Beginning
যোয়াশের শাসনকার্য শুরু
12 ইস্রায়েলে যেহূর রাজত্বের সপ্তম বছরে সিংহাসনে আরোহণ করার পর, যোয়াশ 40 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন। যোয়াশের মা ছিলেন বের্-শেবা নিবাসিনী সিবিয়া। 2 যোয়াশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেন। রাজা যোয়াশ ঈশ্বরের সামনে ঠিক কাজগুলি করেছিলেন যতদিন তাঁকে যিহোয়াদা নির্দেশ দিয়েছিলেন। 3 তবে তিনিও ভিন্ন মূর্ত্তির পূজোর জন্য উঁচু জায়গায় বানানো বেদীগুলো ধ্বংস করেন নি। লোকরা সেই সব বেদীগুলিতে বলিদান করা ও ধুপধূনো দেওয়া চালিয়ে গেল।
যোয়াশ মন্দির সংস্কারের নির্দেশ দিলেন
4-5 যোয়াশ যাজকদের বললেন, “প্রভুর মন্দিরে কোন অর্থাভাব নেই। মন্দিরে জিনিসপত্র দান করা ছাড়াও, সময় সময় লোকরা মন্দির করও দিয়ে এসেছে। খুশি মত উপহার তারা দিয়েছে। আপনারা, যাজকরা মন্দির মেরামতের জন্য ঐ অর্থ ব্যবহার করবেন। প্রত্যেক যাজক লোকেদের জন্য কাজ করে, তাদের কাছ থেকে যে দক্ষিণা পান সেই টাকা দিয়েই তাদের প্রভুর মন্দির সংস্কার করা উচিৎ।”
6 কিন্তু যাজকরা মন্দির সংস্কার করলেন না। যোয়াশের রাজত্বের 23 বছরের মাথায়ও যখন যাজকরা মন্দির সারালেন না, 7 তখন রাজা যোয়াশ যাজক যিহোয়াদা ও অন্যান্য যাজকদের ডেকে পাঠিয়ে জানতে চাইলেন, “আপনারা কেন এখনও মন্দিরটা সারান নি? অবিলম্বে আপনারা লোকদের কাজ করে দক্ষিণা নেওয়া বন্ধ করুন। দক্ষিণার টাকাও আর বাজে খরচ করবেন না। ঐ টাকা অবশ্যই মন্দির সংস্কারের কাজে যাওয়া উচিৎ।”
8 যাজকরা লোকদের কাছ থেকে দক্ষিণা নেওয়া বন্ধ করবেন বলে রাজী হলেও, তাঁরা ঠিক করলেন যে মন্দির তাঁরা সারাবেন না। 9 তখন যাজক যিহোয়াদা একটা বাক্স বানিয়ে বাক্সটার ওপরে একটা ফুটো করে সেটাকে বেদীর দক্ষিণ দিকে, যে দরজা দিয়ে দর্শনার্থীরা মন্দিরে ঢোকে, রেখে দিলেন। কিছু যাজক মন্দিরের দরজা আগলে বসে থাকতেন। তারা প্রভুকে প্রণামী হিসেবে দেওয়া টাকা পয়সাগুলো ঐ বাক্সটায় পুরে দিলেন।
10 এরপর থেকে লোকরাও মন্দিরে এলে ঐ বাক্সটার মধ্যে টাকা পয়সা ফেলতে শুরু করল। যখনই মহারাজের সচিব এবং যাজক দেখতেন বাক্সটার মধ্যে অনেক টাকা পয়সা জমে গিয়েছে, তাঁরা তখন সমস্ত টাকা পয়সা বাক্স থেকে বের করে গুণে গেঁথে ব্যাগে ভরে রাখতেন। 11 তাঁরা ঐ অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের কাঠের মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, 12 পাথর-কাটিয়ে, খোদাইকর ও অন্যান্য যেসব মিস্ত্রিরা প্রভুর মন্দিরে কাজ করত তাদের মাইনে দিতেন। এছাড়াও ঐ টাকা দিয়ে মন্দির সারানোর জন্য কাঠের গুঁড়ি, পাথর থেকে শুরু করে যা যা প্রয়োজন কিনতেন।
13-14 প্রভুর মন্দিরের জন্য লোকরা যে টাকা দিতেন তা দিয়ে কিন্তু যাজকরা সোনা ও রূপোর পাত্র, বাতিদান, বাদ্যযন্ত্র এসব কিনতে পারতেন না। কারণ কারিগররা যারা মন্দির সারাচ্ছিল তাদের মাইনে ঐ অর্থ থেকে দেওয়া হত। 15 কেউই পাই পয়সার হিসেব নিতেন না বা টাকা কিভাবে খরচ হল—এ প্রশ্ন মিস্ত্রিদের করতেন না। কারণ সমস্ত মিস্ত্রিরা খুব বিশ্বাসী ছিল।
