
80 সেই শিশু যোহন বড় হয়ে উঠতে লাগলেন, আর দিন দিন আত্মায় শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকলেন। ইস্রায়েলীয়দের কাছে প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসার আগে পর্যন্ত তিনি নির্জন স্থানগুলিতে জীবনযাপন করছিলেন।
14 ইয়োব বললেন, “আমরা প্রত্যেকেই মানুষ।
আমাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং সমস্যায় পূর্ণ।
2 মানুষের জীবন ফুলের মত।
সে তাড়াতাড়ি বড় হয় এবং তারপর মারা যায়।
মানুষের জীবন একটা ছায়ার মত যা অল্পক্ষণের জন্য এখানে থাকে এবং তারপর আবার চলে যায়।
3 কিন্তু যদিও আমি নেহাতই একটি মানুষ মাত্র,
আপনি আমার ওপর মনোযোগ দেন এবং আমাকে আদালতে নিয়ে যান।
4 “কিন্তু অশুচি কিছু থেকে কেই বা শুচি কিছু তৈরী করতে পারে? কেউই নয়!
5 মানুষের জীবন সীমিত। ঈশ্বর, আপনিই স্থির করেছেন মানুষ কতদিন বাঁচবে।
আপনিই মানুষের জন্য সেই সীমা নির্ধারণ করেন
এবং কোন কিছুই আর তাকে পরিবর্তন করতে পারে না।
6 তাই ঈশ্বর, আমাদের প্রতি লক্ষ্য রাখা বন্ধ করুন, আমাদের একা ছেড়ে দিন।
আমাদের সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত আমাদের কঠিন জীবন আমাদের উপভোগ করতে দিন।
7 “এমনকি একটা গাছেরও আশা আছে।
যদি না তাকে কেটে ফেলা হয় তা আবার বড় হতে পারে।
তা আবার নতুন অঙ্কুর ছড়িয়ে দিতে পারে।
8 এর শিকড় মাটির নীচে বুড়ো হয়ে যেতে পারে,
এর কাণ্ড ধূলায় মরে যেতে পারে,
9 কিন্তু যদি সামান্য একটুও জল পায় আবার তা বাড়তে শুরু করে।
নতুন গাছের মতই তা আবার বড় হতে থাকে।
10 কিন্তু যখন একজন শক্তসমর্থ মানুষ মরে, সে শেষ হয়ে যায়।
যখন মানুষ মরে যায়, সে চলে যায় ঠিক
11 দীঘি যেমন শুকিয়ে যায়
অথবা নদী যেমন শুকিয়ে যায়, তার মতন।
12 যখন একজন মানুষ মরে যায়,
সে শুয়ে পড়ে এবং সে আর ওঠে না।
একজন মৃত লোক উঠে দাঁড়াবার আগে
এই আকাশমণ্ডল অদৃশ্য হয়ে যাবে। না।
সেই নিদ্রা থেকে মানুষ আর জাগবে না।
13 “আমার ইচ্ছা আপনি আমাকে আমার কবরে লুকিয়ে রাখুন।
আমার ইচ্ছা, আপনার ক্রোধ প্রশমিত না হওয়া পর্যন্ত আপনি আমায় সেই খানে লুকিয়ে রাখুন।
তারপর না হয় আমাকে স্মরণ করার জন্য আপনি একটা সময় বার করবেন।
14 যদি কোন লোক মারা যায়, সে কি আবার বাঁচবে?
যদি তাই সম্ভব হয় আমি আমার মুক্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।
15 ঈশ্বর, আপনি আমায় ডাকবেন
এবং আমি আপনার ডাকে সাড়া দেবো।
তাহলে আমি, যাকে আপনি তৈরী করেছেন,
সেই আমি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠব।
16 আমার প্রত্যেকটি পদক্ষেপে আপনি আমায় লক্ষ্য করুন,
কিন্তু আমার পাপ মনে রাখবেন না।
17 আমার সমস্ত পাপ আপনি একটা থলেতে ভরে,
তার মুখ বন্ধ করে, তাকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন।
18 “পর্বতও ভেঙে যায় এবং ধূলায় পরিণত হয়; বড় পাথরও আলগা হয়ে ভেঙে পড়ে।
19 তাদের ওপর দিয়ে জলরাশি প্রবাহিত হয়ে তাদের ধুয়ে নিয়ে যায়।
বন্যা ভূমির মাটিকে ধুয়ে নিয়ে যায়।
সেই ভাবেই হে ঈশ্বর, আপনি একজন মানুষের আশা এবং ইচ্ছা ধ্বংস করেন।
20 আপনি তাকে সম্পূর্ণ পরাজিত করেন
এবং সে চলে যায়।
আপনি তাকে দুঃখী করেন
