Chronological
অন্যান্য জাতিগুলি সম্পর্কে প্রভুর বার্তাসমূহ
46 অন্যান্য জাতিগুলি সম্বন্ধে ভাববাদী যিরমিয়র কাছে এই বার্তাগুলি এসেছিল।
মিশর সম্বন্ধে বার্তা
2 এই বার্তা হল মিশর ও মিশরের রাজা ফরৌণ-নখোর সৈন্যবাহিনীর জন্যে। নখোর সৈন্যরা ফরাৎ নদীর তীরে কর্কমীশ শহরে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিৎসরের কাছে পরাজিত হয়েছিল। রাজা যোশিয়ের পুত্র রাজা যিহোয়াকীম যখন তার রাজত্বের চতুর্থ বছরে ছিল সেই সময় নবূখদ্রিৎসর ফরৌন-নখোর সৈন্যদের পরাজিত করেছিল। এই হল মিশর সম্পর্কিত প্রভুর বার্তা:
3 “তোমরা ছোট এবং বড় ঢাল নিয়ে
যুদ্ধের জন্য এগিয়ে যাও।
4 সৈন্যরা, তোমরা তোমাদের অশ্বদের প্রস্তুত করবে
এবং তাদের ওপর বসবে।
যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতরে দুর্বারভাবে এগিয়ে যাও।
তোমাদের শিরস্ত্রাণ পরে নাও;
তোমাদের বর্শাকে ঘষা-মাজা করে নাও
এবং তোমাদের বর্ম পরে নাও।
5 আমি কি দেখতে পাচ্ছি?
সৈন্যরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ছুটে পালাচ্ছে।
তাদের সাহসী সৈন্যরা পরাজিত।
তারা দ্রুত দৌড়চ্ছে, পিছন ফিরে তাকাচ্ছে না।
সেখানে চতুর্দিকে বিপদ।”
প্রভু এই কথাগুলি বললেন।
6 “দ্রুতগামী লোকরা আর দৌড়তে পারছে না।
শক্তিশালী সৈন্যরা পালাতে পারছে না।
তারা হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছে।
ফরাৎ নদীর তীরে, উত্তরদিকে এই ঘটনা ঘটবে।
7 নীল নদের মতো কে এগিয়ে আসছে?
কে এগিয়ে আসছে দ্রুতগামী শক্তিশালী নদীর মতো?
8 মিশর নীল নদের মতো জেগে ওঠো,
একটি বেগবান ও শক্তিশালী নদীর মত।
শক্তিশালী দ্রুতগামী নদীর মতো
যে আসছে সে মিশর।
মিশর বলল, ‘আমি আসব এবং পৃথিবীকে গ্রাস করব।
আমি ধ্বংস করব শহরগুলিকে এবং সেই শহরের মানুষকে।’
9 অশ্বারোহী সৈন্যরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ো।
রথচালকরা, দ্রুত ছোটাও রথের চাকা।
বীর যোদ্ধা এগিয়ে চলো।
কূশ এবং পূটিয় সৈন্যগণ, তোমাদের বর্মগুলি বহন কর।
লূদীয় সৈন্যগণ, তোমাদের ধনুকগুলো ব্যবহার কর।
10 “কিন্তু সে সময় আমাদের প্রভু সর্বশক্তিমান জয়ী হবেন।
সেই সময় তিনি তাদের যোগ্য শাস্তি দেবেন।
প্রভুর তরবারি ততক্ষণ হত্যা করে যাবে
যতক্ষণ না তাদের রক্তের জন্য তাঁর তৃষ্ণা নিবারন হয়।
এটা হবে কারণ আমাদের মালিক, প্রভু সর্বশক্তিমানের জন্য একটি উৎসর্গ আছে।
ফরাৎ নদীর ধারে ঐ দেশের উত্তর দিকে মিশরের সৈন্যদল হল সেই উৎসর্গ।
তাই এগুলি ঘটবে।
11 “মিশর তুমি তোমার প্রয়োজনীয় ওষুধের জন্য গিলিয়দে যাবে।
তুমি প্রচুর ওষুধ পাবে কিন্তু তাতে তোমার কাজ হবে না।
তুমি কখনও সুস্থ হয়ে উঠবে না।
তোমার ক্ষত কোনদিন সারবে না।
12 অন্যান্য জাতিগুলি তোমার কান্না শুনতে পাবে।
