Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Chronological

Read the Bible in the chronological order in which its stories and events occurred.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
দ্বি. বি. 17-20

কেবলমাত্র উত্তম পশুগুলোকেই উৎসর্গের জন্য ব্যবহার কর

17 “তোমরা তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের কাছে খুঁত আছে এমন কোনও গরু বা মেষ বলি দেবে না। কেন? কারণ তোমাদের প্রভু ঈশ্বর এটিকে ঘৃণা করেন!

মূর্ত্তি পূজার শাস্তি

“প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন সেখানে তোমরা তোমাদের গোষ্ঠীর এমন কোন পুরুষ অথবা স্ত্রীলোককে পেতে পার যে প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছে বা প্রভুর নিয়ম ভঙ্গ করেছে এবং অন্যান্য দেবতার পূজা করেছে। এও হতে পারে যে তারা সূর্য, চন্দ্র অথবা নক্ষত্রের পূজা করেছে। এগুলো প্রভুর আজ্ঞার বিরুদ্ধে যা আমি তোমাদের দিয়েছিলাম। যদি তোমরা এই ধরণের কোনো খবর শোনো, তাহলে তোমরা অবশ্যই যত্ন সহকারে খোঁজ খবর নেবে। এই রকম সাংঘাতিক ঘটনা ইস্রায়েলে যদি সত্যিই ঘটে এবং যদি তার সত্যতা সম্পর্কে তোমরা নিশ্চিত হও তাহলে যে ব্যক্তি সেই খারাপ কাজ করেছিল তাকে তোমরা অবশ্যই শাস্তি দেবে। শহরের দরজার কাছে কোনো প্রকাশ্য রাস্তায় সেই পুরুষ অথবা স্ত্রীলোককে তোমরা অবশ্যই নিয়ে যাবে এবং তাদের পাথর দিয়ে হত্যা করবে। কিন্তু যদি কেবল মাত্র একজন সাক্ষী বলে যে সেই ব্যক্তি খারাপ কাজ করেছে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে কখনই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিৎ‌ নয়। কিন্তু যদি দুজন অথবা তিনজন সাক্ষী বলে যে এটি সত্যি, তাহলে সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই হত্যা করা উচিৎ‌। সেই ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য সাক্ষীরা অবশ্যই প্রথমে পাথর ছুঁড়বে। এর পর হত্যার কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য অন্যান্য ব্যক্তিরা পাথর ছুঁড়বে। এইভাবে তোমরা সেই মন্দ লোকটিকে তোমাদের মধ্যে থেকে সরিয়ে দেবে।

আদালতের জটিল সিদ্ধান্ত

“এমন কিছু সমস্যা থাকতে পারে যা তোমাদের আদালতের পক্ষে বিচার করা খুবই শক্ত। এটি কোন হত্যার ঘটনাও হতে পারে, অথবা দুজন ব্যক্তির মধ্যে কোন বিতর্কও হতে পারে। অথবা এটি কোন সংঘর্ষও হতে পারে, যাতে কোন একজন আহত হয়েছে। তোমাদের শহরে যখন এইসব ঘটনগুলো নিয়ে বিতর্ক হয়, তখন সেখানে কোনটা ঠিক সেটি তোমাদের বিচারকরা ঠিক করতে সক্ষম নাও হতে পারেন। এক্ষেত্রে তোমাদের প্রভু ঈশ্বর যে স্থান পছন্দ করবেন সেই স্থানে তোমরা যাবে। যাজকরা সবাই লেবি পরিবারগোষ্ঠীর। তোমরা অবশ্যই সেই যাজকদের কাছে যাবে যারা লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর এবং বিচারকদের কাছে যাবে যারা সেই সময় কর্তব্যরত। সেই সমস্যা নিয়ে কি করা যায় সেটা তাঁরাই ঠিক করবেন। 10 সেখানে প্রভুর বিশেষ স্থানে তাঁরা তাদের সিদ্ধান্ত তোমাদের জানাবেন। তাঁরা যা কিছু বলবেন, তোমরা অবশ্যই সেটা করবে। তাঁরা তোমাদের যা যা করতে বলবেন, সেগুলো সমস্ত করার ব্যাপারে তোমরা নিশ্চিত থাকবে। 11 তোমরা তাঁদের সিদ্ধান্ত স্বীকার করবে এবং ঠিক ঠিক ভাবে তাঁদের আদেশ অনুসরণ করবে। তাঁরা তোমাদের যা করতে বলবেন তোমরা সেগুলো ঠিক মতো করবে—তার কোন কিছুর পরিবর্তন করবে না।

