Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
প্রেরিত 15-16

জেরুশালেমে সভা

15 যিহূদা থেকে কয়েকজন লোক এসে শিক্ষা দিতে লাগল। তারা অইহুদী ভাইদের শিক্ষা দিয়ে বলল, “মোশির বিধান অনুসারে সুন্নত সংস্কার না করলে তোমরা উদ্ধার পাবে না।” পৌল ও বার্ণবা এই শিক্ষার বিরোধিতা করলেন। সেই লোকদের সঙ্গে পৌল ও বার্ণবার তর্ক হল। ঠিক হল এই তর্কের মীমাংসার জন্য পৌল, বার্ণবা ও আরও কয়েকজনকে জেরুশালেমে প্রেরিতদের ও প্রাচীনদের কাছে পাঠানো হবে।

তখন মণ্ডলী তাঁদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। এই বিশ্বাসীরা যাত্রা পথে ফৈনীকিয়া ও শমরিয়া হয়ে গেলেন ও অইহুদীরা যে খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হয়েছে তা জানালেন, এতে বিশ্বাসীদের মধ্যে খুবই আনন্দ হল। পৌল, বার্ণবা ও অন্যান্যরা জেরুশালেমে পৌঁছালেন। বিশ্বাসী মণ্ডলীর প্রেরিতরা ও প্রাচীনরা তাঁদের স্বাগত জানালেন। ঈশ্বর তাঁদের সঙ্গে যা করেছেন, পৌল ও বার্ণবা সে সব কথা জানালেন। কিন্তু ফরীশীদের মধ্যে যারা বিশ্বাসী হয়েছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন উঠে দাঁড়িয়ে বলতে লাগল, “অইহুদীদের মধ্যে যারা বিশ্বাসী হয়েছে, তাদের সুন্নত করা ও মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা পালনে বাধ্য করা হবে।”

এরপর প্রেরিতরা ও প্রাচীনরা এই প্রশ্নের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য সমবেত হলেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে নানা কথা কাটাকাটির পর পিতর উঠে দাঁড়িয়ে তাদের বললেন, “ভাইরা আপনারা জানেন, পূর্বের দিনগুলিতে ঈশ্বর আপনাদের মধ্য থেকে আমাকে মনোনীত করেছিলেন, যেন অইহুদীদের কাছে আমি সুসমাচার প্রচার করি। তারা আমার মুখে সুসমাচার শুনে বিশ্বাস করেছিল। ঈশ্বর, যিনি অন্তর্যামী তিনি অইহুদীদের তাঁর রাজ্যে গ্রহণ করলেন এবং এর সাক্ষ্যস্বরূপ তাদের পবিত্র আত্মা দিলেন, যেমন আমাদের দিয়েছিলেন। তাদের ও আমাদের মধ্যে ঈশ্বর কোন প্রভেদ রাখেন নি, বরং বিশ্বাস করলে পর ঈশ্বর তাদের অন্তরও শুদ্ধ করলেন। 10 এখন এই অইহুদী ভাইদের কাঁধে কেন আপনারা ভারী যোয়াল চাপিয়ে দিতে চাইছেন? ঈশ্বরকে কি আপনারা ক্রুদ্ধ করতে চান? আমরা ও আমাদের পিতৃপুরুষদের এমন শক্তি ছিল না যে সেই ভারী যোয়াল বহন করি। 11 কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি যে এই অইহুদী বিশ্বাসীরা আমাদের মত প্রভু যীশুর অনুগ্রহেই উদ্ধার লাভ করবে!”

12 তখন সমস্ত লোক নীরব হয়ে গেল আর বার্ণবা ও পৌলের মাধ্যমে অইহুদীদের মধ্যে ঈশ্বর কি কি অলৌকিক কাজ করেছেন, তাদের কাছ থেকে সে সব ঘটনার কথা শুনল। 13 তাদের কথা বলা শেষ হলে যাকোব বলতে শুরু করলেন, “ভাইরা, আমার কথা শুনুন। 14 অইহুদীদের প্রতি ঈশ্বরের ভালোবাসার কথা আপনারা ভাই শিমোনের মুখে শুনেছেন। এই প্রথম ঈশ্বর অইহুদীদের গ্রহণ করলেন ও তাদের তাঁর প্রজা করে নিলেন। 15 ভাববাদীদের কথাও এর সাথে মেলে যেমন শাস্ত্রে লেখা আছে:

16 ‘এরপর আমি ফিরে আসব,
    আর দায়ূদের যে ঘর ভেঙে গেছে,
    তা পুনরায় গাঁথব।
আমি তার ধ্বংসস্থান আবার গেঁথে তুলব,
    তা নতুন করে স্থাপন করব।
17 যেন মানবজাতির বাকি অংশ প্রভুর অন্বেষণ করে,
    আর সমস্ত অইহুদীদের যাদের আমার নামে আহ্বান করা হয়েছে,
তারাও সকলে প্রভুর অন্বেষণ করে।
    ঈশ্বর একথা বলেন এবং তিনিই এসব করেছেন।’(A)

18 ‘ঈশ্বর বহুপূর্বেই এই বিষয়গুলি জানিয়েছেন।’[a]

19 “তাই আমার বিচার হল যে অইহুদীদের মধ্য থেকে যাঁরা ঈশ্বরের দিকে ফিরেছে আমরা তাদের কষ্ট দেব না। 20 এর পরিবর্তে আমরা তাদের পত্র লিখে এই কথা জানাবো।

তারা যেন প্রতিমা সংক্রান্ত কোন অশুচি খাদ্য না খায়,

যৌন পাপ কার্য থেকে বিরত থাকে,

গলা টিপে মারা কোন প্রাণীর মাংস না খায় বা রক্ত আস্বাদন না করে।

21 তাদের এবিষয়ে নিবৃত্ত হওয়া প্রয়োজন, কারণ সেই আদিকাল থেকেই প্রতিটি শহরে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে এখনও মোশির এমন লোক আছে, যারা তাঁকে অর্থাৎ তাঁর বিধি-ব্যবস্থার কথা প্রচার করে। তাছাড়া প্রতি বিশ্রামবারে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে মোশির বিধি-ব্যবস্থা পাঠ করা হয়।”

অইহুদী বিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে পত্র

22 তখন প্রেরিতরা ও প্রাচীনরা মণ্ডলীর বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে একযোগে তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে মনোনীত করে পৌল ও বার্ণবার সঙ্গে আন্তিয়খিয়ায় পাঠাবার বিষয়ে ঠিক করলেন। তাঁরা যিহূদা (বার্ণবা) ও সীলকে মনোনীত করলেন, এরা ভাইদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ছিলেন।

23 তাঁদের সঙ্গে তাঁরা এইরকম এক পত্র লিখে পাঠালেন:

আন্তিয়খিয়ায়, সুরিয়া ও কিলিকিয়ার অইহুদী সমবিশ্বাসী ভাইদের কাছে

প্রেরিতদের ও মণ্ডলীর প্রাচীনদের শুভেচ্ছা।

প্রিয় ভাইরা,

24 আমরা শুনতে পেয়েছি যে আমাদের নির্দেশ ছাড়াই এমন কয়েকজন লোক এখান থেকে গিয়ে নানা কথা বলে তোমাদের মন অস্থির করে তুলেছে ও তোমাদের নানা সমস্যার মধ্যে ফেলেছে! 25 আমরা সকলে একমত হয়েছি যে কয়েকজনকে মনোনীত করে আমাদের প্রিয় ভাই বার্ণবা ও পৌলের সঙ্গে তোমাদের কাছে পাঠান। 26 এই লোকেরা আমাদের প্রভু, যীশু খ্রীষ্টের নামে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। 27 তাই এঁদের সঙ্গে আমরা যিহূদা ও শীলকে পাঠাচ্ছি, এঁরা তোমাদের একই কথা বলবেন। 28 কারণ পবিত্র আত্মার কাছে এবং আমাদের কাছেও এটাই ভাল মনে হল যে এই প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি ছাড়া অতিরিক্ত কোন কিছুই তোমাদের ওপর ভারস্বরূপ চাপিয়ে দেব না।

29 তোমরা প্রতিমার সামনে উৎসর্গ করা কোন খাদ্যবস্তু খাবে না,

রক্ত এবং গলা টিপে মারা কোন প্রাণীর মাংস খাবে না,

আর যৌন পাপ কর্ম থেকে দূরে থাকবে।

তোমরা যদি নিজেদের এর থেকে দূরে রাখ তাহলে তোমাদের মঙ্গল হবে। তোমাদের সকলের জন্য আমাদের শুভেচ্ছা রইল।

