Beginning
যোহনের স্বর্গীয় দর্শন
4 এরপর আমি একটি দর্শন পেলাম; আর দেখতে পেলাম আমার সামনে স্বর্গে একটা দরজা খোলা রয়েছে। এর আগে যে কন্ঠস্বর আমার সঙ্গে কথা বলেছিল, সেই একই স্বর আর তূরীর আওয়াজ শুনতে পেলাম, তা আমাকে বলছে, “এখানে উঠে এস। এরপর যা কিছু অবশ্যই ঘটবে তা আমি তোমাকে দেখাব।” 2 মুহূর্তের মধ্যে আমি আত্মাবিষ্ট হলাম, আমার সামনে স্বর্গে এক সিংহাসন ছিল, সেই সিংহাসনের ওপর একজন বসেছিলেন। 3 যিনি সেখানে বসেছিলেন, তাঁর দেহ সূর্য্যকান্ত ও সার্দীয় মণির মত অত্যুজ্জ্বল। সেই সিংহাসনের চারদিকে পান্নার মতো ঝলমলে মেঘধনুক ছিল।
4 সেই সিংহাসনের চারদিকে চব্বিশটি সিংহাসন ছিল। সেইসব সিংহাসনে চব্বিশ জন প্রাচীন[a] বসেছিলেন, তাঁরা সকলে শুভ্র পোশাক পরেছিলেন আর তাঁদের মাথায় সোনার মুকুট ছিল। 5 সেই সিংহাসন থেকে বিদ্যুতের ঝলকানি, গুরু গুরু শব্দ ও বজ্রধ্বনি নির্গত হচ্ছিল; আর সেই সিংহাসনের সামনে সাতটি মশাল জ্বলছিল। সাতটি আগুনের মশাল ঈশ্বরের সেই সপ্ত আত্মার প্রতীক। 6 আর সেই সিংহাসনের সামনে ছিল কাঁচের মতো সমুদ্র যা স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ।
সিংহাসনের সামনে এবং সিংহাসনের চারদিকে চারজন প্রাণী ছিল যাদের সামনে ও পেছনে সর্বাঙ্গ চোখে ভরা ছিল। 7 প্রথম প্রাণীটি দেখতে সিংহের মতো, দ্বিতীয় প্রাণীটি ষাঁড়ের মতো, তৃতীয় প্রাণীটির মুখ মানুষের মুখের মতো। চতুর্থ প্রাণীটি উড়ন্ত ঈগলের মতো। 8 এই চারটি প্রাণীর প্রত্যেকের ছটি করে পাখা ছিল, সেই প্রাণীগুলির সর্বাঙ্গে, ভেতরে ও বাইরে ছিল চোখ, আর তাঁরা দিন-রাত সব সময় বিরত না হয়ে এই কথা বলছিলেন:
“পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান,
যিনি ছিলেন, যিনি আছেন ও যিনি আসছেন।”
9 যিনি সিংহাসনে বসে আছেন সেই জীবন্ত প্রাণীরা তাঁর মহিমা, সম্মান ও ধন্যবাদ কীর্তন করেন। ইনি হলেন সেই চিরজীবি। আর এইরকম ঘটলে প্রত্যেকবার, 10 যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর সামনে ঐ চব্বিশজন প্রাচীন ভূমিষ্ট হয়ে প্রণাম করেন; আর যিনি চিরজীবি তাঁর উপাসনা করেন আর নিজের নিজের মাথার মুকুট সিংহাসনের সামনে রেখে বলেন:
11 “আমাদের প্রভু ও ঈশ্বর!
তুমি মহিমা, সম্মান ও পরাক্রম পাবার যোগ্য,
কারণ তুমি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছ।
তোমার ইচ্ছাতেই সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে ও সব কিছুর অস্তিত্ব আছে।”
পুঁথি খোলার যোগ্যতা কার আছে?
