M’Cheyne Bible Reading Plan
অব্রাহামের গরার যাত্রা
20 অব্রাহাম পূর্বের বাসস্থান ত্যাগ করে নেগেভে গেলেন। তিনি কাদেশ এবং শূরের মধ্যবর্তী গরার নগরে বাস করা শুরু করলেন। 2 গরারে বাস করার সময় অব্রাহাম সবাইকে বললেন যে সারা তাঁর বোন। গরারের রাজা অবীমেলক সে কথা শুনলেন। অবীমেলক সারাকে কামনা করলেন, তাই সারাকে নিয়ে আসার জন্য কয়েকজন ভৃত্যকে পাঠালেন। 3 কিন্তু রাত্রে ঈশ্বর স্বপ্নে অবীমেলকের কাছে এলেন। ঈশ্বর বললেন, “তোমার মরণ ঘনিয়ে এসেছে। যে নারীকে তুমি এনেছ সে বিবাহিতা।”
4 কিন্তু অবীমেলক তখন পর্যন্ত সারাকে শয্যার সঙ্গিনী করেন নি। তাই অবীমেলক বললেন, “প্রভু, আমি তো অপরাধ করিনি। আপনি কি একজন নিরপরাধকে হত্যা করবেন? 5 অব্রাহাম নিজে আমায় বলেছে যে, এই নারী তার বোন। আর ঐ নারীও বলেছে যে, ঐ পুরুষ তার ভাই। আমি তো কোন অপরাধ করিনি। আমি তো জানতামই না যে আমি কি করছি।”
6 তখন ঈশ্বর স্বপ্নের মধ্যে অবীমেলককে বললেন, “হ্যাঁ, আমি জানি তুমি নির্দোষ এবং এটাও জানি যে তুমি কি করছ তা তুমি জানতে না। তোমায় আমি বাঁচিয়ে দিয়েছি। আমি তোমাকে আমার বিরুদ্ধে পাপ করতে দিই নি। আমিই তোমায় ঐ নারীকে শয্যায় নিয়ে যেতে দিই নি। 7 সুতরাং তুমি অব্রাহাম ও তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে দাও। অব্রাহাম একজন ভাববাদী। সে তোমার জন্য প্রার্থনা করবে এবং তুমি তাতে জীবন লাভ করবে। কিন্তু তুমি যদি অব্রাহাম ও তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে না দাও তাহলে আমি নিশ্চিত যে তোমার মৃত্যু আসন্ন এবং তোমার সমস্ত পরিবারেরও মৃত্যু হবে।”
8 সুতরাং পরদিন খুব সকালে অবীমেলক তাঁর ভৃত্যদের ডেকে তাঁর স্বপ্নের কথা বললেন। তাঁর স্বপ্নের কথা শুনে ভৃত্যরা খুব ভীত হয়ে পড়ল। 9 তখন অবীমেলক অব্রাহামকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন আপনি আমাদের প্রতি এরকম ব্যবহার করলেন? আমি আপনার প্রতি কি অন্যায় করেছি? কেন মিথ্যে বললেন যে ঐ নারীটি আপনার বোন? আমার রাজত্বে আপনি অনেক বিপর্যয় ডেকে এনেছেন। আমার প্রতি এসব করা আপনার উচিৎ হয় নি। 10 আপনি কিসের ভয় পাচ্ছিলেন? কেন আপনি আমার সঙ্গে এরকম ব্যবহার করলেন?”