30 তাই পৌল, বার্ণবা, যিহূদা ও সীল জেরুশালেম থেকে রওনা হয়ে আন্তিয়খিয়ায় এলেন। তাঁরা লোকদের সমবেত করে সেই চিঠিটি দিলেন। 31 চিঠিটি পড়ার পর তাঁরা সবাই সেই উৎসাহোদ্দীপক চিঠির জন্য আনন্দ করতে থাকলেন। 32 যিহূদা ও সীল উভয়ে ভাববাদী হওয়াতে ভাইদের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলে তাদের উৎসাহ দিলেন ও শক্তি জোগালেন। 33 যিহূদা ও সীল কিছুদিন সেখানে থাকার পর যাঁরা তাঁদের পাঠিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে অর্থাৎ জেরুশালেমে ফিরে যাবার জন্য ভাইদের কাছ থেকে শান্তিতে বিদায় পেলেন। 34 [b]

35 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা আন্তিয়খিয়াতে কিছু সময় কাটালেন। তাঁরা অন্যান্য আরো অনেকের সঙ্গে প্রভুর বার্তা শিক্ষা দিতেন ও সুসমাচার প্রচার করতেন।

পৌল ও বার্ণবা আলাদা হলেন

36 কিছু সময় পর পৌল বার্ণবাকে বললেন, “চল আমরা ফিরে যাই, প্রতিটি শহরে যেখানে আমরা প্রভুর বার্তা প্রচার করেছিলাম, সেইসব জায়গায় গিয়ে দেখি ভাইরা কেমন আছে।”

37 বার্ণবা চাইলেন যেন যোহন অর্থাৎ মার্কও তাঁদের সঙ্গে যান। 38 কিন্তু পৌল ভাবলেন, একবার যে পাম্ফুলিয়াতে তাঁদের ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তাকে সঙ্গে না নেওয়াই ভাল। 39 এর ফলে তাঁদেব মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল। শেষ পর্যন্ত তাঁরা পরস্পর আলাদা হয়ে গেলেন। বার্ণবা মার্ককে সঙ্গে নিয়ে জাহাজে করে কুপ্রের দিকে রওনা দিলেন।

40 পৌল সীলকে সঙ্গে নিলেন। ভাইরা আন্তিয়খিয়াতে প্রভুর সেবার ভার পৌলকে দিলেন। 41 পৌল এবং সীল সুরিয়া ও কিলিকিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে বিভিন্ন মণ্ডলীকে আরও সুদৃঢ় করলেন।

পৌল ও সীলের সঙ্গে তীমথিয়র যাত্রা

16 পৌল দর্বী ও লুস্ত্রার শহরে গেলেন; সেখানে তীমথিয় নামে একজন খ্রীষ্টানুসারী ছিলেন। তীমথিয়র মা ছিলেন ইহুদী খ্রীষ্টীয়ান, তাঁর বাবা ছিলেন গ্রীক। লুস্ত্রা ও ইকনীয়ের সকল ভাইরা তীমথিয়কে শ্রদ্ধা করত ও তাঁর বিষয়ে সুখ্যাতি করত। পৌল চাইলেন সুসমাচার প্রচারের জন্য যেন তীমথিয় তাঁর সঙ্গে যান। তাই তিনি ঐসব জায়গায় ইহুদীদের সন্তুষ্ট করতে তীমথিয়কে সুন্নত করালেন, কারণ তাঁর বাবা যে গ্রীক একথা সকলে জানত।

পরে পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা বিভিন্ন শহরের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে, সেখানকার বিশ্বাসী ভাইদের কাছে জেরুশালেমের প্রেরিতদের ও প্রাচীনদের নির্ধারিত নির্দেশ জানালেন। এইভাবে মণ্ডলীগুলি বিশ্বাসে দৃঢ় হতে থাকল ও প্রতিদিন সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে থাকল।

এশিয়ার বাইরে পৌলকে আহ্বান

পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা ফরুগিয়া ও গালাতিয়ায় গেলেন, কারণ এশিয়ায় সুসমাচার প্রচার করার বিষয়ে পবিত্র আত্মা তাঁদের অনুমতি দিলেন না। তাঁরা মুশিয়ার সীমান্তে এলেন এবং বিথুনিয়ায় যেতে চেষ্টা করলেন, কিন্তু যীশুর আত্মা তাদের সেখানেও যেতে দিলেন না। তাই তাঁরা মুশিয়ার মধ্য দিয়ে ত্রোয়াতে গিয়ে পৌঁছালেন।

