Beginning
যীশু চার হাজারের বেশী লোককে খাওয়ালেন
(মথি 15:32-39)
8 সেই দিনগুলিতে আবার একবার অনেক লোকের ভীড় হল। তাদের কাছে খাবার ছিল না, তাই তিনি তাঁর শিষ্যদের ডেকে বললেন, 2 “এই লোকদের জন্য আমার মমতা হচ্ছে, কারণ এরা আজ তিনদিন ধরে আমার কাছে রয়েছে, এদের কাছে কিছু খাবার নেই। 3 যদি আমি এদের ক্ষুধার্ত ও অভুক্ত অবস্থায় বাড়ি পাঠাই, তবে এরা রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়বে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার বহু দূর থেকে এসেছে।”
4 তাঁর শিষ্যেরা এর উত্তরে বললেন, “এই জনমানবহীন জায়গায় আমরা কোথা থেকে এতগুলো লোকের খাবার জোগাড় করব?”
5 তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের কখানা রুটি আছে?”
তারা বলল, “সাতখানা।”
6 তখন তিনি লোকেদের মাটিতে বসতে আদেশ দিলেন। পরে সেই সাতটা রুটি তুলে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে রুটি গুলোকে টুকরো টুকরো করে পরিবেশনের জন্য শিষ্যদের হাতে তুলে দিলেন। তাঁরাও লোকদের মধ্যে পরিবেশন করলেন। 7 তাঁদের কাছে কতগুলো ছোট মাছ ছিল; তিনি সেগুলোর জন্যও ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে শিষ্যদের বললেন এগুলো পরিবেশন করে দাও।
8 লোকরা খেয়ে তৃপ্তি পেল। অবশিষ্ট টুকরো দিয়ে তারা সাতটি ঝুড়ি ভর্ত্তি করল। 9 সেদিন প্রায় চার হাজার লোক খেয়েছিল। এরপর তিনি তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন; 10 আর সঙ্গে সঙ্গে তিনি শিষ্যদের নিয়ে নৌকা করে দল্মনুথা অঞ্চলে চলে এলেন।
ফরীশীদের যীশুকে পরীক্ষার চেষ্টা
(মথি 16:1-4; লূক 11:16, 29)
11 পরে সেখানে ফরীশীরা এসে যীশুর সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিল। তাঁর কাছে আকাশ থেকে কোন অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চাইল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল তাঁকে পরীক্ষা করা। 12 তখন তিনি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, “এই যুগের লোকরা কেন অলৌকিক চিহ্ন দেখতে চায়? আমি তোমাদের সত্যি বলছি কোন অলৌকিক চিহ্ন এই লোকদের দেখানো হবে না।” 13 তখন তিনি তাদের ছেড়ে নৌকা করে হ্রদের অপর পারে গেলেন।
ইহুদী নেতাদের সম্পর্কে যীশুর সতর্কবাণী
(মথি 16:5-12)
14 কিন্তু শিষ্যরা রুটি আনতে ভুলে গিয়েছিলেন: নৌকায় তাদের কাছে কেবল একখানা রুটি ছাড়া আর কোন রুটি ছিল না। 15 তখন তিনি তাদের সতর্ক করে দিয়ে বললেন, “সাবধান! তোমরা হেরোদ এবং ফরীশীদের খামিরের বিষয়ে সাবধান থেকো!”
16 তখন তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলেন, “আমাদের কাছে কোন রুটি নেই।”
17 তাঁরা যা বলছেন, তা বুঝতে পেরে যীশু বললেন, “তোমাদের রুটি নেই বলে কেন আলোচনা করছ? তোমরা এখনও কি দেখ না বা বোঝ না, তোমাদের মন কি এতই কঠিন? 18 চোখ থাকতে কি তোমরা দেখতে পাও না? কান থাকতে কি শুনতে পাও না? আর তোমাদের কি মনেও পড়ে না? 19 যখন আমি পাঁচ হাজার লোকের মধ্যে পাঁচটি রুটি টুকরো করে দিয়েছিলাম: তখন তোমরা কত টুকরি উদ্বৃত্ত রুটির টুকরো কুড়িয়ে নিয়েছিলে?”
