Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Beginning

Read the Bible from start to finish, from Genesis to Revelation.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 রাজাবলি 10-11

শিবার রাণী শলোমনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন

10 শিবার রাণী লোকমুখে শলোমনের খ্যাতি ও প্রজ্ঞার কথা শুনতে পেয়ে তাঁকে কঠিন প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা করতে এলেন। তিনি বহু দাস দাসীদের নিয়ে জেরুশালেমে উপস্থিত হলেন। তিনি অজস্র উটে করে নানাধরণের মশলাপাতি, অলঙ্কার ও সোনা নিয়ে এলেন এবং শলোমনের সঙ্গে দেখা করলেন। তারপর শলোমনকে সম্ভাব্য বহুবিধ কঠিন প্রশ্ন করলেন। শলোমনের কাছে সেই সব প্রশ্ন খুব একটা কঠিন ছিল না। তিনি তাঁর সব প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন। তখন শিবার রাণী উপলব্ধি করলেন যে সত্যিই শলোমন খুবই জ্ঞানী। তিনি তাঁর সুন্দর রাজপ্রাসাদটিও দেখলেন, তাঁর ভোজসভার বিলাসবহুল আয়োজন, সেনাপতিদের বৈঠক, প্রাসাদের ভৃত্য ও তাদের বহুমূল্য পোশাক, মন্দিরের অনুষ্ঠান ও বলিদানের রকম সকম দেখে বিস্ময়ে বাকরহিত হয়ে গেলেন।

তিনি তখন রাজা শলোমনকে বললেন, “আমি আমার নিজের দেশে বসে আপনার বুদ্ধিমত্তা ও কীর্তিকলাপের বহু খ্যাতি শুনেছিলাম। এখন দেখছি তার এক কণাও মিথ্যা নয়। আমি নিজের চোখে না দেখা পর্যন্ত এসব কথা বিশ্বাস করি নি কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি, লোক-মুখে যা শুনেছিলাম আপনার বুদ্ধিমত্তা ও সম্পদ তার চেয়েও অনেক বেশী। সত্যিই আপনার লোকরা ও ভৃত্যরা খুবই ভাগ্যবান কারণ তারা প্রতিদিন আপনার সেবা করতে পায় ও আপনার সান্নিধ্যে থেকে আপনার জ্ঞানগর্ভ কথা শুনতে পায়। প্রভু, আপনার ঈশ্বরকে প্রশংসা করুন। তিনি নিশ্চয়ই আপনার প্রতি সন্তুষ্ট, তাই আপনাকে ইস্রায়েলের রাজপদে অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রভু ঈশ্বর ইস্রায়েলকে ভালোবাসেন বলেই আপনাকে এদেশের রাজা করেছেন। আপনি বিধি মেনে নিরপেক্ষ ভাবে প্রজাদের শাসন করেন।”

10 এরপর শিবার রাণী রাজা শলোমনকে প্রায় 9000 পাউণ্ড সোনা, বহু মশলাপাতি ও অলঙ্কার উপহার দিলেন। তিনি রাজাকে যে পরিমাণ মশলাপাতি দিয়েছিলেন তার পরিমাণ এতদিন পর্যন্ত ইস্রায়েলে যে মশলাপাতি প্রবেশ করেছিল তার চেয়েও বেশী।

11 এদিকে হীরমের নৌবহর ওফীর থেকে সোনা ছাড়াও বহু পরিমাণ কাঠ ও অলঙ্কার নিয়ে এসেছিল। 12 শলোমন সেই সব কাঠ দিয়ে রাজপ্রাসাদ ও মন্দিরের ঠেকা দেওয়া ছাড়াও মন্দিরের গায়কদের জন্য বীণা ও বাদ্যযন্ত্র বানিয়ে দিয়েছিলেন। তখনও পর্যন্ত ইস্রায়েলের কোনো লোকই সেই ধরণের কাঠ চোখে দেখেনি এবং সেই সময়ের পরও আর কেউ সে ধরণের কাঠ দেখেনি।

13 প্রথামতো রাজা শলোমন এক শাসক হিসেবে আরেক শাসক শিবার রাণীকে বহু উপহার দিলেন। এছাড়াও তিনি শিবার রাণীকে তিনি যা যা চেয়েছিলেন সবই দিয়েছিলেন। এরপর শিবার রাণী ও তাঁর দাসদাসীরা নিজের দেশে ফিরে গেলেন।

