Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
আদি 47

ইস্রায়েল গোশনে বাস করতে লাগলেন

47 যোষেফ ফরৌণের কাছে গিয়ে বললেন, “আমার পিতা, আমার ভাইরা এবং তাঁদের পরিবারের সবাই এখানে এসেছেন। তাঁরা তাঁদের পশু ও সর্বস্ব নিয়ে কনান দেশ থেকে চলে এসেছেন। তাঁরা এখন গোশন প্রদেশে রয়েছেন।” ফরৌণের সামনে যাবার জন্য ভাইদের মধ্যে পাঁচজনকে মনোনীত করলেন।

ফরৌণ ভাইদের জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা কি কাজ কর?”

ভাইরা ফরৌণকে বলল, “মহাশয় আমরা মেষপালক। আর আমাদের আগে আমাদের পূর্বপুরুষরাও মেষপালক ছিলেন।”

তারা ফরৌণকে বলল, “কনান দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছে। তাই পশুদের খাবার ঘাসের অভাব হয়েছে। তাই আমরা এই দেশে বাস করব বলে এখানে এসেছি। দয়া করে আমাদের গোশন প্রদেশে থাকতে দিন।”

তখন ফরৌণ যোষেফকে বললেন, “তোমার পিতা ও তোমার ভাইরা তোমার কাছে এসেছেন। তাদের থাকবার জন্য তুমি মিশরে যে কোন জায়গা বেছে নিতে পারো। তোমার পিতা এবং তোমার ভাইদের সব চাইতে ভাল জমিটা দিও। তাদের গোশন প্রদেশে বাস করতে দাও। আর তারা যদি দক্ষ মেষপালক হয় তবে তারা আমার পশুপালেরও যত্ন নিতে পারে।”

তখন যোষেফ তাঁর পিতাকে ফরৌণের সঙ্গে দেখা করবার জন্য ডেকে আনলেন। যাকোব ফরৌণকে আশীর্বাদ করলেন। ফরৌণ তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার বয়স কত?”

যাকোব ফরৌণকে বললেন, “আমার আয়ুর এই অল্প বয়সে আমাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমি কেবল 130 বছর বয়স্ক। আমার পিতা এবং আমার পূর্বপুরুষরা আমার চাইতেও বেশী বয়স বেঁচেছিলেন।” 10 যাকোব ফরৌণকে আশীর্বাদ করলেন এবং তাঁর সামনে থেকে বিদায় নিলেন।

11 ফরৌণের কথামত যোষেফ তাঁর পিতা ও ভাইদের মিশরে জমিজমা দিলেন। রামিষেষ শহরের কাছে স্থিত সেই জমি মিশরের সব জমির চেয়ে সেরা ছিল। 12 আর যোষেফ তাঁর পিতা, তাঁর ভাইদের এবং তাঁর সমস্ত পরিজনদের তাঁদের প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করলেন।

যোষেফ ফরৌণের জন্য জমি কিনলেন

13 দুর্ভিক্ষ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠল, ফলে দেশে কোথাও কোন খাদ্য রইল না। এই দারুণ দুর্ভিক্ষের জন্যে মিশর এবং কনান দেশ দরিদ্র হয়ে পড়ল। 14 দেশের লোকরা আরও শস্য কিনতে থাকল আর যোষেফ সেই অর্থ জমিয়ে ফরৌণের কাছে নিয়ে আসতেন। 15 কিছু পরে মিশরীয় এবং কনানীয়দের সব অর্থ শেষ হয়ে গেল। কারণ তারা সমস্ত অর্থই শস্য কিনতে ব্যয করেছিল। তাই মিশরীয়রা যোষেফের কাছে গিয়ে বলল, “আমাদের খাদ্য দিন। আমাদের অর্থ শেষ হয়ে গেছে। আমরা খেতে না পেলে আপনার চোখের সামনে মারা যাব।”

