Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
মথি 12:22-50

ঈশ্বর প্রদত্ত যীশুর পরাক্রম

(মার্ক 3:20-30; লূক 11:14-23; 12:10)

22 সেই সময় লোকেরা ভূতে পাওয়া একজন লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল। লোকটা অন্ধ ও বোবা ছিল। যীশু তাকে সুস্থ করলেন: তাতে সে দেখতে পেল ও কথা বলতে পারল। 23 এই দেখে লোকেরা বিস্মিত হয়ে বলল, “ইনিই কি দায়ূদের সন্তান?”

24 ফরীশীরা একথা শুনে বললেন, “এ তো ভূতদের শাসনকর্তা বেল্‌সবূলের[a] শক্তিতে ভূতদের তাড়ায়।”

25 যীশু ফরীশীদের মনের কথা বুঝতে পেরে তাদের বললেন, “বিবাদে বিভক্ত যে কোন রাজ্যই ধ্বংস হয়ে যায়। যে শহর বা পরিবার নিজেদের মধ্যে বিবাদে বিভক্ত তা টিকে থাকতে পারে না। 26 শয়তান যদি ভূতকে তাড়ায় তবে সে নিজেই নিজের বিরুদ্ধে ভাগ হয়ে গেলে তার রাজ্য কি করে টিকে থাকবে? 27 আমি যদি বেল্‌সবূলের শক্তিতে ভূত তাড়াই, তবে তোমাদের লোকেরা কার শক্তিতে তাদের তাড়ায়? সুতরাং তোমাদের নিজেদের অনুগামীরাই প্রমাণ করবে যে তোমরা ভুল বলছ। 28 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের আত্মার শক্তিতে ভূতদের তাড়াই, তবে ঈশ্বরের রাজ্য তো তোমাদের কাছে এসে গেছে। 29 আবার বলছি, কোন শক্তিমান লোককে আগে না বেঁধে কেউ কি তার বাড়িতে ঢুকে তার সবকিছু লুট করতে পারে? তাকে বাঁধবার পর তবেই তো তার বাড়ির সবকিছু লুট করতে পারবে। 30 যে আমার পক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষে, যে আমার সঙ্গে কুড়ায়় না, সে তা ছড়াচ্ছে।

31 “তাই আমি তোমাদের বলছি, মানুষের সব পাপ এবং ঈশ্বর-নিন্দার ক্ষমা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কোন অসম্মানজনক কথাবার্তার ক্ষমা হবে না। 32 মানবপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ যদি কোন কথা বলে, তাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা বললে তার ক্ষমা নেই, এযুগে বা আগামী যুগে কখনই না।

কাজ দেখেই লোককে জানা যায়

(লূক 6:43-45)

33 “ভাল ফল পেতে হলে ভাল গাছ থাকা দরকার, কিন্তু খারাপ গাছ থাকলে তোমরা খারাপ ফলই পাবে, কারণ ফল দেখেই গাছ চেনা যায়। 34 তোমরা কালসাপ! তোমাদের মতো দুষ্ট লোকেরা কি করে ভাল কথা বলতে পারে? মানুষের অন্তরে যা আছে, মুখ দিয়ে তো সে কথাই বার হয়। 35 ভাল লোক তার অন্তরে ভাল কথাই সঞ্চিত রাখে, আর ভাল কথাই বলে; কিন্তু যার অন্তরে মন্দ বিষয় থাকে, সে তার মুখ দিয়ে মন্দ কথাই বলে। 36 আমি তোমাদের বলছি, লোকে যত বেহিসেবী কথা বলে, বিচারের দিনে তার প্রতিটি কথার হিসাব তাদের দিতে হবে। 37 তোমাদের কথার সুত্র ধরেই তোমাদের নির্দোষ বলা হবে, অথবা তোমাদের কথার ওপর ভিত্তি করেই তোমাদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে।”

ইহুদীরা যীশুর কাছে প্রমাণ চাইলেন

(মার্ক 8:11-12; লূক 11:29-32)

38 এরপর কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুর কাছে এসে বললেন, “হে গুরু, আমরা আপনার কাছ থেকে কোন চিহ্ন বা অলৌকিক কাজ দেখতে চাই।”

