Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
মার্ক 11

রাজার মতো যীশুর জেরুশালেমে প্রবেশ

(মথি 21:1-11; লূক 19:28-40; যোহন 12:12-19)

11 এরপর তাঁরা জেরুশালেমের কাছাকাছি পৌঁছে জৈতুন পর্বতমালায় বৈৎফগী ও বৈথনিয়া গ্রামে এলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি তাঁর শিষ্যদের মধ্যে দুজনকে আগে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা তোমাদের সামনের ঐ গ্রামে যাও, গ্রামে ঢুকেই দেখবে একটা বাচ্চা গাধা বাঁধা আছে, যাতে কেউ কখনও বসে নি। সেই গাধাটাকে খুলে আন। যদি কেউ তোমাদের জিজ্ঞাসা করে, ‘কেন তুমি গাধাটি খুলছ?’ তখন তাকে বলবে, ‘এটা প্রভুর কাজে লাগবে আর সে তখনই সেটা পাঠিয়ে দেবে।’”

তাঁরা সেখানে গেলেন এবং দেখলেন দরজার কাছে রাস্তার ওপর একটা গাধা বাঁধা আছে। তখন তাঁরা দড়িটাকে খুলতে লাগলেন, আর কিছু লোক সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তারা তাঁদের বলল, “তোমরা কি করছ, গাধার বাচ্চাটাকে খুলছ কেন?” তাতে যীশু যেমন বলেছিলেন, তাঁরা সেইমতো উত্তর দিলেন, তখন লোকেরা আর কিছু বলল না, গাধার বাচ্চাটাকে নিয়ে যেতে দিল।

তাঁরা গাধার বাচ্চাটাকে যীশুর কাছে নিয়ে এসে গাধাটির উপরে তাদের জামাকাপড় পেতে দিলেন এবং যীশু তার উপরে বসলেন। তখন অনেকে তাদের জামাকাপড় রাস্তায় পেতে দিল আর অন্যেরা মাঠ থেকে পাতা ঝরা গাছের ডালপালা কেটে এনে রাস্তার উপরে ছড়িয়ে দিল। আর যে সমস্ত লোক আগে এবং পেছনে যাচ্ছিল তারা চেঁচিয়ে বলতে লাগল,

“‘হোশান্না!’[a]
    ‘ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন!’(A)

10 “আমাদের পিতৃপুরুষ দায়ূদের যে রাজ্য আসছে,
    তা ধন্য! হোশান্না!

স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমা হোক্।”

11 তিনি জেরুশালেমে ঢুকে মন্দিরে গেলেন। সেখানে চারদিকের সমস্ত কিছু লক্ষ্য করলেন; কিন্তু সন্ধ্যে হয়ে যাওয়ায় বারোজন প্রেরিতকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বৈথনিয়াতে ফিরে গেলেন।

বিশ্বাসযুক্ত প্রার্থনার বিষয়ে শিক্ষা

(মথি 21:18-19)

12 পরের দিন বৈথনিয়া ছেড়ে আসার সময় তাঁর খিদে পেল। 13 দূর থেকে তিনি একটি পাতায় ভরা ডুমুর গাছ দেখে তাতে কিছু ফল পাবেন ভেবে তার কাছে গেলেন, কিন্তু গাছটির কাছে গেলে পাতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না; কারণ তখন ডুমুর ফলের মরশুম নয়। 14 তখন তিনি গাছটিকে বললেন, “এখন থেকে তোমার ফল আর কেউ কোন দিন খাবে না!” এই কথা তাঁর শিষ্যেরা শুনতে পেলেন।

যীশু মন্দিরে গেলেন

(মথি 21:12-17; লূক 19:45-48; যোহন 2:13-22)

15 পরে তাঁরা জেরুশালেমে গেলেন; আর মন্দিরের মধ্যে ঢুকে যারা কেনা-বেচা করছিল সেইসব ব্যবসায়ীদের বাইরে বার করে দিলেন। তিনি পোদ্দারদের টেবিল এবং যারা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের আসন উল্টে দিলেন। 16 তিনি মন্দিরের মধ্যে দিয়ে কাউকে কোন জিনিস নিয়ে যেতে দিলেন না। 17 তিনি শিক্ষা দিয়ে তাদের বললেন, “এটা কি লেখা নেই ‘আমার মন্দিরকে সমগ্র জাতির উপাসনা গৃহ বলা হবে?’(B) কিন্তু তোমরা এটাকে ‘দস্যুদের আস্তানায় পরিণত করেছ।’(C)