16 কিন্তু যোষেফ উত্তর দিলেন, “তোমাদের গো-পাল দাও, আমি তোমাদের খাবার দেব।” 17 এইভাবে খাদ্য কেনার জন্য লোকরা তাদের গো-পাল, ঘোড়া এবং অন্যান্য পশুর ব্যবহার করলেন। সেই বছরে যোষেফ পশুর বদলে তাদের খাদ্য দিলেন। 18 কিন্তু পরের বছরে লোকদের খাবার কেনার জন্য পশু এবং অন্য কিছু ছিল না। তাই লোকরা যোষেফের কাছে গিয়ে বলল, “আপনি জানেন আমাদের কাছে আর কোন অর্থ নেই। আর আমাদের সব পশুও এখন আপনারই। সুতরাং আপনি যা দেখছেন আমাদের সেই দেহ ও আমাদের জমি ছাড়া আমাদের কাছে আর কিছুই নেই। 19 সত্যিই আমরা আপনার চোখের সামনে মারা যাব। কিন্তু আপনি আমাদের খাদ্য দিলে আমরা ফরৌণকে আমাদের জমি দেব এবং আমরা তাঁর দাস হব। আমাদের বপন করার বীজ দিন। তাহলে আমরা মরব না। আর জমিতে আবার আমাদের জন্য শস্য হবে।”

20 তাই যোষেফ মিশরের সমস্ত জমি ফরৌণের জন্য কিনে নিলেন। লোকরা ক্ষুধার জন্য মিশরের সমস্ত জমি ফরৌণের কাছে বিক্রি করে দিল। 21 আর মিশরের সর্বত্র লোকরা ফরৌণের দাস হল। 22 যোষেফ কেবল যাজকদের জমি কিনলেন না। যাজকদের জমি বিক্রি করারও প্রয়োজন ছিল না। কারণ ফরৌণ তাদের কাজের জন্য পারিশ্রমিক দিতেন আর তারা সেই অর্থ দিয়ে খাদ্য কিনত। 23 যোষেফ লোকদের বললেন, “এখন আমি তোমাদের এবং তোমাদের জমি ফরৌণের জন্য কিনে নিয়েছি। তাই আমি এরপর তোমাদের জমিতে বপন করার বীজ দেব। আর তোমরা তা বপন করতে পার। 24 শস্য ছেদনের সময় তোমরা অবশ্যই উৎপন্ন শস্যের পাঁচ ভাগের এক ভাগ ফরৌণকে দেবে। বাকী পাঁচ ভাগের চার ভাগ শস্য তোমাদের হবে। তোমরা তোমাদের খাদ্যের জন্য সেই রাখা শস্যের বীজ পরের বছর বপন করার জন্য ব্যবহার করতে পারবে। আর তাতে তোমাদের পরিবার ও সন্তানদের জন্যও খাদ্য থাকবে।”

25 লোকরা বলল, “আপনি আমাদের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। আমরা ফরৌণের দাস হয়ে খুশী।”

26 তাই যোষেফ সেই সময় জমির ব্যাপারে আইন তৈরী করলেন। আর সেই আইন আজও বলবৎ রয়েছে। সেই আইন অনুযায়ী জমিতে উৎপন্ন সবকিছুর পাঁচ ভাগের এক ভাগ ফরৌণের। যাজকদের জমি ছাড়া সমস্ত জমি ফরৌণের।

“মিশরে কবর নয়”

27 ইস্রায়েল মিশরের গোশন প্রদেশেই স্থায়ী হলেন। তাঁর পরিবার সংখ্যায় বৃদ্ধি পেল এবং বিশাল হয়ে উঠল। মিশর দেশে তাঁরা কিছু জমি পেলেন এবং সফল হলেন।

