Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 রাজাবলি 12-13

যোয়াশের শাসনকার্য শুরু

12 ইস্রায়েলে যেহূর রাজত্বের সপ্তম বছরে সিংহাসনে আরোহণ করার পর, যোয়াশ 40 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন। যোয়াশের মা ছিলেন বের্-শেবা নিবাসিনী সিবিয়া। যোয়াশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেন। রাজা যোয়াশ ঈশ্বরের সামনে ঠিক কাজগুলি করেছিলেন যতদিন তাঁকে যিহোয়াদা নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তিনিও ভিন্ন মূর্ত্তির পূজোর জন্য উঁচু জায়গায় বানানো বেদীগুলো ধ্বংস করেন নি। লোকরা সেই সব বেদীগুলিতে বলিদান করা ও ধুপধূনো দেওয়া চালিয়ে গেল।

যোয়াশ মন্দির সংস্কারের নির্দেশ দিলেন

4-5 যোয়াশ যাজকদের বললেন, “প্রভুর মন্দিরে কোন অর্থাভাব নেই। মন্দিরে জিনিসপত্র দান করা ছাড়াও, সময় সময় লোকরা মন্দির করও দিয়ে এসেছে। খুশি মত উপহার তারা দিয়েছে। আপনারা, যাজকরা মন্দির মেরামতের জন্য ঐ অর্থ ব্যবহার করবেন। প্রত্যেক যাজক লোকেদের জন্য কাজ করে, তাদের কাছ থেকে যে দক্ষিণা পান সেই টাকা দিয়েই তাদের প্রভুর মন্দির সংস্কার করা উচিৎ‌।”

কিন্তু যাজকরা মন্দির সংস্কার করলেন না। যোয়াশের রাজত্বের 23 বছরের মাথায়ও যখন যাজকরা মন্দির সারালেন না, তখন রাজা যোয়াশ যাজক যিহোয়াদা ও অন্যান্য যাজকদের ডেকে পাঠিয়ে জানতে চাইলেন, “আপনারা কেন এখনও মন্দিরটা সারান নি? অবিলম্বে আপনারা লোকদের কাজ করে দক্ষিণা নেওয়া বন্ধ করুন। দক্ষিণার টাকাও আর বাজে খরচ করবেন না। ঐ টাকা অবশ্যই মন্দির সংস্কারের কাজে যাওয়া উচিৎ‌।”

যাজকরা লোকদের কাছ থেকে দক্ষিণা নেওয়া বন্ধ করবেন বলে রাজী হলেও, তাঁরা ঠিক করলেন যে মন্দির তাঁরা সারাবেন না। তখন যাজক যিহোয়াদা একটা বাক্স বানিয়ে বাক্সটার ওপরে একটা ফুটো করে সেটাকে বেদীর দক্ষিণ দিকে, যে দরজা দিয়ে দর্শনার্থীরা মন্দিরে ঢোকে, রেখে দিলেন। কিছু যাজক মন্দিরের দরজা আগলে বসে থাকতেন। তারা প্রভুকে প্রণামী হিসেবে দেওয়া টাকা পয়সাগুলো ঐ বাক্সটায় পুরে দিলেন।

10 এরপর থেকে লোকরাও মন্দিরে এলে ঐ বাক্সটার মধ্যে টাকা পয়সা ফেলতে শুরু করল। যখনই মহারাজের সচিব এবং যাজক দেখতেন বাক্সটার মধ্যে অনেক টাকা পয়সা জমে গিয়েছে, তাঁরা তখন সমস্ত টাকা পয়সা বাক্স থেকে বের করে গুণে গেঁথে ব্যাগে ভরে রাখতেন। 11 তাঁরা ঐ অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের কাঠের মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, 12 পাথর-কাটিয়ে, খোদাইকর ও অন্যান্য যেসব মিস্ত্রিরা প্রভুর মন্দিরে কাজ করত তাদের মাইনে দিতেন। এছাড়াও ঐ টাকা দিয়ে মন্দির সারানোর জন্য কাঠের গুঁড়ি, পাথর থেকে শুরু করে যা যা প্রয়োজন কিনতেন।

