M’Cheyne Bible Reading Plan
বন্যার শেষ
8 কিন্তু ঈশ্বর নোহর কথা ভুলে যান নি। নোহ এবং নোহের নৌকোয় আশ্রয় পাওয়া সব জীবজন্তুর কথাই ঈশ্বরের মনে ছিল। পৃথিবীর উপর দিয়ে তিনি এক বাতাস বইয়ে দিলেন। এবং সমস্ত জল সরে যেতে শুরু করল।
2 আকাশ থেকে অবিশ্রান্ত বর্ষন বন্ধ হল। ভূগর্ভস্ত প্রস্রবণগুলি থেকে জল নির্গত হওয়া বন্ধ হল। 3-4 পৃথিবীর উপর থেকে জলরাশি ক্রমশঃ নেমে যেতে লাগল। 150 দিন পরে জল এতটাই নেমে গেল যে নৌকোটা আবার মাটি স্পর্শ করলো। নৌকা গিয়ে ঠেকল অরারটের একটা পর্বতে। সেটা ছিল সপ্তম মাসের 17 তম দিন। 5 জল ক্রমাগত নেমে যেতে লাগলো এবং দশম মাসের প্রথম দিনে পর্বতের মাথাগুলো জলের উপরে জেগে উঠলো।
6 আরও 40 দিন পরে নোহ নিজের তৈরী নৌকোর জানালাটা খুললেন। 7 তারপর তিনি নৌকো থেকে একটা দাঁড়কাক উড়িয়ে দিলেন। এবং যতদিন না জল নেমে গিয়ে শুকনো ডাঙা দেখা দিল ততদিন সেই দাঁড়কাকটা নৌকো থেকে উড়ে গিয়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় উড়ে বেড়াতে লাগল। 8 নোহ একটা পায়রাও উড়িয়ে দিলেন। পায়রাটা শুকনো ডাঙা খুঁজে পায় কিনা তা নোহ জানতে চাইছিলেন। তিনি জানতে চাইছিলেন যে পৃথিবী এখনও জলে ডুবে আছে কি না।
9 পৃথিবী তখনও জলে ঢাকা, তাই পায়রাটা বসার জায়গা না পেয়ে ফিরে এল নৌকোতে। নোহ হাত বাড়িয়ে পায়রাটাকে ধরে নৌকোর ভিতরে টেনে নিলেন।
10 সাত দিন পরে নোহ আবার পায়রাটা উড়িয়ে দিলেন। 11 এবং সেদিন বিকেলে পায়রাটা জলপাইয়ের একটা কচি পাতা ঠোঁটে নিয়ে ফিরে এল। পৃথিবীতে যে আবার ডাঙা জেগে উঠতে শুরু করেছে ঐ কচি পাতাটি তারই চিহ্ন। 12 সাত দিন পরে নোহ আবার পায়রাটা উড়িয়ে দিলেন। কিন্তু এবার পায়রাটা আর ফিরে এল না।
13 তারপর নোহ নৌকোর দরজাটা খুললেন। নোহ তাকিয়ে শুকনো ডাঙা দেখতে পেলেন। সেটা ছিল বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন। নোহর বয়স তখন 601 বছর। 14 দ্বিতীয় মাসের 27তম দিনের মধ্যে ডাঙা সম্পূর্ণ শুকনো হয়ে গেল।
15 ঈশ্বর তখন নোহকে বললেন, 16 “নৌকো থেকে নেমে এস। তুমি, তোমার স্ত্রী, তোমার পুত্ররা আর তাদের বধূরা নৌকো থেকে এবার বাইরে যাও। 17 তোমাদের সঙ্গে নৌকোর সমস্ত পশুপাখী নিয়ে বাইরে যাও। সমস্ত পাখী, সমস্ত জন্তু জানোয়ার এবং বুকে হেঁটে চলে এরকম সমস্ত প্রাণী নিয়ে বাইরে এসো। ঐসব পশুপাখী আরও অনেক পশুপাখীর জন্ম দেবে আর সে সবে আবার পৃথিবী ভরে যাবে।”
18 অতএব নোহ, তাঁর স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূদের নিয়ে নৌকো থেকে মাটিতে নামলেন। 19 সমস্ত জন্তু জানোয়ার, সমস্ত প্রাণী যা বুকে হাঁটে এবং সমস্ত পাখী নৌকো ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এল। নৌকো ছেড়ে এল জোড়ায় জোড়ায় সমস্ত পশুপাখী।
