Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
প্রেরিত 13-14

বার্ণবা ও শৌল বিশেষ কাজে মনোনীত

13 সেই সময় আন্তিয়খিয়ার মণ্ডলীতে কয়েকজন ভাববাদী ও শিক্ষক ছিলেন। তাঁরা হলেন; বার্ণবা, শিমোন যাকে নীগের বলা হত, কুরীনীয় শহরের লুকিয়, মনহেম ইনি শাসনকর্তা হেরোদের সঙ্গে মানুষ হয়েছিলেন ও শৌল। তাঁরা প্রভুর সেবায় রত ছিলেন ও উপবাস করছিলেন। সেই সময় একদিন পবিত্র আত্মা বললেন, “বার্ণবা ও শৌলকে আমার জন্য পৃথক করে দাও; কারণ একটি বিশেষ কাজের জন্য আমি তাদের মনোনীত করেছি।”

তখন তাঁরা উপবাস ও প্রার্থনার পর বার্ণবা ও শৌলের ওপর হাত রেখে তাঁদের বিদায় দিলেন।

বার্ণবা ও শৌল কুপ্রীয়তে গেলেন

এইভাবে পবিত্র আত্মার প্রেরণায় চালিত হয়ে তাঁরা সিলুকিয়া শহরে গেলেন ও সেখান থেকে জাহাজে করে কুপ্র দ্বীপে রওনা দিলেন। তাঁরা সালামী শহরে পৌঁছে ইহুদীদের সমাজ-গৃহগুলিতে গিয়ে ঈশ্বরের বার্তা প্রচার করলেন। যোহন মার্ক তাঁদের সহকারীরূপে কাজ করছিলেন।

তাঁরা সেই দ্বীপের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে পরে পাফোসে এসে উঠলেন। সেখানে তাঁরা বর যীশু নামে এক ইহুদী যাদুকর ও ভণ্ড ভাববাদীর দেখা পেলেন। সে সেই রাজ্যের রাজ্যপাল সের্গীয় পৌলের উপদেষ্টা ছিল। সের্গীয় পৌল ছিলেন একজন বুদ্ধিমান লোক। তিনি বার্ণবা ও শৌলকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের কাছ থেকে ঈশ্বরের বার্তা শুনতে চাইলেন। কিন্তু সেই যাদুকর ইলুমা (এই ছিল বর যীশুর গ্রীক নাম) বার্ণবা ও পৌলের বিরুদ্ধাচরণ করে রাজ্যপালকে খ্রীষ্টে বিশ্বাস থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করতে লাগল। তখন শৌল, যাকে পৌলও বলে, তিনি পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ইলুমার দিকে সোজাসুজি তাকালেন। 10 বললেন, “তুই ছল-চাতুরীতে ভরা লোক! তুই দিয়াবলের ছেলে! যা কিছু ঠিক, তুই তার শত্রু! তুই কি প্রভুর সত্য পথকে বিকৃত করতে ক্ষান্ত হবি না? 11 দেখ, প্রভুর হাত এখন তোর ওপর। তুই অন্ধ হয়ে যাবি, আর কিছু দিন সূর্যের আলো আর দেখতে পাবি না।”

সঙ্গে সঙ্গে এক গভীর অন্ধকার তার ওপর নেমে এল আর সে চারদিকে হাতড়াতে লাগল, তাকে হাত ধরে সেখান থেকে নিয়ে যাবার জন্য লোকদের অনুরোধ করতে লাগল। 12 তখন সেই ঘটনা দেখে রাজ্যপাল বিশ্বাস করলেন, কারণ তিনি প্রভুর বিষয়ে শিক্ষার কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।

পৌল এবং বার্ণবার কুপ্রীয় ত্যাগ

13 পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা পাফঃ থেকে জলপথে রওনা দিয়ে পাম্ফুলিয়ার পর্গাতে এলেন, কিন্তু যোহন তাঁদের ছেড়ে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। 14 তাঁরা পর্গা থেকে আবার যাত্রা শুরু করে পিষিদিয়ার আন্তিয়খিয়ায় এসে উপস্থিত হলেন।

