M’Cheyne Bible Reading Plan
5 প্রভুর মন্দিরের সমস্ত কাজ শেষ হবার পর শলোমন, তাঁর পিতা দায়ূদ মন্দিরের জন্য যেসব সোনা রূপোর জিনিষ ও আসবাবপত্র দান করেছিলেন সেগুলি নিয়ে এসে কোষাগারে রাখলেন।
পবিত্র সিন্দুক মন্দিরে আনা হল
2 শলোমন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তি ও পরিবার গোষ্ঠীসমূহের নেতাদের জেরুশালেমে জড়ো হবার আদেশ দিলেন। তাদের উপস্থিতিতে প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি দায়ূদের শহর যাকে সিয়োন বলা হয়, সেখান থেকে মন্দিরে আনবার আদেশ দিলেন। 3 নির্দেশ মতো ইস্রায়েলের সমস্ত ব্যক্তি সপ্তম মাসে (অধুনা সেপ্টেম্বরে) কুটিরবাস পর্বের সময় রাজা শলোমনের সামনে উপস্থিত হলেন।
4 যখন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিরা সেখানে এসে পৌঁছলেন, লেবীয়রা সাক্ষ্যসিন্দুকটি তুলে নিলেন এবং 5 সমাগম তাঁবুটিকে এবং তার ভেতরের সমস্ত পবিত্র জিনিস জেরুশালেম পর্যন্ত ওপরে বয়ে আনলেন। 6 রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে উপস্থিত হয়ে অসংখ্য মেষ ও ষাঁড় বলিদান করলেন। 7 এবং তারপর যাজকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি সেইখানে নিয়ে এলেন যে জায়গাটি ওটার জন্য তৈরী হয়েছিল। ঐ জায়গাটি ছিল মন্দিরের পবিত্রতম স্থান। সিন্দুকটিকে করূব দূতদের ডানার নীচে রাখা হল। 8 সাক্ষ্যসিন্দুকটিকে এমনভাবে রাখা হল যাতে ঐ ঘরে বসানো করূব দূতদের মূর্ত্তির ডানা সাক্ষ্যসিন্দুক ও সিন্দুক বহন করার ডাণ্ডার ওপর ছড়িয়ে থাকে। 9 বহন করার ডাণ্ডাগুলো এত লম্বা ছিল যে পবিত্রতম স্থানের সামনে থেকেই সেগুলো দেখা যেত। তবে মন্দিরের বাইরে থেকে এগুলো দেখা যেতো না। ঐ ডাণ্ডাগুলো এখনো পর্যন্ত ঠিক সেভাবেই রাখা আছে। 10 সাক্ষ্যসিন্দুকের মধ্যে দুটো পাথরের ফলক[a] ছাড়া আর কিছুই ছিল না। মোশি হোরেব পাহাড়ে এই ফলকদুটো সাক্ষ্যসিন্দুকে রেখেছিলেন। হোরেব পাহাড়েই প্রভুর সঙ্গে ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের চুক্তি হয়েছিল। ইস্রায়েলীয়রা মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পর এই ঘটনা ঘটে।
11 উপস্থিত সমস্ত যাজকরা ঈশ্বর নির্দেশিত বিধি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমে নিজেদের পবিত্র করলেন। তারপর, যাজকরা সকলে বিশেষ কোনো দলে না এসে সমবেতভাবে সেই পবিত্র স্থানে এসে দাঁড়ালেন। 12 সমস্ত লেবীয় গায়করা আসফ, হেমন ও যিদূথূন তাদের পুত্রসমূহ ও আত্মীয়স্বজনসহ বেদীর পূর্বদিকে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁরা সাদা লিনেনের পোশাক পরেছিলেন এবং তাঁরা কর্তাল, বীণাসমূহ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের কাছে বীণা, তানপুরা ও খঞ্জনী জাতীয় বাদ্যযন্ত্র ছিল। সেখানে 120 জন যাজকও ছিলেন যাঁরা তূরী বাজিয়েছিলেন। 