13-14 প্রভুর মন্দিরের জন্য লোকরা যে টাকা দিতেন তা দিয়ে কিন্তু যাজকরা সোনা ও রূপোর পাত্র, বাতিদান, বাদ্যযন্ত্র এসব কিনতে পারতেন না। কারণ কারিগররা যারা মন্দির সারাচ্ছিল তাদের মাইনে ঐ অর্থ থেকে দেওয়া হত। 15 কেউই পাই পয়সার হিসেব নিতেন না বা টাকা কিভাবে খরচ হল—এ প্রশ্ন মিস্ত্রিদের করতেন না। কারণ সমস্ত মিস্ত্রিরা খুব বিশ্বাসী ছিল।

16 দোষ মোচন ও পাপমোচনের নৈবেদ্যর থেকে পাওয়া টাকা কারিগরদের মাইনে দেবার জন্য ব্যবহৃত হত না কারণ ওটাতে ছিল যাজকদের অধিকার।

যোয়াশ হসায়েলের হাত থেকে জেরুশালেমকে রক্ষা করলেন

17 অরামের রাজা হসায়েল গাৎ‌ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। গাতদের হারানোর পর হসায়েল জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

18 যিহোশাফট, যিহোরাম, অহসিয় প্রমুখ যিহূদার রাজারা ছিলেন যোরামের পূর্বপুরুষ। এরা সকলেই প্রভুকে অনেক কিছু দান করেছিলেন। সে সব জিনিসই মন্দিরে রাখা ছিল। যোয়াশ নিজেও প্রভুকে বহু জিনিসপত্র দিয়েছিলেন। জেরুশালেমকে অরামের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য যোয়াশ এই সমস্ত জিনিসপত্র এবং তাঁর বাড়িতে ও মন্দিরে যত সোনা ছিল, সব কিছুই অরামের রাজা হসায়েলকে পাঠিয়ে দেন।

যোয়াশের মৃত্যু

19 যোয়াশ যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সমস্ত যিহূদার রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।

20 যোয়াশের কর্মচারীরা তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাঁকে সিল্লা যাবার পথে মিল্লো বলে একটা বাড়িতে হত্যা করে। 21 শিমিয়তের পুত্র যোষাখর ও শোমরের পুত্র যিহোষাবদ আধিকারিক ছিল। এই দুজন মিলে যোয়াশকে হত্যা করেছিল।

যোয়াশকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করার পর তাঁর পুত্র অমৎসিয় নতুন রাজা হলেন।

যিহোয়াহসের শাসনকার্য শুরু

13 অহসিয়ের পুত্র, যোয়াশের যিহূদায় রাজত্বের 23তম বছরে যেহূর পুত্র যিহোয়াহস শমরিয়ায় ইস্রায়েলের নতুন রাজা হয়েছিলেন এবং তিনি 17 বছর রাজত্ব করেছিলেন।

প্রভু যা কিছু করতে বারণ করেছিলেন, যিহোয়াহস সে সবই করেছিলেন। নবাটের পুত্র যারবিয়াম যে সমস্ত পাপ আচরণ করতে ইস্রায়েলের লোকদের বাধ্য করেছিলেন, যিহোয়াহস সেই সমস্ত পাপ আচরণ করেছিলেন। তিনি সেই সব কাজ বন্ধ করলেন না। প্রভু তখন ইস্রায়েলের প্রতি বিরূপ হয়ে, ইস্রায়েলকে অরামের রাজা হসায়েল ও তাঁর পুত্র বিন্‌হদদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি প্রভুর করুণা

যিহোয়াহস তখন প্রভুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলে, প্রভু সেই ডাকে সাড়া দিলেন। প্রভু ইস্রায়েলের বিপদ সচক্ষে দেখা ছাড়াও অরামের রাজা কিভাবে ইস্রায়েলীয়দের অত্যাচার করছে দেখেছিলেন।

