Chronological
বিচারক তোলয়
10 অবীমেলকের মৃত্যুর পর ইস্রায়েলীয়দের বাঁচানোর জন্য ঈশ্বর আর একজন বিচারককে পাঠালেন। তার নাম তোলয়। তার পিতার নাম পূয়া। পূয়ার পিতার নাম দোদয়। তোলয় ইষাখর পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিল। থাকত শামীর শহরে। শহরটা ইফ্রয়িমের পাহাড়ের দেশে অবস্থিত। 2 তোলয় 23 বছর ধরে ইস্রায়েলবাসীদের বিচারক ছিল। মৃত্যুর পর তাকে শামীর শহরে কবর দেওয়া হয়েছিল।
বিচারক যায়ীর
3 তোলয়ের মৃত্যুর পর ঈশ্বর যায়ীরকে বিচারক করে পাঠালেন। যায়ীর গিলিয়দে থাকতো। 22 বছর যায়ীর ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিল। 4 তার 30 জন পুত্র ছিল। তারা 30টি গাধায় চড়ে বেড়াত। তারা গিলিয়দের 30টি শহরের দেখাশোনা করত। এমনকি আজও সবাই এই শহরগুলোকে যায়ীরের শহর বলেই জানে। 5 যায়ীর মারা গেলে তাকে কামোন শহরে কবর দেওয়া হল।
অম্মোনীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল
6 প্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ সেই পাপকর্মে আবার ইস্রায়েলবাসীরা রত হল। তারা বাল আর অষ্টারোতের মূর্ত্তির পূজা করতে লাগল। সেই সঙ্গে তারা অরাম, সীদোন, মোয়াব, অম্মোন এবং পলেষ্টীয় দেবতাদের পূজা করত। ইস্রায়েল তাদের প্রকৃত প্রভুকে ত্যাগ করল আর তাঁর সেবা বন্ধ করল।
7 তাই প্রভু ইস্রায়েলীয়দের ওপর ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি পলেষ্টীয় ও অম্মোনদের ইস্রায়েলবাসীদের পরাজিত করবার জন্য অনুমতি দিলেন। 8 ঐ বছরেই যর্দন নদীর পূর্বদিকে গিলিয়দ অঞ্চলে যেসব ইস্রায়েলীয় থাকত তাদের ওরা হারিয়ে দিল। এই অঞ্চলেই ছিল ইমোরীয়দের বাস। এইসব ইস্রায়েলবাসীরা 18 বছর দুঃখ কষ্ট ভোগ করেছিল। 9 অম্মোনরা তারপর যর্দন পেরিয়ে যিহূদা, বিন্যামীন আর ইফ্রয়িমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেল। অম্মোনদের উৎপীড়নের কারণে ইস্রায়েলীয়দের প্রভূত দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল।
10 এখন ইস্রায়েলীয়রা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডাকতে লাগল। তারা বলল, “হে ঈশ্বর, আমরা আপনার বিরুদ্ধে পাপ করেছি। আমরা আমাদের প্রভুকে ত্যাগ করে বালের মূর্ত্তি পূজা করেছি।”
11 প্রভু তাদের বললেন, “যখন মিশরীয়, ইমোরীয়, অম্মোনীয় এবং পলেষ্টীয় লোকরা তোমাদের মেরে ফেলছিল, তোমরা আমার কাছে এসে কেঁদেছিলে। আর আমি তোমাদের তাদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলাম। 12 তারপর সীদোনীয়, অমালেকীয় আর মায়োনীয়রা যখন তোমাদের আক্রমণ করল, তখনও তোমাদের আমি বাঁচিয়েছি। 13 কিন্তু তারপর তোমরা আমাকে ছেড়ে অন্য দেবতাদের পূজায় মেতেছিলে। তাই এবার আর তোমাদের কথা শুনব না। 14 যাও তাদের কাছেই গিয়ে সাহায্য চাও। তোমাদের বিপদে ঐসব দেবতাই এবার তোমাদের রক্ষা করুক।”