20 তখন নোহ প্রভুর জন্যে একটা বেদী তৈরী করলেন। নোহ কয়েকটি শুচি পশু ও কয়েকটি শুচি পাখী ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিবেদন করে সেই বেদীতে হোম করলেন।
21 প্রভু হোমের গন্ধ আঘ্রাণ করে প্রীত হলেন। আপন মনে প্রভু বললেন, “মানুষকে শাস্তি দেওয়ার জন্যে আমি আর কখনও মৃত্তিকাকে অভিশাপ দেব না। কারণ বাল্যকাল থেকে মানুষের স্বভাব মন্দ। সুতরাং এইমাত্র আমি যেমনটি করেছিলাম আর কখনও সেভাবে পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীদের ধ্বংস করব না। 22 যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন শস্যের চারা রোপণের আর ফসল কাটার নির্দিষ্ট সময় থাকবে। ততদিন ঠাণ্ডা, গরম, শীতকাল আর গ্রীষ্মকাল এবং দিন, রাত হয়ে চলবে।”
কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্যদান
(মার্ক 1:40-45; লূক 5:12-16)
8 যীশু সেই পাহাড় থেকে নেমে এলে অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল। 2 সেই সময় একজন কুষ্ঠ রোগী যীশুর কাছে এসে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে বলল, “প্রভু, আপনি ইচ্ছে করলেই আমাকে ভাল করে দিতে পারেন।”
3 তখন যীশু সেই কুষ্ঠ রোগীর দিকে হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করলেন। তিনি বললেন, “হ্যাঁ, আমি তাই-ই চাই। তুমি ভাল হয়ে যাও।” সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ রোগ ভাল হয়ে গেল। 4 তখন যীশু তাকে বললেন, “দেখ, তুমি কাউকে একথা বোলো না, বরং যাও যাজকের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও; আর গিয়ে মোশির আদেশ অনুসারে নৈবেদ্য উৎসর্গ কর। তাতে তারা জানবে যে তুমি ভাল হয়ে গেছ।”
শতপতির দাসের আরোগ্যলাভ
(লূক 7:1-10; যোহন 4:43-54)
5 এরপর যীশু যখন কফরনাহূম শহরে গেলেন, তখন একজন শতপতি তাঁর কাছে এসে অনুনয় করে বললেন, 6 “প্রভু, আমার চাকরের পক্ষাঘাত হয়েছে, সে বিছানায় পড়ে আছে ও যন্ত্রণায় ছট্ফট্ করছে।”
7 যীশু তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, আমি যাব, এবং তাকে সুস্থ করব।”
8 সেই শতপতি তখন যীশুকে বললেন, “প্রভু, আমি এমন যোগ্য নই যে আমার বাড়ীতে আপনি আসবেন। আপনি কেবল মুখে বলে দিন, তাতেই আমার চাকর ভাল হয়ে যাবে। 9 আমি নিজে অপরের কর্তৃত্বের অধীন আর আমার সৈন্যদের উপরে আমি কর্তৃত্ব করি। আমি কাউকে ‘যাও’ বললে সে যায়, আবার কাউকে ‘এস’ বললে সে আসে; আর আমার চাকরকে ‘এটা কর’ বললে সে তা করে।”
