Chronological
লোকরা পুনরায় অভিযোগ করল
11 লোকরা তাদের সমস্যা সম্পর্কে অভিযোগ করা শুরু করলে প্রভু তাদের অভিযোগ শুনলেন এবং ক্ষুদ্ধ হলেন। প্রভুর কাছ থেকে আগুন এসে লোকদের মধ্যে জ্বলে উঠল। আগুন শিবিরের বাইরের দিকে কিছু কিছু এলাকা গ্রাস করল। 2 তখন লোকরা মোশির কাছে সাহায্যের জন্য ক্রন্দন করল। মোশি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল এবং আগুন নিভে গেল। 3 সুতরাং তারা ঐ জায়গাটির নাম রাখল তবেরা, কারণ প্রভুর আগুন তাদের শিবিরের মধ্যে জ্বলে উঠেছিল।
70 জন বয়স্ক নেতা
4 বিদেশীরা যারা ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে যোগদান করেছিল, তারা অন্যান্য খাবার খেতে চাইল এবং ইস্রায়েলের লোকরা পুনরায় অভিযোগ করতে শুরু করল। তারা বলল, “কে আমাদের মাংস খেতে দেবে? 5 আমরা মিশরে যে মাছ খেতাম তা মনে পড়ছে। আমাদের ঐ মাছের জন্য কোনো দামই দিতে হত না। এছাড়াও আমাদের খুব ভালো শাকসব্জি ছিল যেমন শশা, ফুটি, পেঁয়াজ জাতীয় ফল, পেঁয়াজ এবং রসুন। 6 কিন্তু এখন আমরা আমাদের শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। এই মান্না ছাড়া আর কোন কিছুই আমরা চোখে দেখতে পাই না।” 7 (এই মান্না ছিল ধনে বীজের মত এবং এর রং ছিল গুগ্গুলের মতো। 8 লোকরা এই মান্না এক জায়গায় জড়ো করত। এরপর তারা পাথরের সাহায্যে সেগুলোকে গুঁড়ো করে পাত্রে সেটি রান্না করত। অথবা এটিকে পেষণ যন্ত্রে মিহি করে গুঁড়ো করে তা দিয়ে পিঠে তৈরী করত। পিঠেগুলোর স্বাদ ছিল অলিভ তেল দিয়ে তৈরী করা পিঠের মতো। 9 প্রত্যেক রাত্রে যখন শিশির পড়ে শিবির ভিজে যেত সেই সময় এই মান্না মাটিতে পড়তো।)
10 মোশি লোকদের অভিযোগ করতে শুনল। প্রত্যেক পরিবারের লোকরা তাদের তাঁবুর দরজায় বসে এই অভিযোগ করছিল। প্রভু এতে খুব ক্ষুব্ধ হলেন এবং এটা মোশিকেও মনঃক্ষুন্ন করল। 11 মোশি প্রভুকে জিজ্ঞেস করল, “প্রভু, আপনি কেন আমাকে এইসব সমস্যায় জড়িয়েছেন? আমি আপনার সেবক। আমি এমন কি করেছি যে আপনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন? এই সমস্ত লোকের দায়িত্ব আপনি কেন আমার উপর দিয়েছেন? 12 আমি কি লোকদের গর্ভে ধারণ করেছি, আমি কি এদের জন্ম দিয়েছি? কিন্তু আমাকে তাদের যত্ন নিতে হয়, ঠিক যেমন ভাবে একজন সেবিকা তার দুই বাহুর মধ্যে একটি শিশুকে যত্ন করে। আপনি কেন আমাকে এটি করার জন্য বাধ্য করেছেন? পূর্বপুরুষদের যে জায়গা দেবেন