তখন প্রভু ইস্রায়েলকে বাঁচানোর জন্য এক ব্যক্তিকে পাঠালেন। অরামীয়দের হাত থেকে মুক্ত হয়ে ইস্রায়েলীয়রা আগের মত নিজেদের বাড়ি ফিরে গেল।

কিন্তু তা সত্ত্বেও যারবিয়াম যে সকল পাপ দ্বারা ইস্রায়েলীয়দের পাপ আচরণে বাধ্য করেছিলেন, তারা সে সকল পাপ আচরণ বন্ধ করল না, কিন্তু আশেরার মূর্ত্তিকে শমরিয়াতে থাকতে দিল।

অরামের রাজা যিহোয়াহসের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছিলেন। সেনাবাহিনীর অধিকাংশ ব্যক্তিকেই হত্যা করেছিলেন। তিনি কেবলমাত্র 50 জন অশ্বারোহী সৈনিক, 10 খানা রথ ও 10,000 পদাতিক সৈন্য অবশিষ্ট রেখেছিলেন। যিহোয়াহসের বাদবাকি সেনাবাহিনী যেন ঝড়ের মুখে খড় কুটোর মত উড়ে গিয়েছিল!

যিহোয়াহস যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন তা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। যিহোয়াহসের মৃত্যুর পর লোকরা তাঁকে শমরিয়ায় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করেছিল। যিহোয়াহসের পর তাঁর পুত্র যোয়াশ নতুন রাজা হলেন।

ইস্রায়েলে যিহোয়াশের শাসন

10 যিহূদায় যোয়াশের রাজত্বের 37তম বছরে শমরিয়ায় যিহোয়াহসের পুত্র যিহোয়াশ ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন। তিনি মোট 16 বছর ইস্রায়েল শাসন করেন। 11 প্রভু যা কিছু বারণ করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াস সে সমস্তই করেন। নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতোই তিনি ইস্রায়েলের লোকদের পাপের পথে চালিত করেন। 12 যোয়াশ যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন এবং অমৎসিয়ের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধের বিবরণ ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। 13 যিহোয়াসের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শমরিয়ায় সমাধিস্থ করা হয়। যিহোয়াসের মৃত্যুর পর যারবিয়াম নতুন রাজা হয়ে যোয়াশের সিংহাসনে বসেন।

যিহোয়াশ ইলীশায়কে দেখতে গেলেন

14 ইলীশায় অসুস্থ হয়ে পড়লেন। পরে এই অসুস্থতায় ইলীশায় মারা গেলেন। ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ তাঁকে দেখতে গেলেন। সেখানে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে যিহোয়াশ বললেন, “হে আমার পিতা, আমার পিতা! স্বর্গ থেকে কখন ঈশ্বরের পাঠানো ঘোড়ায়-টানা রথ এসে তোমাকে তুলে নিয়ে যাবে?”[a]

15 ইলীশায় যিহোয়াশকে বললেন, “তীর ধনুক হাতে নাও।”

তার কথা মতো যিহোয়াশ একটা ধনুক ও কিছু তীর নিলেন। 16 তখন ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “এবার তোমার হাতে ধনুক রাখো।” যিহোয়াশ ধনুকে হাত রাখার পর ইলীশায় তাঁর হাত রাজার হাতের ওপর রাখলেন। 17 ইলীশায় বললেন, “পূর্বদিকের জানালাটা খুলে দাও।” কথা মতো যিহোয়াশ জানালা খুলে দিলেন। ইলীশায় নির্দেশ দিলেন, “তীর নিক্ষেপ কর।”

যিহোয়াশ তীর ছুঁড়লেন। তখন ইলীশায় বলে উঠলেন, “ঐ তীর হল প্রভুর বিজয় বাণ! অরামের বিরুদ্ধে বিজয় বাণ! তুমি অবশ্যই অফেকে অরামীয়দের যুদ্ধে হারাতে ও ধ্বংস করতে পারবে।”

