Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Beginning

Read the Bible from start to finish, from Genesis to Revelation.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
আদি 32-34

এষৌর সাথে পুনর্মিলন

32 যাকোবও সেই স্থান হতে উঠে চলল। পথে সে ঈশ্বরের দূতগণের দেখা পেল। তাদের দেখে যাকোব বলল, “এ ঈশ্বরের শিবির!” সেই জন্য সে সেই স্থানের নাম মহনয়িম রাখল।

যাকোবের ভাই এষৌ থাকত সেয়ীরে। এই জায়গাটা ছিল পাহাড়ী দেশ ইদোমে। যাকোব এষৌর কাছে বার্তাবাহকদের এই বলে পাঠাল, “এইসব কথা আমার মনিব এষৌকে গিয়ে বলো। আপনার দাস যাকোব বলে: আমি এতগুলি বছর লাবনের কাছে কাটিয়েছি। আমার অনেক গরু, গাধা, মেষপাল, লোকজন ও দাসী রয়েছে। মহাশয় আমি এই বার্তা পাঠিয়ে অনুরোধ করছি, আপনি আমাদের গ্রহণ করুন।”

বার্তাবাহকরা যাকোবের কাছে ফিরে এসে বলল, “আমরা আপনার ভাই এষৌয়ের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আপনার সাথে দেখা করতে আসছেন। তাঁর সাথে 400 জন লোক রয়েছে।”

এই বার্তায় যাকোব ভীত হল। সে তার লোকজনদের দুই দলে ভাগ করল। সে তার মেষপাল, পশুপাল ও উটের পালকে দুই ভাগে ভাগ করল। যাকোব বলল, “যদি এষৌ এসে এক দলকে ধ্বংস করে তবে অপর দল নিশ্চয় পালিয়ে রক্ষা পাবে।”

যাকোব বলল, “হে আমার পিতা অব্রাহামের ঈশ্বর, আমার পিতা ইস‌্হাকের ঈশ্বর! প্রভু তুমিই আমাকে আমার দেশে আমার পরিবারের কাছে ফিরে যেতে বলেছিলে। তুমি বলেছিলে আমার মঙ্গল করবে। 10 তুমি আমার প্রতি কত করুণা করেছ। আমার কত মঙ্গল করেছ। প্রথমবার যখন আমি যর্দ্দন পার হচ্ছিলাম তখন কেবল পথ চলার লাঠি ছাড়া আমার কাছে কিছুই ছিল না। কিন্তু এখন আমার সব কিছু প্রচুর বলে দুটো দল হয়েছে। 11 দয়া করে আমায় আমার ভাইয়ের হাত থেকে, এষৌর হাত থেকে রক্ষা কর। আমার ভয় হয় যে সে আমাদের, এমনকি সন্তানদের সঙ্গে মায়েদেরও হত্যা করবে। 12 প্রভু তুমি আমায় বলেছিলে, ‘আমি তোমার মঙ্গল করব। আমি তোমার বংশধরদের সংখ্যায় সমুদ্রের বালির মত করব যা গুনে শেষ করা যায় না।’”

13 সেই স্থানে যাকোব রাত কাটাল। এষৌকে উপহার হিসাবে দেবার জন্য জিনিস গোছাল। 14 যাকোব 200টি ছাগী, 20টি ছাগ, 200টি মেষী ও 20টি মেষ নিল। 15 আরও নিল 30টি উট এবং তাদের বাচ্চা, 40টি গরু, 10টি ষাঁড়, 20টি গর্দ্দভী ও 10টি গর্দ্দভ। 16 যাকোব প্রতিটি পশুপাল তার দাসদের হাতে দিল। তারপর যাকোব তার দাসদের বলল, “প্রতিটি পশুর পাল পৃথক কর। আমার আগে আগে যাও আর প্রতিটি পালের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব রেখো।” 17 যাকোব তার দাসদের আজ্ঞা দিল। প্রথম দলের পশু যে দাসের হাতে তাকে সে বলল, “যখন আমার ভাই এষৌ এসে তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘এ সব পশু কার? তুমি কোথায় যাচ্ছ? তুমি কার দাস?’ 18 তখন তুমি বলবে, ‘এইসব পশু আপনার দাস যাকোবের। যাকোবই এইসব উপহার হিসাবে আপনার কাছে পাঠিয়েছেন। আর যাকোব নিজেও পেছন পেছন আসছেন।’”