এক বিশ্রামবারে পৌল ও বার্ণবা ইহুদীদের এক সমাজ-গৃহে গিয়ে বসলেন। 15 মোশির বিধি-ব্যবস্থা এবং ভাববাদীদের গ্রন্থ থেকে পাঠ করা হলে পরে সমাজ-গৃহের অধ্যক্ষ তাদের বলে পাঠালেন, “ভাইরা, লোকদের কাছে শিক্ষা দেবার ও উৎসাহ যোগাবার মত যদি আপনাদের কিছু থাকে তবে এগিয়ে এসে তা বলুন।”

16 তখন পৌল উঠে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে বলতে থাকলেন, “হে ইস্রায়েলী লোকেরা ও অইহুদীরা, আপনারা যাঁরা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করেন তারা আমার কথা শুনুন। 17 এই ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর আমাদের পিতৃপুরুষদের মনোনীত করেছিলেন, আর মিশর দেশে প্রবাসীরূপে থাকার সময় তিনি আমাদের লোকদের উন্নত করেছিলেন। সেই দেশ থেকে ঈশ্বর মহাপরাক্রমে তাদের বার করে আনলেন। 18 প্রায় 40 বছর ধরে প্রান্তরের মধ্যে ঈশ্বর তাদের সব রকমের ব্যবহার সহ্য করলেন। 19 তিনি কনানের সাতটি জাতিকে উচ্ছেদ করে সেইসব জাতির দেশ ইস্রায়েলীয়দের দিলেন। 20 এইভাবে প্রায় চারশো পঞ্চাশ বছর কেটে গেল।

“এরপর ভাববাদী শমূয়েলের সময় পর্যন্ত ঈশ্বর কয়েকজন বিচারক দিলেন; 21 তারপর তারা একজন রাজা চাইলে বিন্যামীন গোষ্ঠীর কীশের ছেলে শৌলকে ঈশ্বর দিলেন, যে চল্লিশ বছর ধরে তাদের ওপর রাজত্ব করল। 22 পরে তিনি তাকে সরিয়ে, দায়ূদকে তাদের রাজা করলেন। ঈশ্বর তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে বললেন, ‘আমি যিশয়ের ছেলে দায়ূদকে পেয়েছি, সে আমার মনের মত লোক। আমি তাকে যা করতে বলব সে তা করবে।’

23 “দায়ূদের বংশে ঈশ্বর তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ইস্রায়েলের জন্য এক ত্রাণকর্তা আনলেন, তিনি যীশু। 24 তাঁর আসার আগে যোহন সমস্ত ইস্রায়েল জাতির কাছে মন-ফিরানোর এক বাপ্তিস্ম ঘোষণা করলেন। 25 যোহন তাঁর কাজের শেষের দিকে বলতেন, ‘আমি কে, তোমরা কি মনে কর? আমি সেই খ্রীষ্ট নই। আমার পর যিনি আসছেন, তাঁর জুতোর ফিতে খোলার যোগ্যতাও আমার নেই।’

26 “ভাইরা, অব্রাহামের বংশধররা, আর অইহুদীদের মধ্যে যাঁরা ঈশ্বরের উপাসনা করেন, আপনারা সকলে জানুন যে আমাদেরই কাছে পরিত্রাণের এই বার্তা পাঠানো হয়েছে। 27 জেরুশালেমের অধিবাসীরা ও তাদের নেতারা যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসেবে চিনতে পারে নি, যদিও ভাববাদীদের বাক্য যা প্রভু যীশুর সম্বন্ধে বলে তা তাদের কাছেই প্রতি বিশ্রামবারে পাঠ করা হত। যিহূদিরাই তাকে দোষী সাব্যস্ত করল, আর এইভাবে তারা ভাববাদীদের বাক্য সফল করেছে। 28 মৃত্যুদণ্ড দেবার মতো তাঁর কোন দোষ না পেলেও তারা পীলাতের কাছে তাঁকে হত্যা করার জন্য দাবী জানায়।

29 “যীশুর বিষয়ে যা কিছু শাস্ত্রে লেখা হয়েছে তার সবকিছু সম্পন্ন করবার পর, তারা তাঁর মৃতদেহ সেই ক্রুশ থেকে নামিয়ে এক কবরে রেখেছিল। 30 কিন্তু ঈশ্বর যীশুকে পুনর্জীবিত করলেন। 31 যাঁরা তাঁর সঙ্গে গালীল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন, তাঁদের তিনি অনেক দিন পর্যন্ত দেখা দিয়েছিলেন। তাঁরাই এখন লোকদের কাছে সর্বসমক্ষে তাঁর সাক্ষী।

