M’Cheyne Bible Reading Plan
আদম পরিবারের ইতিহাস
5 এই বই হল আদম পরিবারের বিষয় নিয়ে। ঈশ্বর নিজের ছাঁচে মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন। 2 ঈশ্বর মানুষকে পুরুষ ও স্ত্রীরূপে সৃষ্টি করেছিলেন। এবং সেই সৃষ্টির দিনে ঈশ্বর আশীর্বাদ করে তাদের নাম দিলেন “আদম।”
3 আদমের যখন 130 বছর বয়স তখন তার আর একটি পুত্র হল। পুত্রটিকে দেখতে হুবহু আদমের মতো। আদম তার নাম রাখলেন শেথ। 4 শেথের জন্মের পর 800 বছর আদম বেঁচেছিলেন। এই সময়ের মধ্যে আদমের আরও পুত্রকন্যা হল। 5 সুতরাং আদম মোট 930 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হল।
6 শেথের যখন 105 বছর বয়স তখন তাঁর একটি পুত্র হয়। তার নাম রাখা হয় ইনোশ। 7 ইনোশের জন্মের পরে শেথ 807 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে শেথের আরও পুত্রকন্যা হয়। 8 সুতরাং শেথ বেঁচেছিলেন মোট 912 বছর। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।
9 ইনোশের যখন 90 বছর বয়স তখন তাঁর কৈনন নামে একটি পুত্র হয়। 10 কৈননের জন্মের পর ইনোশ 815 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 11 সুতরাং ইনোশ মোট 905 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।
12 কৈননের 70 বছর বয়সে তাঁর মহললেল নামে একটি পুত্র হয়। 13 মহললেলের জন্মের পর কৈনন 840 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে কৈননের আরও পুত্রকন্যা হয়। 14 সুতরাং কৈনন মোট 910 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।
15 মহললেলের যখন 65 বছর তখন তাঁর যেরদ নামে একটি পুত্র হয়। 16 যেরদের জন্মের পর মহললেল 830 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 17 সুতরাং মহললেল মোট 895 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।
18 যেরদের যখন 162 বছর বয়স তখন তাঁর হনোক নামে একটি পুত্র হয়। 19 হনোকের জন্মের পর যেরদ 800 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 20 সুতরাং যেরদ মোট 962 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।
21 হনোকের যখন 65 বছর বয়স তখন মথূশেলহ নামে তাঁর একটি পুত্র হয়। 22 মথূশেলহর জন্মের পর হনোক আরও 300 বছর ঈশ্বরের সঙ্গে পদচারণা করেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 23 সুতরাং হনোক মোট 365 বছর বেঁচেছিলেন। 24 একদিন হনোক ঈশ্বরের সঙ্গে পদচারণা করতে করতে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। ঈশ্বর তাঁকে নিয়ে নিলেন।
25 মথূশেলহর যখন 187 বছর বয়স তখন তাঁর লেমক নামে একটি পুত্র হয়। 26 লেমকের জন্মের পর মথূশেলহ 782 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 27 সুতরাং মথূশেলহ মোট 969 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।
28 লেমকের যখন 182 বছর বয়স তখন তাঁর একটি পুত্র হল। 29 লেমক পুত্রের নাম রাখলেন নোহ। তিনি বললেন, “ঈশ্বর ভূমিকে অভিশাপ দিয়েছেন বলে কৃষকরূপে আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু নোহ আমাদের বিশ্রাম দেবে।”
30 নোহের জন্মের পর লেমক 595 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 31 সুতরাং লেমক মোট 777 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।
