Chronological
ইয়োব ইলীফসকে উত্তর দিলেন
6 1-2 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন:
“আমি যদি আমার ক্রোধকে দাঁড়িপাল্লার এক দিকে এবং দুঃখকে অন্য দিকে রাখতে পারতাম
তাহলে তাদের ওজন একই হত।
3 তাদের ওজন সমুদ্রের সব কটি বালুকণার চেয়েও বেশী।
এই কারণেই আমার বাক্য এত কর্কশ।
4 সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের তীর আমার দেহে বিদ্ধ হয়েছে।
আমার জীবন ঐ সব তীরের বিষ পান করছে!
ঈশ্বরের ভয়ঙ্কর অস্ত্রসমূহ আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সারি দিয়ে রাখা আছে।
5 যখন কোন রকম মন্দ কিছু না ঘটে তখন তোমার কথাগুলো বলা সহজ।
এমনকি বুনো গাধা যখন খাওয়ার ঘাস পায়, সে কোন অভিযোগ করে না।
এমনকি, যখন খাদ্য থাকে, তখন কোন গরুও অভিযোগ করে না।
6 স্বাদহীন কোন বস্তু কি লবণ ছাড়া খাওয়া যায়?
ডিমের সাদা অংশের কি কোন স্বাদ আছে? না!
7 আমি এরকম খাবার স্পর্শ করতে অস্বীকার করি,
ঐ ধরণের খাদ্য আমার কাছে পচা খাবারের মত।
এবং তোমার কথাগুলো আমার কাছে সেই রকমই স্বাদহীন বলে মনে হচ্ছে।
8 “যা চেয়েছি তা যদি পেতাম!
আমি যা সত্যিই চাই তা যদি ঈশ্বর দিতেন!
9 আমি চেয়েছিলাম, ঈশ্বর আমায় ধ্বংস করুন।
এগিয়ে এসে আমায় হত্যা করুন।
10 যদি তিনি আমায় হত্যা করেন, আমি স্বস্তি পাবো, আমি সুখী হব: এত যন্ত্রণা সত্ত্বেও আমি সেই পবিত্রতমের আদেশ পালন করা থেকে বিরত হই নি।
11 “আমার সব শক্তি চলে গেছে, তাই আমার বেঁচে থাকার কোন আশা নেই।
আমি জানি না আমার কি হবে, তাই আমার ধৈর্য্য ধরার কোন কারণ নেই।
12 আমি পাথরের মত শক্ত নই।
আমার দেহ পিতল দিয়ে তৈরী নয়।
13 আত্মনির্ভর হবার মত আমার কোন শক্তি নেই।
কেন? কারণ আমার কাছ থেকে সাফল্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
14 “যদি কেউ সমস্যায় পড়ে, তার প্রতি তার বন্ধুর সদয় হওয়া উচিৎ।
যদি কেউ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দিক থেকেও মুখ ফেরায়, তবুও তার প্রতি তার বন্ধুর বিশ্বস্ত থাকা উচিৎ।
15 কিন্তু তুমি, আমার ভাই, তুমি বিশ্বস্ত ছিলে না, আমি তোমার প্রতি নির্ভর করতে পারিনি।
তুমি সেই ঝর্ণার মত যা কখনও প্রবাহিত হয় আবার কখনও প্রবাহিত হয় না। তুমি সেই ঝর্ণার মত
16 যা বরফে জমে গেলে বা বরফ গলা জলে ভরে গেলে উপচে পড়ে।
17 এবং যখন আবহাওয়া শুষ্ক ও গরম থাকে
তখন তার জল প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।
তার ধারাগুলো লুপ্ত হয়।
18 বণিকের দল তাদের রাস্তা থেকে সরে যায়
এবং তারা মরুভূমিতে বিলুপ্ত হয়।
19 টেমার বণিকরা জলের অন্বেষণ করলো।
শিবার পর্যটকরা আশা নিয়ে অপেক্ষা করলো।
20 তারা নিশ্চিত ছিল যে তারা জল পাবেই
কিন্তু তারাও হতাশ হল।
21 এখন, তুমি সেই সব ঝর্ণার মত।
আমার দুর্দশা দেখে তুমি ভীত হয়েছো।
22 আমি কি তোমার সাহায্য চেয়েছি?
না চাই নি! কিন্তু তুমি সহজেই তোমার উপদেশ দিলে!
23 আমি কি তোমাকে বলেছি, ‘আমাকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা কর!’