10 যীশু একথা শুনে আশ্চর্য হলেন; যাঁরা তাঁর পিছনে পিছনে যাচ্ছিল তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সমগ্র ইস্রায়েলে আমি এত বেশী বিশ্বাস কারও মধ্যে দেখতে পাইনি। 11 আমি তোমাদের আরো বলছি যে, পূর্ব ও পশ্চিম থেকে অনেকে আসবে আর অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের সঙ্গে স্বর্গরাজ্যে ভোজে বসবে। 12 কিন্তু যাঁরা রাজ্যের উত্তরাধিকারী, তাদের বাইরে অন্ধকারে ফেলে দেওয়া হবে। সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করবে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষবে।”
13 এরপর যীশু সেই শতপতিকে বললেন, “যাও, তুমি যেমন বিশ্বাস করেছ, তেমনি হোক্।” আর সেই মূহুর্তেই তার চাকর সুস্থ হয়ে গেল।
যীশু অনেক লোককে সুস্থ করলেন
(মার্ক 1:29-34; লূক 4:38-41)
14 যীশু পিতরের বাড়ীতে গিয়ে দেখলেন, পিতরের শাশুড়ীর ভীষণ জ্বর হয়েছে, আর তিনি বিছানায় শুয়ে আছেন। 15 যীশু তাঁর হাত স্পর্শ করা মাত্রই জ্বর ছেড়ে গেল। তখন তিনি বিছানা ছেড়ে উঠে যীশুর সেবা করতে লাগলেন।
16 সন্ধ্যা হলে লোকেরা ভূতে পাওয়া অনেক লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল। আর তিনি তাঁর হুকুমে সেই সব ভূতদের দূর করে দিলেন। এছাড়া তিনি রোগীদের সুস্থ করলেন। 17 এর দ্বারা ভাববাদী যিশাইয়র ভাববাণী পূর্ণ হল:
“তিনি আমাদের দুর্বলতা গ্রহণ করলেন, আমাদের ব্যাধিগুলি বহন করলেন।”(A)
যীশুকে অনুসরণ
(লূক 9:57-62)
18 যীশু যখন দেখলেন যে তাঁর চারপাশে অনেক লোক জড়ো হয়েছে, তখন হ্রদের ওপারে যাওয়ার জন্য অনুগামীদের আদেশ দিলেন। 19 একজন ব্যবস্থার শিক্ষক তাঁর কাছে এসে বললেন, “গুরু, আপনি যেখানে যাবেন আমিও সেখানে যাব।”
20 তখন যীশু তাকে বললেন, “শিয়ালের গর্ত আছে এবং আকাশের পাখীদের বাসা আছে; কিন্তু মানবপুত্রের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।”
21 তাঁর অনুগামীদের মধ্যে আর একজন বললেন, “প্রভু আগে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসার অনুমতি দিন, তারপর আমি আপনাকে অনুসরণ করব।”
22 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, “তুমি আমার সঙ্গে এস, যারা মৃত তারাই মৃতদের কবর দেবে।”
যীশু ঝড় থামালেন
(মার্ক 4:35-41; লূক 8:22-25)
23 এরপর যীশু একটা নৌকাতে উঠলেন আর তাঁর শিষ্যরা তাঁর সঙ্গে গেলেন। 24 সেই হ্রদের মধ্যে হঠাৎ ভীষণ ঝড় উঠল, তাতে নৌকার উপর ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল। যীশু তখন ঘুমোচ্ছিলেন। 25 তাই শিষ্যরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর ঘুম ভাঙিয়ে বললেন, “প্রভু বাঁচান! আমরা যে ডুবে মরলাম।”
26 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “হে অল্প বিশ্বাসীর দল! কেন তোমরা এত ভয় পাচ্ছ?” তারপর তিনি উঠে ঝোড়ো বাতাস ও হ্রদের ঢেউকে ধমক দিলেন, তখন সব কিছু শান্ত হল।
27 এতে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, “ইনি কিরকম লোক? এঁর কথা এমন কি বাতাস ও সাগরও শোনে!”