32 নোহর 500 বছর বয়সে শেম, হাম এবং যেফৎ নামে তিনটি পুত্র হয়।
যীশুর শিক্ষাদান
(লূক 6:20-23)
5 যীশু অনেক লোকের ভীড় দেখে একটা পাহাড়ের ওপর উঠে গেলেন। তিনি সেখানে বসলে শিষ্যরা তাঁর কাছে এলেন। 2 এরপর তিনি তাঁদের কাছে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন, বললেন:
3 “ধন্য সেই লোকেরা যারা আত্মায় নত-নম্র,
কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই।
4 ধন্য সেই লোকেরা যারা শোক করে,
কারণ তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা পাবে।
5 বিনয়ী লোকেরা ধন্য।
তারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত দেশের অধিকার লাভ করবে।
6 ধন্য সেই লোকেরা, যারা ন্যায়পরায়ণতার জন্য ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত
কারণ তারা তৃপ্ত হবে।
7 যারা দয়াবান তারা ধন্য,
কারণ তারা দয়া পাবে।
যাদের অন্তর পরিশুদ্ধ তারা ধন্য,
কারণ তারা ঈশ্বরের দর্শন পাবে।
8 ধন্য তারা যারা তাদের চিন্তায় পরিশুদ্ধ,
কারণ তারা ঈশ্বরের সঙ্গে থাকবে।
9 ধন্য তারা যারা শান্তি স্থাপনের জন্য কাজ করে,
কারণ তারা ঈশ্বরের সন্তানরূপে পরিচিত হবে।
10 ঈশ্বরের পথে চলতে গিয়ে যারা নির্যাতন ভোগ করছে তারা ধন্য,
কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই হবে।
11 “তোমরা আমার অনুসারী হয়েছ বলে যখন লোকে তোমাদের অপমান ও নির্যাতন করে আর তোমাদের নামে মিথ্যা কুৎসা রটায় তখন তোমরা ধন্য। 12 তোমরা আনন্দ করো, খুশী হও, কারণ স্বর্গে তোমাদের জন্য মহাপুরস্কার সঞ্চিত আছে। তোমাদের আগে যে ভাববাদীরা ছিলেন লোকে তাঁদেরও এভাবেই নির্যাতন করেছে।
তোমরা লবন এবং আলোর মতো
(মার্ক 9:50; 4:21; লূক 14:34-35; 8:16)
13 “তোমরা পৃথিবীর লবন, কিন্তু লবন যদি তার নিজের স্বাদ হারায় তবে কেমন করে তা আবার নোন্তা করা যাবে? তখন তা আর কোন কাজে লাগে না। তা কেবল বাইরে ফেলে দেওয়া হয় আর লোকরা তা মাড়িয়ে যায়।
14 “তোমরা জগতের আলো, পাহাড়ের ওপরে কোন শহর, যা কখনও লুকানো যায় না। 15 বাতি জ্বেলে কেউ পাত্রের নীচে রাখে না, তা বাতিদানের ওপরেই রাখে আর তা ঘরের সকলকে আলো দেয়। 16 তেমনি তোমাদের আলোও লোকদের সামনে উজ্জ্বল হোক্, যেন তারা তোমাদের সৎকাজ দেখে তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করে।
পুরাতন নিয়ম সম্বন্ধে যীশুর বক্তব্য
17 “ভেবো না যে আমি মোশির বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষা ধ্বংস করতে এসেছি। আমি তা ধ্বংস করতে আসিনি বরং তা পূর্ণ করতেই এসেছি। 18 আমি তোমাদের সত্যি বলছি আকাশ ও পৃথিবীর লোপ না হওয়া পর্যন্ত বিধি-ব্যবস্থার বিন্দু বিসর্গও লোপ হবে না, বিধি-ব্যবস্থার সবই পূর্ণ হবে।
19 “তাই কেউ যদি এইসব আদেশের মধ্যে অতি সামান্য আদেশও অমান্য করে আর অপরকে তা করতে শিক্ষা দেয়, তবে সে স্বর্গরাজ্যে সব থেকে তুচ্ছ বলে গন্য হবে। কিন্তু যারা বিধি-ব্যবস্থা পালন করে ও অপরকে তা পালন করতে শিক্ষা দেয়, তারা স্বর্গরাজ্যে মহান বলে গন্য হবে। 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের থেকে তোমাদের ধার্মিকতা যদি উন্নত মানের না হয় তবে তোমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।
ক্রোধ সম্পর্কে যীশুর শিক্ষা