15 কিন্তু ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুকে বলল, “আমরা পাপ করেছি। আপনি আমাদের প্রতি যা ইচ্ছা হয় করুন। কিন্তু প্রভু দয়া করুন, শুধুমাত্র আজকের জন্য আমাদের রক্ষা করুন।” 16 এই বলে তারা সমস্ত মূর্ত্তি ছুঁড়ে ফেলে দিল। আবার তারা প্রভু ঈশ্বরের উপাসনা করতে শুরু করল। অগত্যা প্রভু তাদের কষ্ট দেখলেন ও বেদনাবোধ করলেন।
যিপ্তহ নেতা মনোনীত হল
17 অম্মোনরা যুদ্ধের জন্য তৈরী হল। তাদের শিবির ছিল গিলিয়দে। ইস্রায়েলবাসীরাও সব এক জায়গায় জড়ো হল। তাদের শিবির হল মিস্পা শহরে। 18 গিলিয়দের নেতারা বলল, “অম্মোনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যে আমাদের নেতৃত্ব দেবে সেই হবে গিলিয়দবাসীদের প্রধান নেতা।”
11 গিলিয়দ পরিবারগোষ্ঠীর একজন হচ্ছে যিপ্তহ। সে খুব শক্তিশালী যোদ্ধা। কিন্তু সে গণিকার পুত্র। তার পিতার নাম ছিল গিলিয়দ। 2 গিলিয়দের নিজের স্ত্রীর অনেকগুলো পুত্র। পুত্ররা বড় হয়ে যিপ্তহকে দেখতে পারত না। তারা তাকে শহর ছাড়া করল। তারা যিপ্তহকে বলল, “তুমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির এক কানাকড়িও পাবে না, কারণ তুমি আমাদের মায়ের পেটের ভাই নও। তুমি অন্য নারীর সন্তান।” 3 ভাইদের কথায় যিপ্তহ শহর ছেড়ে চলে গেল। সে টোব দেশে বাস করত। টোবে কিছু শক্তিশালী লোক যিপ্তহকে অনুসরণ করতে লাগল।
4 কিছুদিন পরে অম্মোনরা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ চালাতে লাগল। 5 গিলিয়দের নেতারা যিপ্তহের কাছে গেল তাকে ফিরে আসার জন্য অনুনয় করতে। তারা যিপ্তহকে টোব ছেড়ে গিলিয়দে ফিরে আসতে বলল।
6 নেতারা যিপ্তহকে বলল, “তুমি আমাদের কাছে এসে আমাদের নেতা হও। তোমার নেতৃত্বে আমরা অম্মোনদের সঙ্গে লড়াই করবো।”
7 যিপ্তহ তাদের বলল, “তোমরাই তো আমাকে ভিটেছাড়া করেছিলে। তোমরা তো আমায় ঘৃণা কর। তাহলে এখন কেন আবার বিপদে পড়েছো বলে আমার কাছে এসেছ?”
8 তারা বলল, “এই কারণেই আমরা তোমার কাছে এসেছি। দয়া করো। আমাদের মধ্যে তুমি এসো, অম্মোনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাও। তুমিই গিলিয়দের অধিবাসীদের সেনাপতি হবে।”
9 যিপ্তহ বলল, “বেশ, যদি তোমরা চাও যে আমি গিলিয়দে ফিরে আসি এবং অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করি ভালো কথা। প্রভুর সহায়তায় যদি আমি জিতি তাহলে আমিই হবো তোমাদের নতুন নেতা।”
10 গিলিয়দের নেতারা বলল, “আমরা যে সব কথা বলেছি প্রভু সবই শুনছেন। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তুমি যা করতে বলবে আমরা তাই করব।”
11 অগত্যা যিপ্তহ তাদের সঙ্গে চলে গেল। তারা যিপ্তহকে তাদের নেতা ও সেনাপতি করে দিলে মিস্পা শহরে প্রভুর সামনে যিপ্তহ আর একবার তার কথাগুলো শুনিয়ে দিল।
অম্মোনের রাজার কাছে যিপ্তহর বার্তা
12 অম্মোনদের রাজার কাছে যিপ্তহ কয়েকজন বার্তাবাহক পাঠাল। বার্তাবাহকরা রাজার কাছে এই বার্তা শোনাল, “অম্মোনবাসী আর ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে সমস্যাটা কি? কেন তোমরা আমাদের দেশে যুদ্ধ করতে এসেছ?”
