Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
আদি 38

যিহূদা ও তামর

38 সেই সময় যিহূদা তার ভাইদের ছেড়ে হীরা নামে একটি লোকের সঙ্গে বাস করতে গেল। হীরা ছিলেন অদুল্লমীয় শহরের লোক। সেখানে যিহূদা এক কনানীয় স্ত্রীলোককে দেখতে পেয়ে তাকে বিয়ে করল। মেয়েটির পিতার নাম ছিল শূয়। কনানীয় মেয়েটি একটি পুত্রের জন্ম দিয়ে তার নাম রাখল এর। পরে সে আরেকটি পুত্রের জন্ম দিয়ে তার নাম রাখল ওনন। পরে তার শেলা নামে আরেকটি পুত্র হল। তৃতীয় পুত্রের জন্মের সময় যিহূদা কষীবে বাস করছিল।

যিহূদা তামর নামে এক কন্যাকে এনে তার সঙ্গে প্রথম পুত্র এরের বিয়ে দিল। কিন্তু এর অনেক মন্দ কাজ করায় প্রভু তার প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাকে হত্যা করলেন। তখন যিহূদা এরের ভাই ওননকে বলল, “যাও তোমার মৃত ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে শয়ন কর। তার স্বামী হও। নিজের ভাই এরের জন্য বংশ উৎপন্ন কর।”

ওনন বুঝল মিলনের ফলে সন্তান-সন্ততি হলে তা তার হবে না। ওনন তাই যৌন সঙ্গম করল। সে তার শরীরের অভ্যন্তরে বীর্য্য ত্যাগ করল না। 10 এই কাজে প্রভু ক্রুদ্ধ হলেন এবং ওননকেও মেরে ফেললেন। 11 তখন যিহূদা তার বৌমা তামরকে বলল, “যাও, তোমার পিতার বাড়ী ফিরে যাও। যে পর্যন্ত না আমার ছোট পুত্র শেলা বড় হয় সে পর্যন্ত বিয়ে না করে সেখানেই থাক।” যিহূদা আসলে ভয় পেয়েছিলেন, ভেবেছিলেন অন্য ভাইদের মতো হয়তো শেলাও মারা যাবে। তামর তার পিতার বাড়ী ফিরে গেল।

12 পরে যিহূদার স্ত্রী, শূয়ের কন্যার মৃত্যু হল। শোকের সময় গেলে যিহূদা তার অদুল্লমীয় বন্ধু হীরার সাথে মেষদের লোম ছাঁটতে তিম্নায় গেল। 13 তামর জানতে পারল যে তার শ্বশুর তিম্নায় তাঁর মেষদের লোম ছাঁটতে যাচ্ছেন। 14 তামর বিধবা বলে যে কাপড় পরত তা খুলে ফেলে অন্য কাপড় পরল ও তার মুখ ওড়না দিয়ে ঢাকল। তারপর সে তিম্নার কাছে অবস্থিত ঐনয়িম শহরের দিকে যে রাস্তা চলে গেছে তার ধারে বসল। তামর জানত যে যিহূদার ছোট পুত্র শেলা এখন বড় হয়েছে কিন্তু তবু শেলার সাথে তার বিয়ে দেবার কোন পরিকল্পনাই যিহূদা করে নি।

15 যিহূদা সেই পথে যেতে যেতে তাকে দেখে ভাবল বোধ হয় বেশ্যা। (বেশ্যার মত তার মুখ ওড়না দিয়ে ঢাকা ছিল।) 16 যিহূদা তার কাছে গিয়ে বলল, “এস আমার সাথে শোও।” (যিহূদা জানত না যে এই ছিল তামর, তার পুত্রবধূ।)

সে বলল, “আমায় কত দেবেন?”

17 যিহূদা উত্তর করল, “আমার পশুপাল থেকে তোমার জন্য একটা বাচ্চা ছাগল পাঠিয়ে দেব।”

সে বলল, “ঠিক আছে। কিন্তু ছাগলটা পৌঁছাবার আগে আমার কাছে কিছু বন্ধক রাখুন।”

18 যিহূদা জিজ্ঞেস করল, “তোমাকে যে ছাগল পাঠাব তার প্রমাণ হিসাবে তুমি আমার কাছে কি চাও?”

