Chronological
18 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন: 2 “তোমরা কেন ইস্রায়েল দেশটি সম্বন্ধে এই প্রবাদ বাক্য বল? তোমরা বলে থাক:
‘পিতামাতারা টক দ্রাক্ষা ফল খেয়েছিল,
কিন্তু তার ফলে সন্তানদের দাঁত টকেছে।’”
3 কিন্তু প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য যে ইস্রায়েলের লোকরা আর এই প্রবাদ বাক্যকে সত্য বলে মানবে না। 4 প্রত্যেক জনের সঙ্গে আমি একই রকম ব্যবহার করব। সে ব্যক্তি পিতা হোক্ অথবা পুত্রই হোক্ না কেন। যে ব্যক্তি পাপ করে সে মারা যাবে।
5 “যদি কেউ সৎ হয় তবে সে বাঁচবে। সেই ভাল লোক বলতে তাকেই বোঝাবে যে প্রত্যেক ব্যক্তির সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করবে। 6 প্রতিমাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত খাদ্যের ভাগ পাবার জন্য সে পর্বতে যায় না। ইস্রায়েলের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর কাছে সে প্রার্থনা করে না। প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে সে ব্যভিচার করে না। মাসিকের সময় সে তার স্ত্রীর সঙ্গে যৌন কাজে লিপ্ত হয় না। 7 সেই লোক অপরের অবস্থার সুযোগ নেয় না। কেউ ধার চাইলে সে বন্ধক নিয়ে তাকে ধার দেয়। আর ধার শোধ করলে তাকে সেই বন্ধক ফিরিয়ে দেয়। সে ক্ষুধার্তকে খাদ্য দেয়। বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেয়। 8 সে কাউকে টাকা ধার দিলে সুদ নেয় না। সেই সৎ লোক খল হতে অস্বীকার করে। প্রতিটি ব্যক্তির সঙ্গে সে ন্যায্য আচরণ করে। ন্যায্যভাবে ঝগড়াঝাঁটি মিটিয়ে দেবার জন্য লোকে তার উপর নির্ভর করতে পারে। 9 সে আমার বিধিগুলি পালন করে। আমার সিদ্ধান্তগুলি সে চিন্তা করবে এবং ন্যায্য ও নির্ভরযোগ্য হতে শিক্ষা করবে। সে সৎ লোক, তাই সে বাঁচবে।” প্রভু, আমার সদাপ্রভু এইগুলো বলেছেন।
10 “কিন্তু সেই সৎ লোকের কোন পুত্র থাকতে পারে যে ঐ সৎ কাজের কোনটিই করেনি। সে চোর বা নরঘাতক হতে পারে। 11 অথবা সেই পুত্র এই মন্দ কাজগুলির কোন একটি করতে পারে যেমন মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত খাদ্য খেতে পর্বতে যাওয়া, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া, 12 গরীব অসহায় লোকের সঙ্গে অন্যায় ব্যবহার, অপরের অবস্থার সুযোগ নেওয়া, কেউ ধার শোধ করলে তার বন্ধক ফিরিয়ে না দেওয়া। সে মন্দ সন্তান নোংরা মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা জানাতে ও জঘন্য কাজ করতে পারে। 13 সেই দুষ্ট সন্তান সুদের লোভে ঋণ দিয়ে সুদ দিতে বাধ্য করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই দুষ্ট পুত্র বাঁচবে না। সে জঘন্য কাজ করেছে বলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। এবং তার মৃত্যুর জন্য সেই দায়ী হবে।
