Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
আদি 33

যাকোব সাহসের পরিচয় দিলেন

33 যাকোব তাকিয়ে দেখল এষৌ আসছেন। এষৌ তাঁর সঙ্গে 400 জন লোক নিয়ে আসছিলেন। যাকোব তার পরিবারকে চারটি দলে ভাগ করল। লেয়া এবং তার সন্তানরা একটি দলে, রাহেল ও যোষেফ আর একটি দলে এবং দুই দাসী ও তাদের সন্তানরা আরও দুটি দলে ছিল। যাকোব তার দাসীদের সন্তানদের সামনে রাখল। লেয়া এবং তার সন্তানদের সে তাদের পেছনে রাখল। যাকোব রাহেল ও যোষেফকে সবশেষে রাখল।

যাকোব নিজে এষৌর দিকে এগিয়ে গেল। এর ফলে এষৌর সাথেই প্রথমে তার সাক্ষাৎ হল। যাকোব তার ভাইয়ের দিকে হেঁটে যাবার সময় সাতবার আভূমি প্রণত হল।

এষৌ যাকোবকে দেখতে পেয়ে তার সাথে দেখা করার জন্য দৌড়ে গেলেন। এষৌ যাকোবের গলা জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন। তারপর তাঁরা দুজনেই কাঁদলেন। এষৌ তাকিয়ে সেই স্ত্রীলোক ও শিশুদের দেখতে পেয়ে বললেন, “তোমার সাথে ঐ লোকজনরা কারা?”

যাকোব উত্তরে বললেন, “ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আমাকে এইসব সন্তান-সন্ততিদের দিয়েছেন।”

তারপর সন্তানদের নিয়ে দুই দাসী এষৌর সঙ্গে দেখা করতে গেল। তারা তাঁর সামনে সশ্রদ্ধ প্রণিপাত করল। এরপর লেয়া ও তার সন্তানরা এষৌর সঙ্গে দেখা করে তাঁর সামনে সশ্রদ্ধভাবে উপুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করল। শেষে রাহেল ও যোষেফ এষৌর সঙ্গে দেখা করে উপুড় হয়ে প্রণাম করল।

এষৌ বললেন, “আমি এখানে আসার সময় যে জনসমারোহ দেখতে পেলাম তা এবং এইসব পশুই বা কিসের জন্য?”

যাকোব বলল, “ঐ সব আপনার জন্য আমার উপহার। যেন আপনি আমাকে গ্রহণ করেন।”

কিন্তু এষৌ বললেন, “তোমাকে উপহার দিতে হবে না ভাই আমার যথেষ্ট রয়েছে।”

10 যাকোব বলল, “তা না, আমার মিনতি এই যদি সত্যিসত্যি আপনি আমাকে গ্রহণ করে থাকেন তবে আমি যে উপহার আপনাকে দিই তা গ্রহণ করুন। আমি আবার আপনার মুখ দেখতে পেয়ে আনন্দিত। যেন ঈশ্বরেরই মুখ দর্শন করলাম। আপনি যে আমাকে গ্রহণ করলেন এতেই আমি খুব খুশী। 11 সেইজন্য বিনয় করি আমি যে যে উপহার আপনার জন্য এনেছি তা গ্রহণ করুন। ঈশ্বর আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন তাই আমার প্রয়োজনের অতিরিক্তই রয়েছে।” এইভাবে যাকোব তার উপহারগুলি স্বীকার করার জন্য এষৌর কাছে বিনতি করল। সেইজন্য এষৌ উপহারগুলি স্বীকার করলেন।

12 তারপর এষৌ বললেন, “এবার তুমি তোমার যাত্রা পথে চলতে পার। আমি তোমার সঙ্গে যাব।”

13 কিন্তু যাকোব তাকে বলল, “আপনি জানেন যে আমার শিশুরা দুর্বল এবং আমাকে আমার পশুপাল সম্পর্কে সাবধান হতে হবে। যদি আমি তাদের একদিনে এতদূর যেতে বাধ্য করি, তবে সব পশুই মারা পড়বে। 14 সেইজন্য আপনি আগে আগে যান। গবাদিপশু এবং অন্যান্য পশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সন্তানরা যাতে খুব ক্লান্ত না হয়ে পড়ে সেই দিক দেখে আমি খুব ধীর গতিতে যাব। আমি সেয়ীরে আপনার সঙ্গে দেখা করব।”