5 সিংহাসনে যিনি বসেছিলেন তাঁর ডানহাতে আমি একটি পুঁথি[b] দেখলাম যার ভেতরে ও বাইরে উভয়দিকে লেখা ও তা সাতটি মোহর দিয়ে সীলমোহর করে বন্ধ করা ছিল। 2 আর আমি এক শক্তিমান স্বর্গদূতকে দেখলাম, যিনি চিৎকার করে বলছেন, “এটি খুলতে পারে ও তার সীলমোহরগুলি ভাঙতে পারে কার এমন যোগ্যতা আছে?” 3 কিন্তু স্বর্গে, পৃথিবীতে অথবা পৃথিবীর নীচে কেউ পুস্তকটি না পারল খুলতে, না পারল তার ভেতরে কি আছে তা দেখতে। 4 সেই পুঁথিটি খোলবার ও তার ভেতরে দেখবার যোগ্য কাউকে পাওয়া গেল না দেখে আমি অঝোরে কাঁদতে থাকলাম। 5 তখন সেই প্রাচীনদের মধ্যে একজন আমাকে বললেন, “তুমি কেঁদো না! দেখ, যিনি যিহূদা বংশের সিংহ, দায়ূদের বংশধর, তিনি বিজয়ী হয়েছেন, তিনি সাতটি সীলমোহর ভাঙ্গার ও পুঁথিটি খোলার যোগ্য হয়েছেন।”
6 পরে আমি দেখলাম ঐ সিংহাসনের সামনে চার জন প্রাণীর সঙ্গে এবং প্রাচীনদের সঙ্গে এক মেষশাবক দাঁড়িয়ে আছেন; সেই মেষশাবককে এমন দেখাচ্ছিল যেন তাঁকে বধ করা হয়েছে। তাঁর সাতটি শৃঙ্গ ও সাতটি চক্ষু, সেই চক্ষুগুলি হল ঈশ্বরের সপ্ত আত্মা যাদের পৃথিবীর সর্বত্র পাঠানো হয়েছে। 7 এরপর সেই মেষশাবক এসে যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর হাত থেকে সেই পুঁথিটি নিলেন। 8 তিনি যখন পুঁথিটি নিলেন, তখন ঐ চারজন প্রাণী ও চব্বিশজন প্রাচীন মেষশাবকের সামনে ভূমিষ্ট হয়ে প্রণাম করলেন। তাঁদের প্রত্যেকের কাছে ছিল একটি করে বীণা ও সোনার বাটিতে সুগন্ধি ধূপ, সেই ধূপ হচ্ছে ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের প্রার্থনাস্বরূপ। 9 তাঁরা মেষশাবকের জন্য এক নতুন গীত গাইছিলেন:
“তুমি ঐ পুঁথিটি নেবার
ও তার সীলমোহর ভাঙার যোগ্য,
কারণ তুমি বলি হয়েছিলে;
আর তোমার রক্ত দিয়ে সমস্ত উপজাতি, ভাষা, সম্প্রদায় ও জাতির মধ্য থেকে
ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে লোকদের কিনেছ।
10 তুমি তাদের নিয়ে এক রাজ্য গড়েছ ও আমাদের ঈশ্বরের যাজক করেছ
আর তারা সমস্ত পৃথিবীতে রাজত্ব করবে।”
11 পরে আমি তাকালাম, আর সেই সিংহাসন, জীবন্ত প্রাণী ও প্রাচীনদের চারদিকে অনেক স্বর্গদূতের কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম। তারা সংখ্যায় লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি। 12 তারা উদাত্ত কন্ঠে বলতে লাগলেন:
“সেই মেষশাবক, যিনি হত হয়েছিলেন,
তিনিই পরাক্রমী, সম্পদ, বিজ্ঞতা, ক্ষমতা,
সম্মান, মহিমা ও প্রশংসা পাবার পরম যোগ্য।”
13 পরে আমি স্বর্গে, পৃথিবীতে, পৃথিবীর নীচে ও সমুদ্রের মধ্যে সমস্ত প্রাণী এবং আর যা কিছু সেইসব জায়গাতে ছিল তাদের এই বাণী শুনলাম:
“যিনি সিংহাসনে বসে আছেন
তাঁর ও মেষশাবকের প্রতি প্রশংসা, সম্মান,
মহিমা ও পরাক্রম যুগে যুগে বর্ষিত হোক্।”
14 সেই চারজন প্রাণী তখন বললেন, “আমেন!” এরপর সেই প্রাচীনরা মাথা নীচু করে প্রণাম ও উপাসনা করলেন।
মেষশাবকটি পুঁথি খুললেন
6 মেষশাবক যখন সেই সাতটির মধ্যে প্রথম সীলমোহরটি ভেঙে খুললেন, তখন আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্যে একজনকে দেখলাম ও তার মেঘ গর্জনের মতো কন্ঠস্বর শুনলাম। সে বলল, “এস!” 2 এরপর আমি দেখলাম, আমার সামনে একটি সাদা রঙের ঘোড়া। তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁর হাতে একটি ধনুক ছিল। তাঁকে একটা মুকুট পরিয়ে দেওয়া হলে তিনি যুদ্ধ জয় করতে বিজেতার মত বাইরে এলেন।
