Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
আদি 17

সুন্নতের চুক্তির প্রমাণ

17 অব্রামের 99 বছর বয়স হলে প্রভু তাঁর সামনে আবির্ভূত হলেন। প্রভু বললেন, “আমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। আমার জন্য এই কাজগুলি করো: আমার কথামত চলো এবং সৎ পথে জীবনযাপন করো। এটা যদি করো তাহলে আমাদের মধ্যে একটা চুক্তির ব্যবস্থা করব। আমি প্রতিশ্রুতি করছি যে তোমার বংশধরদের আমি এক মহান জাতিতে পরিণত করব।”

তখন অব্রাম ঈশ্বরের সামনে প্রণামে নত হলেন। ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “আমাদের চুক্তিতে এটি আমার অংশ। আমি তোমাকে বহু জাতির পিতা করব। আমি তোমার নাম পরিবর্তন করব। তোমার নাম অব্রামের পরিবর্তে অব্রাহাম হবে। আমি তোমায় এই নাম দিচ্ছি কারণ আমি তোমায় বহু জাতির পিতা করছি। আমি তোমার বংশ অতিশয় বৃদ্ধি করব। তোমার থেকে নতুন নতুন জাতির এবং রাজার জন্ম হবে। এবং তোমার ও আমার মধ্যে এক চুক্তি সম্পন্ন হবে। তোমার সমস্ত উত্তরপুরুষগণের জন্যও এই একই চুক্তি প্রযোজ্য হবে। এই চুক্তি চিরকাল বহাল থাকবে। আমি তোমার ও তোমার উত্তরপুরুষগণের জন্য ঈশ্বর থাকব। আমি তোমাকে এবং তোমার সব উত্তরপুরুষদের এই কনান দেশ দেব যার মধ্য দিয়ে তোমরা যাত্রা করছ। আমি তোমাকে এই দেশ চিরকালের জন্য দেব। আমি হব তোমার ঈশ্বর।”

এবং ঈশ্বর অব্রাহামকে বললেন, “এখন তোমার দিক থেকে এই চুক্তি হবে এই রকম। তুমি এবং তোমার উত্তরপুরুষগণ আমার চুক্তি মান্য করবে। 10 এটাই চুক্তি যা তুমি মেনে চলবে। তোমার ও আমার মধ্যে এটাই হল চুক্তি। তোমার উত্তরপুরুষগণের জন্যেও এটাই চুক্তি। যত পুত্র সন্তান হবে প্রত্যেককে সুন্নত করতে হবে। 11 তোমার আর আমার মধ্যে চুক্তি যে তুমি মেনে চলবে, এই সুন্নত হবে তার প্রমাণস্বরূপ। 12 শিশু পুত্রের বয়স আট দিন হলে এই সুন্নত সম্পন্ন করবে। তোমার পরিবারে যত ছেলের এবং তোমার দাসদের মধ্যে যত ছেলের জন্ম হবে, তোমার বংশধর নয় এমন বিদেশীদের কাছ থেকে তোমার অর্থ দিয়ে তুমি যে দাসদের কিনেছিলে তাদের যে ছেলেরা জন্মাবে, সকলের অবশ্যই সুন্নত করতে হবে। 13 সুতরাং তোমার জাতির প্রত্যেক শিশু পুত্রকে সুন্নত করা হবে। তোমার পরিবারের অথবা ক্রীতদাসের সব পুত্রদের এভাবে সুন্নত করা হবে। 14 অব্রাহাম, তোমার ও আমার মধ্যে এটাই চুক্তি; সুন্নত করা হয়নি এমন কোন পুরুষ থাকলে সে হবে তার নিজের লোকদের স্বজাতির থেকে বিচ্ছিন্ন। কারণ সে ব্যক্তি আমার চুক্তি ভঙ্গকারী।”