তোমার কান্না শোনা যাবে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে।
কারণ একজন ‘বীরযোদ্ধা’ আর এক জনের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়বে।
কিন্তু তারা দুজনেই এক সঙ্গে মাটিতে আছাড় খাবে।”
13 নবূখদ্রিৎসর আসছে মিশর আক্রমণ করতে। এই ব্যাপারে প্রভুর বার্তা এল ভাববাদী যিরমিয়র কাছে।
14 “মিশরে, মিগ্দোল শহরে,
নোফে এবং তফন্হেষ শহরেও
এই বার্তা ঘোষণা করে দাও।
‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।
কেন? কারণ তোমাদের চারপাশের সমস্ত জাতিসমূহ তরবারি দ্বারা নিহত হচ্ছে।’
15 মিশর, তোমার শক্তিশালী সৈন্যরা নিহত হবে।
তারা আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না।
কারণ তারা উঠে দাঁড়াতে গেলেই প্রভু তাদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেবেন।
16 ঐ সৈন্যরা বার বার হোঁচট খেয়ে
একে অন্যের ঘাড়ের ওপর পড়বে।
তারা বলবে, ‘চলো, ওঠো, আমরা ফিরে যাই নিজেদের দেশে,
নিজেদের লোকের কাছে।
শত্রুরা আমাদের পরাজিত করেছে
সুতরাং আমাদের তো চলে যেতেই হবে।’
17 তাদের স্বদেশে ফিরে গিয়ে সৈন্যরা বলবে,
‘ফরৌণ শুধু মুখে বড় বড় কথা বলে।
রাজার গৌরবের সময় ফুরিয়ে গেছে।’”
18 এ হল রাজার বাণী।
রাজাই হলেন প্রভু সর্বশক্তিমান।
“আমি আছি এটা যেমন নিশ্চিত, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি,
এক ক্ষমতাশালী নেতা আসবে।
সে হবে সমুদ্রের সন্নিকটে স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তাবোর এবং কর্মিল পর্বতের মতো বিশাল।
19 মিশরের লোকরা, জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে নির্বাসনে যাবার জন্য প্রস্তুত হও।
কারণ নোফে ও অন্যান্য শহরগুলি ধ্বংস হয়ে শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে,
কেউ সেখানে বাস করবে না।
20 “মিশর হল একটি রূপসী গাইয়ের মতো,
কিন্তু তাকে বিরক্ত করতে উত্তর দিক থেকে ঘোড়া দংশক মাছি আসছে।
21 মিশর সেনাবাহিনীর ভাড়াটে সৈন্যরা হল তরুণী গাভীর মতো।
তারা কখনো শক্তিশালী আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে পারবে না।
তারা দৌড়ে পালাবে।
তাদেরও শেষ হবার সময় ঘনিয়ে আসছে।
শীঘ্রই তারা শাস্তি পাবে।
22 মিশর শুধু সাপের মতো হিস্হিস্ শব্দ করে ফুঁসবে
আর পালানোর চেষ্টা করবে।
শত্রুপক্ষ এমশঃ তার কাছে এগিয়ে আসবে।
এবং মিশরের সৈন্যরা শুধু আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবে কি করে পালিয়ে যাওয়া যায়।
শত্রুদল কুঠার নিয়ে মিশরকে আক্রমণ করবে।
তারা যেন গাছ কেটে ফেলছে এমন লোকদের মত।”
23 প্রভু এই কথাগুলি বলেন,
“অরণ্যের গাছ কাটার মতো
তারা মিশরের সৈন্যদের কেটে ফেলবে।
মিশরের সৈন্য সংখ্যা অসংখ্য হলেও তারা কেউ ছাড়া পাবে না।
