Beginning
শলোমনের মন্দির ও রাজপ্রাসাদ নির্মাণের পরিকল্পনা
2 প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার জন্য শলোমন একটি মন্দির ও নিজের জন্য একটি রাজপ্রাসাদ বানানোর পরিকল্পনা করেন। 2 এই কাজের জন্য তিনি 70,000 শ্রমিক, 80,000 পাথর কাটা মিস্ত্রী ও এদের কাজের তদারকির জন্য 3600 জন তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করেছিলেন।
3 এরপর শলোমন সোরের রাজা হূরমের কাছে অনুরোধ করে পাঠালেন,
“আমার পিতা দায়ূদকে যেভাবে সাহায্য করেছিলেন, আপনাকে আমায় সেভাবেই সাহায্য করতে হবে। আপনি এরস কাঠ পাঠিয়েছিলেন, যাতে আমার পিতা তাঁর নিজের জন্য একটি বাসযোগ্য বাড়ী তৈরী করতে পারেন। 4 এখন আমি আমার প্রভু, ঈশ্বরের নামে একটা মন্দির বানিয়ে তাঁকে উৎসর্গ করতে চলেছি যাতে সেই মন্দিরে প্রভুর সামনে আমরা সুমিষ্টগন্ধী ধুপধূনো জ্বালাতে পারি এবং নিয়মিতভাবে সেই বিশেষ টেবিলে পবিত্র রুটি[a] নৈবেদ্য দিতে পারি। প্রতি সকাল-সন্ধ্যা, বিশ্রামের দিন ও অমাবস্যায় এবং প্রভু আমাদের ঈশ্বরের নির্দেশিত উৎসবের দিন হোমবলি উৎসর্গ করা হবে। ঠিক হয়েছে, ইস্রায়েলের লোকরা চিরকাল এই ক্রিয়া-কর্ম চালিয়ে যাবে।
5 “যেহেতু আমাদের ঈশ্বর অন্যান্য দেবতা থেকে মহান তাই আমি তাঁর উদ্দেশ্যে একটা বিশাল মন্দির বানাতে চাই। 6 কারো পক্ষেই কোনো ঘর বাড়ী বানিয়ে সেখানে আমাদের ঈশ্বরকে রাখা সম্ভব নয়। এমনকি স্বর্গ এবং স্বর্গের স্বর্গও ঈশ্বরকে ধরে রাখতে পারে না। সুতরাং, আমি ক্ষুদ্র মানুষ, ঈশ্বরের মন্দির আর কি করে বানাবো? আমি শুধুমাত্র তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ধুপধূনো দেবার মতো একটা জায়গা বানাতে পারি।
7 “আমি চাই আপনি আমাকে সোনা, রূপো, পিতল ও লোহার কাজ জানা একজন দক্ষ কারিগর পাঠান যে বেগুনী, লাল এবং নীল রঙের সূক্ষ্ম কাপড় দিয়েও কাজ করতে জানে। সে এখানে যিহূদা এবং জেরুশালেমে আমার পিতার বেছে রাখা কারিগরদের সঙ্গে কাজ করবে। 8 এছাড়াও, আপনাকে আমায় লিবানোন থেকে শক্ত ও দামী দামী কিছু গাছের গুঁড়ি পাঠাতে হবে। আমি জানি আপনার কর্মচারীরা লিবানোন থেকে গাছ কাটার ব্যাপারে অভিজ্ঞ। আমার কর্মচারীরাও তাদের সঙ্গে গিয়ে হাত লাগাবে। 9 আমি মন্দিরটা খুব বড় আর সুন্দর করে বানাতে চাই এবং সে কারণে আমার বহু পরিমাণ কাঠ লাগবে। 10 তাদের কাজের মজুরি হিসেবে আমি আপনার কর্মচারীদের 125,000 বুশেল গমের আটা, 125,000 বুশেল যব, 115,000 গ্যালন দ্রাক্ষারস এবং 115,000 গ্যালন তেল দেবো।”
11 হূরম শলোমনকে বলে পাঠালেন,