15 তাই এষৌ বললেন, “তবে তোমাকে সাহায্য করার জন্য আমার কিছু লোক তোমার কাছে রেখে যাই।”

কিন্তু যাকোব বলল, “আপনি বড়ই দয়ালু কিন্তু সেটারই বা প্রয়োজন কি?” 16 সেদিন এষৌ সেয়ীরের পথে যাত্রা শুরু করলেন। 17 কিন্তু যাকোব সুক্কোতে গেল। সেই জায়গায় সে নিজের জন্য একটা গৃহ তৈরী করল আর তার পশুপালের জন্য ছাউনি তৈরী করল। এইজন্য সেই জায়গার নাম রাখা হল সুক্কোৎ।

18 যাকোব নিরাপদে পদ্দম্-অরাম হতে যাত্রা করে কনান দেশের শিখিম নগরে এসে উপস্থিত হল। সেই শহরের কাছে এক মাঠের মধ্যে সে শিবির স্থাপন করল। 19 শিখিমের পিতা হামোরের কাছ থেকে যাকোব ঐ মাঠটি 100 রৌপ্য খণ্ড দিয়ে কিনেছিল। 20 যাকোব সেই জায়গায় ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য এক বেদী তৈরী করে তার নাম রাখল, “এল্ ইলোহে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর।”

মার্ক 4

একজন চাষীর বীজ বোনার কাহিনী

(মথি 13:1-9; লূক 8:4-8)

পরে আবার তিনি হ্রদের ধারে লোকদের কাছে শিক্ষা দিতে লাগলেন। তাতে এত লোক তাঁর কাছে জড়ো হল যে, তিনি একটা নৌকায় উঠে বসলেন আর হ্রদের পাড়ে সমস্ত লোকরা এসে ভীড় করল। তখন দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা দিতে লাগলেন, বললেন,

“শোন! এক চাষী বীজ বুনতে গেল। বোনার সময় কতকগুলো বীজ পথের পাশে পড়ল, তাতে পাখিরা এসে তা খেয়ে ফেলল। আবার কতকগুলো বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, সেখানে বেশী মাটি ছিল না। বেশী মাটি না থাকাতে খুব তাড়াতাড়ি বীজ থেকে অঙ্কুর বার হল: কিন্তু সূর্য ওঠার সাথে সাথে অঙ্কুরগুলো শুকিয়ে গেল, কারণ এর শেকড় গভীরে ছিল না। কতকগুলো বীজ কাঁটাঝোপের মধ্যে গিয়ে পড়ল, কাঁটাবন বেড়ে গিয়ে চারাগাছগুলোকে বাড়তে দিল না, ফলে সে গাছে কোন ফল হল না। কতকগুলো বীজ ভাল জমিতে পড়ল এবং তার থেকে অঙ্কুর বেরল, আর তা বেড়ে ফল দিল। যা বোনা হয়েছিল তার ত্রিশ গুণ, ষাট গুণ ও একশো গুণ ফল দিল।”

তিনি তাদের বললেন, “যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক।”

যীশু কেন দৃষ্টান্তমূলক কাহিনীর ব্যবহার করলেন

(মথি 13:10-17; লূক 8:9-10)

10 পরে যখন তিনি একা ছিলেন, তাঁর শিষ্যরা সেই বারোজন প্রেরিতের সাথে তাঁকে তাঁর দৃষ্টান্তের অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন।

11 তখন তিনি তাঁদের বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ়তত্ত্ব তোমাদের বলা হয়েছে; কিন্তু যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের বাইরের লোক তাদের কাছে সব কিছুই দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বলা হচ্ছে। 12 যাতে,

‘তারা দেখবে কিন্তু উপলদ্ধি করতে পারবে না।
    তারা শুনবে অথচ বুঝবে না,
পাছে তারা ফিরে আসে ও তাদের ক্ষমা করা যায়।’”(A)

যীশু বীজ বোনার দৃষ্টান্ত ব্যাখ্যা করলেন

(মথি 13:18-23; লূক 8:11-15)