শত্রুপক্ষের সৈন্যরা হল পঙ্গপালের মতো অগুনতি।
24 মিশর লজ্জিত হবে।
উত্তরের শত্রুপক্ষ তাকে পরাজিত করবে।”
25 প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “খুব শীঘ্রই আমি থীব্স্ দের দেবতা, অম্মোনকে শাস্তি দেব। এবং আমি ফরৌণকে, মিশরকে ও তার দেবতাদেরও শাস্তি দেব। ফরৌণের ওপর নির্ভরশীল লোকদেরও আমি শাস্তি দেব। 26 শত্রুপক্ষের কাছে আমি ঐ লোকদের পরাজিত করব। শত্রুসেনা তাদের হত্যা করতে চায়। আমি ঐ লোকদের বাবিলের রাজা নবূখদ্রিৎসর ও তার অনুচরদের হাতে তুলে দেব।
“অতীতে মিশরে শান্তি বিরাজ করতো। এবং এই সমস্ত সমস্যাগুলি কেটে যাবার পর মিশরে আবার শান্তি ফিরে আসবে।” প্রভু এই কথা বললেন।
উত্তর ইস্রায়েলের জন্য বার্তা
27 “যাকোব, আমার অনুচর, আমার সেবক, ভীত হয়ো না।
ভয় পেও না ইস্রায়েল।
আমি তোমাকে ঐ সব দূর দেশের হাত থেকে রক্ষা করব।
তোমার নির্বাসিত সন্তানদের আমি রক্ষা করব।
যাকোবে আবার নিরাপত্তা ও শান্তি ফিরে আসবে।
কেউ আর তাকে ভয় দেখাতে পারবে না।”
28 প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন,
“যাকোব আমার সেবক, ভয় পেও না।
আমি তোমার সঙ্গে আছি।
আমি তোমাকে ভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি
কিন্তু তোমাকে পুরোপুরি ধ্বংস করিনি।
অথচ আমি অন্যান্য দেশগুলোকে ধ্বংস করে দেব।
খারাপ কাজ করার ফলস্বরূপ তুমি আজ সাজা প্রাপ্ত।
আমি তোমাকে শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দিতে পারি না।
আমি তোমাকে শাস্তি দেব, কিন্তু আমি সেটি ন্যায়পরায়ণভাবে করব।”
পলেষ্টীয়দের বিষয়ে বার্তা
47 পলেষ্টীয়দের সম্বন্ধে ভাববাদী যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এসেছিল। ফরৌণ ঘসা শহর আক্রমণের আগে এই বার্তা এসেছিল।
2 প্রভু বলেছেন:
“দেখ, শত্রুপক্ষের সেনারা উত্তরে একত্রিত হচ্ছে।
তারা এগিয়ে আসছে কূলছাপানো প্রবল নদীর মতো।
ঐ সৈন্যদল সমগ্র দেশটিকে এবং তার সমস্ত শহরগুলোকে
এক শক্তিশালী বন্যার মত ঢেকে দেবে।
সমস্ত শহরের এবং গোটা দেশের মানুষ
সাহায্যের জন্য চিৎকার করে উঠবে।
3 তারা শুনতে পাবে ছুটন্ত ঘোড়ার ক্ষুরের শব্দ।
শুনতে পাবে তীব্র গতিতে ছুটে আসা রথের চাকার শব্দ।
পিতারা তাদের সন্তানদের রক্ষা করতে পারবে না।
তারা এত দুর্বল হয়ে পড়বে যে সাহায্য করার শক্তিও তাদের মধ্যে অবশিষ্ট থাকবে না।
4 পলেষ্টীয় লোকদের ধ্বংসের সময় আসছে।
যারা সোর ও সীদোনের লোকদের সাহায্য করেছিল
তাদের ধ্বংসের সময় আসছে।
শীঘ্রই প্রভু পলেষ্টীয় লোকদের ধ্বংস করবেন।
তিনি ধ্বংস করবেন কপ্তোর দ্বীপের জীবিত অবশিষ্ট লোকদেরও।
5 ঘসার লোকরা তাদের মাথা কামাবে এবং শোক প্রকাশ করবে।
অস্কিলোনের লোকরা চুপ করে থাকবে।
উপত্যকায় বেঁচে যাওয়া লোকরা, তোমরা আর কত দিন নিজেদের আহত করবে?