28 যাকোব মিশরে 17 বছর বেঁচে ছিলেন সুতরাং তাঁর বয়স হল 147 বছর। 29 সময় হল যখন ইস্রায়েল বুঝলেন যে তিনি শীঘ্রই মারা যাবেন। তাই তিনি তাঁর পুত্র যোষেফকে নিজের কাছে ডাকলেন। তিনি বললেন, “যদি তুমি আমায় ভালবাস তবে আমার উরুর নীচে হাত রাখ এবং প্রতিজ্ঞা কর যে তুমি তোমার কথায় বিশ্বস্ত হবে। আমি মারা গেলে আমায় মিশরে কবর দিও না। 30 যে জায়গায় আমার পূর্বপুরুষদের কবর দেওয়া হয়েছে সেখানেই আমায় কবর দিও। আমাকে মিশর থেকে বয়ে নিয়ে গিয়ে আমাদের পারিবারিক কবরে কবর দিও।”

যোষেফ উত্তর দিলেন, “আমি প্রতিজ্ঞা করছি আপনার কথা মতোই কাজ করব।”

31 তারপর যাকোব বললেন, “আমার কাছে দিব্য কর।” তখন ইস্রায়েল বিছানায় তাঁর মাথা নামিয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করলেন।[a]

লূক 1:1-38

যীশুর জীবন সম্পর্কে লূকের লেখা

মাননীয় থিয়ফিল,

আমাদের মধ্যে যে সব ঘটনা ঘটেছে সেগুলির বিবরণ লিপিবদ্ধ করার জন্য বহু ব্যক্তি চেষ্টা করেছেন। তাঁরা সেই একই বিষয় লিখেছেন, যা আমরা জেনেছি তাঁদের কাছ থেকে, যাঁরা প্রথম থেকে নিজেদের চোখে দেখেছেন এবং এই বার্তা ঘোষণা করেছেন। তাই আমার মনে হল যে যখন আমি সেই সব বিষয় প্রথম থেকে ভালভাবে খোঁজ খবর নিয়েছি তখন তা সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখি। যার ফলে আপনি জানবেন, যে বিষয়গুলি আপনাকে জানানো হয়েছে সেগুলি সত্য।

সখরিয় ও ইলীশাবেৎ

যিহূদিয়ার রাজা হেরোদের সময়ে সখরিয় নামে একজন যাজক ছিলেন। ইনি ছিলেন অবিয়ের দলের[a] যাজকদের একজন। সখরিয়র স্ত্রী ইলীশাবেৎ ছিলেন হারোণের বংশধর। তাঁরা উভয়েই ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধার্মিক ছিলেন। প্রভুর সমস্ত আদেশ ও বিধি-ব্যবস্থা তাঁরা নিখুঁতভাবে পালন করতেন। ইলীশাবেৎ বন্ধ্যা হওয়ার দরুন তাঁদের কোন সন্তান হয় নি। তাঁদের উভয়েরই অনেক বয়স হয়ে গিয়েছিল।

একবার তাঁর দলের যাজকদের ওপর দায়িত্বভার পড়েছিল, তখন সখরিয় যাজক হিসেবে মন্দিরে ঈশ্বরের সেবা করছিলেন। যাজকদের কার্য প্রণালী অনুযায়ী তাঁকে বেছে নেওয়া হয়েছিল যেন তিনি মন্দিরের মধ্যে গিয়ে প্রভুর সামনে ধূপ জ্বালাতে পারেন। 10 ধূপ জ্বালাবার সময় বাইরে অনেক লোক জড় হয়ে প্রার্থনা করছিল।