3 মেষশাবক যখন দ্বিতীয় সীলমোহরটি ভাঙলেন তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে দ্বিতীয় জনকে বলতে শুনলাম, “এস!” 4 তখন আর একটি আগুনের মতো লাল রঙের ঘোড়া বার হয়ে এল। সেই ঘোড়াটির ওপর যে বসে আছে তাকে পৃথিবী থেকে শান্তি কেড়ে নেবার ক্ষমতা দেওয়া হল; আর দেওয়া হল সেই ক্ষমতা, যার বলে মানুষ পরস্পরকে বধ করবে। তাকে একটা বড় তরবারি দেওয়া হল।
5 মেষশাবক যখন তৃতীয় সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন, আমি শুনলাম, সেই প্রাণীদের মধ্যে তৃতীয় জন বললেন, “এস!” পরে আমি দেখলাম, একটা কালো ঘোড়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে, তার ওপর যে বসে আছে, তার হাতে একটা দাঁড়িপাল্লা। 6 এরপর আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্য থেকে একটা স্বরের মত কোন একটা কিছু শুনতে পেলাম। সেই স্বর বলছে, “এক সের গম একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান; আর তিন সের যব, একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান। অলিভ তেল ও দ্রাক্ষারস নষ্ট করো না।”
7 মেষশাবক যখন চতুর্থ সীলমোহরটি ভাঙলেন, তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে চতুর্থ জনকে বলতে শুনলাম, “এস!” 8 পরে আমি দেখলাম, একটা পাণ্ডুবর্ণ ঘোড়া আমার সামনে। তার ওপর যে বসে আছে তার নাম “মৃত্যু” আর পাতাল তার ঠিক পেছনেই আছে। তাকে পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ লোকের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবার ক্ষমতা দেওয়া হল, যেন সে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও হিংস্র পশুদের দিয়ে সকলকে বধ করতে পারে।
9 মেষশাবক যখন পঞ্চম সীলমোহরটি ভাঙলেন, তখন আমি যজ্ঞবেদীর নীচে সেইসব আত্মাকে দেখলাম যাঁদের হত্যা করা হয়েছিল, কারণ তাঁরা ঈশ্বরের বার্তা বিশ্বস্তভাবে প্রচার করেছিলেন এবং তাঁদের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। 10 তাঁরা উচ্চকন্ঠে বললেন, “পবিত্র ও সত্য প্রভু, যাঁরা আমাদের হত্যা করেছে, পৃথিবীর সেই সমস্ত লোকদের বিচার করতে ও শাস্তি দিতে তুমি আর কতো দেরী করবে?” 11 তাঁদের প্রত্যেককে শুভ্র রাজ-পোশাক দেওয়া হল এবং আরও কিছুকাল অপেক্ষা করতে বলা হল, কারণ তাঁদের কিছু সহসেবক ভাই ও বোন তখনও ছিলেন যাঁরা তাঁদের মত নিহত হবেন। এই সমস্ত নিয়ম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অপেক্ষা করতে বলা হল।
12 পরে আমি যা দেখলাম, তিনি ষষ্ঠ সীলমোহরটি ভাঙলেন। তখন ভীষণ ভূমিকম্প হল। সূর্য কালো শোকবস্ত্রের মত হয়ে গেল আর চাঁদ রক্তের মতো লাল হয়ে গেল। 13 প্রবল বাতাসে নড়ে গাছ থেকে যেমন কাঁচা ডুমুর পড়ে যায়, তেমনি আকাশ থেকে নক্ষত্ররা পৃথিবীতে খসে পড়তে লাগল। 14 গোটানো পুঁথির মতো আকাশমণ্ডল অদৃশ্য হল। সমস্ত পাহাড় ও দ্বীপকে ঠেলে নিজের জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।
15 পৃথিবীর রাজাগণ, সমস্ত অধিপতি, সেনাবাহিনীর অধিনায়করা, ধনবানরা, শক্তিশালী লোকরা ও পৃথিবীর সব স্বাধীন লোক এবং সমস্ত দাস গুহার মধ্যেও পাহাড়গুলির পাথরের মধ্যে নিজেদের লুকিয়ে রাখলো। 16 তারা পর্বত এবং পাহাড়গুলোকে বলতে লাগল, “আমাদের ওপরে চেপে বসো এবং যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর কাছ থেকে এবং মেষশাবকের ক্রোধের হাত থেকে আমাদের লুকিয়ে রাখো। 17 কারণ তাদের ক্রোধের মহাদিন এসে পড়ল। কার সাধ্য আছে তার সামনে দাঁড়াবার?”