6 “প্রভুর তরবারি, তুমি এখনো ফিরে যাওনি।
আর কতদিন এইভাবে যুদ্ধ করে যাবে?
যাও এবার তোমার খাপে ফিরে যাও
এবং স্থির হও।
7 হে প্রভুর তরবারি, কি করে তুমি প্রভুর আদেশ অগ্রাহ্য করতে পারো
এবং তোমার খাপে ফিরে গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারো?
প্রভুই তাঁর তরবারিকে আদেশ দিয়েছেন
অস্কিলোন শহর এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলকে আক্রমণ করার জন্য।”
মোয়াব সম্বন্ধে বার্তা
48 মোয়াব দেশ সম্বন্ধে হল এই বার্তা। প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন:
“নবো পর্বতের জন্য খুব খারাপ হবে।
নবো পর্বত ধ্বংস হয়ে যাবে।
কিরিয়াথয়িমকে অপদস্থ করা হবে
এবং তাকে দখল করা হবে।
ঐ শক্তিশালী জায়গাটিকে
অবদমিত ও ধ্বংস করা হবে।
2 মোয়াবের আর কখনো প্রশংসা করা হবে না।
হিশ্বোনের লোকরা মোয়াবের পরাজয়ের পরিকল্পনা করবে।
তারা বলবে, ‘এসো, আমরা ঐ দেশটি শেষ করে দিই।’
মদ্মেনা, তুমিও নিশ্চুপ হয়ে যাবে।
প্রভুর তরবারি তোমাকেও তাড়া করবে।
3 হোরোণয়িম থেকে কান্নার রোল উঠছে শোন।
তারা বিশৃঙ্খল অবস্থা ও ধ্বংস দেখে কাঁদছে।
4 মোয়াব ধ্বংস হবে।
তার সন্তানরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করে কাঁদবে।
5 মোয়াবের লোকরা কাঁদতে কাঁদতে
লূহীতের ফুটপাত দিয়ে হাঁটবে।
তাদের সেই বেদনাবিধুর কান্নার আওয়াজ শোনা যাবে
হোরোণয়িম শহরের রাস্তা থেকে।
6 বাঁচার জন্য পালাও। দৌড়োও!
ঝোপের ছোট ছোট শেকড় যেমন মরুঝড়ে উড়ে যায় সেই ভাবে পালিয়ে যাও।
7 “তোমরা যা তৈরী করেছিলে তাতে তোমাদের বিশ্বাস আছে, বিশ্বাস আছে তোমাদের সম্পদে।
তাই তোমরা বন্দী হবে।
তোমাদের দেবতা কমোশ[a] কেও নির্বাসনে পাঠানো হবে বন্দী করে নিয়ে গিয়ে।
তার যাজক এবং আধিকারিকদেরও বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে।
8 ধ্বংস আসবে প্রত্যেক শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে।
কোন শহর পালাতে পারবে না।
এই উপত্যকা ধ্বংস হয়ে যাবে।
উচ্চ সমতলভূমিও ধ্বংস হবে।
প্রভু যেহেতু বলেছেন এইগুলি ঘটবে,
তাই এগুলি ঘটবেই।
9 মোয়াবের সমস্ত জমিতে নুন ছড়িয়ে দাও।
এই দেশ শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে।
মোয়াবের শহরগুলি
শূন্য শহরসমূহে পরিণত হবে।
10 যদি কোন ব্যক্তি প্রভুর নির্দেশ মতো তার তরবারি ব্যবহার না করে
এবং হত্যা করে তাহলে সেই ব্যক্তির জীবনে বিপর্যয় আসবে।
11 “মোয়াব কখনও অশান্তি কি তা জানতে পারেনি।
মোয়াব ছিল নির্দিষ্ট স্থানে সঞ্চিত রাখা সুরার মতো স্থির।
তাকে কখনও এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে ঢালা হয়নি।
তাকে কখনও নির্বাসনের জন্য বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়নি।