তামর বলল, “চিঠিতে মারবার তোমার ঐ মোহর, ও তার সুতো এবং হাঁটার ছড়িটাও আমায় দাও।” যিহূদা তাকে ঐ জিনিসগুলো দিল। তারপর যিহূদা ও তামর সহবাস করলে তামর গর্ভবতী হল। 19 তামর ঘরে ফিরে মুখের ওড়নাটা খুলে ফেলে বিধবার সাজে সাজল।

20 পরে যিহূদা তার বন্ধু হীরাকে ঐনয়িমে পাঠাল সেই বেশ্যাকে ছাগলটা দিতে। যিহূদা হীরাকে আরও বলল যেন সে তার কাছ থেকে সেই মোহর ও ছড়িটা নিয়ে আসে। কিন্তু হীরা তাকে খুঁজে পেল না। 21 হীরা ঐনয়িম শহরের লোকদের জিজ্ঞাসা করল, “রাস্তার ধারে বসে থাকা বেশ্যাটা কোথায়?”

লোকে উত্তর দিল, “এখানে কখনই কোন বেশ্যা ছিল না তো।”

22 তাই যিহূদার বন্ধু ফিরে এসে বলল, “সেই স্ত্রীলোককে খুঁজে পেলাম না। সেখানকার লোকজন বলল সেখানে কোন বেশ্যা কখনই ছিল না।”

23 তাই যিহূদা বলল, “সেইসব জিনিস তার কাছেই থাকুক। আমি চাই না যে লোক আমাদের নিয়ে হাসে। আমি ছাগলটা তাকে দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু খুঁজে পেলাম না। এটাই যথেষ্ট।”

তামর গর্ভবতী হল

24 তিন মাস পরে কেউ একজন যিহূদাকে বলল, “তোমার পুত্রবধু তামর বেশ্যার কাজ করেছে আর এখন সে গর্ভবতী হয়েছে।”

তখন যিহূদা বলল, “তাকে বাইরে নিয়ে এসে পুড়িয়ে দাও।”

25 সেই লোকটি তামরকে হত্যা করতে এলে সে তার শ্বশুরকে এক খবর পাঠাল। তামর বলল, “যে লোকটি আমায় গর্ভবতী করেছে এই জিনিসগুলি তার। এই জিনিসগুলির দিকে দেখ। এগুলো কার? এই মোহর ও সুতো কার? এই ছড়িটা কার?”

26 যিহূদা সেই জিনিসগুলো চিনতে পেরে বলল, “সেই ঠিক। আমারই ভুল হয়েছে। আমি আমার পুত্র শেলাকে দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেও তাকে দিই নি।” এরপর যিহূদা কিন্তু তার সাথে আর সহবাস করল না।

27 তামরের প্রসবের সময় উপস্থিত হলে তারা দেখল তার যমজ সন্তান হতে চলেছে। 28 প্রসবের সময় একটা বাচ্চা তার হাত বার করলে ধাইমা তার হাতে একটা লাল সুতো বাঁধল আর বলল, “এই বাচ্চাটা আগে জন্মাবে।” 29 কিন্তু বাচ্চাটা তার হাত গুটিয়ে নিলে অন্য বাচ্চাটা প্রথমে জন্মাল। তাই সেই ধাইমা বলল, “তুমি প্রথমে ঠেলে বেরিয়ে আসতে পেরেছ!” তাই তারা তার নাম পেরস রাখল। 30 এরপর অন্য শিশুটির জন্ম হল, যার হাতে লাল সুতো বাঁধা ছিল। তারা এর নাম রাখল সেরহ।

মার্ক 8

যীশু চার হাজারের বেশী লোককে খাওয়ালেন

(মথি 15:32-39)