21 “তোমরা শুনেছ, আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে বলা হয়েছিল, ‘নরহত্যা করো না;(A) আর কেউ নরহত্যা করলে তাকে বিচারালয়ে তার জবাবদিহি করতে হবে।’ 22 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যদি কেউ কোনো লোকের প্রতি ক্রুদ্ধ হয় বিচারে তাকে তার জবাবদিহি করতে হবে। আর কেউ যদি কোন লোককে বলে, ‘ওরে মূর্খ’ (অর্থাৎ নির্বোধ) তবে তাকে ইহুদী মহাসভার সামনে তার জবাব দিতে হবে। কেউ যদি কাউকে বলে ‘তুমি পাষণ্ড,’ তবে তাকে নরকের আগুনেই তার জবাব দিতে হবে।
23 “মন্দিরে যজ্ঞবেদীর সামনে নৈবেদ্য উৎসর্গ করার সময় যদি তোমার মনে পড়ে যে তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভাইয়ের কোন অভিযোগ আছে, 24 তবে সেই নৈবেদ্য যজ্ঞবেদীর সামনে রেখে চলে যাও, প্রথমে গিয়ে তার সঙ্গে সে বিষয়ে মিটমাট করে নাও, পরে এসে তোমার নৈবেদ্য উৎসর্গ কোরো।
25 “তোমার শত্রু যদি তোমার বিরুদ্ধে মামলা করতে চায় তবে আদালতে নিয়ে যাবার সময় পথেই তার সঙ্গে তাড়াতাড়ি মিটমাট করে ফেল; তা না হলে সে তোমাকে বিচারকের হাতে তুলে দেবে, বিচারক তোমাকে রক্ষীর হাতে দেবে আর রক্ষীরা তোমাকে কারাগারে পাঠাবে। 26 আমি তোমায় সত্যি বলছি, সেখান থেকে তুমি ছাড়া পাবে না, যতক্ষণ না তোমার দেনার শেষ পয়সাটা চুকিয়ে দাও।
যৌন পাপ বিষয়ে যীশুর শিক্ষা
27 “তোমরা শুনেছ, একথা বলা হয়েছে: ‘যৌনপাপ করো না।’(B) 28 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি কেউ যদি কোন স্ত্রীলোকের দিকে লালসাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় তবে সে মনে মনে তার সঙ্গে যৌন পাপ করল। 29 সেই রকম তোমার ডান চোখ যদি পাপ করার জন্য তোমায় প্ররোচিত করে তবে তা উপড়ে ফেলে দাও। সমস্ত দেহ নিয়ে নরকে যাওয়ার চেয়ে বরং তার একটা অংশ হারানো তোমার পক্ষে ভালো। 30 যদি তোমার ডান হাত পাপ করতে প্ররোচিত করে, তবে তা কেটে ফেলে দাও। তোমার সমস্ত শরীর নরকে যাওয়ার চেয়ে বরং তার একটা অঙ্গ নষ্ট হওয়া তোমার পক্ষে ভালো।
বিবাহ বিচ্ছেদ বিষয়ে যীশুর শিক্ষা
(মথি 19:9; মার্ক 10:11-12; লূক 16:18)
31 “আবার বলা হয়েছে, ‘কেউ যদি তার স্ত্রীকে ত্যাগ করতে চায়, তবে তাকে ত্যাগপত্র দিতে হবে।’(C) 32 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, একমাত্র যৌনপাপের দোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে কেউ যদি তার স্ত্রীকে ত্যাগ করে, তবে সে তাকে ব্যাভিচারিণী হবার পথে নামিয়ে দেয়। আর যে কেউ স্ত্রীকে বিয়ে করে সেও যৌনপাপ করে।
প্রতিশ্রুতি দান বিষয়ে যীশুর শিক্ষা
33 “তোমরা একথাও শুনেছ, আমাদের পিতৃপুরুষদের বলা হয়েছিল, ‘তোমরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে যে সব প্রতিশ্রুতি কর তা ভেঙো না, তোমাদের কথা মতো সে সবই পূর্ণ করো।’[a] 34 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা কোন শপথই করো না। স্বর্গের নামে করো না, কারণ তা ঈশ্বরের সিংহাসন। 35 পৃথিবীর নামে শপথ করো না, কারণ পৃথিবী ঈশ্বরের পাদপীঠ। জেরুশালেমের নামেও শপথ করো না, কারণ তা হল মহান রাজার নগরী। 36 এমন কি তোমার মাথার দিব্যিও দিও না, কারণ তোমার মাথার একগাছা চুল সাদা অথবা কালো করার ক্ষমতা তোমার নেই। 37 তোমাদের কথার ‘হ্যাঁ’ যেন ‘হ্যাঁ’ আর ‘না’ যেন ‘না’ হয়, এছাড়া অন্য আর যা কিছু তা মন্দের কাছ থেকে আসে।