প্রতিশ্রুত পুত্র ইস‌্হাক

15 ঈশ্বর অব্রাহামকে বললেন, “তোমার স্ত্রী সারীকে আমি এক নতুন নাম দেব। তার নতুন নাম হবে সারা অর্থাৎ‌ রানী। 16 আমি তাকে আশীর্বাদ করব। আমি তাকে একটি পুত্র দেব এবং তুমি হবে সেই পুত্রের পিতা। সারা হবে বহু নতুন জাতির মাতা। সারা থেকে আসবে বহু জাতির বহু রাজা।”

17 ঈশ্বরকে যে তিনি মান্য করেন এই কথা বোঝাবার জন্যে অব্রাহাম আভূমি মাথা নত করলেন। কিন্তু তিনি নিজের মনে হেসে বললেন, “আমার 100 বছর বয়স। আমার আর সন্তান হতে পারে না এবং সারার 90 বছর বয়স। সে সন্তানের জন্ম দিতে পারবে না।”

18 তখন অব্রাহাম ঈশ্বরকে বলল, “আশা করি ইশ্মায়েল বেঁচে থেকে আপনার সেবা করবে।”

19 ঈশ্বর বললেন, “না! আমি বলেছি যে তোমার স্ত্রী সারার একটি পুত্র হবে। তুমি তার নাম দেবে ইস‌্হাক। তার সঙ্গে আমি আমার চুক্তি সম্পাদন করব। তার সঙ্গে ঐ চুক্তি এমন হবে যা তার উত্তরপুরুষগণের সঙ্গেও চিরকাল বজায় থাকবে।

20 “তুমি ইশ্মায়েলের কথা বলেছ এবং আমি সে কথা শুনেছি। আমি তাকে আশীর্বাদ করব। তার বহু সন্তান-সন্ততি হবে। সে বারোজন মহান নেতার পিতা হবে। তার পরিবার থেকে সৃষ্টি হবে এক মহান জাতির। 21 কিন্তু আমি ইস‌্হাকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হব। সারার যে পুত্র হবে সে-ই হবে ইস‌্হাক। পরের বছর ঠিক এই সময় সেই পুত্রের জন্ম হবে।”

22 অব্রাহামের সঙ্গে কথা শেষ করে ঈশ্বর উপরে স্বর্গে চলে গেলেন। 23 ঈশ্বর অব্রাহামকে তাঁর পরিবারের সমস্ত পুরুষ ও বালকের সুন্নতের কথা বলেছিলেন। সুতরাং অব্রাহাম ইশ্মায়েল এবং তাঁর গৃহে জন্ম হয়েছে এমন সমস্ত দাসদের একত্রে সমবেত করলেন। যাদের অর্থ দিয়ে ক্রয় করা হয়েছিল, সেই ক্রীতদাসদেরও তিনি সমবেত করলেন। অব্রাহামের বাড়ীর প্রত্যেক পুরুষ ও বালককে একত্র করা হল। এবং প্রত্যেককে সুন্নত করা হল। তাদের সকলকে একই দিনে সুন্নত করা হল।

24 অব্রাহামকে যখন সুন্নত করা হল তখন তাঁর বয়স 99 বছর। 25 এবং তাঁর পুত্র ইশ্মায়েলের সুন্নতের সময় 13 বছর বয়স ছিল। 26 অব্রাহাম ও তাঁর পুত্রের একই দিনে সুন্নত করা হয়। 27 সেই একই দিনে অব্রাহামের বাড়ীর সমস্ত পুরুষরাও সুন্নত হয়। যেসব দাসদের অর্থ দিয়ে ক্রয় করা হয়েছিল এবং যেসব দাসদের তাঁর গৃহেই জন্ম হয়েছিল সকলেরই সুন্নত করা হল।

মথি 16

ইহুদী নেতারা যীশুকে পরীক্ষা করলেন

(মার্ক 8:11-13; লূক 12:54-56)

16 ফরীশী ও সদ্দূকীরা যীশুর কাছে এসে তাঁকে পরীক্ষা করতে চাইলেন। তাই তারা ঐশ্বরিক শক্তির চিহ্নস্বরূপ কোন অলৌকিক কাজ করে দেখাতে বললেন।

এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “সন্ধ্যা হলে তোমরা বলে থাকো দিনে আবহাওয়া ভাল থাকবে, কারণ আকাশের রঙ লাল হয়েছে। আবার সকাল বেলা বলে থাকো, আজকে ঝোড়ো আবহাওয়া চলবে কারণ আজ আকাশ লাল ও অন্ধকার হয়েছে। তোমরা আকাশের অবস্থা ভালই বিচার করে বোঝ, অথচ কালের চিহ্ন বুঝতে পারো না। এ যুগের দুষ্ট ও ভ্রষ্টাচারী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে, কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্নই তাদের দেখানো হবে না।” এরপর যীশু তাদের ছেড়ে সেখান থেকে চলে গেলেন।

ইহুদী নেতাদের বিরুদ্ধে যীশুর সতর্কবাণী

(মার্ক 8:14-21)

যীশু ও তাঁর শিষ্যরা হ্রদের ওপারে যাবার সময় সঙ্গে রুটি নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছিলেন। তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা সাবধান! ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সতর্ক থেকো।”

শিষ্যরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, “আমরা রুটি আনিনি বলে সম্ভবতঃ উনি এই কথা বলছেন?”

তাঁরা কি বলাবলি করছেন, তা জানতে পেরে যীশু বললেন, “হে অল্প-বিশ্বাসী মানুষ, তোমরা নিজেদের মধ্যে কেন বলাবলি করছ যে তোমাদের রুটি নেই? তোমরা কি বোঝ না অথবা তোমাদের কি মনে নেই সেই পাঁচ হাজার লোকের জন্য পাঁচ খানা রুটির কথা আর তারপরে কত টুকরি তোমরা ভর্ত্তি করেছিলে? 10 আবার সেই চার হাজার লোকের জন্য সাতখানা রুটির কথা, আর কত টুকরি তোমরা তুলে নিয়েছিলে? 11 তোমরা কেন বুঝতে পার না যে আমি তোমাদের রুটির বিষয় বলিনি? আমি তোমাদের ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সতর্ক থাকতে বলেছি।”

12 তখন তাঁরা বুঝতে পারলেন যে রুটির খামির থেকে তিনি তাঁদের সতর্ক হতে বলেন নি, কিন্তু বলেছিলেন তাঁরা যেন ফরীশী ও সদ্দূকীদের শিক্ষা থেকে সাবধান হন।

পিতর বললেন যীশুই খ্রীষ্ট

(মার্ক 8:27-30; লূক 9:18-21)

13 এরপর যীশু কৈসরিয়া, ফিলিপী অঞ্চলে এলেন। তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, “মানবপুত্র[a] কে? এ বিষয়ে লোকে কি বলে?”

14 তাঁরা বললেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন, কেউ বলে এলিয়,[b] আবার কেউ বলে আপনি যিরমিয়[c] বা ভাববাদীদের মধ্যে কেউ একজন হবেন।”

15 তিনি তাঁদের বললেন, “কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?”

16 এর উত্তরে শিমোন পিতর বললেন, “আপনি সেই মশীহ (খ্রীষ্ট), জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।”

17 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “যোনার ছেলে শিমোন, তুমি ধন্য, কোনো মানুষের কাছ থেকে একথা তুমি জাননি, কিন্তু আমার স্বর্গের পিতা একথা তোমায় জানিয়েছেন। 18 আর আমিও তোমাকে বলছি, তুমি পিতর[d] আর এই পাথরের ওপরেই আমি আমার মণ্ডলী গেঁথে তুলব। মৃত্যুর কোন শক্তি[e] তার ওপর জয়লাভ করতে পারবে না। 19 আমি তোমাকে স্বর্গরাজ্যের চাবিগুলি দেব, তাতে তুমি এই পৃথিবীতে যা বাঁধবে তা স্বর্গেও বেঁধে রাখা হবে। আর পৃথিবীতে যা হতে দেবে তা স্বর্গেও হতে দেওয়া হবে।”