“শলোমন, প্রভু তাঁর লোকদের ভালোবাসেন বলেই তিনি তোমাকে তাদের রাজা করেছেন। 12 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা কীর্ত্তিত হোক্ যিনি স্বর্গ ও পৃথিবী বানিয়েছেন এবং রাজা দায়ূদকে একটি সুসন্তান দিয়েছেন। শলোমন তোমার প্রজ্ঞা ও বোধ আছে এবং তুমি প্রভুর জন্য একটি মন্দির আর তোমার নিজের জন্য একটি প্রাসাদ তৈরী করছ। 13 আমি তোমার কাছে হূরম আবি নামে একজন দক্ষ কারিগর পাঠাবো। 14 হূরমের মাতা ছিলেন দান গোষ্ঠীর থেকে আর পিতা ছিলেন সোর থেকে। হূরম আবি সোনা, রূপো, পিতল, লোহা এবং কাঠের একজন দক্ষ কারিগর। এছাড়াও দামী বেগুনী, লাল ও নীল রঙের কাপড়েরও সে একজন দক্ষ কারিগর। তোমার নির্দেশ মতো সবকিছুই ও বানাতে পারবে। তোমার পিতা রাজা দায়ূদের বাছাই করা কারিগরদের সঙ্গে গিয়ে কাজ করবে।
15 “এখন, হে রাজন, তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি মত আমার কর্মচারীদের গম, যব, তেল ও দ্রাক্ষারস দিও। 16 লিবানোন থেকে তোমার যতটা পরিমাণ কাঠ লাগবে সেগুলি আমরা কাটব এবং সেগুলি ভেলায় করে সমুদ্র পথে যাফোতে পাঠিয়ে দেবো। সেখান থেকেই তুমি সেগুলো জেরুশালেমে নিয়ে যেতে পারো।”
17 এরপর, শলোমন তাঁর পিতা (দায়ূদ যেভাবে লোক গণনা করেছিলেন) সেভাবে ইস্রায়েলে কতজন বিদেশী বাস করে তা জানবার জন্য গণনা করলেন। বিদেশী জনসংখ্যা ছিল 153,600 জন। 18 এর মধ্যে শলোমন ভার বইবার জন্য 70,000 লোক আর পর্বতের ওপর পাথর কাটার জন্য 80,000 লোককে বেছে নিয়েছিলেন। আর এইসব কাজকর্ম তদারকি করার জন্য 3600 জনকে বাছলেন।
শলোমনের মন্দির নির্মাণ
3 জেরুশালেমের মোরিয়া পর্বতের ওপর শলোমন প্রভুর মন্দির বানানোর কাজ শুরু করলেন। এইটি সেই জায়গা যেখানে প্রভু, শলোমনের পিতা, রাজা দায়ূদের সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং সেটি ছিল যিবূষীয় অর্ণানের শস্য মাড়াইয়ের খামার। 2 শলোমন তাঁর রাজত্বের চতুর্থ বছরের দ্বিতীয় মাসে মন্দির বানানোর কাজ শুরু করেন।
3 ঈশ্বরের মন্দিরের ভিতের দৈর্ঘ্য ছিল 60 হাত আর প্রস্থ 20 হাত। 4 মন্দিরের সামনের গাড়ি বারান্দাটি উচ্চতায় ও দৈর্ঘ্যে ছিল 20 হাত। ভেতরের দিকের চত্বরটি শলোমন আগাগোড়া সোনায় মুড়ে দিয়েছিলেন। 5 তিনি মন্দিরের বড় ঘরের দেওয়ালে দেবদারু কাঠের আস্তরণ দিয়ে তার ওপরে সোনার আস্তরণ দিয়েছিলেন। সেই সব দেওয়ালে তালগাছ আর শিকলের ছবি খোদাই করা ছিল। 6 মন্দিরটিকে আরো সুন্দর দেখাবার জন্য শলোমন বহু মূল্যবান পাথর দিয়ে সাজিয়েছিলেন এবং তিনি পর্বয়িমের সোনা ব্যবহার করেছিলেন। 7 মন্দিরের কড়িকাঠগুলি, দরজার কাঠামোগুলি, দরজাগুলি এবং মন্দিরের দেওয়ালগুলি তিনি সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন এবং দেওয়ালের ওপর তিনি করূব দূতদের প্রতিকৃতি খোদাই করেছিলেন।
8 শলোমন মন্দিরের পবিত্রতম স্থানটিও নির্মাণ করেছিলেন। পবিত্রতম স্থানটি দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ছিল 20 হাত। অর্থাৎ পবিত্রতম স্থানের মাপ আর মন্দিরের প্রস্থের মাপ ছিল এক। পবিত্রতম স্থানের দেওয়ালও 23 টন সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। 9 এক একটা সোনার পেরেকের ওজন ছিল 1 1/4 পাউণ্ড। মন্দিরের ওপর ঘরগুলোও শলোমন সোনা দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন। 