13 সমবেতভাবে একসুরে বাদকরা শিঙা ও কাড়ানাকাড়া বাজিয়েছিলেন, গায়করা গান করেছিলেন। প্রভুকে ধন্যবাদ ও প্রশংসা জ্ঞাপনের সময় মনে হচ্ছিল এঁরা যেন পৃথক পৃথক কোনো ব্যক্তি নয়, একই ব্যক্তি। কাড়ানাকাড়া, খোল, কর্তাল, বীণা, যা কিছু বাদ্যযন্ত্র ছিল, সবাই সোৎসাহে সজোরে সেসব বাজিয়ে গাইছিলেন,
“প্রভুর মহিমা কীর্ত্তন করো, তিনি ভাল।
তাঁর প্রেম চির প্রবাহমান।”
এরপর প্রভুর মন্দির মেঘে পরিপূর্ণ হল। 14 যাজকরা তাঁদের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন নি কারণ সেই মেঘ ছিল মন্দিরকে পূর্ণ করে দেওয়া ঈশ্বরের মহিমা।
6 তখন শলোমন বললেন,
“প্রভু অন্ধকার মেঘের মধ্যে
থাকার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
2 হে প্রভু, আমি আপনার চিরকালের বসবাসের জন্যই
এই বিশাল মন্দির বানিয়েছি।”
শলোমনের ভাষণ
3 রাজা শলোমন ঘুরে দাঁড়ালেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের, যারা তাঁর সামনে জড়ো হয়েছিল তাদের আশীর্বাদ করলেন। 4 এবং শলোমন বললেন,
“ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা কীর্ত্তিত হোক্। তিনি আমার পিতা দায়ূদকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রেখেছেন। প্রভু ঈশ্বর বলেছিলেন, 5 ‘যেদিন আমি ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বার করে নিয়ে এসেছিলাম, সেই সময় থেকে আজ অবধি আমি আমার নামে বাড়ী তৈরী করবার জন্য কোন একটি বিশেষ জায়গা পছন্দ করিনি, এমন কি আমি কোন লোককেও আমার লোকদের ওপর শাসন করবার জন্য মনোনীত করি নি। 6 কিন্তু এখন আমি জেরুশালেমকে বেছে নিয়েছি, আমার নামের জায়গা হিসেবে এবং আমি দায়ূদকে আমার লোক, ইস্রায়েলের ওপর শাসন করার জন্য মনোনীত করেছি।’
7 “আমার পিতা দায়ূদ প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে একটি মন্দির বানাতে চেয়েছিলেন। 8 কিন্তু প্রভু আমার পিতাকে বলেছিলেন, ‘দায়ূদ আমার মন্দির বানানোর কথা ভেবে তুমি ভাল করেছো। 9 কিন্তু তুমি নিজে এই মন্দির বানাতে পারবে না। তোমার পুত্র শলোমন আমার নামের জন্য এই মন্দির বানাবে।’ 10 এখন প্রভুর ইচ্ছেয় তাই ঘটতে চলেছে। আমার পিতা দায়ূদের জায়গায় আমি ইস্রায়েলের নতুন রাজা হয়েছি এবং প্রভুর কথা মতো আমি প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে এই মন্দির বানিয়েছি। 11 এবং আমি ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে প্রভুর চুক্তি সমন্বিত সাক্ষ্যসিন্দুকটা ঐ মন্দিরে রেখেছি।”