18 এরপর ইলীশায় আবার বললেন, “তীর নাও।” যিহোয়াশ তীর নিলে ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে নির্দেশ দিলেন, “তীরগুলি দিয়ে ভূমিতে আঘাত কর।”

যিহোয়াশ পরপর তিন বার ভূমিতে তীর দিয়ে আঘাত করলেন, তারপর তিনি থামলেন। 19 ইলীশায় রেগে গিয়ে বললেন, “তোমার অন্তত পাঁচ-ছ’বার ভূমিতে তীর দিয়ে আঘাত করা উচিৎ‌ ছিল। তাহলে তুমি অরামীয় সেনাদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারতে! কিন্তু এখন তুমি ওদের শুধু মাত্র তিন বার যুদ্ধে হারাতে পারবে!”

ইলীশায়ের সমাধিতে এক অদ্ভুত ঘটনা

20 ইলীশায়ের মৃত্যু হলে লোকরা তাঁকে সমাধিস্থ করল।

একবার বসন্তকালে, একদল মোয়াবীয় সৈন্য ইস্রায়েল আক্রমণ করল। 21 ইস্রায়েলীয় কিছু ব্যক্তি সে সময়ে একটি শবদেহ সমাধিস্থ করতে যাচ্ছিল। তারা মোয়াবীয় সেনাদের দেখে ঐ শবদেহটি ইলীশায়ের কবরে ছুঁড়ে ফেলে পালিয়ে গেল। কিন্তু যেই মূহুর্তে এই মৃতদেহটি ইলীশায়ের অস্থি স্পর্শ করল, সেই মূহুর্তে সেই লোকটি বেঁচে উঠে দাঁড়াল।

যিহোয়াশ ইস্রায়েলের শহরসমূহ পুনরায় জয় করলেন

22 যিহোয়াশের রাজত্বের সময় অরামের রাজা হসায়েল নানাভাবে ইস্রায়েলকে বিপাকে ফেলেছেন। 23 কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের প্রতি প্রভুর কৃপা দৃষ্টি ছিল। তিনি করুণাবশতঃ ইস্রায়েলীয়দের পক্ষ গ্রহণ করেছিলেন। অব্রাহাম, ইস‌্হাক ও যাকোবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন বলে প্রভু ইস্রায়েলীয়দের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেন নি।

24 অরামের রাজা হসায়েলের মৃত্যু হলে বিন্‌হদদ সে জায়গায় নতুন রাজা হলেন। 25 মৃত্যুর আগে হসায়েল, যিহোয়াশ ও যিহোয়াহসের পিতার সঙ্গে যুদ্ধ করে বেশ কয়েকটা শহর জিতে নিয়েছিলেন। যিহোয়াশ, হসায়েলের পুত্র বিন্‌হদদের কাছ থেকে সেগুলো পুনরুদ্ধার করলেন। যিহোয়াশ বিন্‌হদদকে তিনবার যুদ্ধে পরাজিত করে, ইস্রায়েলের হৃত শহরগুলি পুনর্দখল করেন।

2 বংশাবলি 24

যোয়াশ মন্দির পুনর্নির্মাণ করলেন

24 যোয়াশ মাত্র 7 বছর বয়সে রাজা হয়ে 40 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মা সিবিয়া ছিলেন বের্-শেবা শহরের বাসিন্দা। যতদিন পর্যন্ত যাজক যিহোয়াদা জীবিত ছিলেন ততদিন পর্যন্ত যোয়াশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেছিলেন। যিহোয়াদা যোয়াশের দুটো বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর, রাজা যোয়াশের অনেকগুলি সন্তান হয়েছিল।

পরবর্তীকালে, রাজা যোয়াশ প্রভুর মন্দিরকে নবরূপ দেবার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি সমস্ত লেবীয় ও যাজকদের একসঙ্গে ডেকে বললেন, “যাও, ইস্রায়েলের প্রত্যেকে প্রতি বছর যে কর দেয় তা সংগ্রহ কর এবং তোমাদের প্রভুর মন্দিরকে নতুন রূপ দাও। যাও, আর দেরী করো না।” কিন্তু লেবীয়রা এতে বিশেষ উৎসাহ দেখালেন না।

