Beginning
1 পৃথিবীর শুরু থেকেই যা বর্তমান তেমন একটি বিষয় এখন তোমাদের কাছে বলছি: আমরা তা শুনেছি, তা স্বচক্ষে দেখেছি, তা মনোযোগ সহকারে নিরীক্ষণ করেছি; আর নিজেদের হাত দিয়ে তা স্পর্শ করেছি। আমরা সেই বাক্যের বিষয় বলছি যা জীবনদায়ী। 2 সেই জীবন আমাদের কাছে প্রকাশিত হয়েছিল, আমরা তা দেখেছি, আর তার বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারি। এখন তোমাদের কাছে সেই জীবনের কথা বলছি; এ হল অনন্ত জীবন যা পিতা ঈশ্বরের কাছে ছিল। ঈশ্বর আমাদের কাছে সেই জীবন তুলে ধরলেন। 3 আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি সে বিষয়েই এখন তোমাদের কাছে বলছি কারণ আমাদের ইচ্ছা তোমরাও আমাদের সহভাগী হও। আমাদের এই সহভাগীতা ঈশ্বর পিতা ও তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে। 4 আমাদের আনন্দ যেন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সেই জন্য আমরা তোমাদের এসব লিখছি।
ঈশ্বর আমাদের পাপ ক্ষমা করেন
5 এই সেই বার্তা যা আমরা খ্রীষ্টের কাছ থেকে শুনেছি এবং তোমাদের কাছে ঘোষণা করছি—ঈশ্বর জ্যোতি; ঈশ্বরের মধ্যে কোন অন্ধকার নেই। 6 তাই আমরা যদি বলি যে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সহভাগীতা আছে, কিন্তু যদি অন্ধকারে জীবনযাপন করতে থাকি, তাহলে মিথ্যা বলছি ও সত্যের অনুসারী হচ্ছি না। 7 ঈশ্বর জ্যোতিতে আছেন, আমরা যদি সেই রকম জ্যোতিতে বাস করি, তবে বলা যায় আমাদের পরস্পরের মধ্যে সহভাগীতা আছে। ঈশ্বরের পুত্র যীশুর রক্ত আমাদের সমস্ত পাপ থেকে শুচিশুদ্ধ করে।
8 আমরা যদি বলি যে আমাদের কোন পাপ নেই, তাহলে আমরা নিজেদেরই ঠকাই এবং তাঁর সত্য আমাদের মধ্যে নেই। 9 আমরা যদি নিজেদের পাপ স্বীকার করি, বিশ্বস্ত ও ধার্মিক ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন ও সকল অধার্মিকতা থেকে আমাদের শুদ্ধ করবেন। 10 আর যদি বলি, আমরা পাপ করিনি, তবে আমরা ঈশ্বরকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করি এবং তাঁর বার্তা আমাদের অন্তরে নেই।
যীশু আমাদের সহায়
2 আমার প্রিয় সন্তানরা, আমি তোমাদের একথা লিখছি যাতে তোমরা পাপ না কর। কিন্তু কেউ যদি পাপ করে ফেলে, তবে পিতার কাছে আমাদের পক্ষে কথা বলার একজন আছেন, তিনি সেই ধার্মিক ব্যক্তি, যীশু খ্রীষ্ট। 2 তিনিই সেই প্রায়শ্চিত্ত বলিগুলি, যার ফলে আমাদের সব পাপ দূর হয়। কেবল আমাদের সব পাপ নয়, জগতের সমস্ত মানুষেরও পাপ দূর হয়।