সেই দিনগুলিতে আবার একবার অনেক লোকের ভীড় হল। তাদের কাছে খাবার ছিল না, তাই তিনি তাঁর শিষ্যদের ডেকে বললেন, “এই লোকদের জন্য আমার মমতা হচ্ছে, কারণ এরা আজ তিনদিন ধরে আমার কাছে রয়েছে, এদের কাছে কিছু খাবার নেই। যদি আমি এদের ক্ষুধার্ত ও অভুক্ত অবস্থায় বাড়ি পাঠাই, তবে এরা রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়বে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার বহু দূর থেকে এসেছে।”

তাঁর শিষ্যেরা এর উত্তরে বললেন, “এই জনমানবহীন জায়গায় আমরা কোথা থেকে এতগুলো লোকের খাবার জোগাড় করব?”

তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের কখানা রুটি আছে?”

তারা বলল, “সাতখানা।”

তখন তিনি লোকেদের মাটিতে বসতে আদেশ দিলেন। পরে সেই সাতটা রুটি তুলে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে রুটি গুলোকে টুকরো টুকরো করে পরিবেশনের জন্য শিষ্যদের হাতে তুলে দিলেন। তাঁরাও লোকদের মধ্যে পরিবেশন করলেন। তাঁদের কাছে কতগুলো ছোট মাছ ছিল; তিনি সেগুলোর জন্যও ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে শিষ্যদের বললেন এগুলো পরিবেশন করে দাও।

লোকরা খেয়ে তৃপ্তি পেল। অবশিষ্ট টুকরো দিয়ে তারা সাতটি ঝুড়ি ভর্ত্তি করল। সেদিন প্রায় চার হাজার লোক খেয়েছিল। এরপর তিনি তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন; 10 আর সঙ্গে সঙ্গে তিনি শিষ্যদের নিয়ে নৌকা করে দল্মনুথা অঞ্চলে চলে এলেন।

ফরীশীদের যীশুকে পরীক্ষার চেষ্টা

(মথি 16:1-4; লূক 11:16, 29)

11 পরে সেখানে ফরীশীরা এসে যীশুর সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিল। তাঁর কাছে আকাশ থেকে কোন অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চাইল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল তাঁকে পরীক্ষা করা। 12 তখন তিনি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, “এই যুগের লোকরা কেন অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চায়? আমি তোমাদের সত্যি বলছি কোন অলৌকিক চিহ্ন এই লোকদের দেখানো হবে না।” 13 তখন তিনি তাদের ছেড়ে নৌকা করে হ্রদের অপর পারে গেলেন।

ইহুদী নেতাদের সম্পর্কে যীশুর সতর্কবাণী

(মথি 16:5-12)

14 কিন্তু শিষ্যরা রুটি আনতে ভুলে গিয়েছিলেন: নৌকায় তাদের কাছে কেবল একখানা রুটি ছাড়া আর কোন রুটি ছিল না। 15 তখন তিনি তাদের সতর্ক করে দিয়ে বললেন, “সাবধান! তোমরা হেরোদ এবং ফরীশীদের খামিরের বিষয়ে সাবধান থেকো!”

16 তখন তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলেন, “আমাদের কাছে কোন রুটি নেই।”

17 তাঁরা যা বলছেন, তা বুঝতে পেরে যীশু বললেন, “তোমাদের রুটি নেই বলে কেন আলোচনা করছ? তোমরা এখনও কি দেখ না বা বোঝ না, তোমাদের মন কি এতই কঠিন? 18 চোখ থাকতে কি তোমরা দেখতে পাও না? কান থাকতে কি শুনতে পাও না? আর তোমাদের কি মনেও পড়ে না? 19 যখন আমি পাঁচ হাজার লোকের মধ্যে পাঁচটি রুটি টুকরো করে দিয়েছিলাম: তখন তোমরা কত টুকরি উদ্বৃত্ত রুটির টুকরো কুড়িয়ে নিয়েছিলে?”