অথবা ‘নৃশংস লোকের হাত থেকে আমায় রক্ষা কর!’
24 “তাই, এখন আমায় শিক্ষা দাও, আমি চুপ করে থাকবো।
দেখিয়ে দাও আমি কি ভুল করেছি।
25 সৎ-বাক্যই শক্তিশালী।
কিন্তু তোমার যুক্তি কোন কিছুই প্রমাণ করে না।
26 তুমি কি আমার সমালোচনা করার পরিকল্পনা করেছ?
তুমি কি আরও ক্লান্তিকর কথা বলবে?
27 তুমি একজন পিতৃ-মাতৃহীনের সম্পত্তি নিয়ে
জুয়া খেলতে পারো।
তুমি তোমার প্রতিবেশীকেও বিক্রি করে দিতে পারো।
28 কিন্তু এখন, আমার মুখ দেখে বোঝার চেষ্টা কর।
আমি তোমার কাছে মিথ্যা বলবো না।
29 তোমার সিদ্ধান্তগুলি পুনর্বিবেচনা কর।
অন্যায় বিচার করো না।
পুনরায় বিবেচনা কর কারণ এ ব্যাপারে আমি নির্দোষ।
আমি কোন ভুল করিনি।
30 আমি মিথ্যা বলছি না।
আমি কি পচা জিনিসের স্বাদ বুঝি না?”
7 ইয়োব বললেন, “পৃথিবীতে মানুষকে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়।
তাদের জীবন একজন কঠোর পরিশ্রমী শ্রমিকের জীবনের মত।
2 মানুষ সেই ক্রীতদাসের মত, যে প্রচণ্ড গরমের দিনে সারাদিন পরিশ্রমের পর একটু শীতল ছায়া চায়।
মানুষ একজন ভাড়াটে শ্রমিকের মত যে বেতনের দিনের জন্য অপেক্ষা করে।
3 তাই, ঠিক একটি ক্রীতদাস ও শ্রমিকের মত আমাকে মাসের পর মাস নৈরাশ্য দেওয়া হয়েছে।
আমাকে দুঃখভরা রাতগুলি গুনে দেওয়া হয়েছে।
4 যখন আমি শুই, আমি ভাবি,
‘আবার কতক্ষণ পরে জেগে উঠবো?’
রাত্রি প্রলম্বিত হয়।
সূর্য ওঠা পর্যন্ত আমি ছটফট করি।
5 আমার দেহ কৃমিকীট ও আবর্জনার মণ্ড দিয়ে আবৃত।
আমার চামড়া ফেটে যায় ও রস গড়ায়।
6 “আমার জীবন, তাঁতির মাকুর থেকেও দ্রুত অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে।
এবং আশাহীন ভাবে আমার জীবন শেষ হচ্ছে।
7 স্মরণে রেখো, আমার জীবন একটি নিশ্বাস মাত্র।
আর কখনও আমি ভালো কিছু দেখবো না।
8 এবং যদিও তুমি এখন আমায় দেখছ তুমি আমাকে দেখবে না,
তুমি আমাকে খুঁজতে থাকবে কিন্তু আমি থাকবো না।
9 মেঘ চলে যায় এবং বিলুপ্ত হয়। একই ভাবে, একজন লোক কবরে চলে যায়।
সে আর ফিরে আসে না।
10 তার পুরোনো বাড়ীতে সে আর কখনই ফিরে আসবে না।
তার বাড়ী তাকে আর চিনতে পারবে না।
11 “তাই আমি চুপ করে থাকবো না!
আমি কথা বলবো, আমার আত্মা কষ্ট পাচ্ছে!
আমি অভিযোগ করবো কারণ আমার আত্মা বীতশ্রদ্ধ হয়ে গেছে।
12 ঈশ্বর, কেন আপনি আমায় পাহারা দিচ্ছেন?
আমি কি সমুদ্র বা সমুদ্র দানব?
13 যখন আমি বলি আমার বিছানা আমাকে আরাম দেবে,
আমার চৌকি আমাকে বিশ্রাম ও শান্তি দেবে
14 তখন স্বপ্ন দেখিয়ে আপনি আমায় ভয় পাওয়ান।
ভয়াবহ স্বপ্ন দর্শন করিয়ে আপনি আমায় ভীত করেন।
15 তাই ফাঁসি যাওয়াটাই আমি এখন শ্রেয় বলে মনে করি।
এমন ভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে আমার মরে যাওয়াই ভাল।
16 আমি আমার জীবনকে বাতিল করে দিয়েছিলাম।
আমি চিরদিন বেঁচে থাকতে চাই না।
আমাকে একা থাকতে দিন।
আমার জীবন শুধুই একটি বয়ে যাওয়া নিঃশ্বাস।
17 ঈশ্বর, কেন মানুষ আপনার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ?