10 পবিত্রতম স্থানে রাখবার জন্য তিনি দুটি করূব দূতের মূর্ত্তি খোদাই করেছিলেন এবং সেগুলো সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন। 11 এই করূব দূতদের এক একটা ডানার দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় 5 হাত অর্থাৎ ডানার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত মোট দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় 20 হাত। 12 করূব দূতের মূর্ত্তি দুটো এমনভাবে বসানো হয়েছিল যাতে মাঝামাঝি জায়গায় এদের একজনের ডানার সঙ্গে অন্যজনের ডানা ছুঁয়ে থাকে। 13 তাদের ডানাগুলি ছড়িয়ে দিয়ে তারা 20 হাত জায়গা ঢেকে দিয়েছিল এবং তাদের পায়ের ওপর এমনভাবে দাঁড়িয়েছিল যে মনে হচ্ছিল যেন তারা ঘরের ভেতরের দিকে চেয়ে আছে।
14 নীল, বেগুনী এবং লাল রঙের কাপড় দিয়ে শলোমন পর্দাসমূহ বানিয়েছিলেন এবং সেগুলোর ওপর সূচীশিল্প দিয়ে করূব দূতও বানিয়েছিলেন।
15 মন্দিরের সামনে প্রায় 35 হাত দীর্ঘ দুটি স্তম্ভ বানানো হয়েছিল। এই দুটি স্তম্ভের ওপরের অংশ দুটো ছিল 5 হাত দীর্ঘ। 16 তিনি শেকলের মত মালা তৈরী করেছিলেন এবং সেগুলো স্তম্ভ দুটির মাথায় রেখেছিলেন। এর পরে তিনি এক শত ডালিম তৈরী করেছিলেন এবং সেগুলো মালায় স্থাপন করেছিলেন। তারপর তিনি 100 টি ডালিম তৈরী করে সেই মালায় বসিয়ে দিয়েছিলেন। 17 মন্দিরের সামনে ডানদিকে যে স্তম্ভটা বসানো হয়েছিল শলোমন তার নাম দিয়েছিলেন “যাখীন” এবং বাঁদিকের স্তম্ভটার নাম দেওয়া হয় “বোয়স।”
মন্দিরের আসবাবপত্র
4 শলোমন পিতল দিয়ে মন্দিরের বর্গাকৃতি বেদীটি বানিয়েছিলেন। দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে এটি ছিল 20 হাত এবং উচ্চতায় 10 হাত। 2 গলানো পিতল দিয়ে মন্দিরের সুবিশাল গোলাকার জলের চৌবাচ্চাটি ঢালাই করা হয়েছিল। এই জলাধারের ব্যাস ছিল 10 হাত, পরিধি 30 হাত এবং উচ্চতা প্রায় 5 হাত। 3 পিতলের তৈরী জলাধারটির নীচে সমস্ত বৃত্তটিকে ঘিরে দুটো সারিতে 10 হাত ষাঁড়ের প্রতিকৃতি রাখা ছিল। ষাঁড়গুলি এবং চৌবাচ্চাটি ছিল একটি খণ্ডে ঢালাই করা। 4 চৌবাচ্চাটি বারোটি ষাঁড়ের মূর্ত্তির ওপরে বসানো ছিল, যার মধ্যে তিনটে ষাঁড় ছিল উত্তরমুখী, তিনটে পশ্চিমমুখী, তিনটে দক্ষিণমুখী এবং তিনটে পূর্বমুখী। চৌবাচ্চাটি সেগুলোর মাথায় বসানো ছিল যাদের শরীরের পিছন দিকগুলো ছিল কেন্দ্রের দিক। 5 এই জলাধারের পরিধি দেওয়াল ছিল 3 ইঞ্চি পুরু এবং জলাধারের কানাটা ফুলকাটা পেয়ালার মতো করা ছিল। এটি প্রায় 17,500 গ্যালন জল ধারণ করতে পারত।
6 পিতলের জলাধারের বাঁ পাশে ও ডান পাশে পাঁচটি করে মোট দশটি গামলা তৈরী করেছিলেন। সেখানে হোমবলি নিবেদনের জিনিসপত্র ধোয়া হতো। আর বড় জলাধারের জল যাজকরা উৎসর্গের আগে ধোয়াধুয়ির কাজে ব্যবহার করতেন।
