Beginning
পলেষ্টীয়রা যুদ্ধের জন্য তৈরী হল
28 পরে পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সংগ্রহ করতে লাগল। আখীশ দায়ূদকে বললেন, “লোকদের নিয়ে তুমি আমার সঙ্গে ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যাবে, বুঝতে পেরেছ?”
2 দায়ূদ বললেন, “নিশ্চয়ই, দেখবেন আমি কি করি।”
আখীশ বললেন, “বেশ! তুমি হবে আমার দেহরক্ষী। সবসময় তুমি আমাকে রক্ষা করবে।”
ঐন্-দোরে শৌল এবং একজন স্ত্রীলোক
3 শমূয়েল মারা গেল। তার মৃত্যুতে ইস্রায়েলীয়রা সকলেই শোক প্রকাশ করল। তারা তাকে তার নিজের দেশ রামায় কবর দিল।
যারা প্রেতাত্মা নামায় আর ভবিষ্যৎ বলতে পারে তাদের সকলকে শৌল বলপূর্বক ইস্রায়েল থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন।
4 পলেষ্টীয়রা যুদ্ধের জন্য তৈরী হল। তারা শূনেমে তাঁবু খাটাল। ইস্রায়েলীয়দের নিয়ে শৌল গিলবোয় তাঁবু খাটালেন। 5 পলেষ্টীয় সৈন্যদের দেখে শৌল ভয় পেয়ে গেলেন। ভয়ে তাঁর বুক কাঁপতে লাগলো। 6 শৌল, প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। কিন্তু প্রভু সে প্রার্থনার কোন উত্তর দিলেন না। স্বপ্নের মধ্যেও ঈশ্বর শৌলকে কিছু বললেন না। ঊরীমের দ্বারাও ঈশ্বর উত্তর দিলেন না। কোনো ভাববাদীর মাধ্যমেও ঈশ্বর শৌলের উদ্দেশ্যে কোন বাণী শোনালেন না। 7 অবশেষে, শৌল তাঁর আধিকারিকদের বললেন, “একজন স্ত্রীলোকের খোঁজ কর যে একজন প্রেতাত্মার মাধ্যম। তাকে জিজ্ঞেস করব যুদ্ধে কি হতে পারে।” তারা বলল, “ঐন্-দোরে এরকম একজন আছে।”
8 শৌল নানারকম পোশাকে সাজলেন যাতে কেউ তাঁকে চিনতে না পারে। সেই রাত্রে শৌল দুজন লোক নিয়ে সেই স্ত্রীলোকটিকে দেখতে গেলেন। তারপর তার দেখা পেয়ে শৌল বললেন, “আমি চাই তুমি একা আত্মাকে উঠিয়ে আন। সে আমায় ভবিষ্যতে কি হবে না হবে তা বলবে। আমি যার নাম বলব তুমি তাকে ডেকে আনবে।”
9 সেই স্ত্রীলোকটি বলল, “শৌল যা করেছেন তার সবই আপনি জানেন। তিনি তো ইস্রায়েলের থেকে সব জ্যোতিষী আর ভূত নামানো মাধ্যমদের জোর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আপনি আমায় আসলে ফাঁদে ফেলে মেরে ফেলতে চাইছেন।”
10 শৌল প্রভুর নামে শপথ করে সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, “প্রভুর দিব্য দিয়ে বলছি যে তুমি এর জন্য শাস্তি ভোগ করবে না।”
11 স্ত্রীলোকটি বলল, “আপনার জন্য কাকে এনে দিতে হবে?”
শৌল বললেন, “শমূয়েলকে উঠিয়ে আন।”
12 তাই হল। স্ত্রীলোকটি শমূয়েলকে দেখতে পেয়ে চিৎকার করে উঠল। সে শৌলকে বলল, “তুমি আমাকে প্রতারণা করেছ, তুমিই তো শৌল।”
13 রাজা সেই স্ত্রীলোকটিকে বলল, “ভয় পেও না। তুমি কি দেখছ?”