প্রতিশোধ নেওয়া বিষয়ে যীশুর শিক্ষা
(লূক 6:29-30)
38 “তোমরা শুনেছ, একথা বলা হয়েছে যে, ‘চোখের বদলে চোখ ও দাঁতের বদলে দাঁত।’(D) 39 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, দুষ্ট লোকদের প্রতিরোধ করো না, বরং কেউ যদি তোমার ডান গালে চড় মারে, তবে তার দিকে অপর গালটিও বাড়িয়ে দিও। 40 কেউ যদি তোমার পাজামা নেবার জন্য আদালতে মামলা করতে চায়; তবে তাকে তোমার ধুতিটাও ছেড়ে দিও। 41 যদি কেউ তার বোঝা নিয়ে তোমাকে এক মাইল পথ যেতে বাধ্য করে, তার সঙ্গে দু মাইল যেও। 42 কেউ যদি তোমার কাছ থেকে কিছু চায়, তাকে তা দিও। তোমার কাছ থেকে কেউ ধার চাইলে তাকে তা দিতে অস্বীকার করো না।
সকলকে ভালবাসো
(লূক 6:27-28, 32-36)
43 “তোমরা তাদের বলতে শুনেছ, ‘তোমার প্রতিবেশীকে ভালবাসো,(E) শত্রুকে ঘৃণা করো।’ 44 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের শত্রুদের ভালবাসো। যারা তোমাদের ওপর নির্যাতন করে তাদের জন্য প্রার্থনা করো, 45 যেন তোমরা স্বর্গের পিতার সন্তান হতে পার। তিনি তো ভাল মন্দ সকলের উপর সূর্য্যালোক দেন, ধার্মিক অধার্মিক সকলের উপর বৃষ্টি দেন। 46 আমি একথা বলছি, কারণ যারা তোমাদের ভালবাসে তোমরা যদি কেবল তাদেরই ভালবাস, তবে তোমরা কি পুরস্কার পাবে? কর আদায়কারীরাও কি তাই করে না? 47 তোমরা যদি কেবল তোমাদের ভাইদেরই শুভেচ্ছা জানাও, তবে অন্যদের থেকে আর বেশী কি করলে? বিধর্মীরাও তো এমন করে থাকে। 48 তাই তোমাদের স্বর্গের পিতা যেমন সিদ্ধ তোমরাও তেমন সিদ্ধ হও।
5 সেই সময় হগয় ও ইদ্দোর পুত্র সখরিয় ভাববাদীদ্বয় প্রভুর নামে ভবিষ্যৎ বাণী করে জেরুশালেম ও যিহূদার লোকদের উদ্দীপিত করতে লাগলেন। 2 তখন শল্টীয়েলের সন্তান সরুব্বাবিল ও যোষাদকের পুত্র যেশূয় আবার জেরুশালেমে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করলেন। ঈশ্বরের সমস্ত ভাববাদীরা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এবং তাঁরা এই কাজ সমর্থন করছিলেন। 3 তখন ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের শাসক তত্তনয়, শথরবোষণয় ও তাঁদের অনুচরবর্গ, যাঁরা মন্দির পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন তাঁদের কাছে গিয়ে জানতে চাইলেন, “কার সম্মতিতে তোমরা আবার নতুন করে মন্দির বানাতে শুরু করেছ?” 4 সরুব্বাবিলের কাছেও যারা এই মন্দির পুনর্নির্মাণের কাজে জড়িত ছিলেন তাঁদের নাম জানতে চাইলেন।
5 কিন্তু ঈশ্বর স্বয়ং ইহুদী নেতাদের প্রতি লক্ষ্য রাখছিলেন। রাজা দারিয়াবসকে একটা খবর না পাঠানো পর্যন্ত তাদের কাজ বন্ধ করবার কোন প্রয়োজন ছিল না। রাজার কাছ থেকে উত্তর না আসা পর্যন্ত তারা কাজ চালিয়ে গেলেন।
6 ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের শাসক তত্তনয়, শথর বোষণয় ও তাঁদের সঙ্গে প্রধান ব্যক্তিরা 7 রাজা দারিয়াবসকে একটি চিঠি পাঠালেন।
হে রাজা,
8 আমরা যিহূদা অঞ্চলে গিয়েছিলাম এবং মহান ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেছি এবং দেখলাম যে, ইহুদীরা বড় বড় পাথর ও কাঠের গুঁড়ি দিয়ে মন্দিরটি বানিয়ে চলেছে। আমাদের বিশ্বাস এই গতিতে কাজ হলে মন্দির নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে।