7 দায়ূদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, শলোমন 10 টা বাতিদান বানালেন এবং তার মধ্যে পাঁচটিকে মন্দিরের উত্তরদিকে এবং পাঁচটিকে দক্ষিণ দিকে সাজিয়ে রেখেছিলেন। 8 একই ভাবে তিনি 10 টি টেবিলও বানিয়ে মন্দিরের মধ্যে রাখেন। মন্দিরের জন্য 100 টি বেসিন বা হাত ধোওযার জায়গা সোনা দিয়ে বানানো হয়েছিল। 9 এছাড়াও, শলোমন যাজকদের জন্য উঠোন, একটি বিরাট প্রাঙ্গণ এবং উঠোনের দরজাসমূহও বানিয়েছিলেন। এই দরজাগুলো পিতল দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। 10 এসব শেষ হলে শলোমন বড় জলাধারটিকে মন্দিরের ডানদিকে দক্ষিণ পূর্বদিকে বসিয়ে দিয়েছিলেন।
11-16 হূরম পাত্র, বেলচা এবং গামলাসমূহ বানিয়েছিলেন। এইভাবে শলোমনের জন্য যে সমস্ত কাজ হাতে নিয়েছিলেন সে সমস্ত কাজ তিনি শেষ করেন। বাটির আকারের গম্বুজসহ স্তম্ভ দুটি, স্তম্ভের ওপর বাটি আকারের গম্বুজগুলিকে সাজাবার জন্য দুটি জাফরি; 400টি ছোট ছোট ডালিম; প্রত্যেকটি জাফরিতে এই ছোট ছোট ডালিমগুলি দুটি সারিতে সাজানো ছিল; ষাঁড়গুলির পিঠে পিতলের বড় চৌবাচ্চাটি; সমস্ত পাত্রগুলি, বেলচাসমূহ, কাঁটাগুলি এবং এগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য যন্ত্রপাতি। রাজা শলোমনের জন্য হূরম আবি এই সবই তৈরী করেছিলেন। প্রভুর মন্দিরে ব্যবহার যোগ্য পালিশ করা পিতল দিয়ে তৈরী করেছিলেন। 17 রাজা প্রথমে এই জিনিষগুলিকে মাটির ছাঁচে ফেলেছিলেন। মাটির ছাঁচ তৈরী হত যর্দন উপত্যকায় সুক্কোৎ ও সরেদার মধ্যবর্তী অঞ্চলে। 18 শলোমনের তৈরী পিতলের জিনিষগুলো এত বেশি ছিল যে কতখানি পিতল ব্যবহার করা হয়েছিল কেউ তার পরিমাপ করবার চেষ্টা করেনি।
19-22 তিনি নিথলিখিত জিনিষগুলিও তৈরী করেছিলেন: ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য একটা সোনার বেদী, ঈশ্বরের অস্তিত্বের পবিত্র রুটি রাখার জন্য টেবিল, 10টি খাঁটি সোনার বাতিদান এবং সেগুলোর বাতি যেগুলো ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে অভ্যন্তরস্থ পবিত্র স্থানে পোড়াবার কথা ছিল, ফুলগুলি, খাঁটি সোনার বাতি ও চিম্টেগুলি; কর্ত্তারিসমূহ, গামলাগুলি, ধুপপাত্রগুলি, এবং খাঁটি সোনার উনুন, অভ্যন্তর গৃহের দরজা, পবিত্রতম স্থানের দরজাগুলি এবং মন্দিরের খাঁটি সোনার দরজাগুলি।
5 প্রভুর মন্দিরের সমস্ত কাজ শেষ হবার পর শলোমন, তাঁর পিতা দায়ূদ মন্দিরের জন্য যেসব সোনা রূপোর জিনিষ ও আসবাবপত্র দান করেছিলেন সেগুলি নিয়ে এসে কোষাগারে রাখলেন।
পবিত্র সিন্দুক মন্দিরে আনা হল
2 শলোমন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তি ও পরিবার গোষ্ঠীসমূহের নেতাদের জেরুশালেমে জড়ো হবার আদেশ দিলেন। তাদের উপস্থিতিতে প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি দায়ূদের শহর যাকে সিয়োন বলা হয়, সেখান থেকে মন্দিরে আনবার আদেশ দিলেন। 3 নির্দেশ মতো ইস্রায়েলের সমস্ত ব্যক্তি সপ্তম মাসে (অধুনা সেপ্টেম্বরে) কুটিরবাস পর্বের সময় রাজা শলোমনের সামনে উপস্থিত হলেন।
