M’Cheyne Bible Reading Plan
যোষেফকে মিশরে পোটীফরের কাছে বিক্রী করা হল
39 বণিকরা যারা যোষেফকে কিনেছিল, তারা তাকে মিশরে নিয়ে গেল এবং ফরৌণের রক্ষকদের সেনাপতি পোটীফরের কাছে বিক্রি করে দিল। 2 কিন্তু প্রভু যোষেফকে সাহায্য করলেন। যোষেফ সফলকর্মা হলেন। যোষেফ সেই মিশরীয় পোটীফরের অর্থাৎ তার মনিবের বাড়ীতেই বাস করতেন।
3 পোটীফর দেখলেন যে প্রভু যোষেফের সাথে রয়েছেন এবং যোষেফ যা কিছু করেন তাতেই তিনি তাকে সফল হতে দেন। 4 সেইজন্য পোটীফর খুশী হয়ে যোষেফকে তাঁর নিজের বাড়ীর অধ্যক্ষ করে তারই হাতে সব কিছুর ভার দিলেন। 5 যোষেফকে সেই বাড়ীর অধ্যক্ষ করা হলে প্রভু পোটীফরের বাড়ী এবং তাঁর সব কিছুকে আশীর্বাদ করলেন। যোষেফের জন্যই প্রভু একাজ করলেন। আর তিনি পোটীফরের ক্ষেতে যা জন্মাত তাকেও আশীর্বাদযুক্ত করলেন। 6 তাই পোটীফর তাঁর বাড়ীর সব কিছুর ভারই যোষেফের হাতে দিয়ে দিলেন, কেবল নিজের খাবারটা ছাড়া আর কিছুরই জন্য তিনি চিন্তিত ছিলেন না।
যোষেফ পোটীফরের স্ত্রীকে প্রত্যাখ্যান করলেন
যোষেফ ছিলেন অত্যন্ত রূপবান ও সুদর্শন পুরুষ। 7 কিছু সময় পরে যোষেফের মনিবের স্ত্রীও তাঁকে পছন্দ করতে শুরু করল। একদিন সে তাকে বলল, “আমার সঙ্গে শোও।”
8 কিন্তু যোষেফ প্রত্যাখ্যান করে বললেন, “আমার মনিব জানেন তাঁর বাড়ীর প্রতিটি বিষয়ের প্রতি আমি বিশ্বস্ত। তিনি এখানকার সব কিছুরই দায়-দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন। 9 আমার মনিব আমাকে এই বাড়ীতে প্রায় তাঁর সমান স্থানেই রেখেছেন। আমি কখনই তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে শুতে পারি না। এটা মারাত্মক ভুল কাজ! ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ।”
10 স্ত্রীলোকটি রোজই যোষেফকে এ কথা বলত, কিন্তু যোষেফ রাজী হতেন না। 11 একদিন যোষেফ নিজের কাজ করতে বাড়ীর ভেতরে গেলেন। সেই সময় সেই বাড়ীতে কেবল একা তিনিই ছিলেন। 12 তাঁর মনিবের স্ত্রী সেই সময় তাঁর কাপড় টেনে ধরে বলল, “আমার সঙ্গে বিছানায় এস।” কিন্তু যোষেফ সেই বাড়ী থেকে এত দ্রুত দৌড়ে পালাল যে জামাটা স্ত্রীলোকটির হাতেই রয়ে গেল।
13 স্ত্রীলোকটি দেখল যে যোষেফ তার হাতেই জামাটা ফেলে বাড়ীর বাইরে দৌড়ে বেরিয়ে গেছে। তাই সে চিন্তা করে ঠিক করল যা ঘটেছে সে সম্বন্ধে মিথ্যা কথা বলবে। 14 সে তার বাড়ীর ভৃত্যদের ডেকে বলল, “দেখ! এই ইব্রীয় ক্রীতদাসকে কি আমাদের নিয়ে ঠাট্টা করার জন্য এখানে আনা হয়েছে? সে ভিতরে এসে আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আমি চেঁচিয়ে উঠলাম। 15 আমার চিৎকারে সে ভয় পেয়ে পালাল। কিন্তু সে তার জামাটা ফেলে গেছে।” 16 তারপর তার স্বামী অর্থাৎ যোষেফের মনিব আসা পর্যন্ত সে সেই জামাটা তার কাছে রেখে দিল। 17 স্বামীকেও সে ঐ একই ঘটনা বলল। সে বলল, “যে ইব্রীয় দাসটিকে তুমি এখানে এনেছ, সে আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল। 18 কিন্তু সে আমার কাছে আসতেই আমি চিৎকার করে উঠলাম। সে দৌড়ে পালাল বটে কিন্তু তার জামাটা ফেলে গেল।”