যীশু দুজন লোকের ভূত ছাড়ালেন
(মার্ক 5:1-20; লূক 8:26-39)
28 যীশু যখন হ্রদের অপর পারে গাদারীয়দের দেশে এলেন সেই সময় ভূতে পাওয়া দুজন লোক কবর থেকে বেরিয়ে তাঁর সামনে এল। তারা এমন ভয়ঙ্কর ছিল যে কোন মানুষ সেই পথ দিয়ে চলতে পারত না। 29 তারা চিৎকার করে বলল, “হে ঈশ্বরের পুত্র, আপনি আমাদের নিয়ে কি করতে চান? নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কি আপনি আমাদের নির্যাতন করতে এসেছেন?”
30 সেখান থেকে কিছু দূরে এক পাল শুয়োর চরছিল। 31 তখন ভূতেরা যীশুকে অনুনয় করে বলল, “আপনি যদি আমাদের তাড়িয়েই দেবেন তবে ঐ শুয়োর পালের মধ্যে ঢুকতে হুকুম দিন।”
32 যীশু তাদের বললেন, “তাই যাও!” তখন তারা সেই লোকদের মধ্যে থেকে বার হয়ে এসে সেই শুয়োরগুলির মধ্যে গিয়ে ঢুকল; তাতে সেই শুয়োরের পাল ঢালু পাড় দিয়ে জোরে দৌড়াতে দৌড়াতে হ্রদের জলে গিয়ে ডূবে মরল। 33 যারা সেই পাল চরাচ্ছিল, তারা দৌড়ে পালাল। তারা নগরের মধ্যে গিয়ে সব খবর জানাল। বিশেষ করে সেই ভূতে পাওয়া লোকদের বিষয়ে বলল। 34 তখন নগরের সব লোক যীশুকে দেখার জন্য বার হয়ে এল। তারা যীশুর দেখা পেয়ে তাঁকে অনুনয় করে বলল তিনি যেন তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে যান।
ইষ্রার সঙ্গে প্রত্যাবর্তনকারী নেতাদের তালিকা
8 রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালে যে সব পরিবারের প্রধানরা আমার সঙ্গে বাবিল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন নীচে তাঁদের নামের তালিকা দেওয়া হল:
2 পীনহসের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: গের্শোম; ঈথামরের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: দানিয়েল; দায়ূদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: হটূশ,
3 শখনিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে পরোশ, সখরিয় ও আরো 150 জন পুরুষ;
4 পহৎ মোয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে সখরিয়র পুত্র ইলীয়ৈনয় ও আরো 200 জন পুরুষ;
5 জট্টর উত্তরপুরুষদের মধ্যে মহসীয়েলের সন্তান শখনিয় ও আরো 300 জন পুরুষ;
6 আদীনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যোনাথনের পুত্র এবদ ও আরো 50 জন পুরুষ;
7 এলমের উত্তরপুরুষদের মধ্যে অথলিয়ের পুত্র যিশায়াহ ও আরো 70 জন পুরুষ;
8 শফটিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে মীখায়েলের পুত্র সবদিয় ও আরো 80 জন পুরুষ;
9 যোয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যিহিয়েলের পুত্র ওবদিয় ও আরো 218 জন পুরুষ;
10 বানির উত্তরপুরুষদের মধ্যে যোষিফিয়ের পুত্র শলোমীত ও আরো 160 জন পুরুষ;
11 বেবয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে বেবয়ের পুত্র সখরিয় ও আরো 28 জন পুরুষ;
12 অস্গদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে হকাটনের পুত্র যোহানন ও আরো 110 জন পুরুষ;
13 অদোনীকামের শেষ উত্তরপুরুষদের মধ্যে ইলীফেলট, যিয়ূয়েল, শময়িয় ও আরো 60 জন পুরুষ,