11 এমন সময় প্রভুর এক স্বর্গদূত সখরিয়র সামনে উপস্থিত হয়ে ধূপবেদীর ডানদিকে দাঁড়ালেন। 12 সখরিয় সেই স্বর্গদূতকে দেখে চমকে উঠলেন এবং খুব ভয় পেলেন। 13 কিন্তু স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “সখরিয় ভয় পেও না, কারণ তুমি যে প্রার্থনা করেছ, ঈশ্বর তা শুনেছেন। তোমার স্ত্রী ইলীশাবেতের একটি পুত্র সন্তান হবে, তুমি তার নাম রাখবে যোহন। 14 সে তোমার জীবনে আনন্দ ও সুখের কারণ হবে, তার জন্মের দরুণ আরো অনেকে আনন্দিত হবে। 15 কারণ প্রভুর দৃষ্টিতে যোহন হবে এক মহান ব্যক্তি। সে অবশ্যই দ্রাক্ষারস বা নেশার পানীয় গ্রহণ করবে না। জন্মের সময় থেকেই যোহন পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হবে।

16 “ইস্রায়েলীয়দের অনেক লোককেই সে তাদের প্রভু ঈশ্বরের পথে ফেরাবে। 17 যোহন এলিয়ের[b] আত্মায় ও শক্তিতে প্রভুর আগে চলবে। সে পিতাদের মন তাদের সন্তানদের দিকে ফেরাবে, আর অধার্মিকদের মনের ভাব বদলে ধার্মিক লোকদের মনের ভাবের মতো করবে। প্রভুর জন্য সে এইভাবে লোকদের প্রস্তুত করবে।”

18 তখন সখরিয় সেই স্বর্গদূতকে বললেন, “আমি কিভাবে জানব যে সত্যিই এসব হবে? কারণ আমি তো বৃদ্ধ হয়ে গেছি, আর আমার স্ত্রীরও অনেক বয়স হয়ে গেছে।”

19 এর উত্তরে স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “আমি গাব্রিয়েল, ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি; আর তোমার সঙ্গে কথা বলার জন্য ও তোমাকে এই সুখবর দেবার জন্যই আমাকে পাঠানো হয়েছে। 20 কিন্তু জেনে রেখো! এইসব ঘটনা ঘটা পর্যন্ত তুমি বোবা হয়ে থাকবে, কথা বলতে পারবে না, কারণ তুমি আমার কথা বিশ্বাস করলে না, কিন্তু আমার এইসব কথা নিরুপিত সময়েই পূর্ণ হবে।”

21 এদিকে বাইরে লোকেরা সখরিয়র জন্য অপেক্ষা করছিল, তিনি এতক্ষণ পর্যন্ত মন্দিরের মধ্যে কি করছেন একথা ভেবে তারা অবাক হচ্ছিল। 22 পরে তিনি যখন বেরিয়ে এলেন, তখন লোকদের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন না, এতে লোকেরা বুঝতে পারল মন্দিরের মধ্যে তিনি নিশ্চয়ই কোন দর্শন পেয়েছেন। তিনি লোকদের ইশারায় তাঁর বক্তব্য বোঝাতে লাগলেন, কিন্তু কোনরকম কথা বলতে পারলেন না। 23 এরপর দৈনিক সেবাকার্য্যের শেষে তিনি তাঁর বাড়ি ফিরে গেলেন।

24 এর কিছুক্ষণ পরে তাঁর স্ত্রী ইলীশাবেৎ গর্ভবতী হলেন; আর পাঁচ মাস পর্যন্ত লোক সাক্ষাতে বার হলেন না। তিনি বলতেন, 25 “এখন প্রভুই এইভাবে আমায় সাহায্য করেছেন! সমাজে আমার যে লজ্জা ছিল, কৃপা করে এখন এইভাবে তিনি তা দূর করে দিলেন।”

কুমারী মরিয়ম

26-27 ইলীশাবেৎ যখন ছমাসের গর্ভবতী, তখন ঈশ্বর গাব্রিয়েল, স্বর্গদূতকে গালীলে নাসরৎ নগরে এক কুমারীর কাছে পাঠালেন। এই কুমারী ছিলেন যোষেফ নামে এক ব্যক্তির বাগদত্তা। যোষেফ ছিলেন রাজা দায়ূদের বংশধর, আর যে কুমারীর কাছে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল তাঁর নাম মরিয়ম। 28 গাব্রিয়েল মরিয়মের কাছে এসে বললেন, “তোমার মঙ্গল হোক্! প্রভু তোমার প্রতি মুখ তুলে চেয়েছেন, তিনি তোমার সঙ্গে আছেন।”

29 এই কথা শুনে মরিয়ম খুবই বিচলিত ও অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন, “এ কেমন শুভেচ্ছা?”