3 যদি আমরা ঈশ্বরের আদেশ পালন করি, তবেই বুঝতে পারব যে আমরা তাঁকে জানি। 4 কেউ যদি বলে যে, “আমি ঈশ্বরকে জানি,” অথচ ঈশ্বরের আদেশ পালন না করে তবে সে মিথ্যাবাদী, আর তাঁর সত্য তার অন্তরে নেই। 5 কিন্তু যে তাঁর শিক্ষা পালন করে, ঈশ্বরের ভালবাসা সত্যি তার মধ্যে পূর্ণতা লাভ করেছে। এইভাবে আমরা সুনিশ্চিত হতে পারি যে আমরা তাঁর মধ্যেই অবস্থান করছি। 6 কেউ যদি বলে যে আমি ঈশ্বরে আছি তাহলে তাকে অবশ্যই তাঁর মতো জীবনযাপন করতে হবে।
প্রতিবেশীকে ভালবাসো
7 প্রিয় বন্ধুরা, আমি তোমাদের কাছে কোন নতুন আদেশ লিখছি না, এ এমন এক পুরানো আদেশ, যা তোমরা আদি থেকেই পেয়েছ। তোমরা যে বার্তা শুনেছ তা হল পুরানো আদেশ। 8 কিন্তু আমি এই পুরানো আদেশই তোমাদের কাছে এক নতুন আদেশরূপে লিখছি। এই আদেশ সত্য এবং এর সত্যতা তোমরা যীশু খ্রীষ্টে ও তোমাদের জীবনে দেখেছ, কারণ অন্ধকার কেটে যাচ্ছে আর প্রকৃত জ্যোতি ইতিমধ্যেই উজ্জ্বল।
9 যে বলে আমি জ্যোতিতে আছি কিন্তু তার নিজের ভাইকে ঘৃণা করে, সে এখনও অন্ধকারেই আছে। 10 যে তার ভাইকে ভালবাসে, সে জ্যোতিতে রয়েছে। তার জীবনে এমন কিছুই নেই যা তাকে পাপী করে। 11 কিন্তু যে তার ভাইকে ঘৃণা করে সে এখনও অন্ধকারেই আছে। সে অন্ধকারেই বাস করে আর জানে না সে কোথায় চলেছে, কারণ অন্ধকার তাকে অন্ধ করে দিয়েছে।
12 প্রিয় সন্তানগণ, আমি তোমাদের লিখছি,
কারণ খ্রীষ্টের মাধ্যমে তোমাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে।
13 পিতারা, আমি তোমাদের লিখছি,
কারণ যিনি শুরু থেকে আছেন তোমরা তাঁকে জান।
যুবকরা, আমি তোমাদের লিখছি,
কারণ তোমরা সেই পাপাত্মার ওপর জয়লাভ করেছ।
14 শিশুরা, আমি তোমাদের লিখছি,
কারণ যিনি শুরু থেকে আছেন তোমরা তাঁকে জান।
যুবকরা, আমি তোমাদের লিখছি,
কারণ তোমরা শক্তিশালী।
ঈশ্বরের বার্তা তোমাদের অন্তরে আছে;
আর তোমরা সেই পাপাত্মার ওপর জয়লাভ করেছ।
15 তোমরা কেউ এই সংসার বা এই সংসারের কোন কিছু ভালবেসো না। কেউ যদি এই সংসারটাকে ভালবাসে তবে পিতা ঈশ্বরের ভালবাসা তার অন্তরে নেই। 16 কারণ এই সংসারে যা কিছু আছে, যা আমাদের পাপ প্রকৃতি পেতে ইচ্ছা করে, যা আমাদের চক্ষু পেতে ইচ্ছা করে, আর পৃথিবীর যা কিছুতে লোকে গর্ব করে সে সবকিছুই পিতা ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে না, আসে জগত থেকে। 17 এই সংসার ও তাঁর অভিলাষ সব বিলীন হতে চলেছে, কিন্তু যে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে সে চিরজীবি হবে।
খ্রীষ্টারির অনুসরণ করো না
18 প্রিয় সন্তানরা, জগতের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে। আর তোমরা শুনেছ যে খ্রীষ্টারিরা আসছে। এখনই সেই খ্রীষ্টারিরা এসে গেছে, এর ফলেই আমরা বুঝতে পারছি যে এই শেষ সময়। 19 সেই খ্রীষ্টারিরা আমাদের দলের মধ্যেই ছিল। তারা আমাদের মধ্য থেকে বাইরে চলে গেছে। বাস্তবে তারা কোন দিনই আমাদের লোক ছিল না, কারণ তারা যদি আমাদের দলের লোক হত, তবে আমাদের সঙ্গেই থাকত। তারা আমাদের ছেড়ে চলে গেল; এর দ্বারাই প্রমাণ হল যে তারা কেউই আদৌ আমাদের নয়।