তাই তার স্বাদ আগের মতোই অভিন্ন
এবং তার গন্ধেরও পরিবর্তন হয়নি।”
12 প্রভু বলেছেন,
“কিন্তু শীঘ্রই আমি কিছু লোক পাঠাব যারা তোমাকে
সুরার মতো এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে ঢালবে।
তারপর তারা শূন্য পাত্রের মতো আছাড় মেরে
তোমাকে টুকরো টুকরো করবে।”
13 তখন মোয়াবের লোকরা তাদের মূর্ত্তি কমোশের জন্য লজ্জিত হবে। বৈথেলে ইস্রায়েলের লোকরাও মূর্ত্তিকে বিশ্বাস করেছিল এবং যখন ঐ মূর্ত্তি তাদের কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারেনি তখন তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিল। মোয়াবের সেই রকমই হবে।
14 “তুমি বলতে পারো না, ‘আমরা ভালো সৈন্য।
আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসী।’
15 শত্রুপক্ষ মোয়াব আক্রমণ করবে।
তারা মোয়াব শহরগুলির ভেতরে ঢুকে সেগুলিকে ধ্বংস করে দেবে।
গণ হত্যার সময় মোয়াবের সবচেয়ে শক্তিশালী যুবকরা মারা যাবে।”
এই বার্তা হল রাজার।
রাজার নাম হল প্রভু সর্বশক্তিমান।
16 “মোয়াবের ধ্বংস হবে শীঘ্রই।
মোয়াবের পরিসমাপ্তি খুব কাছে এগিয়ে আসছে।
17 মোয়াবের প্রতিবেশী লোকরা, তোমরা ঐ দেশের জন্য চিৎকার করে কাঁদো!
লোকরা, তোমরা জানো যে মোয়াব কতখানি বিখ্যাত
তাই তার জন্য কাঁদো।
এই বিলাপ গীত গাও: ‘রাজার শাসন শেষ।
মোয়াবের শক্তি ও গৌরব শেষ হয়ে গেছে।’
18 “তোমরা দীবোনের লোকরা,
তোমাদের শ্রদ্ধার জায়গা থেকে নেমে এসো।
কারণ ধ্বংসকারী আসছে।
সে এসে তোমাদের সমস্ত শক্তিশালী শহরগুলোকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেবে।
19 “অরোয়ের লোকরা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করে দেখো
একজন পুরুষ ও নারী দৌড়ে পালাচ্ছে।
ওদের জিজ্ঞাসা করো কি হয়েছে।
20 “মোয়াব ধ্বংস হবে এবং লজ্জায় ভরে যাবে।
মোয়াব শুধু কাঁদবে আর কাঁদবে।
অর্ণোন নদীতে ঘোষণা হচ্ছে
মোয়াব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
21 উচ্চসমতল ভূমির লোকরাও শাস্তি পাবে।
হোলন, যহস, মেফাৎ শহরে
শাস্তির বিধান এসে গিয়েছে।
22 বিচার দণ্ড উপস্থিত হয়েছে
দীবোন, নবো এবং বৈৎ-দিব্লাথয়িম শহরে।
23 বিচার দণ্ড উপস্থিত হয়েছে
কিরিয়াথয়িম, বৈৎগামূল এবং বৈৎ-মিয়োন শহরে।
24 বিচার দণ্ড এসেছে করিয়োৎ এবং বস্রা শহরগুলিতে।
বিচার দণ্ড এসেছে মোয়াবের কাছের ও দূরের সমস্ত শহরগুলিতেও।
25 মোয়াবের সমস্ত শক্তি ছিন্ন করা হয়েছে।
মোয়াবের বাহু ভেঙে দেওয়া হয়েছে।”
প্রভু এই কথা বলেছিলেন।
26 “মোয়াব নিজেকে প্রভুর চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ ভেবেছিল।
অতএব মোয়াবকে শাস্তি দাও যতক্ষণ না সে
মাতালের মতো টলতে টলতে হাঁটে, যতক্ষণ না সে বমি করে এবং তার ওপর নিজেই গড়াগড়ি খায়!
