Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 রাজাবলি 5-8

নামানের সমস্যা

অরামের রাজার সেনাপতি ছিল নামান। রাজার কাছে নামান ছিল একজন মহান এবং খুব শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি, কারণ প্রভু সব সময় তাঁর মাধ্যমে অরামকে বিজয়ের পথে নিয়ে যেতেন। নামান খুবই শক্তিশালী ও মহান হলেও তিনি কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত ছিলেন।

অরামীয়রা বহুবার ইস্রায়েলে যুদ্ধ করতে সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিল। এইসব সেনারা এখানকার লোকদের ক্রীতদাস করেও নিয়ে গিয়েছে। একবার তারা ইস্রায়েল থেকে একটা বাচ্চা মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়। কালক্রমে এই ছোট মেয়েটি নামানের স্ত্রীর এক দাসীতে পরিণত হয়। মেয়েটি নামানের স্ত্রীকে বলল, “মনিব শমরিয়ায় বাসকারী ভাববাদীর সঙ্গে দেখা করলে তিনি নিশ্চয়ই তাঁর কুষ্ঠরোগ সারিয়ে দিতেন।”

নামান তাঁর মনিবকে (অরামের রাজাকে) গিয়ে ইস্রায়েলীয় মেয়েটা কি বলেছে তা বললেন।

তখন অরামের রাজা বললেন, “ঠিক আছে, তুমি এখনই যাও। আমি ইস্রায়েলের রাজাকে একটা চিঠি দিচ্ছি।”

নামান তখন 750 পাউণ্ড রূপো, 6000 টুকরো সোনা আর দশ প্রস্থ পোশাক উপহার স্বরূপ নিলেন এবং ইস্রায়েলে গেলেন। নামানের সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজাকে লেখা অরামের রাজার চিঠিও ছিল যাতে লেখা ছিল, “আমি আমার সেবক নামানকে কুষ্ঠরোগ সারানোর জন্য আপনার কাছে পাঠালাম।”

চিঠিটা পড়ে ইস্রায়েলের রাজা মনোকষ্টে তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে বললেন, “আমি তো আর ঈশ্বর নই! জীবন-মৃত্যুর ওপর আমার যখন কোন হাত নেই, তখন কেন অরামের রাজা কুষ্ঠরোগাক্রান্ত একজনকে আমার কাছে সারিয়ে তোলার জন্য পাঠালেন? এটা খুবই স্পষ্ট যে তিনি একটি যুদ্ধ বাধাবার পরিকল্পনা করছেন!”

ঈশ্বরের লোক ইলীশায় খবর পেলেন শোকার্ত ইস্রায়েলের রাজা তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলেছেন। তখন তিনি রাজাকে খবর পাঠালেন: “তুমি কেন পোশাক ছিঁড়ে কষ্ট পাচ্ছ? নামানকে আমার কাছে আসতে দাও, তাহলে ও বুঝবে ইস্রায়েলে সত্যি সত্যিই একজন ভাববাদী বাস করে!”

নামান তখন তাঁর রথ ও ঘোড়া নিয়ে ইলীশায়ের বাড়ির বাইরে এসে দাঁড়ালেন। 10 ইলীশায় একজনকে দিয়ে খবর পাঠালেন, “যাও যর্দন নদীতে গিয়ে সাত বার স্নান করো, তাহলেই তোমার চামড়া ঠিক হয়ে যাবে আর তুমিও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে।”

11 নামান খুবই ক্রুদ্ধ হয়ে চলে গেলেন। তিনি বললেন, “আমি ভেবেছিলাম একবার অন্তত ইলীশায় বাইরে এসে তাঁর প্রভু ঈশ্বরের নাম নিয়ে আমার গায়ের ওপর হাত নেড়ে আমার কুষ্ঠরোগ সারিয়ে তুলবেন! 12 দম্মেশকের অবানা আর পর্পর নদীর জল ইস্রায়েলের যে কোন জলের থেকেই ভালো! ওই সব নদীতে গা ধুলে কেন হবে না?” নামান প্রচণ্ড রেগে গিয়ে ফিরে যাবেন বলে ঠিক করলেন।

13 কিন্তু নামানের ভৃত্যরা তাঁকে গিয়ে বললো, “মনিব, ভাববাদী যদি আপনাকে খুব শক্ত কিছু বলতেন, আপনি নিশ্চয়ই তা শুনতেন, তাই না? উনি যখন আপনাকে খুব সহজ একটা কাজ বলেছেন, সেটা অবশ্যই করা উচিৎ‌। উনি তো বলেই ছিলেন, ‘ধুলেই তুমি শুচি হয়ে যাবে।’”

14 নামান তখন ইলীশায়ের কথামতো, যর্দন নদীর জলে সাতবার ডুব দিলেন এবং নামানের দেহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিরাময় হয়ে উঠল। একেবারে শিশুদের ত্বকের মতোই নরম হয়ে গেল!