ভণ্ড শিক্ষকদের বিষয়ে যোহনের সতর্কবাণী
4 প্রিয় বন্ধুরা, সংসারে অনেক ভণ্ড ভাববাদী দেখা দিয়েছে, তাই তোমরা সব আত্মাকে বিশ্বাস করো না। কিন্তু সেই সব আত্মাদের যাচাই করে দেখ যে তারা ঈশ্বর হতে এসেছে কিনা। 2 এইভাবে তোমরা ঈশ্বরের আত্মাকে চিনতে পারবে। যে কোন আত্মা যীশু খ্রীষ্ট যে রক্ত মাংসের দেহ ধারণ করে এসেছেন বলে স্বীকার করে, সে ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে। 3 কিন্তু যে আত্মা, যীশুকে স্বীকার করে না, সে ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে নি। এ সেই খ্রীষ্টারির আত্মা, খ্রীষ্টের শত্রু যে আসছে তা তোমরা শুনেছ, আর এখন সে তো সংসারে এসেই গেছে।
4 আমার স্নেহের সন্তানগণ, তোমরা ঈশ্বরের লোক, তাই তোমরা ওদের ওপর জয়ী হয়েছ; কারণ তোমাদের মধ্যে যিনি (ঈশ্বর) বাস করেন তিনি জগতের মধ্যে বাসকারী দিয়াবলের থেকে অনেক মহান। 5 এই ভণ্ড শিক্ষকরা হল জগতের, তাই তারা যা বলে তা সব জাগতিক কথাবার্তা, আর জগত তাদের কথা শোনে। 6 কিন্তু আমরা ঈশ্বরের লোক, ঈশ্বরকে যে জানে সে আমাদের কথা শোনে, যে ঈশ্বরের লোক নয় সে আমাদের কথা শোনে না। এইভাবেই আমরা সত্যের আত্মাকে ও ছলনার আত্মাকে চিনতে পারি।
ঈশ্বরই প্রেমের উৎস
7 প্রিয় বন্ধুরা, এস আমরা পরস্পরকে ভালবাসি, কারণ ঈশ্বরই ভালবাসার উৎস আর যে কেউ ভালবাসতে জানে সে ঈশ্বরের সন্তান, সে ঈশ্বরকে জানে। 8 যে ভালবাসতে জানে না, সে ঈশ্বরকে জানে না, কারণ ঈশ্বর স্বয়ং হলেন ভালবাসা। 9 ঈশ্বর আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা এইভাবেই দেখিয়েছেন, তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে এ জগতে পাঠালেন যেন তাঁর মাধ্যমে আমরা জীবন লাভ করি। 10 ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভালবাসা নয়, বরং আমাদের প্রতি ঈশ্বরের ভালবাসাই হল প্রকৃত ভালবাসা। ঈশ্বর আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত বলিরূপে তাঁর পুত্রকে পাঠিয়ে আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা প্রকাশ করেছেন।
11 প্রিয় বন্ধুরা, এইভাবে ঈশ্বর আমাদের ভালবেসেছেন, সুতরাং আমরাও অবশ্যই পরস্পরকে ভালবাসব। 12 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি। যদি আমরা পরস্পরকে ভালবাসি, তবে ঈশ্বর আমাদের মধ্যে অবস্থান করেন; আর তাঁর ভালবাসা আমাদের মধ্যে পূর্ণতা লাভ করেছে।