মানুষ মোয়াবকে নিয়ে উপহাস করবে।
27 “মোয়াব তুমি সব সময় ইস্রায়েলকে নিয়ে হাসাহাসি করেছ।
ইস্রায়েল যখন একদল চোরের হাতে ধরা পড়েছিল তখন তুমি তাকে নিয়ে উপহাস করেছো, মজা করেছো।
তুমি সব সময় নিজেকে ইস্রায়েলের থেকে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করে এসেছো।
যতবার তুমি ইস্রায়েলের সম্বন্ধে কথা বলেছ, তুমি সব সময় এমন ব্যবহার করেছ যেন তুমি তার চেয়ে ভালো।
28 তোমরা, মোয়াবের লোকরা, তোমদের শহরগুলি ত্যাগ কর
এবং পাথর সমূহের মাঝে বাস কর
যেমন করে একটি ঘুঘু পাখী একটি গুহার প্রবেশমুখে
তার বাসা তৈরী করে।”
29 “মোয়াবের আত্মম্ভরিতার কথা আমরা শুনেছি।
সে ছিল ভীষণ অহঙ্কারী।
হামবড়া ভাব দেখিয়ে
সে নিজেকে কেউ কেটা প্রমাণ করার চেষ্টা করতো।”
30 প্রভু বলেন, “আমি জানি যে মোয়াব খুব তাড়াতাড়ি রেগে যায় এবং সে নিজেই নিজের বড়াই করে বেড়ায়।
কিন্তু তার সব বড় বড় কথাই মিথ্যে।
সে যা বলে তার কিছুই করে দেখাতে পারে না।
31 তাই আমি মোয়াবের জন্য কাঁদি।
কাঁদি তার লোকদের জন্য।
আমি কাঁদলাম কীর-হেরেসের লোকদের জন্য।
32 যাসের লোকদের জন্য আমি যাসেরের সঙ্গে কাঁদলাম।
সিব্মা অতীতে তোমার দ্রাক্ষা ক্ষেত
সমুদ্র উপকূল ঘিরে বিস্তৃত ছিল যাসের পর্যন্ত।
কিন্তু ধ্বংসকারী তোমাদের ফসল ও দ্রাক্ষা নিয়ে গিয়েছে।
33 মোয়াবের বিশাল দ্রাক্ষাক্ষেতগুলির থেকে সমস্ত আনন্দ ও হাসি অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে।
আমি দ্রাক্ষার থেকে রসের প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছি যাতে আর কখনও দ্রাক্ষারস না বানানো যায়।
কেউ আর ওগুলোর ওপর দিয়ে নাচতে নাচতে এবং গাইতে গাইতে না হাঁটে।
সেখানে কোন আনন্দের কোলাহল থাকবে না।
34 “হিশ্বোন ও ইলিয়ালী শহরের মানুষ কাঁদছে। সুদূর যহস শহর থেকেও তাদের কান্না শোনা যাচ্ছে। তাদের কান্না শোনা যাচ্ছে সোয়র, হোরেসুয়ম এবং ইগ্লত্-শলিশীয়া শহর থেকেও। এমন কি নিম্রীম নদীর জল শুকিয়ে গিয়েছে। 35 আমি মোয়াবকে সমস্ত উচ্চ স্থানগুলিতে হোমবলি উৎসর্গ করা থেকে বিরত করব। আমি মোয়াবকে তাদের দেবতাদের প্রতি নৈবেদ্য দেওয়া থেকে বিরত করব।” প্রভু এগুলি বললেন।