30 স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “মরিয়ম তুমি ভয় পেও না, কারণ ঈশ্বর তোমার ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। 31 শোন! তুমি গর্ভবতী হবে আর তোমার এক পুত্র সন্তান হবে। তুমি তাঁর নাম রাখবে যীশু। 32 তিনি হবেন মহান, তাঁকে পরমেশ্বরের পুত্র বলা হবে, আর প্রভু ঈশ্বর তাঁর পিতৃপুরুষ রাজা দায়ূদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন। 33 তিনি যাকোবের বংশের লোকদের ওপরে চিরকাল রাজত্ব করবেন, তাঁর রাজত্বের কখনও শেষ হবে না।”

34 তখন মরিয়ম স্বর্গদূতকে বললেন, “কেমন করে সম্ভব? কারণ আমি তো কুমারী!”

35 এর উত্তরে স্বর্গদূত বললেন, “পবিত্র আত্মা[c] তোমার ওপর অধিষ্ঠান করবেন আর পরমেশ্বরের শক্তি তোমাকে আবৃত করবে; তাই যে পবিত্র শিশুটি জন্মগ্রহণ করবে তাঁকে ঈশ্বরের পুত্র বলা হবে। 36 আর শোন, তোমার আত্মীয়া ইলীশাবেৎ যদিও এখন অনেক বৃদ্ধা তবু সে গর্ভে পুত্রসন্তান ধারণ করছে। এই স্ত্রীলোকের বিষয়ে লোকে বলত যে তার কোন সন্তান হবে না, কিন্তু সে এখন ছমাসের গর্ভবতী। 37 কারণ ঈশ্বরের পক্ষে কোন কিছুই অসাধ্য নয়!”

38 মরিয়ম বললেন, “আমি প্রভুর দাসী। আপনি যা বলেছেন আমার জীবনে তাই হোক্!” এরপর স্বর্গদূত মরিয়মের কাছ থেকে চলে গেলেন।

ইয়োব 13

13 ইয়োব বললেন, “আগেও আমি এসব দেখেছি।
    তুমি যা বলছো, আমি তার সবই আগে শুনেছি।
    আমি ঐ সব কিছুই বুঝেছি।
তুমি যা জানো আমিও তাই জানি।
    আমিও তোমার মতই জানি।
কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে তর্ক করতে চাই না।
    আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলতে চাই।
    আমি আমার সমস্যার বিষয়ে ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করতে চাই।
কিন্তু তোমরা তিন জন মিথ্যা দিয়ে তোমাদের অজ্ঞতাকে ঢাকতে চাইছো।
    তোমরা সেই অপদার্থ ডাক্তারের মত যারা কারো রোগই সারাতে পারে না।
তোমরা যদি একটু চুপ করে থাকতে পারতে!
    সেটাই হত বিজ্ঞের মতো কাজ যা তোমরা করতে পারতে।