13 আমরা জানি যে তিনি আমাদের মধ্যে আছেন; আর আমরা তাঁর মধ্যে অবস্থান করছি। এ বিষয় আমরা জানি, কারণ ঈশ্বর তাঁর আত্মাকে আমাদের দান করেছেন। 14 আমরা দেখেছি পিতা তাঁর পুত্রকে জগতের ত্রাণকর্তারূপে পাঠিয়েছেন। সেই বার্তাই আমরা লোকদের কাছে বলছি। 15 কেউ যদি স্বীকার করে যে যীশু ঈশ্বরের পুত্র, তবে ঈশ্বর তাঁর অন্তরে বাস করেন, আর সে ঈশ্বরেতে থাকে। 16 আমাদের জন্য ঈশ্বরের ভালবাসা আছে; আমরা তা জানি ও বিশ্বাস করি।
ঈশ্বরই স্বয়ং ভালবাসা, আর যে কেউ ভালবাসায় থাকে সে ঈশ্বরের মধ্যে থাকে ও ঈশ্বর তার মধ্যে থাকেন। 17 যদি আমাদের ক্ষেত্রে ভালবাসা এইভাবেই পূর্ণতা পায়, তবে শেষ বিচারের দিনে আমরা নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারব, কারণ এ জগতে আমরা খ্রীষ্টেরই মতো। 18 যেখানে ঈশ্বরের ভালবাসা সেখানে ভয় থাকে না, পরিপূর্ণ ভালবাসা ভয়কে দূর করে দেয়, কারণ ভয়ের সঙ্গে শাস্তির চিন্তা জড়িত থাকে। যে ভয় পায় সে ভালবাসায় পূর্ণতা লাভ করে নি।
19 তিনিই (ঈশ্বর) আগে আমাদের ভালবেসেছেন, আর তার ফলে আমরা ভালবাসতে পারি। 20 যদি কেউ বলে, “সে ঈশ্বরকে ভালবাসে” অথচ সে তার খ্রীষ্টেতে কোন ভাই ও বোনকে ঘৃণা করে তবে সে মিথ্যাবাদী। যে ভাইকে দেখতে পাচ্ছে, সে যদি তাকে ঘৃণা করে তবে যাঁকে সে কোনও দিন চোখে দেখে নি, সেই ঈশ্বরকে সে ভালবাসতে পারে না। 21 কারণ ঈশ্বরের কাছ থেকে আমরা এই আদেশ পেয়েছি, ঈশ্বরকে যে ভালবাসে সে যেন তার নিজের ভাইকেও ভালবাসে।
নীনবীর পক্ষে খারাপ সংবাদ
3 সেই খুনেদের শহরের পক্ষে এটা খুবই খারাপ হবে।
নীনবী এমনই এক মিথ্যায় পূর্ণ শহর।
অন্য দেশ থেকে নিয়ে আসা জিনিষ দিয়ে এ শহর ভর্ত্তি করা হয়েছে।
শহরটি হত্যা ও লুঠ করা থেকে কখনও বিরত হয় না।
2 তোমরা চাবুক মারার শব্দ,
চাকার শব্দ,
ঘোড়াদের টগবগিয়ে যাবার শব্দ
এবং রথগুলোর লাফিয়ে যাবার শব্দ শুনতে পাচ্ছো।
3 অশ্বারোহী সৈন্যরা আক্রমণ করছে;
তাদের তরবারিগুলো জ্বল-জ্বল করে উঠছে
এবং তাদের বর্শাগুলো চক্চক্ করছে!
সেখানে অনেক মৃত মানুষের দেহ,
মৃতদেহগুলি স্তুপীকৃত, এতগুলি দেহ যে গোনা যায় না।
লোকরা মৃতদেহগুলির ওপর হোঁচট খেয়ে পড়ছে।
4 নীনবীর জন্যই এইসব কিছু ঘটেছে।
নীনবী ঠিক যেন বেশ্যার মতো যে কখনোই যথেষ্ট কিছু পায়নি।
সে আরো আরো চেয়েছে।
সে নিজেকে বহু জাতির কাছে বিক্রী করে দিয়েছিল।
তার মায়াবী যাদু দিয়ে সে তাদের তার দাস বানিয়ে ফেলেছে।
5 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন,
“নীনবী, আমি তোমার বিরূদ্ধে,
আমি তোমার জামাকাপড় তোমার মুখের ওপর তুলে দেবো।[a]
আমি অন্য জাতিদের কাছে তোমার নগ্ন দেহ দেখাবো।
ঐ রাজ্যগুলো তোমার লজ্জা দেখবে।
6 আমি তোমার ওপর নোংরা জিনিষ ছুঁড়ে দেবো।
আমি তোমার সঙ্গে ঘৃণ্য আচরণ করবো।
লোকে তোমাকে দেখে হাসবে।
7 তোমাকে দেখে প্রত্যেকেই চমকে উঠবে।
তারা বলবে, ‘নীনবী ধ্বংস হয়েছে।
কে তার জন্য কাঁদবে?’