14 “এখন সেই দুষ্ট লোকের কোন সন্তান থাকতে পারে যে পিতার মন্দ কাজ দেখে সেইভাবে জীবনযাপন করতে অস্বীকার করছে। সেই ভাল সন্তান হয়তো ন্যায্য ব্যবহার করে। 15 সে হয়তো মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত বলির অংশ খেতে পর্বতে যায় না। প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না। 16 সেই ভাল সন্তান হয়তো অপরের অবস্থার সুযোগ নেয় না। বন্ধক দিয়ে ধার দেয় আবার ধার শোধ করলে বন্ধক ফিরিয়ে দেয়। সে হয়তো ক্ষুধার্ত লোককে খাদ্য দেয় এবং বস্ত্রহীনদের বস্ত্র দেয়। 17 সে হয়তো গরীবদের সাহায্য করে, কেউ ধার চাইলে তাকে ধার দেয় এবং সুদ চায় না, সে হয়তো আমার বিধিসকল পালন ও তার অনুধাবন করে। সেই উত্তম সস্তান তার পিতার পাপের জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে না, সে বাঁচবে। 18 তার পিতা লোকদের আঘাত ও চুরি করে থাকতে পারে, আমাদের প্রজাদের প্রতি কোন মঙ্গলজনক কাজ না করে থাকতে পারে। সেই পিতা তার নিজের পাপের জন্যই মারা যাবে।
19 “তোমরা প্রশ্ন করতে পার, ‘কেন পিতার পাপের জন্য পুত্র মারা যাবে না?’ এর কারণ, সেই পুত্র সৎ জীবনযাপন করেছিল ও ভাল কাজ করেছিল। খুব সাবধানতাসহ সে আমার বিধিগুলি পালন করেছে তাই সে বাঁচবে। 20 যে ব্যক্তি পাপ করে কেবল সেই মারা যাবে। পুত্রকে তার পিতার পাপের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে না; আবার পিতাকেও তার পুত্রের পাপের শাস্তি ভোগ করতে হবে না। ভাল লোকের ধার্মিকতা তার নিজের হাতে; তেমনই মন্দ লোকের মন্দতাও কেবল তারই অধিকারগত।
21 “এখন যদি কোন মন্দ লোক তার জীবন পরিবর্তন করে, তবে সে মরবে না, বরং বাঁচবে। সেই ব্যক্তি মন্দ কাজ থেকে বিরত হয়ে যত্ন সহকারে আমার বিধি পালন করা শুরু করে ন্যায়বান ও ভাল হয়ে উঠতে পারে। 22 সে ক্ষেত্রে ঈশ্বর তার কৃত মন্দ কাজগুলি মনে রাখবেন না। কেবল তার উত্তমতা স্মরণে রাখবেন আর তাই সেই ব্যক্তি বাঁচবে!”
23 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “দুষ্ট লোকের মরণ হোক্ এ আমি চাই না। আমি চাই তারা যেন জীবন পরিবর্তন করে এবং বাঁচে।
24 “কিন্তু যদি কোন ভাল লোক ভাল হওয়া থেকে বিরত হয়ে দুষ্টলোকের মত আচরণ করে, অন্যায় করে, নানা ঘৃণিত কাজ করে তাহলে সে কি বাঁচবে? সে ক্ষেত্রে ঈশ্বর তার পূর্বের সৎকাজগুলি স্মরণে আনবেন না। সে যে সত্য লঙ্ঘন ও পাপ করেছে তার জন্যেই মারা যাবে।”
25 ঈশ্বর বলেন, “তোমরা যে বলে থাক, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু ন্যায়বান নন!’ কিন্তু হে ইস্রায়েল পরিবার শোন: আমিই ন্যায়বান, তোমরাই তারা যারা ন্যায়বান নও। 26 যদি কোন ভাল লোক পরিবর্তিত হয়ে দুষ্ট হয়ে ওঠে, তবে সে তার মন্দ কাজের জন্য অবশ্যই মারা যাবে। 27 আর যদি কোন দুষ্ট ব্যক্তি পরিবর্তিত হয়ে ভাল ও ন্যায়বান হয় তবে সে তার জীবন বাঁচাবে। সে বাঁচবে! 28 সেই ব্যক্তি নিজের মন্দতা দেখে বুঝে আমার কাছে ফিরে এসেছিল। সে অতীতে যে সব মন্দ কাজ করত তা আর করে না, তাই সে বাঁচবে, মরবে না।”
29 ইস্রায়েলের লোকরা বলে, “এটা ঠিক নয়! প্রভু আমাদের সদাপ্রভু ন্যায়বিচার করছেন না।”