শলোমনের বিশাল ঐশ্বর্য্য

14 প্রতি বছর রাজা শলোমন প্রায় 79,920 পাউণ্ড সোনা পেতেন। 15 এছাড়াও তিনি তাঁর নৌ-বহরের ব্যবসায়ী ও বণিকদের কাছ থেকে আরবের শাসক ও প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের কাছে থেকে বহু পরিমাণে সোনা পেতেন।

16 রাজা শলোমন পেটানো সোনা দিয়ে 200টি বড় ঢাল বানিয়েছিলেন। প্রতি ঢালে প্রায় 15 পাউণ্ড করে সোনা ছিল। 17 তিনি পেটানো সোনা দিয়ে আরো 300টি ঢাল বানিয়েছিলেন; তার প্রত্যেক ঢালে 4 পাউণ্ড করে সোনা ছিল। এই ঢালগুলোকে তিনি “লিবানোনের জঙ্গল” নামের বাড়ীতে রেখেছিলেন।

18 রাজা শলোমন খাঁটি সোনায় মোড়া হাতির দাঁতের একটা বিশাল সিংহাসন বানিয়েছিলেন। 19 সেই সিংহাসনটায় দুটো ধাপ বেয়ে উঠতে হতো। সিংহাসনের পেছনের দিকটা ওপরে গোলাকার ছিল। বসার জায়গার দুধারেই ছিল হাতল লাগানো। আর দুদিকের হাতলের তলায় আঁকা ছিল সিংহের ছবি। 20 ওঠার সিঁড়ির ছটি ধাপের প্রত্যেকটার শেষেও একটা করে সিংহের মূর্ত্তি ছিল। আর কোনো দেশেই এধরণের রাজসিংহাসন ছিল না।

21 রাজা শলোমনের ব্যবহার্য্য সমস্ত পেয়ালা ও গ্লাস ছিল সোনায় বানানো। “লিবানোনের জঙ্গল” বাড়ির সমস্ত পাত্রও ছিল খাঁটি সোনার। রাজপ্রাসাদের কোন কিছুই রূপোর ছিল না। শলোমনের সময়ে চতুর্দিকে এতো বেশী সোনা ছিল যে লোকরা রূপোকে কোনো মূল্যবান ধাতু বলে মনেই করত না।

22 অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য রাজা শলোমনের বাণিজ্য তরী ছিল। এগুলো আসলে ছিল হীরমেরই জাহাজ। তিন বছর অন্তর এই সমস্ত জাহাজ সোনা, রূপা, হাতির দাঁত ও পশু পাখিতে ভর্ত্তি হয়ে ফিরে আসত।

23 শলোমন ছিলেন পৃথিবীর সব চেয়ে বড় রাজা। তিনি ছিলেন সব চেয়ে বেশী ধনী ও পণ্ডিত। 24 সব জায়গার লোকরাই শলোমনের দর্শন পেতে চাইতো, তারা শলোমনের ঈশ্বর প্রদত্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পেতে চাইতো এবং তাঁর কথা শুনতে চাইতো। 25 প্রতি বছর দূর দূরান্তের দেশ থেকে বহু লোক সোনা এবং রূপোর জিনিসপত্র, পোশাক পরিচ্ছদ, অস্ত্রশস্ত্র, মশলাপাতি, ঘোড়া এবং খচ্চর উপহার নিয়ে রাজা শলোমনের সঙ্গে দেখা করতে আসতো।

26 সে জন্য শলোমনের অনেক রথ ও ঘোড়া ছিল। তাঁর কাছে 1400 রথ ও 12,000 ঘোড়া ছিল। আলাদা শহর বানিয়ে সেই সব শহরে এই রথগুলো রাখা থাকত আর জেরুশালেমে তাঁর নিজের কাছে শলোমন অল্প কিছু রথ রেখে দিয়েছিলেন। 27 ইস্রায়েলকে তিনি সম্পদে ও ঐশ্বর্য্যে ভরে দিয়েছিলেন। জেরুশালেম শহরে রূপো ছিল পাথরের মতোই সাধারণ। এরস গাছও ছিল পাহাড়ি গাছগাছালির মতো সহজলভ্য। 28 শলোমন মিশর ও কূ থেকে ঘোড়া এনেছিলেন। তাঁর বণিকরা কূ থেকে কিনে এই সমস্ত ঘোড়া ইস্রায়েলে নিয়ে আসতো। 29 মিশর থেকে আনা একটা রথের দাম পড়ত 15 পাউণ্ড রূপোর সমান। আর ঘোড়ার দাম পড়ত 3 3/4 পাউণ্ড রূপোর সমান। শলোমন হিত্তীয় ও অরামীয় রাজাদের কাছে ঘোড়া ও রথ বিক্রি করতেন।