39 যীশু তাদের বললেন, “এ যুগের দুষ্ট ও পাপী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে; কিন্তু ভাববাদী যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্নই তাদের দেখান হবে না। 40 যোনা যেমন সেই বিরাট মাছের পেটে তিন দিন তিন রাত ছিলেন, তেমনই মানবপুত্র তিন দিন তিন রাত পৃথিবীর অন্তঃস্থলে কাটাবেন। 41 বিচারের দিনে নীনবীয় লোকেরা এই কালের লোকদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়িয়ে তাদের দোষী করবে, কারণ নীনবীয় লোকেরা যোনার প্রচারের ফলে তাদের মন ফেরাল। আর দেখ, যোনার চেয়ে এখানে আরও একজন মহান আছেন।

42 “বিচারের দিনে দক্ষিণ দেশের রাণী উঠে এই যুগের লোকদের দোষী সাব্যস্ত করবে, কারণ রাজা শলোমনের জ্ঞানের কথা শোনবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন, আর দেখ শলোমনের চেয়ে মহান একজন এখানে আছেন।

এই যুগের লোকেরা মন্দে পরিপূর্ণ

(লূক 11:24-26)

43 “যখন কোন দুষ্ট আত্মা কোন মানুষের মধ্য থেকে বার হয়ে যায়, তখন সে জলবিহীন শুকনো অঞ্চলে বিশ্রাম পাবার জন্য ঘোরাঘুরি করতে থাকে কিন্তু তা পায় না। 44 তারপর সে বলে, ‘আমি যে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি, সেখানে ফিরে যাব।’ আর ফিরে এসে দেখে সেই ঘর খালি পড়ে আছে; পরিষ্কার ও সাজানো আছে। 45 পরে সে গিয়ে তার থেকে আরো খারাপ অন্য সাতটা দুষ্ট আত্মাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসে। তারপর তারা সকলে সেখানে গিয়ে বাস করতে থাকে, তাতে সেই লোকটার প্রথম অবস্থা থেকে শেষ অবস্থা আরো খারাপ হয়ে ওঠে। এই যুগের মন্দ লোকদের অবস্থাও সেরকম হবে।”

যীশুর অনুগামীরাই তাঁর পরিবার

(মার্ক 3:31-35; লূক 8:19-21)

46 যীশু যখন সমবেত লোকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তাঁর মা ও ভাইরা এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছায় বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। 47 সেই সময় একজন লোক তাঁকে বলল, “দেখুন, আপনার মা ও ভাইরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা আপনার সঙ্গে কথা বলতে চান।”

48 যীশু তখন তাকে বললেন, “কে আমার মা? কারাই বা আমার ভাই?” 49 এরপর তিনি তাঁর অনুগামীদের দেখিয়ে বললেন, “দেখ! এরাই আমার মা, আমার ভাই। 50 হ্যাঁ, যে কেউ আমার স্বর্গের পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার মা, ভাই ও বোন।”

লূক 11

প্রার্থনার বিষয়ে যীশুর শিক্ষা

(মথি 6:9-15)

11 যীশু এক জায়গায় প্রার্থনা করছিলেন। প্রার্থনা শেষ হলে পর তাঁর একজন শিষ্য এসে তাঁকে বললেন, “প্রভু, যোহন যেমন তাঁর শিষ্যদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন, আপনিও তেমনি আমাদের প্রার্থনা করতে শেখান।”

তখন যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা যখন প্রার্থনা কর তখন বলো,

‘পিতা, তোমার পবিত্র নামের সমাদর হোক্,
তোমার রাজ্য আসুক।
দিনের আহার তুমি প্রতিদিন আমাদের দাও।
আমাদের পাপ ক্ষমা কর,
    কারণ আমাদের বিরুদ্ধে যারা অন্যায় করেছে, আমরাও তাদের ক্ষমা করেছি,
আর আমাদের পরীক্ষায় পড়তে দিও না।’”

অনবরত যাঞ্চা কর

(মথি 7:7-11)

