Beginning
5 আমরা জানি পৃথিবীতে আমরা তাঁবুর মত যে বাড়িতে বাস করি তা যদি নষ্ট হয়ে যায় তবে আমাদের একটি ঈশ্বরদত্ত বাড়ি আছে, যে বাড়ি মানুষের তৈরী নয়, স্বর্গে সে বাড়ি চিরকাল ধরেই আছে। 2 বাস্তবিক আমরা এই তাঁবুতে থাকতে থাকতে কাতরভাবে আর্তনাদ করছি। আমরা মনেপ্রাণে কামনা করছি যে আমাদের স্বর্গীয় আবাস দিয়ে আমাদের ঢেকে দেওয়া হোক্। 3 কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে এই পোশাক পরবার পর দেখা যাবে যে আমরা উলঙ্গ নই। 4 বাস্তবে আমরা এই দেহের মধ্যে থেকে ভারাক্রান্ত হওয়াতে আর্তনাদ করছি। আমাদের বর্তমান (দেহরূপ) পোশাকটি ত্যাগ করার ইচ্ছা আমাদের নেই; বরং আমরা চাই যে নতুন (স্বর্গীয় দেহরূপ) পোশাকটি পুরাতনের ওপর পরি যাতে নশ্বর জীবন আবৃত হয়ে যায়। 5 আর এর জন্য ঈশ্বর আমাদের প্রস্তুত করেছেন। এইজন্য তিনি পবিত্র আত্মাকে আমাদের কাছে জামিনস্বরূপ পাঠিয়েছেন।
6 আমাদের মনে সর্বদা ভরসা আছে; আমরা জানি যতদিন এই দেহের ঘরে বাস করব ততদিন আমরা প্রভুর কাছ থেকে দূরে থাকব। 7 আমরা বিশ্বাসের দ্বারা চলি, বাইরের দৃশ্যের দ্বারা নয়। 8 তাই আমি বলি যে আমাদের নিশ্চিত ভরসা আছে এবং বাস্তবিক আমরা এই দেহ ত্যাগ করে, আমাদের প্রকৃত আবাস প্রভুর কাছে থাকাই ভাল মনে করি। 9 আমাদের লক্ষ্য এই যে আমরা এই দেহের ঘরে বাস করি বা না করি, আমরা যেন ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে চলি। 10 কারণ আমাদের সকলকে খ্রীষ্টের বিচারাসনের সামনে দাঁড়াতে হবে; আর এই নশ্বর দেহে বাস করার সময় আমরা ভাল বা মন্দ যা কিছু করেছি তার উপযুক্ত প্রতিদান আমাদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে।
ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন
11 তাই প্রভুর ভয় কি, তা জানাতে পেরে আমরা প্রত্যেক মানুষকে বোঝাচ্ছি যেন তারা আমাদের কথায় বিশ্বাস করে। ঈশ্বর আমাদের অন্তরের কথা সুস্পষ্টভাবে জানেন; আর আমি আশাকরি তোমরাও আমাদের অন্তরের কথা জান। 12 আমরা আবার তোমাদের কাছে নিজেদের যোগ্য পাত্র বলে প্রমাণ দিতে চাইছি না, কিন্তু আমাদের জন্য গর্ব করার সুযোগ তোমাদের দিচ্ছি; উদ্দেশ্য এই যারা কোন ব্যক্তির হৃদয়ের কথা বিবেচনা না করে দৃশ্যমান বিষয়গুলি নিয়ে গর্ব করে, এইসব লোকদের যেন তোমরা উচিত জবাব দিতে পার। 13 যদি আমরা হতবুদ্ধি হয়ে থাকি তবে তা ঈশ্বরের জন্য এবং যদি আমাদের বিচার বুদ্ধি ঠিক থাকে তবে তা তোমাদের জন্য। 14 খ্রীষ্টের ভালবাসা আমাদের নিয়ন্ত্রিত করে, কারণ আমরা নিশ্চিতভাবে বুঝেছি তিনি (খ্রীষ্ট) সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন, তাতে সকলেরই মৃত্যু হল। 15 খ্রীষ্ট সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন। তাই যারা জীবন পেল, তারা আর নিজেদের উদ্দেশ্যে নয়, বরং যিনি তাদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন ও পুনরুত্থিত হয়েছেন, তাঁরই উদ্দেশ্যে যেন জীবনযাপন করে।
