Beginning
ইয়োব তাঁর কথা অব্যাহত রাখলেন
29 ইয়োব তাঁর কথোপকথন চালিয়ে গেলেন। ইয়োব বললেন:
2 “কয়েক মাস আগে আমার জীবন যেমন ছিলো, আমার জীবন তেমন হোক্ এই আশা করি।
সেই সময় ঈশ্বর আমার ওপর নজর রাখতেন, আমার বিষয়ে তিনি যত্ন নিতেন।
3 সেই সময় ঈশ্বর আমার ওপর জ্যোতি প্রদান করতেন।
তাই আমি অন্ধকারেও পথ হাঁটতে পারতাম। ঈশ্বর আমাকে বাঁচার প্রকৃত পথ দেখাতেন।
4 যে দিনগুলিতে আমি সফলকাম হয়েছিলাম, এবং ঈশ্বর আমার সঙ্গে ছিলেন, আমি সেই দিনগুলির আশায় থাকি।
সেই দিনগুলিতে ঈশ্বর আমার গৃহকে আশীর্বাদ করেছিলেন।
5 যখন ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান আমার সঙ্গে ছিলেন এবং আমার সন্তান-সন্ততি আমার চারপাশে ছিল,
আমি সেই দিনগুলি আকাঙ্খা করি।
6 তখন জীবনটা খুব সুন্দর ছিল।
তখন আমি ননী দিয়ে আমার পা ধুয়েছি, তখন আমার কাছে প্রচুর পরিমাণে উত্তম মানের জলপাই তেল ছিল।
7 “তখন এমনি দিন ছিল যখন শহরের প্রবেশদ্বারে সর্বসাধারণের সভায়
আমি বয়স্ক লোকদের সঙ্গে বসতাম।
8 সেখানে প্রত্যেকে আমায় শ্রদ্ধা করতো।
যুবকরা যখন আমাকে দেখতে পেতো তখন তারা সরে দাঁড়াতো।
এমনকি বৃদ্ধরাও উঠে দাঁড়াত।
আমার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাবার জন্য ওরা উঠে দাড়াত।
9 জন নেতারা কথা বলা বন্ধ করে দিত
এবং ঠোঁটের ওপর হাত দিয়ে অন্যান্য লোকদের চুপ করতে ইঙ্গিত করতো।
10 এমনকি গুরুত্বপূর্ণ নেতারাও মৃদু স্বরে কথা বলতেন।
হ্যাঁ, মনে হতো, তাঁদের জিভ যেন তালুতে আটকে গেছে।
11 আমি যা বলতাম লোকে তা শুনতো এবং আমার সম্পর্কে তারা ভালো কথা বলতো। আমি কি করতাম লোকে দেখতো এবং তারা আমার প্রশংসা করতো।
12 কেন? কারণ যখন দরিদ্র লোক সাহায্য চেয়েছে, আমি সাহায্য করেছি।
এবং যে অনাথদের দেখাশোনা করার কেউ নেই, তাদের আমি সাহায্য করেছি।
13 মৃতপ্রায় মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করেছে।
সমস্যা-জর্জর বিধবাকে আমি সাহায্য করেছি।
14 সঠিক পথে জীবনযাপনই আমার বস্ত্র ছিল।
আমার শিরস্ত্রাণ ছিল আমার ন্যায়।
15 আমি অন্ধের কাছে চোখের মত ছিলাম।
তারা যেখানে যেতে চাইতো আমি নিয়ে যেতাম।
আমি খঞ্জলোকের কাছে তাদের পায়ের মত ছিলাম।
তারা যেখানে যেতে চাইত আমি বয়ে নিয়ে যেতাম।
16 আমি দরিদ্র লোকদের পিতার মত ছিলাম।
যাদের আমি একটুও চিনতাম না তাদেরও আমি সাহায্য করেছি, আদালতে তাদের মামলা জিতিয়েছি।
17 আমি দুষ্ট ব্যক্তির ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করেছি
এবং তাদের হাত থেকে নির্দোষ লোকদের বাঁচিয়েছি।
18 “আমি সর্বদাই আমার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভেবেছি,
