Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
লূক 17:11-18:14

ধন্যবাদ দাও

11 যীশু জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছিলেন, যাবার পথে তিনি গালীল ও শমরীয়ার মাঝখান দিয়ে গেলেন। 12 তাঁরা যখন একটি গ্রামে ঢুকছেন, এমন সময় দশ জন কুষ্ঠরোগী তাঁর সামনে পড়ল, তারা একটু দূরে দাঁড়াল, 13 ও চিৎকার করে বলল, “প্রভু যীশু! আমাদের দয়া করুন!”

14 তাদের দেখে যীশু বললেন, “যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখাও।”

পথে যেতে যেতে তারা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল; 15 কিন্তু তাদের মধ্যে একজন যখন দেখল যে সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে তখন যীশুর কাছে ফিরে এসে খুব জোর গলায় ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল। 16 সে যীশুর সামনে উপুড় হয়ে পড়ে তাঁকে ধন্যবাদ জানাল। (এই লোকটি ছিল অইহুদী শমরীয়।) 17 এই দেখে যীশু তাকে বললেন, “তোমাদের মধ্যে দশ জনই কি আরোগ্য লাভ করেনি? তবে বাকী নজন কোথায়? 18 ঈশ্বরের প্রশংসা করার জন্য এই ভিন্ন জাতের লোকটি ছাড়া আর কেউ কি ফিরে আসেনি?” 19 এরপর যীশু সেই লোকটিকে বললেন, “ওঠ, যাও, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করে তুলেছে।”

ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের অন্তরে

(মথি 24:23-28, 37-41)

20 এক সময় ফরীশীরা যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “ঈশ্বরের রাজ্য কখন আসবে?”

যীশু তাদের বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য এমনভাবে আসে, যা চোখে দেখা যায় না। 21 লোকেরা বলবে না যে, ‘এই যে এখানে ঈশ্বরের রাজ্য’ বা ‘ওই যে ওখানে ঈশ্বরের রাজ্য।’ কারণ ঈশ্বরের রাজ্য তো তোমাদের মাঝেই আছে।”

22 কিন্তু অনুগামীদের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, “সময় আসবে, যখন মানবপুত্রের রাজত্বের সময়ের একটা দিন তোমরা দেখতে চাইবে, কিন্তু তোমরা তা দেখতে পাবে না। 23 লোকেরা তোমাদের বলবে, ‘দেখ, তা ওখানে! বা দেখ তা এখানে!’ তাদের কথা শুনে যেও না, বা তাদের পেছনে দৌড়িও না।

24 “কারণ বিদ্যুৎ চমকালে আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যেমন আলো হয়ে যায়, মানবপুত্রের দিনে তিনি সেইরকম হবেন। 25 কিন্তু প্রথমে তাঁকে অনেক দুঃখভোগ করতে হবে, তাছাড়া এই যুগের লোকেরা তাঁকে অগ্রাহ্য করবে।

26 “নোহের সময়ে যেমন হয়েছিল, মানবপুত্রের সময়েও তেমনি হবে। 27 যে পর্যন্ত না নোহ জাহাজে উঠলেন আর বন্যা এসে লোকদের ধ্বংস করল, সেই সময় পর্যন্ত লোকেরা খাওয়া দাওয়া করছিল, বিয়ে করছিল ও বিয়ে দিচ্ছিল।

28 “লোটের সময়েও সেই একই রকম হয়েছিল। তারা খাওয়া-দাওয়া করছিল, কেনা-বেচা, চাষ-বাস, গৃহ নির্মাণ সবই করত। 29 কিন্তু লোট যে দিন সদোম থেকে বেরিয়ে এলেন, তারপরেই আকাশ থেকে আগুন ও গন্ধক বর্ষিত হয়ে সেখানকার সব লোককে ধ্বংস করে দিল। 30 যে দিন মানবপুত্র প্রকাশিত হবেন, সেদিন এই রকমই হবে।

31 “সেই দিন কেউ যদি ছাদের উপর থাকে, আর তার জিনিস পত্র যদি ঘরের মধ্যে থাকে, তবে সে তা নেবার জন্য যেন নীচে না নামে। তেমনি যদি কেউ ক্ষেতের কাজে থাকে, তবে সে কোন কিছু নিতে ফিরে না আসুক। 32 লোটের স্ত্রীর[a] কথা যেন মনে থাকে।