16 তাই এখন থেকে আমরা আর কাউকেই জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে বিচার করি না। যদিও আগে খ্রীষ্টকে আমরা জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়েই বিচার করেছি তবু এখন আর তা করি না। 17 সুতরাং কেউ যদি খ্রীষ্টের সঙ্গে মিলিত হয়, তবে সে এক নতুন সৃষ্টি হয়ে ওঠে, তার জীবনের পুরানো বিষয়গুলি অতীত হয়ে যায়; দেখ, তার সবই এখন নতুন হয়ে উঠেছে। 18 সমস্ত কিছুই ঈশ্বর থেকে এসেছে, যিনি খ্রীষ্টের মাধ্যমে নিজের সাথে আমাদের পুনর্মিলিত করেছেন এবং অন্যদের তাঁর সঙ্গে আবার মিলন করিয়ে দেওয়ার কাজ আমাদের দিয়েছেন। 19 যেমন বলা হয়ে থাকে: ঈশ্বর খ্রীষ্টের মাধ্যমে জগতকে পুনরায় তাঁর নিজের সঙ্গে মিলিত করার কাজ করছিলেন। তিনি খ্রীষ্টে মানুষের সকল পাপকে পাপ বলে গন্য না করে মিলনের বার্তা জানাবার ভার আমাদের দিয়েছেন। 20 খ্রীষ্টের হয়েই আমরা কথা বলেছি। খ্রীষ্টের হয়ে কথা বলতে আমাদের পাঠানো হয়েছে, এইভাবে আমাদের মাধ্যমে ঈশ্বর লোকদের ডাকছেন। আমরা খ্রীষ্টের হয়ে তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা ঈশ্বরের সাথে মিলিত হও। 21 খ্রীষ্ট কোন পাপ করেন নি; কিন্তু ঈশ্বর খ্রীষ্টের ওপর আমাদের পাপের সব দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন, যেন খ্রীষ্টের মধ্যে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়।
6 ঈশ্বরের সহকর্মী হিসাবে আমরা তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা ঈশ্বরের যে অনুগ্রহ লাভ করেছ তা নিষ্ফল হতে দিও না। 2 কারণ ঈশ্বর বলেন,
“আমি উপযুক্ত সময়ে তোমাদের প্রার্থনা শুনলাম
এবং পরিত্রাণের দিনে আমি তোমাদের সাহায্য করলাম।”(A)
আমি যা বলছি শোন, এখনই সেই “উপযুক্ত সময়।” আজই “পরিত্রাণের দিন।”
3 আমরা চেষ্টা করি যেন আমাদের কোন কাজের দ্বারা কেউ বিঘ্নিত না হয়। যেন আমাদের কাজের কোন রকম নিন্দা কেউ করতে না পারে। 4 আমরা সব বিষয়ে নিজেদের ঈশ্বরের সেবক বলে প্রমাণ করি। আমরা ধৈর্য্যের সঙ্গে দুঃখভোগ করে সবসময় কষ্ট ও নির্যাতন সহ্য করেছি। 5 আমাদের মারধোর করা হয়েছে, কারাগারে দেওয়া হয়েছে, মারমুখী জনতার সামনে আমাদের দাঁড়াতে হয়েছে। কাজ করতে করতে অবসন্ন হয়েছি, কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি, এমনকি অনাহারেও কতদিন কেটেছে। 6-7 এসব সত্ত্বেও আমরা আমাদের জীবনের পবিত্রতা, জ্ঞান, ধৈর্য্য, স্নেহ, মমতা, পবিত্র আত্মা, প্রকৃত ভালবাসা ও সত্যের প্রচার দ্বারা এবং ঈশ্বরের পরাক্রমের দ্বারা, কি আক্রমণে কি আত্মরক্ষায় উভয় ক্ষেত্রেই সদাচারের অস্ত্র ব্যবহার করে প্রমাণ দিয়েছি যে আমরা ঈশ্বরের সেবক।