32 “আমরা আপনাদের কাছে এই সুসমাচার জানাচ্ছি, যা ঈশ্বর আমাদের পিতৃপুরুষের কাছে প্রতিশ্রুতি স্বরূপ দিয়েছিলেন; 33 যীশুকে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করে ঈশ্বর আমাদের কাছে অর্থাৎ তাঁর সন্তানদের জন্যে সেই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন। যেমন দ্বিতীয় গীতে লেখা আছে:

‘তুমি আমার পুত্র,
    আজই আমি তোমার পিতা হয়েছি।’(A)

34 ঈশ্বর যীশুকে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করেছেন। যীশু আর কখনও ক্ষয় পাবেন না। এই বিষয়ে ঈশ্বর বলেছেন:

‘আমি দায়ূদের কাছে যে পবিত্র ও সত্য প্রতিশ্রুতিগুলি দিয়েছিলাম, তা তোমাকে দেব।’(B)

35 আবার আর এক জায়গায় ঈশ্বর বলেছেন:

‘তুমি তোমার পবিত্রতমকে ক্ষয় দেখতে দেবে না।’(C)

36 “দায়ূদ তাঁর সময়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করার পর মারা গেলে পিতৃপুরুষের কবরের মধ্যে তাঁকেও কবর দেওয়া হল ও তাঁর দেহও ক্ষয় পেল। 37 কিন্তু ঈশ্বর যাঁকে (যীশুকে) মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত করেছেন, তিনি ক্ষয় দেখেন নি। 38-39 তাই ভাইরা, আমি চাই আপনারা জানুন যে এই যীশুর মাধ্যমেই পাপের ক্ষমা লাভের কথা আপনাদের কাছে ঘোষণা করে হচ্ছে। মোশির বিধি-ব্যবস্থায় আপনারা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারতেন না; কিন্তু প্রত্যেক ব্যক্তি যে যীশুর ওপর বিশ্বাস করে, সে পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে। 40 তাই সাবধান! ভাববাদীরা যা বলে গেছেন, তা যেন আপনাদের জীবনে ফলে না যায়। ভাববাদীরা বললেন,

41 ‘শোন, তোমরা যারা উপহাস কর!
    তোমরা দেখ, অবাক হও ও ধ্বংস হয়ে যাও,
কারণ আমি তোমাদের সময়ে এমন কাজ করেছি,
    যে কাজের কথা তোমাদের বলা হলেও
    তোমরা বিশ্বাস করবে না।’”(D)

42 পৌল ও বার্ণবা যখন সমাজ-গৃহ থেকে চলে যাচ্ছেন, তখন লোকেরা অনুরোধ করল যেন পরের বিশ্রামবারে তারা আরো বিস্তারিতভাবে ঐসব কথা তাদের জানান। 43 সমাজ-গৃহের সভা শেষ হলে, অনেক ইহুদী ও ইহুদী ধর্মাবলম্বী ভক্ত লোকেরা পৌল ও বার্ণবার পিছনে পিছনে গেল। পৌল ও বার্ণবা ঐসব লোকদের সঙ্গে কথা বললেন ও ঈশ্বরের অনুগ্রহে আস্থা রেখে চলার পরামর্শ দিলেন।

44 পরের বিশ্রামবারে সেই শহরের প্রায় সমস্ত লোক প্রভুর কথা শোনার জন্য সমবেত হল; 45 কিন্তু ইহুদীরা অতো লোকের সমাগম দেখে ঈর্ষাতে জ্বলতে লাগল। তারা পৌলের কথার প্রতিবাদ করে তাদের অপমানও করতে লাগল। 46 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা নির্ভীকভাবে বলতে থাকলেন, “প্রথমে তোমরা যারা ইহুদী তোমাদেরই কাছে ঈশ্বরের বার্তা প্রচার করার প্রয়োজন ছিল; কিন্তু তোমরা যখন তা অগ্রাহ্য করে নিজেদের অনন্ত জীবনের অযোগ্য মনে করছ, তখন আমরা অইহুদীদের কাছেই যাব। 47 কারণ প্রভু আমাদের এমনই আদেশ করেছেন:

‘আমি তোমাদের অইহুদীদের কাছে দীপ্তিস্বরূপ করেছি,
    যেন তোমরা জগতের সমস্ত লোকের কাছে পরিত্রাণের পথ জানাতে পারো।’”(E)