16 দোষ মোচন ও পাপমোচনের নৈবেদ্যর থেকে পাওয়া টাকা কারিগরদের মাইনে দেবার জন্য ব্যবহৃত হত না কারণ ওটাতে ছিল যাজকদের অধিকার।
যোয়াশ হসায়েলের হাত থেকে জেরুশালেমকে রক্ষা করলেন
17 অরামের রাজা হসায়েল গাৎ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। গাতদের হারানোর পর হসায়েল জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
18 যিহোশাফট, যিহোরাম, অহসিয় প্রমুখ যিহূদার রাজারা ছিলেন যোরামের পূর্বপুরুষ। এরা সকলেই প্রভুকে অনেক কিছু দান করেছিলেন। সে সব জিনিসই মন্দিরে রাখা ছিল। যোয়াশ নিজেও প্রভুকে বহু জিনিসপত্র দিয়েছিলেন। জেরুশালেমকে অরামের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য যোয়াশ এই সমস্ত জিনিসপত্র এবং তাঁর বাড়িতে ও মন্দিরে যত সোনা ছিল, সব কিছুই অরামের রাজা হসায়েলকে পাঠিয়ে দেন।
যোয়াশের মৃত্যু
19 যোয়াশ যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সমস্ত যিহূদার রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।
20 যোয়াশের কর্মচারীরা তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাঁকে সিল্লা যাবার পথে মিল্লো বলে একটা বাড়িতে হত্যা করে। 21 শিমিয়তের পুত্র যোষাখর ও শোমরের পুত্র যিহোষাবদ আধিকারিক ছিল। এই দুজন মিলে যোয়াশকে হত্যা করেছিল।
যোয়াশকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করার পর তাঁর পুত্র অমৎসিয় নতুন রাজা হলেন।
যিহোয়াহসের শাসনকার্য শুরু
13 অহসিয়ের পুত্র, যোয়াশের যিহূদায় রাজত্বের 23তম বছরে যেহূর পুত্র যিহোয়াহস শমরিয়ায় ইস্রায়েলের নতুন রাজা হয়েছিলেন এবং তিনি 17 বছর রাজত্ব করেছিলেন।
2 প্রভু যা কিছু করতে বারণ করেছিলেন, যিহোয়াহস সে সবই করেছিলেন। নবাটের পুত্র যারবিয়াম যে সমস্ত পাপ আচরণ করতে ইস্রায়েলের লোকদের বাধ্য করেছিলেন, যিহোয়াহস সেই সমস্ত পাপ আচরণ করেছিলেন। তিনি সেই সব কাজ বন্ধ করলেন না। 3 প্রভু তখন ইস্রায়েলের প্রতি বিরূপ হয়ে, ইস্রায়েলকে অরামের রাজা হসায়েল ও তাঁর পুত্র বিন্হদদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি প্রভুর করুণা
4 যিহোয়াহস তখন প্রভুর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলে, প্রভু সেই ডাকে সাড়া দিলেন। প্রভু ইস্রায়েলের বিপদ সচক্ষে দেখা ছাড়াও অরামের রাজা কিভাবে ইস্রায়েলীয়দের অত্যাচার করছে দেখেছিলেন।
5 তখন প্রভু ইস্রায়েলকে বাঁচানোর জন্য এক ব্যক্তিকে পাঠালেন। অরামীয়দের হাত থেকে মুক্ত হয়ে ইস্রায়েলীয়রা আগের মত নিজেদের বাড়ি ফিরে গেল।
6 কিন্তু তা সত্ত্বেও যারবিয়াম যে সকল পাপ দ্বারা ইস্রায়েলীয়দের পাপ আচরণে বাধ্য করেছিলেন, তারা সে সকল পাপ আচরণ বন্ধ করল না, কিন্তু আশেরার মূর্ত্তিকে শমরিয়াতে থাকতে দিল।
7 অরামের রাজা যিহোয়াহসের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছিলেন। সেনাবাহিনীর অধিকাংশ ব্যক্তিকেই হত্যা করেছিলেন। তিনি কেবলমাত্র 50 জন অশ্বারোহী সৈনিক, 10 খানা রথ ও 10,000 পদাতিক সৈন্য অবশিষ্ট রেখেছিলেন। যিহোয়াহসের বাদবাকি সেনাবাহিনী যেন ঝড়ের মুখে খড় কুটোর মত উড়ে গিয়েছিল!