12 “কোন লোক যদি সেই সময় তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের সেবায় রত কোন বিচারক অথবা যাজকের কথা মেনে চলতে অস্বীকার করে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে তোমরা অবশ্যই শাস্তি দেবে। সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই মরতে হবে। ইস্রায়েল থেকে তোমরা সেই দুষ্ট লোককে অবশ্যই সরাবে। 13 সমস্ত লোক এই শাস্তির কথা শুনবে এবং ভীত হবে এবং এরপর তারা আর জেদী হবে না।

কিভাবে রাজার নির্বাচন হবে

14 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন তোমরা সেই দেশে প্রবেশ করবে। তোমরা সেই দেশ অধিগ্রহণ করে সেখানে বাস করার পর তোমরা বলতে পার, ‘আমাদের চারিদিকের অন্যান্য জাতির মতো আমাদের শাসন করার জন্যও একজন রাজা থাকা উচিৎ‌।’ 15 যখন সেটা ঘটে তখন প্রভু যাকে পছন্দ করবেন নিশ্চিতভাবে তাঁকেই রাজা হিসেবে নির্বাচন করো। তোমাদের যে রাজা হবে সে অবশ্যই তোমাদের লোকদেরই একজন হবে। তোমরা অবশ্যই কোনো বিদেশীকে তোমাদের রাজা করবে না। 16 রাজা তার নিজের জন্য কখনই প্রচুর ঘোড়া রাখবে না এবং আরও ঘোড়া পাওয়ার জন্য সে কখনই লোকদের মিশরে পাঠাবে না। কেন? কারণ প্রভু তোমাদের বলেছেন, ‘তোমরা সেই পথে কখনই ফিরে যাবে না।’ 17 এছাড়া রাজা কখনও যেন অনেক স্ত্রী গ্রহণ না করে। কেন? কারণ তাহলে তা তাকে প্রভুর কাছ থেকে সরিয়ে দেবে; এবং রাজা কখনই যেন নিজেকে রূপো আর সোনায় ধনী করে না তোলে।

18 “এবং রাজা যখন শাসন করতে শুরু করবে তখন একটা বইয়ে সে অবশ্যই বিধিগুলি লিখে রাখবে। যাজকরা এবং লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা যে বই রাখে, সেই বই থেকে সে এই প্রতিলিপি লিখবে। 19 রাজা তার কাছে এই বইটি রাখবে এবং সারা জীবন অবশ্যই সেই বইটি পড়বে। কারণ প্রভু, তার ঈশ্বরকে, কিভাবে সম্মান জানাতে হয় তা রাজার শেখা উচিৎ‌ এবং বিধিগুলি পুরোপুরি মেনে চলাও রাজার অবশ্য কর্তব্য। 20 যেন রাজা এমন না ভাবে যে সে তার নিজের লোকদের থেকে ভালো। এবং যেন সে বিধির পথ থেকে সরে না পড়ে, বরং সে এটিকে ঠিকভাবে অনুসরণ করবে। তাহলেই সেই রাজা এবং তার উত্তরপুরুষরা বহুদিন পর্যন্ত ইস্রায়েল রাজ্য শাসন করবে।

যাজকদের এবং লেবীয়দের সমর্থন করা

18 “লেবি পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা ইস্রায়েল জমির কোনো অংশ পাবে না। ঐ লোকরা যাজক হিসেবে কাজ করবে। যে সকল উৎসর্গীকৃত উপহার আগুনে রান্না করা হয় এবং প্রভুকে নিবেদন করা হয়, সেগুলো খেয়ে তারা জীবনধারণ করবে। লেবি পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের এটিই হলো অংশ। অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর মতো লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা জমির কোনো অংশ পাবে না। প্রভু তাদের যেমন বলেছিলেন সেই অনুসারে লেবীয়দের অংশ হিসেবে প্রভু নিজেই আছেন।