14 এবং বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে ঊথয়, সব্বূদ ও তার সঙ্গী 70 জন পুরুষ।
জেরুশালেমে প্রত্যাবর্তন
15 আমি এই সমস্ত ব্যক্তিদের অহবা-গামিনী নদীর কাছে জড় হতে বলেছিলাম। সেখানে তাঁবু খাটিয়ে আমরা তিন দিন ছিলাম। আমি কয়েকজন যাজককে সেখানে দেখলাম, কিন্তু কোন লেবীয়কে নয়। তাই আমি 16 ইলীয়েষর, অরীয়েল, শময়িয়, ইল্নাথন, যারিব, ইল্নাথন, নাথন, সখরিয় ও মশুল্লম প্রভৃতি নেতৃবৃন্দকে এবং 17 যোয়ারীব ও ইল্নাথন নামে দুজন শিক্ষককে ডেকে কাসিফিয়া নগরের প্রধান ইদ্দোরের কাছে তাঁকে ও তাঁর লোকদের কি বলতে হবে তার নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছিলাম যাতে ইদ্দো আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরে কাজ করার মত কিছু সহকারী পাঠাতে পারেন। 18 যেহেতু ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন ইদ্দো নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের আমাদের কাছে পাঠালেন: মহলির উত্তরপুরুষ শেরেবিয় (মহলি ছিলেন একজন লেবি। লেবি ছিল ইস্রায়েলের সন্তান) শেরেবিয়র সঙ্গে তার পুত্ররা এবং ভাইরা মোট 18 জন পুরুষ এসেছিল। 19 হশবিয় ও তার সঙ্গে মরারির সন্তান যিশায়াহ এবং তাদের ভাইরা ও ছেলেরা, মোট 20 জন পুরুষ। 20 তারা 220 জন মন্দির কর্মীও পাঠিয়েছিল। (তাদের পূর্বপুরুষরা লেবীয়দের সাহায্য করবার জন্য দায়ূদ ও তাঁর কর্মচারীবর্গদ্বারা নিযুক্ত হয়েছিলেন। তাদের নাম তালিকা ভুক্ত ছিল।)
21 অহবা নদীর কাছে আমি ঘোষণা করলাম, ঈশ্বরের কাছে আমাদের বিনীত প্রতিপন্ন করার জন্য আমরা সকলে উপবাস করব। ঈশ্বরের কাছে আমরা আমাদের ও আমাদের সন্তান-সন্ততিদের এবং আমাদের বিষয় সম্পত্তির নিরাপদ যাত্রার জন্য প্রার্থনা করতে চেয়েছিলাম। 22 আমি আমাদের নিরাপত্তার জন্য রাজার কাছ থেকে আমাদের সঙ্গে আসবার জন্য সৈন্য ও অশ্বারোহী চাইতে অত্যন্ত দ্বিধা বোধ করেছিলাম। কারণ আমরা রাজাকে বলেছিলাম, “যারা প্রভুতে বিশ্বাস করে ও তাঁর প্রতি আস্থা রাখে, আমাদের প্রভু সদা তাদের সহায় হন। কিন্তু যেসব ব্যক্তি তাঁর থেকে দূরে সরে যায় ঈশ্বর তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হন।” 23 আমরা তাই উপবাস করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম এবং তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন।
24 এরপর আমি যাজকদের মধ্যে থেকে শেরেবিয়, হশবিয় যারা নেতৃস্থানীয় ছিল ও তাদের 10 জন ভাই প্রমুখ মোট 12 জন যাজককে বেছে নিয়েছিলাম। 25 রাজা অর্তক্ষস্ত, তাঁর উপদেষ্টাগণ, তাঁর প্রধানরা এবং বাবিলের সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা সেই উপহারগুলি ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য দিলেন। এবং বাবিলের লোকদের কাছ থেকে আমরা সব সোনা এবং রূপো ওজন করে, মন্দিরের কাজের জন্য ঐ বারো জনকে দিলাম। 26 সব মিলিয়ে 25 টন রূপো, 3 3/4 টন রূপোর থালা ও 3 3/4 টন সোনা ছিল। 