আমি জানি, নীনবী তোমাকে সান্ত্বনা দেবার জন্য
কাউকে পাওয়া যাবে না।”
8 নীনবী, তুমি কি নীল নদের কুলে অবস্থিত থীব্সের চেয়ে ভালো? না। থীব্সের চারদিকেও জল ছিল। থীব্স্ তার শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই জলই ব্যবহার করত। আত্মরক্ষার দেওয়ালের মত সে সেই জল ব্যবহার করত। 9 কূশ এবং মিশর থীবসকে অনেক সামর্থ্য যুগিয়েছিল। সুদান এবং লিবীয়া তাকে সমর্থন করেছিল। 10 কিন্তু থীবস্ পরাজিত হয়েছিল। তার অধিবাসীদের বিদেশে কয়েদী হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাস্তার প্রত্যেক মোড়ে সৈন্যরা নীনবীর ছোট ছোট বাচ্চাদের মেরে ফেলেছিল। তারা ঘুঁটি চেলে দেখেছিল কোন্ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কারা ক্রীতদাস করে রাখবে। তারা থীব্সের সব গণ্যমান্য ব্যক্তিদের শেকল দিয়ে বেঁধেছিল।
11 সেজন্য নীনবী, মাতাল লোকদের মতো তোমারও পতন হবে। তুমি লুকোবার চেষ্টা করবে। শত্রুদের হাত থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য তুমি একটি নিরাপদ স্থান খুঁজবে। 12 কিন্তু নীনবী তোমার সমস্ত শক্তিশালী জায়গাগুলি ডুমুর গাছের মত হবে। নতুন ডুমুরগুলি যখন পাকে, একজন লোক আসে আর গাছটিকে নাড়া দেয়। ডুমুরগুলি সেই লোকটির মুখের মধ্যে গিয়ে পড়ে। সে সেগুলো খেয়ে ফেলে আর ডুমুরগুলো ঐখানেই শেষ।
13 নীনবী, তোমার সব লোক যেন স্ত্রীলোকের মত এবং শত্রুপক্ষের সৈন্যরা তাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। তোমাদের দেশের দরজাগুলো শত্রুদের ঢুকে পড়ার জন্য প্রশস্তভাবে খোলা। ফটকগুলির আড়াআড়ি কাঠের গরাদগুলো পুড়ে গিয়েছিল।
14 জল নিয়ে এসে তোমার নগরের ভেতর জমিয়ে রেখে দাও। কেন? কারণ শত্রুপক্ষের সৈন্যরা তোমার শহরের চারদিক ঘিরে ফেলবে। তারা কোন লোককে নগরের মধ্যে খাবার অথবা জল আনতে দেবে না। তোমার প্রতিরক্ষাগুলিকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তোলো। বেশি ইঁট বানানোর জন্য মাটি নাও। চূন, বালি, সুরকি মেশাও। ইঁট তৈরী করবার জন্য চুল্লী জোগাড় কর! 15 তোমরা শুধু এসব কাজই করতে পারো, কিন্তু আগুন তোমাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবে। এবং তরবারিই তোমাদের হত্যা করবে। তোমাদের দেশটাকে এমন দেখাবে যেন পঙ্গপালের ঝাঁক এসে সব খেয়ে নিয়েছে।
নীনবী ফড়িংএর ঝাঁকের মত, পঙ্গপালের দলের মত বেড়ে চলেছিল। 16 বহু ব্যবসায়ী লোক তোমার কাছে আছে যারা নানা জায়গায় গিয়ে জিনিষ কেনে। তারা যেন আকাশের নক্ষত্রের মত অসংখ্য। তারা যেন পঙ্গপালের মত, যারা খেতে আসে যে পর্যন্ত না সব শেষ হয়। তারপর তারা ছেড়ে যায়। 17 এবং তোমার সরকারী কর্মকর্তারাও পঙ্গপালের মত। তারা ঠাণ্ডার দিনে পাথরের দেওয়ালে বসা পঙ্গপালের মত। যখন সূর্য উঠে পাথরগুলো গরম হয় তখন সব পঙ্গপালগুলো উড়ে যায় এবং কেউ জানে না তারা কোথায় যায়! তোমার সরকারী কর্মচারীরাও ঠিক ঐরকম।
18 অশূরের রাজা, তোমার মেষপালকরা গভীরভাবে ঘুমিয়ে পড়েছে। সেইসব শক্তিশালী লোকরা ঘুমোচ্ছে এবং এখন তোমার মেষের দল (লোকরা) পর্বতের চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য কোন লোকই নেই। 19 নীনবী, তুমি খারাপভাবে আঘাত পেয়েছো। কোন কিছুই তোমার আঘাত সারাতে পারবে না। যারাই তোমার ধ্বংসের কথা শোনে, তারা হাততালি দেয়। তারা সবাই খুশী। কেন? কারণ তুমি সব সময় যে সব ব্যথা দিয়ে থাকো তা তারা সবাই অনুভব করেছে!