19 যোষেফের মনিব তাঁর স্ত্রীর সব কথা শুনে ক্রুদ্ধ হলেন। 20 তাই রাজার শত্রুদের যে কারাগারে রাখা হত, পোটীফর যোষেফকে সেইখানে রাখলেন। যোষেফ সেখানে রইলেন।
যোষেফ কারাগারে
21 কিন্তু প্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন। প্রভু যোষেফের প্রতি দয়া করে চললেন। কিছুদিন পরে সেই কারাগারের রক্ষকদের প্রধানের কাছে তিনি প্রিয় হলেন। 22 সেই কারাগারের সমস্ত বন্দীদের ভার যোষেফের হাতে দিলেন। সেই পদে অধিষ্ঠিত যে কোন পদাধিকারী স্বাভাবিকভাবে যা করেন, যোষেফ তাই করতেন। 23 সুতরাং যোষেফের অধীনের কোন কাজই কারাধিকারীকে তত্ত্বাবধান করতে হত না। এটা হয়েছিল কারণ প্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন এবং তাঁকে সব কাজে সফল করেছিলেন।
9 তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তদের মধ্যে কয়েকজন আছে, যারা কোনমতেই মৃত্যু দেখবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত ঈশ্বরের রাজ্য মহাপরাক্রমের সঙ্গে আসতে না দেখে।”
মোশি ও এলিয়র সঙ্গে যীশু
(মথি 17:1-13; লূক 9:28-36)
2 ছদিন বাদে যীশু পিতর, যাকোব এবং যোহনকে সঙ্গে করে এক উঁচু পাহাড়ে উঠে গেলেন। তাঁদের সামনে তাঁর রূপ পরিবর্তিত হয়ে গেল। 3 তাঁর পোশাক এত উজ্জ্বল ও শুভ্র হল যে পৃথিবীর কোন রজক সেই রকম সাদা করতে পারে না। 4 তখন মোশি এবং এলিয় তাঁদের সামনে এসে যীশুর সাথে কথা বলতে শুরু করলেন।
5 তখন পিতর যীশুকে বললেন, “গুরুদেব, এখানে আমাদের থাকা ভাল। আমরা তিনটি তাঁবু তৈরী করি। একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য এবং একটা এলিয়র জন্য।” 6 কারণ কি বলতে হবে তা তিনি জানতেন না, তাঁরা অত্যন্ত ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।
7 পরে একখানা মেঘ এসে তাঁদের ছায়া দিয়ে ঢেকে ফেলল; আর সেই মেঘ থেকে এই রব শোনা গেল, “ইনি আমার প্রিয় পুত্র। তোমরা তাঁর কথা শোন।”
8 শিষ্যেরা তখনই চারদিকে তাকালেন; কিন্তু যীশু ছাড়া আর কাউকে সেখানে দেখতে পেলেন না।
9 পাহাড় থেকে নামার সময় তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “তোমরা যা যা দেখলে তা কাউকে বলো না যতক্ষণ না মৃত্যু থেকে মানবপুত্র বেঁচে উঠছেন।”
10 তারা সেই ঘটনার কথা নিজেদের মধ্যেই চেপে রাখলেন; কিন্তু ভাবতে লাগলেন, মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠা কথাটির অর্থ কি হতে পারে। 11 পরে শিষ্যরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন ব্যবস্থার শিক্ষকরা বলেন যে প্রথমে এলিয়কে আসতে হবে?”[a]