20 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিলেন, যেন তারা কাউকে না বলে তিনিই খ্রীষ্ট।

যীশুর নিজের মৃত্যুর বিষয়ে ভবিষ্যদ্বানী

(মার্ক 8:31–9:1; লূক 9:22-27)

21 সেই সময় থেকে যীশু তাঁর শিষ্যদের জানাতে লাগলেন যে তাঁকে অবশ্যই জেরুশালেমে যেতে হবে। আর সেখানে কিভাবে তাঁকে ইহুদী নেতা, প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হবে। তাঁকে মেরে ফেলা হবে ও তিন দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুলোক থেকে বেঁচে উঠবেন।

22 তখন পিতর তাঁকে একপাশে ডেকে নিয়ে ভর্ৎসনার সুরে বললেন, “প্রভু, এসবের হাত থেকে ঈশ্বর আপনাকে রক্ষা করুন। এর কোন কিছুই আপনার প্রতি ঘটবে না।”

23 যীশু পিতরের দিকে ফিরে বললেন, “আমার কাছ থেকে দূর হও শয়তান! তুমি আমার বাধা স্বরূপ! তুমি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে এ বিষয় চিন্তা করছ, ঈশ্বরের যা তা তুমি ভাবছ না।”

24 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “কেউ যদি আমায় অনুসরণ করতে চায় তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক আর নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার অনুসারী হোক্। 25 যে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে। কিন্তু যে আমার জন্য তার নিজের প্রাণ হারাতে চাইবে সে তা রক্ষা করবে। 26 কেউ যদি সমস্ত জগত লাভ করে তার প্রাণ হারায় তবে তার কি লাভ? প্রাণ ফিরে পাবার জন্য তার দেবার মতো কি-ই বা থাকতে পারে? 27 মানবপুত্র যখন তাঁর স্বর্গদূতদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর পিতার মহিমায় আসবেন, তখন তিনি প্রত্যেক লোককে তার কাজ অনুসারে প্রতিদান দেবেন। 28 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে তাদের মধ্যে এমন কেউ কেউ আছে যারা কোনও মতে মৃত্যু দেখবে না, যে পর্যন্ত মানবপুত্রকে তাঁর রাজ্যে আসতে না দেখে।”

নহিমিয় 6

আরো সংকটসমূহ

তারপর সন্‌বল্লট, টোবিয় ও গেশম নামে আরব ও আমাদের অন্যান্য শত্রুরা জানতে পারল যে আমি জেরুশালেমের দেওয়াল নির্মাণ করছিলাম। দেওয়ালের গায়ের গর্তগুলি ভরাট করা হলেও তখনও অবশ্য আমাদের দরজার পাল্লা বসানো বাকি ছিল। অতএব সন্‌বল্লট ও গেশম তখন আমাকে একটি খবর পাঠাল: “চলো নহিমিয়: ওনো সমভূমির কেফিরিন শহরে আমরা সাক্ষাৎ করি।” কিন্তু ওরা আমার ক্ষতি করার পরিকল্পনা করেছিল।

কিন্তু আমি ওদের এই কথা বলে ফেরত পাঠালাম: “আমি খুব জরুরী কাজে ব্যস্ত আছি, তাই তোমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি কাজ বন্ধ করতে পারব না।”

সন্‌বল্লট ও গেশম আমাকে চারবার একই খবর পাঠিয়েছিল, কিন্তু আমি তাদের একই উত্তর দিয়েছিলাম। তারপর পঞ্চমবার সন্‌বল্লট ওর নিজের এক সাহায্যকারীর মাধ্যমে আমাকে একই আমন্ত্রণ পাঠালো। চিঠিটিতে লেখা ছিল:

“চতুর্দিকে একটি গুজব ছড়াচ্ছে এবং এমনকি গেশমও বলেছে যে, তুমি ও ইহুদীরা নাকি রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পরিকল্পনা করছ। যে কারণে নাকি তোমরা জেরুশালেম শহরের চারপাশে দেওয়াল তুলছ। জনসাধারণ বলছে, বিদ্রোহের পর তুমিই নাকি হবে ইহুদীদের নতুন রাজা। গুজবে একথাও বলা হচ্ছে যে তোমার সম্বন্ধে এই কথা জেরুশালেমে ঘোষণা করতে তুমি ভাববাদীদের নিযুক্ত করেছ: ‘যিহূদায় এক রাজা আছেন!’