বলে আপনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাদের সেই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কেন আপনি আমায় বাধ্য করেছেন? 13 এইসব লোককে খাওয়াবার জন্য আমি কোথায় মাংস পাব? তারা সমানে আমার কাছে অভিযোগ করে বলছে, ‘আমাদের খাবার জন্য মাংস দাও!’ 14 আমি একা এই সমস্ত লোকের দেখাশুনো করতে পারবো না। এই দায়িত্ব আমার কাছে গুরুভার স্বরূপ। 15 আপনি যদি মনস্থ করে থাকেন যে আমার প্রতি এই রকম ব্যবহার করবেন তাহলে আমাকে এখনই হত্যা করুন। আপনি যদি আপনার সেবক হিসেবে আমাকে গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আমাকে এখনই মরতে দিন।”
16 প্রভু মোশিকে বললেন, “ইস্রায়েলের প্রাচীনদের মধ্য থেকে 70 জনকে আমার কাছে নিয়ে এসো। যাদের তুমি এই লোকদের নেতা বলে জান তাদের সমাগম তাঁবুতে নিয়ে এসো। ওখানেই ওদের তোমার সঙ্গে দাঁড়াতে দাও। 17 তখন আমি নীচে নেমে আসব এবং ওখানেই তোমার সঙ্গে কথা বলবো। তোমার ওপরে যে আত্মা আছে তার কিছুটা অংশ আমি তাদেরও দেবো। তখন তারা লোকদের দেখাশুনো করার জন্য তোমাকে সাহায্য করবে। তাহলে তোমাকে একা এইসব লোকদের দেখাশুনো করার ভার বহন করতে হবে না।
18 “লোকদের বলো: তোমরা আগামীকালের জন্য নিজেদের তৈরী করো। আগামীকাল তোমরা মাংস খাবে। প্রভু তোমাদের কান্না শুনেছেন। প্রভু তোমাদের কথা শুনেছেন, কারণ তোমরা কেঁদে বলেছ, ‘খাওয়ার জন্য আমাদের কে মাংস দেবে? আমাদের জন্য মিশরই ভালো ছিল।’ সুতরাং এখন প্রভু তোমাদের মাংস দেবেন এবং তোমরা তা খাবে। 19 একদিন অথবা দুইদিন অথবা পাঁচদিন অথবা দশদিন এমনকি কুড়িদিনেরও বেশী সময় ধরে তোমরা সেই মাংস খাবে। 20 কিন্তু তোমরা তা এক মাস ধরে খাবে। ঘেন্না না আসা পর্যন্ত তোমরা ঐ মাংস খাবে। এটাই তোমাদের ভবিতব্য কারণ তোমরা প্রভুকে অগ্রাহ্য করেছ যিনি তোমাদের মধ্যেই আছেন এবং তোমরা কেঁদে তাঁর সামনে অভিযোগ করে বলেছ, ‘কেন আমরা আদৌ মিশর ত্যাগ করলাম?’”
21 মোশি বলল, “প্রভু এখানে 600,000 পুরুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে আর আপনি বলছেন, ‘আমি তাদের এক মাস ধরে খাওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে মাংস দেব!’ 22 যদি আমরা সমস্ত গরু এবং মেষদের হত্যা করি তাহলেও এক মাস ধরে এই সমস্ত লোকদের খাওয়ানোর জন্য তা যথেষ্ট হবে না। এবং আমরা যদি সমুদ্রের সমস্ত মাছ ধরে নিই, তাহলেও তা তাদের জন্য যথেষ্ট হবে না!”