12 তিনি তাদের বললেন, “হ্যাঁ, এলিয় প্রথমে এসে সব কিছু পুনঃস্থাপন করবেন বটে, কিন্তু মানবপুত্রের বিষয়ে কেন এসব লেখা হয়েছে যে তাঁকে অনেক দুঃখ পেতে হবে আর লোকে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে? 13 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলিয়ের বিষয়ে যেমন লেখা আছে, সেই অনুসারে তিনি এসে গেছেন এবং লোকরা তাঁর প্রতি যা ইচ্ছে তাই করেছে।”
অসুস্থ ছেলেকে যীশুর আরোগ্যদান
(মথি 17:14-20; লূক 9:37-43)
14 পরে তাঁরা অন্য শিষ্যদের কাছে এসে দেখলেন তাঁদের চারদিকে অনেক লোক আর ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাদের সাথে তর্ক করছেন। 15 তাঁকে দেখামাত্র সমস্ত লোক অবাক হল এবং তাঁর কাছে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে প্রণাম জানাতে লাগল।
16 তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা এদের সঙ্গে কি নিয়ে তর্ক করছ?”
17 তাতে লোকেদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠল, “হে গুরু, আমার ছেলেটিকে আপনার কাছে এনেছিলাম। তাকে এক বোবা আত্মায় পেয়েছে, সে কথা বলতে পারে না। 18 সেই আত্মা তাকে যেখানে ধরে, সেইখানে আছাড় মারে; আর তার মুখে ফেনা ওঠে, সে দাঁত কিড়মিড় করে আর শক্ত হয়ে যায়। আমি আপনার শিষ্যদের এই আত্মাটাকে ছাড়াতে বললাম, কিন্তু তাঁরা পারলেন না।”
19 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “হে অবিশ্বাসী বংশ, আমাকে আর কতকাল তোমাদের সঙ্গে থাকতে হবে? তোমাদের নিয়ে আর আমি কত ধৈর্য্য ধরব? তাকে আমার কাছে নিয়ে এস।”
20 তারা তাকে তাঁর কাছে নিয়ে এল। যীশুকে দেখামাত্র সেই আত্মা ছেলেটিকে মুচড়ে ধরল; আর সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিতে লাগল, তার মুখ দিয়ে ফেনা বার হচ্ছিল।
21 তখন যীশু তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলেন, “এর কতদিন এমন হয়েছে?”
ছেলেটির বাবা বলল, “ছেলেবেলা থেকে এরকম হয়েছে। 22 এই আত্মা একে মেরে ফেলার জন্য অনেকবার আগুনে ও জলে ফেলে দিয়েছে। আপনি যদি কিছু করতে পারেন, তবে দয়া করে আমাদের উপকার করুন।”
23 যীশু তাকে বললেন, “কি বললে, ‘যদি পারেন!’ যে বিশ্বাস করে তার পক্ষে সবই সম্ভব।”
24 সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটির বাবা চিৎকার করে কেঁদে বলল, “আমি বিশ্বাস করি! আমার অবিশ্বাসের প্রতিকার করুন!”
25 অনেক লোক সেদিকে আসছে দেখে যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমকে বললেন, “হে বোবা কালার আত্মা, আমি তোমাকে বলছি, এর মধ্যে আর কখনও ঢুকবে না!”