15 নামান আর তাঁর দলের সবাই তখন ইলীশায়ের কাছে ফিরে এলেন। ইলীশায়ের সামনে দাঁড়িয়ে নামান বললেন, “এতদিনে আমি বুঝলাম ইস্রায়েল ছাড়া পৃথিবীতে আর কোথাও কোন ঈশ্বর নেই! এখন আপনি অনুগ্রহ করে আমার কাছ থেকে একটা উপহার গ্রহণ করুন!”

16 কিন্তু ইলীশায় বললেন, “আমি প্রভুর সেবা করি এবং আমার প্রতিজ্ঞা, যতদিন প্রভু আছেন আমি কোন উপহার নিতে পারব না।”

নামান উপহার নেবার জন্য ইলীশায়কে অনেক অনুনয় বিনয় করেও টলাতে পারলেন না। 17 তখন নামান বললেন, “আপনি যখন নিতান্তই কোন উপহার নেবেন না, অন্তত আমাকে ইস্রায়েল থেকে দু-টুকরি এখানকার ধূলো আমার দুটো খচ্চরের পিঠে চাপিয়ে নিয়ে যেতে অনুমতি দিন। কারণ এরপর থেকে আমি আর কোন মূর্ত্তিকেই হোমবলি বা কোন নৈবেদ্য দেব না। আমি শুধুমাত্র প্রভুকেই বলিদান করব। 18 আর আমি আগে থাকতেই ক্ষমা চেয়ে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে নিচ্ছি: ভবিষ্যতে আমার মনিব অরামরাজ যখন রিম্মোণের মন্দিরের মূর্ত্তিকে পূজো দিতে যাবেন, তাঁর ওপর ভর নামবে বলে আমায় সেখানে মাথা নীচু করতেই হবে। কিন্তু প্রভু যেন সেজন্য আমাকে ক্ষমা করেন।”

19 ইলীশায় তখন নামানকে আশীর্বাদ করে বললেন, “যাও সুখে শান্তিতে থাকো।”

নামান যখন ইলীশায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কিছু দূর গিয়েছেন, 20 ইলীশায়ের ভৃত্য গেহসি বলল, “দেখেছো, আমার প্রভু কোন উপহার না নিয়েই অরামীয় নামানকে ছেড়ে দিলেন। আমি বরঞ্চ এই বেলা গিয়ে ওর কাছ থেকে কিছু হাতানোর ব্যবস্থা করি!” 21 এই বলে গেহসি নামানের পেছন পেছন দৌড়তে লাগল।

নামান যখন দেখতে পেলেন একজন কেউ ছুটতে ছুটতে আসছে তিনি তখন রথ থেকে নেমে গেহসিকে প্রশ্ন করলেন, “কি, সব ঠিক আছে তো?”

22 গেহসি বললো, “হ্যাঁ সব ঠিকই আছে। আমার মনিব আমাকে বলে পাঠালেন, ‘ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের ভাববাদীদের দলের দুজন এসেছে। অনুগ্রহ করে তাদের যদি 75 পাউণ্ড রূপো আর দু-প্রস্থ পোশাক-আশাক দাও তো বড়-ভালো হয়।’”

23 একথা শুনে নামান বললেন, “75 পাউণ্ড কেন? 150 পাউণ্ড নাও!” তারপর নামান দুটো বস্তায় 150 পাউণ্ড রূপো ভরে, তার সঙ্গে দু-প্রস্থ জামাকাপড় দিয়ে জোর করে তাঁর দুজন ভৃত্যকে গেহসির সঙ্গে পাঠালেন। 24 ভৃত্যরা এইসব জিনিস বয়ে পাহাড় পর্যন্ত নিয়ে আসার পর, গেহসি জিনিসগুলি নিয়ে ওদের ফেরৎ‌ পাঠিয়ে দিল। তারপর ও এই সমস্ত জিনিস বাড়িতে লুকিয়ে রাখলো।

25 গেহসি এসে মনিবের সামনে দাঁড়ানোর পর ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কোথায় গিয়েছিলে?”

গেহসি উত্তর দিল, “কোথাও না তো।”

26 ইলীশায় তখন বললেন, “শোন, নামান যখন রথ থেকে নেমে তোমার সঙ্গে দেখা করে, তখন আমার হৃদয় তোমার সঙ্গে ছিল, এটা টাকাপয়সা, জামাকাপড়, জলপাই কুঞ্জ, দ্রাক্ষা ক্ষেত, গরু, মেষ, দাস-দাসী নেবার সময় নয়। 27 এখন নামানের রোগ তোমার আর তোমাদের উত্তরপুরুষদের হবে। তোমাদের কুষ্ঠ হবে।”

গেহসি যখন ইলীশায়ের কাছ থেকে চলে গেল, তখন ওর গায়ের চামড়া বরফের মত সাদা হয়ে গেল।

