Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Beginning

Read the Bible from start to finish, from Genesis to Revelation.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যাত্রা 19-21

ইস্রায়েলের সঙ্গে ঈশ্বরের চুক্তি

19 মিশর ছেড়ে এসে যখন ইস্রায়েলের লোকরা ভ্রমণ করছিল তখন সেই ভ্রাম্যমান অবস্থার তৃতীয় মাসে ইস্রায়েলের লোকরা সীনয় মরুভূমিতে পৌঁছোল। তারা রফীদীম থেকে সীনয় পর্যন্ত ভ্রমণ করেছিল এবং পর্বতের কাছে তাঁবু ফেলেছিল। তারপর মোশি পর্বতে উঠল ঈশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে। সেই পর্বতে ঈশ্বর মোশিকে ডেকে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকজন ও মহান যাকোব পরিবারের লোকজনকে একথাগুলি বলো: ‘তোমরা নিজেরাই দেখেছ আমি মিশরীয়দের কি অবস্থা করেছি। তোমরা দেখেছো আমি কিভাবে ঈগল পাখীর মতো মিশর থেকে তোমাদের বার করে আমার কাছে এখানে নিয়ে এসেছি। তাই এখন আমি তোমাদের আমার নির্দেশগুলো মেনে চলতে বলছি। আমার চুক্তি পালন করো। তোমরা যদি তা করো তাহলে তোমরা হবে আমার বিশেষ লোক। এই পুরো পৃথিবীটাই আমার; কিন্তু আমি তোমাদের আমার বিশেষ লোক হিসেবে মনোনীত করেছি। তোমরা যাজকদের একটি বিশেষ রাজ্য হবে।’ মোশি, তুমি কিন্তু আমি যা বলেছি তা ইস্রায়েলের লোকেদের অবশ্যই বলবে।”

তাই মোশি আবার পর্বত থেকে নীচে নেমে এসে ইস্রায়েলের প্রবীণ লোকদের প্রভুর সমস্ত নির্দেশ জানাল। তারা সবাই সমস্বরে জানাল, “প্রভুর সব কথা আমরা মেনে চলব।”

তখন মোশি প্রভুকে বলল যে প্রত্যেকেই তাঁকে মেনে চলবে। এবং প্রভু মোশিকে বললেন, “ঘন মেঘের মধ্যে দিয়ে আমি তোমার কাছে আসব এবং তোমার সঙ্গে কথা বলব। এবং তোমার সঙ্গে আমার বাক্যলাপ প্রত্যেকটি লোক শুনতে পাবে। লোকদের কাছে তোমার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্যই আমি এই উপায়ে তোমার সঙ্গে কথা বলব।”

তখন মোশি লোকদের যাবতীয় বক্তব্য ঈশ্বরকে জানাল।

10 এবং প্রভু মোশিকে বললেন, “আজ এবং আগামীকাল তুমি একটা বিশেষ সভার জন্য লোকদের প্রস্তুত করো। তাদের অবশ্যই তাদের পোশাক ধুয়ে নিতে হবে। 11 এবং তৃতীয় দিনে আমার জন্য তৈরী থাকতে হবে। তৃতীয় দিনে আমি সীনয় পর্বত থেকে নীচে নেমে আসব এবং প্রত্যেকটি মানুষ আমার দর্শন পাবে। 12-13 কিন্তু তুমি প্রত্যেককে বলবে পর্বত থেকে দূরে সরে থাকতে। একটি রেখা টেনে সেই রেখা ওদের পার হতে বারণ করবে। কোন লোক বা প্রাণী যদি পর্বতকে স্পর্শ করে তাহলে তার মৃত্য়ু হবে। তাকে অবশ্যই পাথর দিয়ে অথবা তীর বিদ্ধ করে মেরে ফেলতে হবে। তাকে কেউ ছোঁবে না। শিঙা বেজে না ওঠা পর্যন্ত প্রত্যেকে অপেক্ষা করবে। তারপর তারা পর্বতে উঠতে পারবে।”