48 অইহুদীরা পৌলের এই কথা শুনে আনন্দিত হল ও প্রভুর বার্তার সম্মান করল। আর যারা অনন্ত জীবনের জন্য মনোনীত হয়েছিল, তারা বিশ্বাস করল।

49 প্রভুর এই বার্তা সেই অঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল। 50 এদিকে কিছু ইহুদীরা ভক্তিমতি ও সম্মানীয় মহিলাদের ও শহরের নেতাদের উত্তেজিত করে পৌল ও বার্ণবার প্রতি নির্যাতন শুরু করল, আর নিজেদের অঞ্চল থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দিল। 51 তখন তাঁরা তাদের বিরুদ্ধে পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলে ইকনিয়ে চলে গেলেন। 52 এদিকে আন্তিয়কে অনুগামীরা আনন্দে ও পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হতে থাকলেন।

ইকনিয়ে পৌল ও বার্ণবা

14 এরপর পৌল ও বার্ণবা ইকনিয়ে গেলেন। সেখানে তাঁরা তাঁদের কাজের পদ্ধতি অনুযায়ী সেই একইভাবে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে প্রবেশ করলেন। সেখানকার লোকদের কাছে পৌল ও বার্ণবা এতো সুন্দরভাবে কথা বললেন, যে অনেক ইহুদী ও গ্রীক তাঁদের কথায় বিশ্বাস করল। কিন্তু কিছু ইহুদীরা বিশ্বাস করল না এবং তারা ভাইদের বিরুদ্ধে অইহুদীদের ক্ষেপিয়ে তুলল।

পৌল ও বার্ণবা ইকনিয়ে অনেক দিন থেকে গেলেন, আর তাঁরা নির্ভীকভাবে প্রভুর কথা বলে যেতে লাগলেন। তাঁরা প্রভুর অনুগ্রহের কথা প্রচার করতেন; আর প্রভুও তাঁদের মাধ্যমে নানা অলৌকিক কাজ করে সেই প্রচারের পক্ষে সাক্ষ্য দিতেন। সেই শহরের লোকরা দু’দলে ভাগ হয়ে গেল, একদল ইহুদীদের পক্ষে আর অন্য দল প্রেরিতদের পক্ষ নিল।

তখন অইহুদীরা ও ইহুদীরা তাদের সমাজপতিদের সঙ্গে এক হয়ে পৌল ও বার্ণবাকে অপমান করে পাথর মেরে হত্যা করার পরিকল্পনা করল। শৌল ও বার্ণবা তা জানতে পেরে সেই শহর ছেড়ে গেলেন। তাঁরা লুকায়নিয়ার লুস্ত্রা ও দর্বী শহরে ও তার চারপাশের অঞ্চলে চলে গেলেন; আর সেখানেও তাঁরা সুসমাচার প্রচারের কাজ চালিয়ে গেলেন।

লুস্ত্রা ও দর্বীতে পৌল

লুস্ত্রায় একজন লোক বসে থাকত, সে তার পা ব্যবহার করতে পারত না। সে জন্ম থেকেই খোঁড়া ছিল, কখনও হাঁটা চলা করে নি। সেই লোকটি বসে বসে পৌলের কথা শুনছিল। পৌল তার দিকে চেয়ে দেখলেন। সুস্থ হবার জন্য লোকটির ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস আছে। 10 পৌল তখন তাকে ডেকে বললেন, “তোমার দু পায়ে ভর দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াও!” আর সে লাফ দিয়ে উঠে হেঁটে বেড়াতে লাগল।

11 পৌল যা করলেন তা দেখে লোকেরা লুকায়নীয় ভাষায় বলে উঠল, “দেবতারা মানুষ রূপ ধারণ করে আমাদের মধ্যে অবতীর্ণ হয়েছেন!” 12 তারা বার্ণবাকে বলল, “দ্যুপিতর”[a] আর পৌলকে বলল, “মর্কুরিয়,”[b] কারণ পৌল ছিলেন প্রধান বক্তা। 13 শহরের ঠিক সামনেই দ্যুপিতের যে মন্দির ছিল, তার যাজক কয়েকটা ষাঁড় ও মালা নিয়ে শহরের ফটকে এল ও লোকদের সঙ্গে সেখানে তা বলিদান করে পৌল ও বার্ণবার কাছে উৎসর্গ করতে চাইল।