এবং চিরদিনের জন্য তাকে মৃত্যুলোকে পাঠিয়ে দেন।
21 তার ছেলেরা হয়ত সম্মান পেতে পারে, অথবা তারা হয়ত গুরুত্বপূর্ণ না হতে পারে,
কিন্তু সে কখনও জানতে পারবে না।
22 সেই লোকটি তার শরীরে কেবল যন্ত্রণা ভোগ করে
এবং সে উচ্চস্বরে কেবল নিজের জন্যই কাঁদে।”
ক্রুশের ওপর খ্রীষ্ট বিষয়ে বার্তা
2 আমার ভাই ও বোনেরা, যখন আমি তোমাদের কাছে গিয়ে ঈশ্বরের সত্য প্রচার করেছিলাম, তখন আমি তা অলঙ্কারযুক্ত ও বুদ্ধিদীপ্ত ভাষায় প্রচার করি নি। 2 কারণ আমি স্থির করেছিলাম যে কেবল যীশু খ্রীষ্ট এবং ক্রুশের ওপর তাঁর মৃত্যুর কথাই তোমাদের জানাবো। 3 আমি তোমাদের কাছে দুর্বলের মতো হয়ে কাঁপতে কাঁপতে গিয়েছিলাম। 4 তাই আমার শিক্ষা ও আমার প্রচার প্ররোচনামূলক জ্ঞানের কথায় ভরা ছিল না, বরং আমার শিক্ষাগুলিতে আত্মার শক্তির প্রমাণ ছিল, 5 যাতে তোমাদের বিশ্বাস যেন মানুষের জ্ঞানের ওপর নির্ভর না করে ঈশ্বরের শক্তির উপর নির্ভর করে।
ঈশ্বরের জ্ঞান
6 কিন্তু তবু আমরা পরিপক্কদের কাছে জ্ঞানের কথা বলি, সেই জ্ঞান পার্থিব জ্ঞানের মতো নয়, তা এই যুগের শাসকদের জ্ঞানের মতো নয়, সেই শাসকরা তো শক্তিহীন হয়ে পড়েছে। 7 কিন্তু আমরা নিগূঢ়তত্ত্বে ঈশ্বরের জ্ঞানের কথা বলি। সেই জ্ঞান গুপ্ত ছিল এবং ঈশ্বর আমাদের মহিমান্বিত করবেন বলে এবিষয় সৃষ্টির পূর্বেই স্থির করে রেখেছিলেন। 8 এই যুগের শাসকদের মধ্যে কেউ তা বোঝেনি, যদি বুঝত তবে তারা কখনও মহিমাপূর্ণ প্রভুকে ক্রুশে বিদ্ধ করত না। 9 কিন্তু শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে:
“ঈশ্বরকে যারা ভালবাসে,
তাদের জন্য তিনি যা প্রস্তুত করেছেন,
কোন মানুষ তা কখনও চোখে দেখেনি,
কানে শোনেনি, এমন কি কল্পনাও করেনি।”(A)
10 কিন্তু আমাদের কাছে ঈশ্বর তাঁর আত্মার দ্বারা তা প্রকাশ করেছেন।
কারণ আত্মা সব কিছুর অনুসন্ধান করেন, এমন কি ঈশ্বরের নিগূঢ় তত্ত্বের অনুসন্ধান করেন। 11 বিষয়টি এই রকম: কোন মানুষ অপরে কি চিন্তা করছে তা জানে না। কেবল সেই ব্যক্তির আত্মা, যে তার অন্তরে থাকে সেই জানে। তেমনি ঈশ্বর কি চিন্তা করেন তা কেউ জানে না, কেবল ঈশ্বরের আত্মা জানেন। 12 আমরা জগতের আত্মাকে গ্রহণ করি নি কিন্তু ঈশ্বরের কাছ থেকে যে আত্মা এসেছেন তাঁকেই আমরা পেয়েছি, যেন ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আমাদের যা যা দান করেছেন তা জানতে পারি।
13 সেই সব বিষয়ে বলতে গিয়ে আমরা মানবিক জ্ঞানের শিক্ষানুরূপ কথায় নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মার শিক্ষানুসারে বলেছি, আত্মিক বিষয় বোঝাতে আত্মিক কথাই ব্যবহার করছি। 14 যার মধ্যে ঈশ্বরের আত্মা নেই সে আত্মা থেকে যে বিষয়গুলি আসে তা গ্রহণ করতে পারে না, কারণ তার কাছে সে সব মূর্খতা। যে ব্যক্তির মধ্যে পবিত্র আত্মা নেই সে আত্মিক কথা বুঝতে পারে না, কারণ সেই বিষয়গুলি কেবল, আত্মিকভাবেই বিচার করা যায়। 15 কিন্তু আত্মিক ব্যক্তি সকল বিষয়ে বিচার করতে পারে। অন্য কেউ তার সম্বন্ধে বিচার করতে পারে না। কারণ শাস্ত্র বলছে:
16 “কে প্রভুর মন জেনেছে,
যে তাঁকে নির্দেশ দিতে পারে?”(B)
কিন্তু খ্রীষ্টের মন আমাদের আছে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International