33 “যে তার জীবন নিরাপদ রাখতে চায়, সে তা খোয়াবে; আর যে তার জীবন হারায়, সেই তা বাঁচিয়ে রাখবে। 34 আমি তোমাদের বলছি, সেই রাত্রে একই বিছানায় দুজন শুয়ে থাকবে, তাদের মধ্যে একজনকে তুলে নেওয়া হবে আর অন্যজন পড়ে থাকবে। 35 দুজন স্ত্রীলোক একসঙ্গে যাঁতাতে শস্য পিষবে, একজনকে তুলে নেওয়া হবে আর অন্য জন পড়ে থাকবে।” 36 [b]

37 তখন অনুগামীরা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “প্রভু, কোথায় এমন হবে?”

যীশু তাদের বললেন, “যেখানে শব, সেখানেই শকুন এসে জড়ো হবে।”

ঈশ্বর তাঁর লোকদের উত্তর দেবেন

18 নিরাশ না হয়ে তাদের যে সব সময় প্রার্থনা করা উচিত, তা বোঝাতে গিয়ে যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি দিলেন, তিনি বললেন, “কোন এক শহরে একজন বিচারক ছিলেন। তিনি ঈশ্বরকে ভয় করতেন না, আবার মানুষকেও গ্রাহ্য করতেন না। সেই শহরে একজন বিধবা ছিল। সে বার বার সেই বিচারকের কাছে এসে বলত, ‘আপনাকে দেখতে হবে যেন আমার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমি ন্যায় বিচার পাই!’ কিছু দিন ধরে সেই বিচারক তার কোন কথাই শুনতে চাইলেন না। কিন্তু এক সময় তিনি মনে মনে বললেন, ‘যদিও আমি ঈশ্বরকে ভয় করি না আর মানুষকে মানি না, তবু এই বিধবা যখন আমায় এত বিরক্ত করছে তখন আমি দেখব সে যেন ন্যায় বিচার পায়, তাহলে সে আর বার বার এসে আমাকে জ্বালাতন করবে না।’”

এরপর প্রভু বললেন, “লক্ষ্য কর! ঐ অধার্মিক বিচারকর্তা কি বলল। তাহলে ঈশ্বর কি তাঁর মনোনীত লোকেরা, যাঁরা দিন-রাত তাঁকে ডাকছে, তারা যেন ন্যায় বিচার পায় তা দেখবেন না? তিনি কি তাদের সাহায্য করতে অযথা দেরী করবেন? আমি তোমাদের বলছি, তিনি তাদের পক্ষে ন্যায় বিচার করবেনই আর তা তাড়াতাড়িই করবেন। যাইহোক্, মানবপুত্র যখন আসবেন, তখন কি তিনি এই পৃথিবীতে বিশ্বাস দেখতে পাবেন?”

ঈশ্বরের চোখে ধার্মিকহওয়া

যাঁরা নিজেদের ধার্মিক মনে করত আর অন্যকে তুচ্ছ করত, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এই দৃষ্টান্তটি দিলেন, 10 “দুজন লোক মন্দিরে প্রার্থনা করার জন্য গেল; তাদের মধ্যে একজন ফরীশী আর অন্য জন কর-আদায়কারী। 11 ফরীশী দাঁড়িয়ে নিজের সম্বন্ধে এইভাবে প্রার্থনা করতে লাগল, ‘যে ঈশ্বর, আমি তোমায় ধন্যবাদ দিচ্ছি যে আমি অন্য সব লোকদের মতো নই; দস্যু, প্রতারক, ব্যভিচারী অথবা এই কর-আদায়কারীর মতো নই। 12 আমি সপ্তাহে দুদিন উপোস করি, আর আমার আয়ের দশ ভাগের একভাগ দান করি।’

13 “কিন্তু সেই কর-আদায়কারী দাঁড়িয়ে স্বর্গের দিকে মুখ তুলে তাকাতেও সাহস করল না, বরং সে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বলল, ‘হে ঈশ্বর, আমি পাপী! আমার প্রতি দয়া কর!’ 14 আমি তোমাদের বলছি, এই কর-আদায়কারী ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়ে বাড়ি চলে গেল কিন্তু ঐ ফরীশী নয়। যে কেউ নিজেকে বড় করে তাকে ছোট করা হবে; আর যে নিজেকে ছোট করে তাকে বড় করা হবে।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International