5-6 এরপর যীশু তাঁদের বললেন, “ধর, তোমাদের কারো একজন বন্ধু আছে। আর সে মাঝরাতে তার কাছে গিয়ে বলল, ‘বন্ধু আমায় খান তিনেক রুটি ধার দাও, কারণ আমার এক বন্ধু যাত্রাপথে এই মাত্র আমার ঘরে এসেছে, তাকে খেতে দেবার মতো ঘরে কিছু নেই।’ সেই লোক যদি ঘরের ভেতর থেকে উত্তর দেয়, ‘দেখ, আমায় বিরক্ত করো না! এখন দরজা বন্ধ আছে আর ছেলেমেয়েদের নিয়ে আমি শুয়ে পড়েছি। আমি এখন তোমাকে কিছু দেবার জন্য উঠতে পারব না।’ আমি তোমাদের বলছি, সে যদি বন্ধু হিসাবে উঠে তাকে কিছু না দেয়, তবু লোকটি বার বার করে অনুরোধ করছে বলে সে উঠবে ও তার যা দরকার তা তাকে দেবে। তাই আমি তোমাদের বলছি, তোমরা চাও, তোমাদের দেওয়া হবে, খোঁজ তোমরা পাবে। দরজায় ধাক্কা দাও, তোমাদের জন্য দরজা খোলা হবে। 10 কারণ যারা চায়, তারা পায়। যারা খোঁজ করে, তারা সন্ধান পায় আর যারা দরজায় ধাক্কা দেয়, তাদের জন্য দরজা খোলা হয়। 11 তোমাদের মধ্যে এমন বাবা কি কেউ আছে যার ছেলে মাছ চাইলে সে তাকে মাছের বদলে সাপ দেবে? 12 অথবা ছেলে যদি ডিম চায় তবে তাকে কাঁকড়াবিছা দেবে? 13 তাই তোমরা যদি মন্দ প্রকৃতির হয়েও তোমাদের ছেলেমেয়েদের ভাল ভাল জিনিস দিতে জান, তবে স্বর্গের পিতার কাছে যারা চায়, তিনি যে তাদের পবিত্র আত্মা দেবেন, এটা কত না নিশ্চয়।”

ঈশ্বরই যীশুর ক্ষমতার উৎস

(মথি 12:22-30; মার্ক 3:20-27)

14 একসময় যীশু একজনের মধ্য থেকে একটা বোবা ভূতকে বার করে দিলেন। সেই ভূত বার হয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে ঐ লোকটি কথা বলতে শুরু করল। এই দেখে লোকেরা অবাক হয়ে গেল। 15 কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, “ভূতদের রাজা বেলস্বূলের সাহায্যেই ও ভূত তাড়ায়!”

16 আবার কেউ কেউ যীশুকে পরীক্ষা করবার জন্য আকাশ থেকে কোন চিহ্ন দেখাতে বলল। 17 কিন্তু তিনি তাদের মনের কথা জানতে পেরে বললেন, “যে রাজ্য আত্মকলহে নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়, সেই রাজ্য ধ্বংস হয়। আবার কোন পরিবার যদি নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে, তবে সেই পরিবারও ভেঙে যায়। 18 তাই শয়তানও যদি নিজের বিরুদ্ধে নিজে দাঁড়ায় তবে কেমন করে তার রাজ্য টিকবে? আমি তোমাদের একথা জিজ্ঞেস করছি কারণ তোমরা বলছ আমি বেলস্বূলের সাহায্যে ভূত ছাড়াই। 19 কিন্তু আমি যদি বেলস্বূলের সাহায্যে ভূত ছাড়াই, তবে তোমাদের অনুগামীরা কার সাহায্যে তা ছাড়ায়? তাই তারাই তোমাদের বিচার করুক। 20 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের শক্তিতে ভূতদের ছাড়াই, তাহলে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে ইতিমধ্যেই এসে পড়েছে।

21 “যখন কোন শক্তিশালী লোক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার ঘর পাহারা দেয়, তখন তার ধনসম্পদ নিরাপদে থাকে। 22 কিন্তু তার থেকে পরাক্রান্ত কোন লোক যখন তাকে আক্রমণ করে পরাস্ত করে, তখন নিরাপদে থাকার জন্য যে অস্ত্রশস্ত্রের ওপর সে নির্ভর করেছিল, অন্য শক্তিশালী লোকটি সেগুলো কেড়ে নেয় আর ঐ লোকটির ঘরের সব জিনিসপত্র লুটে নেয়।

23 “যে আমার পক্ষে নয়, সে আমার বিপক্ষ। যে আমার সঙ্গে কুড়ায়না, সে ছড়ায়়।

শূন্য ঘর

(মথি 12:43-45)