তখন রাজা যোয়াশ প্রধান যাজক যিহোয়াদাকে ডেকে বললেন, “আপনি কেন লেবীয়দের যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করতে আদেশ দেন নি যা প্রভুর দাস মোশি ও ইস্রায়েলের লোকরা পবিত্র তাঁবুর জন্যই ব্যবহার করতেন।”

অতীতে, দুষ্ট রাণী অথলিয়ার পুত্ররা প্রভুর মন্দির থেকে পবিত্র জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেগুলো বালদেবতার আরাধনার জন্য ব্যবহার করেছিলেন।

রাজা যোয়াশ প্রভুর মন্দিরের দরজার বাইরে একটা প্রণামীর সিন্দুক বানিয়ে বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর লেবীয়রা যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের প্রভুর জন্য কর দেবার কথা ঘোষণা করেন। ঈশ্বরের জন্য ইস্রায়েলীয়রা যখন মরুভূমিতে দিন কাটাচ্ছিল তখন এইভাবে মোশি এই কর সংগ্রহ করেছিলেন। 10 সমস্ত নেতা ও লোকরা খুশি মনে কর নিয়ে এসে প্রণামীর সিন্দুকে জমা দিল। সিন্দুকটা যতক্ষণ পর্যন্ত না ভরে গেল ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই সিন্দুকে অর্থ জমা করতে লাগলো। 11 সিন্দুকটা ভরে গেলে লেবীয়রা সেটা রাজকর্মচারীদের কাছে নিয়ে গেল। যখন রাজার সচিব ও প্রধান যাজকের সহকারী সিন্দুক খালি করে তার থেকে যাবতীয় অর্থ বার করে নিলেন, ওটা আবার ভরে যাওয়া পর্যন্ত একই জায়গায় ফেরৎ‌ দেওয়া হয়েছিল। এইভাবে বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল। 12 রাজা যোয়াশ ও যিহোয়াদা দুজনে এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের তদারকির কাজ যাঁরা করতেন তাঁদের দিলেন। তারা প্রভুর মন্দির সারানোর জন্য সুদক্ষ পাথর কাটিয়ে ও ছুতোর মিস্ত্রি ভাড়া করলেন। এছাড়াও লোহা ও পিতলের কাজ জানা কারিগরদেরও ভাড়া করা হয়েছিল।

13 যারা প্রভুর মন্দির তদারকির কাজ করতো তারা সকলেই নিষ্ঠাবান ও সৎ‌ হওয়ায় ঈশ্বরের মন্দির পুনর্নির্মাণের কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল এবং প্রভুর মন্দিরকে ঠিক আগের মতো ও আরো দৃঢ় করে বানানো হয়। 14 কাজটি শেষ হলে কর্মচারীরা অবশিষ্ট অর্থ রাজা যোয়াশ ও যাজক যিহোয়াদার কাছে ফিরিয়ে আনলো। এই অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র বানানো ছাড়াও, এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের নিত্যসেবা ও হোমবলি নিবেদনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও এই অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে সোনা ও রূপোর পাত্র ও টুকিটাকি জিনিসপত্র বানানো হয়েছিল। যিহোয়াদার জীবদ্দশায় যাজকরা নিয়মিত প্রভুর মন্দিরে হোমবলি উৎসর্গ করতেন।

15 অবশেষে, যিহোয়াদা বৃদ্ধ হলেন এবং 130 বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হল। 16 লোকরা দায়ূদ নগরীতে রাজাদের সমাধি ক্ষেত্রে যিহোয়াদাকে সমাধিস্থ করেছিলেন কারণ তিনি ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও তাঁর মন্দিরের জন্য বহু ভাল ভাল কাজ করেছিলেন।