স্ত্রীলোকটি বলল, “আমি দেখছি একটা আত্মা ভূমি থেকে উঠে আসছে।”[a]
14 শৌল বলল, “তাকে কার মতো দেখতে?” স্ত্রীলোকটি বলল, “তাকে দেখতে বিশেষ পোশাক পরা একজন বৃদ্ধলোকের মতো।”
শৌল বুঝতে পারলেন উনি হচ্ছেন শমূয়েল। শৌল মাথা নোয়ালেন। মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লেন। 15 শমূয়েল শৌলকে বলল, “তুমি কেন আমাকে বিরক্ত করছ? কেন আমাকে তুলে আনলে?”
শৌল বললেন, “আমি বিপদে পড়েছি। পলেষ্টীয়রা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছে, কিন্তু ঈশ্বর আমায় ত্যাগ করেছেন। তিনি আমার ডাকে আর সাড়া দিচ্ছেন না। কোনো ভাববাদী বা কোনো স্বপ্নের মধ্যে দিয়েও তিনি উত্তর দিচ্ছেন না। তাই আমি আপনাকে ডেকেছি। আপনি বলুন আমাকে কি করতে হবে?”
16 শমূয়েল বললেন, “প্রভু তোমায় ত্যাগ করেছেন। তিনি এখন তোমার প্রতিবেশী (দায়ূদের) কাছে। তবে কেন আমায় জ্বালাতন করছ? 17 আমার মাধ্যমে প্রভু তোমাকে জানিয়েছেন তিনি কি করবেন। এখন তিনি তাঁর কথা অনুযায়ী কাজ করছেন। তিনি তোমার হাত থেকে রাজত্ব কেড়ে নিচ্ছেন। তিনি তোমার একজন প্রতিবেশীকে সেই রাজ্য সমর্পণ করছেন। সেই প্রতিবেশীর নাম দায়ূদ। 18 তুমি প্রভুর কথা মান্য করো নি। তুমি অমালেকীয়দের ধ্বংস করো নি এবং তাদের দেখাও নি যে প্রভু তাদের ওপর কত ক্রুদ্ধ ছিলেন। তাই তিনি তোমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করছেন। 19 তাঁর ইচ্ছাতেই পলেষ্টীয়রা তোমাকে আর ইস্রায়েলীয় যোদ্ধাদের পরাজিত করবে। আগামীকাল তুমি আর তোমার পুত্ররা এখানে আমার কাছে আসবে।”
20 শৌল সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে গেলেন। তিনি শুয়ে রইলেন। শমূয়েলের কথায় তিনি বেশ ভয় পেয়েছিলেন। তাছাড়া সারাদিন সারারাত কিছু না খেয়ে তিনি খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।
21 স্ত্রীলোকটি শৌলের কাছে এসে দেখল শৌল সত্যিই বেশ ভয় পেয়ে গেছেন। সে তাকে বলল, “শুনুন আমি আপনার দাসী। আপনার আদেশ আমি পালন করেছি। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনার কথা আমি শুনেছি। 22 এখন দয়া করে আমার কথা শুনুন। আমি আপনাকে কিছু খেতে দিচ্ছি। আপনি খেয়ে শক্তি সঞ্চয় করুন যাতে পথে চলতে ফিরতে পারেন।”
23 কিন্তু শৌল কথা শুনলেন না। তিনি বললেন, “আমি খাব না।”
এমনকি শৌলের আধিকারিকরাও স্ত্রীলোকটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে শৌলকে খাবার জন্যে মিনতি করতে লাগল। শেষ পর্যন্ত শৌল তাদের কথা শুনলেন। তিনি মাটি থেকে উঠে বিছানার ওপর বসলেন। 24 স্ত্রীলোকটির বাড়িতে একটি মোটাসোটা বাছুর ছিল। সে চট্পট্ বাছুরটিকে জবাই করল। কিছু ময়দা খামির না দিয়ে মেখে হাতে লেচি তৈরী করে সেঁকে ফেলল। 25 শৌল ও কর্মচারীদের সে খেতে দিল। তারা খাওয়া দাওয়া করে সেই রাত্রে উঠে বেরিয়ে পড়ল।
“দায়ূদকে সঙ্গে নিতে আপত্তি”
29 পলেষ্টীয়রা অফেকে সৈন্য জড়ো করল। ইস্রায়েলীয়রা তাঁবু গাড়ল যিষ্রিয়েল ঝর্ণার পাশে। 2 পলেষ্টীয় শাসকরা 100 জন সৈন্য এবং 1000 জন সৈন্যের এক এক দল নিয়ে কুচকাওয়াজ করে অগ্রসর হলেন। পেছনে পেছনে আখীশের সঙ্গে রইল দায়ূদ ও তার লোকরা। 3 পলেষ্টীয় সেনাপতিরা জিজ্ঞাসা করল, “এই ইব্রীয়রা এখানে কি করছে?”