18 প্রধান যাজকরা এবং ব্যবস্থার শিক্ষকরা এই কথা শুনে তাঁকে হত্যা করার রাস্তা খুঁজতে থাকল, কারণ তারা তাঁকে ভয় করত, যেহেতু তাঁর শিক্ষায় সমগ্র লোক আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল 19 সেই দিন সন্ধ্যে হলেই যীশু ও তাঁর শিষ্যরা মহানগরীর বাইরে গেলেন।

বিশ্বাসের শক্তি

(মথি 21:20-22)

20 পরের দিন সকালে যেতে যেতে তাঁরা দেখলেন, সেই ডুমুর গাছটি মূল থেকে শুকিয়ে গেছে। 21 পিতর আগের দিনের কথা মনে করে তাঁকে বললেন, “হে গুরু, দেখুন, আপনি যে ডুমুর গাছটিকে অভিশাপ দিয়েছিলেন সেটি শুকিয়ে গেছে।”

22 তখন যীশু বললেন, “ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখ! 23 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কেউ যদি ঐ পাহাড়কে বলে, ‘উপরে যাও এবং সমুদ্রে গিয়ে পড়,’ আর তার মনে কোন সন্দেহ না থাকে এবং সে যদি বিশ্বাস করে যে সে যা বলছে তা হবে, তাহলে ঈশ্বর তার জন্য তাই করবেন। 24 এইজন্য আমি তোমাদের বলি, তোমরা যা কিছুর জন্য প্রার্থনা কর, যদি বিশ্বাস কর যে, তোমরা তা পেয়েছ, তাহলে তোমাদের জন্য তা হবেই। 25 আর তোমরা যখনই প্রার্থনা করতে দাঁড়াও, যদি কারোর বিরুদ্ধে তোমাদের কোন কথা থাকে, তাকে ক্ষমা কর, যাতে তোমাদের স্বর্গের পিতাও তোমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন।” 26 [b]

যীশুর কর্ত্তৃত্বের বিষয়ে ইহুদী নেতাদের সন্দেহ

(মথি 21:23-27; লূক 20:1-8)

27 পরে তাঁরা জেরুশালেমে ফিরে এলেন। আর যখন তিনি মন্দিরের মধ্যে দিয়ে হাঁটছেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা, ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও বয়স্ক ইহুদী নেতারা তাঁর কাছে এলেন। 28 তাঁরা তাকে বললেন, “কোন ক্ষমতায় তুমি এসব করছ? এসব করতে তোমাকে কেই বা এই ক্ষমতা দিয়েছে?”

29 যীশু তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করছি, যদি তোমরা উত্তর দিতে পারো, তাহলে আমি তোমাদের বলব কোন ক্ষমতায় এসব করছি। 30 যোহন যে বাপ্তাইজ করেছিলেন তা করার অধিকার তিনি স্বর্গ থেকে পেয়েছিলেন না মানুষের কাছ থেকে পেয়েছিলেন? আমাকে বলো।”

31 তখন তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বললেন, “যদি আমরা বলি, ‘স্বর্গ থেকে,’ তাহলে বলবে ‘তবে তোমরা তাকে বিশ্বাস কর নি কেন?’ 32 কিন্তু যদি আমরা বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তাহলে জনসাধারণ আমাদের ওপর রেগে যাবে।” (তাঁরা জনসাধারণকে ভয় করতেন কারণ জনসাধারণের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে যোহন একজন ভাববাদী।)

33 তাই তাঁরা যীশুকে বললেন, “আমরা জানি না।”

তখন যীশু তাঁদের বললেন, “তবে আমিও কোন্ ক্ষমতায় এসব করছি, তা তোমাদের বলব না।”