14 সুতরাং মোশি পর্বত থেকে নীচে নেমে এসে লোকদের বিশেষ সভার জন্য প্রস্তুত করল। লোকরা তাদের পোশাক পরিষ্কার করে নিল।

15 তখন মোশি লোকদের বলল, “তৃতীয় দিনে ঈশ্বরের সঙ্গে বিশেষ সভার জন্য প্রস্তুত হও। ঐদিন পর্যন্ত কোন পুরুষ নারীকে স্পর্শ করবে না।”

16 তৃতীয় দিন সকালে, পর্বতের চূড়া থেকে ঘন মেঘ নীচে নেমে এল। মেঘ গর্জন ও বিদ্যুৎ রেখায় উচ্চস্বরে শিঙা বেজে উঠল। শিবিরের প্রত্যেকে ভয় পেয়ে গেল। 17 তখন মোশি সবাইকে শিবির থেকে বার করে পর্বতের কাছে ঈশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নিয়ে এল। 18 সীনয় পর্বত ধোঁয়ায় ঢেকে গেল। চূল্লীর মতো ধোঁয়া পাকিয়ে পাকিয়ে ওপরে উঠতে লাগল। সমস্ত পর্বত কাঁপতে শুরু করল। আগুনের শিখায় প্রভু পর্বত থেকে নীচে নেমে এলেন বলেই এই ঘটনা ঘটল। 19 শিঙার শব্দ ক্রমশঃ জোরালো হতে থাকল। মোশি যতবার ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলল ততবারই বজ্রের মতো কঠিন স্বরে ঈশ্বর উত্তর দিতে থাকলেন।

20 প্রভু সীনয় পর্বতে নেমে এলেন। এরপর প্রভু মোশিকে পর্বত শৃঙ্গে তাঁর কাছে যেতে বললেন। তখন মোশি পর্বতে চড়ল।

21 প্রভু মোশিকে বললেন, “নীচে গিয়ে লোকদের বলো ওরা যেন আমার কাছে না আসে। আমাকে যেন না দেখে। যদি তা করে তাহলে অনেকে মারা পড়বে। 22 আর যে সকল যাজক আমার কাছে আসবে তাদের বলো তারা যেন এই বিশেষ সভার জন্য নিজেদের তৈরি করে আসে। যদি তারা তা না করে তাহলে আমি তাদের শাস্তি দেব।”

23 মোশি প্রভুকে বলল, “কিন্তু লোকে পর্বতে চড়তে পারবে না। কারণ আপনিই তো বলেছিলেন একটি রেখা টানতে এবং সেই রেখা লঙ্ঘন করে কেউ যেন পবিত্র ভূমিতে না আসে।”

24 প্রভু তাকে বললেন, “নীচে মানুষের কাছে যাও। গিয়ে হারোণকে তোমার সঙ্গে নিয়ে এসো। কিন্তু কোন সাধারণ মানুষ ও যাজককে আমার কাছে আসতে দিও না। যদি তারা আমার খুব কাছে আসে তাহলে আমি তাদের শাস্তি দেব।”

25 সুতরাং মোশি লোকদের এই কথাগুলি বলার জন্য নীচে নামল।

দশটি আজ্ঞা

20 তখন ঈশ্বর এইসব কথা বললেন:

“আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর। আমিই তোমাদের মিশরের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছি। তাই তোমরা এই নির্দেশগুলি মানবে:

“আমাকে ছাড়া তোমরা আর কোনও দেবতাকে উপাসনা করবে না।

“তোমরা অবশ্যই অন্য কোন মূর্তি গড়বে না যেগুলো আকাশের, ভূমির অথবা জলের নীচের কোন প্রাণীর মত দেখতে। কোন মূর্ত্তির উপাসনা বা সেবা করবে না। কারণ, আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর। যারা অন্য দেবতার উপাসনা করবে তাদের আমি ঘৃণা করি। আমার বিরুদ্ধে যারা পাপ করবে তারা আমার শত্রুতে পরিণত হবে। এবং আমি তাদের শাস্তি দেব। আমি তাদের সন্তান-সন্ততি এবং পরবর্তী প্রজন্মকেও শাস্তি দেব। কিন্তু যারা আমায় ভালবাসবে ও আমার নির্দেশ মান্য করবে তাদের প্রতি আমি সর্বদা দয়ালু থাকব। আমি তাদের হাজার প্রজন্ম পর্যন্ত দয়া প্রদর্শন করব।

“তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের নাম ভুল ভাবে ব্যবহার করবে না। যদি কেউ তা করে তাহলে সে দোষী এবং প্রভু তাকে নির্দোষ সাব্যস্ত করবেন না।

“বিশ্রামের দিনটিকে বিশেষ দিন হিসাবে মনে রাখবে। সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করো। 10 কিন্তু সপ্তম দিনটি হবে অবসরের। প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি সম্মান প্রর্দশনের দিন। সুতরাং সেই দিনে কেউ কাজ করবে না-তুমি নয়, অথবা তোমার ছেলেরা এবং মেয়েরা, অথবা তোমার স্ত্রী, অথবা তোমার ক্রীতদাস-দাসীরা কেউ নয়। এমনকি তোমাদের গৃহপালিত পশু এবং তোমাদের শহরে বাস করা বিদেশীরাও বিশ্রামের দিনে কোন কাজ করবে না। 11 কারণ প্রভু সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করে এই আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র এবং এর মধ্যস্থিত সব কিছু বানিয়েছেন এবং সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম নিয়েছেন। এইভাবে বিশ্রামের দিনটি প্রভুর আশীর্বাদ ধন্য—ছুটির দিন। প্রভু এই দিনটিকে বিশেষ দিন হিসাবে সৃষ্টি করেছেন।

12 “তুমি অবশ্যই তোমার পিতামাতাকে সম্মান করবে, তাহলে তোমরা তোমাদের দেশে দীর্ঘ জীবনযাপন করবে। যেটা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের দিচ্ছেন।

13 “কাউকে হত্যা কোরো না।

14 “ব্যাভিচার কোরো না।

15 “চুরি কোরো না।

16 “অন্যদের সম্বন্ধে মিথ্যা বোলো না।

17 “তোমাদের প্রতিবেশীর ঘরবাড়ীর প্রতি লোভ কোরো না। তার স্ত্রীকে ভোগ করতে চেয়ো না। এবং তার দাস-দাসী, গবাদি পশু অথবা গাধাদের আত্মসাৎ করতে চেয়ো না। অন্যদের কোন কিছুর প্রতি লোভ কোরো না।”

লোকরা ঈশ্বরকে ভয় পেল

18 ঐ সময়ে, লোকজন বজ্র নির্ঘোষ শুনতে পেল এবং বিদ্যুৎ দেখতে পেল। তারা শিঙার শব্দ শুনতে পেল এবং দেখল ধোঁয়া ওপর দিকে উঠছে। এই দেখে লোকরা ভয়ে কুঁকড়ে গেল। পর্বত থেকে দূরে দাঁড়িয়ে তারা এই ঘটনা দেখতে লাগল। 19 তখন লোকরা মোশিকে বলল, “তুমি যদি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাও তাহলে তা আমরা শুনব। কিন্তু ঈশ্বর যেন আমাদের সঙ্গে কথা না বলেন। তিনি কথা বললে আমরা ভয়ে মারা যাব।”

20 তখন মোশি তাদের বলল, “ভয় পেও না। প্রভু তোমাদের পরীক্ষা করতে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি চান তোমরা তাঁকে সম্মান কর, যাতে তোমরা পাপ কাজ না কর।”

21 লোকরা পর্বত থেকে দূরে দাঁড়িয়ে থাকল, আর তখন মোশি অন্ধকার মেঘের ভেতর ঈশ্বরের কাছে গেল। 22 তখন প্রভু মোশিকে, ইস্রায়েলের লোকদের এই কথাগুলি বলার জন্য বললেন: “তোমরা দেখেছো যে আমি স্বর্গ থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছি। 23 সুতরাং তোমরা আমার সঙ্গে তুলনা করে সোনা অথবা রূপো দিয়ে অন্য কোন মূর্ত্তি গড়বে না।