26 তখন সেই আত্মা চেঁচিয়ে তাকে ভয়ঙ্করভাবে মুচড়ে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল। তাতে ছেলেটি মড়ার মত হয়ে পড়ল, এমন কি অধিকাংশ লোক বলল, “সে মরে গেছে।” 27 কিন্তু যীশু তার হাত ধরে তুললে সে উঠে দাঁড়াল।
28 পরে যীশু বাড়ি ফিরে এলে শিষ্যরা তাঁকে একান্তে জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা কেন ঐ অশুচি আত্মাকে তাড়াতে পারলাম না?”
29 যীশু তাঁদের বললেন, “প্রার্থনা[b] ছাড়া আর কোন কিছুতেই এ আত্মাকে তাড়ানো যায় না।”
যীশু নিজের মৃত্যুর বিষয়ে বললেন
(মথি 17:22-23; লূক 9:43-45)
30 পরে সেই স্থান ছেড়ে তাঁরা গালীলের মধ্য দিয়ে চললেন; আর তিনি চাইলেন না যে তাঁরা কোথায় আছে সেকথা অন্য কেউ জানুক। 31 কারণ তখন তিনি তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “মানবপুত্রকে লোকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে, এবং তারা তাঁকে হত্যা করবে আর মৃত্যুর তিনদিন পরে তিনি বেঁচে উঠবেন।” 32 কিন্তু তাঁরা সেই কথা বুঝলেন না এবং এই বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেও ভয় পেলেন।
যীশু বললেন সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ কে
(মথি 18:1-5; লূক 9:46-48)
33 এরপর তাঁরা কফরনাহূমে ফিরে এলেন আর বাড়ির ভেতরে গিয়ে তিনি শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা রাস্তায় কি আলোচনা করছিলে?” 34 কিন্তু তাঁরা চুপচাপ থাকলেন কারণ তাঁদের মধ্যে কে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এই নিয়ে তর্ক চলছিল।
35 তখন যীশু বসে সেই বারোজন প্রেরিতদের ডেকে বললেন, “কেউ যদি প্রথম হতে চায়, তবে সে সকলের শেষে থাকবে এবং সকলের পরিচারক হবে।”
36 পরে যীশু একটা শিশুকে নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং তাকে কোলে করে তাঁদের বললেন, 37 “যে কেউ আমার নামে এর মতো কোন শিশুকে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে। আর কেউ যদি আমাকে গ্রহণ করে, সে আমাকে নয়, কিন্তু যিনি (ঈশ্বর) আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকেই গ্রহণ করে।”
যে কেউ আমাদের বিপক্ষে নয় সে-ই আমাদের পক্ষে
(লূক 9:49-50)
38 যোহন তাঁকে বললেন, “গুরু, আমরা একটি লোককে আপনার নামে ভুত তাড়াতে দেখে তাকে বারণ করেছিলাম, কারণ সে আমাদের লোক নয়।”
39 কিন্তু যীশু বললেন, “তাকে বারণ করো না, কারণ এমন কেউ নেই যে আমার নামে অলৌকিক কাজ করে সহজে আমার নিন্দা করতে পরে। 40 যে কেউই আমাদের বিপক্ষে নয় সে আমাদের সপক্ষে। 41 কেউ যদি খ্রীষ্টের লোক বলে তোমাদেরকে এক ঘটি জল দেয়, আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সে কোন মতেই নিজের পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হবে না।
পাপের কারণ সম্পর্কে যীশু সাবধান করে দিলেন
(মথি 18:6-9; লূক 17:1-2)
42 “আর এই যে সাধারণ লোক যারা আমায় বিশ্বাস করে, যদি কেউ তাদের একজনকে পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে সেই লোকের গলায় একটা বড় যাতাঁর পাট বেঁধে তাকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়াই তার পক্ষে ভাল। 43 তোমার হাত যদি তোমার পাপের কারণ হয়, তবে তাকে কেটে ফেলো, কারণ দুই হাত নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে পোড়ার থেকে বরং নুলো হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল। 44 [c] 45 তোমার পা যদি তোমার পাপের কারণ হয় তবে তাকে কেটে ফেলো, কারণ দুই পা নিয়ে নরকে যাওয়ার থেকে বরং খোঁড়া হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল। 46 [d] 47 আর যদি তোমার চোখ তোমার পাপের কারণ হয়, তবে সে চোখকে উপড়ে ফেল। দুচোখ নিয়ে নরকে যাওয়ার থেকে এক চোখ নিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভাল। 48 নরকে যে কীট মানুষকে খায় তারা কখনও মরে না এবং আগুন কখনও নেভে না।(A)
49 “লবণ দেওয়ার মত প্রত্যেকের ওপর আগুন দেওয়া হবে।
50 “লবণ ভাল, কিন্তু লবণ যদি লবণত্ব হারায়, তবে কেমন করে তাকে তোমরা আস্বাদযুক্ত করবে? তোমরা নিজের নিজের মনে লবণ রাখ এবং পরস্পর শান্তিতে থাক।”
5 “ইয়োব, তুমি যদি চাও তো চিৎকার কর, কিন্তু কেউ তোমার ডাকে সাড়া দেবে না!