যোহন 12

বন্ধুদের সঙ্গে যীশু বৈথনিয়াতে

(মথি 26:6-13; মার্ক 14:3-9)

12 নিস্তারপর্বের ছদিন আগে যীশু বৈথনিয়াতে গেলেন যেখানে লাসার বাস করতেন। এই মৃত লাসারকে যীশু বাঁচিয়েছিলেন। সেখানে তাঁরা যীশুর জন্য এক ভোজের আয়োজন করছিলেন। মার্থা খাবার পরিবেশন করছিলেন। যীশুর সঙ্গে যাঁরা খেতে বসেছিল তাদের মধ্যে লাসারও ছিলেন। তখন মরিয়ম বিশুদ্ধ জটামাংসী[a] থেকে তৈরী করা প্রায় আধ সের মতো দামী আতর নিয়ে এসে যীশুর পায়ে তা ঢেলে দিলেন, আর নিজের মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা দুখানি মুছিয়ে দিলেন। তখন সমস্ত ঘর আতরের সুগন্ধে ভরে গেল।

যিহূদা ঈষ্করিয়োত সেখানে ছিল, সে যীশুর শিষ্যদের মধ্যে একজন, যে তাঁকে পরে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে। মরিয়মের সেই কাজ যিহূদার ভাল লাগে নি। যিহূদা ঈষ্করিয়োত বলল, “এই আতর একজন শ্রমিকের সারা বছরের পারিশ্রমিক[b] ছিল। এটা বিক্রি করে সেই অর্থ কেন দরিদ্রদের দেওয়া হল না?” গরীবদের জন্য চিন্তা করতো বলে যে সে একথা বলেছিল তা নয়, সে ছিল চোর। তার কাছে টাকার থলি থাকত আর সে তার থেকে প্রায়ই টাকা চুরি করতো।

তখন যীশু বললেন, “ওকে থামিয়ে দিও না। আমাকে সমাধি দিনের জন্য প্রস্তুত করতে তাকে এই আতর রাখতে হয়েছে। তোমাদের মধ্যে গরীবরা সব সময়ই থাকবে, কিন্তু তোমরা সবসময় আমাকে পাবে না।”

লাসারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

বহু ইহুদী জানতে পারল যে যীশু বৈথনিয়াতে আছেন। তারা সেখানে যে কেবল যীশুর জন্য গেল তাই নয়, যে লাসারকে যীশু মৃত্যু থেকে জীবিত করে তুলেছেন তাকে দেখবার জন্যও তারা সেখানে গেল। 10 তাই প্রধান যাজকরা লাসারকে হত্যা করার চক্রান্ত করতে লাগলেন। 11 কারণ তারই জন্য বহু ইহুদী তাদের ছেড়ে যীশুর ওপর বিশ্বাস করতে লাগল।

যীশুর জেরুশালেমে প্রবেশ

(মথি 21:1-11; মার্ক 11:1-11; লূক 19:28-40)

12 যে বিপুল জনতা নিস্তারপর্বের জন্য এসেছিল, পরের দিন তারা শুনল যে যীশু জেরুশালেমে আসছেন। 13 তখন তারা খেজুর পাতা নিয়ে তাঁকে স্বাগত জানাতে বেরিয়ে পড়ল। তারা চিৎকার করে বলতে লাগল,

“‘তাঁর প্রশংসা কর!’
    ‘তাঁকে স্বাগত জানাও! যিনি প্রভুর নামে আসছেন, ঈশ্বর তাঁকে আশীর্বাদ করুন।’(A)

ইস্রায়েলের রাজাকে ঈশ্বর আশীর্বাদ করুন!”