আখীশ বললেন, “এ হচ্ছে দায়ূদ, শৌলের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক। আমার সঙ্গে ও অনেকদিন রয়েছে। শৌলকে ছেড়ে দেবার পর থেকে যতদিন দায়ূদ আমার কাছে রয়েছে ততদিন ওর মধ্যে খারাপ কিছু দেখি নি।”
4 তবুও পলেষ্টীয় সেনাপতিরা আখীশের ওপর রেগে গেল। তারা বলল, “দায়ূদকে ফেরত পাঠিয়ে দাও। ওকে যে শহরে তুমি থাকতে দিয়েছ, সেখানে ওকে ফিরে যেতেই হবে। আমাদের সঙ্গে সে যুদ্ধে যাবে না। ওকে রাখা মানে একজন শত্রুকেই রাখা। সে আমাদের সৈন্যদের মেরে তার রাজা শৌলকেই খুশী করবে। 5 দায়ূদকে নিয়ে ইস্রায়েলীয়রা এই গান গেয়ে নাচানাচি করে:
‘শৌল মেরেছে শত্রু হাজারে হাজারে।
দায়ূদ মেরেছে অযুতে অযুতে!’”
6 তাই দায়ূদকে ডেকে আখীশ বললেন, “প্রভুর অস্তিত্বের মতোই নিশ্চিত যে তুমি আমার অনুগত। তোমাকে আমার সৈন্যদের মধ্যে রাখলে আমি খুশি হতাম। যেদিন থেকে তুমি আমার কাছে, আমি তোমার কোন অন্যায় দেখি নি। কিন্তু পলেষ্টীয় শাসকরা তোমাকে সমর্থন করে নি। 7 তুমি ফিরে যাও। পলেষ্টীয় রাজাদের বিরুদ্ধে তুমি কিছু করো না।”
8 দায়ূদ বললেন, “আমি কি এমন অন্যায় করেছি? আজ পর্যন্ত যতদিন আপনার সামনে আছি, আপনি কি এই দাসের কোন দোষ পেয়েছেন? তবে কেন আমার মনিব মহারাজের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে দেবেন না?”
9 আখীশ উত্তর দিলেন, “আমি তোমায় একজন ভালো মানুষ হিসাবে গণ্য করি। তুমি একজন ঈশ্বরের দূতের মতো। কিন্তু কি করব, পলেষ্টীয় সেনাপতিরা বলছে, ‘দায়ূদ আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবে না।’ 10 খুব সকালে তুমি লোকদের নিয়ে যে শহর আমি তোমাকে দিয়েছি সেই শহরে ফিরে যাও। সেনাপতিরা তোমার নামে যেসব নিন্দা করেছে সেসবে কান দিও না। তুমি ভাল লোক। তাই সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তুমি চলে যাবে।”
11 অবশেষে দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা খুব সকালে পলেষ্টীয়দের দেশে ফিরে গেল এবং পলেষ্টীয়রা যিষ্রিয়েল পর্যন্ত গেল।
অমালেকীয়রা সিক্লগ আক্রমণ করল
30 তৃতীয় দিনে দায়ূদ সিক্লগে উপস্থিত হলেন। সেখানে গিয়ে তারা দেখল অমালেকীয়রা সিক্লগ শহর আক্রমণ করেছে। তারা নেগেভ অঞ্চলে হানা দিয়েছিল। সিক্লগ শহর তারা পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিল। 2 সিক্লগের স্ত্রীলোকদের তারা বন্দী হিসাবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। যুবক বৃদ্ধ সকলকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তাদের কাউকে হত্যা করে নি।