20 তোমরা সেই পবিত্রতমের (খ্রীষ্টের) কাছে অভিষিক্ত হয়েছ, তাই তোমরা সকলে সত্য কি তা জান। তবে তোমাদের কাছে কেন আমি লিখি? 21 এটা বলার জন্য আমি লিখছি না যে তোমরা সত্য জান না। আমি তোমাদের লিখছি কারণ তোমরা সত্য জান; আর এও জান যে সত্য থেকে কখনও কোন মিথ্যার উৎপত্তি হতে পারে না।
22 তবে সেই মিথ্যাবাদী কে? সে-ই, যে ব্যক্তি বলে যে যীশুই সেই খ্রীষ্ট নন, সে-ই খ্রীষ্টের শত্রু, যে বলে যীশু সেই খ্রীষ্ট নয়, সেই ব্যক্তি পিতাকে বিশ্বাস করে না, বিশ্বাস করে না তাঁর পুত্র খ্রীষ্টকে। 23 যে পুত্রকে অস্বীকার করে, সে পিতা ঈশ্বরকেও পায় না। কিন্তু যে পুত্রকে গ্রহণ করে, সে পিতা ঈশ্বরকেও পেয়েছে।
24 শুরু থেকে তোমরা যা শুনে আসছ, সেই সব বিষয় অবশ্যই তোমাদের অন্তরে রেখো। শুরু থেকে তোমরা যা শুনেছ তা যদি তোমাদের অন্তরে থাকে তবে তোমরা পিতা ঈশ্বর ও তাঁর পুত্রের সাহচর্য্যে থাকবে। 25 আর ঈশ্বর এটাই আমাদের দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা হল অনন্ত জীবন।
26 যারা তোমাদের ভুল পথে নিয়ে যেতে চায় তাদের বিষয়ে তোমাদের এইসব কথা লিখলাম। 27 খ্রীষ্ট তোমাদের এক বিশেষ বরদান দিয়েছেন এবং তা তোমাদের মধ্যে রয়েছে। তাই তোমাদের অন্য কারোর শিক্ষার দরকার নেই। যে বরদান তোমরা পেয়েছ তা তোমাদের সব বিষয়ে শিক্ষা দেয়। এ বরদান সত্য, এর মধ্যে মিথ্যার লেশমাত্র নেই। তাই এই বরদান যেমন শিক্ষা দিয়েছে, সেইমত তোমরা খ্রীষ্টে থাক।
28 এখন আমার স্নেহের সন্তানরা, খ্রীষ্টেতে থাক। তা করলে খ্রীষ্ট যখন প্রকাশিত হবেন তখন আমাদের আর ভয়ের কিছু থাকবে না। তিনি এলে তাঁর সামনে দাঁড়াতে ভয় বা লজ্জা পেতে হবে না। 29 যদি তোমরা জান যে খ্রীষ্ট ধার্মিক তাহলে তোমরা এও জান যে যারা ধর্মাচরণ কাজ করে তারা ঈশ্বরের সন্তান।
আমরা ঈশ্বরের সন্তান
3 ভেবে দেখ, পিতা ঈশ্বর আমাদের কত ভালোই না বেসেছেন যাতে আমরা ঈশ্বরের সন্তান বলে অভিহিত হই; বাস্তবিক আমরা তাই। জগতের লোক আমাদের চেনে না যে আমরা ঈশ্বরের সন্তান, কারণ তারা ঈশ্বরকে জানে না। 2 প্রিয় বন্ধুরা, এখন তো আমরা ঈশ্বরের সন্তান, আর ভবিষ্যতে আমরা আরো কি হব তা এখনও আমাদের কাছে প্রকাশ করা হয় নি। কিন্তু আমরা জানি যে যখন খ্রীষ্ট পুনরায় আসবেন তখন আমরা তাঁর সমরূপ হব, কারণ তিনি যেমন আছেন, তাঁকে তেমনি দেখতে পাব। 3 খ্রীষ্ট শুদ্ধ আর তাঁর ওপরে যে সমস্ত লোক এই আশা রাখে, তারা খ্রীষ্টের মত নিজেদের শুদ্ধ করে।