11 তখন অব্রাহাম বললেন, “আমি ভয় পেয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম, এখানে কেউ বোধহয় ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে না। তাই ভেবেছিলাম, সারাকে পাওয়ার জন্যে আমাকে কেউ হত্যা করতেও পারে। 12 সারা আমার স্ত্রী, আবার আমার বোনও বটে। সারা আমার পিতার কন্যা বটে, কিন্তু আমার মাতার কন্যা নয়। 13 ঈশ্বর আমাকে পিতৃগৃহ থেকে দূরে কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। ঈশ্বর আমাকে অনেক দেশে নিয়ে গেছেন। যখন এরকম হল তখন আমি সারাকে বললাম, ‘আমার জন্য কিছু করো; যেখানেই আমরা যাব, সবাইকে বলবে যে তুমি আমার বোন।’”
14 তখন অবীমেলক আসল ব্যাপারটা বুঝলেন। তাই অবীমেলক অব্রাহামের হাতে সারাকে ফিরিয়ে দিলেন। সেই সঙ্গে অবীমেলক অব্রাহামকে কিছু দাস, মেষ ও গবাদি পশুও দিলেন। 15 এবং অবীমেলক বললেন, “চারদিকে তাকিয়ে দেখুন। এসবই আমার জমি। আপনার যেখানে খুশী সেখানে থাকতে পারেন।”
16 আর অবীমেলক সারাকে বললেন, “তোমার ভাই অব্রাহামকে আমি 1000 রৌপ্যমুদ্রা দিয়েছি। যা কিছু ঘটেছে সেসবের জন্যে আমি দুঃখিত এটা বোঝাতেই এই রৌপ্যমুদ্রা। সবাই জানুক যে আমি ন্যায় মেনে কাজ করেছি।”
17-18 অবীমেলকের পরিবারের সমস্ত নারীর গর্ভধারণের ক্ষমতা প্রভু হরণ করেছিলেন। অবীমেলক সারাকে অধিকার করেছিলেন বলে প্রভু এই কাজ করেছিলেন। কিন্তু অব্রাহাম ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন এবং ঈশ্বর অবীমেলক, অবীমেলকের স্ত্রী ও দাসীদের সন্তানের জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিলেন।
বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পর্কে যীশুর শিক্ষা
(মার্ক 10:1-12)
19 এসব কথা বলা শেষ করে যীশু গালীল ছেড়ে যর্দন নদীর অন্য পারে যিহূদিয়া প্রদেশে এলেন। 2 বহুলোক তাঁর পিছু পিছু চলতে লাগল আর তিনি সেখানে তাদের সুস্থ করলেন।
3 সেই সময় কয়েকজন ফরীশী এসে পরীক্ষা করবার জন্য তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “কোন লোকের পক্ষে তার খুশী মতো যে কোন কারণে স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি বিধি-সম্মত?”
4 যীশু বললেন, “তোমরা কি শাস্ত্রে পড়নি, যে শুরুতেই ঈশ্বর তাদের ‘পুরুষ ও নারী করে সৃষ্টি করেছিলেন?’(A) 5 এরপর ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘এজন্য মানুষ বাবা-মাকে ছেড়ে স্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত হবে, আর সেই দুজন এক দেহ হবে।’(B) 6 তাই তারা আর দুজন নয় কিন্তু একজন। তাই ঈশ্বর যাদের যুক্ত করেছেন, মানুষ তাদের পৃথক না করুক।”
7 তখন ফরীশীরা তাঁকে বললেন, “তবে মোশির বিধানে শুধুমাত্র বিবাহ বিচ্ছেদ পত্র দিয়ে স্ত্রীকে ত্যাগ করার বিষয়ে লেখা আছে কেন?”[a]
8 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমাদের অন্তরের কঠোরতার জন্যই মোশি সেই বিধান দিয়েছিলেন, শুরুতে কিন্তু এরকম ছিল না। 9 তাই আমি তোমাদের বলছি, যদি কোন মানুষ ব্যভিচার দোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে তবে সে ব্যভিচার করে।”[b]
10 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরিস্থিতি যখন এমনই হয়, তখন বিয়ে না করাই ভাল।”
11 যীশু তাঁদের বললেন, “সবাই এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, কেবল যাদের সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তারাই তা মেনে নিতে পারে। 12 কিছু লোক নপুংসক হয়েই মাতৃ গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়, যারা বিয়ে করেই না। আর কিছু লোককে মানুষে খোজা করে দেয়, সেজন্য তারা বিয়ে করে না। আবার এমন কিছু লোক আছে, যারা স্বর্গরাজ্যের জন্য বিয়ে করতে চায় না। যে কেউ এ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে গ্রহণ করুক।”
যীশু ছোট ছেলেমেয়েদের আশীর্বাদ করলেন
(মার্ক 10:13-16; লূক 18:15-17)
13 এরপর লোকেরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল, যেন তিনি তাদের মাথায় হাত রেখে প্রার্থনা করেন। কিন্তু যীশুর শিষ্যরা তাদের ধমক দিলেন। 14 তখন যীশু তাদের বললেন, “ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাধা দিও না, ওদের আমার কাছে আসতে নিষেধ করো না; এদের মতো লোকদের জন্যই তো স্বর্গরাজ্য।” 15 এরপর যীশু সব ছেলেমেয়েদের মাথায় হাত রাখলেন, তারপর তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন।
একজন ধনী লোক যীশুকে অনুসরণ করতে অস্বীকার করল
(মার্ক 10:17-31; লূক 18:18-30)
16 একজন লোক একদিন যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, “গুরু, অনন্ত জীবন পাবার জন্য আমাকে কোন্ ভাল কাজ করতে হবে?”