3 দায়ূদ লোকদের সঙ্গে নিয়ে সিক্লগে এসে দেখলেন শহরটা দাউ দাউ করে জ্বলছে। তাদের স্ত্রীদের, ছেলেমেয়ে সকলকেই অমালেকীয়রা ধরে নিয়ে গেছে। 4 দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে একেবারে কাহিল হয়ে পড়ল। শেষে দুর্বলতায় আর চিৎকার করতে পারল না। 5 অমালেকীয়রা দায়ূদের দুই স্ত্রীকেই, যিষ্রিয়েলীয় অহীনোয়ম আর নাবলের বিধবা অবীগলকে, ধরে নিয়ে গিয়েছিল।
6 সব সৈন্যরা দুঃখে আর রাগে অধীর হয়ে পড়েছিল, কারণ তাদের ছেলে মেয়েদের যুদ্ধ বন্দী হিসাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাই তারা দায়ূদকে আক্রমণ করবার ও পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবার সিদ্ধান্ত নিল। দায়ূদ এসব শুনে মুষড়ে পড়লেন। কিন্তু প্রভু ঈশ্বরেই দায়ূদ তাঁর শক্তি খুঁজে পেলেন। 7 দায়ূদ যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “এফোদটি এনে দাও” এবং অবিয়াথর দায়ূদকে সেটা এনে দিলেন।
8 তারপর দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, “যারা আমাদের ছেলেমেয়েদের ধরে নিয়ে গেছে, আমি কি তাদের পিছু নেব? আমি কি তাদের ধরতে পারব?”
প্রভু বললেন, “যাও ওদের পিছু নাও। তুমি ওদের ধরতে পারবে। তুমি তোমার সকল পরিবারগুলিকে রক্ষা করতে পারবে।”
দায়ূদ একজন মিশরীয় ক্রীতদাসকে দেখতে পেলেন
9-10 দায়ূদ 600 জন লোক নিয়ে বিষোর স্রোতের কাছে পৌঁছলেন। সেখানে তাঁর লোকদের প্রায় 200 জন থাকল। তারা খুব দুর্বল আর ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। তারা আর চলতে পারছিল না। তাই 400 জন পুরুষ নিয়ে দায়ূদ অমালেকীয়দের তাড়া করলেন।
11 দায়ূদের লোকরা মাঠের মধ্যে একজন মিশরীয়কে দেখতে পেল। তারা তাকে দায়ূদের কাছে নিয়ে এসে জল আর কিছু খাবার দিল। 12 ডুমুরের পিঠে আর দুমুঠো কিস্মিস্ ওকে খেতে দিল। খাওয়া দাওয়ার পর সে একটু ভাল বোধ করল। তিনদিন তিনরাত সে কোন কিছু খেতে পায় নি বা পান করতে পায় নি।
13 মিশরীয় লোকটাকে দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “কে তোমার মনিব? কোথা থেকে তুমি আসছ?”
লোকটি বলল, “আমি একজন মিশরীয়। অমালেকের ক্রীতদাস। তিনদিন আগে আমি অসুস্থ হওয়ায় আমার মনিব আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। 14 আমরা নেগেভ আক্রমণ করেছিলাম। ওখানে করেথীয়রা থাকে। আমরা যিহূদা আর নেগেভ অঞ্চল আক্রমণ করেছিলাম। নেগেভে কালেবের লোকরা থাকে। আমরা সিক্লগও পুড়িয়ে দিয়েছিলাম।”
15 দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যারা আমাদের পরিবারগুলিকে নিয়ে নিয়েছে তুমি কি তাদের কাছে আমাদের নিয়ে যাবে?”
