Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
আদি 40

যোষেফ দুটি স্বপ্নের ব্যাখ্যা করলেন

40 পরে ফরৌণের দুই ভৃত্য ফরৌণের প্রতি কিছু অন্যায় কাজ করল। এই ভৃত্যরা ছিল তাঁর রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারী। ফরৌণ প্রধান রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারীর উপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। তাই ফরৌণ তাদের যোষেফের সাথে একই কারাগারে রাখলেন। পোটীফর, ফরৌণের কারারক্ষকদের প্রধান সেই কারাগারের দায়িত্বে ছিলেন। প্রধান কারারক্ষক সেই দুই বন্দীকে যোষেফের পরিচর্যার অধীনে রাখলেন। সেই দুইজন লোকই কিছু সময় সেই কারাগারে রইল। একদিন রাত্রে দুই বন্দীই স্বপ্ন দেখল। (এই দুই বন্দী ছিল মিশরের রাজার রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারী।) প্রত্যেক বন্দীই ভিন্ন ভিন্ন স্বপ্ন দেখল এবং প্রতিটি স্বপ্নের নিজস্ব অর্থ ছিল। পরের দিন সকালে যোষেফ তাদের কাছে গিয়ে দেখলেন যে তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ। যোষেফ জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের এত বিষন্ন দেখাচ্ছে কেন?”

লোক দুটি উত্তর করল, “গত রাতে আমরা স্বপ্ন দেখেছি কিন্তু স্বপ্নের অর্থ বুঝছি না। সেই স্বপ্নের অর্থ বলার বা তা বুঝিয়ে দেবার কেউ নেই।”

যোষেফ তাদের বললেন, “ঈশ্বরই একজন যিনি বোঝেন ও স্বপ্নের অর্থ বলতে পারেন। তাই আমার অনুরোধ, তোমাদের স্বপ্নগুলো বল।”

দ্রাক্ষারস পরিবেশকের স্বপ্ন

সুতরাং দ্রাক্ষারস পরিবেশক যোষেফকে তার স্বপ্ন বলল, “আমি স্বপ্নে একটা দ্রাক্ষালতা দেখলাম। 10 সেই লতায় তিনটে শাখা ছিল। আমি দেখলাম শাখাগুলিতে ফুল হল এবং দ্রাক্ষা ফলল। 11 আমি ফরৌণের পানপাত্র ধরেছিলাম, তাই সেই দ্রাক্ষাগুলোকে সেই কাপে নিঙড়ে নিলাম। তারপর সেই পানপাত্র ফরৌণকে দিলাম।”

12 তখন যোষেফ বললেন, “সেই স্বপ্নের অর্থ আমি তোমায় বলছি। তিনটি শাখার অর্থ তিন দিন। 13 তিন দিন শেষ হবার আগেই ফরৌণ তোমায় ক্ষমা করে আবার তোমাক কাজে বহাল করবেন। তুমি ফরৌণের জন্য আগে যে কাজ করতে তাই-ই করবে। 14 কিন্তু তুমি ছাড়া পেলে আমায় স্মরণ করো। আমার প্রতি দয়া করো। ফরৌণকে আমার সম্বন্ধে বলো যাতে আমি কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতে পারি। 15 আমাকে জোর করে আমার নিজের জায়গা, ইব্রীয়দের দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারাগারে থাকার মত কোন অন্যায়ই আমি করি নি।”

রুটিওয়ালার স্বপ্ন

16 রুটিওয়ালা দেখল অন্য ভৃত্যের স্বপ্নটা ভাল। তখন সে যোষেফকে বলল, “আমিও একটা স্বপ্ন দেখেছি। দেখলাম আমার মাথায় রুটির তিনটে ঝুড়ি রয়েছে। 17 উপরের ঝুড়িতে সব রকমের সেঁকা খাবার ছিল। সেই খাবার রাজার জন্য ছিল কিন্তু পাখীরা ঐ খাবার খেতে লাগল।”