8 যিহোয়াহস যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন তা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। 9 যিহোয়াহসের মৃত্যুর পর লোকরা তাঁকে শমরিয়ায় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করেছিল। যিহোয়াহসের পর তাঁর পুত্র যোয়াশ নতুন রাজা হলেন।
ইস্রায়েলে যিহোয়াশের শাসন
10 যিহূদায় যোয়াশের রাজত্বের 37তম বছরে শমরিয়ায় যিহোয়াহসের পুত্র যিহোয়াশ ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন। তিনি মোট 16 বছর ইস্রায়েল শাসন করেন। 11 প্রভু যা কিছু বারণ করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াস সে সমস্তই করেন। নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতোই তিনি ইস্রায়েলের লোকদের পাপের পথে চালিত করেন। 12 যোয়াশ যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন এবং অমৎসিয়ের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধের বিবরণ ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। 13 যিহোয়াসের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শমরিয়ায় সমাধিস্থ করা হয়। যিহোয়াসের মৃত্যুর পর যারবিয়াম নতুন রাজা হয়ে যোয়াশের সিংহাসনে বসেন।
যিহোয়াশ ইলীশায়কে দেখতে গেলেন
14 ইলীশায় অসুস্থ হয়ে পড়লেন। পরে এই অসুস্থতায় ইলীশায় মারা গেলেন। ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ তাঁকে দেখতে গেলেন। সেখানে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে যিহোয়াশ বললেন, “হে আমার পিতা, আমার পিতা! স্বর্গ থেকে কখন ঈশ্বরের পাঠানো ঘোড়ায়-টানা রথ এসে তোমাকে তুলে নিয়ে যাবে?”[a]
15 ইলীশায় যিহোয়াশকে বললেন, “তীর ধনুক হাতে নাও।”
তার কথা মতো যিহোয়াশ একটা ধনুক ও কিছু তীর নিলেন। 16 তখন ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “এবার তোমার হাতে ধনুক রাখো।” যিহোয়াশ ধনুকে হাত রাখার পর ইলীশায় তাঁর হাত রাজার হাতের ওপর রাখলেন। 17 ইলীশায় বললেন, “পূর্বদিকের জানালাটা খুলে দাও।” কথা মতো যিহোয়াশ জানালা খুলে দিলেন। ইলীশায় নির্দেশ দিলেন, “তীর নিক্ষেপ কর।”
যিহোয়াশ তীর ছুঁড়লেন। তখন ইলীশায় বলে উঠলেন, “ঐ তীর হল প্রভুর বিজয় বাণ! অরামের বিরুদ্ধে বিজয় বাণ! তুমি অবশ্যই অফেকে অরামীয়দের যুদ্ধে হারাতে ও ধ্বংস করতে পারবে।”
18 এরপর ইলীশায় আবার বললেন, “তীর নাও।” যিহোয়াশ তীর নিলে ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে নির্দেশ দিলেন, “তীরগুলি দিয়ে ভূমিতে আঘাত কর।”
যিহোয়াশ পরপর তিন বার ভূমিতে তীর দিয়ে আঘাত করলেন, তারপর তিনি থামলেন। 19 ইলীশায় রেগে গিয়ে বললেন, “তোমার অন্তত পাঁচ-ছ’বার ভূমিতে তীর দিয়ে আঘাত করা উচিৎ ছিল। তাহলে তুমি অরামীয় সেনাদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারতে! কিন্তু এখন তুমি ওদের শুধু মাত্র তিন বার যুদ্ধে হারাতে পারবে!”