ঈশ্বর বলেন, “আমিই ন্যায়বান! তোমরাই ন্যায়বিচার করছ না! 30 কারণ ইস্রায়েল পরিবার, আমি প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কর্মানুসারে বিচার করব।” প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “তাই আমার কাছে ফিরে এস, মন্দ কাজ আর করো না! ঐসব ভয়ঙ্কর মূর্ত্তি যেন তোমাদের পাপে না ফেলে। 31 তোমরা যে সব মন্দ জিনিষ করেছ তা ছুঁড়ে ফেলে দাও। তোমাদের হৃদয় ও আত্মার পরিবর্তন কর। হে ইস্রায়েলবাসীরা, কেন তোমরা নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনবে? 32 আমি তোমাদের হত্যা করতে চাইনা। তোমরা ফিরে এসো, বাঁচো।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
19 ঈশ্বর আমায় বললেন, “ইস্রায়েলের নেতাদের সম্বন্ধে তুমি অবশ্যই এই শোকের গান গাইবে।
2 “‘তোমার মা যেন সিংহদের
মাঝে শুয়ে থাকা এক সিংহী।
সে যুব সিংহদের মাঝে শুতে গেল
আর অনেক শাবকের মা হল।
3 তার এক শাবক উঠে দাঁড়াল,
সে হয়ে উঠল এক শক্ত সমর্থ যুব সিংহ।
সে তার খাবার শিকার করতে শিখে গেল।
সে একটি লোককে মারল এবং তাকে খেল।
4 “‘লোকে তার গর্জন শুনল
এবং তাকে একটি খাঁচায় ভরল।
তারা যুব সিংহটির নাকে একটি আংটা পরাল
এবং তাকে মিশরে নিয়ে গেল।
5 “‘মা সিংহীর আশা ছিল যে তার শাবক নেতা হয়ে উঠবে।
কিন্তু এখন সে তার সব আশা হারিয়ে ফেলেছে।
তাই সে তার শাবকগুলি থেকে আরেকটি শাবককে নিল।
তাকে সিংহ হবার প্রশিক্ষণ দিল।
6 সে পূর্ণাঙ্গ সিংহদের সঙ্গে শিকারে গেল।
সে একটি শক্তিশালী যুব সিংহ হয়ে উঠল।
সে শিকার ধরতে শিখল
এবং একটি লোককে খেল।
7 তারপর রাজবাটীগুলো আক্রমণ করল।
সে শহরগুলি ধ্বংস করল।
ঐ দেশের প্রত্যেকে কথা বলতে ভয় পেত,
যখন তারা তার গর্জন শুনত।
8 তারপর তার চার ধারের লোকরা তার জন্য একটি ফাঁদ পাতল
এবং তারা তাদের ফাঁদে তাকে ধরল।
9 তাকে আংটা পরাল এবং তালা বন্ধ করে রাখল।
তারা তাকে তাদের ফাঁদে আটকাল।
তাই তারা তাকে বাবিল রাজার কাছে নিয়ে গেল
এবং তাকে সেখানে রেখে দিল যাতে ইস্রায়েলের কোন পর্বতে
তার গর্জন শুনতে না পাওয়া যায়।
10 “‘তোমার মা একটি দ্রাক্ষালতার মতো,
যা জলের কাছে রোপিত।
তার কাছে ছিল অনেক জল।
তাই সে অনেক সবল দ্রাক্ষালতা জন্মাতে পেরেছিল।
11 তারপর সে বড় বড় শাখাসমূহ জন্মালো।
তারা ছিল চলার ছড়ির মত শক্ত।
তারা ছিল রাজদণ্ডের মত।
দ্রাক্ষালতা ক্রমেই বেড়ে উঠতে লাগল।
তার অনেক শাখা-প্রশাখা ছিল এবং তারা মেঘ পর্যন্ত পৌঁছে গেল।
12 কিন্তু রাগে দ্রাক্ষা-লতাটিকে শিকড় সমেত উপড়ে ফেলা হল।
এবং মাটিতে ফেলে দেওয়া হল।
পূর্বীয় উষ্ণবায়ু তার ওপর বয়ে গেল এবং তার ফল শুকিয়ে গেল।
যখন সবল শাখাগুলো ভেঙে গেল তাদের আগুনে ফেলে দেওয়া হল।
13 “‘এখন সেই দ্রাক্ষালতা রোপিত হয়েছে মরুভূমিতে।
সেটি একটি অত্যন্ত শুষ্ক ও তৃষ্ণার্ত ভূমি।
14 বিরাট শাখাগুলিতে আগুন লাগল এবং তা ছড়িয়ে গেল
এবং অন্যান্য শাখাগুলিকে ও ফলগুলিকে ধ্বংস করল।
তাই সেখানে রইল না কোন শক্ত হাঁটার ছড়ি।
সেখানে রইল না কোন রাজদণ্ড।’
এটি ছিল মৃত্যু নিয়ে এক শোক গাথা আর তা শোকের মত করে গাওয়া হল।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International