4 যে কেউ পাপ করে, সে বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে, আর ব্যবস্থা লঙ্ঘন করাই পাপ। 5 তোমরা জান, মানুষের পাপ তুলে নেবার জন্যই খ্রীষ্ট প্রকাশিত হলেন; আর খ্রীষ্টের নিজের কোন পাপ নেই। 6 যে কেউ খ্রীষ্টে থাকে, সে পাপের জীবন-যাপন করে না। কেউ যদি পাপে জীবন-যাপন করে তবে সে খ্রীষ্টকে কখনও প্রকৃতভাবে উপলদ্ধি করে নি, এমন কি তাঁকে জানেও নি।
7 প্রিয় সন্তানরা, সতর্ক থেকো। কেউ যেন তোমাদের বিপথে না নিয়ে যায়। যে কেউ যথার্থ কাজ করে সে নীতিপরায়ণ, ঠিক যেমন খ্রীষ্ট নীতিপরায়ণ। 8 দিয়াবল সেই শুরু থেকেই পাপ করে চলেছে। যে ব্যক্তি পাপ করেই চলে সে দিয়াবলের। দিয়াবলের কাজকে ধ্বংস করার জন্যই ঈশ্বরের পুত্র প্রকাশিত হয়েছিলেন।
9 যে কেউ ঈশ্বরের সন্তান হয়, সে ক্রমাগত পাপ করতে পারে না, কারণ নরজীবনদায়ী ঈশ্বরের শক্তি সেই ব্যক্তির মধ্যে থাকে। সে ঈশ্বরের সন্তানে পরিণত হয়েছে; তাই সে পাপে জীবন কাটাতে পারে না। 10 এভাবেই আমরা দেখতে পারি কারা ঈশ্বরের সন্তান আর কারাই বা দিয়াবলের সন্তান। যারা সত্কর্ম করে না তারা ঈশ্বরের সন্তান নয়, আর যে তার ভাইকে ভালবাসে না সে ঈশ্বরের সন্তান নয়।
পরস্পরকে ভালবাসতে হবে
11 তোমরা শুরু থেকে এই বার্তা শুনে আসছ, যে আমাদের পরস্পরকে ভালবাসা উচিত। 12 তোমরা কয়িনের[a] মতো হয়ো না। কয়িন দিয়াবলের ছিল এবং তার ভাই হেবলকে হত্যা করেছিল। কিসের জন্য সে তার ভাইকে হত্যা করেছিল? কারণ কয়িনের কাজগুলি ছিল মন্দ; কিন্তু তার ভাইয়ের কাজ ছিল ভাল।
13 ভাইরা, এই জগত যদি তোমাদের ঘৃণা করে তবে তাতে আশ্চর্য হয়ো না। 14 আমরা জানি যে আমরা মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হয়ে গেছি। আমরা এটা জানি কারণ আমরা আমাদের ভাইদের ও বোনদের ভালবাসি। যে কেউ ভালবাসে না সে মৃত্যুর মধ্যেই থাকে। 15 যে কেউ তার ভাইকে ঘৃণা করে সে তো একজন খুনী; আর তোমরা জান কোন খুনী অনন্ত জীবনের অধিকারী হয় না।
16 তিনি আমাদের জন্য নিজের প্রাণ দিলেন, এর থেকেই আমরা জানতে পারি প্রকৃত ভালবাসা কি। সেইজন্য আমাদেরও আমাদের ভাই বোনদের জন্য প্রাণ দেওয়া উচিত। 17 যার পার্থিব সম্পদ রয়েছে, সে যদি তার কোন ভাইকে অভাবে পড়তে দেখে তাকে সাহায্য না করে, তবে কি করে বলা যেতে পারে যে তার মধ্যে ঐশ্বরিক ভালবাসা আছে? 18 স্নেহের সন্তানরা, কেবল মুখে ভালবাসা না দেখিয়ে, এসো, আমরা কাজের মধ্য দিয়ে তাদের সত্যিকারের ভালবাসি।
19-20 এর দ্বারা আমরা জানব যে আমরা সত্যের। আমাদের অন্তর যদি আমাদের দোষী করে, তবুও ঈশ্বরের সামনে আমাদের বিবেক বিশ্বস্ত থাকবে। কারণ আমাদের বিবেকের থেকে ঈশ্বর মহান, ঈশ্বর তো সবই জানেন।