ইলীশায়ের সমাধিতে এক অদ্ভুত ঘটনা
20 ইলীশায়ের মৃত্যু হলে লোকরা তাঁকে সমাধিস্থ করল।
একবার বসন্তকালে, একদল মোয়াবীয় সৈন্য ইস্রায়েল আক্রমণ করল। 21 ইস্রায়েলীয় কিছু ব্যক্তি সে সময়ে একটি শবদেহ সমাধিস্থ করতে যাচ্ছিল। তারা মোয়াবীয় সেনাদের দেখে ঐ শবদেহটি ইলীশায়ের কবরে ছুঁড়ে ফেলে পালিয়ে গেল। কিন্তু যেই মূহুর্তে এই মৃতদেহটি ইলীশায়ের অস্থি স্পর্শ করল, সেই মূহুর্তে সেই লোকটি বেঁচে উঠে দাঁড়াল।
যিহোয়াশ ইস্রায়েলের শহরসমূহ পুনরায় জয় করলেন
22 যিহোয়াশের রাজত্বের সময় অরামের রাজা হসায়েল নানাভাবে ইস্রায়েলকে বিপাকে ফেলেছেন। 23 কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের প্রতি প্রভুর কৃপা দৃষ্টি ছিল। তিনি করুণাবশতঃ ইস্রায়েলীয়দের পক্ষ গ্রহণ করেছিলেন। অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন বলে প্রভু ইস্রায়েলীয়দের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেন নি।
24 অরামের রাজা হসায়েলের মৃত্যু হলে বিন্হদদ সে জায়গায় নতুন রাজা হলেন। 25 মৃত্যুর আগে হসায়েল, যিহোয়াশ ও যিহোয়াহসের পিতার সঙ্গে যুদ্ধ করে বেশ কয়েকটা শহর জিতে নিয়েছিলেন। যিহোয়াশ, হসায়েলের পুত্র বিন্হদদের কাছ থেকে সেগুলো পুনরুদ্ধার করলেন। যিহোয়াশ বিন্হদদকে তিনবার যুদ্ধে পরাজিত করে, ইস্রায়েলের হৃত শহরগুলি পুনর্দখল করেন।
যিহূদায় অমৎসিয়র শাসনকার্য শুরু
14 যিহোয়াহসের পুত্র যিহোয়াশের ইস্রায়েলে শাসনের দ্বিতীয় বছরে যিহূদায় রাজা যোয়াশের পুত্র অমৎসিয় নতুন রাজা হলেন। 2 পঁচিশ বছর বয়সে যিহূদার রাজা হবার পর অমৎসিয় মোট 29 বছর জেরুশালেমে শাসন করেন। অমৎসিয়ের মা ছিলেন জেরুশালেমের যিহোয়দ্দিন। 3 অমৎসিয় প্রভুর নির্দেশিত পথে চললেও তিনি দায়ূদের মত একনিষ্ঠভাবে ঈশ্বরের সেবা করেন নি। তাঁর পিতা যিহোয়াশ যা যা করতেন, অমৎসিয়ও তাই করতেন। 4 তিনি মূর্ত্তির উচ্চস্থানগুলি ধ্বংস করেন নি। এমনকি তাঁর রাজত্ব কালেও সেখানে লোকেরা বলিদান করত ও ধুপধূনো দিত।
5 তাঁর সমস্ত বিরোধীদের সরিয়ে দিয়ে অমৎসিয় রাজ্যের ওপর কড়া নিয়ন্ত্রণ রাখলেন। যে সমস্ত আধিকারিকরা তাঁর পিতাকে হত্যা করেছিল, অমৎসিয় তাদের প্রাণদণ্ড দিয়েছিলেন। 6 কিন্তু এই সমস্ত ঘাতকদের হত্যা করলেও তিনি তাদের সন্তানদের নিষ্কৃতি দিয়েছিলেন কারণ মোশির বিধিপুস্তকে লিখিত আছে: “সন্তানের অপরাধের জন্য পিতামাতাকে যেমন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না, তেমনই পিতামাতার অপরাধের জন্য কোন সন্তানের মৃত্যুদণ্ড দেওয়াও ঠিক নয়। কোন ব্যক্তিকে শুধুমাত্র তার কৃত কোন অপরাধের জন্যই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে।”