তাঁরা বললেন, “বারো টুকরি।”
20 যীশু আবার বললেন, “আমি যখন সাতটা রুটি চার হাজার লোকের মধ্যে টুকরো করে দিয়েছিলাম তখন কত টুকরি উদ্বৃত্ত রুটির টুকরো তোমরা তুলে নিয়েছিলে?”
তাঁরা বললেন, “সাত টুকরি।”
21 তখন তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা কি এখনও বুঝতে পারছ না?”
বৈৎসৈদাতে যীশু এক অন্ধকে দৃষ্টি দিলেন
22 তারপর তাঁরা বৈৎসৈদায় এলেন: আর লোকরা তাঁর কাছে একটা অন্ধ লোককে নিয়ে এসে মিনতি করল যাতে তিনি তাকে স্পর্শ করেন। 23 তখন তিনি অন্ধ লোকটির হাত ধরে তাকে গ্রামের বাইরে নিয়ে গেলেন। তিনি লোকটির চোখে খানিকটা থুথু লাগিয়ে তার ওপরে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি কিছু দেখতে পাচ্ছ?”
24 সে চোখ তুলে চেয়ে বলল, “আমি মানুষ দেখতে পাচ্ছি; গাছের মত দেখতে, তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
25 তখন তিনি আবার তার চোখের ওপর হাত রাখলেন। এইবার লোকটি চোখ বড় বড় করে তাকাল। তার দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণভাবে ফিরে পেল এবং সবকিছু স্পষ্টভাবে দেখতে পেল। 26 তারপর তিনি তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, “এই গ্রামে যেও না।”
পিতরের স্বীকৃতি—যীশুই খ্রীষ্ট
(মথি 16:13-20; লূক 9:18-21)
27 তারপর যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা সেখান থেকে কৈসরিযা ফিলিপীয় অঞ্চলে চলে গেলেন। রাস্তার মধ্যে তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কে, এ বিষয়ে লোকের কি বলে?”
28 তাঁরা বললেন, “অনেকে বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন। কেউ কেউ বলে, আপনি এলিয়। আবার কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে একজন।”
29 তখন তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?”
পিতর তাঁকে বললেন, “আপনি সেই খ্রীষ্ট।”
30 তখন তিনি তাঁদের সাবধান করে দিয়ে বললেন, “তোমরা এ কথা কাউকে বলো না।”
যীশু বললেন তাঁর মৃত্যু অনিবার্য
(মথি 16:21-28; লূক 9:22-27)
31 এরপর তিনি তাঁদের এই শিক্ষা দিতে শুরু করলেন যে, মানবপুত্রকে অনেক দুঃখ ভোগ করতে হবে এবং বয়স্ক ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, হত্যা করবে এবং মৃত্যুর তিনদিন পর তিনি আবার বেঁচে উঠবেন। 32 এই কথা তিনি তাঁদের স্পষ্টভাবে বললেন।
তাতে পিতর তাঁকে একপাশে নিয়ে গিয়ে অনুযোগ করতে লাগলেন। 33 কিন্তু যীশু তাঁর শিষ্যদের দিকে মুখ ফিরিয়ে পিতরকে ধমক দিয়ে বললেন, “আমার সামনে থেকে দূর হও, শয়তান! কারণ তুমি ঈশ্বরের ইচ্ছার সমাদর করছ না; তুমি মানুষের মতোই ভেবে এই কথা বলছ।”
34 এরপর তিনি শিষ্যদেব সঙ্গে অন্যান্য লোকদেরও নিজের কাছে ডেকে বললেন, “কেউ যদি আমার সঙ্গে আসতে চায়, সে নিজেকে অস্বীকার করুক এবং তার নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার অনুসারী হোক্। 35 কারণ কেউ যদি নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চায় তবে সে তা হারাবে; কিন্তু কেউ যদি আমার এবং সুসমাচারের জন্য নিজের প্রাণ হারায় তবে তার জীবন চিরস্থায়ী হবে। 36 মানুষ যদি নিজের জীবন হারিয়ে সমস্ত জগৎ লাভ করে তবে তার কি লাভ? 37 কিংবা মানুষ তার প্রাণের বিনিময়ে কি দিতে পারে? 38 যে কেউ এই ব্যভিচারী ও পাপীদের যুগে আমাকে এবং আমার শিক্ষাকে লজ্জার বিষয় মনে করে, মানবপুত্র যখন তাঁর পিতার মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে পবিত্র স্বর্গদূতদের সঙ্গে ফিরে আসবেন, তখন তিনিও সেই লোকের বিষয়ে লজ্জাবোধ করবেন।”