9-10 আমরা তাদের দলপতিদের কাছে, আপনাকে পাঠানোর জন্য ব্যক্তিদের নামের তালিকা চেয়েছিলাম এবং প্রশ্ন করেছিলাম। আমরা এটাও জানতে চেয়েছিলাম যে কার অনুমতিতে তারা মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করছে।
11 উত্তরে তারা বলল:
“আমরা স্বর্গ ও মর্ত্যের ঈশ্বরের দাস। আমরা মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করছি যেটি বহু বছর আগে ইস্রায়েলের এক মহান রাজা বানিয়েছিলেন। 12 আমাদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরকে রুষ্ট করেছিল তাই ঈশ্বর নবূখদ্নিৎসরকে বাবিলের রাজা করে পাঠিয়েছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষকে শাসন করবার জন্য। নবূখদ্নিৎসর এই মন্দিরটি ধ্বংস করে আমাদের পূর্বপুরুষদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে যান। 13 বাবিলে কোরসের প্রথম বছরের রাজত্বকালে তিনি এই মন্দির পুনর্নির্মাণের জন্য আদেশ দেন। 14 অতঃপর রাজা কোরস সমস্ত সোনার ও রূপোর জিনিষ, যেগুলো জেরুশালেমের মন্দির থেকে নবূখদ্নিৎসর দ্বারা লুণ্ঠিত হয়েছিল এবং তাঁর মূর্ত্তির মন্দিরে রাখা হয়েছিল, সেগুলো শেশ্বসরের হাত দিয়ে ফেরৎ পাঠান।”
15 রাজা কোরস, শেশ্বসরকে রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করলেন এবং তাঁকে বললেন, “এইসব সোনা এবং রূপোর জিনিষ নিয়ে যাও এবং জেরুশালেমের মন্দিরে পুনরায় রেখে দাও এবং মন্দিরটি পূর্বে যেখানে ছিল ঠিক সেখানেই মন্দির পুনর্নির্মাণ কর।”
16 শেশ্বসর তখন জেরুশালেমে এসে এই নতুন মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন; সেদিন থেকে আমরা এই ঈশ্বরের মন্দির পুনর্নির্মাণের কাজ করে আসছি, কিন্তু আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি।
17 এখন রাজা যদি ইচ্ছা করেন, দয়া করে পুরানো নথিপত্র দেখতে পারেন, এটা প্রমাণ করবার জন্য যে, রাজা কোরস সত্যি সত্যিই জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দির পুনর্নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না। অতঃপর তিনি যদি এ বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা আমাদের একটি চিঠিতে জানান তাহলে আমরা বিশেষ বাধিত হব।
অননিয় ও সাফীরা
5 অননিয় নামে একজন লোক ছিল, তার স্ত্রীর নাম সাফীরা। অননিয় তার একটি জমি বিক্রি করে 2 সেই টাকার কিছু অংশ প্রেরিতদের কাছে জমা দিল; কিন্তু গোপনে টাকার কিছু অংশ নিজের কাছে রাখল। তার স্ত্রী এবিষয় জানত ও একমত ছিল।
3 তখন পিতর বললেন, “অননিয় তুমি কেন শয়তানকে তোমার অন্তরে কাজ করতে দিলে? তুমি পবিত্র আত্মার কাছে কেন মিথ্যা বললে ও জমি বিক্রির টাকা থেকে কিছুটা নিজেদের জন্য রেখে দিলে? 4 সেই জমি বিক্রি করার আগে কি তা তোমারই ছিল না? আর তা বিক্রি করার পর সেই টাকা কি তোমার অধিকারেই ছিল না? তোমরা এই ধারণা কোথা থেকে পেলে? মানুষের কাছে নয় কিন্তু তুমি ঈশ্বরের কাছে মিথ্যা বললে।”
5-6 এই কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে অননিয় মাটিতে পড়ে মারা গেল, আর যারা একথা শুনল, তারা সকলে অত্যন্ত ভয় পেয়ে গেল। পরে যুবকরা উঠে তাকে কাপড়ে জড়িয়ে বাইরে নিয়ে গিয়ে কবর দিল।
7 এই ঘটনার পর প্রায় তিন ঘন্টা কেটে গেল, এমন সময় অননিয়ের স্ত্রী সাফীরা সেখানে এল, তার স্বামীর কি হয়েছে সে তার কিছুই জানত না। 8 পিতর তাকে বললেন, “আমায় বলতো তোমার সেই জমি কি এত টাকায় বিক্রি করেছিলে?”