আমি দীর্ঘ জীবন বেঁচে থেকে বৃদ্ধ হব।
19 আমি ভেবেছি আমি সেই বৃক্ষের মত স্বাস্থ্যবান ও প্রাণবন্ত হব
যে গাছের শিকড়ে প্রচুর জল আছে এবং যার শাখাপ্রশাখা শিশিরে সিক্ত হয়ে থাকে।
20 আমি ভেবেছি প্রত্যেকটি নতুন দিন উজ্জ্বলতর হবে
এবং নতুন সম্ভাবনায় ভরে উঠবে।
21 “অতীতে লোকরা আমার কথা শুনতো।
আমার উপদেশের অপেক্ষায় তারা চুপ করে থাকতো।
22 যারা আমার কথা শুনত, আমার বলা শেষ হওয়ার পর তাদের আর কিছুই বলার থাকতো না।
আমার কথা সুন্দর ভাবে তাদের কানে প্রবেশ করতো।
23 যেমন করে লোক বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করে, তেমনি তারা আমার বলার অপেক্ষায় থাকতো।
তারা যেন বসন্তের বৃষ্টির মত আমার বাক্য-ধারা পান করতো।
24 আমি যখনই ওদের সঙ্গে হেসে কথা বলেছি ওরা এত অবাক হয়ে যেত যে, আমি যে ওদের সঙ্গে কথা বলছি ওরা এটা বিশ্বাসই করতে পারত না।
আমার হাসিতে ওরা ভাল বোধ করেছে।
25 যদিও আমি তাদের নেতা ছিলাম তবু আমি তাদের সঙ্গে থাকাই পছন্দ করতাম।
আমি সভাসদসহ একজন রাজার মত, দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের দুঃখের মধ্যে তাদের শান্তি দিতাম।
30 “কিন্তু এখন, যারা আমার চেয়েও বয়সে ছোট তারা আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করে।
এবং তাদের পিতারা এতোই অপদার্থ ছিল যে, আমার মেষগুলোকে যে কুকুর পাহারা দেয়—আমি ওদের সেই কুকুরের সঙ্গেও রাখতে চাইনি।
2 ঐসব যুবকের পিতারা এতোই দুর্বল যে ওরা আমার সাহায্যে আসবে না।
তারা এখন বৃদ্ধ ও ক্লান্ত হয়েছে, তাদের পেশীগুলো এখন আর শক্ত ও মজবুত নেই।
3 তারা মৃত মানুষের মতো অনাহারে শুকিয়ে রয়েছে।
তাই তারা মরুভূমির শুকনো ধূলো খায়।
4 তারা মরুভূমির নোনা মাটির গাছ উপড়ে নেয়।
তারা মরুভূমির এক রকম গাছের শিকড় খায়।
5 তারা তাদের দল থেকে বিতাড়িত হয়েছে।
লোকে এমন ভাবে ওদের দিকে চিৎকার করে যেন ওরা চোর।
6 তারা নদীর শুকনো উপত্যকায়, পাহাড়ের গুহায়
অথবা মাটির গর্তে বাস করতে বাধ্য হয়।
7 তারা মরুভূমির ঝোপঝাড়ে গাধার মত ডাক ছাড়ে
এবং কাঁটাঝোপের নীচে গাদাগাদি করে জমা হয়।
8 তারা নামহীন একদল অপদার্থ লোক
যারা নিজেদের দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে!
9 “এখন ঐসব লোকদের পুত্ররা আমায় নিয়ে গান বেঁধে আমায় উপহাস করে।
আমার নামটাই এখন ওদের কাছে একটা বাজে শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
10 এখন ঐ যুবকরা আমায় ঘৃণা করে এবং আমার থেকে দূরে দাঁড়ায়।
তারা নিজেদের আমার থেকে ভালো মনে করে।
তারা, এমনকি আমার মুখে থুতুও দেয়!