কেন আপনি তাকে এত লক্ষ্য করেন?
18 কেন প্রতিদিন সকালে আপনি মানুষ পরীক্ষা করেন?
কেন প্রতি মূহুর্তে লোকদের যাচাই করেন?
19 ঈশ্বর, আপনি কি আমার উপর থেকে আপনার দৃষ্টি সরিয়ে নেবেন না?
আপনি কি এক পলকের জন্যও আমাকে একা ছাড়বেন না?
20 ঈশ্বর, আপনি মানুষের ওপর নজর রাখেন।
আমি অন্যায় করেছি, ভাল।
আমি আপনার প্রতি কি করতে পারি?
কেন আমি আপনার বোঝা হয়ে উঠেছি?
21 অপরাধ করার জন্য কেন আপনি আমায় ক্ষমা করছেন না?
আমার পাপের জন্য কেন আপনি আমায় ক্ষমা করছেন না?
আমি খুব তাড়াতাড়ি মরে গিয়ে কবরে যাবো।
তখন আপনি আমায় খুঁজবেন, কিন্তু আমি তখন চলে যাবো।”
বিল্দদ ইয়োবের সঙ্গে কথা বললেন
8 তখন শূহীর বিল্দদ উত্তর দিলেন,
2 “আর কতক্ষণ তুমি ঐ ভাবে কথা বলবে?
তোমার কথা ঝোড়ো বাতাসের মতই বয়ে চলেছে।
3 ঈশ্বর সর্বদাই সৎ পথে থাকেন।
যা সঠিক, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তা কখনই পরিবর্তিত করেন না।
4 যদি তোমার সন্তানরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করে থাকে,
তাহলে ঈশ্বর তাদের পাপের জন্য শাস্তি দিয়েছেন।
5 কিন্তু এখন ইয়োব, তুমি যদি ঈশ্বরের
এবং সর্বশক্তিমানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর,
6 যদি তুমি সৎ ও শুচি থাকো, তিনি শীঘ্রই এসে তোমাকে সাহায্য করবেন।
তোমার যেমন গৃহটি প্রাপ্য তেমনটিই তিনি তোমাকে ফিরিয়ে দেবেন।
7 তোমার যে বিপুল উন্নতি হবে, তার কাছে,
আগে তোমার যা ছিল, তা সামান্য মনে হবে।
8 “বয়স্ক লোকদের জিজ্ঞাসা করে দেখ।
খুঁজে দেখ তাদের পূর্বপুরুষরা কি শিক্ষা পেয়েছে?
9 মনে হচ্ছে যেন আমরা গতকাল জন্মেছি।
জানার পক্ষে আমরা একেবারেই অপক্ক।
এই পৃথিবীতে আমাদের জীবন ছায়ার মতোই ক্ষণস্থায়ী।”
10 হয়তো বয়স্ক লোকরা তোমায় শিক্ষা দিতে পারেন।
হয়তো বা, তাঁরা যা শিখেছেন তা তোমাকে শেখাতে পারেন।
11 বিল্দদ বললেন, “শুকনো জমিতে কি ভূর্জগাছ বড় হতে পারে?
জল ছাড়া কি এরস গাছ বাড়তে পারে?