17 যীশু তাকে বললেন, “কোনটি ভাল একথা তুমি আমায় জিজ্ঞেস করছ কেন? ভাল তো কেবল একজনই, আর তিনি ঈশ্বর। যাই হোক্ তুমি যদি অনন্ত জীবন পেতে চাও, তবে তাঁর সব আজ্ঞা পালন কর।”
18 সে বলল, “কোন্ কোন্ আজ্ঞা পালন করব?”
যীশু তাকে বললেন, “‘তুমি অবশ্যই নরহত্যা করবে না, ব্যভিচার করবে না, চুরি করবে না, মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না, 19 তোমার বাবা-মাকে সম্মান করো’(C) ও ‘প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবেসো।’”(D)
20 সেই যুবক তখন যীশুকে বলল, “আমি তো এর সবই পালন করে আসছি, তাহলে আমার আর কি করা বাকি আছে?”
21 যীশু তাঁকে বললেন, “যদি তুমি সম্পূর্ণ নিখুঁত হতে চাও, তবে যাও, তোমার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও। তাতে তুমি স্বর্গে প্রচুর সম্পদ পাবে। তারপর এস, আমার অনুসারী হও।”
22 কিন্তু সেই যুবক এই কথা শুনে বিষন্ন হয়ে চলে গেল, কারণ তার প্রচুর সম্পত্তি ছিল।
23 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ধনী ব্যক্তির পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করা কঠিন হবে। 24 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, ধনীর পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং ছুঁচের ফুটো দিয়ে উটের গলে যাওয়া সহজ।”
25 একথা শুনে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তাঁরা তখন বললেন, “তাহলে উদ্ধার পাওয়া কার পক্ষে সম্ভব?”
26 যীশু তাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “মানুষের পক্ষে তা অসম্ভব বটে, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে সবই সম্ভব।”
27 তখন পিতর বললেন, “দেখুন, আমরা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে আপনার অনুসারী হয়েছি, তাহলে আমরা কি পাব?”
28 যীশু তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সেই নতুন জগতে যখন মানবপুত্র তাঁর মহিমামণ্ডিত সিংহাসনে বসবেন, তখন তোমরা যাঁরা আমার অনুসারী হয়েছ, তোমরাও বারোটি সিংহাসনে বসবে আর ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর বিচার করবে। 29 আর যে কেউ আমার জন্য বাড়ি ঘর, ভাই বোন, বাবা-মা, ছেলেমেয়ে অথবা জায়গা জমি ছেড়েছে, সে তার শতগুন বেশী পাবে এবং অনন্ত জীবনেরও অধিকারী হবে। 30 কিন্তু এমন অনেকে যারা এখন প্রথমে আছে তারা শেষে যাবে, আর যারা এখন শেষে আছে তারা প্রথম হবে।
ইস্রায়েলীয়দের পাপ স্বীকার
9 ঐ মাসেরই 24 দিনের মাথায় ইস্রায়েলীয়রা উপবাসের জন্য জড়ো হল। সে সময় সকলে দুঃখ প্রকাশের জন্য চটের পোশাক পরা ছাড়াও মাথায় ছাই লাগিয়েছিল। 2 ইস্রায়েলের আদি বাসিন্দারা বিদেশীদের থেকে নিজেদের আলাদা রেখেছিল। তারা সকলে মন্দিরে দাঁড়িয়ে তাদের ও তাদের পূর্বপুরুষদের পাপ স্বীকার করল। 3 তারা সেখানে তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে প্রভু, তাদের ঈশ্বরের বিধিপুস্তক পাঠ করল। তারপর আরো তিন ঘন্টা প্রভু তাদের ঈশ্বরকে প্রার্থনা করবার জন্য এবং পাপ স্বীকার করবার জন্য মাথা নীচু করে রইল।
4 তারপর এইসব লেবীয়রা সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে রইল: যেশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, শবনিয়, বুন্নি, শেরেবিয়, বানি, কনানী। তারা উচ্চস্বরে তাদের প্রভু, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে লাগল। 5 এরপর যেশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, বুন্নি, হশব্নির, শেরেবিয়, হোদিয়, শবনিয়, পথাহিয় প্রমুখ লেবীয়রা বলল, “উঠে দাঁড়াও এবং তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর! ঈশ্বর সর্বদা ছিলেন এবং তিনি চির দিন থাকবেনও।
“মানবজাতি তোমার মহান নামের প্রশংসা করুক!
তোমার নাম সব কিছুর ঊর্দ্ধে উঠুক এবং বন্দিত হোক্!
6 হে প্রভু,
একমাত্র তুমিই ঈশ্বর!
তুমিই সেই জন, যে আকাশ তৈরী করেছে!