13 তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কি এই দৃষ্টান্তের অর্থ বুঝতে পার না? তবে কেমন করে অন্য সব দৃষ্টান্ত বুঝবে? 14 সেই চাষী হল সেই লোক, যে ঈশ্বরের শিক্ষা মানুষেব কাছে নিয়ে যায়। 15 কিছু লোক সেই পথের পাশে পড়া বীজের মতো, যাদের মধ্যে ঈশ্বরের শিক্ষা বোনা যায়, আর তারা শোনার সঙ্গে সঙ্গে শয়তান এসে তাদের মন থেকে যে শিক্ষা বোনা হয়েছিল তা নিয়ে যায়।

16 “কিছু লোক সেই পাথুরে জমিতে পড়া বীজের মতো, যারা শিক্ষা শোনার সাথে সাথে তা আনন্দে গ্রহণ করে। 17 কিন্তু তাদের হৃদয়ের গভীরে মূল যায় না, তারা অল্প সময় স্থির থাকে। সেই শিক্ষা গ্রহণের জন্য যেই তাদের ওপর কষ্ট অথবা তাড়না আসে, অমনি তারা সেই পথ ছেড়ে দেয়।

18 “কিছু লোক সেই কাঁটাঝোপে বোনা বীজের মতো যারা শিক্ষা শোনে, 19 কিন্তু সংসারের চিন্তা, অর্থের মায়া ও অন্যান্য বিষয়ের অভিলাষ মনের ভেতর গিয়ে ঐ বাক্য চেপে রাখে, আর তাই তাতে কোন ফল হয় না।

20 “আর কিছু লোক সেই উর্বর জমিতে পড়া বীজের মত, যারা সেই বাক্য সকল শুনে গ্রহণ করে এবং ত্রিশ গুণ, কেউ ষাট গুণ ও কেউ শত গুণ ফল উৎপন্ন করে।”

তোমাদের যা আছে তা অবশ্যই ব্যবহার করো

(লূক 8:16-18)

21 তিনি তাদের আরো বললেন, “প্রদীপ জ্বেলে কি কেউ ধামা চাপা দিয়ে বা খাটের নীচে রাখে? বাতিদানের ওপরে রাখবার জন্য কি তা জ্বালে না? 22 কারণ এমন গোপন কিছুই নেই যা প্রকাশ করা যাবে না, এমন লুকানো কিছু নেই যা প্রকাশ হবে না। 23 যদি তোমাদের কান থাকে তবে শোন! 24 তারপর তিনি তাদের বললেন, তোমরা যা শুনছ সেই বিষয়ে মনোযোগ দাও। যে দাঁড়িপাল্লায় তুমি মাপবে সেই দাঁড়িপাল্লায় তোমাদের জন্যও মেপে দেওয়া হবে, এমনকি আরো বেশী দেওয়া হবে। 25 কারণ যার আছে তাকে আরো দেওয়া হবে; আর যার নেই তার যা আছে তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে।”

যীশু বীজের দৃষ্টান্তমূলক কাহিনী ব্যবহার করলেন

26 তিনি আরো বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য এইরকম, একজন লোক জমিতে বীজ ছড়াল। 27 পরে সে দিন রাত ঘুমিয়ে জেগে উঠল; ইতিমধ্যে ঐ বীজ থেকে অঙ্কুর হল ও বাড়তে লাগল; কেমন করে বাড়ছে সে তা জানল না। 28 জমিতে নিজে থেকে চারা গাছ বড় হতে লাগল। প্রথমে অঙ্কুর, তারপর শীষ এবং শীষের মধ্যে সম্পূর্ণ শস্য দানা হল। 29 সেই ফসল পাকলে পরে সে সাথে সাথে কাস্তে লাগাল কারণ ফসল কাটার সময় হয়েছে।”

ঈশ্বরের রাজ্য সরষে দানার মতো

(মথি 13:31-32, 34-35; লূক 13:18-19)

30 যীশু বললেন, “আমরা কিসের সাথে ঈশ্বরের রাজ্যের তুলনা করব? কোন্ দৃষ্টান্তের সাহায্যেই বা তা বোঝাব? 31 এটা হল সরষে দানার মতো, সেই বীজ মাটিতে বোনার সময় মাটির সমস্ত বীজের মধ্যে সবচেয়ে ছোট; 32 কিন্তু রোপণ করা হলে তা বাড়তে বাড়তে সমস্ত চারাগাছের থেকে বড় হয়ে ওঠে এবং তাতে লম্বা লম্বা ডালপালা গজায় যাতে পাখিরা তার ছায়ার নীচে বাসা বাঁধতে পারে।”