18 যোষেফ বললেন, “আমি তোমাকে স্বপ্নের অর্থ বলছি। তিনটে ঝুড়ির অর্থ তিন দিন। 19 তিন দিনের মধ্যে রাজা তোমাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেবেন। তিনি তোমার শিরশ্ছেদ করে একটা বাঁশের মাথায় ঝুলিয়ে দেবেন। আর পাখীরা তোমার দেহের মাংস খাবে।”

যোষেফের কথা মনে রইল না

20 তৃতীয় দিনটা ছিল ফরৌণের জন্ম দিন। ফরৌণ তাঁর সব দাসদের জন্য ভোজের আয়োজন করলেন। সেই সময়ে ফরৌণ রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশককে কারাগার থেকে মুক্তি দিলেন। 21 ফরৌণ পানপাত্র বাহককে মুক্তি দিয়ে পুনরায় তাকে তার কাজে নিয়েগ করলেন। আর সেই পানপাত্র বাহক আবার ফরৌণের হাতে পানপাত্র দিতে লাগল। 22 কিন্তু ফরৌণ রুটিওয়ালাকে ফাঁসি দিলেন। যোষেফ যেমনটি বলেছিলেন সেরকম ভাবেই সব ঘটনা ঘটল। 23 কিন্তু সেই পানপাত্র বাহকদের যোষেফকে সাহায্য করার কথা মনে রইল না। সে যোষেফের বিষয় ফরৌণকে কিছুই বলল না, যোষেফের কথা ভুলে গেল।

মার্ক 10

বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয়ে যীশুর শিক্ষা

(মথি 19:1-12)

10 এরপর যীশু সেই স্থান ছেড়ে যর্দন নদীর অন্য পাড়ে যিহূদিয়ার অঞ্চলে এলেন। আবার লোকরা তাঁর কাছে এল এবং তিনি তাঁর রীতি অনুসারে তাদের শিক্ষা দিলেন।

তখন কয়েকজন ফরীশী তাঁর কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “একটি লোকের পক্ষে তার স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি আইনত ঠিক?” তাঁরা তাঁকে পরীক্ষা করার জন্যই এই কথা জিজ্ঞাসা করলেন।

যীশু তাঁদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন “এই ব্যাপারে মোশি তোমাদের কি নির্দেশ দিয়েছেন?”

তাঁরা বললেন, “বিবাহ বিচ্ছেদ পত্র লিখে নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করবার অনুমতি মোশি দিয়েছেন।”[a]

যীশু তাঁদের বললেন, “তোমাদের কঠিন মনের জন্য তিনি আজ্ঞা লিখেছিলেন। কিন্তু সৃষ্টির প্রথম থেকেই ‘ঈশ্বর স্ত্রী পুরুষ হিসাবে তাদের তৈরী করেছেন।’(A) ‘সেইজন্যই মানুষ তার বাবা-মাকে ত্যাগ করে স্ত্রীর প্রতি আসক্ত হয়, আর ঐ দুজন একদেহে পরিণত হয়।’(B) তখন তারা আর দুজন নয়, তারা এক। অতএব ঈশ্বর যাদের যোগ করে দিয়েছেন, মানুষ তাদের বিচ্ছিন্ন না করুক।”

10 তারা বাড়িতে এলে শিষ্যেরা তাঁকে সেই বিষয় জিজ্ঞাসা করলেন। 11 যীশু তাদের বললেন, “কেউ যদি নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করে অন্য কাউকে বিয়ে করে তবে সে তার বিরুদ্ধে ব্যভিচার করে। 12 যদি সেই স্ত্রীলোকটি নিজের স্বামীকে ত্যাগ করে আর একজনকে বিয়ে করে সেও ব্যভিচার করে।”

যীশু ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আশীর্বাদ করলেন

(মথি 19:13-15; লূক 18:15-17)

13 পরে লোকরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের তাঁর কাছে নিয়ে এল, যেন তিনি তাদের স্পর্শ করেন: কিন্তু শিষ্যরা তাদের ধমক দিলেন। 14 যীশু তা দেখে ক্রুদ্ধ হলেন এবং তাদের বললেন, “ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আমার কাছে আসতে দাও। তাদের বারণ করো না, কারণ এদের মত লোকদের জন্যই তো ঈশ্বরের রাজ্য। 15 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি ছোট ছেলেমেয়েদের মন নিয়ে ঈশ্বরের রাজ্য গ্রহণ না করে, তবে সে কোনমতেই সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না।” 16 এরপর তিনি তাদের কোলে নিলেন এবং তাদের ওপর হাত রেখে আশীর্বাদ করলেন।