“দেখো নহিমিয়, আমি তোমাকে সাবধান করে দিতে চাই যে রাজা শীঘ্রই এসব খবর পেয়ে যাবেন। তাই বলছি, এসো আমরা এক সঙ্গে বসে এ বিষয়ে কথাবার্তা বলি।”

আমি তখন সন্‌বল্লটকে বলে পাঠালাম, “তুমি যা অভিযোগ করেছ তার কোনটাই সত্যি নয়। তুমি তোমার নিজের মাথা থেকেই এই গল্পটা বানাচ্ছো।”

আসলে আমাদের শত্রুরা আমাদের ভয় দেখাতে চেষ্টা করছিল। ওরা ভাবছিল, “এসব করলে ইহুদীরা ভয় পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেবে আর দেওয়ালের কাজও শেষ হবে না।”

কিন্তু আমি প্রার্থনা করেছিলাম, “হে ঈশ্বর, আমাকে শক্তি দাও।”

10 এক দিন আমি শময়িয়র সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়িতে গেলাম। শময়িয় ছিল দলায়ের পুত্র। দলায় ছিল মহেটবেলের পুত্র। শময়িয় তার বাড়িতে ছিল। সে আমাকে বলল, “নহিমিয়, চল আমরা ঈশ্বরের মন্দিরে দেখা করি। চল আমরা পবিত্র স্থানের ভিতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিই, কারণ শত্রুরা আজ রাতে তোমাকে হত্যা করতে আসছে।”

11 আমি শময়িয়কে উত্তরে বললাম, “আমার মতো কোন ব্যক্তির কি পালিয়ে যাওয়া উচিৎ‌? আমার মতো একজন ব্যক্তির কি নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য পবিত্র স্থানের ভেতরে যাওয়া উচিৎ‌? আমি যাব না!”

12 আমি জানতাম যে আমাকে সাবধান করতে ঈশ্বর শময়িয়কে পাঠান নি। আমি বুঝতে পারলাম যে সে আমার বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল কারণ টোবিয় ও সন্‌বল্লট তাকে তা করার জন্য টাকা দিয়েছিল। 13 আমাকে ভয় দেখানোর জন্য ও মন্দিরের ভেতরে যেতে প্ররোচিত করবার জন্য শময়িয়কে টাকা দেওয়া হয়েছিল যাতে এই কাজ করে আমি পাপ আচরণ করি তাহলে ওরা আমাকে অপদস্থ করবার জন্য বদনাম দিতে পারে।

14 হে ঈশ্বর, সন্‌বল্লট ও টোবিয়কে এবং তারা যে মন্দ কাজগুলি করেছে তা অনুগ্রহ করে মনে রেখ। এমন কি ভাববাদিণী নোয়দিয়ার কথা এবং অন্যান্য যে সমস্ত ভাববাদীরা আমাকে ভয় দেখাতে চেষ্টা করছে তাদের কথাও তুমি স্মরণে রেখো।

দেওয়াল নির্মাণের কাজ সমাপ্ত

15 ইলূল মাসের 25 দিনের মাথায় জেরুশালেমের দেওয়াল গাঁথার কাজ শেষ হল। দেওয়াল নির্মাণ শেষ করতে 52 দিন লেগেছিল। 16 তখন আমাদের সমস্ত শত্রু ও আশেপাশের সব জাতিগুলি জানতে পারল যে দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তাই তারা তাদের সাহস হারিয়ে ফেলল। কেন? কারণ ওরা বুঝতে পেরেছিল, যে আমাদের ঈশ্বরের সহায়তাতেই একাজ শেষ হয়েছে।