“যখন তোমরা বলি হিসাবে গোরু অথবা মেষ হত্যা করবে, তখন তোমরা যাজকদের এই অংশগুলো অবশ্যই দেবে: কাঁধ, দুই গাল এবং পাকস্থলী। তোমাদের সংগৃহীত ফসলের প্রথম অংশ তোমরা যাজকদের অবশ্যই দেবে। তোমাদের শস্যের, তোমাদের নতুন দ্রাক্ষারসের এবং তোমাদের তেলের প্রথম অংশ তোমরা তাদের অবশ্যই দেবে। তোমাদের মেষের থেকে সংগৃহীত পশমের প্রথম অংশ তোমরা লেবীয়দের অবশ্যই দেবে। কেন? কারণ তোমাদের প্রভু ঈশ্বর তোমাদের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করেছিলেন এবং চিরকাল যাজক হিসাবে তাঁর সেবা করার জন্য তিনি লেবি এবং তার উত্তরপুরুষদের মনোনীত করেছিলেন।

“তোমাদের শহরে বাসকারী কোন লেবীয় যদি তার বাসস্থান ত্যাগ করে, প্রভু যে স্থান মনোনীত করেছেন এমন কোন স্থানে বাস করতে আসে, তখন সেখানে প্রভুর সামনে কর্তব্যরত অন্যান্য লেবীয় ভাইদের মতোই এই লেবীয়ও তার প্রভু ঈশ্বরের নামে সেবা করতে পারবে। পৈতৃক অধিকার বিক্রি করে সে যে মুল্য পেয়েছে সেটা ছাড়াও সে অন্যান্য লেবীয়দের সঙ্গে খাবারের সমান অংশ পাবে।

ইস্রায়েল অবশ্যই অন্যান্য জাতির মতো জীবনযাপন করবে না

“প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন সেই দেশে তোমরা যখন আসবে, তখন সেখানে অন্যান্য জাতির লোকরা যে সকল সাংঘাতিক কাজ করে সেগুলো তোমরা শিখো না। 10 তোমাদের বেদীর ওপরের আগুনে তোমরা তোমাদের পুত্রদের অথবা কন্যাদের উৎসর্গ করবে না। কোন ভাববাদীর সঙ্গে কথা বলে অথবা কোন যাদুকর, কোন ডাইনি অথবা কোন মায়াবীর কাছে গিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ‌‌ জানার চেষ্টা করবে না। 11 কাউকে অন্যান্য লোকদের ওপরে যাদুমন্ত্রের প্রয়োগ করার চেষ্টা করতে দিও না। তোমাদের কোনো লোককে ভুতুড়িয়া অথবা যাদুকর হতে দিও না; এবং মৃত লোকের আত্মার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করো না। 12 ঐ সমস্ত কাজ যারা করে, সেইসব লোকদের প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, ঘৃণা করেন। এই কারণেই প্রভু ঐ সমস্ত জাতির লোকদের তোমাদের সামনে দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছেন। 13 তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের কাছে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বস্ত থাকবে।

প্রভুর বিশেষ ভাববাদী

14 “তোমরা যে ঐ সমস্ত জাতির লোকদের তোমাদের দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য করছ তারা তাদের কথা শোনে যারা যাদুবিদ্যা চর্চা করে এবং ভবিষ্যৎ বলে। কিন্তু প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের এই জিনিসগুলো করতে দেবেন না। 15 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের জন্য একজন ভাববাদী পাঠাবেন। তোমাদের নিজের লোকদের মধ্য থেকেই এই ভাববাদী আসবে। সে আমারই মতো হবে। তোমরা অবশ্যই এই ভাববাদীর কথা শুনবে। 16 তোমরা ঈশ্বরের কাছে যা চেয়েছিলে সেই অনুযায়ী তিনি এই ভাববাদীকে তোমাদের কাছে পাঠাবেন। যখন তোমরা হোরেব পর্বতে সকলে একত্রিত হয়েছিলে, তখন তোমরা ঈশ্বরের রব শুনে এবং পর্বতমালার ওপরে সেই মহৎ‌‌ আগুন দেখে ভীত হয়েছিলে। সেজন্য তোমরা বলেছিলে, ‘আমাদের প্রভু ঈশ্বরের রব আমাদের পুনরায় আর শোনাবেন না! আমাদের আর সেই মহান আগুন দেখতে দেবেন না, দেখলে আমরা মারা যাব!’