একজন ধনী লোকের যীশুকে অনুসরণ করতে অস্বীকার

(মথি 19:16-30; লূক 18:18-30)

17 পরে তিনি বেরিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, এমন সময় একজন লোক দৌড়ে এসে, তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে জিজ্ঞেস করলেন, “হে সৎ‌ গুরু, অনন্ত জীবন লাভের জন্য আমি কি করব?”

18 তখন যীশু তাকে বললেন, “তুমি কেন আমাকে সৎ‌ বলছ? ঈশ্বর ছাড়া আর কেউই সৎ‌ নয়। 19 তুমি তো ঈশ্বরের সব আদেশ জানো, ‘নরহত্যা কোরো না, ব্যভিচার কোরো না, চুরি কোরো না, বাবা-মাকে সম্মান কোরো।’”(C)

20 লোকটি তাঁকে বলল, “হে গুরু, ছোটবেলা থেকে এগুলো আমি পালন করে আসছি।”

21 যীশু লোকটির দিকে সস্নেহে তাকালেন এবং বললেন, “একটা বিষয়ে তোমার ত্রুটি আছে। যাও তোমার যা কিছু আছে বিক্রি কর; আর সেই অর্থ গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাতে তুমি স্বর্গে ধন পাবে। তারপর এসে আমাকে অনুসরণ কর।”

22 এই কথায় সে মর্মাহত ও দুঃখিত হল এবং ম্লান মুখে চলে গেল, কারণ তার অনেক সম্পত্তি ছিল।

23 তখন যীশু চারদিকে তাকিয়ে শিষ্যদের বললেন, “যাদের ধন আছে তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা খুবই দুষ্কর!”

24 শিষ্যরা তাঁর কথা শুনে অবাক হলেন। যীশু আবার তাঁদের বললেন, “শোন, ঈশ্বরের রাজ্যে যাওয়া সত্যিই কষ্টকর। 25 একজন ধনী লোকের ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং সূচের ছিদ্র দিয়ে উটের যাওয়া সহজ।”

26 তখন তারা আরও আশ্চর্য হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেন, “তবে কারা উদ্ধার পেতে পারে?”

27 তখন যীশু তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “এটা মানুষের পক্ষে অসম্ভব; কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে নয়, কারণ সমস্ত কিছুই ঈশ্বরের পক্ষে সম্ভব।”

28 তখন পিতর তাঁকে বলতে লাগলেন, “দেখুন! আমরা সবকিছু ত্যাগ করে আপনার অনুসারী হয়েছি।”

29 যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি যে কেউ আমার জন্য বা আমার সুসমাচার প্রচারের জন্য বাড়িঘর, ভাইবোন, মা-বাবা, ছেলেমেয়ে জমিজমা ছেড়ে এসেছে, 30 তার বদলে সে এই জগতে তার শতগুণ ফিরে পাবে। তাকে তাড়না ভোগ করতে হলেও এই জগতে শতগুণ বাড়িঘর, ভাইবোন, মা, ছেলেমেয়ে এবং জমিজমা পাবে, আর পরবর্তী যুগে পাবে অনন্ত জীবন। 31 কিন্তু আজ যারা প্রথম, এমন অনেক লোক শেষে পড়বে এবং যারা আজ শেষের তাদের মধ্যে অনেকে প্রথম হবে।”

যীশু পুনরায় নিজের মৃত্যুর বিষয়ে বললেন

(মথি 20:17-19; লূক 18:31-34)