8 আমরা সম্মানিত হয়েছি, আবার অসম্মানিতও হয়েছি। আমরা অপমানিত হয়েছি, আবার প্রশংসিতও হয়েছি। আমাদের মিথ্যাবাদী হিসেবে ধরা হয়েছে যদিও আমরা সত্য বলি। 9 কিছু লোক আমাদের প্রেরিত বলে স্বীকার করে না, কিন্তু তবুও আমরা স্বীকৃত। মনে হচ্ছিল আমরা মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি, কিন্তু দেখ আমরা মরিনি। আমাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু মেরে ফেলা হচ্ছে না। 10 একদিকে মনে হয় আমরা দুঃখ পাচ্ছি কিন্তু আমরা সদাই আনন্দ করছি। মনে হয় আমরা নিঃস্ব, তবু সবকিছুই আমাদের আছে। ধরে নেওয়া হয় আমরা দরিদ্র কিন্তু আমরা অপরকে ধনবান করি।
11 হে করিন্থীয়গণ, খোলাখুলিভাবেই আমরা তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের হৃদয় তোমাদের জন্য সম্পূর্ণ খোলা রয়েছে। 12 তোমাদের প্রতি আমাদের ভালবাসা অটুট আছে; কিন্তু তোমরা তোমাদের ভালবাসা থেকে আমাদের দূরে রেখেছ। 13 আমি তোমাদের সন্তান মনে করে বলছি, আমরা যেমন তোমাদের ভালবেসেছি তোমরাও যেন তেমনি মনপ্রাণ খুলে আমাদের ভালবাস।
অবিশ্বাসীদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সতর্কবাণী
14 তোমরা অবিশ্বাসীদের থেকে আলাদা, তাই তাদের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করো না, কারণ ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে কোন যোগ থাকতে পারে না। অন্ধকারের সাথে আলোর কি কোন যোগাযোগ থাকতে পারে? 15 খ্রীষ্ট এবং দিয়াবলের মধ্যে কি কোন সম্পর্ক থাকতে পারে? অবিশ্বাসীর সাথে বিশ্বাসীরই বা কি সম্পর্ক? 16 ঈশ্বরের মন্দিরের সাথে প্রতিমারই বা কি সম্পর্ক? কারণ আমরাই তো জীবন্ত ঈশ্বরের মন্দির; যেমন ঈশ্বর বলেছেন:
“আমি তাদের মধ্যে বাস করব এবং তাদের মধ্যে যাতায়াত করব;
আমি তাদের ঈশ্বর হবো ও তারা আমার লোক হবে।”(B)
17 প্রভু বলেন, “তোমরা তাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে এস,
তাদের থেকে পৃথক হও
এবং অশুচি জিনিস স্পর্শ করো না,
তাহলে আমি তোমাদের গ্রহণ করব।”(C)
18 “আমি তোমাদের পিতা হব
ও তোমরা আমার পুত্র কন্যা হবে।” একথা সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন।(D)
7 প্রিয় বন্ধুগণ, এই সমস্ত প্রতিশ্রুতি যখন আমাদের রয়েছে তখন এস, যা কিছু আমাদের দেহ বা আত্মাকে অশুচি করে তার থেকে মুক্ত হয়ে নিজেদের শুচি করি। ঈশ্বরের সম্মান করে নিজেদের পূর্ণরূপে পবিত্র করি।