24 “কোন অশুচি আত্মা যখন কোন লোকের মধ্য থেকে বাইরে আসে, তখন সে বিশ্রামের খোঁজে নির্জন স্থানে ঘোরাফেরা করে আর বিশ্রাম না পেয়ে বলে, ‘যে ঘর থেকে আমি বাইরে এসেছি, সেখানেই ফিরে যাব।’ 25 কিন্তু সেখানে ফিরে গিয়ে সে যখন দেখে সেই ঘরটি পরিষ্কার করা হয়েছে আর সাজানো-গোছানো আছে, 26 তখন সে গিয়ে তার থেকে আরো দুষ্ট সাতটা আত্মাকে নিয়ে এসে ঐ ঘরে বসবাস করতে থাকে। তাই ঐ লোকের প্রথম দশা থেকে শেষ দশা আরো ভয়ঙ্কর হয়।”

প্রকৃত সুখী লোক

27 যীশু যখন এইসব কথা বলছিলেন, তখন সেই ভীড়ের মধ্য থেকে একজন স্ত্রীলোক চিৎকার করে বলে উঠল, “ধন্য সেই মা, যিনি আপনাকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন, আর যাঁর স্তন আপনি পান করেছিলেন।”

28 কিন্তু যীশু বললেন, “এর থেকেও ধন্য তারা যারা ঈশ্বরের শিক্ষা শোনে ও তা পালন করে।”

চিহ্নের অন্বেষণ

(মথি 12:38-42; মার্ক 8:12)

29 এরপর যখন ভীড় বাড়তে লাগল, তখন যীশু বললেন, “এ যুগের লোকেরা খুবই দুষ্ট, তারা কেবল অলৌকিক চিহ্নের খোঁজ করে। কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া তাদের আর কোন চিহ্ন দেখানো হবে না। 30 যোনা যেমন নীনবীয় লোকদের কাছে চিহ্নস্বরূপ হয়েছিলেন, তেমনি এই যুগের লোকদের কাছে মানবপুত্র হবেন।

31 “দক্ষিণ দেশের রাণী[a] বিচার দিনে উঠে এই যুগের লোকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন ও তাদের দোষী সাব্যস্ত করবেন। কারণ শলোমনের জ্ঞানের কথা শোনার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন, আর শলোমন এর থেকে মহান একজন এখন এখানে আছেন।

32 “বিচার দিনে নীনবীয় লোকেরা এই যুগের লোকদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে, তারা এদের ওপর দোষারোপ করবে, কারণ তারা যোনার প্রচার শুনে অনুশোচনা করেছিল, আর এখন যোনার থেকে মহান একজন এখানে আছেন।

জগতের আলোস্বরূপ হও

(মথি 5:15; 6:22-23)

33 “প্রদীপ জ্বেলে কেউ আড়ালে রাখে না বা ধামা চাপা দিয়ে রাখে না বরং তা বাতিদানের ওপরেই রাখে, যেন যারা ঘরে আসে, তারা আলো দেখতে পায়। 34 তোমার চোখ যদি সুস্থ থাকে, তবে তোমার সমস্ত দেহটি দীপ্তিময় হবে; কিন্তু তা যদি মন্দ হয় তবে তোমার দেহ অন্ধকারময় হবে। 35 তাই সাবধান, তোমার মধ্যে যে আলো আছে তা যেন অন্ধকার না হয়। 36 তোমার সারা দেহ যদি আলোকময় হয়, তার মধ্যে যদি এতটুকু অন্ধকার না থাকে, তবে তা সম্পূর্ণ আলোকিত হবে, ঠিক যেমন বাতির আলো তোমার ওপর পড়ে তোমায় আলোকিত করে তোলে।”

যীশু ফরীশীদের সমালোচনা করলেন

(মথি 23:1-36; মার্ক 12:38-40; লূক 20:45-47)