17 এছাড়াও, সে সময়ে দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হবার পর, যিহূদার ধনী ব্যক্তিরা টোবিয়কে চিঠি লিখত এবং টোবিয় সেসব চিঠির জবাব দিত। 18 তারা ঐসব চিঠি লিখেছিল কারণ যিহূদাতে বহু লোক তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কারণ টোবিয়, আরহের পুত্র শখনিয়ের জামাতা ছিল। উপরন্তু টোবিয়ের পুত্র যিহোহানন বেরিখিয়ের পুত্র মশুল্লমের কন্যাকে বিয়ে করেছিল। 19 অতীতে তারা টোবিয়র কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাই এরা আমার কাছে বলেছিল টোবিয় কত ভাল ছিল। আমার কার্যকলাপ সম্পর্কে তারা টোবিয়কে যাবতীয় খবরাখবর দিত। টোবিয় আমাকে ভয় দেখানোর জন্য চিঠি পাঠানো অব্যাহত রেখেছিল।

প্রেরিত 16

পৌল ও সীলের সঙ্গে তীমথিয়র যাত্রা

16 পৌল দর্বী ও লুস্ত্রার শহরে গেলেন; সেখানে তীমথিয় নামে একজন খ্রীষ্টানুসারী ছিলেন। তীমথিয়র মা ছিলেন ইহুদী খ্রীষ্টীয়ান, তাঁর বাবা ছিলেন গ্রীক। লুস্ত্রা ও ইকনীয়ের সকল ভাইরা তীমথিয়কে শ্রদ্ধা করত ও তাঁর বিষয়ে সুখ্যাতি করত। পৌল চাইলেন সুসমাচার প্রচারের জন্য যেন তীমথিয় তাঁর সঙ্গে যান। তাই তিনি ঐসব জায়গায় ইহুদীদের সন্তুষ্ট করতে তীমথিয়কে সুন্নত করালেন, কারণ তাঁর বাবা যে গ্রীক একথা সকলে জানত।

পরে পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা বিভিন্ন শহরের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে, সেখানকার বিশ্বাসী ভাইদের কাছে জেরুশালেমের প্রেরিতদের ও প্রাচীনদের নির্ধারিত নির্দেশ জানালেন। এইভাবে মণ্ডলীগুলি বিশ্বাসে দৃঢ় হতে থাকল ও প্রতিদিন সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে থাকল।

এশিয়ার বাইরে পৌলকে আহ্বান

পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা ফরুগিয়া ও গালাতিয়ায় গেলেন, কারণ এশিয়ায় সুসমাচার প্রচার করার বিষয়ে পবিত্র আত্মা তাঁদের অনুমতি দিলেন না। তাঁরা মুশিয়ার সীমান্তে এলেন এবং বিথুনিয়ায় যেতে চেষ্টা করলেন, কিন্তু যীশুর আত্মা তাদের সেখানেও যেতে দিলেন না। তাই তাঁরা মুশিয়ার মধ্য দিয়ে ত্রোয়াতে গিয়ে পৌঁছালেন।

সেই রাত্রে পৌল এক দর্শন পেলেন; তিনি দেখলেন একজন মাকিদনিয়ান লোক দাঁড়িয়ে অনুনয় করে বলছে, “মাকিদনিয়ায় আসুন! আমাদের সাহায্য করুন।” 10 পৌলের এই দর্শন পাওয়ার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে মাকিদনিয়ায় যাওয়ার স্থির করলাম, আমরা বুঝতে পারলাম যে সেখানে সুসমাচার প্রচার করার জন্য ঈশ্বর আমাদের ডাকছেন।

লুদিয়ার মন পরিবর্তন

11 আমরা ত্রোয়া ছেড়ে জলপথে সোজা সামথ্রাকীতের দিকে রওনা দিলাম, আর পরদিন নিয়াপলিতে পৌঁছালাম। 12 সেখান থেকে আমরা ফিলিপীতে গেলাম। ফিলিপী হল মাকিদনিয়ার ঐ অংশের এক উল্লেখযোগ্য শহর, এক রোমান উপনিবেশ। আমরা সেখানে কিছুদিন থাকলাম।