“এখন আমার যুক্তিগুলো শোন।
    আমার যা বলার আছে তা শোন।
তোমরা কি ঈশ্বরের জন্য মিথ্যা কথা বলবে?
    তোমরা কি ঈশ্বরের জন্য কপটভাবে কথা বলবে?
তোমরা কি ঈশ্বরের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাবে?
    তোমরা কি তাঁর পক্ষ নিয়ে
    অন্যায় ভাবে তর্ক করবে?
যদি ঈশ্বর পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তোমাদের বিচার করেন
    তিনি কি তোমাদেরও সঠিক দেখবেন?
তোমরা কি মনে কর, যে ভাবে তোমরা মানুষকে বোকা বানাও,
    সেই ভাবে তোমরা ঈশ্বরকে বোকা বানাতে পারবে?
10 তোমরা তো জানো, যে তোমরা যদি গোপনে পক্ষপাতিত্ব দেখাও,
    ঈশ্বর তোমাদের তিরস্কার করবেন।
11 ঈশ্বরের মহিমা তোমাদের ভীত করে।
    তোমরা তাঁকে ভয় পাও।
12 তোমাদের পরমপরাগত জ্ঞান ছাইয়ের মতই অকেজো।
    তোমাদের উত্তরগুলিও কাদামাটির মতো নিরর্থক।

13 “চুপ করে থাক এবং আমাকে কথা বলতে দাও!
    তাহলে আমার প্রতি যা কিছুই হোক্ আমি তা গ্রহণ করব।
14 আমি নিজেকে বিপদের মধ্যে নিয়ে যাবো
    এবং নিজের জীবন নিজের হাতেই তুলে নেব।
15 ঈশ্বর যদি আমাকে মেরেও ফেলেন আমি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে যাবো।
    কিন্তু আমি ঈশ্বরের সামনে প্রমাণ করে দেবো যে আমার পথও প্রকৃত ন্যায্য পথ ছিল।
16 নিশ্চিত ভাবে, এটা হবে আমার জয়।
    কোন দুষ্ট লোকই ঈশ্বরের মুখোমুখি হতে চায় না।
17 আমি যা বলছি তা মন দিয়ে শোন।
    আমাকে বুঝিয়ে বলতে দাও।
18 এখন আমি আমার যুক্তিগুলো উপস্থাপিত করতে প্রস্তুত।
    আমি খুব সতর্কভাবে আমার যুক্তি উত্থাপন করবো।
    আমি জানি আমিই সঠিক বলে চিহ্নিত হবো।
19 যদি কেউ প্রমাণ করে দেয় যে আমি ঠিক নই,
    আমি চুপ করে থাকব এবং মরে যাব।

20 “ঈশ্বর, আমাকে মাত্র দুটি জিনিস দিন,
    তাহলে আমি আপনার কাছ থেকে লুকাবো না।
21 আমার শাস্তি রদ করে দিন
    এবং আপনার ভয়ঙ্কর রূপ দিয়ে আমায় সন্ত্রস্ত করা বন্ধ করে দিন।
22 তারপর আপনি আমায় ডাকবেন, আমি আপনাকে উত্তর দেবো।
    অথবা আমায় বলতে দিন এবং আপনি উত্তর দিন।
23 আমি কতগুলি পাপ করেছি?
    আমি কি ভুল করেছি?
    আমাকে আমার পাপ ও অন্যায়গুলি দেখিয়ে দিন।
24 ঈশ্বর, কেন আপনি আমায় এড়িয়ে যাচ্ছেন
    এবং আমাকে আপনার শত্রু বলে বিবেচনা করছেন?
25 আপনি কি আমায় ভয় দেখাতে চাইছেন?
    আমি বাতাসে ওড়া একটা শুকনো পাতা মাত্র।
    আপনি একটা ক্ষুদ্র খড়-কুটোকে আক্রমণ করছেন!
26 ঈশ্বর, আমার সম্পর্কে আপনি মন্দ কথা বলেন।
    যখন আমি অল্প বয়স্ক ছিলাম তখনকার পাপের জন্য আপনি আমায় শাস্তি দিচ্ছেন।
27 আপনি আমার পায়ে শিকল পরিয়েছেন।
    আমার প্রতিটি পদক্ষেপ আপনি লক্ষ্য করেন।
    আমার সকল গতিবিধিই আপনি নজর করেন।
28 তাই, পচনশীল কাঠের মত,
    পোকা খাওয়া কাপড়ের মত
    আমি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে যাচ্ছি।”