37 যীশু এই কথা শেষ করলে একজন ফরীশী তার বাড়িতে যীশুকে খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করল। তাই তিনি তার বাড়িতে গিয়ে খাবার আসনে বসলেন। 38 কিন্তু সেই ফরীশী দেখল যে খাওয়ার আগে প্রথা মতো যীশু হাত ধুলেন না। 39 প্রভু তাকে বললেন, “তোমরা ফরীশীরা থালা বাটির বাইরেটা পরিষ্কার কর, কিন্তু ভেতরে তোমরা দুষ্টতা ও লোভে ভরা। 40 তোমরা মূর্খের দল! তোমরা কি জান না যিনি বাইরেটা করেছেন তিনি ভেতরটাও করেছেন? 41 তাই তোমাদের থালা বাটির ভেতরে যা কিছু আছে তা দরিদ্রদের বিলিয়ে দাও, তাহলে সবকিছুই তোমাদের কাছে সম্পূর্ণ শুচি হয়ে যাবে।

42 “কিন্তু হায়, ফরীশীরা ধিক্ তোমাদের কারণ তোমরা পুদিনা, ধনে ও বাগানের অন্যান্য শাকের দশমাংশ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে থাক, কিন্তু ন্যায়বিচার ও ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের বিষয়টি অবহেলা কর। কিন্তু প্রথম বিষয়গুলির সঙ্গে সঙ্গে শেষেরগুলিও তোমাদের জীবনে পালন করা কর্তব্য।

43 “ধিক্ ফরীশীরা! তোমরা সমাজ-গৃহে সম্মানিত আসন আর হাটে বাজারে সকলের সশ্রদ্ধ অভিবাদন পেতে কত না ভালবাস। 44 ধিক্ তোমাদের! তোমরা মাঠের মাঝে মিশে থাকা কবরের মতো, লোকেরা না জেনে যার ওপর দিয়ে হেঁটে যায়।”

45 একজন ব্যবস্থার শিক্ষক এর উত্তরে যীশুকে বললেন, “গুরু, আপনি এসব যা বললেন, তার দ্বারা আমাদেরও অপমান করলেন।”

46 তখন যীশু তাকে বললেন, “হে ব্যবস্থার শিক্ষকরা, ধিক্ তোমাদের, তোমরা লোকদের ওপর এমন ভারী বোঝা চাপিয়ে দাও যা তাদের পক্ষে গ্রহণ করা অসম্ভব; আর তোমরা নিজেরা সেই ভার বইবার জন্য সাহায্য করতে তাতে একটা আঙুল পর্যন্ত ছোঁয়াও না। 47 ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা ভাববাদীদের সমাধিগুহা গেঁথে থাকো; আর এইসব ভাববাদীদের তোমাদের পূর্বপুরুষরাই হত্যা করেছিল। 48 তাই এই কাজ করে তোমরা এই সাক্ষ্যই দিচ্ছ যে তোমাদের পূর্বপুরুষরা যে কাজ করেছিল তা তোমরা ঠিক বলে মেনে নিচ্ছ। কারণ তারা ওদের হত্যা করেছিল আর তোমরা ওদের সমাধি গুহা রচনা করছ। 49 এই কারণেই ঈশ্বরের প্রজ্ঞা বলছে, ‘আমি তাদের কাছে যে ভাববাদী ও প্রেরিতদের পাঠাবো, তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে তারা হত্যা করবে, কাউকে বা নির্যাতন করবে।’

50 “সেই জন্যই জগৎ‌ সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যত ভাববাদী হত্যা করা হয়েছে, তাদের সকলের হত্যার জন্য এই কালের লোকদের শাস্তি পেতে হবে। 51 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, হেবলের রক্তপাত থেকে আরম্ভ করে যে সখরিয়কে যজ্ঞবেদী ও মন্দিরের মধ্যবর্তী স্থানে হত্যা করা হয়েছিল, সেই সখরিয়ের হত্যা পর্যন্ত সমস্ত রক্তপাতের দায়ে দায়ী হবে একালের লোকেরা।

52 “ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষকরা কারণ তোমরা জ্ঞানের চাবিটি ধরে আছ। তোমরা নিজেরাও প্রবেশ করনি আর যারা প্রবেশ করার চেষ্টা করছে তাদেরও বাধা দিচ্ছ।”

53 তিনি যখন সেই জায়গা ছেড়ে চলে গেলেন, তখন ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা তাঁর বিরুদ্ধে ভীষণভাবে শত্রুতা করতে আরম্ভ করল এবং পরে তাঁকে নানাভাবে প্রশ্ন করতে থাকল। 54 তারা সুযোগের অপেক্ষা করতে লাগল যেন যীশু ভুল কিছু করলে তাই দিয়ে তাঁকে ধরতে পারে।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International