মিশরীয় লোকটি বলল, “যদি ঈশ্বরের কাছে প্রতিশ্রুতি করো যে তুমি আমায় হত্যা করবে না বা আমাকে আমার মনিবের কাছে ফিরিয়ে দেবে না, তাহলে আমি তোমাকে সাহায্য করবো।”
দায়ূদ অমালেকীয়দের হারিয়ে দিলেন
16 মিশরীয় লোকটি দায়ূদকে অমালেকীয়দের কাছে পৌঁছে দিল। সেই সময় তারা মাটিতে চারিদিকে ছড়িয়ে গড়াগড়ি দিচ্ছিল, খাওয়া দাওয়া ও পান করছিল। পলেষ্টীয়দের দেশ আর যিহূদা থেকে যা লুঠপাট করে এনেছিল সে সব নিয়ে ওরা ফূর্তি করছিল। 17 দায়ূদ তাদের আক্রমণ করে হত্যা করলেন। সূর্যোদয় থেকে পরদিন সন্ধ্যে পর্যন্ত তারা যুদ্ধ করলো। 400 জন অমালেক যুবক ঝাঁপ দিয়ে, উটে চড়ে পালিয়ে গেল। বাকীরা সকলে নিহত হল।
18 অমালেকীয়রা যা যা নিয়েছিল দায়ূদ তার সব ফিরে পেলেন। তিনি তাঁর দুই স্ত্রীও ফিরে গেলেন। 19 কিছুই খোয়া যায় নি। শিশু বৃদ্ধ সকলকেই ফিরে পাওয়া গেল। তারা তাদের সব ছেলে মেয়েদের এবং তাদের দামী জিনিসপত্র সব ফিরে পেল। দায়ূদ সব ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। 20 দায়ূদ সমস্ত মেষপাল ও গো-পাল নিলেন। দায়ূদের লোকরা এইসব পশুকে আগে আগে চালাল। দায়ূদের লোকরা বলল, “এইসব হচ্ছে দায়ূদের পুরস্কার।”
সকলে সমানভাবে সব কিছু পাবে
21 বিষোর স্রোতের ধারে যে 200 জন থেকে গিয়েছিল তাদের কাছে দায়ূদ এলেন। এরা খুব ক্লান্ত আর দুর্বল বলে দায়ূদের সঙ্গে যেতে পারে নি। তারা দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে দেখা করতে এল। তারা কাছে আসতেই বিষোর স্রোতের ধারের লোকরা অভিবাদন জানাল। 22 কিন্তু দায়ূদের লোকদের মধ্যে দুষ্ট লোকও ছিল। তারা ঝামেলা বাধাত। তারা বলল, “এই 200 জন লোক আমাদের সঙ্গে আসে নি। তাই এদের আমরা যা এনেছি তার ভাগ দেব না। এরা শুধু নিজেদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের ফেরত পাবে।”
23 দায়ূদ বললেন, “ভাইসব, এইরকম কাজ করা ঠিক নয়। প্রভু আমাদের কি দিয়েছেন একবার ভেবে দেখো। তিনি আমাদের বিরুদ্ধে আসা শত্রুদের হারিয়ে দিয়েছেন। 24 তোমাদের কথা কেউ শুনবে না। যারা দ্রব্যসামগ্রী আগলেছিল আর যারা যুদ্ধে যোগ দিয়েছিল সকলেই সমান দাবিদার। প্রত্যেকেই সমান ভাগ পাবে।” 25 দায়ূদ ইস্রায়েলের জন্য এই বিধি ও শাসন স্থির করলেন। এই বিধান আজও চালু আছে।
26 দায়ূদ সিক্লগে এসে পৌঁছালেন। অমালেকীয়দের কাছ থেকে পাওয়া কিছু জিনিসপত্র তাঁর বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। এরা সব যিহূদার দলপতি। দায়ূদ বললেন, “তোমাদের জন্য কিছু উপহার এনেছি। প্রভুর শত্রুদের কাছ থেকে এইসব আমরা পেয়েছি।”