শলোমন ও তাঁর বহু পত্নী

11 রাজা শলোমন নারীদের সান্নিধ্য পছন্দ করতেন। তিনি এমন অনেক মহিলাকে ভালোবেসে ছিলেন যারা ইস্রায়েলের বাসিন্দা নয়। মিশরের ফরৌণের কন্যা ছাড়াও শলোমন হিত্তীয়, মোয়াবীয়া, অম্মোনীয়া, ইদোমীয়া, সীদোনীয়া প্রভৃতি অনেক বিজাতীয় রমণীকে ভালোবাসতেন। অতীতে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, “তোমরা অন্য দেশের লোকদের বিয়ে করবে না, কারণ তাহলে ওরা তাদের মূর্ত্তিকে পূজা করতে তোমাদের প্রভাবিত করবে।” কিন্তু তা সত্ত্বেও শলোমন বিজাতীয় রমনীদের প্রেমে পড়েন। শলোমনের 700 জন স্ত্রী ছিল। (যারা সকলেই অন্যান্য দেশের নেতাদের কন্যা।) এছাড়াও তাঁর 300 জন ক্রীতদাসী উপপত্নী ছিল। শলোমনের পত্নীরা তাঁকে ঈশ্বর বিমুখ করে তুলেছিল। শলোমনের তখন বয়স হয়েছিল, স্ত্রীদের পাল্লায় পড়ে তিনি অন্যান্য মূর্ত্তির পূজা করতে শুরু করেন। তাঁর পিতা রাজা দায়ূদের মতো একনিষ্ঠ ভাবে শলোমন শেষ পর্যন্ত প্রভুকে অনুসরণ করেন নি। শলোমন সীদোনীয় দেবী অষ্টোরত এবং অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য পাষাণ মূর্ত্তি মিল্কমের অনুগত হন। অতএব শলোমন প্রভুর সামনে ভুল কাজ করলেন। তিনি পুরোপুরি প্রভুর শরণাগত হননি যে ভাবে তাঁর পিতা দায়ূদ হয়েছিলেন।

এমনকি তিনি মোয়াবীয়দের ঘৃণ্য মূর্ত্তি কমোশের আরাধনার জন্য জেরুশালেমের পাশেই পাহাড়ে একটা জায়গা বানিয়ে দিয়েছিলেন। ঐ একই পাহাড়ে তিনি ঐ ভয়ংকর মূর্ত্তির আরাধনার জন্যও একটি জায়গা বানিয়ে ছিলেন। এইভাবে রাজা শলোমন তাঁর প্রত্যেকটি ভিন দেশী স্ত্রীর আরাধ্য মূর্ত্তির জন্য একটি করে পূজোর জায়গা করে দেন, আর তাঁর স্ত্রীরা ধূপধূনো দিয়ে সেই সব জায়গায় তাদের মূর্ত্তিসমূহের কাছে বলিদান করত।

এইভাবে রাজা শলোমন প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। সুতরাং প্রভু শলোমনের প্রতি খুব ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি দুবার শলোমনকে দেখা দিয়ে, 10 তাঁকে অন্য মূর্ত্তির পূজা করতে নিষেধ করা সত্ত্বেও শলোমন সেই নিষেধ মানেন নি। 11-12 তখন প্রভু শলোমনকে বললেন, “শলোমন, তুমি চুক্তি ভঙ্গ করেছ। তুমি আমার আদেশ মেনে চলো নি। আমিও কথা দিলাম তোমার রাজত্ব তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেব এবং আমি তা তোমার কোন একটি ভৃত্যের হাতে তুলে দেব। কিন্তু যেহেতু আমি তোমার পিতা দায়ূদকে ভালোবাসতাম আমি তোমার জীবদ্দশায় তোমার রাজ্য তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেব না। তোমার সন্তান রাজা না হওয়া পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করব। আর তারপর আমি তার কাছ থেকে এই রাজত্ব কেড়ে নেব। 13 তবে আমি তার কাছে থেকে গোটা রাজত্ব কেড়ে নেব না, তার শাসন করার জন্য একটি পরিবারগোষ্ঠী রেখে দেব। দায়ূদের কথা ও জেরুশালেমের কথা ভেবেই আমি এই অনুগ্রহ করব। কারণ দায়ূদ আমার পরম অনুগত সেবক ছিল। আর তাছাড়া এই জেরুশালেম শহরকে আমি নিজেই বেছে নিয়েছিলাম।”