24 “আমার জন্য একটি বিশেষ বেদী তৈরী করো। বেদী তৈরীর সময় মাটি ব্যবহার করবে। আমার প্রতি উৎসর্গ হিসেবে ঐ বেদীর ওপর হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদন করবে। বলিতে তোমাদের গৃহপালিত মেষ অথবা গবাদি পশু ব্যবহার করবে। যেখানে যেখানে আমি তোমাদের আমাকে মনে রাখতে বলেছি সেই সব স্থানে তোমরা এই বলিগুলি দেবে। তখন আমি এসে তোমাদের আশীর্বাদ করব। 25 পাথরের বেদী তৈরী করলে কোন লোহার অস্ত্র দিয়ে, কাটা পাথর ফলক দিয়ে সেই বেদী তৈরী করবে না। যদি তা করো তাহলে সেই বেদী গ্রহণযোগ্য হবে না। 26 এবং আমার বেদীতে কোন সিঁড়ি তৈরী করবে না। যদি বেদীতে সিঁড়ি থাকে তাহলে ঐ সিঁড়ি দিয়ে মানুষ যখন উঠবে তখন নীচের লোকদের কাছে তাদের নগ্নতা প্রকাশ পাবে।”

অন্য বিধি ও আজ্ঞা

21 তারপর ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “তুমি অন্য এইসব নিয়মের কথাও লোকদের বলবে।

“তুমি যদি ইব্রীয় দাস ক্রয় করো তবে সে ছয় বছর দাসত্ব করার পর বিনামূল্যে মুক্তি পাবে। যদি তোমার দাস থাকাকালীন সে বিবাহিত না হয় তাহলে মুক্তির সময়েও সে একাই মুক্তি পাবে। কিন্তু যদি সে বিবাহিত হয় তাহলে সে সস্ত্রীক মুক্তি পাবে। যদি দাসটি বিবাহিত না হয় তাহলে তার মনিব তাকে বিয়ে দিতে পারে। সে যদি পুত্র অথবা কন্যা ধারণ করে তাহলে সে এবং তার ছেলেমেয়েরা মনিবের অধিকারভুক্ত হবে এবং সে নিজে ঐ মনিবের কাছে থাকবে এবং দাসের নিজের কর্মকাল শেষ হবার পর সে একা মুক্তি পাবে।

“কিন্তু যদি দাসটি বলে, ‘আমি আমার মনিবকে, আমার পত্নীকে এবং ছেলে-মেয়েদের ভালবাসি, তাই আমি মুক্ত হতে চাই না,’ যদি এরকম হয় তাহলে তার মনিব দাসটিকে ঈশ্বরের কাছে নিয়ে আসবে। তারপর তার মনিব তাকে একটি দরজা বা দরজার কাঠের কাঠামোর কাছে নিয়ে যাবে। তারপর ছুঁচালো একটি যন্ত্র দিয়ে মনিব তার দাসের কানে একটি ফুটো করবে। তাহলে সেই দাস সারাজীবন তার মনিবের সেবা করবে।

“কোন ব্যক্তি যদি তার কন্যাকে দাস হিসেবে বিক্রি করতে চায় তাহলে তার মুক্তি পাওয়ার নিয়ম পুরুষ দাসদের নিয়মের থেকে আলাদা হবে। যদি সেই মহিলার মনিব তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয় তাহলে সে তার মহিলা দাসটিকে তার পিতার কাছে ফেরৎ‌ পাঠাতে পারে। যদি মনিবটি তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে অন্য লোকের কাছে তাকে বিক্রি করতে পারবে না কারণ সেটা হবে অন্যায়। যদি তার মনিব মহিলা দাসটিকে তার পুত্রের সঙ্গে বিয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় তবে তাকে দাসের মতো না রেখে মেয়ের মতো রাখতে হবে।