তুমিই মহান স্বর্গ আর মর্ত্যে যা কিছু আছে সে সব,
পৃথিবী আর অভ্যন্তরস্থ সব কিছু
আর সমুদ্র মধ্যস্থিত সব কিছু সৃষ্টি করেছ।
সবেতে তুমিই দিয়েছো জীবনের ছোঁয়া
এবং সমস্ত স্বর্গীয় দেবদূতরা নত হয়ে তোমার উপাসনা করে!
7 হে প্রভু, তুমিই আমাদের ঈশ্বর।
তুমিই সেই জন যে অব্রামকে মনোনীত করে
বাবিলের ঊর থেকে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলে
এবং তার নাম বদলে অব্রাহাম রেখেছিলে।
8 তুমিই তার আনুগত্য এবং সততা লক্ষ্য করেছ।
তুমিই সেই জন যে তার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলে
এবং তাকে ও তার উত্তরপুরুষদের
কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, যিবূষীয় এবং গির্গাশীয়দের জমিগুলি দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে।
তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি রেখেছো
কারণ তুমি ভাল।
9 তুমি মিশরে আমাদের পূর্বপুরুষদের দুর্গতি দেখেছিলে
ও লোহিত সাগর থেকে তাদের এন্দন শুনেছিলে।
10 তুমি ফরৌণে তার আধিকারিকদের
ও তার লোকদের কাছে নানা চিহ্ন ও অদ্ভুত কার্য দেখিয়েছিলে।
তুমি জানতে যে, মিশরীয়রা নিজেদের
আমাদের পূর্বপুরুষদের থেকে শ্রেষ্ঠতর ভাবত।
কিন্তু তুমি প্রমাণ করলে, তুমি কত মহান!
আজ পর্যন্ত তারা তা স্মরণ করে।
11 তুমি তাদের চোখের সামনে লোহিত সাগরকে দ্বিখণ্ডিত করলে
আর শুকনো জমির ওপর দিয়ে হেঁটে গেলে
কিন্তু তুমি তাড়া করে আসা শত্রুদের সমুদ্র ফেলে দিলে।
তারা পাথরের মতো সমুদ্রে ডুবে গেল।
12 একটি উঁচু মেঘ দিয়ে দিনের বেলা তুমি তাদের পথ দেখালে।
রাতের বেলা, একটি আলোকস্তম্ভ দিয়ে তুমি তাদের পথ দেখালে।
তুমি তাদের দেখালে কোথায় যেতে হবে।
13 এরপর সীনয় পর্বতে স্বর্গের চূড়া থেকে
তুমি স্বয়ং কথা বলে
তাদের দিলে প্রকৃত শিক্ষা, যা ভালো;
তুমি তাদের বিধিসমূহ ও আজ্ঞা দিলে যেগুলি ভালো।
14 তুমি তোমার দাস, মোশির মাধ্যমে তোমার পবিত্র বিশ্রামের দিনের কথা তাদের জানালে।
তুমি তাদের আজ্ঞা, বিধিসমূহ এবং শিক্ষামালা দিলে।
15 ওরা সকলে ক্ষুধার্ত ছিল,
তাই তুমি স্বর্গ থেকে সবাইকে খাবার দিলে।
ওরা সকলে তৃষ্ণার্ত ছিল,
তাই তুমি পাথর থেকে সবাইকে জল দিলে।
তারপর তুমি ওদের যেতে বললে
ও প্রতিশ্রুত ভূমি দখল করতে বললে।
তোমার ক্ষমতা দিয়ে তুমি সেই ভূখণ্ড
অন্যদের কাছ থেকে নিয়েছিলে।
16 কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা গর্বোদ্ধত ও জেদী হল
এবং তোমার আজ্ঞা লঙ্ঘন করল।
17 তারা শুনতে অস্বীকার করল।
তুমি যে আশ্চর্য জিনিষগুলি তাদের জন্য করেছিলে তা তারা ভুলে গেল।
তাদের জেদের কারণে
তারা আবার ক্রীতদাস হয়ে মিশরে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিল।
“কিন্তু তুমি দয়ালু ঈশ্বর!