33 এইরকম আরও অনেক দৃষ্টান্তের সাহায্যে তিনি তাদের কাছে শিক্ষা দিতেন; তিনি তাদের বোঝবার ক্ষমতা অনুসারে শিক্ষা দিতেন। 34 দৃষ্টান্ত ছাড়া তাদের কিছুই বলতেন না; কিন্তু শিষ্যদের সঙ্গে একা থাকার সময়, তিনি তাদের সমস্ত কিছু বুঝিয়ে বলতেন।

যীশু ঝড় থামালেন

(মথি 8:23-27; লূক 8:22-25)

35 ঐদিন সন্ধ্যে হলে তিনি শিষ্যদের বললেন, “চল, আমরা হ্রদের ওপারে যাই।” 36 তখন তাঁরা লোকদের বিদায় দিয়ে, তিনি নৌকায় যে অবস্থায় বসেছিলেন, তেমনিভাবেই তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, সেখানে আরও নৌকা তাদের সঙ্গে ছিল। 37 দেখতে দেখতে প্রচণ্ড ঝড় উঠল এবং ঢেউগুলো নৌকায় এমন আছড়ে পড়তে লাগল যে নৌকা জলে ভরে উঠতে লাগল। 38 সেইসময় যীশু নৌকার পিছন দিকে বালিশে মাথা দিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁরা তাঁকে জাগিয়ে বললেন, “গুরু, আপনার কি চিন্তা হচ্ছে না যে আমরা সকলে ডুবতে বসেছি?”

39 তখন তিনি জেগে উঠে ঝড়কে ধমক দিলেন ও সমুদ্রকে বললেন, “থাম! শান্ত হও!” সঙ্গে সঙ্গে ঝড় থেমে গেল, আর সবকিছু শান্ত হল।

40 তখন তিনি তাদের বললেন, “তোমরা এত ভীতু কেন? তোমাদের কি এখনও বিশ্বাস হয় নি?”

41 কিন্তু শিষ্যরা আরও ভয় পেয়ে পরস্পরের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, “ইনি তবে কে? এমন কি ঝড় এবং সমুদ্রও এঁর কথা শোনে।”

ইষ্টের 9-10

ইহুদীদের জয়

রাজার আগের দেওয়া আদেশ অনুযায়ী, দ্বাদশ মাসের অর্থাৎ‌ অদর মাসের ত্রয়োদশ দিনে ইহুদীরা তাদের শত্রুদের দ্বারা আক্রান্ত হবে বলে ঠিক হয়েছিল। ঐ দিনে ইহুদীদের শত্রুরা তাদের হারিয়ে দেবার আশা করেছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেল। যে সমস্ত শত্রু তাদের ঘৃণা করতো, ইহুদীরা তাদের চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী হয়ে উঠল। রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যের সমস্ত প্রদেশে সর্বত্র ইহুদীরা তাদের শত্রুদের আক্রমণ করার জন্য তাদের শহরে মিলিত হল। এই সম্মিলিত আক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আর কোন দলের না থাকায়, সকলে ইহুদীদের ভয় পেতে শুরু করলো। প্রত্যেকটি প্রদেশের রাজকর্মচারী, প্রশাসক ও নেতারা ইহুদীদের সাহায্য করতে লাগলো। এইসব গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মর্দখয়ের ভয়ে ইহুদীদের সাহায্য করছিল, কারণ মর্দখয় ইতিমধ্যে রাজপ্রাসাদের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। প্রত্যেকটি প্রদেশে সকলে মর্দখয়ের নাম ও তাঁর ক্ষমতার কথা জানতো। এবং মর্দখয়ের ক্ষমতা এমশঃ বেড়েই চলছিল।