12 না, যদি জল শুকিয়ে যায়, তাহলে তারাও শুকিয়ে যাবে।
তারা এত ছোট হয়ে যাবে যে তাদের কেটে ব্যবহার করাই মুস্কিল হবে।
13 যারা ঈশ্বরকে ভুলে যায় তারাও ঐ নল-খাগড়ার মতোই।
ঈশ্বরহীন মানুষের আশা বিনষ্ট হয়।
14 ওই লোকের নির্ভর করার কোন জায়গা নেই।
তার নিরাপত্তা মাকড়সার জালের মতোই দুর্বল।
15 যদি কোন লোক মাকড়সার জালের ওপর নির্ভর করে
তাহলে তা ভেঙে যায়।
সে মাকড়সার জাল ধরে,
কিন্তু সেই জাল তাকে আশ্রয় দেয় না।
16 সেই লোকটি সূর্যালোকের মধ্যে একটি ভেজা গাছের মত।
তার ডালপালা সারা বাগানে ছড়িয়ে পড়ে।
17 পাথরের চাঁইয়ের মধ্যে সে তার শিকড় ছড়িয়ে রাখে,
পাথরের মধ্যেই সে তার শিকড় গজায়।
18 কিন্তু যদি গাছটি তার জায়গা থেকে সরে যায়, গাছটি মরে যাবে
এবং কেউ জানবে না যে গাছটি কোন দিন ঐখানে ছিলো।
19 কিন্তু গাছটি যতদিন বেঁচে ছিল ততদিন জীবন উপভোগ করছিল
এবং অন্যান্য গাছগুলো এর জায়গায় জন্মাবে।
20 ভালো লোকদের ঈশ্বর কখনই পরিত্যাগ করেন না।
তিনি দুষ্ট লোকদের সাহায্য করেন না।
21 ঈশ্বর তোমার মুখ হাসিতে ভরিয়ে দেবেন
এবং তোমার ঠোঁট আনন্দ ধ্বনিতে পূর্ণ করবেন।
22 কিন্তু তোমার শত্রুদের মুখ লজ্জায় আচ্ছন্ন হয়ে যাবে।
এবং দুষ্ট লোকদের ঘরবাড়ী ধ্বংস হয়ে যাবে।”
বিল্দদকে ইয়োবের উত্তর
9 তখন ইয়োব উত্তর দিলেন:
2 “হ্যাঁ, আমি জানি তুমি যা বলছো তা সৎয।
কিন্তু একজন মানুষ ঈশ্বরের সঙ্গে যুক্তি-তর্কে কিভাবে জিততে পারে?
3 একজন মানুষ ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করতে পারে না!
ঈশ্বর 1000টা প্রশ্ন করতে পারেন কিন্তু কোন মানুষ তার একটা প্রশ্নেরও উত্তর দিতে পারে না!
4 ঈশ্বর প্রচণ্ড জ্ঞানী এবং তাঁর বিপুল ক্ষমতা।
কেউই ঈশ্বরের সঙ্গে অক্ষত হয়ে লড়াই করতে পারে না।
5 ঈশ্বর যখন ক্রোধান্বিত হন তখন পর্বতগুলো কি হচ্ছে বোঝবার আগেই তিনি পর্বতদের সরিয়ে দেন।
6 পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেবার জন্য ঈশ্বর ভূমিকম্প পাঠান।
ঈশ্বর পৃথিবীর ভিত পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেন।
7 ঈশ্বর সূর্যের সঙ্গে কথা বলতে পারেন এবং সূর্যোদয় নাও হতে দিতে পারেন।
তিনি তারাদের বন্দী করে ফেলতে পারেন যাতে তারারা আর না জ্বলে।
8 ঈশ্বর নিজেই আকাশ সৃষ্টি করেছেন।
তিনি সমুদ্রের ঢেউয়ের ওপর দিয়ে হেঁটে যান।
9 “ঈশ্বরই বৃহৎ ভাল্লুকমণ্ডলী, সপ্তর্ষিমণ্ডল, কালপুরুষ এবং কৃত্তিকা সৃষ্টি করেছেন।
তিনিই গ্রহরাজি সৃষ্টি করেছেন যা দক্ষিণের আকাশ পরিক্রমা করে।
10 ঈশ্বর মহান সব কাজ করেন যা মানুষ বুঝে উঠতে পারে না।
ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কাজ করেন তা অগণ্য।
11 দেখ, ঈশ্বর আমার পাশ দিয়ে চলে যান কিন্তু আমি তাঁকে দেখতে পাই না।
তিনি পাশ দিয়ে চলে যান কিন্তু আমি তা উপলদ্ধি করতে পারি না।
12 যদি ঈশ্বর কিছু নিয়ে যান
কেউই তাঁকে রোধ করতে পারে না।
কেউই তাঁকে বলতে পারে না,
‘আপনি কি করছেন?’
13 ঈশ্বর তাঁর রাগ দমন করবেন না।
এমন কি রাহাবের[a] অনুচররাও ঈশ্বরের সামনে নত হয়!