27 এছাড়াও আমরা প্রায় 19 পাউণ্ড ওজনের 20টি সোনার বাসন ও দুর্মূল্য 2টি পিতলের থালা দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, 28 “তোমরা প্রভুর কাছে পবিত্র। এই সামগ্রীগুলিও প্রভুর কাছে পবিত্র। এই সমস্ত সোনা এবং রূপো লোকরা প্রভুকে দান করেছিল, সেই প্রভু, যিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর। 29 যাও এই সমস্ত বস্তু রক্ষা কর। জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের নেতৃবর্গকে দেওয়ার আগে পর্যন্ত এই সমস্ত সম্পদের দায়িত্ব তোমাদের। ইস্রায়েলের প্রধান পরিবারবর্গের নেতা ও লেবীয়দের হাতে এই সমস্ত কিছু তুলে দেবে। তারা ওজন করে এই সমস্ত জিনিস জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের ঘরের ভেতরে তুলে রাখবেন।”
30 তখন যাজক ও লেবীয়রা, জেরুশালেমের মন্দিরের জন্য ইষ্রার দেওয়া সামগ্রীগুলি গ্রহণ করল।
31 প্রথম মাসের দ্বাদশ দিনে আমরা অহবা নদীর কাছ থেকে জেরুশালেম অভিমুখে যাত্রা শুরু করলাম। ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন। তিনি আমাদের পথে শত্রুদের ও দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করলেন। 32 এরপর আমরা জেরুশালেমে পৌঁছলাম। সেখানে তিন দিন বিশ্রাম নিলাম। 33 চতুর্থ দিন আমরা মন্দিরে গেলাম এবং দুর্মূল্য বস্তুগুলি ওজন করে যাজক ঊরীয়ের পুত্র মরেমোতকে দিলাম। মরেমোতের সঙ্গে পীনহসের পুত্র ইলিয়াসর এবং যেশূয়ের পুত্র যোষাবদ ও বিন্নূয়ির পুত্র নোয়দিয় নামে দুই লেবীয় ছিল। 34 আমরা সামগ্রীগুলি ওজন করে মোট ওজনের পরিমাণ নথিভুক্ত করেছিলাম।
35 এরপর, যে সব ইহুদীরা নির্বাসন থেকে ফিরে এসেছিল, তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে হোমবলি নিবেদন করল। তারা ইস্রায়েলের মঙ্গলের জন্য 12টি বৃষ, 96টি মেষ, 77টি মেষশাবক ও পাপমোচনের জন্য 12টি পুরুষ ছাগলও বলিদান করল।
36 এরপর আমরা ফরাৎ নদীর পশ্চিম তীরস্থ প্রাদেশিক নেতাদের ও রাজ্যপালদের হাতে রাজার চিঠিটি তুলে দিলাম। তারপর এই সমস্ত নেতারা ইস্রায়েলের বাসিন্দা ও মন্দিরের সহায়তা করেন।
8 1-3 আর শৌল স্তিফানের হত্যার অনুমোদন করেছিলেন।
বিশ্বাসীদের কষ্ট
কয়েকজন ধার্মিক লোক এসে স্তিফানকে কবর দিলেন আর স্তিফানের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করলেন। সেইদিন থেকে জেরুশালেমের মণ্ডলীর উপর ভীষণ নির্যাতন শুরু হল। প্রেরিতগণ ছাড়া সবাই যিহূদিয়া ও শমরিয়া প্রদেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়লেন। এদিকে শৌল বিশ্বাসী সমাবেশকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন। বাড়ি বাড়ি ঢুকে তিনি স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে টানতে টানতে নিয়ে এসে কারাগারে ভরলেন। 4 বিশ্বাসীরা চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল; আর তারা যেখানেই গেল সেখানেই সুসমাচার প্রচার করতে লাগল।
শমরিয়ায় ফিলিপের প্রচার