10 “যদি মনিব অন্য কোনও স্ত্রীলোককে বিয়ে করে তাহলে সে তার প্রথম স্ত্রীকে কম খাবার বা কম জামাকাপড় দিতে পারবে না। সে তার স্ত্রীর প্রতি বিবাহের অধিকার হিসেবে সব কর্তব্য করবে। 11 মনিব যদি এই তিনটি জিনিস না করে তাহলে তার স্ত্রী বিনামূল্যে তার কাছে থেকে মুক্তি পাবে।

12 “যদি কোনও ব্যক্তি কাউকে আঘাত করে হত্যা করে তাহলে সেই ব্যক্তিকেও হত্যা করা হবে। 13 কিন্তু যদি একটি দুর্ঘটনায়় কোন ব্যক্তি মারা যায় তাহলে সেটা ঈশ্বরের অভিপ্রায় বলে ধরে নেওয়া হবে। আমি কতগুলি বিশেষ জায়গা বেছে দেব যেগুলি লোকরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করবে। 14 কিন্তু কোনও ব্যক্তি যদি ক্রোধ বা ঘৃণা থেকে কাউকে হত্যা করে তবে সে শাস্তি পাবে। তাকে আমার বেদী থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হবে।

15 “যে ব্যক্তি পিতা বা মাতাকে আঘাত করবে তাকে হত্যা করা হবে।

16 “যদি কোনও ব্যক্তি কাউকে চুরি করে দাস হিসেবে বিক্রি করতে চায় বা নিজের দাস করে রাখতে চায় তাহলে তাকে হত্যা করা হবে।

17 “যে ব্যক্তি তার পিতা বা মাতাকে অভিশাপ দেয়, তাকে হত্যা করা হবে।

18 “পরস্পর ঝগড়া করবার সময় যদি একজন অপর ব্যক্তিকে পাথর অথবা তার মুষ্টি দিয়ে আঘাত করে তাহলে তার শাস্তি পাওয়া উচিৎ‌। যে আহত সে যদি মারা না যায় তবে যে আঘাত করেছে তাকে হত্যা করা হবে না। 19 আহত ব্যক্তি যদি কিছু সময়ের জন্য শয্যাশায়ী থাকে তাহলে যে আঘাত করেছে সে তার সময়ের ক্ষতিপূরণ দেবে, যতদিন না আহত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠে।

20 “কখনও কখনও মনিব তার পুরুষ বা স্ত্রী দাসদের প্রহার করে থাকে, যদি এই প্রহারে দাসটি মারা যায় তবে তার ঘাতক শাস্তি পাবে। 21 কিন্তু যদি দাসটি মারা না গিয়ে কয়েকদিন বাদে সেরে ওঠে তবে তার মনিবকে কিছু বলা হবে না কারণ সে তার দাসের জন্য অর্থ ব্যয করে থাকে এবং সে দাসটি তার সম্পত্তি।

22 “দুটি মানুষ ঝগড়া করার সময় যদি কোনও গর্ভবতী মহিলাকে আঘাত করে এবং এর ফলে যদি তার গর্ভপাত হয়ে যায় এবং অন্য কোন ক্ষতি না হয় তাহলে যে আঘাত করেছে সে শুধু তাকে জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেয়ে যাবে। ঐ মহিলার স্বামী জরিমানার টাকার অংশ ঠিক করে দেবে। বিচারকরা এই ব্যাপারে তাকে সাহায্য করবে। 23 কিন্তু যদি সেই মহিলার আঘাতের ফলে কোন ক্ষতি হয় তাহলে যে তাকে আঘাত করবে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে, যে অন্যকে হত্যা করবে তাকেও মরতে হবে। একজনের জীবনের বদলে অন্যের জীবন নেওয়া হবে। 24 তুমি চোখের বদলে চোখ নেবে, দাঁতের বদলে দাঁত, হাতের বদলে হাত, পায়ের বদলে পা নেবে। 25 পোড়ার বদলে পোড়াবে, চোটের বদলে চোট দেবে, কাটার বদলে কাটবে।