পৌলের আনন্দ
2 তোমাদের হৃদয়ে আমাদের স্থান দিও। আমরা কারও ক্ষতি করি নি, কাউকে সর্বনাশের পথে নিয়ে যাই নি, কাউকে ঠকাই নি। 3 আমি তোমাদের দোষী করতে একথা বলছি তা নয়; আমরা তোমাদের এত ভালবাসি যে আমরা মরি তো একসঙ্গে মরব, বাঁচি তো একসঙ্গেই বাঁচব। 4 তোমাদের ওপর আমার বড় আস্থা আছে আর তোমাদের নিয়ে আমার খুবই গর্ব। আমাদের সমস্ত কষ্টের মধ্যে তোমাদের কাছ থেকে আমি যথেষ্ট উৎসাহ পেয়েছি, তাই আমার মনে বড় আনন্দ।
5 যখন আমরা মাকিদনিয়াতে এসেছিলাম, তখনও আমাদের দৈহিকভাবে বিন্দুমাত্র বিশ্রাম হয় নি। কারণ আমরা সব দিক থেকে কষ্ট পেয়েছিলাম, বাইরে ছিল ঝগড়াঝাটি ও মনে ছিল ভয়। 6 তবুও ঈশ্বর যিনি নিরাশ প্রাণে সান্ত্বনা দেন, তিনি তীতকে নিয়ে এসে আমাদের সান্ত্বনা দিলেন। 7 কেবল তীতের আসার জন্য নয়, তোমরা তাকে যে সান্ত্বনা দিয়েছ তার জন্যও। তিনি আমাদের জানিয়েছেন আমাদের দেখার জন্য তোমাদের কত গভীর আগ্রহ রয়েছে। তোমরা যা করেছ তার জন্য তোমরা কি পরিমাণ দুঃখিত এবং আমার জন্য তোমাদের আগ্রহের কথাও তীত আমাদের জানিয়েছেন। এর ফলে আমি আরও আনন্দিত হয়েছি।
8 যদিও আমার চিঠি তোমাদের কিছু সময়ের জন্য দুঃখ দিয়েছে তবু অনুশোচনা করি না, কারণ প্রথমে অনুশোচনা করলেও আমি দেখছি যে সেই চিঠি তোমাদের মনে মাত্র কিছুকালের জন্য ব্যথা দিয়েছে। 9 এখন আমি আনন্দ করছি, তোমরা মনে ব্যথা পেয়েছিলে বলে নয়, কিন্তু তোমাদের সেই দুঃখ ও ব্যথা তোমাদের জীবনকে পরিবর্তিত করেছে বলে। ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারেই তোমরা দুঃখ পেয়েছিলে, তাই আমাদের দ্বারা তোমাদের কোনরকম ক্ষতি হয় নি; 10 কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দুঃখ মানুষের হৃদয়ে ও জীবনে অনুতাপ আনে আর তা মুক্তির দিকে নিয়ে যায় এবং তাতে আমাদের দুঃখ করার কিছু নেই। কিন্তু এই জগতের দেওয়া দুঃখ মানুষকে অনন্ত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। 11 দেখ, ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে যে দুঃখ তোমাদের হয়েছে, তা তোমাদের কত মঙ্গল করেছে, তোমাদের কত আন্তরিক করে তুলেছে। নিজেদের নির্দোষ বলে প্রমাণ করার জন্য তোমাদের কত ইচ্ছা হয়েছিল, তোমাদের মনে কত ক্রোধ ও ভয় জেগেছিল, আমাদের দেখার জন্য তোমাদের কত আগ্রহ হয়েছিল, তোমাদের মনে কত দরদ এসেছিল, অন্যায়ের শাস্তি দেবার জন্য তোমাদের কত ইচ্ছা হয়েছিল। সবকিছুতেই তোমরা প্রমাণ করেছ যে সে বিষয়ে তোমরা নির্দোষ। 12 আমি তোমাদের কাছে চিঠি লিখেছিলাম বটে, কিন্তু যে অন্যায় করেছে বা যার ওপর অন্যায় করা হয়েছে তাদের জন্য নয়, বরং তোমাদের লিখেছিলাম যাতে ঈশ্বরের সামনে আমাদের প্রতি তোমাদের যে এই আনুগত্য আছে তা উপলদ্ধি করতে পার। 13 এইসবের জন্য আমরা উৎসাহিত হয়েছি।