21 প্রিয় বন্ধুরা, যদি আমাদের বিবেকগুলি আমাদের দোষের অনুভূতি না দেয় তবে ঈশ্বরের সামনে আমরা নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারব। 22 আর ঈশ্বরের কাছ থেকে যা কিছু চাই না কেন তা আমরা পাব, কারণ আমরা যা তাঁর সন্তোষজনক তাই করছি। 23 তাঁর আদেশ হল আমরা যেন তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের নামে বিশ্বাস করি ও পরস্পরকে ভালবাসি। 24 যে ঈশ্বরের আদেশগুলি মান্য করে সে ঈশ্বরে থাকে; আর ঈশ্বর তার অন্তরে থাকেন। ঈশ্বর যে আমাদের অন্তরে আছেন তা আমরা কি করে জানব? যে আত্মাকে ঈশ্বর দিয়েছেন, সেই আত্মাই আমাদের বলছে যে ঈশ্বর আমাদের মধ্যে আছেন।
ভণ্ড শিক্ষকদের বিষয়ে যোহনের সতর্কবাণী
4 প্রিয় বন্ধুরা, সংসারে অনেক ভণ্ড ভাববাদী দেখা দিয়েছে, তাই তোমরা সব আত্মাকে বিশ্বাস করো না। কিন্তু সেই সব আত্মাদের যাচাই করে দেখ যে তারা ঈশ্বর হতে এসেছে কিনা। 2 এইভাবে তোমরা ঈশ্বরের আত্মাকে চিনতে পারবে। যে কোন আত্মা যীশু খ্রীষ্ট যে রক্ত মাংসের দেহ ধারণ করে এসেছেন বলে স্বীকার করে, সে ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে। 3 কিন্তু যে আত্মা, যীশুকে স্বীকার করে না, সে ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে নি। এ সেই খ্রীষ্টারির আত্মা, খ্রীষ্টের শত্রু যে আসছে তা তোমরা শুনেছ, আর এখন সে তো সংসারে এসেই গেছে।
4 আমার স্নেহের সন্তানগণ, তোমরা ঈশ্বরের লোক, তাই তোমরা ওদের ওপর জয়ী হয়েছ; কারণ তোমাদের মধ্যে যিনি (ঈশ্বর) বাস করেন তিনি জগতের মধ্যে বাসকারী দিয়াবলের থেকে অনেক মহান। 5 এই ভণ্ড শিক্ষকরা হল জগতের, তাই তারা যা বলে তা সব জাগতিক কথাবার্তা, আর জগত তাদের কথা শোনে। 6 কিন্তু আমরা ঈশ্বরের লোক, ঈশ্বরকে যে জানে সে আমাদের কথা শোনে, যে ঈশ্বরের লোক নয় সে আমাদের কথা শোনে না। এইভাবেই আমরা সত্যের আত্মাকে ও ছলনার আত্মাকে চিনতে পারি।
ঈশ্বরই প্রেমের উৎস
7 প্রিয় বন্ধুরা, এস আমরা পরস্পরকে ভালবাসি, কারণ ঈশ্বরই ভালবাসার উৎস আর যে কেউ ভালবাসতে জানে সে ঈশ্বরের সন্তান, সে ঈশ্বরকে জানে। 8 যে ভালবাসতে জানে না, সে ঈশ্বরকে জানে না, কারণ ঈশ্বর স্বয়ং হলেন ভালবাসা। 9 ঈশ্বর আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা এইভাবেই দেখিয়েছেন, তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে এ জগতে পাঠালেন যেন তাঁর মাধ্যমে আমরা জীবন লাভ করি। 10 ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভালবাসা নয়, বরং আমাদের প্রতি ঈশ্বরের ভালবাসাই হল প্রকৃত ভালবাসা। ঈশ্বর আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত বলিরূপে তাঁর পুত্রকে পাঠিয়ে আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা প্রকাশ করেছেন।