তুমি কোন্ পবিত্র সত্তার দিকে ফিরবে?
2 একজন বোকা লোকের ক্রোধই তাকে হত্যা করবে।
একজন বোকা লোকের প্রচণ্ড আবেগই তাকে হত্যা করবে।
3 আমি একজন বোকা লোককে দেখেছিলাম যে ভেবেছিল সে নিরাপদে আছে।
কিন্তু সে হঠাৎ মারা গেল।
4 তার ছেলেদের সাহায্য করার জন্য কেউই ছিল না।
নগরদ্বারে[a] কেউ তাদের লাঞ্ছনা থেকে রক্ষা করে নি।
5 ক্ষুধিত লোকরা তার সব শস্য খেয়ে নিয়েছিল।
কাঁটাঝোপের মধ্যে যে শস্য গজিয়ে উঠেছিলো, এই ক্ষুধিত লোকরা তাও খেয়ে নিয়েছিল।
তাদের যা কিছু ছিল, লোভী লোকরা সবই নিয়ে গিয়েছিল।
6 শুধুমাত্র ধূলো থেকে খারাপ সময় উঠে আসে না।
সমস্যা হঠাৎ করে ভূমি ফুঁড়ে জন্মায় না।
7 কিন্তু মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হতে বাধ্য।[b]
ঠিক যেমন আগুন থেকে স্ফুলিঙ্গ ওড়ে।
8 কিন্তু ইয়োব, আমি যদি তুমি হতাম, আমি ঈশ্বরকে খুঁজতাম
এবং ঈশ্বরকে সম্বোধন করে আমার কথা বলতাম।
9 ঈশ্বর মহান কাজগুলি করেন যা কেউ পুরোপুরি বুঝতে পারে না।
তিনি এত বিস্ময়কর কাজ করেন যে তাদের গোনা যায় না।
10 ঈশ্বর পৃথিবীতে বৃষ্টি পাঠান।
তিনি জমির জন্য জল পাঠান।
11 ঈশ্বর একজন বিনয়ী লোককে উন্নীত করেন।
অতএব যারা বিলাপরত তারা বিজয়প্রাপ্ত[c] হয়।
12 ঈশ্বর চালাক ও মন্দ লোকদের ফন্দি বানচাল করে দেন
যাতে তাদের পরিকল্পনা সফল না হয়।
13 ঈশ্বর, চালাক লোকদেরও তাদের নিজেদের ফাঁদেই ধরেন।
তাই, সেই সব চালাকিও সফল হয় না।
14 ওরা দিনের বেলায় রাতের সম্মুখীন হয়
এবং দিনের বেলাতেই এমন করে হাতড়ে বেড়ায়, যেন রাত হয়ে গেছে।
15 ঈশ্বর দরিদ্র লোকদের মৃত্যু থেকে রক্ষা করেন।
দুর্জন লোকদের শক্তি থেকে তিনি দরিদ্র লোকদের রক্ষা করেন।
16 তাই দরিদ্র লোকদের আশা আছে।
অধর্ম তার মুখ বন্ধ করে।
17 “যার দোষ ঈশ্বর সংশোধন করে দেন সে তো ঈশ্বরের আশীর্বাদপূত!