7 অমৎসিয় লবণ উপত্যকায় 10,000 ইদোমীয় সেনাকে হত্যা করেন। তিনি যুদ্ধ করে সেলা দখল করে, সেলার নাম পাল্টে “যক্তেল” রাখেন। ঐ অঞ্চল এখনো পর্যন্ত এই নামেই পরিচিত।
অমৎসিয় যিহোরামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাইলেন
8 অমৎসিয় ইস্রায়েল-রাজ যেহূর পৌত্র, যিহোয়াহসের পুত্র যিহোরামের কাছে দূত পাঠিয়ে তাঁকে সম্মুখ সমরে আহবান করলেন।
9 ইস্রায়েলের রাজা যিহোরাম তখন যিহূদার রাজা অমৎসিয়কে খবর পাঠালেন, “লিবানোনের কাঁটাঝোপ লিবানোনের বটগাছকে বলেছিল, ‘আমার ছেলের বিয়ের জন্য তোমার মেয়েকে দাও।’ কিন্তু সে সময়ে একটা বুনো জন্তু যাবার পথে লিবানোনের কাঁটাঝোপকে মাড়িয়ে চলে যায়! 10 ইদোমকে যুদ্ধে হারাবার পর তোমার বড় গর্ব হয়েছে দেখছি! বেশি বাড় না বেড়ে চুপচাপ বাড়িতে বসে থাকো। নিজের বিপদ ডেকে এনো না কারণ, তাহলে তুমি একা নও, তোমার সঙ্গে সঙ্গে যিহূদারও সর্বনাশ হবে।”
11 কিন্তু অমৎসিয় যিহোয়াশের সতর্কবাণীর কোন গুরুত্ব দিলেন না। অবশেষে ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ যিহূদার রাজা অমৎসিয়র সঙ্গে যুদ্ধ করতে বৈৎশেমশে গেলেন। 12 যুদ্ধে ইস্রায়েল যিহূদাকে হারিয়ে দিলে, যিহূদার সমস্ত লোক বাড়িতে পালিয়ে গেল। 13 বৈৎ-শেমশে ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ যিহূদার রাজা যোয়াশের পুত্র অমৎসিয়কে বন্দী করলেন। তিনি অমৎসিয়কে জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে জেরুশালেমের প্রাচীরের ইফ্রয়িমের দ্বার থেকে কোণের দরজা পর্যন্ত জেরুশালেমের 600 ফুট দেওয়াল ভেঙে 14 প্রভুর মন্দিরের যাবতীয় সোনা, রূপো, বাসন, দুর্মূল্য জিনিসপত্র লুঠ করে নিয়ে যান। এরপর আরো অনেককে বন্দী করে যিহোয়াশ শমরিয়ায় ফিরে গেলেন।
15 যিহোয়াশ যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন এবং অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে তাঁর যুদ্ধের বিবরণ সব কিছুই ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। 16 যিহোয়াশের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শমরিয়ায় সমাধিস্থ করা হয়। এরপর তাঁর পুত্র যারবিয়াম নতুন রাজা হলেন।
অমৎসিয়ের মৃত্যু