সক্কেয়
19 যীশু যিরীহো শহরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। 2 সেখানে সক্কেয় নামে একজন লোক ছিল। সে ছিল একজন উচ্চ-পদস্থ কর আদায়কারী ও খুব ধনী ব্যক্তি। 3 কে যীশু তা দেখার জন্য সক্কেয় খুবই চেষ্টা করছিল, কিন্তু বেঁটে হওয়াতে ভীড়ের জন্য যীশুকে দেখতে পাচ্ছিল না। 4 তাই সবার আগে ছুটে গিয়ে যে পথ ধরে যীশু আসছিলেন, সেই পথের পাশে একটা সুকমোর গাছে উঠল যাতে সেখান থেকে যীশুকে দেখতে পায়। 5 যীশু সেখানে এসে ওপর দিকে তাকিয়ে বললেন, “সক্কেয় তাড়াতাড়ি নেমে এস, কারণ আজ আমায় তোমার ঘরে থাকতে হবে।”
6 সক্কেয় তাড়াতাড়ি নেমে এসে মহানন্দে যীশুকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অভ্যর্থনা জানাল। 7 সেখানে যারা ছিল, এই দেখে তারা সকলে অনুযোগের সুরে বলল, “উনি একজন পাপীর ঘরে অতিথি হয়ে গেলেন।”
8 কিন্তু সক্কেয় উঠে দাঁড়িয়ে প্রভুকে বলল, “প্রভু দেখুন, আমি আমার সম্পদের অর্ধেক গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দেব, আর যদি কাউকে ঠকিয়ে থাকি তবে তার চতুর্গুণ ফিরিয়ে দেব।”
9 যীশু তাকে বললেন, “আজ এই বাড়িতে পরিত্রাণ এসেছে, যেহেতু এই মানুষটি অব্রাহামের পুত্র। 10 কারণ যা হারিয়ে গিয়েছিল তা খুঁজে বার করতে ও উদ্ধার করতেই মানবপুত্র এ জগতে এসেছেন।”
ঈশ্বর প্রদত্ত জিনিস ব্যবহর কর
(মথি 25:14-30)
11 যীশু জেরুশালেমের কাছাকাছি এগিয়ে গেলে লোকদের ধারণা হল যে তখনই বুঝি ঈশ্বরের রাজ্য এসে পড়ল। তাই তিনি তাদের কাছে এই দৃষ্টান্তটি দিলেন। 12 যীশু বললেন, “একজন সম্ভ্রান্ত বংশের লোক রাজ পদ নিয়ে ফিরে আসার জন্য দূর দেশে যাত্রা করলেন। 13 যাবার আগে তিনি তাঁর দশজন কর্মচারীকে ডেকে প্রত্যেকের হাতে একটি করে মোট দশটি মোহর দিয়ে বললেন, ‘আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত এই দিয়ে ব্যবসা করো।’ 14 কিন্তু তাঁর প্রজারা তাকে ঘৃণা করত; আর তিনি চলে যাওযার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় লোকেরা একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে বলে পাঠাল, ‘আমরা চাই না যে এই লোক আমাদের রাজা হোক্!’