32 একদিন তাঁরা রাস্তা দিয়ে জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছেন এবং যীশু তাঁদের আগে আগে চলেছেন। শিষ্যরা আশ্চর্য হচ্ছিলেন আর তাঁর সঙ্গে যারা চলছিল, সেই লোকেরা ভীত হল। তখন তিনি আবার সেই বারোজন প্রেরিতকে নিয়ে নিজের প্রতি যা যা ঘটবে তা তাদের বলতে লাগলেন। 33 শোন, “আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি আর প্রধান যাজক এবং ব্যবস্থার শিক্ষকের হাতে মানবপুত্রকে সঁপে দেওয়া হবে তারা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেবে এবং অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে। 34 তারা বিদ্রূপ করবে, তাঁর মুখে থুথু দেবে, তাঁকে চাবুক মারবে এবং হত্যা করবে, আর তিন দিন পরে তিনি আবার বেঁচে উঠবেন।”

যাকোব এবং যোহনের অনুগ্রহ ভিক্ষা

(মথি 20:20-28)

35 পরে সিবদিয়ের ছেলে যাকোব এবং যোহন তাঁর কাছে এসে বললেন, “হে গুরু, আমাদের ইচ্ছা এই, আমরা আপনার কাছে যা চাইব, আপনি আমাদের জন্য তা করবেন।”

36 যীশু তখন তাঁদের বললেন, “তোমাদের ইচ্ছা কি, তোমাদের জন্য আমি কি করব?”

37 তাঁরা তাঁকে বললেন, “আমাদের এই বর দান করুন যাতে আপনি মহিমান্বিত হলে আমরা একজন আপনার ডানদিকে আর একজন বাঁ দিকে বসতে পাই।”

38 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা জান না তোমরা কি চাইছ। আমি যে পেয়ালায় পান করি, তাতে তোমরা কি চুমুক দিতে পারবে বা আমি যে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজ হই তাতে কি তোমরা বাপ্তাইজ হতে পারবে?”

39 তাঁরা তাঁকে বললেন, “আমরা পারব!”

তখন যীশু তাদের বললেন, “আমি যে পেয়ালায় পান করি তাতে তোমরা অবশ্যই চুমুক দেবে এবং আমি যে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজ হই তাতে তোমরাও বাপ্তাইজ হবে। 40 কিন্তু আমার ডান দিকে বা বাঁদিকে বসতে দেবার অধিকার আমার নেই। কারা সেখানে বসবে তা আগেই স্থির হয়ে গেছে।”

41 এই কথা শুনে অন্য দশ জন যোহন ও যাকোবের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন। 42 কিন্তু যীশু তাঁদের ডেকে বললেন, “তোমরা জান জগতের মধ্যে যারা শাসনকর্তা বলে গন্য, তারা তাদের উপর প্রভুত্ব করে এবং তাদের মধ্যে যারা প্রধান, তারা তাদের উপর কর্ত্তৃত্ব করে। 43 তোমাদের ক্ষেত্রে সেই রকম হবে না। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি প্রধান হতে চায়, তবে সে তোমাদের ক্রীতদাস হবে, 44 এবং তোমাদের মধ্যে কেউ যদি প্রধান হতে চায়, সে সকলের দাস হবে। 45 কারণ বাস্তবে মানবপুত্রও সেবা পেতে আসেন নি, তিনি অন্যের সেবা করতেই এসেছেন এবং অনেক মানুষের মুক্তিপণ হিসাবে নিজের জীবন দিতে এসেছেন।”

অন্ধের দৃষ্টিলাভ

(মথি 20:29-34; লূক 18:35-43)

46 তারপর তাঁরা যিরীহোতে এলেন। তিনি যখন নিজের শিষ্যদের এবং বহুলোকের সাথে যিরীহো ছেড়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় পথের ধারে বরতীময় (অর্থ “তীময়ের ছেলে”) নামে এক অন্ধ ভিখারী বসেছিল। 47 সে যখন শুনতে পেল যে উনি নাসরতীয় যীশু, তখন চেঁচিয়ে বলতে লাগল, “হে যীশু, দায়ূদের পুত্র, আমার প্রতি দয়া করুন।”

48 তখন বহুলোক চুপ-চুপ বলে তাকে ধমক দিল। কিন্তু সে আরও জোরে চেঁচিয়ে বলতে লাগল, “হে দায়ূদের পুত্র, আমার প্রতি দয়া করুন!”