13 বিশ্রামবারে আমরা শহরের ফটকের বাইরে নদীর ধারে গেলাম, মনে করলাম সেখানে নিশ্চয়ই কোন প্রার্থনার জায়গা আছে। আর সেখানে যে সব স্ত্রীলোক সমবেত হয়েছিলেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলাম। 14 সেখানে লুদিয়া নামে এক মহিলা ছিলেন, তাঁর বেগুনে রঙের কাপড়ের ব্যবসা ছিল। থুয়াতীরা শহর থেকে আগত এই মহিলা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করতেন। তিনি আমাদের কথা শুনছিলেন, আর ঈশ্বর তাঁর হৃদয় খুলে দিলে তিনি পৌলের কথা মন দিয়ে শুনে বিশ্বাস করলেন। 15 তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে বাপ্তাইজ হলে পর, তিনি অনুরোধের সুরে আমাদের বললেন, “আপনারা যদি আমাকে প্রভুর প্রকৃত বিশ্বাসী মনে করে থাকেন, তবে আমার বাড়িতে এসে থাকুন।” আর তাঁর বাড়িতে থাকবার জন্য আমাদের অনেক পীড়াপীড়ি করলেন।

কারাগারে পৌল ও সীল

16 একদিন আমরা যখন প্রার্থনা করার জন্য যাচ্ছিলাম, তখন একজন ক্রীতদাসী আমাদের সামনে এল। তার উপর এমন এক বিশেষ মন্দ আত্মা ভর করে ছিল যার প্রভাবে সে মানুষের ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারত। এই করে সে তার মনিবদেব বেশ রোজগারের রাস্তা করে দিয়েছিল। 17 সে আমাদের ও পৌলের পিছু ধরল আর চিৎকার করে বলতে লাগল, “এই লোকরা পরাৎ‌পর ঈশ্বরের দাস। তাঁরা বলেন কিভাবে তোমরা উদ্ধার পেতে পারো।” 18 এভাবে সে অনেকদিন ধরে বলতে লাগল। শেষে পৌল এতে বিরক্ত হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই আত্মাকে বললেন, “যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোকে আদেশ করছি যে তুই এর থেকে বেরিয়ে যা।” তাতে সেই মন্দ আত্মা সঙ্গে সঙ্গে বার হয়ে গেল।

19 সেই ক্রীতদাসীর মনিবরা তা দেখল, আর সেই ক্রীতদাসীকে কাজে লাগিয়ে তাদের অর্থ উপার্জনের পথ বন্ধ হল বুঝতে পেরে তারা পৌল ও সীলকে ধরে টানতে টানতে বাজারে কর্ত্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে গেল। 20 তারা নগরের কর্ত্তৃপক্ষের সামনে পৌল ও সীলকে নিয়ে এসে বলল, “এরা ইহুদী, আর এরা আমাদের শহরে গণ্ডগোলের সৃষ্টি করছে! 21 এরা এমন সব রীতি নীতি পালনের কথা বলছে যা পালন করা আমাদের পক্ষে নীতিবিরুদ্ধ কাজ, কারণ আমরা রোমান নাগরিক। আমরা ঐসব পালন করতে পারি না।”

22 তখন সেই জনতা তাঁদের ওপর মারমুখী হয়ে উঠল। নগররক্ষকগণ পৌল ও সীলের পোশাক ছিঁড়ে ফেলে তাঁদের বেত মারার জন্য হুকুম দিলেন। 23 পৌল ও সীলকে জনতা খুব মারধোর করার পর নেতারা তাঁদের কারাগারে পুরে দিল এবং কারারক্ষককে কড়া পাহারা দিতে বলল। 24 কারারক্ষক এই নির্দেশ পেয়ে পৌল ও সীলকে কারাগারের ভেতরের কক্ষে নিয়ে গিয়ে দেওয়ালে বসানো কাঠের বেড়িগুলির মধ্যে তাঁদের পা আটকে দিল।