আমাদের সেই উৎসাহের ওপরে তীতের আনন্দ আমাদের আরও আনন্দিত করেছে। তোমাদের সকলের কাছ থেকে তিনি অন্তরে নতুন শক্তি লাভ করেছেন। 14 তাঁর কাছে আমি কোন বিষয়ে যদি তোমাদের জন্য গর্ব করে থাকি, তাতে লজ্জিত হই নি; কিন্তু আমরা যেমন তোমাদের কাছে সবকিছুই সত্যভাবে ব্যক্ত করেছি, তেমনি তীতের কাছে আমাদের সেই গর্বও সত্য বলে প্রমাণ হল। 15 তোমরা সকলে তাঁকে কেমন মান্য করেছিলে, কেমন ভয় ও সম্মানের সঙ্গে তাঁকে গ্রহণ করেছিলে, সে সব স্মরণ করে তোমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা আরও বেড়ে গেছে। 16 এই জন্য আমি খুশী কারণ আমি তোমাদের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর করতে পারি।
দানের বিষয়
8 ভাই ও বোনেরা, মাকিদনিয়ার খ্রীষ্ট মণ্ডলীগুলির মধ্যে ঈশ্বরের অনুগ্রহ যে কাজ করেছে তা আমরা তোমাদের জানাচ্ছি। 2 যদিও দুঃখ কষ্ট ভোগ করার মধ্য দিয়ে তাদের পরীক্ষা করা হয়েছে এবং যদিও তারা অতি দরিদ্র, তবু তাদের মনে এতই আনন্দ যে তারা অন্যকে খোলা হাতে দান করেছে। 3 আমি সাক্ষী দিচ্ছি যে তারা নিজের ইচ্ছায় যতদূর সাধ্য এমনকি সাধ্যের অতিরিক্ত দান করেছিল। 4 তারা আমাদের ঐকান্তিক অনুরোধ জানিয়ে বলেছিল, ঈশ্বরের লোকদের এই সেবার কাজে অংশগ্রহণ করার সুযোগ যেন তাদের দেওয়া হয়। 5 তারা এমনভাবে দান করেছিল যা আমরা আশাই করি নি। তারা ঈশ্বরের ইচ্ছামতো প্রথমে নিজেদের প্রভুর কাছে এবং পরে আমাদের দিয়ে দিল।
6 সেইজন্য আমরা তীতকে অনুরোধ করলাম যাতে তিনি এর আগে যে কাজ করতে শুরু করেছিলেন, সেই অনুগ্রহের কাজ শেষ করেন। 7 সবকিছু যেমন তোমাদের প্রচুর পরিমাণে আছে—বিশ্বাস, বলার ক্ষমতা, জ্ঞান, সব বিষয়ের প্রতি তোমাদের আগ্রহ এবং আমাদের প্রতি ভালবাসা, ঠিক এইভাবে দান করার গুণটিও যেন তোমাদের প্রচুর পরিমাণে থাকে।
8 আমি আদেশ করে বলছি না, কিন্তু অন্যের আগ্রহের উদাহরণ দিয়ে তোমাদের ভালবাসা যথার্থ কিনা পরীক্ষা করছি। 9 কারণ তোমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহের কথা জান। তিনি ধনী হয়েও তোমাদের জন্য দরিদ্র হলেন, যাতে তোমরা তাঁর দারিদ্র্যে ধনবান হয়ে উঠতে পার।
10 এবিষয়ে আমি আমার পরামর্শ তোমাদের দিচ্ছি কারণ তোমাদের পক্ষে এটা মঙ্গলজনক। যেহেতু গত বছর তোমরাই প্রথম কাজ করতে আরম্ভ করেছিলে, শুধু তাই নয় সেই কাজ করার ইচ্ছাও তোমরাই প্রথমে প্রকাশ করেছিলে। 11 তোমরা আগ্রহের সাথে যে দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলে, এখন তা সেই একই আগ্রহের সঙ্গে তোমাদের সাধ্যমত শেষ কর। 