তাই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যখন তোমায় শাস্তি দেন তখন কোন অভিযোগ করো না।
18 ঈশ্বর যে আঘাত দেন,
তিনি নিজেই সে আঘাতের শুশ্রূষা করেন।
হয়তো তিনি কাউকে আঘাত করেন
কিন্তু তাঁর হাত আরোগ্যও দান করে।
19 ঈশ্বর তোমাকে সব সময়ই উদ্ধার করবেন,
যতবারই সংকট আসুক না কেন, সেটা তোমাকে আঘাত করবে না।[d]
20 যখন দুর্ভিক্ষ হবে তখন ঈশ্বর তোমায় মৃত্যু থেকে রক্ষা করবেন।
যখন যুদ্ধ হবে তখন ঈশ্বর তোমায় মৃত্যু থেকে রক্ষা করবেন।
21 ঈশ্বর তোমাকে অপবাদ থেকে রক্ষা করবেন।
বিপর্যয় এলে তুমি ভয় পাবে না।
যখন মন্দ কিছু ঘটবে তখন তোমার ভয়ের কোন কারণ নেই।
22 দুর্ভিক্ষ ও ধ্বংসের দিনগুলোকে তুমি উপহাস করবে।
তুমি বন্য জন্তুদের ভয় পাবে না।
23 মনে হচ্ছে যেন বন্য জন্তু ও মাঠের পাথরের সঙ্গে তোমার একটি শান্তি চুক্তি রয়েছে।
এমনকি বন্য পশুরাও তোমার সঙ্গে শান্তিতে থাকবে।
24 তুমি জানবে যে তোমার বাড়ি শান্তিতে আছে।
তোমার সম্পত্তির হিসাব করে দেখবে কোন কিছুই খোয়া যায় নি।
25 তুমি জানবে যে তোমার প্রচুর সন্তানাদি হবে।
পৃথিবীতে যত ঘাস আছে তোমার উত্তরপুরুষদের সংখ্যাও ততগুলোই হবে।
26 তুমি সেই গমের মত হবে যে গম ফসল কাটা পর্যন্ত বাড়তে থাকে।
হ্যাঁ, বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত তুমি পূর্ণ শক্তিতে বেঁচে থাকবে।
27 “ইয়োব, এই বিষয়গুলো আমরা অনুধাবন করেছি এবং আমরা জানি সেগুলি সত্যি।
তাই ইয়োব, আমাদের কথা শোন, এবং তোমার নিজের জন্য সেগুলো শেখো।”
ঈশ্বর ও ইহুদী সমাজ
9 আমি খ্রীষ্টেতে আছি এবং সত্যি বলছি। পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত আমার বিবেকও বলছে যে আমি মিথ্যা বলছি না। 2 আমি ইহুদী সমাজের জন্য অন্তরে সবসময় গভীর দুঃখ ও বেদনা অনুভব করছি। 3 তারা আমার ভাই ও বোন, আমার স্বজাতি। তাদের যদি সাহায্য করতে পারতাম! এমন কি আমার এমন ইচ্ছাও জাগে যে তাদের বদলে আমি যেন অভিশপ্ত এবং খ্রীষ্ট থেকে বিচ্ছিন্ন হই। 4 তারা ইস্রায়েল বংশেরই মানুষ। ঈশ্বর তাদের পুত্র হবার অধিকার দিয়েছেন, নিজের মহিমা দেখিয়েছেন, ধর্ম নিয়ম দিয়েছেন। ঈশ্বর তাদেরই মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা, সঠিক উপাসনা পদ্ধতি এবং তাঁর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। 5 ঐ লোকেরাই আমাদের মহান পিতৃপুরুষদের বংশধর এবং খ্রীষ্ট এই জাতির মধ্য দিয়েই পার্থিব জগতে এসেছিলেন। ঈশ্বর, যিনি সবার ওপর কর্ত্তৃত্ব করেন, যুগে যুগে তিনি প্রশংসিত হোন্! আমেন!