14 যীশু একটা গাধাকে দেখতে পেয়ে তার ওপর বসলেন, যেমন শাস্ত্রে লেখা আছে:

15 “সিয়োন নগরী,[c] ভয় পেও না!
    দেখ, তোমাদের রাজা আসছেন।
    দেখ, তোমাদের রাজা বাচ্চা গাধায় চড়ে আসছেন।”(B)

16 এসবের অর্থ তাঁর শিষ্যরা প্রথমে বুঝতে পারেন নি। কিন্তু যীশু যখন মহিমায় উত্তোলিত হলেন, তখন তাঁদের মনে পড়ল যে শাস্ত্রে এগুলিই তাঁর সম্পর্কে লেখা হয়েছে এবং লোকেরা এসব তাঁর জন্য করেছিল।

17 যীশু যখন লাসারকে কবর থেকে বেরিয়ে আসতে বলেন, আর তাকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করে তোলেন, তখন যে সব লোক সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিল তারা সে বিষয়ে সকলকে বলতে লাগল। 18 এই কারণেই লোকেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এল, কারণ তারা শুনেছিল, যে তিনিই ঐ অলৌকিক চিহ্নকার্য করেছেন। 19 তখন ফরীশীরা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, “তোমরা দেখলে, আমাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হল। দেখ, আজ সারা জগৎ‌ তাঁরই পেছনে ছুটছে।”

যীশু জীবন ও মৃত্যুর বিষয়ে বললেন

20 নিস্তারপর্ব উপলক্ষে উপাসনা করার জন্য যারা জেরুশালেমে এসেছিল, তাদের মধ্যে কয়েকজন গ্রীকও ছিল। 21 তারা গালীলের বৈৎসৈদা থেকে যে ফিলিপ এসেছিলেন, তাঁর কাছে গেল, আর তাঁকে অনুরোধের সুরে বলল, “মহাশয় আমরা যীশুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই।” 22 ফিলিপ এসে একথা আন্দ্রিয়কে জানালেন। তখন আন্দ্রিয় ও ফিলিপ এসে যীশুকে তা বললেন।

23 যীশু তখন তাদের বললেন, “মানবপুত্রের মহিমান্বিত হওয়ার সময় হয়েছে। 24 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, গমের একটি দানা যদি মাটিতে পড়ে মরে না যায়, তবে তা একটি দানাই থেকে যায়। কিন্তু তা যদি মাটিতে পড়ে মরে যায়, তবে তার থেকে আরো অনেক দানা উৎপন্ন হয়। 25 যে ব্যক্তি নিজের জীবনকে ভালবাসে সে তা হারাবে; কিন্তু যে এই জগতে তার জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে, সে তা রাখবে। সে অনন্ত জীবন পাবে। 26 কেউ যদি আমার সেবা করে তবে অবশ্যই সে আমাকে অনুসরণ করবে। আর আমি যেখানে থাকি আমার সেবকও সেখানে থাকবে। কেউ যদি আমার সেবা করে তবে পিতা তাকে সম্মানিত করবেন।

যীশু তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে বললেন

27 “এখন আমার অন্তর খুব বিচলিত। আমি কি বলব, ‘পিতা, এই কষ্ট ভোগের মুহূর্ত থেকে আমায় রক্ষা কর?’ না, কারণ সেই সময় এসেছে এবং কষ্ট ভোগ করার উদ্দেশ্যেই আমি এসেছি। 28 পিতা, তোমার নামকে মহিমান্বিত কর!”

তখন স্বর্গ থেকে এক রব ভেসে এল, “আমি এঁকে মহিমান্বিত করেছি, আর আমি আবার তাঁকে মহিমান্বিত করব।”

29 যে লোকেরা সেখানে ভীড় করেছিল, তারা সেই রব শুনে বলতে লাগল, এটা তো মেঘ গর্জন হল।

আবার কেউ কেউ বলল, “একজন স্বর্গদূত ওঁর সঙ্গে কথা বললেন।”

30 এর উত্তরে যীশু বললেন, “আমার জন্য নয়, তোমাদের জন্যই ঐ রব। 31 এখন জগতের বিচারের সময়। এই জগতের শাসককে দূরে নিক্ষেপ করা হবে। 32 আর যখন আমাকে মাটি থেকে উঁচুতে তোলা হবে, তখন আমি আমার কাছে সকলকেই টেনে আনব।” 33 যীশুর কিভাবে মৃত্যু হতে যাচ্ছে, তাই জানাতে যীশু এই কথা বললেন।

34 এর উত্তরে লোকেরা তাঁকে বলল, “আমরা মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা থেকে শুনেছি যে খ্রীষ্ট চিরকাল বাঁচবেন। তাহলে আপনি কিভাবে বলছেন যে, ‘মানবপুত্রকে উঁচুতে তোলা হবে’? এই ‘মানবপুত্র’ তবে কে?”