49 তখন যীশু সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে বললেন, “তাকে ডাকো।”

তারা সেই অন্ধ লোকটিকে ডাকল এবং বলল, “ওহে সাহস কর, ওঠ, উনি তোমাকে ডাকছেন।” 50 তখন সে নিজের পায়ের চাদর ফেলে দিয়ে লাফ দিয়ে উঠে যীশুর কাছে এল।

51 যীশু তাকে বললেন, “তুমি কি চাও, আমি তোমার জন্য কি করব?”

অন্ধ লোকটি তাকে বলল, “হে গুরু, আমি যেন দেখতে পাই।”

52 তখন যীশু তাকে বললেন, “যাও, তোমার বিশ্বাসই তোমায় সুস্থ করল।” সঙ্গে সঙ্গে সে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল এবং রাস্তা দিয়ে যীশুর পেছন পেছন চলতে লাগল।

ইয়োব 6

ইয়োব ইলীফসকে উত্তর দিলেন

1-2 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন:

“আমি যদি আমার ক্রোধকে দাঁড়িপাল্লার এক দিকে এবং দুঃখকে অন্য দিকে রাখতে পারতাম
    তাহলে তাদের ওজন একই হত।
তাদের ওজন সমুদ্রের সব কটি বালুকণার চেয়েও বেশী।
    এই কারণেই আমার বাক্য এত কর্কশ।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের তীর আমার দেহে বিদ্ধ হয়েছে।
    আমার জীবন ঐ সব তীরের বিষ পান করছে!
    ঈশ্বরের ভয়ঙ্কর অস্ত্রসমূহ আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সারি দিয়ে রাখা আছে।
যখন কোন রকম মন্দ কিছু না ঘটে তখন তোমার কথাগুলো বলা সহজ।
    এমনকি বুনো গাধা যখন খাওয়ার ঘাস পায়, সে কোন অভিযোগ করে না।
    এমনকি, যখন খাদ্য থাকে, তখন কোন গরুও অভিযোগ করে না।
স্বাদহীন কোন বস্তু কি লবণ ছাড়া খাওয়া যায়?
    ডিমের সাদা অংশের কি কোন স্বাদ আছে? না!
আমি এরকম খাবার স্পর্শ করতে অস্বীকার করি,
    ঐ ধরণের খাদ্য আমার কাছে পচা খাবারের মত।
    এবং তোমার কথাগুলো আমার কাছে সেই রকমই স্বাদহীন বলে মনে হচ্ছে।

“যা চেয়েছি তা যদি পেতাম!
    আমি যা সত্যিই চাই তা যদি ঈশ্বর দিতেন!
আমি চেয়েছিলাম, ঈশ্বর আমায় ধ্বংস করুন।
    এগিয়ে এসে আমায় হত্যা করুন।
10 যদি তিনি আমায় হত্যা করেন, আমি স্বস্তি পাবো, আমি সুখী হব: এত যন্ত্রণা সত্ত্বেও আমি সেই পবিত্রতমের আদেশ পালন করা থেকে বিরত হই নি।

11 “আমার সব শক্তি চলে গেছে, তাই আমার বেঁচে থাকার কোন আশা নেই।
    আমি জানি না আমার কি হবে, তাই আমার ধৈর্য্য ধরার কোন কারণ নেই।
12 আমি পাথরের মত শক্ত নই।
    আমার দেহ পিতল দিয়ে তৈরী নয়।
13 আত্মনির্ভর হবার মত আমার কোন শক্তি নেই।
    কেন? কারণ আমার কাছ থেকে সাফল্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