1 করিন্থীয় 1

পৌল, যিনি ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী খ্রীষ্ট যীশুর প্রেরিতরূপে আহুত তাঁর কাছ থেকে ও আমাদের ভাই সোস্থিনির কাছ থেকে এই পত্র।

করিন্থের ঈশ্বরের মণ্ডলী ও যারা খ্রীষ্ট যীশুতে পবিত্র বলে গন্য হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে এই পত্র। তোমরা ঈশ্বরের পবিত্র লোক হবার জন্য আহুত হয়েছ। সব জায়গায় যে সব লোকেরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে ডাকে তাদের সঙ্গে তোমরাও আহুত। তিনি তাদেরও এবং আমাদেরও প্রভু।

আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি যেন তোমাদের ওপর বর্ষিত হয়।

পৌল ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন

খ্রীষ্ট যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বর যে অনুগ্রহ তোমাদের দিয়েছেন, তার জন্য আমি সবসময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। খ্রীষ্ট যীশুর আশীর্বাদে তোমরা সব কিছুতে, সমস্ত রকম বলবার ক্ষমতায় ও জ্ঞানে উপচে পড়ছ। এইভাবে খ্রীষ্ট সম্পর্কে সত্য তোমাদের মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এর ফলে ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া বরদানের কোন অভাব তোমাদের নেই। তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অপেক্ষায় আছ; তিনি তোমাদের শেষ পর্যন্ত স্থির রাখবেন, যেন আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ফিরে আসার দিন পর্যন্ত তোমরা নির্দোষ থাক। ঈশ্বর বিশ্বস্ত; তিনিই সেইজন যাঁর দ্বারা তোমরা তাঁর পুত্র, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সহভাগীতা লাভের জন্য আহুত হয়েছ।

করিন্থে খ্রীষ্ট মণ্ডলীতে সঙ্কট

10 কিন্তু আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোমাদের কাছে অনুরোধ করছি, তোমাদের পরস্পরের মধ্যে যেন মতৈক্য থাকে, দলাদলি না থাকে। তোমরা সকলে যেন এক মন-প্রাণ হও ও সকলের উদ্দেশ্য একই হয়।

11 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি ক্লোয়ীর বাড়ির লোকদের কাছে শুনেছি যে তোমাদের মধ্যে নানা বাক্-বিতণ্ডা লেগেই আছে। 12 আমি যা বলতে চাই তা হল এই: তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, “আমি পৌলের অনুগামী,” আবার কেউ কেউ বলে, “আমি আপল্লোর,” আর কেউ কেউ বলে, “আমি কৈফার (পিতরের),” আবার কেউ কেউ বলে, “আমি খ্রীষ্টের অনুগামী।” 13 খ্রীষ্টকে কি ভাগ করা যায়? পৌল কি তোমাদের জন্য ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন? তোমরা কি পৌলের নামে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলে? 14 আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই যে, আমি ক্রীষ্প ও গায়ঃ ছাড়া তোমাদের আর কাউকে বাপ্তিস্ম দিই নি। 15 যাতে কেউ বলতে না পারে যে তোমরা আমার নামে বাপ্তিস্ম নিয়েছ। 16 তবে হ্যাঁ, আমি স্তিফানের পরিবারকেও বাপ্তিস্ম দিয়েছি। এছাড়া আর কাউকে বাপ্তিস্ম দিয়েছি বলে আমার জানা নেই। 17 কারণ খ্রীষ্ট আমাকে বাপ্তিস্ম দেবার জন্য নয় কিন্তু সুসমাচার প্রচারের জন্য পাঠিয়েছেন। তিনি আমাকে সেই সুসমাচার জাগতিক জ্ঞানের ভাষায় প্রচার করতে পাঠান নি, যাতে খ্রীষ্টের ক্রুশের পরাক্রম বিফল না হয়।