ক্ষমা, করুণা, ধৈর্য্য
ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ তোমার হৃদয়।
তাই তুমি তাদের পরিত্যাগ করনি।
18 এমনকি যখন তারা সোনার বাছুরের মূর্ত্তি বানিয়ে বলেছে, ‘এই মূর্ত্তিগুলোই আমাদের মিশর থেকে বাইরে এনেছে,’
তখনও তুমি তাদের বাতিল কর নি।
19 কিন্তু তোমার মহান করুণার জন্য
তুমি ওদের মরুভূমিতে পরিত্যাগ করনি।
তুমি দিনের বেলা উঁচু মেঘটিকে সরিয়ে নাওনি,
রাতেও আগুনের স্তম্ভটি সরিয়ে নাওনি।
তুমি তোমার পবিত্র আলো দিয়ে
তাদের পথ আলোকিত করা
এবং তাদের পথ দেখিয়ে চলা অব্যাহত রেখেছ।
20 তুমি তাদের বিচক্ষণ করে তোলার জন্য তোমারই ভাল আত্মা দিয়েছ।
খাদ্য হিসেবে তুমি ওদের মান্না দিয়েছ
এবং জল দিয়েছ তাদের তৃষ্ণা মেটাতে।
21 তুমি 40 বছর ধরে এদের প্রতিপালন করেছো।
তুমি মরুভূমিতে যা কিছু প্রয়োজন ছিল তা দিয়েছো।
ওদের পোশাকগুলি ছিঁড়ে যায়নি।
ওদের পা ফুলে যায়নি।
22 হে প্রভু, তুমি ওদের রাজত্ব, জাতি
এবং বহু দূরের জায়গাগুলি যেখানে অল্প কিছু লোক বাস করত, তা দিয়েছ।
তুমি ওদের সীহোনের ভূখণ্ড, হিষ্বোণের রাজা,
ওগের ভূখণ্ড এবং বাশনের রাজা দিয়েছিলে।
23 তুমি আকাশের নক্ষত্রের মতো
ওদের উত্তরপুরুষদের সংখ্যায় বাড়িয়েছো।
তুমি তাদের সেই ভুখণ্ডে বাস করতে নিয়ে গিয়েছ
যা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুত ছিল।
24 তারা এই ভূখণ্ডে প্রবেশ করল
এবং কনানীয়দের পরাজিত করে সেটি অধিকার করল।
তুমি তাদের দিয়ে ঐসব লোকদের পরাজিত করিয়েছিলে।
ঐসব জাতি, তাদের রাজা এবং ঐসব লোকের প্রতি
তারা যা করতে চেয়েছিল,
তুমিই তাদের দিয়ে তাই করিয়েছিলে।
25 তারা শক্তিশালী নগরগুলি
এবং উর্বর জমি দখল করল।
তারা ভালো ভালো জিনিষে পরিপূর্ণ বাড়ীগুলি অধিকার করল।
ইতিমধ্যেই যে সব কূপগুলি খনন হয়েছিল সেগুলি, দ্রাক্ষাক্ষেত,
জলপাই গাছ এবং অনেক ফলের গাছসমূহ তারা পেয়েছিল।
তারা খেলো এবং তৃপ্ত হল।
তুমি তাদের যে ভাল জিনিসগুলি দিয়েছিলে সেগুলি তারা উপভোগ করেছিল।
26 তারা তোমার বিরুদ্ধে গেল
এবং তোমার শিক্ষামালা ছুঁড়ে ফেলে দিল।
তারা তোমার ভাববাদীদেরও হত্যা করল,
যারা তাদের সতর্ক করে
তোমার কাছে ফেরাতে চেয়েছিল।
কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার বিরুদ্ধে বীভৎস সব কাজ করলো।
27 তাই তুমি তাদের শত্রুদের হাতে ওদের পরাজিত হতে দিলে।
শত্রুরা তাদের নানান সংকটের মধ্যে ফেললো।
তাই বিপদের সময়ে তারা তোমার সাহায্যের জন্য কেঁদে পড়ল।
স্বর্গে বসে তুমি তাদের আর্ত চিৎকার শুনলে।
তুমি করুণাময়,
তাই লোক পাঠালে তাদের পরিত্রাণের জন্য।
তারা এসে শত্রুদের হাত থেকে ওদের উদ্ধার করলো।
28 কিন্তু যে মূহুর্তে আমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের শত্রুদের হাত থেকে মুক্তি পেল,
তারা পাপ কার্য শুরু করলো।
তাই তুমি তাদের শত্রুদের পরাজিত করতে এবং তাদের ওপর নিষ্ঠুরভাবে শাসন করতে দিলে।
তারা তোমার সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করল।
স্বর্গে তুমি তাদের কান্না শুনলে
এবং তোমার করুণাবশতঃ আবার তাদের উদ্ধার করলে।
এ ঘটনা বহুবার ঘটেছে।
29 তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে,
যাতে তারা তোমার শিক্ষামালার শরণ নেয়,
কিন্তু ওরা উদ্ধত ছিল
এবং তোমার আজ্ঞাসমূহ মানতে অস্বীকার করেছিল।
তারা তোমার বিধিসমূহ, যে সেগুলো পালন করে
তাকে সত্য জীবন দেয়, তা ভেঙেছিল।
কিন্তু তারা তাদের জেদবশতঃ তোমার বিধিসমূহ ভেঙেছিল।
তারা তোমার দিকে পেছন ফিরে ছিল
এবং শুনতে অস্বীকার করেছিল।
30 “তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি
বহু বছর ধরে খুব ধৈর্য্যশীল ছিলে,
তোমার আত্মায় পূর্ণ তোমার ভাববাদীদের মাধ্যমে
তুমি তাদের সতর্ক করেছিলে।
কিন্তু তারা শুনতে অস্বীকার করেছিল,
তাই তুমি তাদের বিজাতীয়দের হাতে তুলে দিয়েছিলে।
31 “কত দরদী এবং করুণাময় ঈশ্বর তুমি।
তবুও তুমি তাদের ধ্বংস করোনি,
ছেড়েও যাওনি।
তুমি দয়াময়, করুণাধর ঈশ্বর!