14 কিন্তু প্রেরিত বার্ণবা ও পৌল যখন একথা বুঝলেন, তখন তাঁরা নিজেদের পোশাক ছিঁড়ে দৌড়ে বাইরে গিয়ে লোকদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বললেন, 15 “আহা, তোমরা এ করছ কি? আমরাও তোমাদের মতো সাধারণ মানুষ! আমরা তোমাদের সুসমাচার শোনাতে এসেছি। এইসব অসারতার মধ্য থেকে জীবন্ত ঈশ্বরের দিকে ফিরতে হবে। ঈশ্বরই আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র ও সেই সকলের মধ্যে যা কিছু আছে সে সমস্তই সৃষ্টি করেছেন।

16 “তিনিই অতীতে সমস্ত জাতিকে নিজেদের খুশী মতো পথে চলতে দিয়েছেন। 17 তথাপি ঈশ্বর যে আছেন এর প্রমাণের জন্য তিনি অনেক কিছু করেছিলেন। তিনি সকলের মঙ্গল করেছেন। আকাশ থেকে বৃষ্টি ও বিভিন্ন ঋতুতে শস্য দিচ্ছেন। তিনি তোমাদের খাদ্য যোগাচ্ছেন ও তোমাদের অন্তর আনন্দে পূর্ণ করছেন।”

18 এইসব কথা পৌল ও বার্ণবা অনেক করে বোঝালেও তাঁদের উদ্দেশ্যে বলিদান করা থেকে কোনভাবেই এই লোকদের রুখতে পারলেন না।

19 এই ঘটনার পর ইকনিয় ও আন্তিয়খিয়া থেকে কয়েকজন ইহুদী এসে লোকদের পৌলের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করল। তারা পৌলের ওপর পাথর ছুঁড়ল, তাঁকে টেনে এনে শহরের বাইরে নিয়ে গেল। তারা মনে করল পৌল বুঝি মারাই গেছেন। 20 কিন্তু যীশুর অনুগামীরা এসে তাঁর চারপাশে দাঁড়ালে তিনি উঠে তাদের সঙ্গে শহরে গেলেন। পরদিন তিনি বার্ণবার সঙ্গে দর্বীতে চলে গেলেন।

সুরিয়ার আন্তিয়খিয়ায় প্রত্যাবর্তন

21 সেই শহরে তাঁরা সুসমাচার প্রচার করলেন, আর বহুলোক যীশুর অনুগামী হল। এরপর তাঁরা লুস্ত্রা হয়ে ইকনিয় ও পরে আন্তিয়খিয়ায় ফিরে এলেন। 22 তাঁরা ঐসব শহরে শিষ্যদের শক্তি জোগালেন। সমস্ত নির্যাতনের মধ্যেও বিশ্বাসে অটল থাকতে তাঁদের সাহস দিয়ে বললেন, “অনেক দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে হবে।” 23 তাঁরা প্রত্যেকটি বিশ্বাসী মণ্ডলীর জন্য প্রাচীনদের নিয়োগ করলেন। এই প্রাচীনরা, যারা প্রভুর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন, প্রার্থনা ও উপবাসের সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে তাঁরা প্রভুর হাতে সঁপে দিলেন।

24 এরপর তাঁরা পিষিদিয়ার মধ্য দিয়ে পাম্ফুলিয়ায় গেলেন। 25 তারপর পর্গায় আবার সুসমাচার প্রচার করলেন ও সেখান থেকে অত্তালিয়ায় চলে গেলেন। 26 সেখান থেকে তাঁরা জাহাজে করে আন্তিয়খিয়ায় গেলেন। যে কাজ তাঁরা এখন শেষ করলেন, সেই কাজের জন্যই এই শহর থেকে বিশ্বাসীরা পৌল ও বার্ণবাকে প্রভুর কাছে সমর্পণ করেছিলেন।

27 পৌল বার্ণবা ফিরে এসে মণ্ডলীর বিশ্বাসীদের একত্র করলেন; আর ঈশ্বর তাঁদের সঙ্গে থেকে যে সব কাজ করেছিলেন ও অইহুদীদের জন্য বিশ্বাসের যে দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন, সে সব কথা তাঁদের জানালেন। 28 পরে তাঁরা অনুগামীদের সঙ্গে সেখানে দীর্ঘ সময় থাকলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International