11 ঈশ্বর আমার ধনুক থেকে গুণ (ছিলা) কেড়ে নিয়ে আমায় দুর্বল করে দিয়েছেন।
ঐ মন্দ লোকরা ওদের সমস্ত ক্রোধ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।
12 তারা আমার ডানদিক থেকে আক্রমণ করে।
তারা আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে।
আমার মনে হয় যেন একটা শহরকে আক্রমণ করা হল: আমাকে আক্রমণ করে ধ্বংস করার জন্য তারা আমার প্রাচীরে একটা রাস্তা তৈরী করেছে।
13 তারা আমার রাস্তা ছিন্ন-ভিন্ন করে দিয়েছে।
তারা আমাকে ধ্বংস করতে সফল হয়েছে। তাদের থামাবার কেউ নেই।
14 তারা একটা সৈন্যদলের মত যারা দেওয়াল ভেঙে একটা বড় গর্ত করেছে
এবং পাথর কুচির ওপর দিয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে আমার ঘাড়ে পড়েছে।
15 সন্ত্রাস আমাকে গ্রাস করেছে।
আমার সম্মান বাতাসের মত মুছে গেছে।
আমার নিরাপত্তা মেঘের মতোই অদৃশ্য হয়ে গেছে।
16 “আমার জীবন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে এবং আমি খুব শীঘ্রই মারা যাবো।
দুর্ভোগের দিন আমাকে আঁকড়ে ধরেছে।
17 রাতে আমার হাড়ে ব্যথা করে।
আমার যন্ত্রণা বন্ধ হয় না।
18 ঈশ্বর আমার বস্ত্র কেড়ে নিয়েছেন,
এবং আমার বস্ত্র মুচড়ে বিকৃত আকার করে দিয়েছেন।
19 ঈশ্বর আমায় কাদায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন
এবং আমি ধূলা ও ছাই এর মত হয়ে গিয়েছি।
20 “ঈশ্বর, আপনার সাহায্যের জন্য আমি আপনার কাছে কাঁদি কিন্তু আপনি শোনেন না।
আমি দাঁড়িয়ে পড়ে প্রার্থনা করি, কিন্তু আমার দিকে আপনি কোন মনোযোগ দেন না।
21 ঈশ্বর, আপনি আমার প্রতি নীচ ব্যবহার করেছেন।
আমাকে আঘাত করবার জন্য আপনি আপনার ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন।
22 ঈশ্বর, আপনি শক্তিশালী বাতাসকে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে দিয়েছেন।
আপনি আমাকে ঝড়ের মধ্যে ফেলেছেন।
23 আমি জানি আপনি আমায় মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবেন।
প্রত্যেকটি জীবন্ত ব্যক্তি অবশ্যই মারা যাবে।
24 “কিন্তু, যে ইতিমধ্যেই বিধ্বস্ত ও সাহায্যের জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছে,
তাকে নিশ্চয়ই কোন লোক আঘাত করবে না।
25 ঈশ্বর, আপনি জানেন যে, যে লোকরা সংকটে পড়েছিলো আমি তাদের জন্য কেঁদেছিলাম।
আপনি জানেন যে দরিদ্র লোকেদের জন্য আমার অন্তর কতখানি কাতর ছিলো।
26 কিন্তু যখন আমি ভালো জিনিস চাইলাম, তখন বিনিময়ে খারাপ জিনিস পেলাম।
যখন আমি আলো চাইলাম, অন্ধকার এলো।
27 আমি ভেতরে ভেতরে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছি।
আমার দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না।
আমি দিনের পর দিন ভুগে চলেছি।
28 আমি সব সময়ই দুঃখী এবং বিমর্ষ।
আমি মণ্ডলীর মধ্যে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে সাহায্য চাই।
29 মরুভূমির বুনো কুকুর এবং উটপাখীর মত
আমি বরাবরই নিঃসঙ্গ।
30 আমার চামড়া পুড়ে খোসা হয়ে উঠে যাচ্ছে।
জ্বরে আমার দেহ উত্তপ্ত হয়ে আছে।
31 আমার বীণা দুঃখের গান গাইতে শুরু করেছে।
আমার বাঁশিও দুঃখের কান্নায় ভরে উঠেছে।
31 “আমি আমার চোখের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি।
এমন দৃষ্টি দিয়ে আমি কোন মেয়েকে দেখবো না যে দৃষ্টি আমার কামলালসাকে চরিতার্থ করবার জন্য ঐ মেয়েকে পেতে আমায় বাধ্য করবে।
2 উচেচর ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, মানুষের জন্য কি করেন?