ইস্রায়েলের 144,000 লোক
7 এরপর আমি দেখলাম, পৃথিবীর চার কোনে চারজন স্বর্গদূত দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা পৃথিবীর চারটি বায়ুপ্রবাহকে আটকে রেখেছেন, যেন পৃথিবীর বা সমুদ্রের বা গাছের ওপর দিয়ে বাতাস না বয়। 2 এরপর আমি আর এক স্বর্গদূতকে পূর্বদিক থেকে উঠে আসতে দেখলাম। তাঁর হাতে ছিল জীবন্ত ঈশ্বরের সীলমোহর। ঈশ্বর যে চারজন স্বর্গদূতকে পৃথিবী ও সমুদ্রে আঘাত করবার ক্ষমতা দিয়েছিলেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে তিনি চিৎকার করে বললেন, 3 “দাঁড়াও, আমরা যতক্ষণ না আমাদের ঈশ্বরের দাসদের কপালে মোহর দ্বারা চিহ্ন না দিই, সে পর্যন্ত তোমরা পৃথিবী, সমুদ্র বা গাছের কোন ক্ষতি করো না।”
4 এরপর আমি শুনলাম কত লোকের কপালে চিহ্ন দেওয়া হল। মোট একলক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার লোক। তারা ছিল সমস্ত ইস্রায়েল গোষ্ঠীর ও জাতির।
5 যিহূদা গোষ্ঠীর | 12,000 |
রূবেণ গোষ্ঠীর | 12,000 |
গাদ গোষ্ঠীর | 12,000 |
6 আশের গোষ্ঠীর | 12,000 |
নপ্তালি গোষ্ঠীর | 12,000 |
মনঃশি গোষ্ঠীর | 12,000 |
7 শিমিয়োন গোষ্ঠীর | 12,000 |
লেবি গোষ্ঠীর | 12,000 |
ইষাখর গোষ্ঠীর | 12,000 |
8 সবূলূন গোষ্ঠীর | 12,000 |
যোষেফ গোষ্ঠীর | 12,000 |
বিন্যামীন গোষ্ঠীর | 12,000 |
বিশাল জনতা
9 এরপর আমি দেখলাম প্রত্যেক জাতির, প্রত্যেক বংশের এবং প্রত্যেক গোষ্ঠীর ও ভাষার অগণিত লোক সেই সিংহাসন ও মেষশাবকের সামনে এসে তারা দাঁড়িয়েছে। তাদের পরণে শুভ্র পোশাক এবং হাতে খেজুর পাতা। 10 তারা সকলে চিৎকার করে বলছে, “যিনি সিংহাসনে বসে আছেন, এই জয় সেই ঈশ্বরের ও মেষশাবকের দান।”
11 সমস্ত স্বর্গদূত সিংহাসনের প্রাচীনদের ও চারজন প্রাণীর চারদিক ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরা সিংহাসনের সামনে মাথা নীচু করে প্রণাম করলেন ও ঈশ্বরের উপাসনা করতে থাকলেন। 12 তাঁরা বললেন, “আমেন! প্রশংসা, মহিমা, প্রজ্ঞা, ধন্যবাদ, সম্মান, পরাক্রম ও ক্ষমতা যুগপর্যায়ের যুগে যুগে আমাদের ঈশ্বরেরই হোক্। আমেন!”
13 এরপর সেই প্রাচীনদের মধ্যে একজন আমায় জিজ্ঞেস করলেন, “শুভ্র পোশাক পর! এই লোকরা কে, আর এরা সব কোথা থেকে এসেছে?”