12 কারণ দেবার মতো ইচ্ছা থাকলে তবেই তোমাদের দান গ্রাহ্য হবে। তোমাদের যা আছে সেই ভিত্তিতে দিলেই তোমাদের দান গ্রাহ্য হবে, তোমাদের যা নেই সেই অনুযায়ী নয়। 13 কারণ আমাদের উদ্দেশ্য এই নয় যে, অন্য সকলে আরাম করবে আর তোমরা কষ্টে পড়বে, বরং সব কিছুতে যেন সমতা থাকে। 14 বর্তমানে তোমাদের যথেষ্ট রয়েছে, তার থেকে দিয়ে তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারবে, আবার প্রয়োজনে তাদের যা বেশী হবে তা দিয়ে তোমাদের অভাব মিটবে। এইভাবে যেন সর্বত্র সমতা বজায় থাকে। 15 শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে,
“যে বেশী কুড়োলো, তার বাড়তি থাকল না;
যে অল্প কুড়োলো, তার অভাব হল না।”(E)
তীত ও তার সঙ্গীরা
16 তোমাদের জন্য আমার যে আগ্রহ আছে, ঠিক সেই রকম আগ্রহ ঈশ্বর তীতের অন্তরে দিয়েছেন বলে আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই। 17 তীত যে আমাদের অনুরোধ রেখেছেন তাই নয়, তিনি এতই আগ্রহী ছিলেন যে নিজের ইচ্ছায় তোমাদের কাছে যাচ্ছেন। 18 আমরা তীতের সঙ্গে সেই ভাইকে পাঠাচ্ছি, যিনি সুসমাচার প্রচারের জন্য সমস্ত মণ্ডলীতে প্রশংসিত। 19 কেবল তাই নয়, আমাদের সহযাত্রী হিসেবে প্রভুর মহিমার জন্য এই দান নিয়ে যাবার দরুন ও আমাদের সাহায্য করার ইচ্ছাকে প্রমাণ করতে বাস্তবিক মণ্ডলীগুলি তাকে মনোনীত করেছিল।
20 আমরা এই দায়িত্ব সম্পর্কে সতর্ক যাতে এই বিপুল অর্থ বিতরণ সম্পর্কে কেউ যেন আমাদের সমালোচনা না করে। 21 কারণ কেবল প্রভুর সামনে নয়, কিন্তু মানুষের দৃষ্টিতে যা ভাল, তাও আমরা লক্ষ্য রাখি।
22 আর ওদের সাথে আমাদের ভাইকে পাঠালাম, যাঁকে আমরা অনেকবার অনেক বিষয়ে পরীক্ষা করে এইসব কাজে উদ্যোগী দেখেছি এবং তোমাদের প্রতি তাঁর এই দৃঢ় বিশ্বাসের জন্য এবার আরও বেশী আগ্রহী দেখছি।
23 তীতের কথা যদি বলতে হয়, তবে তিনি আমার সহকর্মী ও তোমাদের সাহায্যের কাজে আমার সহকারী। আমাদের ভাইদের বিষয় যদি বলতে হয়, তবে বলি তাঁরা মণ্ডলীগুলির প্রতিনিধিত্ব করেন এবং খ্রীষ্টের পক্ষে গৌরব আনেন। 24 অতএব তোমাদের ভালবাসার প্রমাণ এবং তোমাদের ওপর আমাদের গর্বের কারণ, এই দুই বিষয়ের প্রমাণ তাঁদের দেখাও, যাতে সমস্ত মণ্ডলী তা দেখতে পায়।
সাথী খ্রীষ্টীয়ানদের সাহায্য
9 এখন বুঝতে পারছি যে ঈশ্বরের লোকদের সাহায্যের ব্যাপারে তোমাদের কিছু লেখার প্রয়োজন নেই। 2 কারণ আমি তোমাদের আগ্রহ জানি এবং তোমাদের বিষয়ে মাকিদনিয়ানদের কাছে এই গর্ব করে থাকি যে গত বছর থেকে আখায়ার লোকরা অর্থাৎ তোমরা তৈরী হয়ে রয়েছ। আর এই ঘটনা তাদের বেশীর ভাগ লোককে দানের বিষয়ে উৎসাহিত করে তুলেছে, তারাও দিতে চাইছে। 