11 প্রিয় বন্ধুরা, এইভাবে ঈশ্বর আমাদের ভালবেসেছেন, সুতরাং আমরাও অবশ্যই পরস্পরকে ভালবাসব। 12 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি। যদি আমরা পরস্পরকে ভালবাসি, তবে ঈশ্বর আমাদের মধ্যে অবস্থান করেন; আর তাঁর ভালবাসা আমাদের মধ্যে পূর্ণতা লাভ করেছে।
13 আমরা জানি যে তিনি আমাদের মধ্যে আছেন; আর আমরা তাঁর মধ্যে অবস্থান করছি। এ বিষয় আমরা জানি, কারণ ঈশ্বর তাঁর আত্মাকে আমাদের দান করেছেন। 14 আমরা দেখেছি পিতা তাঁর পুত্রকে জগতের ত্রাণকর্তারূপে পাঠিয়েছেন। সেই বার্তাই আমরা লোকদের কাছে বলছি। 15 কেউ যদি স্বীকার করে যে যীশু ঈশ্বরের পুত্র, তবে ঈশ্বর তাঁর অন্তরে বাস করেন, আর সে ঈশ্বরেতে থাকে। 16 আমাদের জন্য ঈশ্বরের ভালবাসা আছে; আমরা তা জানি ও বিশ্বাস করি।
ঈশ্বরই স্বয়ং ভালবাসা, আর যে কেউ ভালবাসায় থাকে সে ঈশ্বরের মধ্যে থাকে ও ঈশ্বর তার মধ্যে থাকেন। 17 যদি আমাদের ক্ষেত্রে ভালবাসা এইভাবেই পূর্ণতা পায়, তবে শেষ বিচারের দিনে আমরা নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারব, কারণ এ জগতে আমরা খ্রীষ্টেরই মতো। 18 যেখানে ঈশ্বরের ভালবাসা সেখানে ভয় থাকে না, পরিপূর্ণ ভালবাসা ভয়কে দূর করে দেয়, কারণ ভয়ের সঙ্গে শাস্তির চিন্তা জড়িত থাকে। যে ভয় পায় সে ভালবাসায় পূর্ণতা লাভ করে নি।
19 তিনিই (ঈশ্বর) আগে আমাদের ভালবেসেছেন, আর তার ফলে আমরা ভালবাসতে পারি। 20 যদি কেউ বলে, “সে ঈশ্বরকে ভালবাসে” অথচ সে তার খ্রীষ্টেতে কোন ভাই ও বোনকে ঘৃণা করে তবে সে মিথ্যাবাদী। যে ভাইকে দেখতে পাচ্ছে, সে যদি তাকে ঘৃণা করে তবে যাঁকে সে কোনও দিন চোখে দেখে নি, সেই ঈশ্বরকে সে ভালবাসতে পারে না। 21 কারণ ঈশ্বরের কাছ থেকে আমরা এই আদেশ পেয়েছি, ঈশ্বরকে যে ভালবাসে সে যেন তার নিজের ভাইকেও ভালবাসে।
ঈশ্বরের সন্তান জগতকে জয় করতে পারে
5 যারা বিশ্বাস করে যে যীশুই খ্রীষ্ট, তারা ঈশ্বরের সন্তান। যে কেউ পিতাকে ভালবাসে, সে তাঁর সন্তানদের ভালবাসে। 2 আমরা কি করে জানব যে আমরা ঈশ্বরের সন্তানদের ভালবাসি? আমরা জানি যেহেতু আমরা ঈশ্বরকে ভালবাসি ও তাঁর সব আদেশ পালন করি। 3 ঈশ্বরকে ভালবাসার অর্থই হচ্ছে তাঁর আদেশ পালন করা; আর ঈশ্বরের আদেশ ভারী বোঝার মতো নয়। 4 কারণ প্রত্যেক ঈশ্বরজাত সন্তান জগতকে জয় করে। 5 আমাদের বিশ্বাসই আমাদের জগতজয়ী করেছে। কে জগতের ওপরে বিজয়ী হতে পারে? যে বিশ্বাস করে যে, যীশুই ঈশ্বরের পুত্র।
ঈশ্বর তাঁর পুত্রের কথা বললেন