14 আমি তাঁকে বললাম, “মহাশয়, আপনি জানেন।”
তিনি আমায় বললেন, “এরা সেই লোক যারা মহানির্যাতন সহ্য করে এসেছে; আর মেষশাবকের রক্তে নিজের পোশাক ধুয়ে শুচীশুভ্র করেছে। 15 এই কারণেই এরা ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে; আর দিন রাত তাঁর মন্দিরে তাঁর উপাসনা করে চলেছে। যিনি সিংহাসনে বসে আছেন, তিনি এদের রক্ষা করবেন। 16 এরা আর কখনও ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত হবে না, এদের গায়ে রোদ বা তার প্রখর তাপও লাগবে না। 17 কারণ সিংহাসনের ঠিক সামনে যে মেষশাবক আছেন তিনি এদের মেষপালক হবেন, তাদের জীবন জলের প্রস্রবণের কাছে নিয়ে যাবেন আর ঈশ্বর এদের সমস্ত চোখের জল মুছিয়ে দেবেন।”
সপ্তম সীলমোহর
8 তারপর মেষশাবক সপ্তম সীলমোহরটি ভাঙলেন। তখন স্বর্গে প্রায় আধ ঘন্টার মতো সব নিস্তধ্ধ হয়ে গেল। 2 তারপর আমি দেখলাম, ঈশ্বরের সামনে যে সাতজন স্বর্গদূত দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁদের হাতে সাতটি তূরী দেওয়া হল।
3 পরে আর এক স্বর্গদূত এসে যজ্ঞবেদীর কাছে দাঁড়ালেন, তাঁর হাতে সোনার ধুনুচি। তাঁকে প্রচুর ধূপ দেওয়া হল, যাতে তিনি তা স্বর্ণ সিংহাসনের সামনে ঈশ্বরের সমস্ত পবিত্র লোকের প্রার্থনার সঙ্গে নিবেদন করতে পারেন। 4 ফলে ঈশ্বরের লোকদের প্রার্থনার সঙ্গে স্বর্গদূতের হাত থেকে সেই ধূপের ধোঁয়া ঈশ্বরের সামনে উঠল। 5 পরে ঐ স্বর্গদূত ধুনুচি নিয়ে তাতে যজ্ঞবেদীর আগুন ভরে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করলেন। এর ফলে মেঘ গর্জন, উচ্চরব, বিদ্যুত্ চমক ও ভুমিকম্প হল।
সাত স্বর্গদূতের তূরীধ্বনি
6 তখন সেই সাতজন স্বর্গদূত তাদের সাতটি তূরী বাজাবার জন্য প্রস্তুত হলেন।
7 প্রথম স্বর্গদূত বাজালেন, তাতে পৃথিবীতে রক্ত মেশানো শিলা ও আগুন বর্ষন হল; ফলে পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশে আগুন ধরে গেল, আর এক তৃতীয়াংশে গাছপালা ও সমস্ত সবুজ ঘাস পুড়ে গেল।
8 দ্বিতীয় স্বর্গদূত তূরী বাজালেন আর দেখা গেল যেন বিরাট এক জ্বলন্ত পাহাড় সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলা হল। 9 তাতে সমুদ্রের এক তৃতীয়াংশ জল রক্তাক্ত হয়ে গেল ও সামুদ্রিক জীবের এক তৃতীয়াংশ মারা পড়ল; আর সমুদ্রগামী সমস্ত জাহাজের এক তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়ে গেল।
10 পরে তৃতীয় স্বর্গদূত তূরী বাজালেন। তখন আকাশ থেকে জ্বলন্ত মশালের মতো এক বিরাট নক্ষত্র পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ নদী ও জলের উৎসের ওপর খসে পড়ল। 11 সেই নক্ষত্রের নাম নাগদানা[c] কারণ তা পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ জল তিক্ত করে দিল। এভাবে জল তেতো হওয়ার কারণে অনেক লোক মারা পড়ল।
12 এরপর চতুর্থ স্বর্গদূত তূরী বাজালেন আর সূর্যের এক তৃতীয়াংশ, চন্দ্রের এক তৃতীয়াংশ এবং সমস্ত নক্ষত্রের এক তৃতীয়াংশ এমনভাবে ঘা খেল যে তাদের এক তৃতীয়াংশ অন্ধকার হয়ে গেল। সেইভাবে দিনেরও এক তৃতীয়াংশ আলোবিহীন হল, আর রাত্রির অবস্থাও একই রকম হল।
13 এইসব কিছু দেখতে দেখতে হঠাৎ আমি শুনতে পেলাম আকাশের উঁচু দিয়ে একটা ঈগল পাখি উড়ে যেতে যেতে চিৎকার করে এই কথা বলছে, “সন্তাপ! সন্তাপ! পৃথিবীবাসীদের সন্তাপ! কারণ বাকী তিনজন স্বর্গদূত যখন তূরী বাজাবে তখন সেই সন্তাপ শুরু হবে।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International