3 কিন্তু আমি সেই ভাইদের পাঠাচ্ছি যাতে তোমাদের সম্বন্ধে আমাদের যে গর্ব তা বিফল না হয়, যেন আমি যেমন তাদের বলেছি সেইমতো তোমরা প্রস্তুত হয়ে থাকো। 4 তা না হলে মাকিদনিয়ার কিছু লোক যদি আমার সাথে আসে এবং তোমাদের প্রস্তুত না দেখে, তাহলে এই নিশ্চয়তা বোধ আমাদের ও তোমাদের উভয়ের পক্ষেই লজ্জার বিষয় হবে। 5 সেইজন্য আমি ভাইদের এই অনুরোধ করা প্রয়োজন মনে করলাম, যাতে তাঁরা আগে তোমাদের কাছে যান এবং দান হিসাবে যে অর্থ তোমরা দেবে বলেছিলে, সেই দান সংগ্রহ করে প্রস্তুত থাকতে পারেন। সেই দান যেন স্বেচ্ছাদান হয়, জোর করে আদায় করা চাঁদার টাকা না হয়।
6 মনে রেখো, যে অল্প পরিমাণে বীজ বোনে, সে অল্প পরিমাণ ফসল কাটবে এবং যে যথেষ্ট পরিমাণ বীজ বোনে সে প্রচুর ফসল কাটবে। 7 প্রত্যেকে নিজের নিজের অন্তরে যেমন স্থির করেছে, সেই মতোই দান করুক, মনে দুঃখ পেয়ে অথবা জোর করা হয়েছে বলে নয়, কারণ খুশী মনে যারা দেয়, ঈশ্বর তাদের ভালবাসেন। 8 ঈশ্বর তোমাদের সর্বপ্রকার আশীর্বাদ প্রচুর পরিমাণে দিয়ে থাকেন, যেন সব সময় তোমাদের সব কিছুই বেশী পরিমাণে থাকে এবং যেন সব রকম ভাল কাজ করার জন্য সর্ব সময়ে তোমাদের ইচ্ছা ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত সবই থাকে। 9 যেমন শাস্ত্রে লেখা আছে:
“ধার্মিক দরিদ্রকে মুক্ত হস্তে দান করে;
তার সেই সত্কাজ চিরস্থায়ী।”(F)
10 যিনি কৃষককে বোনার জন্য বীজ ও আহারের জন্য খাদ্য জুগিয়ে থাকেন, তিনি তোমাদের বোনার জন্য আত্মিক বীজ জোগাবেন এবং তার বৃদ্ধিসাধন করবেন। তোমাদের দানশীলতা প্রচুর ফসল উৎপন্ন করবে। 11 ঈশ্বর তোমাদের সব বিষয়ে সমৃদ্ধ করবেন যেন তোমরা সব সময়ে মহত্ হও। আমাদের মাধ্যমে তোমাদের দান যখন অভাবীদের হাতে দেব, তখন তারা আনন্দে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাবে।
12 তোমাদের এই দানের ফলে ঈশ্বরের লোকদের শুধু যে অভাব মিটবে তা নয় বরং এই দান ঈশ্বরের প্রতি অনেক ধন্যবাদের দ্বারা উপচে পড়বে। 13 তোমাদের এই কাজ যে আনুগত্যের প্রমাণ দেয় তার জন্যে তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করবে, এই আনুগত্য তোমাদের খ্রীষ্টের সুসমাচারের ওপর বিশ্বাস থেকে আসে। খোলা হাতে তোমরা যে দান তাদের ও অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছ তার জন্য তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করবে। 14 তারা যখন তোমাদের জন্য প্রার্থনা করে তখন তোমাদের সাথী হবার ইচ্ছা করবে। তোমাদের ওপরে যে মহা-অনুগ্রহ ঈশ্বর দিয়েছন, তার কথা মনে করেই তারা এমন ইচ্ছা করবে। 15 ঈশ্বরের অপূর্ব অবর্ণনীয় দানের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International