ইহুদীরা তাদের সমস্ত শত্রুদের পরাজিত করলো। যেসব লোকেরা তাদের ঘৃণা করতো তারা তাদের সঙ্গে যা খুশি তাই করলো। অনেককে তলোয়ার দিয়ে হত্যাও করলো। শুধু রাজধানী শূশনেই ইহুদীরা 500 ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। ইহুদীরা হত্যা করেছিল পর্শন্দাথ, দল্‌ফোন, অস্পাথ, পোরাথ, অদলিয়, অরীদাথ, পর্মস্ত, অরীষয়, অরীদয় এবং বয়িষাথকে। এরা হল হামনের দশ পুত্র। 10 হামন ছিল হম্মদাথার পুত্র। সে ছিল ইহুদীদের শত্রু। ইহুদীরা তার ছেলেদের হত্যা করেছিল কিন্তু তাদের সম্পত্তিতে হাত দেয়নি।

11 রাজা যখন সেদিন রাজধানী শূশনে কত জনকে হত্যা করা হয়েছে জানতে পারলেন 12 তখন তিনি রাণী ইষ্টেরকে বললেন, “হামনের 10 পুত্র সহ 500 জনকে ইহুদীরা শূশনে হত্যা করেছে। এবার বলো রাজ্যের অন্যান্য প্রদেশে তুমি কি চাও? তুমি আমাকে যা বলবে আমি তাই করবো।”

13 ইষ্টের তখন রাজাকে বললেন, “যদি রাজা চান, তাহলে শূশনে ইহুদীরা আজ যা করেছে, আগামীকালও আবার তা করবার অনুমতি দিন। প্রতিশোধ নেবার জন্য ইহুদীদের আরও একদিন অনুমতি দিন। হামনের 10 জন পুত্রের দেহ ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দেওয়া হোক্।”

14 তখন রাজা শূশনে এই নির্দেশের মেয়াদ একদিন বাড়িয়ে দিলেন এবং হামনের 10 পুত্রের মৃতদেহও কথা মতো ঝুলিয়ে দেওয়া হল। 15 পরের দিন অর্থাৎ‌ অদর মাসের 14 দিনের দিন ইহুদীরা শূশনে আরো 300 জনকে হত্যা করলো, তবে তাদের সম্পত্তি লুঠ করেনি।

16 একই সময়ে, অন্যান্য প্রদেশের ইহুদীরা তাদের নিজেদের রক্ষার জন্য শক্তি সঞ্চয় করতে একজোট হল। আক্রমণের সময় ইহুদীরা তাদের 75,000 জন শত্রুকে হত্যা করল। কিন্তু তারা তাদের শত্রুদের কোন কিছু লুঠ করেনি। 17 অন্যান্য প্রদেশগুলিতে এ ঘটনা ঘটেছিল অদর মাসের ত্রয়োদশ দিনে। চতু্র্দশ দিনে ইহুদীরা সকলে খুশি মনে বিশ্রাম নিল এবং ঐ দিনটিকে একটি খুশির ছুটির দিন হিসেবে পালন করলো।

পূরীমের উৎসব

18 শূশনের ইহুদীরা অদর মাসের 13 ও 14 তারিখ একত্রিত হবার পর অদর মাসের 15 তারিখ দিনটিকে খুশির ছুটির দিন হিসেবে পালন করলো। 19 গ্রামেগঞ্জে ইহুদীরা অদর মাসের 14 তারিখে তারা পূরীম উৎসব উদ্‌যাপন করলো এবং দিনটিকে ছুটির দিন হিসেবে পালন করলো। ওই দিন তারা একটি ভোজসভার আয়োজন করেছিল এবং একে অপরকে উপহার দিয়েছিল।

20 মর্দখয় এসব ঘটনা লিখে রাখলেন। তারপর রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যের কাছে ও দূরের সবকটি রাজ্যের সমস্ত ইহুদীদের মর্দখয় একটি চিঠি লিখলেন। 21 প্রতি বছর অদর মাসের 14 ও 15 তারিখ পূরীম উৎসব উদ্‌যাপন করার অনুরোধ জানিয়ে মর্দখয় ইহুদীদের চিঠি লিখলেন। 22 ইহুদীদের ওই দিন দুটি পালন করতে বলা হল কারণ ওই দিনে ইহুদীরা তাদের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। তাছাড়াও, ওই মাসটি ছিল উৎসব পালনের একটি বিশেষ মাস, যেহেতু তাদের দুঃখ ও বিষাদ, আনন্দ ও খুশির উৎসবে পরিণত হয়েছিল। মর্দখয় ওই দুটি দিনকে সর্বসাধারণ ছুটির দিন হিসেবে ভোজসভার মাধ্যমে পালন করতে এবং একে অপরকে ও দীন-দুঃখীকে উপহার দিয়ে পালন করতে লিখেছিলেন।