সে বলল, “হ্যাঁ, ঐ টাকায় বিক্রি করেছি।”
9 তখন পিতর তাকে বললেন, “তোমরা দুজনে প্রভুর আত্মাকে পরীক্ষা করার জন্য কেন একচিত্ত হলে? শোন! যারা তোমার স্বামীকে কবর দিতে গিয়েছিল, তারা দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে; তারা তোমাকেও নিয়ে যাবে।” 10 সঙ্গে সঙ্গে সেও তার পায়ের কাছে পড়ে মারা গেল। ঐ যুবকরা ভেতরে এসে তাকে মৃত দেখল এবং বাইরে নিয়ে গিয়ে তার স্বামীর পাশে তাকে কবর দিল। 11 তখন সমস্ত মণ্ডলী ও যারা তা শুনল, তাদের সকলের মধ্যে মহাভয়ের সঞ্চার হল।
ঈশ্বরের কাছ থেকেই প্রমাণ
12 প্রেরিতদের মাধ্যমে লোকদের মধ্যে নানান অলৌকিক কাজ হতে লাগল। প্রেরিতরা শলোমনের বারান্দায় একত্রিত হতেন। তাঁদের সকলের উদ্দেশ্য একই ছিল। 13 অন্যরা তাঁদের সঙ্গে যোগ দিতে সাহস করত না; কিন্তু সকলে তাঁদের প্রশংসা করত। 14 আর দলে দলে অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক যীশুতে বিশ্বাসী হয়ে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকল। 15 লোকরা, এমন কি তাদের অসুস্থ রোগীদের নিয়ে এসে রাস্তার মাঝে তাদের বিছানায় বা খাটিযাতে শুইয়ে রাখত, যেন পিতর যখন সেখান দিয়ে যাবেন তখন অন্ততঃ তাঁর ছাযাও তাদের উপর পড়ে; আর তাতেই তারা সুস্থ হয়ে যেত। 16 জেরুশালেমের চারপাশের বিভিন্ন নগর থেকে অনেক লোক অসুস্থ ও অশুচি আত্মায় ভর করা লোকদের নিয়ে এসে ভীড় করত আর তারা সকলেই সুস্থ হত।
প্রেরিতদের কাজ বন্ধ করার জন্য ইহুদীদের চেষ্টা
17 এরপর মহাযাজক এবং তাঁর সঙ্গীরা অর্থাৎ সদ্দূকী দলের লোকরা ঈর্ষায় জ্বলে উঠল। 18 তারা প্রেরিতদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে আটকে দিল; 19 কিন্তু রাতের বেলায় প্রভুর এক দূত সেই কারাগারের দরজা খুলে দিলেন। তিনি তাদের পথ দেখিয়ে কারাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে বললেন, 20 “যাও মন্দিরের মধ্যে দাঁড়িয়ে তোমরা লোকদের এই নতুন জীবনের সকল বার্তা শোনাও।” 21 প্রেরিতেরা আজ্ঞা অনুসারে ভোর বেলায় মন্দিরে গিয়ে শিক্ষা প্রচার করতে লাগলেন।
এদিকে মহাযাজক ও তার সঙ্গীরা, ইহুদী সমাজের গন্যমান্য লোকদের এক মহাসভা ডাকল; আর প্রেরিতদের সেখানে নিয়ে আসার জন্য কারাগারে লোক পাঠালো। 22 কিন্তু সেই লোকরা কারাগারে এসে কারাগারের মধ্যে প্রেরিতদের দেখতে পেল না। তাই তারা ফিরে গিয়ে বলল, 23 “আমরা দেখলাম কারাগারের তালা বেশ ভালভাবেই বন্ধ আছে, দরজায় দরজায় পাহারাদাররা দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে আমরা কাউকে দেখতে পেলাম না। দেখলাম কারাগার খালি পড়ে আছে।” 24 মন্দির রক্ষীবাহিনীর প্রধান ও প্রধান যাজকরা এই কথা শুনে হতবুদ্ধি হয়ে ভাবতে লাগল এর পরিণতি কি হবে?