17 “প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘তারা যা বলেছে তা যথার্থ। 18 আমি তাদের কাছে তোমার মতোই একজন ভাববাদী পাঠাব। এই ভাববাদী তাদের লোকদের মধ্যেই একজন হবে। সে যে কথা অবশ্যই বলবে সেটা আমি তাকে বলে দেব। আমি যা আদেশ করি তার সমস্ত কিছু সে লোকদের বলবে। 19 এই ভাববাদী আমার জন্যই বলবে এবং যখন সে কথা বলবে, যদি কোন ব্যক্তি আমার আদেশ না শোনে তাহলে আমি সেই ব্যক্তিকে শাস্তি দেব।’

কিভাবে মিথ্যে ভাববাদীকে চিনবে

20 “কিন্তু একজন ভাববাদী এমন কিছু বলতে পারে যা আমি তাকে বলার জন্য বলি নি। এবং সে লোকদের এও বলতে পারে যে সে আমার হয়েই তা বলছে। যদি এরকম ঘটনা ঘটে তাহলে সেই ভাববাদীকে অবশ্যই হত্যা করা উচিৎ‌। এছাড়াও একজন ভাববাদী আসতে পারে যে অন্যান্য দেবতার হয়ে কথা বলে। সেই ভাববাদীকেও অবশ্যই হত্যা করা উচিৎ‌। 21 তোমরা হয়তো ভাবতে পার, ‘আমরা কি করে জানতে পারবো যে ভাববাদী যা বলছে সেগুলো প্রভুর কথা নয়?’ 22 যদি কোনো ভাববাদী বলে যে সে প্রভুর জন্য বলছে, কিন্তু যা বলছে তা না ঘটে, তাহলেই তোমরা জানবে যে প্রভু সেটি বলেন নি। তোমরা বুঝতে পারবে যে, এই ভাববাদী তার নিজের ধারণার কথাই বলছে। তোমরা তাকে ভয় পেও না।

নিরাপত্তার শহরগুলি

19 “যে দেশে অন্য জাতির বাস, সেই দেশই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের দিচ্ছেন। প্রভু ঐ সমস্ত জাতির লোকদের ধ্বংস করবেন। ঐ সব লোকরা যেখানে বাস করত সেখানে তোমরা বাস করবে। তোমরা তাদের শহরগুলো এবং তাদের বাড়ীগুলো অধিগ্রহণ করবে। 2-3 সেই ভূমিকে অবশ্যই তিন ভাগে ভাগ করবে। এরপর প্রত্যেকটি অংশে একটি করে শহর পছন্দ কর এবং সেই শহরগুলোতে যাবার রাস্তা তৈরী কর। তাহলে কোন লোক যে অপর কোনও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে, সে সেই শহরে নিরাপত্তার জন্য ছুটে যেতে পারবে।

“যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে ঐ তিনটি শহরের যে কোন একটিতে নিরাপত্তার জন্য ছুটে যায়, তার জন্য এটি হল নিয়ম: সে অবশ্যই এমন একজন ব্যক্তি হবে যে অপর ব্যক্তিকে দুর্ঘটনাবশতঃ হত্যা করেছে এবং হত ব্যক্তিকে ঘৃণা করত না। একটি উদাহরণ দেওয়া হল: একজন ব্যক্তি কাঠ কাটার জন্য আরেকজন ব্যক্তির সঙ্গে জঙ্গলে যায়। লোকটি একটি গাছ কাটার জন্য তার কুঠারটিকে দোলায়, কিন্তু কুঠারের মাথাটি হাতলের থেকে আলাদা হয়ে অপর ব্যক্তিকে আঘাত করে এবং তাকে হত্যা করে। যে ব্যক্তি কুঠারটিকে দুলিয়েছিল সে তখন ঐ তিনটি শহরের যে কোন একটিতে ছুটে যেতে পারে এবং নিজেকে নিরাপদ করতে পারে। কিন্তু যদি শহরটি খুব দূরে হয় তাহলে নিহত ব্যক্তির কোন নিকট আত্মীয় তাকে তাড়া করে শহরে পৌঁছানোর আগেই ধরে ফেলতে পারে। সেই নিকট আত্মীয় খুব ক্রুদ্ধ হতে পারে এবং সেই ব্যক্তিকে হত্যা করতে পারে। অথচ সেই ব্যক্তি হত্যার যোগ্য ছিল না। কারণ যে ব্যক্তিকে সে হত্যা করেছে তাকে সে ঘৃণা করত না। শহরগুলো অবশ্যই সকলের খুব কাছাকাছি হতে হবে। সেই কারণেই আমি তোমাদের তিনটি বিশেষ শহর পছন্দ করার জন্য আদেশ করছি।

“প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে তিনি তোমাদের দেশকে বৃহত্তর করবেন। তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই সমস্ত দেশই তিনি তোমাদের দেবেন। আমি আজ তোমাদের যে আজ্ঞাগুলি দিচ্ছি, তাঁর সেই সমস্ত আদেশগুলো যদি তোমরা সম্পূর্ণভাবে মেনে চল তাহলে তিনি এটি করবেন—যদি তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, ভালোবাসো এবং তিনি যা পছন্দ করেন সেই ভাবেই যদি তোমরা বাস করো। এরপর যখন প্রভু তোমাদের দেশকে বৃহত্তর করবেন সেই সময় তোমরা নিরাপত্তার শহর হিসেবে আরও তিনটি শহরকে বেছে নেবে। তাদের প্রথম তিনটি শহরের সঙ্গে যোগ করতে হবে। 10 তাহলে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন সেখানে কোন নির্দোষ লোক নিহত হবে না এবং তোমরা কোনো নির্দোষের মৃত্যুর জন্য দোষী হবে না।

11 “কিন্তু কেউ যদি অপর একজনকে ঘৃণা করে বলে লুকিয়ে তাকে হত্যা করার জন্য অপেক্ষা করে এবং সেই ব্যক্তিকে আক্রমণ করে হত্যা করার পর ঐ নিরাপত্তার শহরগুলোর যে কোনও একটিতে দৌড়ে পালিয়ে যায়, 12 তাহলে সেই লোকটি যে শহরে বাস করত সেখানকার প্রবীণরা তাকে ধরার জন্য লোক পাঠাবে এবং তাকে নিরাপত্তার শহর থেকে নিয়ে আসবে। এরপর তারা হত্যাকারীকে নিহতের নিকট আত্মীয়ের হাতে তুলে দেবে। হত্যাকারীকে অবশ্যই মরতে হবে। 13 তোমরা তার জন্য অবশ্যই দুঃখিত হবে না। সে একজন নিষ্পাপ ব্যক্তির হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। তোমরা অবশ্যই নিরপরাধের রক্তপাতের এই দোষকে ইস্রায়েল থেকে দূর করবে। তাহলে সমস্ত কিছুই তোমাদের জন্য ভালো চলবে।

সম্পত্তির সীমার চিহ্ন

14 “যে পাথরগুলোর সাহায্যে তোমাদের প্রতিবেশীর জমির সীমা চিহ্নিত হয় সেগুলো তোমরা কখনই সরাবে না। অতীতে জমির সীমা চিহ্নিত করার জন্যই ঐ পাথরগুলো রাখা হয়ছিল। প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, অধিকার করার জন্য তোমাদের যে দেশ দিয়েছেন এই নিয়ম সেখানকার জন্য।