23 কিন্তু প্রভু মোশিকে বললেন, “প্রভুর ক্ষমতা কি সীমিত? তুমি দেখতে পাবে যে, আমি যা বলি সেটা ফলে কি না।”
24 সুতরাং মোশি লোকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য বেরিয়ে গেল। প্রভু যা যা বলেছিলেন মোশি তাদের তাই বলল। তখন মোশি প্রবীনদের মধ্য থেকে 70 জনকে এক জায়গায় জড়ো করে তাদের তাঁবুর চারদিকে দাঁড়াতে বলল। 25 তখন প্রভু মেঘের মধ্যে নেমে এসে মোশির সাথে কথা বললেন। মোশির ওপর আত্মা ছিল, প্রভু সেই আত্মার কিছু অংশ নিয়ে 70 জন প্রবীণদের ওপরেও রাখলেন। আত্মা তাদের ওপরে নেমে আসলে পরে তারা ভবিষ্যদ্বানী করতে শুরু করল। কিন্তু এরপর তারা আর ভাববানী বলে নি।
26 প্রবীণদের মধ্যে দুজন, ইল্দদ এবং মেদদ তাদের তাঁবুর বাইরে যায় নি। তাদের নাম প্রাচীনদের তালিকায় ছিল, কিন্তু তারা শিবিরেই ছিল। কিন্তু তাদের ওপরেও আত্মা এলে তারা শিবিরের মধ্যেই ভবিষ্যদ্বানী করতে শুরু করল। 27 একজন যুবক দৌড়ে গিয়ে মোশিকে এই খবর দিল। সেই ব্যক্তি বলল, “ইল্দদ এবং মেদদ শিবিরের মধ্যেই ভবিষ্যদ্বানী করছে।”
28 নূনের পুত্র যিহোশূয় (যিনি কিশোর বয়স থেকেই মোশির সহকারী ছিলেন) মোশিকে বলল, “হে আমার গুরু মোশি আপনি তাদের থামান!”
29 কিন্তু মোশি উত্তর দিল, “তুমি কি ভয় পাচ্ছো যে লোকরা ভাববে আমি এখন আর নেতা নই? আমার ইচ্ছা প্রভুর সব প্রজাই যেন ভবিষ্যদ্বানী করতে সক্ষম হয়। আমার ইচ্ছা প্রভু যেন সকলের মধ্যেই তাঁর আত্মাকে রাখেন।” 30 এরপর মোশি এবং ইস্রায়েলের নেতারা শিবিরে ফিরে গেল।
ভারুই পাখীরা এলো
31 এরপর প্রভু ঝড়ের সৃষ্টি করলেন যা সমুদ্র থেকে হঠাৎ এসে হাজির হল। ঝড় সেখানে হঠাৎই ভারুই পাখীদের নিয়ে এল। ভারুই পাখীরা শিবিরের চারধারে উড়ে বেড়াতে লাগল। এতো বেশী ভারুই পাখী ছিল যে সেই জায়গার মাটি ঢেকে গেল। ভারুই পাখীগুলো মাটির ওপরে তিন ফুট স্তর তৈরী করল। একজন মানুষ একদিনে যতদূর পর্যন্ত হাঁটতে পারে, ততদূর পর্যন্ত ভারুই পাখীগুলো ছড়িয়ে ছিল। 32 তারা গিয়ে সারাদিন এবং সারারাত ধরে ভারুই পাখীগুলোকে জড়ো করল। পরের দিনও সারাদিন ধরে তারা ভারুই পাখীগুলো জড়ো করল। একজন ব্যক্তি সবচেয়ে ন্যুনতম 60 বুশেল সংগ্রহ করল। এরপর লোকরা ভারুই পাখীর মাংস শিবিরের চারদিকে ছড়িয়ে রাখল।
33 যখন লোকরা মাংস খাওয়া শুরু করল প্রভু খুব ক্রুদ্ধ হলেন। সেই মাংস তাদের মুখে থাকতে থাকতেই এবং তাদের মাংস খাওয়া শেষ করার আগেই প্রভু তাদের গুরুতরভাবে অসুস্থ করে দিলেন। অনেক লোক মারা গেল এবং ঐ জায়গাতেই তাদের কবর দেওয়া হল। 34 এই কারণেই লোকরা ঐ জায়গার নাম রাখল কিব্রোৎ-হত্তাবা। তারা ঐ জায়গার ঐ নাম দিল কারণ যাদের মাংসের জন্য খুব আকাঙ্খা ছিল তাদেরই ওখানে কবর দেওয়া হয়েছিল।
35 কিব্রোৎ-হত্তাবা থেকে লোকরা হৎসেরোতের দিকে যাত্রা করল এবং সেখানেই থাকল।
মরিয়ম এবং হারোণ মোশির বিরুদ্ধে অভিযোগ করল
12 মরিয়ম এবং হারোণ মোশির বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করল। কারণ মোশি একজন কুশীয়া মহিলাকে বিবাহ করেছিল। তারা মনে করেছিল যে মোশির পক্ষে একজন কুশীয়া মহিলাকে বিবাহ করা ঠিক হয় নি। 2 তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “প্রভু লোকের সঙ্গে কথা বলার জন্য কি কেবল মোশিকেই ব্যবহার করেছেন? প্রভু কি আমাদের মাধ্যমেও কথা বলেন নি?”