ইলীশায় আর কুড়ুলের বৃত্তান্ত

তরুণ ভাববাদীরা ইলীশায়কে বলল, “আমরা ওখানে যে জায়গায় থাকি সেটা আমাদের পক্ষে বড্ড ছোট। চলুন যর্দন নদীর তীর থেকে কিছু কাঠ কেটে আনা যাক। আমরা প্রত্যেকে একটা করে গুঁড়ি নিয়ে এসে ওখানেই একটা থাকার জায়গা বানানো যাক।”

ইলীশায় বললেন, “বেশ তো, যাও না।”

ওদের একজন বললো, “আপনিও চলুন না আমাদের সঙ্গে।”

ইলীশায় বললেন, “ঠিক আছে, চলো আমিও যাচ্ছি।”

ইলীশায় তখন ওদের সঙ্গে যর্দন নদীর তীরে গেলেন। সেখানে গিয়ে তরুণ ভাববাদীরা সবাই গাছ কাটতে শুরু করলো। গাছ কাটার সময় একজনের কুড়ুলের লোহার ডগাটা হাতল থেকে পিছলে গিয়ে একেবারে জলে গিয়ে পড়লো। লোকটা চেঁচিয়ে উঠলো, “যাঃ! এখন কি হবে? প্রভু, আমি যে অন্য লোকের কুড়ুল ধার করে এনেছিলাম!”

ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “ঠিক কোথায় পড়েছে ওটা?”

লোকটা ইলীশায়কে জায়গাটা দেখানোর পর, তিনি একটা ছড়ি কেটে সেটা জলে ছুঁড়ে ফেললেন। এতে কুড়ুলের মাথাটা সেই ছড়ির সঙ্গে ভেসে উঠলো! ইলীশায় বললেন, “যাও ওটা তুলে নাও এবার।” কৃতজ্ঞ চিত্তে লোকটি কুড়ুলের মাথাটা তুলে নিল।

অরামের ইস্রায়েলকে ফাঁদে ফেলার চক্রান্ত

অরামের রাজা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন। তিনি তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে একটি পরিষদীয় বৈঠক করলেন। তিনি বললেন, “আমি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় শিবির স্থাপন করব।”

কিন্তু ঈশ্বরের লোকটি ইস্রায়েলের রাজাকে একটি খবর দিয়ে সতর্ক করে দিলেন, “ওখান দিয়ে যাতায়াত করো না! খুব সাবধান! কারণ ওখানে অরামীয় সেনাবাহিনীর লোকরা লুকিয়ে আছে!”

10 খবর পেয়ে ইস্রায়েলের রাজা সঙ্গে সঙ্গে যে জায়গা সম্পর্কে ইলীশায় তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, তাঁর লোকদের জানিয়ে দিলেন এবং তিনি তাঁর বাহিনীর অনেকের জীবন রক্ষা করতে পারলেন।

11 এঘটনায় অরামের রাজা খুবই বিচলিত হয়ে তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধানদের এক বৈঠকে ডেকে বললেন, “এখানে ইস্রায়েলের হয়ে কে গুপ্তচরের কাজ করছে বল?”

12 তখন অরামীয় সেনাপ্রধানদের একজন বললেন, “আমার মনিব এবং রাজা, আমাদের মধ্যে কেউই গুপ্তচর নয়! ইস্রায়েলের ভাববাদী ইলীশায়, ইস্রায়েলের রাজাকে অনেক গোপন খবরই দৈববলে জানিয়ে দিতে পারেন। এমন কি আপনি শোবার ঘরে যে সব কথাবার্তা বলেন তাও উনি জানতে পারেন!”

13 অরামের রাজা বললেন, “আমি লোক পাঠাচ্ছি। এই ইলীশায়কে খুঁজে বার করতেই হবে!”

ভৃত্যরা রাজাকে খবর দিল, “ইলীশায় এখন দোথনে আছেন!”

14 অরামের রাজা তখন রথবাহিনী, ঘোড়া ইত্যাদি সহ সেনাবাহিনীর একটা বড় দল দোথনে পাঠালেন। তারা রাতারাতি সেখানে এসে শহরটাকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে ফেললো। 15 সেই দিন, ঈশ্বরের লোকটির ভৃত্য খুব ভোরে উঠে পড়ল, বাইরে গিয়ে দেখে ঘোড়া রথসহ বিরাট এক সেনাবাহিনী শহরের চারপাশ ঘিরে আছে!

সে ছুটে গিয়ে ঈশ্বরের লোককে জিজ্ঞেস করল, “প্রভু আমরা এখন কি করব?”

16 ইলীশায় বললেন, “ভয় পেও না! আমাদের জন্য যে সেনাবাহিনী যুদ্ধ করে তা অরামের সেনাবাহিনীর থেকে অনেক বড়!”