সেই রাত্রে পৌল এক দর্শন পেলেন; তিনি দেখলেন একজন মাকিদনিয়ান লোক দাঁড়িয়ে অনুনয় করে বলছে, “মাকিদনিয়ায় আসুন! আমাদের সাহায্য করুন।” 10 পৌলের এই দর্শন পাওয়ার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে মাকিদনিয়ায় যাওয়ার স্থির করলাম, আমরা বুঝতে পারলাম যে সেখানে সুসমাচার প্রচার করার জন্য ঈশ্বর আমাদের ডাকছেন।

লুদিয়ার মন পরিবর্তন

11 আমরা ত্রোয়া ছেড়ে জলপথে সোজা সামথ্রাকীতের দিকে রওনা দিলাম, আর পরদিন নিয়াপলিতে পৌঁছালাম। 12 সেখান থেকে আমরা ফিলিপীতে গেলাম। ফিলিপী হল মাকিদনিয়ার ঐ অংশের এক উল্লেখযোগ্য শহর, এক রোমান উপনিবেশ। আমরা সেখানে কিছুদিন থাকলাম।

13 বিশ্রামবারে আমরা শহরের ফটকের বাইরে নদীর ধারে গেলাম, মনে করলাম সেখানে নিশ্চয়ই কোন প্রার্থনার জায়গা আছে। আর সেখানে যে সব স্ত্রীলোক সমবেত হয়েছিলেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করলাম। 14 সেখানে লুদিয়া নামে এক মহিলা ছিলেন, তাঁর বেগুনে রঙের কাপড়ের ব্যবসা ছিল। থুয়াতীরা শহর থেকে আগত এই মহিলা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করতেন। তিনি আমাদের কথা শুনছিলেন, আর ঈশ্বর তাঁর হৃদয় খুলে দিলে তিনি পৌলের কথা মন দিয়ে শুনে বিশ্বাস করলেন। 15 তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে বাপ্তাইজ হলে পর, তিনি অনুরোধের সুরে আমাদের বললেন, “আপনারা যদি আমাকে প্রভুর প্রকৃত বিশ্বাসী মনে করে থাকেন, তবে আমার বাড়িতে এসে থাকুন।” আর তাঁর বাড়িতে থাকবার জন্য আমাদের অনেক পীড়াপীড়ি করলেন।

কারাগারে পৌল ও সীল

16 একদিন আমরা যখন প্রার্থনা করার জন্য যাচ্ছিলাম, তখন একজন ক্রীতদাসী আমাদের সামনে এল। তার উপর এমন এক বিশেষ মন্দ আত্মা ভর করে ছিল যার প্রভাবে সে মানুষের ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারত। এই করে সে তার মনিবদেব বেশ রোজগারের রাস্তা করে দিয়েছিল। 17 সে আমাদের ও পৌলের পিছু ধরল আর চিৎকার করে বলতে লাগল, “এই লোকরা পরাৎ‌পর ঈশ্বরের দাস। তাঁরা বলেন কিভাবে তোমরা উদ্ধার পেতে পারো।” 18 এভাবে সে অনেকদিন ধরে বলতে লাগল। শেষে পৌল এতে বিরক্ত হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই আত্মাকে বললেন, “যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোকে আদেশ করছি যে তুই এর থেকে বেরিয়ে যা।” তাতে সেই মন্দ আত্মা সঙ্গে সঙ্গে বার হয়ে গেল।

19 সেই ক্রীতদাসীর মনিবরা তা দেখল, আর সেই ক্রীতদাসীকে কাজে লাগিয়ে তাদের অর্থ উপার্জনের পথ বন্ধ হল বুঝতে পেরে তারা পৌল ও সীলকে ধরে টানতে টানতে বাজারে কর্ত্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে গেল। 20 তারা নগরের কর্ত্তৃপক্ষের সামনে পৌল ও সীলকে নিয়ে এসে বলল, “এরা ইহুদী, আর এরা আমাদের শহরে গণ্ডগোলের সৃষ্টি করছে! 21 এরা এমন সব রীতি নীতি পালনের কথা বলছে যা পালন করা আমাদের পক্ষে নীতিবিরুদ্ধ কাজ, কারণ আমরা রোমান নাগরিক। আমরা ঐসব পালন করতে পারি না।”