তাঁরা বললেন, “বারো টুকরি।”

20 যীশু আবার বললেন, “আমি যখন সাতটা রুটি চার হাজার লোকের মধ্যে টুকরো করে দিয়েছিলাম তখন কত টুকরি উদ্বৃত্ত রুটির টুকরো তোমরা তুলে নিয়েছিলে?”

তাঁরা বললেন, “সাত টুকরি।”

21 তখন তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা কি এখনও বুঝতে পারছ না?”

বৈৎসৈদাতে যীশু এক অন্ধকে দৃষ্টি দিলেন

22 তারপর তাঁরা বৈৎসৈদায় এলেন: আর লোকরা তাঁর কাছে একটা অন্ধ লোককে নিয়ে এসে মিনতি করল যাতে তিনি তাকে স্পর্শ করেন। 23 তখন তিনি অন্ধ লোকটির হাত ধরে তাকে গ্রামের বাইরে নিয়ে গেলেন। তিনি লোকটির চোখে খানিকটা থুথু লাগিয়ে তার ওপরে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি কিছু দেখতে পাচ্ছ?”

24 সে চোখ তুলে চেয়ে বলল, “আমি মানুষ দেখতে পাচ্ছি; গাছের মত দেখতে, তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

25 তখন তিনি আবার তার চোখের ওপর হাত রাখলেন। এইবার লোকটি চোখ বড় বড় করে তাকাল। তার দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণভাবে ফিরে পেল এবং সবকিছু স্পষ্টভাবে দেখতে পেল। 26 তারপর তিনি তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, “এই গ্রামে যেও না।”

পিতরের স্বীকৃতি—যীশুই খ্রীষ্ট

(মথি 16:13-20; লূক 9:18-21)

27 তারপর যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা সেখান থেকে কৈসরিযা ফিলিপীয় অঞ্চলে চলে গেলেন। রাস্তার মধ্যে তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কে, এ বিষয়ে লোকের কি বলে?”

28 তাঁরা বললেন, “অনেকে বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন। কেউ কেউ বলে, আপনি এলিয়। আবার কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে একজন।”

29 তখন তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?”

পিতর তাঁকে বললেন, “আপনি সেই খ্রীষ্ট।”

30 তখন তিনি তাঁদের সাবধান করে দিয়ে বললেন, “তোমরা এ কথা কাউকে বলো না।”

যীশু বললেন তাঁর মৃত্যু অনিবার্য

(মথি 16:21-28; লূক 9:22-27)

31 এরপর তিনি তাঁদের এই শিক্ষা দিতে শুরু করলেন যে, মানবপুত্রকে অনেক দুঃখ ভোগ করতে হবে এবং বয়স্ক ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, হত্যা করবে এবং মৃত্যুর তিনদিন পর তিনি আবার বেঁচে উঠবেন। 32 এই কথা তিনি তাঁদের স্পষ্টভাবে বললেন।

তাতে পিতর তাঁকে একপাশে নিয়ে গিয়ে অনুযোগ করতে লাগলেন। 33 কিন্তু যীশু তাঁর শিষ্যদের দিকে মুখ ফিরিয়ে পিতরকে ধমক দিয়ে বললেন, “আমার সামনে থেকে দূর হও, শয়তান! কারণ তুমি ঈশ্বরের ইচ্ছার সমাদর করছ না; তুমি মানুষের মতোই ভেবে এই কথা বলছ।”

34 এরপর তিনি শিষ্যদেব সঙ্গে অন্যান্য লোকদেরও নিজের কাছে ডেকে বললেন, “কেউ যদি আমার সঙ্গে আসতে চায়, সে নিজেকে অস্বীকার করুক এবং তার নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার অনুসারী হোক্। 35 কারণ কেউ যদি নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চায় তবে সে তা হারাবে; কিন্তু কেউ যদি আমার এবং সুসমাচারের জন্য নিজের প্রাণ হারায় তবে তার জীবন চিরস্থায়ী হবে। 36 মানুষ যদি নিজের জীবন হারিয়ে সমস্ত জগৎ‌ লাভ করে তবে তার কি লাভ? 37 কিংবা মানুষ তার প্রাণের বিনিময়ে কি দিতে পারে? 38 যে কেউ এই ব্যভিচারী ও পাপীদের যুগে আমাকে এবং আমার শিক্ষাকে লজ্জার বিষয় মনে করে, মানবপুত্র যখন তাঁর পিতার মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে পবিত্র স্বর্গদূতদের সঙ্গে ফিরে আসবেন, তখন তিনিও সেই লোকের বিষয়ে লজ্জাবোধ করবেন।”