32 হে আমাদের ঈশ্বর, তুমি মহান!
ভয়ঙ্কর এবং ক্ষমতাশালী ঈশ্বর!
তুমি দয়ালু ও বিশ্বস্ত।
তুমি সবসময় তোমার চুক্তি বজায় রাখো!
আমাদের অনেক সমস্যা ছিল।
সে সবই তোমার কাছে জরুরী!
আমাদের লোকদের নানান সঙ্কটে পড়তে হয়েছিল।
আমাদের যাজকগণ ও ভাববাদীগণ সংকটে ছিল।
অশূরের রাজাদের রাজত্বের সময় থেকে
আজ পর্যন্ত বহু ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেছে।
33 কিন্তু হে আমাদের প্রভু,
আমাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছে তাতে তুমি ছিলে ন্যায়সঙ্গত। হ্যাঁ, আমরাই ভুল করেছি!
34 আমাদের রাজারা, নেতারা, যাজকরা ও পূর্বপুরুষরা
তোমার আদেশগুলি মানেনি।
তারা তোমার সাবধানবাণী অবজ্ঞা করে নির্দেশ অমান্য করেছে।
35 আমাদের পূর্বপুরুষরা, তুমি তাদের যে বিশাল উর্বর জমি দিয়েছিলে তা উপভোগ করেছিল।
কিন্তু তারা তোমার সেবা করেনি
বা তাদের পাপ আচরণ থেকে সরে আসেনি।
36 এখন আমরা এই ভূখণ্ডে ক্রীতদাস।
যে ভূখণ্ড তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে,
যাতে তারা সেখানকার ফলমূল
ও যা কিছু সুন্দর জিনিস ভোগ করতে পারে,
সেখানেই আমরা ক্রীতদাস।
37 এই জমিতে বহু ফসল ফলত,
কিন্তু সমস্ত ফলন যায় রাজার কাছে। এই জমির মহতী ফসল যায় রাজাদের কাছে যাদের তুমি আমাদের পাপ আচরণের জন্য আমাদের ওপর শাসন করতে নিযুক্ত করেছ।
ঐসব রাজারা আমাদের শাসন করে, আমাদের গবাদি পশু তারা নিয়ন্ত্রণ করে
এবং তারা তাদের যা ইচ্ছে তাই করে।
সত্যিই, আমাদের পক্ষে তা একটা দুর্ভোগ।
38 “এসব কারণেই, আমাদের নেতারা, লেবীয়রা এবং যাজকগণ তোমার সঙ্গে চুক্তিটি করেছিল যেটা বদলানো যায় না। আমরা যা প্রতিজ্ঞা করছি লিখে তাতে স্বাক্ষর করছে আমাদের নেতারা, লেবীয়রা ও যাজকরা আর সেই চুক্তিপত্র শীলমোহর করে রাখছি।”
পৌল ইফিষে
19 আপল্লো যখন করিন্থে ছিলেন তখন পৌল সেই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে ইফিষে এসে পৌঁছলেন। সেখানে তিনি যোহন বাপ্তাইজকের কয়েকজন অনুগামীর দেখা পেলেন। 2 তিনি তাদের বললেন, “তোমরা যখন বিশ্বাসী হও, তখন কি পবিত্র আত্মা পেয়েছিলে?”
তারা তাঁকে বলল, “কই? পবিত্র আত্মা বলে যে কিছু আছে এমন কথা তো আমরা কখনও শুনি নি!”
3 তিনি তাদের বললেন, “তবে তোমাদের কি ধরণের বাপ্তিস্ম হয়েছিল?”