14 “যদি কেউ সমস্যায় পড়ে, তার প্রতি তার বন্ধুর সদয় হওয়া উচিৎ‌।
    যদি কেউ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দিক থেকেও মুখ ফেরায়, তবুও তার প্রতি তার বন্ধুর বিশ্বস্ত থাকা উচিৎ‌।
15 কিন্তু তুমি, আমার ভাই, তুমি বিশ্বস্ত ছিলে না, আমি তোমার প্রতি নির্ভর করতে পারিনি।
    তুমি সেই ঝর্ণার মত যা কখনও প্রবাহিত হয় আবার কখনও প্রবাহিত হয় না। তুমি সেই ঝর্ণার মত
16 যা বরফে জমে গেলে বা বরফ গলা জলে ভরে গেলে উপচে পড়ে।
17 এবং যখন আবহাওয়া শুষ্ক ও গরম থাকে
    তখন তার জল প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।
    তার ধারাগুলো লুপ্ত হয়।
18 বণিকের দল তাদের রাস্তা থেকে সরে যায়
    এবং তারা মরুভূমিতে বিলুপ্ত হয়।
19 টেমার বণিকরা জলের অন্বেষণ করলো।
    শিবার পর্যটকরা আশা নিয়ে অপেক্ষা করলো।
20 তারা নিশ্চিত ছিল যে তারা জল পাবেই
    কিন্তু তারাও হতাশ হল।
21 এখন, তুমি সেই সব ঝর্ণার মত।
    আমার দুর্দশা দেখে তুমি ভীত হয়েছো।
22 আমি কি তোমার সাহায্য চেয়েছি?
    না চাই নি! কিন্তু তুমি সহজেই তোমার উপদেশ দিলে!
23 আমি কি তোমাকে বলেছি, ‘আমাকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা কর!’
    অথবা ‘নৃশংস লোকের হাত থেকে আমায় রক্ষা কর!’

24 “তাই, এখন আমায় শিক্ষা দাও, আমি চুপ করে থাকবো।
    দেখিয়ে দাও আমি কি ভুল করেছি।
25 সৎ‌-বাক্যই শক্তিশালী।
    কিন্তু তোমার যুক্তি কোন কিছুই প্রমাণ করে না।
26 তুমি কি আমার সমালোচনা করার পরিকল্পনা করেছ?
    তুমি কি আরও ক্লান্তিকর কথা বলবে?
27 তুমি একজন পিতৃ-মাতৃহীনের সম্পত্তি নিয়ে
    জুয়া খেলতে পারো।
    তুমি তোমার প্রতিবেশীকেও বিক্রি করে দিতে পারো।
28 কিন্তু এখন, আমার মুখ দেখে বোঝার চেষ্টা কর।
    আমি তোমার কাছে মিথ্যা বলবো না।
29 তোমার সিদ্ধান্তগুলি পুনর্বিবেচনা কর।
    অন্যায় বিচার করো না।
পুনরায় বিবেচনা কর কারণ এ ব্যাপারে আমি নির্দোষ।
    আমি কোন ভুল করিনি।
30 আমি মিথ্যা বলছি না।
    আমি কি পচা জিনিসের স্বাদ বুঝি না?”

রোমীয় 10

10 ভাই ও বোনেরা, আমার হৃদয়ের একান্ত কামনা এই, যেন সমস্ত ইহুদী উদ্ধার পায়। ঈশ্বরের কাছে এই আমার কাতর মিনতি। আমি ইহুদীদের বিষয়ে একথা বলতে পারি যে ঈশ্বরের বিষয়ে তাদের উৎসাহ আছে; কিন্তু এটা তাদের জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে নেই। যে পথে ঈশ্বর মানুষকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন তারা সেই পথ জানে না। তারা নিজেদের প্রচেষ্টায় ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হতে চায়। তাই যে পথে ঈশ্বর মানুষকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন, তা তারা গ্রহণ করে নি। খ্রীষ্টের আগমনে বিধি-ব্যবস্থার যুগ শেষ হয়েছে। এখন যাঁরা তাঁকে বিশ্বাস করে তারাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়।

বিধি-ব্যবস্থা পালন করে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া সম্পর্কে মোশি বলে গেছেন, “যে ব্যক্তি এইসব বিধি-ব্যবস্থা পালন করবে সে তার মধ্য দিয়েই জীবন পাবে।”(A) যে ধার্মিকতা ঈশ্বরে বিশ্বাস থেকে জন্মায় সে সম্বন্ধে শাস্ত্রে বলেছে: “মনে মনে কখনও বলো না, ‘ওপরে স্বর্গে কে যাবে?’” (এর অর্থ, “খ্রীষ্টকে কে পৃথিবীতে নামিয়ে আনবে?”) “বা ‘নীচে পাতালে কে যাবে?’” (এর অর্থ, “মৃতদের মধ্য থেকে কে খ্রীষ্টকে উর্দ্ধে আনবে?”)