5 ফিলিপ শমরিয়া শহরে গিয়ে সেখানে তিনি খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করলেন। 6 লোকরা যখন ফিলিপের কথা শুনল এবং তিনি যে সব অলৌকিক কাজ করছিলেন তা দেখল, তখন তাঁর কথায় আরো মন দিল। 7 অশুচি আত্মায় পাওয়া লোকদের মধ্য থেকে চিৎকার করতে করতে সেইসব অশুচি আত্মা বাইরে বেরিয়ে এল। অনেক পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোক ও খোঁড়া লোক সুস্থ হল। 8 এর ফলে সেই শহরে মহা আনন্দের সাড়া জাগল।
9 সেই শহরে শিমোন নামে একজন লোক ছিল। ফিলিপ সেই শহরে আসার আগে শিমোন বহুদিন ধরে সেই শহরে যাদুখেলা দেখাত। এইভাবে সে শমরিয়ার লোকদের অবাক করে দিত। সে নিজেকে একজন মহাপুরুষ বলে জাহির করত। 10 ছোট বড় সকলেই তার কথা মন দিয়ে শুনত। তারা বলত, “এই লোকের মধ্যে ঈশ্বরের সেই শক্তি আছে যাকে ‘মহাপরাক্রম’ ও বলা চলে।” 11 লোকরা তার কথা শুনত কারণ দীর্ঘ দিন ধরে সে লোকদের যাদুমন্ত্রের চমকে মুগ্ধ করে রেখেছিল। 12 কিন্তু ফিলিপ যখন তাদের ঈশ্বরের সুসমাচার, তাঁর রাজ্য ও যীশু খ্রীষ্টের নামের বিষয় জানালেন, তখন স্ত্রী-পুরুষ সকলে ফিলিপকে বিশ্বাস করে বাপ্তিস্ম নিল। 13 আর শিমোন নিজেও বিশ্বাস করল ও বাপ্তিস্ম নিল। বাপ্তাইজ হওয়ার পর সে ফিলিপের কাছে কাছে থাকতে লাগল, আর ফিলিপের দ্বারা অনেক অলৌকিক কাজ ও নানা পরাক্রম কাজ হচ্ছে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল।
14 প্রেরিতরা তখনও জেরুশালেমে ছিলেন। তাঁরা শুনতে পেলেন যে শমরিয়ায় লোকরা ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছে, তখন তাঁরা পিতর ও যোহনকে সেখানে পাঠালেন। 15 পিতর ও যোহন এসে শমরিয়ায় খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের জন্য প্রার্থনা করলেন যেন তারা পবিত্র আত্মা লাভ করে; 16 কারণ এই লোকেরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হলেও তখনও পর্যন্ত তাদের কারোর ওপর পবিত্র আত্মা অবতরণ করেন নি। 17 এইজন্য পিতর ও যোহন প্রার্থনা করলেন; আর সেই দুই প্রেরিত, লোকদের মাথায় হাত রাখলে তারা পবিত্র আত্মা লাভ করল।
18 শিমোন যখন দেখল যে, প্রেরিতদের হাত রাখার মাধ্যমে পবিত্র আত্মা লাভ হচ্ছে, তখন সে টাকা এনে তাদের বলল, 19 “আমাকেও এই ক্ষমতা দিন যেন আমি যার ওপর আমার দুহাত রাখব, সে এই পবিত্র আত্মা পায়।”
20 পিতর শিমোনকে বললেন, “তুমি ও তোমার টাকা চিরকালের মত ধ্বংস হয়ে যাক্! ঈশ্বরের দান তুমি টাকা দিয়ে কিনবে বলে ভেবেছ? 21 এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে তোমার কোন অধিকার বা অংশ নেই, কারণ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তোমার অন্তর মোটেই সরল নয়। 22 তাই তুমি এই মন্দ চিন্তা থেকে তোমার মন-ফেরাও! আর প্রভুর কাছে প্রার্থনা কর, হয়তো তোমার মনের এই মন্দচিন্তার জন্য ক্ষমা পেলেও পেতে পার। 23 কারণ আমি দেখছি তোমার মধ্যে খুব ঈর্ষা আছে আর তুমি পাপের কাছে বন্দী।”
24 তখন শিমোন বলল, “আপনারাই আমার জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন, যেন আপনারা যা বললেন তার কিছুই আমার না হয়!”