খ্রীষ্টের মধ্যে ঈশ্বরের পরাক্রম ও প্রজ্ঞা

18 যারা ধ্বংসের পথে চলেছে তাদের কাছে ক্রুশের এই শিক্ষা মুর্খতা; কিন্তু আমরা যারা উদ্ধার লাভ করছি আমাদের কাছে এ ঈশ্বরের পরাক্রমস্বরূপ। 19 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:

“আমি জ্ঞানীদের জ্ঞান নষ্ট করব
আর বুদ্ধিমানদের বুদ্ধি ব্যর্থ করব।” (A)

20 জ্ঞানী লোক কোথায়? শিক্ষিত লোকই বা কোথায়? এ যুগের দার্শনিকই বা কোথায়? ঈশ্বর কি জগতের এইসব জ্ঞানকে মূর্খতায় পরিণত করেন নি? 21 তাই ঈশ্বর তাঁর প্রজ্ঞায় যখন বুঝলেন যে জগত তার নিজের জ্ঞান অনুসারে ঈশ্বরকে পেল না, তখন ঈশ্বর স্থির করলেন যে প্রচারিত বার্তার মূর্খতায় যারা বিশ্বাস করে তাদের তিনি উদ্ধার করবেন।

22 কারণ ইহুদীরা অলৌকিক চিহ্ন চায়, আর গ্রীকরা প্রজ্ঞার অন্বেষণ করে। 23 কিন্তু আমরা সেই খ্রীষ্ট, যিনি ক্রুশে প্রাণ দিয়েছিলেন, তাঁর সম্বন্ধে প্রচার করি। ইহুদীদের কাছে তা প্রবল বাধাস্বরূপ আর অইহুদীদের কাছে তা মূর্খতাস্বরূপ। 24 কিন্তু ইহুদী ও অইহুদী, ঈশ্বর যাদের আহ্বান করেছেন তাদের সকলের কাছে খ্রীষ্টই ঈশ্বরের পরাক্রম ও প্রজ্ঞাস্বরূপ। 25 কারণ ঈশ্বরের যে মূর্খতা তা মানুষের জ্ঞানের থেকে অনেক বেশী জ্ঞানসম্পন্ন; আর ঈশ্বরের যে দুর্বলতা তা মানুষের শক্তি থেকে অনেক শক্তিশালী।

26 আমার ভাই ও বোনেরা, ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন। একটু ভেবে দেখো তো! জগতের বিচারে তোমরা অনেকে যে জ্ঞানী ছিলে তা নয়, ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলে তাও নয় বা অনেকে যে অভিজাত বংশে জন্মেছিলে তাও নয়; 27 কিন্তু ঈশ্বর জগতের মূর্খ বিষয় সকল মনোনীত করলেন যাতে সেগুলি জ্ঞানীদের লজ্জা দেয়। ঈশ্বর জগতের দুর্বল বিষয় সকল মনোনীত করলেন যাতে ঐগুলি বলবানদের লজ্জা দেয়। 28 জগতের কাছে যা তুচ্ছ ও ঘৃণিত, যার কোন মূল্যই নেই, সেই সব ঈশ্বর মনোনীত করলেন, যাতে যা কিছু জগতের ধারণায় মূল্যবান সেই সমস্তকে তিনি ধ্বংস করতে পারেন। 29 ঈশ্বর এই কাজ করলেন যাতে কেউ তাঁর সামনে গর্ব করতে না পারে। 30 ঈশ্বরই তোমাদের খ্রীষ্ট যীশুর সাথে যুক্ত করেছেন। খ্রীষ্টই আমাদের কাছে ঈশ্বরের দেওয়া জ্ঞান, তিনিই আমাদের ধার্মিকতা, পবিত্রতা ও যুক্তি। 31 শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে, “যে কেউ গর্ব করে সে প্রভুতেই গর্ব করুক।” (B)

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International