15 “কিন্তু সেই ব্যক্তি রাজপদ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলেন; আর যে কর্মচারীদের তিনি টাকা দিয়েছিলেন তাদের সকলকে ডেকে পাঠালেন। তিনি দেখতে চাইলেন যে তারা কে কত লাভ করেছে। 16 প্রথম জন এসে বলল, ‘প্রভু, আপনার এক মোহর খাটিয়ে দশ মোহর লাভ হয়েছে।’ 17 তখন মনিব তাকে বললেন, ‘খুব ভাল করেছ, তুমি খুব ভাল কর্মচারী। তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত ছিলে তাই তোমাকে দশটি শহরের শাসক হিসেবে নিয়োগ করা হবে।’
18 “এরপর দ্বিতীয় জন এসে বলল, ‘প্রভু আপনার এক মোহর খাটিয়ে পাঁচ মোহর লাভ হয়েছে।’ 19 তিনি তাকে বললেন, ‘তোমাকে পাঁচটি শহরের শাসনভার দেওয়া হবে।’
20 “এরপর আর একজন এসে বলল, ‘প্রভু, এই নিন আপনার মোহর, এটা আমি রুমালে বেঁধে আলাদা করে রেখে দিয়েছিলাম। 21 আপনার বিষয়ে আমার খুব ভয় ছিল, কারণ আপনি খুব কঠিন লোক। আপনি যা জমা করেন নি তাই নিয়ে থাকেন, আর যা বোনেন না তার ফসল কাটেন।’
22 “তখন তার প্রভু তাকে বললেন, ‘তোমার কথা অনুসারেই আমি তোমার বিচার করব, তুমি একজন দুষ্ট কর্মচারী। তুমি জানতে আমি একজন কঠিন লোক, আমি যা জমা করি না তাই পেতে চাই, যা বুনি না তাই কাটি। 23 তবে তুমি আমার টাকা কেন মহাজনদের কাছে জমা রাখনি? তাহলে তো আমি টাকার সুদটাও অন্তত পেতাম।’ 24 আর যারা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল তিনি তাদের বললেন, ‘এর কাছ থেকে ঐ মোহর নিয়ে নাও আর যার দশ মোহর আছে তাকে ওটা দাও।’
25 “তখন তারা তাকে বলল, ‘প্রভু, ওর তো দশটা মোহর আছে!’
26 “প্রভু বললেন, ‘আমি তোমাদের বলছি, যার আছে তাকে আরো দেওয়া হবে আর যার নেই, তার যেটুকু আছে তাও কেড়ে নেওয়া হবে। 27 কিন্তু যারা আমার শত্রু, যারা চায় নি যে আমি তাদের ওপর রাজত্ব করি, তাদের এখানে নিয়ে এসে আমার সামনেই মেরে ফেল।’”
যীশুর জেরুশালেমে প্রবেশ
(মথি 21:1-11; মার্ক 11:1-11; যোহন 12:12-19)
28 এইসব কথা বলার পর যীশু জেরুশালেমের দিকে এগিয়ে চললেন। 29 তিনি জৈতুন পর্বতের কাছে বৈৎফগী ও বৈথনিয়া গ্রামের কাছাকাছি এলে তাঁর দুজন শিষ্যকে বললেন, 30 “তোমরা ঐ গ্রামে যাও। ঐ গ্রামে ঢোকার মুখেই একটা বাচ্চা গাধা বাঁধা আছে দেখবে, সেটার ওপর এর আগে কেউ কখনও বসেনি, সেটা খুলে এখানে নিয়ে এস। 31 কেউ যদি তোমাদের জিজ্ঞেস করে, তোমরা ওটা খুলছ কেন? তোমরা বলো, ‘এটাকে প্রভুর দরকার আছে।’”
32 যাঁদের পাঠানো হয়েছিল তাঁরা গিয়ে যীশুর কথা মতোই সব কিছু দেখতে পেলেন। 33 তাঁরা যখন সেই বাচ্চা গাধাটা খুলছিলেন তখন তার মালিক এসে তাঁদের জিজ্ঞেস করল, “আপনারা এটা খুলছেন কেন?”