শলোমনের শত্রুপক্ষ

14 সে সময় প্রভু ইদোমীয় হদদকে শলোমনের শত্রু করে তুললেন। হদদ ছিলো ইদোমের রাজপরিবারের সন্তান। 15 এক সময় দায়ূদ ইদোমকে পরাজিত করেছিলেন। তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধান যোয়াব তখন ইদোমে নিহতদের কবর দিতে যান। সে সময় ইদোমে অবশিষ্ট যারা জীবিত ছিল যোয়াব তাদেরও হত্যা করেছিলেন। 16 যোয়াব ও ইস্রায়েলের লোকরা সে সময়ে 6 মাস ইদোমে ছিলেন। এইসময়ে তারা সমস্ত ইদোমীয়দের হত্যা করেন। 17 সে সময়ে হদদ ছিল নেহাতই শিশু। সে মিশরে পালিয়ে যায়। তার পিতার কিছু ভৃত্যও তখন তার সঙ্গে গিয়েছিল। 18 মিদিয়ন পার হয়ে তারা পারণে গিয়ে পৌঁছলে আরো কিছু লোক তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। তারপর এই গোটা দলটি মিশরে গিয়ে ফরৌণের সাহায্য প্রার্থনা করল। ফরৌণ হদদকে একটা বাড়ি ও কিছু জমি ছাড়াও তার খাবার-দাবার দেখাশোনার ব্যবস্থা করেন।

19 ফরৌণ হদদকে খুবই পছন্দ করতেন। তিনি তাঁর শালীর সঙ্গে হদদের বিয়ে দিয়েছিলেন। (রাণী তহপনেষ ফরৌণের স্ত্রী ছিলেন।) 20 ফরৌণের স্ত্রী তহপনেষের বোনকে হদদ বিয়ে করার পর গনুবৎ নামে তার একটি পুত্র হয়। রাণী তহপনেষ গনুবৎকে ফরৌণের প্রাসাদে তাঁর নিজের সন্তানদের সঙ্গে মানুষ হতে দিয়েছিলেন।

21 এদিকে মিশরে থাকাকালীন হদদ দায়ূদের মৃত্যু সংবাদ পেল। সেনাপতি যোয়াবের মৃত্যুর খবরও তার কানে পৌঁছাল। তখন হদদ ফরৌণকে বলল, “আমাকে আমার নিজের দেশের বাড়িতে ফিরে যেতে দিন।”

22 কিন্তু ফরৌণ তার উত্তরে বললেন, “আমি তোমাকে এখানে তোমার যা কিছু প্রয়োজন তা দিয়েছি। তবু কেন তুমি তোমার নিজের দেশে ফিরে যেতে চাইছ?”

হদদ মিনতি করে বলল, “দয়া করে আমায় বাড়িতে ফিরতে দিন।”

23 ইলিয়াদার পুত্র রষোণকেও ঈশ্বর শলোমনের শত্রু করে তুলেছিলেন। রষোণ তার মনিব সোবার রাজা হদদেষরের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছিল। 24 দায়ূদ সোবার সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে হারানোর পর রষোণ কিছু লোকদের জোগাড় করে একটা ছোট সেনাবাহিনীর প্রধান হয়ে বসেন। এরপর রষোণ দম্মেশকে গিয়ে সেখানকার রাজা হন। 25 রষোণ অরামে রাজত্ব করতেন ও ইস্রায়েলের প্রতি তাঁর তীব্র বিদ্বেষ ছিল। সে কারণে শলোমনের জীবদ্দশায় রষোণ ইস্রায়েলের সঙ্গে শত্রুতা করেছিলেন। রষোণ ও হদদ দুজনেই ইস্রায়েলে নানান ঝামেলা সৃষ্টি করেছিলেন।

26 নবাটের পুত্র যারবিয়াম ছিল শলোমনের জনৈক ভৃত্য। সরেদানিবাসী যারবিয়াম ছিল ইফ্রয়িমীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোক। তার বিধবা মায়ের নাম ছিল সরূয়া। এই যারবিয়ামও রাজার বিপক্ষে যোগ দিয়েছিল।

27 এই হল সেই গল্প, কেন যারবিয়াম রাজার বিরুদ্ধে গেল। শলোমন তখন মিল্লো নির্মাণ করছিলেন এবং দায়ূদ, তাঁর পিতার নামে শহরের দেওয়াল গাঁথছিলেন। 28 যারবিয়াম যথেষ্ট শক্তসমর্থ ছিল এবং শলোমন দেখলেন যে তরুণটি একজন সুদক্ষ কর্মী। তখন তিনি যারবিয়ামকে যোষেফ পরিবারগোষ্ঠীর কর্মীদের অধ্যক্ষ করে দিলেন। 29 এক দিন যখন যারবিয়াম জেরুশালেম থেকে বাইরে যাচ্ছিল তখন শীলোনীয় ভাববাদী অহিয়ের সঙ্গে তার পথে দেখা হল। অহিয় একটি নতুন জামা পরেছিলেন।