17 যিহূদারাজ যোয়াশের পুত্র অমৎসিয়, ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের পুত্র যিহোয়াশের মৃত্যুর পর আরো 15 বছর বেঁচে ছিলেন। 18 অমৎসিয় যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সমস্তই যিহূদার রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। 19 জেরুশালেমের লোকরা অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করলে তিনি লাখীশে পালিয়ে যান। লোকরা তাঁকে লাখীশেই হত্যা করে। 20 লোকরা ঘোড়ার পিঠে অমৎসিয়ের মৃতদেহ নিয়ে এসে দায়ূদ নগরীতে তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করে।
অসরিয়ের যিহূদার ওপর শাসনকাল শুরু
21 যিহূদার সবাই মিলে তখন অসরিয়কে নতুন রাজা বানালেন। সে সময় অসরিয়ের বয়স ছিল মাত্র 16 বছর। 22 অর্থাৎ রাজা অমৎসিয়ের মৃত্যু হলে নতুন রাজা হলেন অসরিয়। তিনি এলত্ শহর পুনর্দখল করে তা নতুন করে বানান।
ইস্রায়েলে দ্বিতীয় যারবিয়ামের শাসনকাল শুরু
23 যোয়াশের পুত্র অমৎসিয়ের যিহূদায় রাজত্বকালের 15তম বছরে ইস্রায়েলরাজ যিহোয়াশের পুত্র যারবিয়াম শমরিয়ায় নতুন রাজা হলেন। যারবিয়াম 41 বছর রাজত্ব করেছিলেন এবং 24 প্রভু যা কিছু বারণ করেছিলেন তিনি সেই সব করেন। তিনিও নবাটের পুত্র যারবিয়াম ইস্রায়েলের লোকদের যে সমস্ত পাপ আচরণে বাধ্য করেছিলেন তা বন্ধ করেন নি। 25 ইস্রায়েলের প্রভু, গাৎ-হেফরীয়, অমিত্তয়ের পুত্র, তাঁর দাস, ভাববাদী যোনাকে যেমন বলেছিলেন সে ভাবেই তিনি লেবো-হমাৎ থেকে মৃত সাগর পর্যন্ত ইস্রায়েলের ভূখণ্ড ফেরৎ নিয়েছিলেন। 26 প্রভু দেখলেন ইস্রায়েলীয়রা খুবই সমস্যায় পড়েছে। স্বাধীন বা পরাধীন এমন কেউই ছিল না যে ইস্রায়েলকে এই দুর্দশার হাত থেকে বাঁচাতে পারে। 27 কিন্তু প্রভু (তাও) একথা বলেন নি, যে তিনি পৃথিবী থেকে ইস্রায়েলের নাম মুছে দেবেন। তিনি যিহোয়াশের পুত্র যারবিয়ামকে ইস্রায়েলের লোকদের উদ্ধারের জন্য ব্যবহার করেছিলেন।
28 যারবিয়াম যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সব ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। এখানে যারবিয়াম কিভাবে যিহূদার কাছ থেকে দম্মেশক ও হমাৎ শহর দুটি ইস্রায়েলের জন্য পুনর্দখল করেন সে কথাও লেখা আছে। 29 যারবিয়ামের মৃত্যু হলে তাঁকে ইস্রায়েলের রাজাদের সঙ্গে, তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল। তাঁর মৃত্যুর পর তার পুত্র সখরিয় নতুন রাজা হলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International