6 আমি একথা বলছি না যে ঈশ্বরের যে প্রতিশ্রুতি তাদের জন্য ছিল তা তিনি পূর্ণ করেন নি। কিন্তু ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষই সত্যিকার ইস্রায়েলের লোক নয়। 7 এমনও নয় যে অব্রাহামের বংশের বলেই তারা সত্যিকারের সন্তান; কিন্তু ঈশ্বর বলেছিলেন, “কেবল ইস্হাক্ই তোমার বৈধ পুত্র হবে।”(A) 8 এর অর্থ হল এই যে দৈহিকভাবে জন্মপ্রাপ্ত অব্রাহামের সন্তানরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান নয়। অব্রাহামের প্রকৃত বংশধর তারাই যারা অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি অনুসারে জন্মলাভ করেছে। 9 তিনি অব্রাহামকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন: “নিরুপিত সময়ে আমি পুনর্বার আসব। তখন সারার এক পুত্র হবে।”(B)
10 শুধু তাই নয়, রিবিকাও একজন মানুষের কাছ থেকেই সন্তান পেয়েছিলেন, তিনি আমাদের পূর্বপুরুষ ইস্হাক। 11-12 সেই সন্তান দুটির জন্ম হবার পূর্বে ঈশ্বর রিবিকাকে বলেছিলেন: “তোমার সন্তানদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ কনিষ্ঠের দাস হবে।”(C) তাদের জন্মের পূর্বেই ঈশ্বর এই কথা জানিয়েছিলেন কারণ ঈশ্বরের সংকল্প অনুসারে তারা মনোনীত হয়েছিল। সেই সন্তান মনোনীত হল তার কৃত কোন কর্মের জন্য নয় বরং এই জন্যে যে ঈশ্বর তাকেই আহ্বান করেছিলেন। 13 আর শাস্ত্রে যেমন বলে: “আমি যাকোবকে ভালোবেসেছি, কিন্তু এষৌকে ঘৃণা করেছি।”(D)
14 তাহলে আমরা কি বলব? ঈশ্বরে কি অন্যায় আছে? আমরা তা বলতে পারি না। 15 ঈশ্বর, মোশিকে বলেছিলেন, “আমি যাকে দয়া করতে চাই, তাকেই দয়া করব। যাকে করুণা করতে চাই, তাকেই করুণা করব।”(E) 16 তাই ঈশ্বর তাকেই মনোনীত করেন যাকে করুণা করবেন বলে ঠিক করেছেন। তাই মানুষের চেষ্টা বা তার ইচ্ছার ওপর তাঁর মনোনয়ন নির্ভর করে না। 17 শাস্ত্রে আছে ঈশ্বর ফরৌণকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “তুমি আমার জন্য এই কাজ করবে, এই জন্যই আমি তোমাকে রাজা করেছি, যেন তোমার মধ্য দিয়ে আমি আমার ক্ষমতা প্রকাশ করতে পারি ও সারা জগতে আমার নাম ঘোষিত হয়।”(F)
18 সেজন্য ঈশ্বর যাকে দয়া করতে চান, তাকেই দয়া করেন আর যার অন্তর ঈশ্বর কঠোর করতে চান, তার অন্তর কঠোর করে তোলেন।
19 তাহলে তোমরা হয়তো আমাকে বলতে পার: “তবে ঈশ্বর কেন পাপের জন্য মানুষকে দোষী করেন?” কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা কে প্রতিরোধ করতে পারে? 20 তা সত্য, কিন্তু তুমি কে? ঈশ্বরকে প্রশ্ন করার কোন অধিকার তোমার নেই। মাটির পাত্র কি নির্মাণকর্তাকে প্রশ্ন করতে পারে? মাটির পাত্র কখনও নির্মাতাকে বলে না, “তুমি কেন আমাকে এমন করে গড়লে?” 21 কাদামাটির ওপরে কুমোরের কি কোন অধিকার নেই, সে কি একই মাটির তাল থেকে তার ইচ্ছামত দুরকম পাত্র তৈরী করতে পারে না? একটি বিশেষ ব্যবহারের জন্য আর অন্যটি সাধারণ ব্যবহারের জন্য?