13 রাজা তাদের বলল, “ইস্রায়েলের সঙ্গে আমাদের লড়াই জারি রয়েছে কারণ ওরা মিশর থেকে চলে আসার সময় আমাদের সমস্ত জমিজায়গা কেড়ে নিয়েছে। অর্ণোন নদী থেকে যব্বোক নদী এবং যর্দন নদী পর্যন্ত আমাদের যত জমি আছে, সব ওরা নিয়ে নিয়েছে। এখন যাও ইস্রায়েলীয়দের গিয়ে বলো, আমাদের জায়গাগুলো যেন কোনো ঝামেলা না করে ফিরিয়ে দেয়।”
14 দূতরা যিপ্তহর কাছে এই কথা শোনাল। তারপর যিপ্তহ আবার তাদের অম্মোনদের রাজার কাছে পাঠাল। 15 তারা যে বার্তা নিয়ে গেল তা এরকম:
“যিপ্তহ এই কথা বলেন: ইস্রায়েল মোয়াব বা অম্মোনদের কোন জায়গা নেয়নি। 16 ইস্রায়েলীয়রা যখন মিশর থেকে চলে আসে তখন তারা মরুভূমিতে ছিল। সেখান থেকে গেল লোহিত সাগরে। তারপর কাদেশে। 17 ইস্রায়েলীয়রা ইদোমের রাজার কাছে দূত পাঠাল। দূতরা সাহায্য চাইল। তারা বলল, ‘ইস্রায়েলীয়দের তোমাদের দেশের ওপর দিয়ে যেতে দাও।’ কিন্তু ইদোমের রাজা আমাদের যেতে দিল না। মোয়াবের রাজার কাছেও আমরা একই রকম বার্তা পাঠালাম। সেও তার দেশের ওপর দিয়ে আমাদের যেতে দিল না। অগত্যা ইস্রায়েলীয়রা কাদেশেই থেকে গেল।
18 “তারপর ইস্রায়েলীয়রা মরুভূমি দিয়ে আর ইদোম ও মোয়াব দেশের পাশ দিয়ে যেতে লাগল। তারা মোয়াবের পূর্বদিকে গিয়ে অর্ণোন নদীর ওপারে তাঁবু গাড়ল। মোয়াবের সীমানা তারা পেরোল না। মোয়াবের ধারেই অর্ণোন নদী।
19 “তারপর ইমোরীয় রাজা সীহোনের কাছে ইস্রায়েলীয়রা দূত পাঠাল। সীহোন ছিল হিষ্বোনের রাজা। দূতেরা সীহোনকে বলল, ‘তোমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে ইস্রায়েলীয়দের যেতে দাও। আমরা আমাদের দেশে যেতে চাই।’ 20 কিন্তু ইমোরীয়দের রাজা সীহোন ইস্রায়েলীয়দের ঢুকতে দিল না। সীহোন লোকদের নিয়ে যহসে তাঁবু খাটাল। তারপর তারা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করল। 21 কিন্তু প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের সহায় ছিলেন, তাই সীহোন ও তার সৈন্যরা পরাজিত হল। তাই ইমোরীয়দের দেশ হল ইস্রায়েলীয়দের সম্পত্তি। 22 তারা ইমোরীয়দের সব জমিজায়গা পেয়ে গেল। দেশটি অর্ণোন নদী থেকে বিস্তৃত হল। তাছাড়া মরুভূমি থেকে যর্দন নদী পর্যন্ত দেশটা বড় হয়ে গেছে।
23 “প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর নিজে ইমোরীয়দের তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। সেই দেশ তিনি ইস্রায়েলীয়দের হাতে তুলে দিলেন। তোমরা কি মনে করো ইস্রায়েলীয়দের তোমরা দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে পারবে? 24 অবশ্যই তোমাদের দেবতা কমোশ তোমাদের জন্যে যে দেশ দিয়েছেন সেখানে তোমরা থাকতে পারো। এবং আমরাও আমাদের প্রভু ঈশ্বরের দেওয়া ভূখণ্ডে থাকব। 25 তুমি কি সিপ্পোরের পুত্র বালাকের চেয়ে উৎকৃষ্ট? বালাক ছিল মোয়াবের রাজা। সে কি ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে তর্ক করেছিল? সে কি বস্তুত তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল? 26 ইস্রায়েলীয়রা 300 বছর ধরে হিষ্বনে আর সেই শহরের লাগোয়া কয়েকটি জায়গায় বাস করেছে। অরোয়েরে এবং তার পাশের শহরেও 300 বছর ধরে বাস করেছে। 300 বছর ধরে তারা বাস করেছে অর্ণোন নদীর ধারে সমস্ত শহরে। এতদিন তোমরা কেন এইসব শহর দখল করো নি? 27 ইস্রায়েলীয়রা তোমাদের কাছে কোনো অপরাধ করে নি। অথচ তোমরা তাদের ওপর ঘোর অন্যায় করেছ। প্রভুই পরম বিচারক। স্বয়ং তিনিই বিচার করুন, ইস্রায়েল আর অম্মোনদের মধ্যে কারা ঠিক কাজ করেছে।”
28 অম্মোনের রাজা যিপ্তহর এইসব কথা শুনতে চাইল না।
যিপ্তহের প্রতিশ্রুতি