25 প্রেরিতরা যীশুর বিষয়ে যা জানতেন, সে সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিয়ে ও প্রভুর বার্তা প্রচার করে জেরুশালেমে ফিরে চললেন, যাবার পথে তাঁরা শমরিয়ার বিভিন্ন গ্রামে সুসমাচার প্রচার করলেন।
ফিলিপ ইথিওপিয়ার একজন লোককে শিক্ষা দিলেন
26 প্রভুর এক দূত ফিলিপকে বললেন, “প্রস্তুত হও, দক্ষিণে যে পথ জেরুশালেম থেকে ঘসার দিকে নেমে গেছে, সেই পথ ধরে নেমে যাও।”
27 তখন ফিলিপ প্রস্তুত হয়ে সেই পথ ধরে রওনা দিলেন এবং সেই পথে একজন ইথিওপিয়ানকে দেখতে পেলেন, তিনি নপুংসক। তিনি ইথিওপিয়ার কান্দাকি রাণীর কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। ইনি জেরুশালেমে উপাসনা করতে গিয়েছিলেন। 28 ফেরার পথে তিনি তাঁর রথে বসে ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তক থেকে পড়ছিলেন।
29 তখন পবিত্র আত্মা ফিলিপকে বললেন, “ঐ রথের কাছে যাও, তাঁর সঙ্গ ধর!” 30 ফিলিপ দৌড়ে রথের কাছে গিয়ে শুনলেন, সেই কোষাধ্যক্ষ ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তক থেকে পড়ছেন। ফিলিপ জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি যা পড়ছেন তা কি বুঝতে পারছেন?”
31 তিনি বললেন, “কি করে বুঝব যদি বুঝিয়ে দেওয়ার কেউ না থাকে?” আর তিনি ফিলিপকে রথে উঠে এসে তার কাছে বসতে বললেন। 32 শাস্ত্রের যে অংশটি তিনি পাঠ করছিলেন তা হল:
“হত হবার জন্য মেষের মতো তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল।
লোম ছাঁটাইকারীদের সামনে ভেড়া যেমন মুখ বুজে থাকে,
তেমনি তিনি মুখ খোলেন নি।
33 তাঁর হীন অবস্থায়, তাঁর ন্যায় অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হল।
কেউ আর কখনও তাঁর বংশধরদের কথা বলবে না,
কারণ পৃথিবীতে তাঁর জীবন সমাপ্ত হল।”(A)
34 সেই কোষাধ্যক্ষ ফিলিপকে বললেন, “অনুগ্রহ করে বলুন, ভাববাদী কার বিষয়ে এই কথা বলছেন? তিনি কি তাঁর নিজের বিষয়ে বলছেন, অথবা অন্য কারো বিষয়ে?” 35 তখন ফিলিপ শাস্ত্রের সেই অংশ থেকে শুরু করে যীশুর বিষয়ে সুসমাচার তাঁকে জানালেন।
36 তাঁরা রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে জলাশয়ের কাছে এসে হাজির হলে সেই নপুংসক বললেন, “দেখুন! এখানে জল আছে! বাপ্তাইজ হতে আমার বাধা কোথায়?” 37 [a] 38 তিনি রথ থামাতে হুকুম করলেন, আর ফিলিপ ও নপুংসক উভয়ে জলে নামলেন। ফিলিপ তাঁকে বাপ্তিস্ম দিলেন। 39 তাঁরা যখন জলের মধ্য থেকে উঠলেন, তখন প্রভুর আত্মা ফিলিপকে সরিয়ে নিয়ে গেলেন, সেই কোষাধ্যক্ষ তাকে আর দেখতে পেলেন না; কিন্তু আনন্দ করতে করতে তাঁর পথে এগিয়ে চললেন। 40 ফিলিপ নিজেকে অসদোদে দেখতে পেলেন আর তিনি কৈসরিয়ার পথে রওনা হয়ে যাত্রা পথে সব নগরে সুসমাচার প্রচার করলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International