17 ইলীশায় তারপর প্রার্থনা করে বললেন, “হে প্রভু, আমার ভৃত্যের চক্ষু উন্মিলীত কর যাতে ও দেখতে পায়।”

যেহেতু প্রভু সেই তরুণ ভৃত্যকে অলৌকিক দৃষ্টি দিলেন, ও দেখতে পেল, গোটা শহরটা শত সহস্র ঘোড়া আর আগুনের রথে ভরে রয়েছে! ইলীশায়কে ঘিরে আছে এই বাহিনী।

18 এই সুবিশাল বাহিনী ইলীশায়ের আদেশের অপেক্ষায় নেমে এলে, তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “তুমি ঐসব সেনার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নাও।”

ইলীশায়ের প্রার্থনা মতো প্রভু তখন অরামীয় সেনাবাহিনীর দৃষ্টিশক্তি হরণ করলেন। 19 ইলীশায় অরামীয় সেনাবাহিনীকে ডেকে বললেন, “এটা সঠিক পথ বা শক্ত শহর নয়। আমার সঙ্গে সঙ্গে এসো। তোমরা যাকে খুঁজছো, আমি তোমাদের তার কাছে পৌঁছে দেব চল।” একথা বলে ইলীশায় তাদের শমরিয়ায় নিয়ে গেলেন।

20 শমরিয়ায় পৌঁছনোর পর ইলীশায় বললেন, “প্রভু এবার ওদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দাও যাতে ওরা আবার দেখতে পায়।”

প্রভু তখন তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলে অরামীয় সেনাবাহিনী দেখলো তারা সকলে শমরিয়া শহরের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। 21 ইস্রায়েলের রাজা অরামীয় সেনাবাহিনীকে দেখার পর ইলীশায়কে জিজ্ঞেস করলেন, “হে আমার পিতা, আমি কি এদের হত্যা করব?”

22 ইলীশায় বললেন, “না, ওদের তুমি হত্যা করো না। যুদ্ধে তরবারি আর তীর-ধনুকের বলে যাদের তুমি বন্দী করবে, তাদের হত্যা করবে না। অরামীয় সেনাদের এখন রুটি আর জল পান করতে দাও। খাওয়া-দাওয়া হলে ওদের রাজার কাছে ওদের বাড়ীতে ফেরৎ‌ পাঠিয়ে দিও।”

23 তখন ইস্রায়েলের রাজা অরামীয় সেনাবাহিনীর জন্য অনেক খাবার বানালেন। অরামের সেনারা সে সব খাবার পর মহারাজ তাদের নিজেদের বাড়িতে ফেরৎ‌ পাঠিয়ে দিলেন। অরামীয় সেনাবাহিনী তাদের মনিবের কাছে দেশে ফিরে গেল। এরপর আর কখনও অরামীয়রা লুঠপাট চালানোর জন্য ইস্রায়েলে কোন সেনাবাহিনী পাঠায় নি।

শমরিয়ায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ

24 এই ঘটনার পর, অরামের রাজা বিন্‌হদদ তাঁর সমস্ত সেনাবাহিনী জড়ো করে শমরিয়া শহরকে ঘেরাও করে আক্রমণ করতে যান। 25 অরামীয় সেনারা লোকদের বাইরে থেকে শহরে খাবার আনতে দিচ্ছিল না। ফলে শমরিয়ায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হল। খাবারের দাম এতো বেশী ছিল যে গাধার মাথা কিনতে দিতে হচ্ছিল 80 টুকরো রৌপ্য মুদ্রা, এমনকি ঘুঘু পাখীর বিষ্ঠাও বিক্রি হচ্ছিল পাঁচ টুকরো রৌপ্য মুদ্রায়।

26 ইস্রায়েলের রাজা শহরের চারপাশের প্রাচীরের ওপর পায়চারি করছিলেন, হঠাৎ‌‌ এক মহিলা চেঁচিয়ে উঠলো, “হে রাজন, দয়া করে আমার প্রাণ বাঁচান!”

27 তখন ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “প্রভু যদি নিজে তোমাকে রক্ষা না করেন, আমি কি করতে পারি বল? তোমাকে দেবার মতো আমার কিছুই নেই। এমনকি শস্য মাড়াইয়ের জমিতেও কোন শস্য নেই বা দ্রাক্ষা পেষার যন্ত্র থেকেও দ্রাক্ষারস নেই।” 28 তা যাকগে, “তোমার সমস্যাটা কি বলো?”

মহিলা উত্তর দিলেন, “দেখুন ঐ মহিলাটি আমায় বলেছিল, ‘আজকে তোমার ছেলেটাকে দাও, মেরে খাওয়া যাক। কাল আমারটাকে খাওয়া যাবে।’ 29 তখন আমরা আমার ছেলেটাকে সেদ্ধ করে খেলাম। আর পরের দিন আমি খাবার জন্য ওর ছেলেটাকে আনতে গিয়ে দেখি, ও ওর ছেলেটাকে লুকিয়ে ফেলেছে!”