ইয়োব 4

ইলীফস কথা বললেন

তৈমনীয় ইলীফস উত্তর দিলো:

“যদি কেউ তোমার সঙ্গে কথা বলতে চায়, তুমি কি অধৈর্য্য হবে?
    কিন্তু তোমার সঙ্গে কথা বলা থেকে কে আমাকে থামাতে পারে?
ইয়োব, তুমি অনেক লোককে শিক্ষা দিয়েছো।
    দুর্বলকে তুমি শক্তি দিয়েছো।
যারা প্রায় পড়ে যাচ্ছিল তুমি তাদের উৎসাহিত করেছ।
    যাদের হাঁটু ভেঙে আসছিল তুমি তাদের সবল করেছ।
কিন্তু এখন তুমি সমস্যায় পড়েছ
    এবং তুমি নিরুৎসাহ হয়েছো।
সমস্যা তোমায় আঘাত করেছে
    এবং তুমি বিচলিত।
ঈশ্বরের প্রতি তোমার শ্রদ্ধা কি
    তোমাকে এই পরিস্থিতিতে আত্মবিশ্বাস যোগায় না?
তোমার সরল ও সৎ‌ জীবন কি
    তোমাকে এই পরিস্থিতিতে আশা দেয় না?
ইয়োব, অন্তত একজন নির্দোষ লোকের নাম কর যে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
    আমাকে ভালো লোকদের দেখাও যারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল।
আমি কিছু সমস্যা সৃষ্টিকারী মানুষ দেখেছি যারা অন্যের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।
    কিন্তু তারা সর্বদা শাস্তি পেয়েছে।
ঈশ্বরের শাস্তি ঐ লোকদের হত্যা করেছে।
    ঈশ্বরের ক্রোধ তাদের ধ্বংস করেছে।
10 মন্দ লোকরা সিংহের মত গর্জন ও গর্গর্ করে।
    কিন্তু ঈশ্বর ঐ মন্দ লোকদের চুপ করিয়ে দেন এবং ঈশ্বর তাদের দাঁত ভেঙে দেন।
11 হ্যাঁ, ঐ মন্দ লোকরা, সেই সিংহের মত যারা হত্যা করার জন্য কোন প্রাণী পায় না।
    তারা মারা যায় এবং তাদের পুত্ররা যত্রতত্র ঘুরে বেড়ায়।