17 যিহোয়াদার মৃত্যুর পর, ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ রাজা যোয়াশকে অভ্যর্থনা করলেন এবং ধীরে ধীরে তাঁর স্তুতি করতে শুরু করলেন। যোয়াশ তাদের পরামর্শগুলি গ্রহণ করেছিলেন। 18 রাজা ও নেতারা, প্রভু তাঁদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের মন্দিরের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। পরিবর্তে, তারা আশেরার খুঁটি ও অন্যান্য ভ্রান্ত মূর্ত্তি পূজো শুরু করলেন। রাজা ও নেতাদের অপরাধের জন্য ঈশ্বর যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের ওপর ক্রুদ্ধ হলেন। 19 ঈশ্বর লোকদের মন তাঁর প্রতি ফিরিয়ে আনার জন্য ভাববাদীদের পাঠালেন। কিন্তু লোকরা সদুপদেশে কর্ণপাত পর্যন্ত করলো না।

20 তারপর ঈশ্বরের আত্মা যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়র ওপর ভর করলো। তিনি লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “ঈশ্বর এই কথা বলেছেন: ‘তোমরা কেন প্রভুর বিধিসমূহ ও আজ্ঞা অমান্য করছো? এভাবে তোমরা কখনোই কোনো কাজে কৃতকার্য হতে পারবে না। তোমরা প্রভুকে ত্যাগ করেছো, তাই তিনিও তোমাদের ত্যাগ করেছেন।’”

21 কিন্তু বিচারবুদ্ধিহীন লোকরা তখন একসঙ্গে চক্রান্ত করলো এবং রাজা যখন তাদের সখরিয়কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন, তারা পাথর ছুঁড়ে মন্দির চত্বরেই তাঁকে হত্যা করলো। 22 একবারও রাজা যোয়াশ তাঁর প্রতি সখরিয়র পিতা যাজক যিহোয়াদার করুণার কথা মনে করলেন না। মারা যাবার আগের মূহুর্তে সখরিয় বললেন, “প্রভু যেন তোমার এই অপরাধ দেখতে পান এবং তোমাকে এর যোগ্য শাস্তি দেন।”

23 এক বছরের মধ্যে অরামীয় সেনাবাহিনী এসে রাজা যোয়াশের রাজ্য আক্রমণ করলো। তারা যিহূদা ও জেরুশালেম আক্রমণ করল এবং সমস্ত নেতাদের হত্যা করবার পর সেনাবাহিনী যাবতীয় দুর্মূল্য জিনিসপত্র লুঠ করে দম্মেশকে রাজার কাছে সেগুলি পাঠিয়ে দিল। 24 অরামীয়রা ছোট সেনাবাহিনী নিয়ে এলেও প্রভু তাদের যিহূদার সেনাবাহিনী, যেটা তাদের সেনাবাহিনীর চেয়ে বড় ছিল, তাকে পরাজিত করতে দিলেন। কারণ যিহূদার লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিল। এইভাবে রাজা যোয়াশের শাস্তি বিধান হল। 25 অরামীয়রা যখন চলে গেল তখন তিনি ভীষণভাবে আহত। তাঁর নিজের ভৃত্যরাই তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাঁকে তাঁর বিছানায় হত্যা করলো। এরপর লোকরা তাঁকে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করলো, তবে তা রাজাদের জন্য নির্দিষ্ট সমাধি ক্ষেত্রে নয়। যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়কে হত্যা করার জন্যই যোয়াশের ভৃত্যরা তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল।

26 যোয়াশের বিরুদ্ধে যারা চক্রান্ত করেছিল তাঁরা হল অম্মোনের শিমিয়তের পুত্র সাবদ ও মোয়াবের শিম্রীতের পুত্র যিহোষাবদ। 27 যোয়াশের পুত্রদের গল্প, তাঁর বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী ও তিনি কিভাবে আবার প্রভুর মন্দির নবরূপে নির্মাণ করেছিলেন সেসব কথা রাজাদের সম্বন্ধে বিবরণী গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। যোয়াশের পর তাঁর পুত্র অমৎসিয় নতুন রাজা হলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International