9 তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তদের মধ্যে কয়েকজন আছে, যারা কোনমতেই মৃত্যু দেখবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত ঈশ্বরের রাজ্য মহাপরাক্রমের সঙ্গে আসতে না দেখে।”
মোশি ও এলিয়র সঙ্গে যীশু
(মথি 17:1-13; লূক 9:28-36)
2 ছদিন বাদে যীশু পিতর, যাকোব এবং যোহনকে সঙ্গে করে এক উঁচু পাহাড়ে উঠে গেলেন। তাঁদের সামনে তাঁর রূপ পরিবর্তিত হয়ে গেল। 3 তাঁর পোশাক এত উজ্জ্বল ও শুভ্র হল যে পৃথিবীর কোন রজক সেই রকম সাদা করতে পারে না। 4 তখন মোশি এবং এলিয় তাঁদের সামনে এসে যীশুর সাথে কথা বলতে শুরু করলেন।
5 তখন পিতর যীশুকে বললেন, “গুরুদেব, এখানে আমাদের থাকা ভাল। আমরা তিনটি তাঁবু তৈরী করি। একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য এবং একটা এলিয়র জন্য।” 6 কারণ কি বলতে হবে তা তিনি জানতেন না, তাঁরা অত্যন্ত ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।
7 পরে একখানা মেঘ এসে তাঁদের ছায়া দিয়ে ঢেকে ফেলল; আর সেই মেঘ থেকে এই রব শোনা গেল, “ইনি আমার প্রিয় পুত্র। তোমরা তাঁর কথা শোন।”
8 শিষ্যেরা তখনই চারদিকে তাকালেন; কিন্তু যীশু ছাড়া আর কাউকে সেখানে দেখতে পেলেন না।
9 পাহাড় থেকে নামার সময় তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “তোমরা যা যা দেখলে তা কাউকে বলো না যতক্ষণ না মৃত্যু থেকে মানবপুত্র বেঁচে উঠছেন।”
10 তারা সেই ঘটনার কথা নিজেদের মধ্যেই চেপে রাখলেন; কিন্তু ভাবতে লাগলেন, মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠা কথাটির অর্থ কি হতে পারে। 11 পরে শিষ্যরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন ব্যবস্থার শিক্ষকরা বলেন যে প্রথমে এলিয়কে আসতে হবে?”[a]
12 তিনি তাদের বললেন, “হ্যাঁ, এলিয় প্রথমে এসে সব কিছু পুনঃস্থাপন করবেন বটে, কিন্তু মানবপুত্রের বিষয়ে কেন এসব লেখা হয়েছে যে তাঁকে অনেক দুঃখ পেতে হবে আর লোকে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে? 13 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলিয়ের বিষয়ে যেমন লেখা আছে, সেই অনুসারে তিনি এসে গেছেন এবং লোকরা তাঁর প্রতি যা ইচ্ছে তাই করেছে।”
অসুস্থ ছেলেকে যীশুর আরোগ্যদান
(মথি 17:14-20; লূক 9:37-43)
14 পরে তাঁরা অন্য শিষ্যদের কাছে এসে দেখলেন তাঁদের চারদিকে অনেক লোক আর ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাদের সাথে তর্ক করছেন। 15 তাঁকে দেখামাত্র সমস্ত লোক অবাক হল এবং তাঁর কাছে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে প্রণাম জানাতে লাগল।
16 তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা এদের সঙ্গে কি নিয়ে তর্ক করছ?”