35 তখন যীশু তাদের বললেন, “আর সামান্য কিছু সময়ের জন্য তোমাদের মধ্যে আলো থাকবে। যতক্ষণ তোমরা আলো পাচ্ছ, তারই মধ্য দিয়ে চল। তাহলে অন্ধকার তোমাদের আচ্ছন্ন করবে না। যে লোক অন্ধকারে চলে সে কোথায় যাচ্ছে তা জানে না। 36 যতক্ষণ তোমাদের কাছে আলো আছে, সেই আলোতে বিশ্বাস কর, তাতে তোমরা আলোর সন্তান হবে।” এই কথা বলে যীশু সেখান থেকে চলে গেলেন ও তাদের কাছ থেকে নিজেকে গোপন রাখলেন।

ইহুদীরা যীশুর ওপর আস্থা রাখতে অস্বীকার করল

37 যদিও যীশু তাদের চোখের সামনেই প্রচুর অলৌকিক চিহ্নকার্য করলেন, তবু তারা তাঁকে বিশ্বাস করল না। 38 ভাববাদী যিশাইয় বলেছিলেন:

“প্রভু, আমাদের এই বার্তা কে বিশ্বাস করেছে?
    আর কার কাছেই বা প্রভুর পরাক্রম প্রকাশ পেয়েছে?”(C)

39 এই কারণেই তারা বিশ্বাস করতে পারে নি, কারণ যিশাইয় আবার বলেছেন,

40 “ঈশ্বর তাদের চোখ অন্ধ করে দিয়েছেন।
    ঈশ্বর তাদের অন্তর কঠিন করেছেন
যাতে তারা চোখ দিয়ে দেখতে না পায়, অন্তর দিয়ে বুঝতে না পারে
এবং ভাল হবার জন্য আমার কাছে না আসে।”(D)

41 যিশাইয় একথা বলেছিলেন, কারণ তিনি যীশুর মহিমা দেখেছিলেন আর তিনি তাঁর বিষয়েই বলেছিলেন।

42 অনেকে, এমন কি ইহুদী নেতাদের মধ্যেও অনেকে তাঁর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করল; কিন্তু তারা ফরীশীদের ভয়ে প্রকাশ্যে তা স্বীকার করল না, পাছে তারা ইহুদীদের সমাজ-গৃহ থেকে বহিষ্কৃত হয়। 43 কারণ তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া প্রশংসা অপেক্ষা মানুষের কাছ থেকে পাওয়া প্রশংসা বেশী ভালবাসত।

যীশুর শিক্ষাই মানুষের বিচার করবে

44 যীশু চিৎকার করে বললেন, “যে আমাকে বিশ্বাস করে সে, প্রকৃতপক্ষে যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তাঁকেই বিশ্বাস করে। 45 আর যে আমায় দেখে সে, যিনি আমায় পাঠিয়েছেন, তাঁকেই দেখতে পায়। 46 আমি এ জগতে আলো রূপে এসেছি যাতে যে আমায় বিশ্বাস করে তাকে যেন অন্ধকারে থাকতে না হয়।

47 “আর যে কেউ আমার কথা শোনে অথচ তা মেনে চলে না, তার বিচার করতে আমি চাই না, কারণ আমি জগতের বিচার করতে আসিনি, এসেছি জগতকে রক্ষা করতে। 48 যে কেউ আমাকে অগ্রাহ্য করে ও আমার কথা গ্রহণ না করে, তার বিচার করার জন্য একজন বিচারক আছেন। আমি যে বার্তা দিয়েছি শেষ দিনে সেই বার্তাই তার বিচার করবে। 49 কারণ আমি নিজে থেকে একথা বলছি না, বরং পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি আমাকে কি বলতে হবে বা কি শিক্ষা দিতে হবে তা আদেশ করেছেন। 50 আমি জানি যে তাঁর আদেশ থেকেই অনন্ত জীবন আসে। আমি সেই সকল কথা বলি যা পিতা আমায় বলেছেন।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International