উচেচর ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, মানুষকে কি দেন?
3 মন্দ লোকদের জন্য ঈশ্বর সমস্যা ও ধ্বংস প্রেরণ করেন
এবং যারা মন্দ কাজ করে তাদের জন্য পাঠান বিপর্যয়।
4 আমি যা করি ঈশ্বর সবই জানেন
এবং তিনি আমার প্রতিটি পদক্ষেপ লক্ষ্য করেন।
5 “আমি মানুষকে মিথ্যা বলিনি
ও তাদের প্রতারিত করতে চাইনি!
6 ঈশ্বর যদি যথাযথ মানদণ্ডও ব্যবহার করেন,
তিনি দেখবেন আমি নির্দোষ।
7 যদি আমার পদক্ষেপ যথার্থ পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়ে থাকে,
যদি আমার চোখ আমায় মন্দ কাজ করতে পরিচালিত করে থাকে,
যদি আমার হস্তদ্বয় পাপে কলঙ্কিত হয়ে থাকে,
8 তাহলে, আমার চাষের ফসল যেন অন্যরা খায়
এবং আমার চাষের ফসল যেন তারা তোলে।
9 “যদি আমি কখনো অন্য কোন নারীকে কামনা করে থাকি
বা আমার প্রতিবেশীর দরজায় তার স্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করে থাকি,
10 তাহলে আমার স্ত্রী যেন অন্য পুরুষের জন্য রান্না করে
এবং অন্য পুরুষরা যেন তার সঙ্গে শয়ন করে।
11 কেন? কারণ যৌনপাপ হল লজ্জাকর।
এটা শাস্তিযোগ্য পাপ।
12 যৌনপাপ হল এমন এক আগুন যা সবকিছু ধ্বংস হওয়া পর্যন্ত জ্বলতে থাকে।
আমি সারা জীবন যা করেছি এটা তা ধ্বংস করে দিতে পারে।
13 “যখন আমার বিরুদ্ধে আমার ক্রীতদাসরা অভিযোগ করেছিল
তখন আমি যদি তাদের প্রতি ন্যায়বিচার না করে থাকি,
14 তাহলে ঈশ্বরের মুখোমুখি হয়ে আমি কি করবো?
যখন ঈশ্বর জিজ্ঞাসা করবেন আমি কি করেছি, তখন আমি কি বলবো?
15 প্রত্যেকে তার মায়ের গর্ভে জন্মায়।
আমি আমার মায়ের গর্ভে জন্মেছি, আমার ক্রীতদাসরা তাদের মায়ের গর্ভে।
অতএব সেই দিক থেকে আমাতে আর আমার ক্রীতদাসদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
16 “দরিদ্র লোকদের সাহায্য করতে আমি কখনও বিমুখ ছিলাম না।
আমি বিধবাদের সাহায্য করতে কখনো অস্বীকার করিনি।
17 খাদ্যের বিষয়ে আমি কখনও স্বার্থপর হইনি।
আমি সর্বদাই অনাথদের খাবার দিয়েছি।
18 আমার সারা জীবন ধরে আমি পিতৃহীন সন্তানদের পিতার মত ছিলাম।
আমার সারা জীবন ধরে আমি বিধবাদের সাহায্য করেছি।
19 আমি যখনই বস্ত্রহীন মানুষকে,
দরিদ্র মানুষকে, জামার অভাবে কষ্ট পেতে দেখেছি,
20 আমি সর্বদাই তাদের বস্ত্র দিয়েছি।
ওদের উষ্ণ রাখার জন্য আমার নিজের ভেড়া থেকে আমি পশম দিয়েছি।
এবং ওরা ওদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে আমায় আশীর্বাদ করেছে।
21 যদিও আমি জানতাম যে আমি আদালতের সমর্থন পাবো,
তবু আমি কখনো অনাথদের ভয় দেখাই নি।
22 আমি যদি কখনও তা করে থাকি,