25 সেই সময় একজন এসে তাদের বলল, “শুনুন! যে লোকদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, দেখলাম তাঁরা মন্দিরের মধ্যে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছেন।” 26 তখন রক্ষীবাহিনীর প্রধান তার লোকদের নিয়ে সেখানে গেল ও প্রেরিতদের নিয়ে এল। তারা কোনরকম জোর করল না, কারণ তারা লোকদের ভয় করতে লাগল, পাছে তারা পাথর ছুঁড়ে তাদের মেরে ফেলে।
27 তারা প্রেরিতদের নিয়ে এসে ইহুদী নেতাদের সামনে দাঁড় করালে মহাযাজক প্রেরিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। 28 তিনি বললেন, “ঐ মানুষটির বিষয়ে কোন শিক্ষা দিতে আমরা তোমাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করেছিলাম। ভেবে দেখ তোমরা কি করেছ? তোমরা তোমাদের শিক্ষায় জেরুশালেম মাতিয়ে তুলেছ, আর সেই লোকের মৃত্যুর জন্য সব দোষ আমাদের ওপর চাপাতে চাইছ।”
29 তখন পিতর ও অন্য প্রেরিতরা এর উত্তরে বললেন, “মানুষের হুকুম মানার চেয়ে বরং ঈশ্বরের আদেশ আমাদের অবশ্যই পালন করতে হবে। 30 আপনারা যীশুকে হত্যা করেছিলেন, তাঁকে বিদ্ধ করে ক্রুশে টাঙ্গিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন। 31 সেই যীশুকে ঈশ্বর নেতা ও ত্রাণকর্তারূপে উন্নত করে নিজের ডান দিকে স্থাপন করেছেন, যাতে ইহুদীরা তাদের মন ফিরায় ও তিনি তাদের পাপ ক্ষমা করতে পারেন 32 আর আমরা এসব ঘটতে দেখেছি, বলতে পারি যে এসব সত্য। পবিত্র আত্মাও দেখাচ্ছেন যে এসব সত্য। যাঁরা তাঁর বাধ্য তাদের তিনি পবিত্র আত্মা দান করেছেন।”
33 মহাসভার সভ্যরা এসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে উঠল, আর তারা প্রেরিতদের হত্যা করতে চাইল। 34 কিন্তু সেই মহাসভার একজন সভ্য, গমলীয়েল ইনি ব্যবস্থার শিক্ষক, যাকে সকলে মান্য করত, তিনি উঠে দাঁড়িয়ে ঐ প্রেরিতদের কিছু সময়ের জন্য সভা থেকে বাইরে নিয়ে যেতে বললেন। 35 পরে তিনি তাদের বললেন, “হে ইস্রায়েলীরা, এই লোকদের নিয়ে তোমরা যা করতে যাচ্ছ সে বিষয়ে সাবধান। 36 কারণ এর কিছু আগে থুদা নামে একজন লোক নিজেকে মহান বলে দাবী করেছিল। প্রায় চারশো লোক তার অনুসারী হয়েছিল; আর সে নিহত হলে তার অনুগামীরা সব যে যার পালিয়ে গেল, তার কোন চিহ্নই রইল না। 37 থুদার পরে আদমসুমারীর সময় গালীলীয় যিহূদার উদয় হয়, সেও বেশ কিছু লোককে তার দলে টানে; পরে সেও নিহত হয়, আর তার অনুগামীরাও ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। 38 তাই বর্তমানে এই অবস্থা দেখে আমি তোমাদের বলছি: এই লোকেদের থেকে দূরে থাক, তাদের ছেড়ে দাও, কারণ তাদের এই পরিকল্পনা অথবা এই কাজ যদি মানুষের থেকে হয় তবে তা ব্যর্থ হবে। 39 কিন্তু যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে তোমরা তা বন্ধ করতে পারবে না। হয়তো দেখবে যে তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছ।”
তখন তারা এই পরামর্শ গ্রহণ করল। 40 তারা প্রেরিতদের ভেতরে ডেকে এনে চাবুক মারল, যীশুর নামে একটি কথাও বলতে নিষেধ করে তাদের ছেড়ে দিল। 41 প্রেরিতরা মহাসভার সভাস্থল থেকে বেরিয়ে চলে গেলেন, আর যীশুর নামের জন্য তাঁরা যে নির্যাতন ও অপমান সহ্য করার যোগ্য বলে বিবেচিত হযেছেন, এই কথা ভেবে আনন্দ করতে লাগলেন। 42 এবং দমে না গিয়ে প্রতিদিন মন্দিরের মধ্যে ও বিভিন্ন বাড়িতে যীশুর বিষয়ে শিক্ষা ও সুসমাচারের প্রচার করে দেখালেন যে যীশুই হলেন খ্রীষ্ট।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International