তারা বলল, “যোহন যে ধরণের বাপ্তিস্ম দিতেন।”
4 পৌল বললেন, “যোহন মন-ফেরানোর জন্য লোকদের বাপ্তাইজ করতেন। তিনি তাদের বলতেন, তাঁর পরে যিনি আসছেন, তাঁর ওপর অর্থাত যীশুর ওপর বিশ্বাস কর।”
5 তারা একথা শুনে প্রভু যীশুর নামে বাপ্তাইজ হল। 6 এরপর পৌল তাদের ওপর হাত রাখলে, তাদের ওপর পবিত্র আত্মা নেমে এলেন। তারা নানা ভাষায় কথা বলতে ও ভাববাণী বলতে শুরু করল। 7 তারা মোট বারো জন পুরুষ ছিল।
8 এরপর পৌল সমাজ-গৃহে গেলেন, আর সেখানে তিন মাস ধরে নির্ভীকভাবে কথা বললেন এবং যুক্তিসহ ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে বুঝিয়ে দিলেন। 9 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন তাঁর কথা মানতে চাইল না। তারা প্রকাশ্যে খ্রীষ্টের পথের বিরুদ্ধে নিন্দা করতে লাগল। তখন পৌল তাদের ছেড়ে চলে গেলেন, যীশুর অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে গেলেন। পরে প্রতিদিন তুরানের ভাষণ কক্ষে পৌল তাদের নিয়ে শাস্ত্র আলোচনা করতে লাগলেন। 10 এইভাবে দুবছর কেটে গেল, এর ফলে এশিয়ায় যাঁরা বাস করত, কি ইহুদী, কি গ্রীক সকলেই প্রভুর বাক্য শুনলেন।
শীভার সন্তানগণ
11 ঈশ্বর পৌলের হাত দিয়ে অনেক অলৌকিক ঘটনা সম্পন্ন করালেন। 12 এমন কি তাঁর স্পর্শ করা গামছা অসুস্থ লোকদের গায়ে ছোঁয়ালে তাদের রোগ ভাল হয়ে যেত, আর অশুচি আত্মারাও তাদের মধ্য থেকে বার হয়ে যেত।
13-14 সেই সময়ে কয়েকজন ইহুদী ওঝা ঘুরে বেড়াত, যারা অশুচি আত্মায় পাওয়া লোকদের ছাড়াতো। ইহুদী মহাযাজক শীভার সাত ছেলেও এই কাজ করছিল। এই ইহুদীরা লোকদের মধ্য থেকে অশুচি আত্মা তাড়াতে প্রভু যীশুর নাম ব্যবহার করত। তারা বলত, “যে যীশুর কথা পৌল প্রচার করছেন, সেই যীশুর নামে আমি আদেশ করছি এর মধ্য থেকে বার হয়ে যাও!”
15 কিন্তু একবার অশুচি আত্মা সেই ইহুদীদের বলল, “আমি যীশুকে জানি, পৌলকেও জানি, কিন্তু তোরা আবার কে?”
16 এরপর যার মধ্যে দিয়াবলের অশুচি আত্মা বাস করছিল, সে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই শীভার ছেলেদের সবাইকে ধরাশায়ী করল। এর ফলে সেই ইহুদীরা আহত ও উলঙ্গ অবস্থায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেল। 17 ইহুদী ও গ্রীক যারা ইফিষে থাকত, তারা সবাই এই ঘটনার কথা জানতে পারল। এর ফলে তাদের সকলের মধ্যে ত্রাসের সঞ্চার হল আর প্রভুর নাম সমাদৃত হল। লোকেরা যীশুর নামকে আরও উচ্চ সম্মান দিতে লাগল। 18 অনেকে যারা বিশ্বাসী হল তারা নিজের নিজের অপকর্মের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করল। 19 আবার অনেকে যারা যাদুক্রিয়া করত, তারা তাদের বইপত্র ও সাজসরঞ্জাম এনে প্রকাশ্যে আগুনে পুড়িয়ে দিল, গণনা করে দেখা গেল তার দাম ছিল পঞ্চাশ হাজার রৌপ্য মুদ্রা। 20 এইভাবে প্রবলভাবে প্রভুর বাক্য প্রসার লাভ করল এবং শক্তিশালী হতে লাগল আর বহুলোক বিশ্বাস করল।
পৌলের যাত্রা পরিকল্পনা
21 এই ঘটনার পর পৌল ঠিক করলেন যে তিনি মাকিদনিয়া ও আখায়া হয়ে জেরুশালেমে যাবেন। তিনি বললেন, “সেখানে গিয়ে পরে আমি রোমেও যাব।” 22 তিনি তাঁর দুজন সহকারীকে অর্থাৎ তীমথিয় ও ইরাস্তকে মাকিদনিয়ায় পাঠালেন আর নিজে কিছু দিন এশিয়ায় রয়ে গেলেন।
ইফিষে গোলমাল