প্রভু এই কথাগুলো শুনলেন। 3 (মোশি খুব নম্র ছিল। পৃথিবীতে যে কোনো মানুষের থেকে সে বেশী নম্র ছিল।) 4 হঠাৎই প্রভু এলেন এবং মোশি, হারোণ এবং মরিয়মের সঙ্গে কথা বললেন। প্রভু বললেন, “তোমরা তিনজন এখন সমাগম তাঁবুতে এসো।”
সুতরাং মোশি, হারোণ এবং মরিয়ম পবিত্র তাঁবুতে গেল। 5 প্রভু মেঘ স্তম্ভের মধ্যে নেমে এলেন এবং পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ পথে এসে দাঁড়ালেন। প্রভু ডাকলেন, “হারোণ এবং মরিয়ম!” হারোণ এবং মরিয়ম তখন বেরিয়ে এল। 6 ঈশ্বর বললেন, “আমার কথা শোনো! তোমাদের মধ্যে ভাববাদী থাকবে। আমি প্রভু দর্শনে তাদের দেখা দেবো। আমি তাদের সঙ্গে স্বপ্নে কথা বলবো। 7 কিন্তু আমার দাস মোশি সেরকম নয়। মোশি আমার বিশ্বস্ত সেবক। আমার বাড়ীর প্রত্যেকেই তাকে বিশ্বাস করে। 8 আমি যখন তার সঙ্গে কথা বলি, তখন তার সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলি। আমি এমন কোনো ধাঁধার সাহায্য নিই না যার ভেতরে কোনো অর্থ লুকিয়ে আছে; আমি তাকে যে জিনিস জানাতে চাই সেটা আমি তাকে পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দিই। এবং মোশি প্রভুর সেই প্রতিমূর্ত্তির দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে। সুতরাং আমার সেবক মোশির বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস তোমাদের কি করে হল?”
9 প্রভু তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হলেন, তাই তাদের ত্যাগ করলেন। 10 পবিত্র তাঁবু থেকে মেঘ উপরে উঠলে দেখা গেল মরিয়মের চামড়া হিমের মত সাদা। হারোণ ঘুরে মরিয়মের দিকে তাকিয়ে দেখল, তার শরীরের চামড়ার রং তুষারের মতো সাদা। তার মারাত্মক চামড়ার রোগ হয়েছে।
11 তখন হারোণ মোশির কাছে অনুনয় করে বলল, “মহাশয়, দয়া করুন, আমরা মুর্খের মতো যে কাজ করেছিলাম তার জন্য আমাদের ক্ষমা করুন। 12 মৃত অবস্থায় জন্ম হয়েছে এমন একটি শিশুর মতো তাকে তার শরীরের চামড়া হারাতে দেবেন না।” (কখনও কখনও এক একটি শিশুর জন্ম হয় যাদের শরীরের অর্ধেক চামড়া ক্ষয়ে গেছে।)
13 এই কারণে মোশি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করল, “ঈশ্বর, দয়া করে মরিয়মকে এই অসুস্থতা থেকে আরোগ্য করুন!”