23 মর্দখয় যা লিখেছিলেন ইহুদীরা সকলেই তাতে সম্মত হল এবং যে আনন্দ উৎসব তারা শুরু করেছিল তা চালিয়ে যাবে বলে কথা দিল।

24 সমস্ত ইহুদীদের শত্রু অগাগীয় হম্মদাথার পাত্র হামন ইহুদীদের ধ্বংস করার জন্য একটি দিন বেছেছিলেন। তিনি ইহুদী নিধনের জন্য দিনটি বেছে ছিলেন ঘুঁটি চেলে। (সে সময়ে ঘুঁটি কে বলা হত “পূর” তাই ছুটির দিনটির নাম দেওয়া হয়েছিল “পূরীম।”) 25 হামন এসব চক্রান্ত করেছিলেন কিন্তু রাণী ইষ্টের গিয়ে রাজার সঙ্গে কথা বলার পর রাজা নতুন নির্দেশ দিলেন। যার ফলে শুধু যে হামনের পরিকল্পিত চক্রান্ত নষ্ট হল তাই নয়, তার পরিবারেও অমঙ্গলের ছায়া নেমে এলো। হামন ও তার সন্তানদের ফাঁসি হল।

26-27 এসময়ে অক্ষকে বলা হত “পূরীম।” তাই এই ছুটির দিনটিকে বলা হোত “পূরীম।” সে কারণেই মর্দখয়ের নির্দেশ মেনে সেই থেকে ইহুদীরা প্রতি বছর এই দুটি দিন উদ্‌যাপন করত। 28 তারা, তাদের প্রতি কি ঘটতে দেখেছিল তা মনে রাখার জন্যই এই উৎসব পালন করা শুরু করলো। ইহুদীরা এবং যে সমস্ত লোকরা তাদের দলে মিশে গিয়েছিল, তারা সবাই প্রতিবছর সঠিক সময়ে, সঠিক ভাবে এই ছুটির দিন পালন করত। প্রত্যেক প্রজন্মের, প্রতিটি পরিবারই এই দুটি দিনের কথা মনে রাখে। প্রত্যেকটি অঞ্চলে, প্রতিটি নগরে এই উৎসব পালিত হত। ইহুদীরা কখনোই পূরীমের উৎসব উদ্‌যাপন করা বন্ধ করবে না এবং তাদের উত্তরপুরুষরাও এই বিশেষ ছুটির দিনগুলিকে সব সময় মনে রাখবে।

29 অবীহয়িলের কন্যা রাণী ইষ্টের ও মর্দখয় দুজনে মিলে পূরীম সম্পর্কে একটি আনুষ্ঠানিক পত্র রচনা করেন। এই দ্বিতীয় চিঠির বৈধতা বোঝানোর জন্যই তাঁরা এই চিঠিতে রাজার সম্পূর্ণ অধিকার ব্যবহার করেন। 30 এরপর মর্দখয় চিঠিটি রাজা অহশ্বেরশের রাজত্বের 127 টি প্রদেশের সমস্ত ইহুদীদের পাঠিয়ে দেন। মর্দখয় লোকদের বলেন, ছুটির দিনটি শান্তি আনবে এবং লোকদের একে অপরকে বিশ্বাস করতে সাহায্য করবে। 31 মর্দখয় এই চিঠিগুলি লোকদের নির্দিষ্ট সময়ে পূরীম দিনগুলি চালু করতে বলার জন্য লিখেছিলেন। মর্দখয় ও রাণী ইষ্টের তাদের পরবর্তী উত্তরপুরুষদের এই পূরীম উৎসব উদ্‌যাপনের জন্যই নির্দেশটি দিয়েছিলেন। অভিপ্রায় ছিল, ইহুদীদের অন্যান্য উৎসবের ও ছুটির দিনের মতো এই দিন দুটিকেও লোকে মনে রাখুক এবং অন্যান্য ছুটির দিন তারা যেমন উপবাস করে, যা কিছু খারাপ ঘটনা ঘটেছে তার জন্যে চোখের জল ফেলে, এই দিন দুটিও ঠিক সে ভাবে পালন করুক। 32 ইষ্টেরের চিঠির মাধ্যমে পূরীম উৎসবের রীতি-নীতিগুলিকে সরকারী মর্যাদা দেওয়া হয় এবং এই ঘটনাগুলি বইতে নথিভুক্ত করা হয়।