14 তাই আমি ঈশ্বরের সঙ্গে তর্ক করতে পারি না।
আমি জানি না তাঁকে কি বলতে হবে।
15 আমি নির্দোষ, কিন্তু আমি তাঁকে কোন উত্তর দিতে পারি না।
আমি শুধু আমার বিচারকের কাছে প্রার্থনা করতে পারি।
16 আমি যদি ঈশ্বরকে ডাকি এবং তিনি যদি উত্তর দেন,
তবু আমি বিশ্বাস করবো না যে উনি আমার কথা শুনবেন।
17 অকারণে তিনি আমার দেহে প্রচুর ক্ষত দেবেন।
আমাকে আঘাত করার জন্য ঈশ্বর ঝড় পাঠাবেন।
18 ঈশ্বর পুনর্বার আমায় নিঃশ্বাস নিতে দেবেন না।
তার বদলে তিনি আমায় ভয়ঙ্কর কষ্টে ভরিয়ে দেবেন।
19 এটা যদি শক্তির ব্যাপার হয়, নিশ্চয়ই তিনি অনেক বেশী শক্তিশালী।
এটা যদি সুবিচারের ব্যাপার হয়, ঈশ্বরকে কে আদালতে আসার জন্য বাধ্য করতে পারে?
20 আমি নিরপরাধ, কিন্তু আমার নিজের কথাই আমাকে অপরাধী করে তোলে।
আমি নির্দোষ, কিন্তু তিনি আমায় তাঁর বিচারে অপরাধী করবেন।
তাঁর বিচারে আমি অপরাধী হব।
21 আমি নির্দোষ, কিন্তু আমি জানি না কি ভাবতে হবে।
আমি আমার নিজের জীবনকে ঘৃণা করি।
22 আমি নিজেকে বলি, ‘একই ঘটনা সবার ক্ষেত্রেই ঘটে।
নির্দোষ লোক অপরাধীর মতোই মারা যায়।
ঈশ্বর তাদের সবার জীবন শেষ করে দেন।’
23 যখন ভয়ঙ্কর কিছু একটা ঘটে এবং একজন নির্দোষ লোক মারা যায়, ঈশ্বর কি তার প্রতি বিদ্রূপের হাসি হাসেন?
24 যখন একজন দুষ্ট লোক রাজ্য শাসন করে, তখন কি ঘটছে, তা দেখা থেকে ঈশ্বর কি নেতাদের বিরত রাখেন?
যদি তাই সত্য হয়, তাহলে ঈশ্বর কে?[b]
25 “আমার দিন একজন দৌড়বাজের থেকেও দ্রুত চলে যাচ্ছে।
আমার দিনগুলি উড়ে চলে যাচ্ছে এবং তাদের মধ্যে কোন আনন্দ নেই।
26 আমার দিনগুলি নৌকার মত দ্রুত চলে যাচ্ছে
ঠিক যেমন ঈগল দ্রুত গতিতে শিকারের ওপর ছোঁ মারে।
27 “যদি আমি বলি, ‘আমি অভিযোগ করবো না, আমি আমার যন্ত্রণা ভুলে যাবো।
আমি আমার মুখে হাসি ফোটাতে পারবো।’
28 প্রকৃতপক্ষে এটা কোন কিছুকেই পরিবর্তিত করবে না।
যন্ত্রণা এখনও আমাকে ভীত করে!
29 আমি ইতিপূর্বেই অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছি।
তাই কেন আমি অকারণে চেষ্টা করবো?
আমি বলি, ‘ভুলে যাও!’
30 যদি আমি নিজেকে তুষার দিয়ে ধুয়ে ফেলি
এবং সাবান দিয়ে আমার হাত পরিষ্কার করি,
31 তবুও ঈশ্বর আমাকে কবরে শাস্তি দেবেন এবং তোমরা আমাকে আবর্জনার মধ্যে ফেলে দেবে।
তখন আমার বস্ত্রও আমায় ঘৃণা করবে।
32 ঈশ্বর তো আমার মতো একজন মানুষ নন।
সেই জন্য আমি তাঁকে উত্তর দিতে পারি না।
আমরা আদালতে মিলিত হতে পারি না।
33 আমি মনে করি দুপক্ষের কথা শোনার জন্য একজন মধ্যপক্ষ মানুষের দরকার।
আমি মনে করি, আমাদের উভয়েরই বিচার করার জন্য যদি কেউ একজন থাকতো!
34 আমি মনে করি, ঈশ্বরের শাস্তিদানের দণ্ড কেড়ে নেওয়ার জন্য যদি কেউ থাকতো!
তাহলে ঈশ্বর আমায় আর ভয় দেখাতে পারতেন না।
35 তাহলে, ঈশ্বরকে ভয় না করে, আমি যা বলতে চাই, তা বলতে পারতাম।
কিন্তু এখন আমি তা করতে পারি না।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International