14 প্রভু মোশিকে উত্তর দিলেন, “যদি তার পিতা তার মুখে থুথু ফেলে, তাহলে সে সাত দিনের জন্যে লজ্জিত থাকত না? সুতরাং তাকে সাত দিনের জন্য শিবিরের বাইরে রাখো। ঐ সময়ের পরে, সে সুস্থ হয়ে উঠবে। তখন সে শিবিরে ফিরে আসতে পারে।”
15 সুতরাং তারা মরিয়মকে সাত দিনের জন্য শিবিরের বাইরে নিয়ে গেল এবং লোকরাও সেই জায়গা থেকে আর এগোলো না, যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে আবার শিবিরে ফিরিয়ে না নিয়ে আসা হল। 16 এরপর লোকরা হৎসেরোত্ ত্যাগ করে পারণ মরুভূমির উদ্দেশ্যে গমন করল এবং ঐ মরুভূমিতেই শিবির স্থাপন করল।
কনান দেশে গুপ্তচর গেল
13 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “কনান দেশের জমি অনুসন্ধানের জন্য কিছু লোক পাঠিয়ে দাও। ইস্রায়েলের লোকদের আমি এই দেশটিই দেবো। বারোটি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকটির থেকে একজন করে নেতা পাঠিয়ে দাও।”
3 সুতরাং পারণ মরুভূমিতে বাস করার সময় মোশি প্রভুর আদেশ অনুসারে ইস্রায়েলের এইসব নেতাদের পাঠিয়ে দিয়েছিল। 4 ঐসব নেতাদের নামগুলো হল এই:
রূবেণের পরিবারগোষ্ঠী থেকে সক্কুরের পুত্র শম্মুযা।
5 শিমিয়োনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে হোরির পুত্র শাফট।
6 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী থেকে যিফুন্নির পুত্র কালেব।
7 ইষাখর পরিবারগোষ্ঠী থেকে যোষেফের পুত্র যিগাল।
8 ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠী থেকে নূনের পুত্র হোশেয়।[a]
9 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠী থেকে রাফুর পুত্র পল্টি।
10 সবূলূন পরিবারগোষ্ঠী থেকে সোদির পুত্র গদ্দীয়েল।
11 যোষেফের পরিবারগোষ্ঠী থেকে (মনঃশি) সুষির পুত্র গদ্দি।
12 দান পরিবারগোষ্ঠী থেকে গমল্লির পুত্র অম্মীয়েল।
13 আশের পরিবারগোষ্ঠী থেকে মীখায়েলের পুত্র সথুর।
14 নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠী থেকে বপ্সির পুত্র নহ্বি।
15 গাদের পরিবারগোষ্ঠী থেকে মাখির পুত্র গ্য়ুয়েল।
16 মোশি উল্লিখিত ব্যক্তিদের সেই দেশ দেখতে এবং জায়গাটি সম্বন্ধে ধারণা অর্জন করতে পাঠিয়েছিল। (মোশি নূনের পুত্র হোশেয়কে অন্য আরেকটি নামে ডাকত। মোশি তাকে যিহোশূয় বলে ডাকত।)
17 মোশি তাদের কনান দেশ অনুসন্ধান করতে পাঠিয়ে বলেছিল, “প্রথমে নেগেভের মধ্য দিয়ে যাও এবং তারপরে পাহাড়ী দেশে ঢুকে পড়ো। 18 দেখো, জায়গাটি কেমন দেখতে। ওখানে যারা বসবাস করে তাদের সম্বন্ধে খোঁজ নাও তারা কতোখানি শক্তিশালী অথবা দুর্বল। তারা সংখ্যায় কম না বেশী। 19 তারা যেখানে বসবাস করছে সেই জায়গাটি সম্বন্ধে জানো। সেখানকার জমি কি ভালো না খারাপ? কি ধরণের শহরে তারা বাস করে? তাদের সুরক্ষার জন্য কি শহরে কোনো প্রাচীর আছে? শহরগুলো কি মজবুতভাবে সুরক্ষিত? 20 এবং দেশটির সম্পর্কে অন্যান্য বিষয়ও জেনে নাও—যেমন সেখানকার জমি উর্বর না অনুর্বর। সেখানে গাছ আছে কি না। এছাড়াও সেই জায়গা থেকে ফিরে আসার সময় সেখান থেকে কিছু ফল নিয়ে আসার চেষ্টা করো।” (এটা ছিল সেই সময় যখন গাছে প্রথম দ্রাক্ষা পাকে।)