মর্দখয় সম্মানিত হলেন

10 রাজা অহশ্বেরশের সময় রাজত্বের সবাইকে, এমন কি যারা দূরে বা সমুদ্রতীরে বসবাস করতো সবাইকেই কর দিতে হতো। রাজা অহশ্বেরশের সমস্ত বিখ্যাত কীর্তিগুলি মাদিয়া ও পারস্যের রাজাদের ইতিহাস বইগুলিতে পাওয়া যায়। রাজা মর্দখয়ের জন্য যা যা করেছিলেন সে সমস্ত বিবরণও এইসব ইতিহাস বইতে লেখা আছে। রাজা মর্দখয়কে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত করেন। মহারাজ অহশ্বেরশের পরেই গুরুত্বের দিক দিয়ে ছিল মর্দখয় এর স্থান। অন্যান্য ইহুদীরাও সকলে মর্দখয়কে খুবই সম্মান করতো। তারা মর্দখয়কে শ্রদ্ধা করতো কারণ মর্দখয় ইহুদীদের উন্নতির জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছিলেন এবং সমস্ত ইহুদীদের জন্য শান্তি এনেছিলেন।

রোমীয় 4

অব্রাহামের দৃষ্টান্ত

তাহলে আমাদের পার্থিব পিতৃপুরুষ অব্রাহাম সম্বন্ধে আমরা কি বলব? বিশ্বাস সম্পর্কে তিনি কি শিখেছিলেন? যদি নিজের কাজের জন্য তিনি ধার্মিক প্রতিপন্ন হতেন, তবে গর্ব করার মতো তার কিছু থাকত; কিন্তু ঈশ্বরের সাক্ষাতে তিনি গর্ব করতে পারেন নি। শাস্ত্র এ ব্যাপারে বলে, “অব্রাহাম ঈশ্বরে বিশ্বাস করলেন, আর সেই বিশ্বাসের দ্বারাই তিনি ধার্মিক প্রতিপন্ন হলেন।”(A)

যে লোক কাজ করে তার মজুরি তো নিছক দান বলে নয় কিন্তু তার ন্যায্য পাওনা বলে গন্য হয়। কিন্তু যে মানুষ কাজ করার বদলে ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে সেক্ষেত্রে তার বিশ্বাসই তাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করে। দায়ূদও সেই একইভাবে বলেছেন ধন্য সেই ব্যক্তি যাকে ঈশ্বর তার কাজের দ্বারা নয় বরং তার বিশ্বাসের দরুন ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন।

“ধন্য তারা,
    যাদের অন্যায় ক্ষমা করা হয়েছে,
    যাদের পাপ ঢেকে রাখা হয়েছে।
ধন্য সেই ব্যক্তি,
    প্রভু যার পাপ গন্য করেন না।”(B)

এখন এই সৌভাগ্য কি শুধু যারা সুন্নত হয়েছে তাদের জন্য? অসুন্নতদের জন্য কি নয়? কারণ আমরা বলি, “বিশ্বাস দ্বারাই অব্রাহাম ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছিলেন।” 10 কিন্তু অব্রাহামের কোন্ অবস্থায়, তাঁর সুন্নত হবার আগে, না পরে? আসলে অসুন্নত অবস্থাতেই তিনি ধার্মিক প্রতিপন্ন হন। 11 অসুন্নত অবস্থায় তিনি বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হন এবং তার চিহ্ন হিসাবে তিনি সুন্নত হয়েছিলেন। তাই অসুন্নত হলেও যাঁরা বিশ্বাস করে, অব্রাহাম তাদেরও পিতা; তারাও ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়। 12 যারা সুন্নত হয়েছে অব্রাহাম তাদেরও পিতা। তাদের সুন্নত হওয়ার সুবাদে যে তারা অব্রাহামের সন্তান হয়েছে তা নয়। কিন্তু সুন্নত হবার পূর্বে অব্রাহামের যে বিশ্বাস ছিল, ঐ লোকরা যদি অব্রাহামের সেই বিশ্বাসের পথ অনুসরণ করে থাকে তবেই তারা অব্রাহামের সন্তান।