34 তাঁরা বললেন, “এটাকে প্রভুর দরকার আছে।” 35 এরপর তাঁরা গাধাটাকে যীশুর কাছে নিয়ে এসে তার ওপর তাঁদের চাদর বিছিয়ে দিলেন, আর তার পিঠে যীশুকে বসালেন। 36 তিনি যখন যাচ্ছিলেন, তখন লোকেরা যাত্রা পথে নিজেদের জামা-চাদর বিছিয়ে দিচ্ছিল।
37 তিনি জৈতুন পর্বতমালা থেকে নেমে যাবার রাস্তার মুখে এসে পৌঁছালেন। সেই সময় যারা তাঁর পেছনে পেছনে আসছিল, তারা যীশু যে সব অলৌকিক কাজ করেছিলেন তা দেখতে পেয়েছিল বলে আনন্দের উচ্ছাসে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বলল,
38 “‘ধন্য সেই রাজা যিনি প্রভুর নামে আসছেন!’(A)
স্বর্গে শান্তি ও ঈশ্বরের মহিমা হোক্!”
39 সেই ভীড়ের মধ্য থেকে কয়েকজন ফরীশী যীশুকে বলল, “গুরু, আপনার অনুগামীদের ধমক দিন!”
40 যীশু বললেন, “আমি তোমাদের বলছি, ওরা যদি চুপ করে, তবে পাথরগুলো চেঁচিয়ে উঠবে।”
জেরুশালেমের জন্য যীশু কাঁদলেন
41 তিনি জেরুশালেমের কাছাকাছি এসে শহরটি দেখে কেঁদে ফেললেন। 42 তিনি বললেন, “হায়! কিসে তোমার শান্তি হবে তা যদি তুমি আজ বুঝতে পারতে! কিন্তু এখন তা তোমার দৃষ্টির অগোচরে রইল। 43 সেই দিন আসছে, যখন তোমার শত্রুরা তোমার চারপাশে বেষ্টনী গড়ে তুলবে। তারা তোমায় ঘিরে ধরবে আর চারপাশ থেকে চেপে ধরবে। 44 তারা তোমাকে ও তোমার সন্তানদের ধ্বংস করবে। তোমার প্রাচীরের একটা পাথরের ওপর আর একটা পাথর থাকতে দেবে না, কারণ তোমার তত্ত্বাবধানের জন্য ঈশ্বর যে তোমার কাছে এলেন, এ তুমি বুঝলে না।”
যীশু মন্দিরে প্রবেশ করলেন
(মথি 21:12-17; মার্ক 11:15-19; যোহন 2:13-22)
45 এরপর যীশু মন্দিরের মধ্যে ঢুকলেন আর সেখানে যারা জিনিসপত্র বিক্রি করছিল তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দিতে লাগলেন। 46 তিনি তাদের বললেন, “শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমার গৃহ হবে প্রার্থনার গৃহ।’(B) কিন্তু তোমরা এটাকে ‘ডাকাতদের আড্ডাখানায়’ পরিণত করেছ।”(C)
47 তখন থেকে প্রত্যেক দিন তিনি মন্দিরে শিক্ষা দিতে থাকলেন। প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ইহুদী নেতারা তাঁকে হত্যা করার উপায় খুঁজতে লাগল। 48 কিন্তু তারা কোনভাবেই কোন পথ খুঁজে পেল না, কারণ সব লোকই খুব মন দিয়ে তাঁর কথাগুলি শুনত।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International