12 “গোপনে আমার কাছে এক বার্তা এসেছে।
    আমি তা নিজের কানে শুনেছি।
13 সে ছিল একটি দুঃস্বপ্নেব মত
    যেটা লোকরা গভীরভাবে ঘুমিয়ে পড়লে আসে।
14 আমি ভয়ে কেঁপে উঠেছিলাম।
    আমার হাড়গোড় পর্যন্ত কেঁপে উঠেছিল।
15 আমার মুখের সামনে দিয়ে একটা আত্মা চলে গেল।
    আমার সমস্ত শরীর রোমাঞ্চিত হল।
16 সেই আত্মা আমার সামনে থেমে গেল।
    কিন্তু আমি দেখতে পাইনি তা কি ছিল।
আমার চোখের সামনে কিছু একটা অবয়ব ছিল মাত্র
    এবং চারদিক নিস্তদ্ধ ছিল।
তারপর আমি একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম:
17 ‘কোন লোক ঈশ্বরের চেয়ে বেশী সঠিক হতে পারে না।
    কোন ব্যক্তি তার স্রষ্টার চেয়ে বেশী শুদ্ধ হতে পারে না।
18 দেখ, ঈশ্বর তাঁর স্বর্গের দাসদের প্রতিও নির্ভর করতে পারেন না।
    ঈশ্বর তাঁর দূতদের মধ্যেও ভুল ত্রুটি দেখেন।
19 তাই সত্যিই মানুষ নশ্বর।
    ধূলার ভিতযুক্ত মাটির বাড়িতে যারা বাস করে তাদের ঈশ্বর কত কম বিশ্বাস করেন!
ঈশ্বর পতঙ্গের মত তাদের পিষে ফেলেন।
    মানুষ মাটির ঘরে বাস করে (মানুষের দেহ মাটির তৈরী)।
সেই মাটির ঘরের ভিত ধূলায় বা পাঁকের মধ্যে থাকে।
    একটা পতঙ্গের থেকেও সহজে তাদের দেহ নষ্ট করে ফেলা যায়!
20 সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত মানুষ টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙেই চলেছে।
    যেহেতু তারা শুধুই মাটির তৈরী সেহেতু তারা চিরতরে বিনষ্ট হয়।
21 তাদের তাঁবুর দড়ি খুলে নেওয়া হয়
    এবং প্রজ্ঞাবিহীন অবস্থায় তারা মারা যায়।’

রোমীয় 8

আত্মাতে জীবন

তাই যারা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে তারা বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবে না। কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে আত্মার যে বিধি-ব্যবস্থা জীবন আনে, তা আমাকে মুক্ত করেছে সেই পাপের ব্যবস্থা থেকে যা মৃত্যুর কারণ হয়। মোশির বিধি-ব্যবস্থা যা পারে নি তা ঈশ্বর সাধন করলেন; কারণ আমাদের স্বভাবজাত দুর্বলতার জন্য মোশির বিধি-ব্যবস্থা শক্তিহীন ছিল। তাই তিনি তাঁর নিজের পুত্রকে আমাদের মত মনুষ্যদেহে পাঠালেন, যেন তিনি মানুষের পাপের জন্য বলি হন। ঈশ্বর এইভাবে সেই মানবীয় দেহে পাপকে দণ্ডিত করলেন। যেন দেহের বশে নয় কিন্তু আত্মার বশে চলার দরুন আমাদের মধ্যে বিধি-ব্যবস্থার দাবী-দাওয়াগুলি পূর্ণ হয়।

যারা পাপ প্রবৃত্তির বশে চলে তাদের মন পাপ চিন্তাই করে। কিন্তু যারা পবিত্র আত্মার বশে চলে, তারা পবিত্র আত্মা যা চান সেই অনুসারে চিন্তা করে। আমাদের চিন্তা যদি দেহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তবে তার ফল হয় মৃত্যু। কিন্তু যদি পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত হয় তবে তার ফল হয় জীবন ও শান্তি। তাই যে মন মানুষের পাপ স্বভাব দ্বারা পরিচালিত সে ঈশ্বর বিরোধী, কারণ সে নিজেকে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থার অধীনে রাখে না। বাস্তবে সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা পালনে অসমর্থ। যারা তাদের দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা চালিত হয় তারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে না।

কিন্তু তোমরা তোমাদের দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা চালিত নও বরং আত্মা দ্বারা চালিত; অবশ্য যদি ঈশ্বরের আত্মা তোমাদের অন্তরে বিরাজ করেন তাহলে তুমি আত্মার দ্বারা চালিত হবে; কিন্তু যার মধ্যে খ্রীষ্টের আত্মা নেই সে খ্রীষ্টের নয়। 10 পাপের ফলে তোমাদের দেহ মৃত্যুর অধীন, কিন্তু খ্রীষ্ট যদি তোমাদের অন্তরে থাকেন, তবে পবিত্র আত্মা তোমাদের জীবন দান করেন, কারণ খ্রীষ্ট তোমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছেন। 11 ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন, আর ঈশ্বরের আত্মা যদি তোমাদের মধ্যে বাস করেন তবে তিনি তোমাদের মরণশীল দেহকে জীবনময় করবেন। ঈশ্বরই যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, তাঁর যে আত্মা তোমাদের মধ্যে আছে তিনি সেই আত্মার দ্বারা তোমাদের দেহকে সঞ্জীবিত করবেন।