29 তখন যিপ্তহর ওপর প্রভুর আত্মা ভর করলেন। গিলিয়দ এবং মনঃশি প্রদেশের ভেতর দিয়ে যিপ্তহ হেঁটে গেল। সে গিলিয়দের মিস্পা শহরে পৌঁছাল। সেখান থেকে সে অম্মোনদের দেশে গেল।
30 প্রভুর কাছে যিপ্তহ একটি প্রতিশ্রুতি করেছিল। সে বলেছিল, “যদি অম্মোনদের হারিয়ে দেবার কাজে তুমি আমাদের সহায় হও, 31 তবে যখন আমি বিজয়ী হয়ে বাড়ী ফিরব তখন আমাকে অভিনন্দন জানাতে যে আমার বাড়ি থেকে প্রথমে বেরিয়ে আসবে, প্রভুকে আমি তা হোমবলি রূপে উৎসর্গ করব।”
32 যিপ্তহ অম্মোনদের দেশে গেল। তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল; প্রভুর কৃপায় সে জয়লাভ করল। 33 অরোয়ের শহর থেকে মিন্নীত শহর পর্যন্ত যত অম্মোন ছিল যিপ্তহ সকলকে পরাজিত করল। সে 20টি শহর জয় করল। তারপর সে আবেল ও করামীম শহরের অম্মোনদের পরাজিত করল। এভাবে ইস্রায়েলীয়রা অম্মোনদের পরাজিত করল। অম্মোনদের মস্ত বড় পরাজয় হল।
34 যিপ্তহ মিস্পায় ফিরে এলো। বাড়ি পৌঁছতেই তাকে দেখবার জন্য তার মেয়ে বেরিয়ে এল। মেয়েটি তবলা বাজিয়ে নাচছিল। সে ছিল তার একমাত্র মেয়ে। যিপ্তহ তাকে খুব ভালবাসত। যিপ্তহের আর কোন ছেলেমেয়ে ছিল না। 35 যিপ্তহ যখন দেখল তার মেয়েই বাড়ি থেকে সবচেয়ে আগে বেরিয়ে এসেছে তখন সে শোকে নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেলল। সে বলল, “হায়, ওরে আমার মেয়ে। তুই আমার একি সর্বনাশ করলি! তুই আমায় কি দুঃখ দিলি জানিস না। আমি যে প্রভুর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সে তো ফেলতে পারব না!”
36 মেয়েটি যিপ্তহকে বলল, “পিতা, প্রভুর কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ তা তোমায় রাখতেই হবে। যা বলেছ তাই করো। সবচেয়ে বড় কথা প্রভুর কৃপায় তুমি শত্রু অম্মোনদের পরাজিত করেছ।”
37 তারপর যিপ্তহের মেয়ে তার পিতাকে বলল, “কিন্তু তার আগে আমার জন্য একটা কাজ করো। দু-মাস আমায় একলা থাকতে দাও। আমি পাহাড়ে পর্বতে যাব। আমি বিয়ে করব না, ছেলেমেয়েও হবে না। অনুমতি দাও আমি সঙ্গীদের নিয়ে যাই। সকলে মিলে আমরা কাঁদব।”
38 যিপ্তহ বলল, “বেশ তাই হোক্।” যিপ্তহ মেয়েকে দু-মাসের জন্য পাঠিয়ে দিল। সঙ্গীদের নিয়ে মেয়ে পাহাড় পর্বতে কাটাল। সে বিয়ে করবে না আর ছেলেমেয়ে হবে না এই দুঃখে সঙ্গীরা কেঁদে ভাসাল।
39 দু মাস কেটে গেলে মেয়ে পিতার কাছে ফিরে এল। যিপ্তহ প্রভুর কাছে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করল। তার মেয়ে কারও সঙ্গে কখনই কোন দৈহিক সম্পর্ক রাখে নি। আর এই ঘটনা থেকেই ইস্রায়েলীয়দের একটা রীতি চালু হল। 40 প্রতি বছর ইস্রায়েলীয়দের মেয়েরা যিপ্তহর মেয়েটিকে স্মরণ করে চারদিন ধরে কাঁদত।
যিপ্তহ ও ইফ্রয়িম
12 ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা সৈন্যদের ডাক দিল। তারপর নদী পেরিয়ে তারা সকলে সাফোন শহরে গেল। তারা যিপ্তহকে বলল, “কেন তুমি অম্মোনদের সঙ্গে লড়াইয়ে আমাদের সাহায্য চাও নি? আমরা তোমায় পুড়িয়ে মারব। তোমার বাড়িও জ্বালিয়ে দেব।”
2 যিপ্তহ জবাব দিল, “অম্মোনরা আমাদের নানা সমস্যায় ফেলেছিল। তাই আমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। আমি তো তোমাদের সাহায্য চেয়েছিলাম। কিন্তু কেউই আমায় সাহায্য করতে এগিয়ে আসে নি। 3 যখন দেখলাম তোমরা কেউ কোন সাহায্য করবে না, তখন আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পেরিয়ে অম্মোনদের সঙ্গে যুদ্ধে নেমে পড়লাম। ওদের হারাতে প্রভু আমায় সাহায্য করলেন। তাহলে আজ কেন তোমরা আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে এসেছ?”