30 একথা শুনে রাজা অত্যন্ত মনোকষ্টে, শোক প্রকাশের জন্য নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন। দেওয়ালের ওপর দিয়ে যাবার সময়, লোকরা দেখতে পেল মহারাজ তাঁর পোশাকের তলায় শোক প্রকাশের চটের জামা পরে আছেন।

31 রাজা তখন মনে মনে বললেন, “এসবের পরেও যদি আজ বিকেল পর্যন্ত শাফটের পুত্র ইলীশায়ের ধড়ে মুণ্ডুটা আস্ত থাকে, তবে যেন ঈশ্বর আমাকে শাস্তি দেন!”

32 রাজা ইলীশায়ের কাছে একজন বার্তাবাহক পাঠালেন। ইলীশায় আর প্রবীণরা তখন ইলীশায়ের বাড়ীতে এক সঙ্গে বসেছিলেন। ইলীশায় প্রবীণদের বললেন, “দেখো খুনীর বেটা রাজা, আমার মুণ্ডু কাটার জন্য লোক পাঠিয়েছে! দূত এলে দরজাটা বন্ধ করে দিও, ওকে কিছুতেই ভেতরে ঢুকতে দেবে না। ওর পেছন পেছন ওর মনিবের পায়ের আওয়াজ পাচ্ছি আমি!”

33 ইলীশায় যখন এসব কথাবার্তা বলছেন, বার্তাবাহক খবরটা নিয়ে পৌঁছল। খবরটা হল: “প্রভু যখন স্বয়ং এই বিপদ ডেকে এনেছেন তখন আমি কেন আর প্রভুর ওপর বিশ্বাস রাখব?”

ইলীশায় বললেন, “প্রভুর বার্তা শোন! প্রভু বলেন: ‘আগামীকাল এ সময়ের মধ্যেই শমরিয়া শহরের ফটকগুলোর পাশের বাজারে এক টুক্রি মিহি ময়দা অথবা দু টুক্‍রি যব কেবলমাত্র এক শেকেল দিয়ে কিনতে পাওয়া যাবে।’”

রাজার ঠিক পাশেই যে সেনাপতি ছিল সে বলে উঠল, “প্রভু যদি স্বর্গে ছেঁদা করার ব্যবস্থাও করেন, তাহলেও আপনি যা বলছেন তা ঘটা অসম্ভব!”

ইলীশায় বললেন, “সম্ভব কি অসম্ভব তা তুমি নিজের চোখেই দেখতে পাবে। তবে তুমি ঐ খাবার ছুঁতেও পারবে না।”

কুষ্ঠরোগীরা দেখল অরামীয় শিবির শূন্য

শহরের প্রবেশদ্বারের কাছে চার জন কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তারা একে অপরকে বলল, “এখানে আমরা না খেয়ে শুকিয়ে মরছি কেন? শমরিয়ায় তো একদানা খাবারও নেই। শহরে গেলেও আমরা মরব, এখানে থাকলেও মারা পড়ব। তার চেয়ে চল অরামীয়দের তাঁবুর দিকে যাওয়া যাক। ওরা চাইলে আমরা বেঁচেও যেতে পারি, আর নয়তো মরতে হবে।”

কথা মতো সেদিন বিকেলবেলা কুষ্ঠরোগীরা অরামীয়দের তাঁবুতে গিয়ে উপস্থিত হল। তাঁবুর কাছাকাছি এসে ওরা দেখল, ধারে কাছে কেউই নেই! প্রভুর মহিমায়, অরামীয় সেনাবাহিনীর লোকরা বাইরে রথবাহিনী, ঘোড়া-টোড়া নিয়ে বিশাল এক সেনাবাহিনীর এগিয়ে আসার আওয়াজ শুনে ভেবেছিল, “নিশ্চয়ই ইস্রায়েলের রাজা হিত্তীয় আর মিশরীয় রাজাকে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ভাড়া করে এনেছে!”

তাই অরামীয়রা সেদিন বিকেল-বিকেলই তাঁবু, ঘোড়া, গাধা সব কিছু পেছনে ফেলেই প্রাণের দায়ে পালিয়ে গেল।

শত্রুশিবিরে কুষ্ঠরোগী

তারপর শত্রুশিবিরে এসে কুষ্ঠরোগীরা একটা তাঁবুতে ঢুকে প্রাণভরে খাওয়া-দাওয়া করল। তারপর চারজন মিলে তাঁবু থেকে সোনা, রূপো, পোশাক-আশাক বার করে নিয়ে সে সব লুকিয়ে রাখল। তারপর চার জন আরেকটা তাঁবু থেকেও এইভাবে জিনিসপত্র সরানোর পর বলাবলি করল, “আমরা খুব অন্যায় করছি। এতো বড় একটা সুখবর পাওয়ার পরেও আমরা চুপচাপ আছি। আমরা যদি এভাবে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খবরটা চেপে থাকি, আমাদের শাস্তি পেতে হবে। এখন চলো গিয়ে রাজবাড়ীর লোকদের খবরটা দেওয়া যাক।”