26 “যদি কোন ব্যক্তি তার দাসের চোখে আঘাত করে তাকে অন্ধ করে দেয় তাহলে সেই দাসকে মুক্তি দিয়ে দিতে হবে। তার চোখ হল তার মুক্তির মূল্য, স্ত্রী বা পুরুষ দাসের ক্ষেত্রে এই একই নিয়ম খাটবে। 27 যদি কোনও মনিব তার দাসকে মুখে আঘাত করে তার দাঁত ফেলে দেয় তবে তাকে মুক্তি দিতে হবে, তার দাঁত হবে তার মুক্তির মূল্য, এই নিয়ম স্ত্রী ও পুরুষ উভয় দাসের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

28 “যদি কোনও ব্যক্তির ষাঁড় কোন স্ত্রী বা পুরুষকে মেরে ফেলে তাহলে ঐ ষাঁড়কে পাথর দিয়ে মেরে হত্যা করতে হবে। ঐ ষাঁড়কে খাওয়াও যাবে না। কিন্তু ষাঁড়ের মালিক দোষী হবে না। 29 কিন্তু যদি ষাঁড়টি ইতিপূর্বে কাউকে আঘাত করে থাকে এবং তার মালিককে সতর্ক করে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেই মালিককে দোষী সাব্যস্ত করা হবে। কেননা সে জানা সত্ত্বেও ষাঁড়টিকে যথাস্থানে বেঁধে বা আটকে রাখে নি। আর যদি এরকম ষাঁড়কে ছেড়ে রাখার ফলে কারো প্রাণ যায় তাহলে সেই ষাঁড় ও তার মালিক দুজনকেই পাথর দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলা হবে। 30 কিন্তু মৃত ব্যক্তির পরিবার যদি অর্থ গ্রহণ করে তাহলে ষাঁড়ের মালিককে মারা হবে না। কিন্তু সে বিচারকদের নির্ধারিত টাকার অঙ্ক জরিমানা দেবে।

31 “এই একই নিয়ম বলবৎ থাকবে যদি ষাঁড়টি কোনও লোকের পুত্র বা কন্যাকে হত্যা করে। 32 কিন্তু ষাঁড়টি যদি কোনও দাসকে হত্যা করে তবে তার মালিককে 30 টুকরো রূপো দিতে হবে মূল্য হিসেবে এবং ষাঁড়টিকে পাথর দিয়ে মারা হবে। এই নিয়ম স্ত্রী ও পুরুষ দাসের ক্ষেত্রে একই হবে।

33 “কোনও ব্যক্তি কুয়োর ওপরের ঢাকা সরিয়ে দিতে পারে বা গভীর গর্ত খুঁড়ে ঢাকা না দিয়ে রাখতে পারে। যদি কোন ব্যক্তির পোষা জন্তু এসে এই গর্তে পড়ে যায় তবে গর্তের মালিককে দায়ী করা হবে। 34 গর্তের মালিককে জন্তুটির মূল্য দিতে হবে কিন্তু মূল্য দেওয়ার পর সে জন্তুটির দেহ নিজের কাছে রাখার অধিকার পাবে।

35 “যদি এক ব্যক্তির ষাঁড় আরেক ব্যক্তির ষাঁড়কে হত্যা করে তখন জীবিত ষাঁড়টিকে বিক্রি করে দিতে হবে। উভয় ব্যক্তি সেই বিক্রয় মূল্যের অর্ধেক ভাগ পাবে এবং মৃত ষাঁড়টির দেহের অর্ধেক ভাগ পাবে। 36 যদি কারো ষাঁড় অন্য কারো ব্যক্তির জন্তুদের গুঁতিয়ে মেরে ফেলার জন্য পরিচিত থাকে, তবে সেই ষাঁড়ের মালিককে তার জন্য দায়ী করা হবে। যদি ষাঁড়টি অন্য ষাঁড়কে মেরে ফেলে, তাহলে তার মালিককেই দায়ী করা হবে কারণ সে ষাঁড়টিকে ছেড়ে রেখেছে। তাকে অবশ্যই মৃত ষাঁড়ের মূল্য দিতে হবে কিন্তু মৃত ষাঁড়টি সে নিজের জন্য রাখতে পারে।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International