23 সেই সময় ইফিষে মহা গণ্ডগোলের সৃষ্টি হল। ঈশ্বরের পথের বিষয়ই ছিল এই গণ্ডগোলের কারণ। ঘটনাটা এইভাবে হল; 24 দীমীত্রিয় নামে একজন স্বর্ণকার দেবী দীয়ানার রূপোর মন্দির তৈরী করত আর কারিগরদের অনেক কাজ জুগিয়ে দিত।
25 সে তার ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত অন্য সব কারিগরদের একত্র করে সভায় বলল, “ভাইসব তোমরা জান এই কাজের দ্বারা আমরা সকলে ভালই রোজগার করি। 26 এও তো দেখতে ও শুনতে পাচ্ছ কেবল এই ইফিষে নয়, প্রায় সমস্ত এশিয়ায় এই পৌল বহু লোককে প্রভাবিত করেছে ও এই বলে বেড়িয়েছে যে, মানুষের হাতে গড়া দেবতারা নাকি দেবতাই নয়। 27 এতে আমাদের এই বৃত্তির যে কেবল দুর্নাম হবে তাই নয়, মহাদেবী দীয়ানার মন্দিরও লোকসমক্ষে তুচ্ছ হবে। আবার যাকে সমস্ত এশিয়া, এমন কি সারা জগত সংসার উপাসনা করে, তিনিও তাঁর বিপুল গরিমা হারাবেন।”
28 এই কথা শুনে লোকেরা প্রচণ্ড রেগে গেল। তারা চিৎকার করে বলতে লাগল, “ইফিষের দীয়ানাই মহান!” 29 এতে সমস্ত শহরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিল। সকলে একসঙ্গে রঙ্গভূমির দিকে ছুটল। তারা তাদের সঙ্গে টানতে টানতে নিয়ে চলল গায় ও আরিষ্টার্খ নামে দুজন মাকিদনিয়ান লোককে, যাঁরা পৌলের সঙ্গী ছিলেন। 30 তখন পৌল লোকদের কাছে যেতে চাইলে অনুগামীরা তাঁকে বাধা দিল, যেতে দিল না। 31 সেই প্রদেশের কয়েকজন নেতা যাঁরা তাঁর বন্ধু ছিলেন, তাঁরা পৌলের কাছে লোক পাঠিয়ে অনুরোধ করলেন যেন তিনি রঙ্গভূমিতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে না আনেন।
32 এদিকে নানা লোকে নানা কথা বলে চিৎকার করছিল, কারণ সভার মধ্যে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়ে গিয়েছিল, অধিকাংশ লোক জানতই না কেন তারা সেখানে এসেছে। 33 কয়েকজন ইহুদী আলেকসান্দারকে সামনে ঠেলে দিল, একেই জনতার কয়েকজন পরামর্শ দিচ্ছিল। তিনি সকলকে ইশারায় চুপ করতে বললেন, ও তাদের কাছে কিছু বলতে চাইলেন। 34 কিন্তু তারা যখন বুঝতে পারল যে তিনি একজন ইহুদী তখন জোরে চিৎকার করতে লাগল। দুঘন্টা ধরে তারা শুধু এই বলে চেঁচিয়েই চলল, “ইফিষের দীয়ানাই মহান!”
35 শেষ পর্যন্ত শহরের করণিক জনতাকে শান্ত করে বললেন, “হে ইফিষীয়রা, বল দেখি, ইফিষীয়দের শহর যে মহাদেবী দীয়ানার মন্দিরের তত্ত্বাবধান করে এবং সেই মন্দিরের পবিত্র পাথর যে আকাশ থেকে পড়েছিল তা কে না জানে? 36 তাই এই কথা যখন কেউ অস্বীকার করতে পারবে না, তখন তোমাদের শান্ত হওয়া উচিত এবং অসংযত কোন কাজ করা উচিত নয়।
37 “কারণ এই যে লোকদের তোমরা এখানে এনেছ, এরা তো মন্দির লুঠও করে নি বা আমাদের দেবীর অপমানও করে নি। 38 তাই যদি কারো বিরুদ্ধে দীমীত্রিয় ও তার সম-ব্যবসায়ীদের কোন অভিযোগ থাকে, তবে আদালত খোলা আছে, বিচারকরাও আছেন, তারা সেখানে গিয়ে তাদেব বিরুদ্ধে মামলা করুক!
39 “আর যদি অন্য কোন বিষয় অনুসন্ধানের থাকে তবে তার বিচার আইনানুগ বিচার সভায় করা যেতে পারে। 40 কারণ এই ভয় আছে যে, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে পারে যে এই গণ্ডগোলের কারণ আমরাই, এই সভা ডাকার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ আমরা দেখাতে পারব না।” 41 এই বলে তিনি সভা ভঙ্গ করলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International