12 তাই ভাই ও বোনেরা, আমরা ঋণী কিন্তু সেই ঋণ আমাদের দৈহিক প্রবৃত্তির কাছে নয়। আমরা অবশ্যই আর দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা জীবন পরিচালিত করব না। 13 কারণ যদি তোমরা দৈহিক প্রবৃত্তির দ্বারা চল তবে মরবে। কিন্তু পবিত্র আত্মার সাহায্যে যদি দেহের মন্দ কাজগুলি থেকে বিরত থাক তবে জীবন পাবে।

14 ঈশ্বরের প্রকৃত সন্তানরা ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়। 15 তোমরা যে আত্মাকে পেয়েছ তা তো দাসত্বের আত্মা নয় যে পুনরায় ভয়ে থাকবে। বরং তোমরা যে আত্মাকে পেয়েছ তার দ্বারা পুত্রত্ব পেয়েছ; আর সেই আত্মাতে আমরা ডাকি, “আব্বা, পিতা।” 16 পবিত্র আত্মা নিজেও আমাদের আত্মার সঙ্গে সাক্ষ্য দিয়ে বলছেন যে আমরা ঈশ্বরের সন্তান। 17 আর যদি সন্তান হই, তবে আমরা তাঁর উত্তরাধিকারী এবং খ্রীষ্টের সাথে উত্তরাধিকারী, যদি অবশ্য খ্রীষ্ট যেমন দুঃখভোগ করেছিলেন, তেমনি আমরা তাঁর সঙ্গে দুঃখভোগ করি, আর তা করলে আমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে মহিমান্বিত হব।

ভবিষ্যতে আমরা মহিমান্বিত হব

18 এখন আমরা দুঃখ ভোগ করছি; কিন্তু আমাদের জন্য যে মহিমা প্রকাশিত হবে তার সঙ্গে বর্তমান কালের এই দুঃখভোগ তুলনার যোগ্যই নয়। 19 বিশ্বসৃষ্টি ব্যাকুল প্রতীক্ষায় রয়েছে ঈশ্বর কবে তাঁর পুত্রদের প্রকাশ করবেন। সমগ্র বিশ্ব এর জন্য আকুল প্রতীক্ষায় রয়েছে। 20 বিশ্ব সৃষ্টিকে তো ব্যর্থতার বন্ধনে বেঁধে রাখা হয়েছে যদিও তা তার নিজের ইচ্ছায় নয় কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছায়, যিনি সৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রেখেছেন। 21 তবুও বিশ্বসৃষ্টির এই আশা রয়েছে যে সেও একদিন এই অবক্ষয়ের দাসত্ব থেকে মুক্ত হবে আর ঈশ্বরের সন্তানদের মহিমাময় স্বাধীনতার অংশীদার হবে।

22 আমরা জানি যে এখন পর্যন্ত ঈশ্বরের সমস্ত সৃষ্টি ব্যথায় আর্তনাদ করছে যেমন করে নারী সন্তান প্রসবের ব্যথা ভোগ করে। 23 কেবল গোটা বিশ্ব নয়, আমরাও যাঁরা পবিত্র আত্মাকে উদ্ধারের জন্য প্রথম ফলরূপে পেয়েছি, আমাদের দেহের মুক্তিলাভের প্রতীক্ষায় অন্তরে আর্তনাদ করছি। 24 আমরা উদ্ধার পেয়েছি তাই আমাদের অন্তরে এই প্রত্যাশা রয়েছে। প্রত্যাশার বিষয় প্রত্যক্ষ হলে তা প্রত্যাশা নয়। যা পাওয়া হয়ে গেছে তার জন্য কে প্রত্যাশা করে? 25 আমরা যা এখনও পাই নি তারই জন্য প্রত্যাশা করছি, ধৈর্য্য্যের সঙ্গেই তার জন্য প্রতীক্ষা করছি।