27 দায়ূদ অমালেকীয়দের কাছ থেকে নেওয়া জিনিসপত্র থেকে কিছু বৈথেল, নেগেভের রামোৎ এবং যত্তীরের নেতাদের কাছে পাঠালেন। 28 অরোয়ের, শিফমোৎ, ইষ্টিমোয়, 29 রাখল, যিরহমেলীয়দের নগরগুলিতে, কেনীয়দের নগরগুলিতে 30 হর্ম্মা, কোর-আশন, অথাক, 31 এবং হিব্রোণ শহরের নেতাদের কাছে দায়ূদ উপহার পাঠালেন। তাছাড়া আর যে যে দেশে দায়ূদ ও তাঁর লোকরা ছিল, সেইসব দেশের নেতাদের কাছেও তিনি উপহার পাঠালেন।
শৌলের মৃত্যু
31 ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পলেষ্টীয়রা জিতে গেল। ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের কাছ থেকে পালিয়ে গেল। গিল্বোয় পর্বতের চূড়ায় অনেক ইস্রায়েলীয় মারা গেল। 2 শৌল আর তাঁর পুত্রদের বিরুদ্ধে পলেষ্টীয়রা একটা দুর্দান্ত যুদ্ধ চালিয়েছিল। শৌলের তিন পুত্র যোনাথন, অবীনাদব আর মল্কী-শূয়কে পলেষ্টীয়রা হত্যা করল।
3 যুদ্ধের অবস্থা শৌলের পক্ষে খারাপ থেকে আরও খারাপ হতে লাগল। তীরন্দাজরা তীর ছুঁড়ে শৌলকে গুরুতরভাবে আহত করল। 4 শৌল তাঁর বর্মবহনকারী ভৃত্যকে বললেন, “আমায় তোমার তরবারি দিয়ে মেরে ফেল। তাহলে বিদেশীরা আর আমায় মেরে মজা করতে পারবে না।” কিন্তু ভৃত্য সে কথা শুনলো না। সে বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তাই শৌল নিজের তরবারি দিয়ে নিজেকে হত্যা করলেন।
5 ভৃত্যটি যখন দেখল শৌল মারা গেছে, তখন সেও নিজের তরবারি দিয়ে আত্মহত্যা করল। শৌলের সঙ্গে সেও সেখানে পড়ে রইল। 6 এইভাবে একই দিনে শৌল ও তাঁর তিন পুত্র আর বর্মধারী ভৃত্য একই সঙ্গে মারা গেল।
পলেষ্টীয়রা শৌলের মৃত্যুতে আনন্দ করল
7 উপত্যকার অন্যদিকে বসবাসকারী ইস্রায়েলীয়রা দেখলো ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা দৌড়ে পালাচ্ছে। তারা দেখল শৌল আর তার তিন পুত্র মারা গেছে। এবার তারাও শহর ছেড়ে পালাল। তারপর পলেষ্টীয়রা এলো এবং ঐ শহরগুলিতে বসবাস করল।
8 পরদিন পলেষ্টীয়রা মৃতদের দেহ থেকে জিনিস লুঠ করতে চলে গেল। গিল্বোয় পর্বত চূড়ায় এসে তারা শৌল আর তাঁর তিন পুত্রের মৃতদেহ দেখতে পেল। 9 তারা শৌলের মাথাটা কেটে নিল। শৌলের বর্ম নিয়ে নিল। তারা পলেষ্টীয়দের কাছে খবর দিয়ে দিল। তাদের মূর্ত্তিসমূহের মন্দিরেও তারা এই খবর নিয়ে গেল। 10 অষ্টারোৎ মূর্ত্তির মন্দিরে তারা শৌলের বর্ম রেখে দিল। শৌলের দেহ তারা ঝুলিয়ে রাখল বেথ শানের দেওয়ালে।
11 পলেষ্টীয়দের শৌলের প্রতি কৃতকর্মের কথা যাবেশ গিলিয়দের লোকরা জানতে পারলো। 12 সেখানকার সৈন্যরা বৈৎ-শানে গেল। তারা সারা রাত ধরে দৃঢ় পদক্ষেপে অগ্রসর হল। সেখানকার দেওয়াল থেকে তারা শৌলের দেহ তুলে নিল। শৌলের পুত্রদের দেহও তারা নামিয়ে আনল। তারপর তারা দেহগুলো নিয়ে যাবেশে গেল। যাবেশের লোকরা এইসব দেহ দাহ করলো। 13 এদের অস্থিগুলো যাবেশে একটা বিশাল গাছের তলায় তারা কবর দিল। যাবেশের মানুষ সাতদিন উপবাস করে শোক পালন করল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International