কুষ্ঠরোগীরা সুখবর দিল

10 এই কুষ্ঠরোগীরা তখন এসে শহরের প্রহরীদের ডাকাডাকি শুরু করল। তারা প্রহরীদের বলল, “আমরা অরামীয়দের শিবিরে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে কাউকে দেখতে পেলাম না। এমন কি কারো কোন সাড়া-শব্দ অবধি পেলাম না। কোন লোক জন সেখানে নেই। কিন্তু তাঁবুর ভেতরে ঘোড়া, গাধা যেমনকার তেমন বাঁধা আছে। অথচ লোক জন কেউ নেই, সব ফাঁকা।”

11 প্রহরীরা তখন চেঁচিয়ে রাজবাড়ীর লোকদের এখবর দিল। 12 কিন্তু তখন রাত্রি। রাজামশাই বিছানা ছেড়ে উঠে সেনাপতিদের বললেন, “আমি অরামীয় সেনাদের মতলবটা বুঝতে পেরেছি। ওরা জানে আমরা খুবই ক্ষুধার্ত। তাই তাঁবু ফাঁকা করে ঘাপটি মেরে মাঠে লুকিয়ে ভাবছে, ‘ইস্রায়েলীয়রা শহর থেকে এসে হানা দিলেই ওদের জ্যান্ত পাকড়াবো। তখন আবার আমাদের পিছু হটতে হবে।’”

13 রাজার একজন সেনাপতি বলল, “পাঁচটা ঘোড়া নিয়ে গিয়ে কয়েক জন ব্যাপারটা সরেজমিনে দেখেই আসুক না! ঐ পাঁচটা ঘোড়া তো আমাদের মতোই শেষ অবধি না খেয়ে মরবে। কিন্তু আসল কথাটা জানা দরকার।”

14 তারা ঘোড়াসহ দুটি রথ বেছে নিল এবং রাজা তাদের অরামীয় সৈন্যবাহিনীর পরে পাঠালেন। তিনি বললেন, “যাও, দেখে এসো কি হয়েছে।”

15 এরা যর্দন নদীর তীর পর্যন্ত অরামীয় সেনাদের সন্ধানে গিয়ে দেখল, সারাটা পথে জামাকাপড় আর অস্ত্র শস্ত্র ছড়িয়ে আছে। তাড়াহুড়ো করে পালানোর সময় অরামীয় সেনারা এই সমস্ত জিনিস ফেলে গেছে।

16 সকলের জন্যই অপর্যাপ্ত জিনিসপত্র ছড়িয়ে আছে। ঠিক যেন প্রভু যেমনটি বলেছিলেন, এক পয়সায় এক টু‍ক্রি মিহি ময়দা আর দু-টুক্রি যবের গুঁড়ো পাওয়া যাবে!

17 রাজা তাঁর ঘনিষ্ঠ একজন সেনাপতিকে, সেই যিনি আগে স্বর্গ ছেঁদা করার কথা বলেছিলেন, শহরের দরজা আগলানোর দায়িত্ব দিলেন। কিন্তু ততক্ষণে লোকরা শত্রু শিবির থেকে খাবার আনার জন্য দৌড়েছে। উন্মত্ত জনতা সেই সেনাপতিকে ঠেলে, মাড়িয়ে, পিষে চলে গেল। রাজার বাড়ীতে দেখা করতে আসার পর ইলীশায় যা দৈববাণী করেছিলেন সে সবই অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল। 18 ইলীশায় বলেছিলেন, “যে কোন ব্যক্তি শমরিয়ার প্রবেশদ্বারে বাজার থেকে এক শেকেলে এক ঝুড়ি মিহি ময়দা অথবা দুই ঝুড়ি যব কিনতে পারে।” 19 কিন্তু ঐ আধিকারিক ঈশ্বরের লোককে উত্তর দিল, “এমনকি প্রভু যদি স্বর্গে জানালা তৈরী করেন, তবু এ ঘটনা ঘটবে না!” এবং ইলীশায় আধিকারিককে বললেন, “তুমি তোমার নিজের চোখে দেখবে, কিন্তু ঐ খাবার তুমি খাবে না।” 20 আধিকারিকের সঙ্গে একই ঘটনা ঘটল, লোকেরা তাকে ধাক্কা মেরে ফটকের উপর ফেলে তার উপর দিয়ে হেঁটে গেল এবং সে মারা গেল।