30 সেই জনশূন্য প্রান্তরে অহিয় তাঁর নতুন জামাটিকে ছিঁড়ে বারোটি টুকরো করেন। 31 তারপর যারবিয়ামকে বললেন, “জামার 10টি টুকরো তোমার নিজের জন্য নাও। প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমি শলোমনের কাছ থেকে রাজ্য কেড়ে নিয়ে তোমায় 10টি পরিবারগোষ্ঠী দিয়ে দেব। 32 আমি দায়ূদের উত্তরপুরুষদের শুধুমাত্র একটি পরিবারগোষ্ঠীর ওপর শাসন করতে দেব। আমার পরমভক্ত দায়ূদ ও জেরুশালেমের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি এটুকু করব। ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর থেকে আমিই স্বয়ং জেরুশালেমকে বেছে নিয়েছিলাম। 33 আমি শলোমনের কাছ থেকে রাজত্ব কেড়ে নেব কারণ শলোমন আমার উপাসনা বন্ধ করেছে। শলোমন সীদোনীয়দের মূর্ত্তি অষ্টোরত, মোয়াবীয়দের মূর্ত্তি কমোশ ও আম্মোনীয়দের মিল্কমের আরাধনা করছে। শলোমন ভালো ও সঠিক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। সে আর এখন আমার বিধি ও আদেশ মেনে চলে না। ওর পিতা দায়ূদ যে ভাবে জীবনযাপন করেছিল শলোমন আর সে ভাবে জীবনযাপন করে না। 34 একারণেই আমি শলোমনের পরিবারের হাত থেকে রাজ্য কেড়ে নেব। কিন্তু আমার একনিষ্ঠ ভক্ত শলোমনের পিতা দায়ূদের কথা মনে রেখে শলোমনকে তার বাকী জীবনটুকু শাসক থাকতে দেব। 35 তবে তার পুত্রের হাত থেকে আমি অবশ্যই রাজত্ব নিয়ে নেব। আর তারপর তার থেকে দশটি পরিবারগোষ্ঠী যারবিয়াম তোমাকে শাসন করতে দেব। 36 শলোমনের সন্তান একটি পরিবারগোষ্ঠীর ওপর শাসন করবে। কারণ জেরুশালেমে যে শহরটি আমার নিজের বলে আমি বেছে নিয়েছিলাম সব সময়ই দায়ূদের কোনো উত্তরপুরুষ তা শাসন করবে। 37 কিন্তু, তা বাদে, আমি তোমায় তোমার চাহিদা মত আর সমস্ত কিছুরই ওপর শাসন করতে দেব। তুমি ইস্রায়েলের উত্তর রাজ্যগুলি শাসন করবে। 38 যদি তুমি সৎ‌ পথে থেকে আমার নির্দেশ মেনে চলো, তাহলেই আমি তোমার জন্য এইসব করব। তুমি যদি দায়ূদের মতো আমার বিধি ও আদেশ মেনে চলো তাহলে আমি তোমার পাশে থাকব এবং তোমার বংশকে রাজবংশে পরিণত করব, যেমন আমি দায়ূদের জন্য করেছিলাম। ইস্রায়েল আমি তোমার হাতে তুলে দেব। 39 শলোমনের কৃতকার্যের জন্যই আমি দায়ূদের বংশধরদের শাস্তি দেব, তবে অবশ্যই তা বরাবরের জন্য নয়।’”

শলোমনের মৃত্যু

40 শলোমন যারবিয়ামকে হত্যা করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু যারবিয়াম তখন মিশরে পালিয়ে গেল এবং শলোমনের মৃত্যু পর্যন্ত যারবিয়াম মিশররাজ শীশকের আশ্রয়ে ছিল।

41 শলোমন তাঁর শাসনকালে বহু বড় বড় কাজ করেছিলেন। সে সব কথা শলোমনের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। 42 শলোমন জেরুশালেমের অন্তর্গত ইস্রায়েলে 40 বছর রাজত্ব করেছিলেন। 43 তারপর তিনি যখন মারা গেলেন তাঁকে দায়ূদ শহরে সমাধিস্থ করা হল। এরপর রাজা হলেন শলোমনের পুত্র রহবিয়াম।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International