22 ঈশ্বর যদিও চেয়েছিলেন, যে লোকেদের বিনাশের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তাদের ওপর তিনি তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন ও তাঁর ক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ দেবেন, তবু ঈশ্বর তাঁর ক্রোধের পাত্রদের প্রতি অসীম ধৈর্য্য দেখিয়েছেন। 23 যাতে সেই দয়ার পাত্রদের, যাদের তিনি মহিমা প্রাপ্তির যোগ্য করে তৈরী করেছিলেন, তাদের কাছে তাঁর মহিমার ঐশ্বর্য্য সম্বন্ধে পরিচয় করাতে পারেন। 24 আমরাই সেই লোক, ঈশ্বর যাদের আহ্বান করেছেন। ইহুদী বা অইহুদীর মধ্য থেকে ঈশ্বর আমাদের আহ্বান করেছেন। 25 এবিষয়ে হোশেয়ের পুস্তকে লেখা আছে:
“যারা আমার লোক নয়,
তাদের আমি নিজের লোক বলব,
যে প্রিয়তমা ছিল না
তাকে আমার প্রিয়তমা বলব।”(G)
26 “আর যেখানে ঈশ্বর বলেছিলেন
‘তোমরা আমার লোক নও’,
সেখানেই তাদের বলা যাবে জীবন্ত ঈশ্বরের সন্তান।”(H)
27 যিশাইয় ইস্রায়েল সম্বন্ধে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন:
“যদিও ইস্রায়েলীদের সংখ্যা সমুদ্র তীরের বালুকণার মত অগনিত হয়,
তবুও তাদের মধ্য থেকে অবশিষ্ট কিছু মানুষ শেষ পর্যন্ত উদ্ধার পাবে।
28 বিচারের ব্যাপারে প্রভু এই পৃথিবীতে যা করবেন বলেছেন, তিনি তা পূর্ণ করবেন, শিগ্গিরই তা শেষ করবেন।”(I)
29 এই রকম কথা যিশাইয় আগেই বলেছিলেন:
“সর্বশক্তিমান প্রভু যদি আমাদের জন্য
কিছু বংশধর রেখে না দিতেন
তবে এতদিনে আমরা সদোমের তুল্য হতাম,
আমরা এতদিনে ঘমোরার তুল্য হতাম।”(J)
30 তাহলে এসবের অর্থ কি? অর্থ এই, যারা অইহুদী তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার কোন চেষ্টা করে নি; তাদেরই ঈশ্বর ধার্মিক প্রতিপন্ন করলেন। তাদের বিশ্বাসের জন্য তারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হল। 31 আর ইস্রায়েলীয়রা বিধি-ব্যবস্থা পালন করার মধ্য দিয়ে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেও কৃতকার্য হয় নি। 32 কারণ তারা তাদের কৃতকার্যের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেছে। ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার জন্য তারা ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে নি, তারা ব্যাঘাতজনক পাথরে ধাক্কা পেয়ে হোঁচট খেয়েছে। 33 শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে:
“দেখ, আমি সিয়োনে একটি পাথর রাখছি
যাতে মানুষ হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে;
কিন্তু যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস করবে তারা কখনও লজ্জায় পড়বে না।”(K)
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International