4 যখন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিরা সেখানে এসে পৌঁছলেন, লেবীয়রা সাক্ষ্যসিন্দুকটি তুলে নিলেন এবং 5 সমাগম তাঁবুটিকে এবং তার ভেতরের সমস্ত পবিত্র জিনিস জেরুশালেম পর্যন্ত ওপরে বয়ে আনলেন। 6 রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে উপস্থিত হয়ে অসংখ্য মেষ ও ষাঁড় বলিদান করলেন। 7 এবং তারপর যাজকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি সেইখানে নিয়ে এলেন যে জায়গাটি ওটার জন্য তৈরী হয়েছিল। ঐ জায়গাটি ছিল মন্দিরের পবিত্রতম স্থান। সিন্দুকটিকে করূব দূতদের ডানার নীচে রাখা হল। 8 সাক্ষ্যসিন্দুকটিকে এমনভাবে রাখা হল যাতে ঐ ঘরে বসানো করূব দূতদের মূর্ত্তির ডানা সাক্ষ্যসিন্দুক ও সিন্দুক বহন করার ডাণ্ডার ওপর ছড়িয়ে থাকে। 9 বহন করার ডাণ্ডাগুলো এত লম্বা ছিল যে পবিত্রতম স্থানের সামনে থেকেই সেগুলো দেখা যেত। তবে মন্দিরের বাইরে থেকে এগুলো দেখা যেতো না। ঐ ডাণ্ডাগুলো এখনো পর্যন্ত ঠিক সেভাবেই রাখা আছে। 10 সাক্ষ্যসিন্দুকের মধ্যে দুটো পাথরের ফলক[b] ছাড়া আর কিছুই ছিল না। মোশি হোরেব পাহাড়ে এই ফলকদুটো সাক্ষ্যসিন্দুকে রেখেছিলেন। হোরেব পাহাড়েই প্রভুর সঙ্গে ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের চুক্তি হয়েছিল। ইস্রায়েলীয়রা মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পর এই ঘটনা ঘটে।
11 উপস্থিত সমস্ত যাজকরা ঈশ্বর নির্দেশিত বিধি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমে নিজেদের পবিত্র করলেন। তারপর, যাজকরা সকলে বিশেষ কোনো দলে না এসে সমবেতভাবে সেই পবিত্র স্থানে এসে দাঁড়ালেন। 12 সমস্ত লেবীয় গায়করা আসফ, হেমন ও যিদূথূন তাদের পুত্রসমূহ ও আত্মীয়স্বজনসহ বেদীর পূর্বদিকে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁরা সাদা লিনেনের পোশাক পরেছিলেন এবং তাঁরা কর্তাল, বীণাসমূহ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের কাছে বীণা, তানপুরা ও খঞ্জনী জাতীয় বাদ্যযন্ত্র ছিল। সেখানে 120 জন যাজকও ছিলেন যাঁরা তূরী বাজিয়েছিলেন। 13 সমবেতভাবে একসুরে বাদকরা শিঙা ও কাড়ানাকাড়া বাজিয়েছিলেন, গায়করা গান করেছিলেন। প্রভুকে ধন্যবাদ ও প্রশংসা জ্ঞাপনের সময় মনে হচ্ছিল এঁরা যেন পৃথক পৃথক কোনো ব্যক্তি নয়, একই ব্যক্তি। কাড়ানাকাড়া, খোল, কর্তাল, বীণা, যা কিছু বাদ্যযন্ত্র ছিল, সবাই সোৎসাহে সজোরে সেসব বাজিয়ে গাইছিলেন,
“প্রভুর মহিমা কীর্ত্তন করো, তিনি ভাল।
তাঁর প্রেম চির প্রবাহমান।”
এরপর প্রভুর মন্দির মেঘে পরিপূর্ণ হল। 14 যাজকরা তাঁদের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন নি কারণ সেই মেঘ ছিল মন্দিরকে পূর্ণ করে দেওয়া ঈশ্বরের মহিমা।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International