বিশ্বাসের দ্বারা প্রাপ্ত ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি

13 জগতের উত্তরাধিকারী হবার যে প্রতিজ্ঞা ঈশ্বর অব্রাহাম ও তার বংশধরদের কাছে করেছিলেন, তা বিধি-ব্যবস্থার মাধ্যমে আসেনি কিন্তু বিশ্বাসের দ্বারা যে ধার্মিকতা লাভ হয় তার মধ্য দিয়েই সেই প্রতিজ্ঞা করা হযেছিল। 14 কারণ যদি বিধি-ব্যবস্থায় নির্ভর কেউ জগতের উত্তরাধিকারী হয় তবে বিশ্বাসের কোন অর্থ হয় না এবং সেক্ষেত্রে প্রতিজ্ঞাও মূল্যহীন। 15 কারণ বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলা না হলে তা শুধুই ঈশ্বরের ক্রোধ বয়ে আনে। বিধি-ব্যবস্থা যেখানে নেই, সেখানে তার লঙ্ঘনও নেই।

16 তাই ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতির পূর্ণতা বিশ্বাসের ফলেই লাভ হয়, যেন তা অনুগ্রহের দান হিসাবে গ্রহণ করা হয়। এইভাবে অব্রাহামের সব বংশধরদের জন্য সেই প্রতিজ্ঞা দৃঢ়ভাবে রয়েছে। যাদের বিধি-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে কেবল তাদের জন্যই সেই প্রতিজ্ঞা রয়েছে তা নয়, কিন্তু তাদের জন্যও সেই প্রতিজ্ঞা রয়েছে যাদের অব্রাহামের মতো বিশ্বাস রয়েছে। এই প্রতিশ্রুতি তাদেরই জন্য যারা অব্রাহামের মত বিশ্বাসে চলে। অব্রাহাম আমাদের সকলেরই পিতা। 17 শাস্ত্রে লেখা আছে, “আমি তোমাকে বহু জাতির পিতা করলাম।”(C) ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অব্রাহাম আমাদের পিতা। তিনি সেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন, যিনি মৃতকে জীবন দেন ও যার অস্তিত্ব নেই তাকে অস্তিত্বে আনেন।

18 অব্রাহামের সন্তান হবার কোন আশা ছিল না। কিন্তু অব্রাহাম ঈশ্বর বিশ্বাসে স্থির ছিলেন। আশা না থাকলেও আশা করে যাচ্ছিলেন, আর এই জন্যই তিনি বহুজাতির পিতা হতে পেরেছিলেন। ঠিক ঈশ্বর যেমন বলেছিলেন, “তোমার বংশধররা আকাশের তারার মত অসংখ্য হবে।”(D) 19 অব্রাহামের বয়স তখন একশ বছর, কাজেই সন্তান লাভের জন্য তাঁর দৈহিক ক্ষমতা শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাঁর স্ত্রী সারার সন্তান ধারণ করার ক্ষমতা ছিল না। অব্রাহাম এসব কথা চিন্তা করেছিলেন, কিন্তু ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন নি। 20 ঈশ্বর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার পূর্ণতার বিষয়ে অব্রাহামের কোন সন্দেহ ছিল না। অব্রাহাম অবিশ্বাস করলেন না বরং তিনি বিশ্বাসে বলবান হয়ে উঠলেন এবং ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন। 21 ঈশ্বর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা যে তিনি সফল করতে পারবেন সেই সম্বন্ধে অব্রাহাম সুনিশ্চিত ছিলেন। 22 আর তাই, “এই বিশ্বাস তাকে ঈশ্বরের সম্মুখে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছিল।” 23 শাস্ত্রে এই কথা শুধু যে তাঁর জন্যই লেখা হয়েছিল তা নয়, 24 ঐ কথাগুলি আমাদের জন্যও লেখা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাসকেও ঈশ্বর আমাদের পক্ষে ধার্মিকতা হিসাবে প্রতিপন্ন করলেন। কারণ যিনি প্রভু যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, সেই ঈশ্বরে আমরা বিশ্বাস করি। 25 আমাদের পাপের জন্য সেই যীশুকে মৃত্যুর হাতে সমর্পণ করা হল এবং আমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন করার জন্য যীশু মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International