22 তখন সেই জনতা তাঁদের ওপর মারমুখী হয়ে উঠল। নগররক্ষকগণ পৌল ও সীলের পোশাক ছিঁড়ে ফেলে তাঁদের বেত মারার জন্য হুকুম দিলেন। 23 পৌল ও সীলকে জনতা খুব মারধোর করার পর নেতারা তাঁদের কারাগারে পুরে দিল এবং কারারক্ষককে কড়া পাহারা দিতে বলল। 24 কারারক্ষক এই নির্দেশ পেয়ে পৌল ও সীলকে কারাগারের ভেতরের কক্ষে নিয়ে গিয়ে দেওয়ালে বসানো কাঠের বেড়িগুলির মধ্যে তাঁদের পা আটকে দিল।

25 মাঝরাতে পৌল ও সীল ঈশ্বরের স্তবগান ও প্রার্থনা করছিলেন, অন্য বন্দীরা তা শুনছিল। 26 হঠাৎ‌ প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কারাগারের ভিত কেঁপে উঠল আর সঙ্গে সঙ্গে কারাগারের সব দরজা খুলে গেল, বন্দীদের শেকল খসে পড়ল। 27 কারারক্ষক জেগে উঠে যখন দেখলেন যে কারাগারের সব দরজা খোলা তখন তিনি কোষ থেকে তাঁর তরবারি বার করে আত্মহত্যা করতে চাইলেন, কারণ তিনি ভাবলেন বন্দীরা সব পালিয়েছে। 28 কিন্তু পৌল চিৎকার করে বলে উঠলেন, “নিজের ক্ষতি করবেন না! আমরা সকলেই এখানে আছি!”

29 তখন কারারক্ষক কাউকে আলো আনতে বলে ভেতরে দৌড়ে গেলেন, আর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে পৌল ও সীলের সামনে উপুড় হয়ে পড়লেন। 30 পরে তাঁদের বাইরে নিয়ে এসে বললেন, “মহাশয়রা, উদ্ধার পেতে হলে আমায় কি করতে হবে?”

31 তাঁরা বললেন, “প্রভু যীশুর ওপর বিশ্বাস করুন, তাহলে আপনি ও আপনার গৃহের সকলেই উদ্ধার লাভ করবেন।” 32 এরপর তাঁরা সেই কারারক্ষক ও তাঁর বাড়ির লোকের কাছে প্রভুর বার্তা প্রচার করলেন। 33 বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল কিন্তু কারারক্ষক সেই রাতেই পৌল ঔ সীলের সমস্ত ক্ষত ধুয়ে দিলেন এবং সপরিবারে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করলেন। 34 এরপর কারারক্ষক পৌল ও সীলকে নিজের গৃহে নিয়ে গিয়ে তাঁদের আহারের ব্যবস্থা করলেন। ঈশ্বরে বিশ্বাসী হওয়ায় তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে খুব আনন্দিত হলেন।

35 পরদিন সকাল হলে শাসকগণ রক্ষীবাহিনীদের দিয়ে কারারক্ষককে বলে পাঠালেন, “ঐ লোকদের ছেড়ে দাও!”

36 তখন কারারক্ষক সেকথা পৌলকে জানালেন, “নগর অধ্যক্ষরা আপনাদের ছেড়ে দেবার জন্য বলে পাঠিয়েছেন, তাই এখন আপনারা নির্বিঘ্নে এখান থেকে চলে যান।”

37 কিন্তু পৌল তাদের বললেন, “আমরা রোমান নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা আমাদের বিচার না করেই সকলের সামনে বেত মেরেছেন। শেষে আমাদের কারাগারে বন্দী করেছিলেন। এখন তাঁরা চুপি-চুপি আমাদের ছেড়ে দিতে চাইছেন? এ হতে পারে না! তাঁদের এখানে আসতে হবে আর এসে আমাদের কারাগারের বাইরে নিয়ে যেতে হবে।”

38 সেই রক্ষীবাহিনীর লোকরা বিচারকদের জানাল যে পৌল ও সীল রোমান নাগরিক, তখন তাঁরা ভয় পেয়ে গেলেন। 39 তাই তাঁরা এসে ক্ষমা চাইলেন, আর তাঁদের কারাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে সেই শহর ছেড়ে চলে যাবার জন্য অনুরোধ করলেন। 40 পৌল ও সীল কারাগার থেকে বাইরে এসে লুদিয়ার বাড়ি গেলেন। সেখানে বিশ্বাসীদের সঙ্গে দেখা হলে তাদের সকলকে উৎসাহ দিলেন। এরপর পৌল ও সীল শহর ছেড়ে চলে গেলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International