36 “মোয়াবের জন্য আমি খুবই দুঃখিত। শবযাত্রা কালে শোকসঙ্গীতের সুর তোলা বাঁশির মতো আমার হৃদয় কাঁদছে। আমি কীর হেরেসের লোকদের জন্যও দুঃখিত। তাদের সমস্ত ধনসম্পত্তি লুঠ হয়ে গিয়েছে। 37 প্রত্যেকেই শোক পালনের উদ্দেশ্যে মাথা ন্যাড়া করেছে, দাড়ি কেটেছে, হাত কেটে রক্তপাত ঘটিয়েছে। প্রত্যেকে শোকের পোশাক পরেছে। 38 মোয়াবে মৃতদের জন্য প্রত্যেক জায়গায় লোকেরা, প্রত্যেক বাড়ির মাথায় এবং সমস্ত জনসাধারণ্যে কাঁদছে। আমি মোয়াবকে শূন্য পাত্রের মতো আছাড় মেরে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করেছি বলেই চারিদিকে এত শোক।” প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন।
39 “মোয়াব চুর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে। মানুষ কাঁদছে। মোয়াব আত্মসমর্পণ করেছে এবং এখন লজ্জায় পড়ে গেছে বলে অন্য দেশের মানুষ তাকে নিয়ে উপহাস করছে। কিন্তু মোয়াবে যা ঘটেছে তাতে তারা আতঙ্কে পূর্ণ।”
40 প্রভু বলেন, “দেখ! একটি ঈগল পাখী আকাশ থেকে নীচের দিকে ধেয়ে আসছে
আর তার ডানার পরিধি বিস্তৃত হচ্ছে মোয়াবের ওপর।
41 মোয়াবের শহরগুলি অধিকৃত হবে।
দূর্গ দিয়ে ঘেরা জায়গাগুলিও পরাজিত হবে।
সেই সময় মোয়াবের সৈন্যরা প্রসব বেদনায় কাতর মহিলার মতো ভীত হয়ে পড়বে।
42 পুরো মোয়াব দেশটাই ধ্বংস হয়ে যাবে।
কেননা তারা ভেবেছিল যে তারা প্রভুর থেকেও বেশী গুরুত্বপূর্ণ।”
43 প্রভু এই কথাগুলি বলেন:
“মোয়াবের লোকরা, ভীত হও, গভীর খাদ এবং ফাঁদ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
44 লোকরা ভয়ে দৌড়বে
এবং গভীর খাদগুলিতে পড়বে।
কেউ যদি সেই খাদ বেয়ে বাইরে উঠে আসে, সে মুক্ত হবে না
কারণ তাকে ধরবার জন্য ফাঁদ পাতা আছে।
আমি মোয়াবে শাস্তির বছর নিয়ে আসব।”
প্রভু এই কথাগুলি বললেন।
45 “শত্রুবাহিনীর ভয়ে মানুষ নিরাপত্তার জন্য হিশ্বোন শহরের দিকে ছুটবে
কিন্তু সেখানেও তারা নিরাপদ নয়।
হিশ্বোনে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে।
সীহোনের শহর থেকে এই আগুনের উৎপত্তি।
ঐ আগুন মোয়াবের নেতাদের পুড়িয়ে মারবে,
পুড়িয়ে মারবে অহঙ্কারী লোকগুলোকে।
46 মোয়াব তোমার সত্যিই দুঃসময় ঘনিয়ে আসছে।
তোমার দেবতা কমোশ ও তার লোকরা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
তোমার ছেলেমেয়েদের বন্দী করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নির্বাসনে।
47 মোয়াবের লোকদের নির্বাসনে পাঠানো হলেও
এমন একদিন আসবে যেদিন তাদের সবাইকে আবার আমি মোয়াবে ফিরিয়ে আনব।”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
মোয়াবের বিচারদণ্ড এখানেই শেষ।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International