এ ব্যাপারে শাস্ত্র বলছে: “সেই শিক্ষা তোমার কাছেই তোমার মুখে ও হৃদয়ে আছে।”(B) সে শিক্ষা হল বিশ্বাসের শিক্ষা যা আমরা লোকদের কাছে বলি। তুমি যদি নিজ মুখে যীশুকে প্রভু বলে স্বীকার কর, এবং অন্তরে বিশ্বাস কর যে ঈশ্বরই তাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন তাহলে উদ্ধার পাবে। 10 কারণ মানুষ অন্তরে বিশ্বাস করে ধার্মিকতা লাভ করার জন্য আর মুখে বিশ্বাসের কথা স্বীকার করে উদ্ধার পাবার জন্য।

11 শাস্ত্র এই কথাই বলে যে: “যে খ্রীষ্টে বিশ্বাস করে সে কখনও লজ্জায় পড়বে না।”(C) 12 এক্ষেত্রে ইহুদী ও অইহুদীদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, একই প্রভু সকলের প্রভু। যত লোক তাঁকে ডাকে সেই সকলের ওপর তিনি প্রচুর আশীর্বাদ ঢেলে দেন। 13 হ্যাঁ, শাস্ত্র বলে, “যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে ডাকবে সে উদ্ধার পাবে।”(D)

14 কিন্তু যাঁকে তারা বিশ্বাস করে না তাঁকে ডাকবে কি কবে? আর যারা তাঁর কথা শোনেনি তাঁকে বিশ্বাসই বা কি করে করবে? কেউ প্রচার না করলে তারা শুনবেই বা কি করে? 15 যারা প্রচার করতে যাবে তারা প্রেরিত না হলে কি করে প্রচার করবে? হ্যাঁ, শাস্ত্রে কিন্তু লেখা আছে: “সুসমাচার নিয়ে যাঁরা আসেন তাঁদের চরণযুগল কি সুন্দর।”(E)

16 কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে সকলেই সেই সুসমাচার গ্রহণ করেনি। যিশাইয় ঠিকই বলেছেন, “প্রভু আমরা যা বলেছি তা ক’জনেই বিশ্বাস করেছে।”(F) 17 সুতরাং সুসমাচার শোনার ভেতর দিয়েই বিশ্বাস উৎপন্ন হয় আর কেউ খ্রীষ্টের সুসমাচার শোনালে তখনই লোকরা সুসমাচার শুনতে পায়।

18 তাহলে আমিই জিজ্ঞাসা করি, “লোকে কি তাঁর সুসমাচার শুনতে পায় নি?” হ্যাঁ, তারা নিশ্চয়ই শুনেছে। এবিষয়ে শাস্ত্র বলছে:

“তাদের রব পৃথিবীর কোণে কোণে পৌঁছেছে,
    তাদের বাক্য পৃথিবীর সর্বত্র পৌঁছে গেছে।”(G)

19 আবার আমি বলি, “ইস্রায়েলীয়রা কি বুঝতে পারে নি?” হ্যাঁ, তারা বুঝতে পেরেছিল। ঈশ্বরের হয়ে প্রথমে মোশি এই কথা বলেছেন:

“যারা জাতি বলেই গন্য নয়, এমন লোকদের মাধ্যমে আমি তোমাদের ঈর্ষান্বিত করব।
    অজ্ঞ জাতির দ্বারা তোমাদের ক্রুদ্ধ করব।”(H)

20 এরপর ঈশ্বরের মুখপাত্র হয়ে যিশাইয় যথেষ্ট সাহসের সঙ্গে বললেন:

“যারা আমায় খোঁজে নি
    তারাই কিন্তু আমাকে পেয়েছে;
আর যারা আমাকে চায় নি তাদের কাছেই আমি নিজেকে প্রকাশ করেছি।”(I)

21 কিন্তু ইহুদীদের সম্বন্ধে ঈশ্বর বলেন,

“সমস্ত দিন ধরে দুহাত বাড়িয়ে আমি তাদের জন্য অপেক্ষা করছি।
    কিন্তু তারা আমার অবাধ্য এবং তারা আমার বিরোধিতা করেই চলেছে।”(J)

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International