26 একইভাবে আমাদের দুর্বলতায় পবিত্র আত্মাও আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন, কারণ আমরা কিসের জন্য প্রার্থনা করব জানি না, তাই স্বয়ং পবিত্র আত্মা আমাদের হয়ে অব্যক্ত আর্তস্বরে আবেদন জানিয়ে থাকেন। 27 মানুষের অন্তরে কি আছে ঈশ্বর তা দেখতে পান; আর ঈশ্বর পবিত্র আত্মার বাসনা কি তা জানেন; কারণ পবিত্র আত্মা ভক্তদের হয়ে ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে সেই আবেদন করেন।

28 আমরা জানি যে সব কিছুতে তিনি তাদের মঙ্গলের জন্য কাজ করেন যারা ঈশ্বরকে ভালবাসে, যারা তাঁর সংকল্প অনুসারে আহুত। 29 জগৎ‌ সৃষ্টির পূর্বে ঈশ্বর যাদের জানতেন, তাদের তিনি তাঁর পুত্রের মত করবেন বলে মনস্থ করলেন। এইভাবে যীশু হবেন অনেক ভাইদের মধ্যে প্রথমজাত। 30 আগে থেকে তিনি যাদের বেছে রেখেছিলেন তাদের আহ্বান করলেন; যাদের তিনি আহ্বান করলেন তাদের ধার্মিক গন্য করলেন এবং যাদের তিনি ধার্মিক গন্য করলেন তাদের মহিমান্বিত করলেন।

খ্রীষ্ট যীশুর মধ্যেই ঈশ্বরের ভালবাসা

31 এইসব দেখে আমরা কি বলব? ঈশ্বর যখন আমাদেরই পক্ষে তখন আমাদের বিপক্ষে কে যাবে? 32 যিনি তাঁর নিজ পুত্রকেই নিষ্কৃতি দেন নি, এমন কি আমাদের সকলের জন্যে তাঁকে মৃত্যুর হাতে সঁপে দিলেন, তখন তিনি তাঁর পুত্রদানের সঙ্গে সবকিছুই কি আমাদের দান করবেন না? 33 ঈশ্বর নিজের বলে যাদের মনোনীত করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কে আনবে? ঈশ্বরই তাদের ধার্মিক করেছেন। 34 খ্রীষ্ট যীশু যিনি মারা গেলেন ও মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠলেন, তিনি ঈশ্বরের ডানদিকে বসে আছেন আর আমাদের জন্য ঈশ্বরের কাছে মিনতি করছেন। 35 খ্রীষ্টের ভালবাসা থেকে কোন কিছুই কি আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারে? দুঃখ, দুর্দশা, ক্লেশ, সঙ্কট, তাড়না, দুর্ভিক্ষ, নগ্নতা বা প্রাণসংশয় কি তরবারির মৃত্যু? 36 যেমন শাস্ত্রে লেখা আছে:

“তোমার জন্য আমরা সমস্ত দিন মৃত্যুবরণ করছি।
    লোকচক্ষে আমরা বলির মেষের মতো।” (A)

37 কিন্তু ঈশ্বর, যিনি আমাদের ভালবাসেন তাঁর দ্বারা আমরা ঐ সবকিছুতে পূর্ণ বিজয়লাভ করি। 38-39 কারণ আমি নিশ্চিতভাবে জানি যে কোন কিছুই প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নিহিত ঐশ্বরিক ভালবাসা থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না, মৃত্যু বা জীবন, কোন স্বর্গদূত বা প্রভুত্বকারী আত্মা, বর্তমান বা ভবিষ্যতের কোন কিছু, উর্দ্ধের বা নিম্নের কোন প্রভাব কিংবা সৃষ্ট কোন কিছুই আমাদের সেই ভালবাসা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International