সাক্ষীগণ

15 “বিধি বিরুদ্ধ কোনো কিছু করার জন্য যদি কোনো লোক অভিযুক্ত হয়, তাহলে সেই লোকটি দোষী একথা প্রমাণ করার জন্য একজন সাক্ষী যথেষ্ট নয়। সেই ব্যক্তি যে সত্যই ভুল কাজ করেছিল সেটি প্রমাণ করার জন্য সেখানে অবশ্যই দুজন অথবা তিনজন সাক্ষী থাকতে হবে।

16 “মিথ্যে কথা বলে একজন মিথ্যা সাক্ষী অপর একজন লোককে আঘাত করার চেষ্টা করতে পারে। 17 যদি সেরকম ঘটে তাহলে ঐ দুজন ব্যক্তি অবশ্যই প্রভুর বিশেষ বাড়ীতে যাবে এবং সেই সময় সেখানে কর্তব্যরত যাজকরা এবং বিচারকরা তাদের বিচার করবে। 18 বিচারকরা অবশ্যই সযত্নে অনুসন্ধান করবে। আর যদি প্রমাণ হয় যে সাক্ষী সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যে কথা বলেছিল, 19 তাহলে তোমরা তাকে অবশ্যই শাস্তি দেবে। সে অপর ব্যক্তির প্রতি যা যা করতে চেয়েছিল, তোমরা তার প্রতি তাই করবে। এই প্রকারে তোমরা তোমাদের জাতি থেকে দুষ্টাচার দূর করে দেবে। 20 অন্যান্য লোকরা এই ঘটনা শুনে ভয় পাবে এবং তারা এই রকম খারাপ কাজ আর করবে না।

21 “অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী শাস্তি হবে। যে ব্যক্তি খারাপ কাজ করেছে তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য দুঃখিত হয়ো না। যদি কোন ব্যক্তি কারও জীবন নেয়, তাহলে তাকে অবশ্যই নিজের জীবন দিয়ে শোধ করতে হবে। নিয়ম হল: একটি চোখের জন্য একটি চোখ, একটি দাঁতের জন্য একটি দাঁত, একটি হাতের জন্য একটি হাত, একটি পায়ের জন্য একটি পা।

যুদ্ধের নিয়মসমূহ

20 “তোমরা শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে যদি দেখ যে তোমাদের থেকেও তাদের অনেক বেশী ঘোড়া, রথ এবং লোক রয়েছে, তবে ভয় পেও না। কেন? কারণ প্রভু যিনি তোমাদের মিশর থেকে বার করে এনেছিলেন, তিনি তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে আছেন।

“যখন তোমরা যুদ্ধে যাও তখন যাজক অবশ্যই সৈন্যদের কাছে যাবে এবং তাদের সঙ্গে কথা বলবে। যাজক বলবে, ‘ইস্রায়েলের লোকরা আমার কথা শোন! আজ তোমরা তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাচ্ছ। তোমরা সাহস হারিও না! তোমরা চিন্তিত এবং ভীত হয়ো না! শত্রুদের সম্পর্কে ভীত হয়ো না! কেন? কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সঙ্গে যাচ্ছেন। তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন এবং তোমাদের বিজয়ী করবেন!’

“ঐ লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত পদাধিকারী সৈন্যদের বলবে, ‘তোমাদের মধ্যে কি এমন কোনও ব্যক্তি আছে যে নতুন বাড়ী তৈরী করেছে, কিন্তু সেটিকে এখনও নিবেদন করেনি? সেই ব্যক্তির অবশ্যই বাড়ী ফিরে যাওয়া উচিৎ‌। নয় তো সে যুদ্ধে নিহত হলে অন্য একজন ব্যক্তি তার বাড়ী নিবেদন করবে। এখানে কি এমন কোনও ব্যক্তি আছে যে ক্ষেতে দ্রাক্ষার চারা রোপণ করেছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন দ্রাক্ষা একত্রিত করেনি? সেই ব্যক্তির অবশ্যই বাড়ী ফিরে যাওয়া উচিৎ‌। কারণ যদি সেই ব্যক্তি যুদ্ধে মারা যায়, তাহলে অপর একজন ব্যক্তি তার ক্ষেতের ফল ভোগ করবে। এখানে কি এমন কোনও ব্যক্তি আছে যে বিবাহের জন্য বাগদত্ত? সেই ব্যক্তির অবশ্যই বাড়ী ফিরে যাওয়া উচিৎ‌। কারণ যদি সে যুদ্ধে মারা যায়, তাহলে সে যার বাগদত্ত ছিল সেই স্ত্রীলোককে অপর একজন ব্যক্তি বিবাহ করবে।’