তাহলে আমার বাহু কাঁধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যাবে।
23 আমি ঈশ্বরের শাস্তিকে ভয় পাই।
তিনি যখন উঠে দাঁড়ান
আমি তাঁর সামনে দাঁড়াতে পারি না।
24 “আমি আমার সম্পদের ওপর কখনই ভরসা করি নি।
ঈশ্বর আমায় সাহায্য করবেন এটাই আমার বড় ভরসা।
খাঁটি সোনাকেও আমি কখনও বলি নি, ‘তুমিই আমার ভরসা।’
25 আমি বিত্তবান ছিলাম।
কিন্তু তা আমাকে অহঙ্কারী করে নি।
আমি অনেক ধনসম্পদ উপার্জন করেছি।
কিন্তু অর্থ আমাকে সুখী করে নি।
26 আমি কখনও উজ্জ্বল সূর্য
বা সুন্দর চাঁদের পূজো করি নি।
27 চাঁদ ও সূর্যকে পূজো করার মতো
অতখানি বোকা আমি ছিলাম না।
28 ওটাও শাস্তিযোগ্য পাপ।
যদি আমি ওইগুলোর পূজো করতাম তাহলে আমি উচ্চে অবস্থিত ঈশ্বর সর্বশক্তিমানের প্রতি অবিশ্বস্ততার কাজ করতাম।
29 “আমার শত্রুরা যখন ধ্বংসপ্রাপ্ত হল
আমি কখনই সুখী হই নি।
যখন আমার শত্রুদের জীবনে অঘটন ঘটেছে,
তখন আমি তাদের প্রতি কখনও উপহাস করিনি।
30 আমার শত্রুদের অভিশাপ দিয়ে বা তাদের মৃত্যু কামনা করে
আমি কখনও নিজের মুখকে পাপ করতে দিই নি।
31 আমার তাঁবুর প্রত্যেকেই জানে যে
আমি সর্বদাই আমার অতিথিদের যথেষ্ট খাদ্য দিয়েছি।
32 আমি সর্বদাই ভবঘুরেদের আমার ঘরে ডেকে এনেছি
যাতে ওদের রাস্তায় ঘুমাতে না হয়।
33 অন্য লোকরা তাদের পাপ গোপন করার চেষ্টা করে।
কিন্তু আমি আমার অপরাধ গোপন করি নি।
34 লোকে কি বলতে পারে সে নিয়ে আমি কোন দিনই ভীত হই নি।
সেই ভয় কোন দিন আমাকে চুপ করাতে পারে নি।
আমি কোন দিনই বাইরে যেতে দ্বিধাবোধ করি নি।
আমি লোকের ঘৃণায কোন দিন বিচলিত হইনি।
35 “এই যে, আমি চাই কেউ আমার কথা শুনুক!
এই রইল আমার স্বাক্ষর আমার অভিযোগের ওপর।
এখন ঈশ্বর সর্বশক্তিমান যেন আমায় একটা আধিকারিকী উত্তর দেন।
আমি চাই, তাঁর মতে আমি যা ভুল করেছি, তা তিনি লিখে ফেলুন।
36 তারপর আমি সেটা কাঁধে পরে নেব।
মাথার মুকুটের মত আমি তা ধারণ করবো।
37 যদি ঈশ্বর তা করতেন, তাহলে আমিও আমার সব কাজের ব্যাখ্যা দিতে পারতাম।
আমি একজন রাজপুত্রের মত তাঁর কাছে যেতে পারতাম।
38 “আমার জমি আমি কারও কাছ থেকে চুরি করি নি।
কেউ আমার সম্পর্কে চুরির অভিযোগ তুলতে পারবে না।
39 জমি থেকে যে খাদ্য আমি পেয়েছিলাম তার জন্য
আমি আমার কৃষককে মূল্য দিয়েছিলাম।
আমি কখনো জমির ভাড়াটেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করিনি।
40 যদি আমি কখনও এইসব মন্দ কাজ করে থাকি,
তাহলে আমার জমিতে গম এবং বার্লির বদলে যেন কাঁটা-ঝোপ ও দুর্গন্ধ লতাপাতা জন্মায়!”
ইয়োবের কথা শেষ হল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International