17 তাতে লোকেদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠল, “হে গুরু, আমার ছেলেটিকে আপনার কাছে এনেছিলাম। তাকে এক বোবা আত্মায় পেয়েছে, সে কথা বলতে পারে না। 18 সেই আত্মা তাকে যেখানে ধরে, সেইখানে আছাড় মারে; আর তার মুখে ফেনা ওঠে, সে দাঁত কিড়মিড় করে আর শক্ত হয়ে যায়। আমি আপনার শিষ্যদের এই আত্মাটাকে ছাড়াতে বললাম, কিন্তু তাঁরা পারলেন না।”
19 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “হে অবিশ্বাসী বংশ, আমাকে আর কতকাল তোমাদের সঙ্গে থাকতে হবে? তোমাদের নিয়ে আর আমি কত ধৈর্য্য ধরব? তাকে আমার কাছে নিয়ে এস।”
20 তারা তাকে তাঁর কাছে নিয়ে এল। যীশুকে দেখামাত্র সেই আত্মা ছেলেটিকে মুচড়ে ধরল; আর সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিতে লাগল, তার মুখ দিয়ে ফেনা বার হচ্ছিল।
21 তখন যীশু তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলেন, “এর কতদিন এমন হয়েছে?”
ছেলেটির বাবা বলল, “ছেলেবেলা থেকে এরকম হয়েছে। 22 এই আত্মা একে মেরে ফেলার জন্য অনেকবার আগুনে ও জলে ফেলে দিয়েছে। আপনি যদি কিছু করতে পারেন, তবে দয়া করে আমাদের উপকার করুন।”
23 যীশু তাকে বললেন, “কি বললে, ‘যদি পারেন!’ যে বিশ্বাস করে তার পক্ষে সবই সম্ভব।”
24 সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটির বাবা চিৎকার করে কেঁদে বলল, “আমি বিশ্বাস করি! আমার অবিশ্বাসের প্রতিকার করুন!”
25 অনেক লোক সেদিকে আসছে দেখে যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমকে বললেন, “হে বোবা কালার আত্মা, আমি তোমাকে বলছি, এর মধ্যে আর কখনও ঢুকবে না!”
26 তখন সেই আত্মা চেঁচিয়ে তাকে ভয়ঙ্করভাবে মুচড়ে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল। তাতে ছেলেটি মড়ার মত হয়ে পড়ল, এমন কি অধিকাংশ লোক বলল, “সে মরে গেছে।” 27 কিন্তু যীশু তার হাত ধরে তুললে সে উঠে দাঁড়াল।
28 পরে যীশু বাড়ি ফিরে এলে শিষ্যরা তাঁকে একান্তে জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা কেন ঐ অশুচি আত্মাকে তাড়াতে পারলাম না?”