“সেই লেবীয় পদাধিকারীরা সৈন্যদের একথাও জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের মধ্যে কি এমন কোন ব্যক্তি আছে যে উৎসাহ হারিয়েছে এবং ভীত হয়েছে? সে অবশ্যই বাড়ী ফিরে যাবে। তাহলে সে অন্যান্য সৈন্যদেরও নিরুৎসাহ করতে পারবে না।’ পরে সৈন্যদের সঙ্গে পদাধিকারীরা যখন কথাবার্তা শেষ করবে তখন তারা অবশ্যই সেনাধ্যক্ষদের নির্বাচিত করবে। যারা সৈন্যদের নেতৃত্ব দেবে।

10 “যখন তোমরা কোন শহর আক্রমণ করতে যাবে, তখন প্রথমে সেখানকার লোকদের শান্তির আবেদন জানাবে। 11 যদি তারা তোমাদের প্রস্তাব স্বীকার করে এবং দরজা খুলে দেয়, তাহলে সেই শহরের সমস্ত লোকরা তোমাদের ক্রীতদাসে পরিণত হবে এবং তোমাদের জন্য কাজ করতে বাধ্য হবে। 12 কিন্তু যদি শহরের লোকরা তোমাদের শান্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসে তাহলে তোমরা অবশ্যই শহরটিকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলবে। 13 এবং যখন শহরটিকে অধিগ্রহণ করতে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সাহায্য করবেন, তখন তোমরা অবশ্যই সেখানকার সমস্ত পুরুষদের হত্যা করবে। 14 কিন্তু তোমরা তোমাদের নিজেদের জন্য স্ত্রীলোকদের, শিশুদের, গোরু এবং শহরের যাবতীয় জিনিস নিতে পার। তোমরা এই সমস্ত জিনিসগুলো ব্যবহার করতে পার। প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের এই জিনিসগুলি দিয়েছেন। 15 তোমাদের থেকে অনেক দূরের সমস্ত শহরগুলোর প্রতি তোমরা এই কাজ করবে—তোমরা যে দেশে বাস কর সেখানকার শহরগুলো বাদ দেবে।

16 “কিন্তু প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন তোমরা যখন সেই দেশের শহরগুলো অধিগ্রহণ করবে, তখন সেখানে শ্বাস নেয় এমন কাউকে জীবিত রাখবে না। 17 তোমরা অবশ্যই প্রভুর আদেশ অনুসারে হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয় পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবুষীয়দের পুরোপুরি ধ্বংস করবে। 18 কারণ তা না হলে তারা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করতে শেখাবে; তারা তাদের দেবতাদের পূজা করার সময় যে সাংঘাতিক কাজগুলি করে সেগুলো তোমাদের শেখাবে।

19 “যখন তোমরা একটি শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, তোমরা দীর্ঘকাল ধরে সেই শহরটিকে ঘিরে রাখতে পার। সেই শহরের চারদিকের ফলের গাছগুলো তোমরা কখনই কাটবে না। তোমরা এই গাছগুলোর ফল খেতে পার কিন্তু তোমরা কখনই তাদের কাটবে না। এই গাছগুলো শত্রু নয়, সুতরাং তাদের নষ্ট করো না! 20 কিন্তু তোমরা যে গাছগুলোকে ফলের গাছ নয় বলে জানো, সেগুলোকে কাটতে পারো। সেই শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অস্ত্র তৈরীর জন্য এই গাছগুলো ব্যবহার করতে পারো। শহরটির পতন না হওয়া পর্যন্ত তোমরা ঐ জিনিসগুলি ব্যবহার করতে পারো।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International