25 মাঝরাতে পৌল ও সীল ঈশ্বরের স্তবগান ও প্রার্থনা করছিলেন, অন্য বন্দীরা তা শুনছিল। 26 হঠাৎ‌ প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কারাগারের ভিত কেঁপে উঠল আর সঙ্গে সঙ্গে কারাগারের সব দরজা খুলে গেল, বন্দীদের শেকল খসে পড়ল। 27 কারারক্ষক জেগে উঠে যখন দেখলেন যে কারাগারের সব দরজা খোলা তখন তিনি কোষ থেকে তাঁর তরবারি বার করে আত্মহত্যা করতে চাইলেন, কারণ তিনি ভাবলেন বন্দীরা সব পালিয়েছে। 28 কিন্তু পৌল চিৎকার করে বলে উঠলেন, “নিজের ক্ষতি করবেন না! আমরা সকলেই এখানে আছি!”

29 তখন কারারক্ষক কাউকে আলো আনতে বলে ভেতরে দৌড়ে গেলেন, আর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে পৌল ও সীলের সামনে উপুড় হয়ে পড়লেন। 30 পরে তাঁদের বাইরে নিয়ে এসে বললেন, “মহাশয়রা, উদ্ধার পেতে হলে আমায় কি করতে হবে?”

31 তাঁরা বললেন, “প্রভু যীশুর ওপর বিশ্বাস করুন, তাহলে আপনি ও আপনার গৃহের সকলেই উদ্ধার লাভ করবেন।” 32 এরপর তাঁরা সেই কারারক্ষক ও তাঁর বাড়ির লোকের কাছে প্রভুর বার্তা প্রচার করলেন। 33 বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল কিন্তু কারারক্ষক সেই রাতেই পৌল ঔ সীলের সমস্ত ক্ষত ধুয়ে দিলেন এবং সপরিবারে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করলেন। 34 এরপর কারারক্ষক পৌল ও সীলকে নিজের গৃহে নিয়ে গিয়ে তাঁদের আহারের ব্যবস্থা করলেন। ঈশ্বরে বিশ্বাসী হওয়ায় তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে খুব আনন্দিত হলেন।

35 পরদিন সকাল হলে শাসকগণ রক্ষীবাহিনীদের দিয়ে কারারক্ষককে বলে পাঠালেন, “ঐ লোকদের ছেড়ে দাও!”

36 তখন কারারক্ষক সেকথা পৌলকে জানালেন, “নগর অধ্যক্ষরা আপনাদের ছেড়ে দেবার জন্য বলে পাঠিয়েছেন, তাই এখন আপনারা নির্বিঘ্নে এখান থেকে চলে যান।”

37 কিন্তু পৌল তাদের বললেন, “আমরা রোমান নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা আমাদের বিচার না করেই সকলের সামনে বেত মেরেছেন। শেষে আমাদের কারাগারে বন্দী করেছিলেন। এখন তাঁরা চুপি-চুপি আমাদের ছেড়ে দিতে চাইছেন? এ হতে পারে না! তাঁদের এখানে আসতে হবে আর এসে আমাদের কারাগারের বাইরে নিয়ে যেতে হবে।”

38 সেই রক্ষীবাহিনীর লোকরা বিচারকদের জানাল যে পৌল ও সীল রোমান নাগরিক, তখন তাঁরা ভয় পেয়ে গেলেন। 39 তাই তাঁরা এসে ক্ষমা চাইলেন, আর তাঁদের কারাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে সেই শহর ছেড়ে চলে যাবার জন্য অনুরোধ করলেন। 40 পৌল ও সীল কারাগার থেকে বাইরে এসে লুদিয়ার বাড়ি গেলেন। সেখানে বিশ্বাসীদের সঙ্গে দেখা হলে তাদের সকলকে উৎসাহ দিলেন। এরপর পৌল ও সীল শহর ছেড়ে চলে গেলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International