29 যীশু তাঁদের বললেন, “প্রার্থনা[b] ছাড়া আর কোন কিছুতেই এ আত্মাকে তাড়ানো যায় না।”
যীশু নিজের মৃত্যুর বিষয়ে বললেন
(মথি 17:22-23; লূক 9:43-45)
30 পরে সেই স্থান ছেড়ে তাঁরা গালীলের মধ্য দিয়ে চললেন; আর তিনি চাইলেন না যে তাঁরা কোথায় আছে সেকথা অন্য কেউ জানুক। 31 কারণ তখন তিনি তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “মানবপুত্রকে লোকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে, এবং তারা তাঁকে হত্যা করবে আর মৃত্যুর তিনদিন পরে তিনি বেঁচে উঠবেন।” 32 কিন্তু তাঁরা সেই কথা বুঝলেন না এবং এই বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেও ভয় পেলেন।
যীশু বললেন সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ কে
(মথি 18:1-5; লূক 9:46-48)
33 এরপর তাঁরা কফরনাহূমে ফিরে এলেন আর বাড়ির ভেতরে গিয়ে তিনি শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা রাস্তায় কি আলোচনা করছিলে?” 34 কিন্তু তাঁরা চুপচাপ থাকলেন কারণ তাঁদের মধ্যে কে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এই নিয়ে তর্ক চলছিল।
35 তখন যীশু বসে সেই বারোজন প্রেরিতদের ডেকে বললেন, “কেউ যদি প্রথম হতে চায়, তবে সে সকলের শেষে থাকবে এবং সকলের পরিচারক হবে।”
36 পরে যীশু একটা শিশুকে নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং তাকে কোলে করে তাঁদের বললেন, 37 “যে কেউ আমার নামে এর মতো কোন শিশুকে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে। আর কেউ যদি আমাকে গ্রহণ করে, সে আমাকে নয়, কিন্তু যিনি (ঈশ্বর) আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকেই গ্রহণ করে।”
যে কেউ আমাদের বিপক্ষে নয় সে-ই আমাদের পক্ষে
(লূক 9:49-50)
38 যোহন তাঁকে বললেন, “গুরু, আমরা একটি লোককে আপনার নামে ভুত তাড়াতে দেখে তাকে বারণ করেছিলাম, কারণ সে আমাদের লোক নয়।”
39 কিন্তু যীশু বললেন, “তাকে বারণ করো না, কারণ এমন কেউ নেই যে আমার নামে অলৌকিক কাজ করে সহজে আমার নিন্দা করতে পরে। 40 যে কেউই আমাদের বিপক্ষে নয় সে আমাদের সপক্ষে। 41 কেউ যদি খ্রীষ্টের লোক বলে তোমাদেরকে এক ঘটি জল দেয়, আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সে কোন মতেই নিজের পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হবে না।
পাপের কারণ সম্পর্কে যীশু সাবধান করে দিলেন
(মথি 18:6-9; লূক 17:1-2)
42 “আর এই যে সাধারণ লোক যারা আমায় বিশ্বাস করে, যদি কেউ তাদের একজনকে পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে সেই লোকের গলায় একটা বড় যাতাঁর পাট বেঁধে তাকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়াই তার পক্ষে ভাল। 43 তোমার হাত যদি তোমার পাপের কারণ হয়, তবে তাকে কেটে ফেলো, কারণ দুই হাত নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে পোড়ার থেকে বরং নুলো হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল। 44 [c] 45 তোমার পা যদি তোমার পাপের কারণ হয় তবে তাকে কেটে ফেলো, কারণ দুই পা নিয়ে নরকে যাওয়ার থেকে বরং খোঁড়া হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল। 46 [d] 47 আর যদি তোমার চোখ তোমার পাপের কারণ হয়, তবে সে চোখকে উপড়ে ফেল। দুচোখ নিয়ে নরকে যাওয়ার থেকে এক চোখ নিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভাল। 48 নরকে যে কীট মানুষকে খায় তারা কখনও মরে না এবং আগুন কখনও নেভে না।(A)
49 “লবণ দেওয়ার মত প্রত্যেকের ওপর আগুন দেওয়া হবে।
50 “লবণ ভাল, কিন্তু লবণ যদি লবণত্ব হারায়, তবে কেমন করে তাকে তোমরা আস্বাদযুক্ত করবে? তোমরা নিজের নিজের মনে লবণ রাখ এবং পরস্পর শান্তিতে থাক।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International