4 তারপর যিপ্তহ গিলিয়দের সব লোকদের ডাকল। তারা ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করল। কারণ ইফ্রয়িমরা গিলিয়দের লোকদের অপমান করেছিল। তারা বলেছিল, “তোমরা গিলিয়দের লোকরা শুধুমাত্র ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর থেকে বেঁচে যাওয়া লোক, এছাড়া তোমাদের কোনো পরিচয় নেই। তোমাদের থাকার মতো কোন জমিজায়গা নেই। তোমরা কিছুটা ইফ্রয়িমের, কিছুটা মনঃশির।” গিলিয়দের লোকরা ইফ্রয়িমের লোকদের হারিয়ে দিল।
5 যে যে জায়গা দিয়ে লোকরা যর্দন নদী অতিক্রম করত গিলিয়দের লোকরা সেইসব জায়গা দখল করে নিল। এসব জায়গা দিয়ে ইফ্রয়িমের দেশে যাওয়া যেত। যখনই ইফ্রয়িমের কোন বেঁচে থাকা লোক বলত, “আমায় নদী পার হতে দাও,” গিলিয়দের লোক জিজ্ঞাসা করত, “তুমি কি একজন ইফ্রয়িম?” যদি সে বলত, “না,” 6 তাহলে তারা বলত, “আচ্ছা, তবে বলো তো ‘শিব্বোলেৎ।’” ইফ্রয়িমের লোকরা শব্দটা ঠিকমত উচ্চারণ করতে পারত না। তারা উচ্চারণ করত “সিব্বোলেৎ।” তাই তাদের মধ্যে কোন লোক যদি বলত, “সিব্বোলেৎ” তাহলে গিলিয়দের লোকরা বুঝতে পারতো সে একজন ইফ্রয়িম। সঙ্গে সঙ্গে তারা তাকে ঘাট পারাপারের জায়গায় মেরে ফেলতো। এইভাবে তারা 42,000 ইফ্রয়িমের লোককে হত্যা করেছিল।
7 ছ’বছর যিপ্তহ ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিল। তারপর সে মারা গেল। গিলিয়দে তার শহরে তাকে ওরা কবর দিল।
বিচারক ইবসন
8 যিপ্তহর মৃত্যুর পর ইস্রায়েলবাসীদের বিচারক হল ইব্সন। তার বাড়ি বৈৎলেহেম শহরে। 9 তার 30 জন পুত্র আর 30 জন কন্যা ছিল। 30জন কন্যাকে ইব্সন বলল যারা আত্মীয় নয় এমন পুরুষদেরই বিয়ে করতে। তার 30জন পুত্রও বিয়ে করল অনাত্মীয় 30জন কন্যাকে। ইব্সন সাত বছর ধরে ইস্রায়েলের বিচারক ছিল। 10 ইবসন মারা গেলে তাকে বৈৎলেহমে কবর দেওয়া হল।
বিচারক এলোন
11 ইব্সনের পর বিচারক হল এলোন। সবূলূন পরিবারগোষ্ঠীর লোক। সে দশ বছর ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিল। 12 তারপর তার মৃত্যু হল। তাকে সবূলূন দেশের অয়ালোন শহরে কবর দেওয়া হয়েছিল।
বিচারক অব্দোন
13 এলোনের পর, হিল্লেলের পুত্র অব্দোন ইস্রায়েলীয়দের বিচারক হল। অব্দোন পিরিয়াথোন শহর থেকে এসেছিল। 14 অব্দোনের 40 জন পুত্র আর 30 জন পৌত্র ছিল। তারা 70টা গাধার ওপর চড়ে বেড়াত। অব্দোন আট বছর বিচারক ছিল। 15 তারপর সে মারা গেল। তাকে পিরিয়াথোন শহরে কবর দেওয়া হল। শহরটি ইফ্রয়িমদের দেশে অবস্থিত। অমালেকীয়রা এই পাহাড়ী দেশে বাস করত।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International