21 সুতরাং তারা সেই দেশ অনুসন্ধান করতে চলে গেল। তারা সীন মরুভূমি থেকে রহোব এবং লেবো হমাত পর্যন্ত জায়গা অনুসন্ধান করল। 22 তারা নেগেভের মধ্য দিয়ে দেশে প্রবেশ করে হিব্রোণে গেল। (মিশরের সোয়ন শহর তৈরীর সাত বছর আগে হিব্রোণ শহর তৈরী হয়েছিল।) অহীমান, শেশয় এবং তল্ময় ওখানে বাস করতেন। তাঁরা ছিলেন অনাকের উত্তরপুরুষ। 23 এরপর তারা ইষ্কোল উপত্যকায় গিয়ে সেখানে একটি দ্রাক্ষা গাছের শাখা কাটল। শাখাটিতে এক থোকা দ্রাক্ষা ছিল। তারা সেই শাখাটিকে একটি খুঁটির মাঝখানে রেখে দুজন মিলে সেই খুঁটি বহন করল। এছাড়াও তারা ডালিম ফল এবং ডুমুরও নিয়ে এসেছিল। 24 ঐ জায়গাটির নাম ছিল ইষ্কোল উপত্যকা, কারণ ঐ জায়গাতেই ইস্রায়েলের লোকরা দ্রাক্ষার থোকাগুলো কেটেছিল।
25 40 দিন ধরে গুপ্তচররা সেই দেশ অনুসন্ধান করল। এরপর তারা শিবিরে ফিরে গেল। 26 ইস্রায়েলের গুপ্তচররা সেই সময় কাদেশের কাছে পারণ মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করেছিল। গুপ্তচররা মোশি হারোণ এবং ইস্রায়েলের সব লোকদের কাছে গিয়ে তারা যা যা দেখেছে সে সম্পর্কে বলল এবং তাদের সেই দেশের ফলও দেখাল। 27 তারা মোশিকে বলল, “আমরা সেই দেশে গেলাম যেখানে আপনি আমাদের পাঠালেন। সেই দেশটি প্রচুর ভালো ভালো দ্রব্যসামগ্রীতে পরিপূর্ণ। এখানে এমন কিছু ফল আছে যা ওখানে ফলে। 28 কিন্তু ওখানে যারা বসবাস করে তারা খুবই শক্তিশালী। শহরগুলো খুবই বড়ো। খুবই মজবুতভাবে সেগুলি সুরক্ষিত। এমনকি আমরা সেখানে অনাকের কয়েকজন লোককে দেখেছি। 29 অমালেকের লোকরা নেগেভে বাস করে। হিত্তীয়, যিবুষীয় এবং ইমোরীয়রা পার্বত্য শহরে বাস করে। কনানীয়রা সমুদ্রের কাছে যর্দন নদীর পাশে বাস করে।”
30 মোশির কাছে যারা বসেছিল, কালেব তখন তাদের চুপ করতে বলল। তারপর কালেব বলল, “আমরা ওপরে যাবো এবং ঐ জায়গা আমাদের জন্য অধিকার করব। আমরা সহজেই ঐ জায়গা অধিকার করতে পারবো।”
31 কিন্তু তার সঙ্গে অন্য যারা গিয়েছিল তারা বলল, “আমরা ঐ লোকদের সঙ্গে লড়াই করতে পারবো না। তারা আমাদের থেকে অনেক বেশী শক্তিশালী।” 32 এবং ঐ লোকরা ইস্রায়েলের অন্যান্য সমস্ত লোকদের বলল যে ঐ দেশের লোকদের পরাস্ত করার পক্ষে তারা যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। তারা বলল, “আমরা যে দেশ দেখেছিলাম সে দেশটি শক্তিশাল লোকে পরিপূর্ণ। যারা ওখানে গিয়েছে এমন যে কোনো ব্যক্তিকেই ওখানকার অধিবাসীরা খুব সহজেই পরাস্ত করতে পারবে। এমন শক্তি তাদের আছে। 33 আমরা সেখানে দৈত্যাকার নেফিলিম লোকদের দেখেছি। (অনাকের উত্তরপুরুষরা নেফিলিম লোকদের থেকেই এসেছিল।) তাদের কাছে আমাদের ফড়িং-এর মতো দেখাচ্ছিল। হ্যাঁ, আমরা তাদের কাছে ফড়িং-এর মতো।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International