6 ইনিই যীশু খ্রীষ্ট, যিনি জগতে জল ও রক্তের মধ্য দিয়ে এসেছিলেন। আত্মাই বলছেন এই কথা সত্য, আর সেই আত্মা স্বয়ং সত্য। 7 যীশুর বিষয়ে তিনজন সাক্ষ্য দিচ্ছেন। 8 আত্মা, জল ও রক্ত আর সেই তিনের এক সাক্ষ্য।
9 লোকে যখন সত্য কিছু বলে আমরা তা বিশ্বাস করি, তবে ঈশ্বরের দেওয়া সাক্ষ্য এর থেকে কত না মূল্যবান। বস্তুত ঈশ্বর স্বয়ং আমাদের কাছে এই সাক্ষ্য দিয়েছেন, তিনি তাঁর নিজের পুত্রের বিষয়ে সত্য জানিয়েছেন। 10 ঈশ্বরের পুত্রকে যে বিশ্বাস করে ঐ সত্য তার অন্তরে থাকে। ঈশ্বরের কথায় যে বিশ্বাস করে না, সে তাঁকে মিথ্যাবাদী করেছে, কারণ ঈশ্বর তাঁর পুত্রের বিষয়ে যে কথা বলেছেন সে তাতে বিশ্বাস করে নি। 11 সেই সাক্ষ্য হচ্ছে, ঈশ্বর আমাদের অনন্ত জীবন দিয়েছেন এবং এই জীবন তাঁর পুত্রে আছে। 12 ঈশ্বরের পুত্রকে যে পেয়েছে সেই সত্য জীবন পেয়েছে। ঈশ্বরের পুত্রকে যে পায় নি সে জীবন পায় নি।
অনন্ত জীবন
13 তোমরা যারা ঈশ্বরের পুত্রের ওপর বিশ্বাস করেছ আমি তোমাদের কাছে এই কথা লিখছি যেন তোমরা জানতে পার যে তোমরা অনন্ত জীবন পেয়েছ। 14 আমরা এবিষয়ে সুনিশ্চিত যে আমরা যদি তাঁর ইচ্ছানুসারে তাঁর কাছে কিছু চাই তবে তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন; 15 আর আমরা যদি সত্যি জানি যে তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন তবে জানতে হবে যে আমরা তাঁর কাছে যা চেয়েছি তা পেয়ে গিয়েছি।
16 যদি কেউ তার খ্রীষ্টান ভাইকে এমন কোন পাপ করতে দেখে যার পরিণতি অনন্ত মৃত্যু নয়, তবে সে তার ভাইয়ের জন্য প্রার্থনা করবে, আর ঈশ্বর তাকে জীবন দান করবেন। যারা অনন্ত মৃত্যুজনক পাপ করে না, তিনি কেবল তাদেরই তা দেবেন। মৃত্যুজনক পাপ আছে, আর আমি তোমাদের সেরকম পাপ যারা করে তাদের জন্য প্রার্থনা করতে বলছি না। 17 সমস্ত রকম অধার্মিকতাই পাপ; কিন্তু এমন পাপ আছে যার ফল অনন্ত মৃত্যু নয়।
18 আমরা জানি, ঈশ্বরের সন্তানরা পাপের জীবনযাপন করে না। ঈশ্বরের পুত্র তাদের রক্ষা করেন[b] এবং পাপাত্মা তাদের কোনভাবে ক্ষতি করতে পারে না। 19 আমরা জানি যে আমরা ঈশ্বরের লোক; কিন্তু সমস্ত জগত রয়েছে পাপাত্মা শক্তির কবলে। 20 আমরা জানি যে ঈশ্বরের পুত্র এসেছেন, আর তিনি আমাদের সেই বোধ বুদ্ধি দিয়েছেন যার দ্বারা আমরা সেই সত্যময় ঈশ্বরকে জানতে পারি। এখন আমরা সত্য ঈশ্বরে আছি, কারণ আমরা তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টেতে আছি। তিনিই সত্য ঈশ্বর ও অনন্ত জীবন। 21 তাই স্নেহের সন্তানরা, তোমরা মিথ্যা দেবদেবীর কাছ থেকে দূরে থেকো।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International