রাজা ও শূনেমীয় মহিলাটি

এক দিন ইলীশায় সেই মহিলাটিকে ডাকলেন যার পুত্রকে তিনি বাঁচিয়ে তুলেছিলেন। তাকে বললেন, “তুমি ও তোমার বাড়ীর সবাই এই দেশ ছেড়ে চলে যাও, কারণ প্রভুর ইচ্ছানুসারে এখানে এখন সাত বছর ধরে দুর্ভিক্ষ চলবে।”

ভাববাদী ইলীশায়ের নির্দেশ মতো সেই মহিলা ও তার পরিবারের লোকরা দেশ ছেড়ে সাত বছর পলেষ্টীয়দের দেশে গিয়ে থাকল। তারপর সাত বছর সময় কেটে গেলে আবার সেখান থেকে ফিরে এল।

ফিরে আসার পর মহিলা মহারাজের কাছে তার জমি ও বাড়ি ফিরে পাবার ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনার জন্য কথাবার্তা বলতে যায়।

মহারাজ তখন ইলীশায়ের ভৃত্য গেহসির সঙ্গে কথা বলছিলেন। তিনি গেহসিকে জিজ্ঞেস করছিলেন, “ইলীশায় যেসব অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটিয়েছেন, তুমি আমাকে সে সবের কথা বল।”

ইলীশায় কিভাবে এক মৃত ব্যক্তিকে জীবনদান করেছিলেন গেহসি মহারাজকে সে কথা বলছিল। সে সময় এই মহিলা, যার ছেলেকে ইলীশায় বাঁচিয়ে তুলেছিলেন, জমি ও বাড়ীর ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনা করতে রাজার সঙ্গে দেখা করতে গেল। তাকে দেখেই গেহসি বলে উঠল, “আমার মনিব এবং রাজা এ কি কাণ্ড! এই সেই মহিলা, আর ঐ সেই ছেলে যাকে ইলীশায় বাঁচিয়ে তুলেছিলেন!”

রাজা মহিলাকে, সে কি চায় তা জিজ্ঞেস করলে, মহিলা তাঁকে সব কিছু জানাল।

রাজা এক রাজকর্মচারীকে ডেকে নির্দেশ দিলেন, “শোনো, ওর যা ন্যায্য প্রাপ্য তা ওকে ফিরিয়ে তো দেবেই, আর তাছাড়া ও যেদিন থেকে দেশ ছেড়ে গিয়েছে, তার পরদিন থেকে ওর জমিতে উৎপন্ন শস্যও যেন ওকে দেওয়া হয়।”

বিন্‌হদদ হসায়েলকে ইলীশায়ের কাছে পাঠালেন

একবার অরামের রাজা বিন্‌হদদের অসুস্থতার সময় ইলীশায় দম্মেশকে আসেন। বিন্‌হদদকে একজন একথা জানালে তিনি হসায়েলকে বললেন,

“একটা কোন উপহার নিয়ে গিয়ে এই ভাববাদীর সঙ্গে দেখা করে প্রভুকে জিজ্ঞেস করতে বলো, আমি সুস্থ হয়ে উঠব কি না।”

হসায়েল তখন দম্মেশকে যা যা ভাল জিনিসপত্র পাওয়া যায় উপহার হিসেবে সে সব নিয়ে ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি যা উপহার নিয়েছিলেন সে সব বয়ে নিয়ে যেতে 40টা উট লেগেছিল! হসায়েল ইলীশায়কে গিয়ে বললেন, “আপনার অনুগামী অরামের রাজা বিন্‌হদদ আমাকে পাঠিয়েছেন। তাঁর জিজ্ঞাস্য, তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন কি না।”

10 তখন ইলীশায় হসায়েলকে বললেন, “তুমি গিয়ে বিন্‌হদদকে বল, ‘উনি বেঁচে থাকবেন,’ কিন্তু যদিও প্রভু আমাকে বলেছেন, ‘ওর মৃত্যু হবে।’”

হসায়েল সম্পর্কে ইলীশায়ের ভবিষ্যৎবাণী

11 ইলীশায় তারপর অনেক ক্ষণ একদৃষ্টে হসায়েলের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। এতে হসায়েল লজ্জিত বোধ করছিলেন। এরপর ঈশ্বরের লোক কাঁদতে শুরু করলেন। 12 হসায়েল আর থাকতে না পেরে জিজ্ঞেস করলেন, “মহাশয় আপনি কাঁদছেন কেন?”

ইলীশায় বললেন, “আমি কাঁদছি, কারণ আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তুমি ইস্রায়েলীয়দের কি কি ক্ষতি করবে! তুমি তাদের সুদৃঢ় শহরগুলো পুড়িয়ে দেবে, ধারালো তরবারি দিয়ে একের পর এক ইস্রায়েলীয় যুবক ও শিশুকে হত্যা করবে, ওদের গর্ভবতী মহিলাদের কেটে দু টুকরো করবে।”

13 হসায়েল বললেন, “আমার সে অধিকার বা ক্ষমতা কোনটাই নেই! আমার দ্বারা এসব ভয়ঙ্কর কাজ কখনও হবে না!”

ইলীশায় উত্তর দিলেন, “প্রভু আমাকে দেখালেন তুমি এক দিন অরামের রাজা হবে।”

14 তারপর হসায়েল ইলীশায়ের কাছ থেকে তার রাজার কাছে ফিরে এলে, বিন্‌হদদ প্রশ্ন করলেন, “ইলীশায় তোমাকে কি বললেন?”

হসায়েল জবাব দিলেন, “আপনি বেঁচে থাকবেন।”

হসায়েল বিন্‌হদদকে হত্যা করলেন

15 ঠিক তার পরের দিনই, হসায়েল একটা মোটা কাপড় জলে ডুবিয়ে, সেটাকে বিন্‌হদদের মুখের ওপর বিছিয়ে দিয়ে তাঁর শ্বাসরোধ করলেন। বিন্‌হদদের মৃত্যু হলে হসায়েল নতুন রাজা হলেন।

যিহোরাম তাঁর শাসন কার্য শুরু করলেন

16 যিহোশাফটের পুত্র যিহোরাম ছিলেন যিহূদার রাজা। আহাবের পুত্র ইস্রায়েলের রাজা যোরামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে যিহোরাম, যিহূদার সিংহাসনে বসেন। 17 তিনি যখন সিংহাসনে বসেন তখন তাঁর বয়স ছিল 32 বছর। যিহোরাম আট বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। 18 কিন্তু যিহোরাম ইস্রায়েলের অন্যান্য রাজাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রভুর বিরুদ্ধে বহু পাপ আচরণ করেন। যিহোরাম আহাবের পরিবারের লোকদের মতোই জীবনযাপন করতেন কারণ তাঁর স্ত্রী ছিলেন আহাবেরই কন্যা। 19 কিন্তু প্রভু তাঁর দাস দায়ূদকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যিহূদাকে ধ্বংস করেন নি। প্রভু দায়ূদকে কথা দিয়েছিলেন সেখানে সব সময়ই তাঁর বংশের কেউ না কেউ রাজা হিসেবে শাসন করবে।

20 যিহোরামের রাজত্ব কালে ইদোম যিহূদার অধীনতা অস্বীকার করে, যিহূদার রাজত্ব থেকে ভেঙে বেরিয়ে যায় এবং সেখানকার লোকরা নিজেদের আলাদা রাজা ঠিক করে নেয়।

21 তখন যিহোরাম তাঁর সমস্ত রথ নিয়ে সায়ীরে গেলে, ইদোমীয় সৈন্যরা তাঁদের ঘিরে ফেলে। তখন যিহোরাম ও তাঁর সেনাপতিরা ইদোমীয়দের আক্রমণ করলেন এবং পালিয়ে গেলেন। যিহোরামের সেনারা সব পালিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। 22 অর্থাৎ‌ ইদোমীয়রা যিহূদার শাসন থেকে ভেঙ্গে বেরিয়ে এলো এবং আজ পর্যন্ত তারা স্বাধীন আছে।

একই সময় লিব‌্নাও যিহূদার শাসন থেকে বেরিয়ে এসেছিল।

23 যিহোরাম যা যা করেছিলেন সে সবই যিহূদার রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।

24 যিহোরামের মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল এবং নতুন রাজা হলেন যিহোরামের পুত্র অহসিয়।

অহসিয় তাঁর শাসনকার্য শুরু করলেন

25 আহাবের পুত্র যোরামের ইস্রায়েলে রাজত্বের 12 বছরে যিহোরামের পুত্র অহসিয় যিহূদার রাজা হন। 26 অহসিয় যখন রাজা হন তাঁর বয়স ছিল 22 বছর। তিনি এক বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মা অথলিয়া ছিলেন ইস্রায়েলের রাজা অম্রির নাতনি। 27 প্রভু যা যা নিষেধ করেছিলেন, আহাবের পরিবারবর্গের মতো সে সমস্ত খারাপ কাজই অহসিয় করেছিলেন। এর কারণ অহসিয়র স্ত্রী ছিলেন আহাবের পরিবারেরই মেয়ে।

হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আহত হলেন যোরাম

28 যোরাম ছিলেন আহাবের পরিবারের সদস্য। অহসিয় যোরামকে নিয়ে রামোৎ-গিলিয়দে অরামের রাজা হসায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে আহত হন। অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যখন তিনি যুদ্ধ করেছিলেন, অরামীয়রা রামোতে তাঁকে আহত করেছিলেন। সেই আঘাত থেকে সেরে ওঠার জন্য 29 রাজা যোরাম ইস্রায়েলের যিষ্রিয়েলে চলে যান। যিহোরামের পুত্র যিহূদার রাজা অহসিয় তখন যিষ্রিয়েলে যোরামকে দেখতে গিয়েছিলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International