19 যাকোব দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং অন্য সব দাসদের ঐ একই কাজ করতে বলল। সে বলল, “এষৌর সঙ্গে দেখা হলে তোমরাও সবাই ঐ একই কাজ করবে। 20 তোমরা বলবে, ‘এই উপহার আপনার জন্যে আর আপনার দাস যাকোব আমাদের পেছনেই আসছেন।’”

যাকোব বলল, “যদি আমি এই লোকদের উপহার সমেত আমার আগে পাঠাই তবে হয়তো এষৌ আমায় ক্ষমা করে গ্রহণ করবেন।” 21 তাই যাকোব এষৌকে উপহারগুলি পাঠাল। কিন্তু সেই রাতে যাকোব তাঁবুতে রইল।

22 পরে সেই রাতে উঠে যাকোব সেখান থেকে চলে গেল। সে তার সাথে তার দুই স্ত্রী, দুই দাসী ও তার এগারোটি সন্তানকে নিয়ে যব্বোক নদী পার হল। 23 যাকোবের পরিবার নদী পার হয়ে গেলে সে তার সমস্ত জিনিসপত্রও পার হবার জন্য পাঠাল।

ঈশ্বরের সাথে যুদ্ধ

24 অবশেষে যাকোব নদী পার হবার জন্য রইল। কিন্তু সে একা পার হবার আগে একজন পুরুষ এসে তার সঙ্গে মল্লযুদ্ধ করলেন। সূর্য্য ওঠার আগে পর্যন্ত সেই পুরুষটি তার সঙ্গে যুদ্ধ করলেন। 25 পুরুষটি যখন দেখলেন তিনি যাকোবকে পরাজিত করতে পারছেন না তখন যাকোবের পায়ে আঘাত করলেন; তাতে যাকোবের পায়ের হাড় সরে গেল।

26 তারপর সেই পুরুষটি যাকোবকে বললেন, “আমায় যেতে দাও, সূর্য্য উঠছে।”

কিন্তু যাকোব বলল, “আপনি আমাকে আশীর্বাদ না করলে আমি আপনাকে যেতে দেব না।”

27 সেই পুরুষটি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার নাম কি?”

যাকোব উত্তর দিল, “আমার নাম যাকোব।”

28 তখন সেই পুরুষটি বললেন, “তোমার নাম যাকোবের পরিবর্তে ইস্রায়েল হবে। আমি তোমার এই নাম রাখলাম কারণ তুমি ঈশ্বরের সঙ্গে ও মানুষের সঙ্গে যুদ্ধ করেছ কিন্তু পরাজিত হও নি।”

29 তখন যাকোব তাকে জিজ্ঞেস করল, “দয়া করে বলুন আপনার নাম কি?”

কিন্তু সেই পুরুষটি বললেন, “কি জন্য আমার নাম জিজ্ঞেস করছ?” সেই সময়ই পুরুষটি যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন।

30 তাই যাকোব সেই জায়গার নাম পনূয়েল রাখল। যাকোব বলল, “এই স্থানেই আমি ঈশ্বরকে মুখোমুখি দেখলাম কিন্তু তাও প্রাণে বাঁচলাম।” 31 সে পনূয়েল পার হলে সূর্য্য উঠল। যাকোব পায়ের জন্য খোঁড়াতে খোঁড়াতে চলল। 32 সেইজন্য আজও ইস্রায়েলীয়রা উরুসন্ধির পেশী ভোজন করে না, কারণ যাকোবের সেই পেশীই আহত হয়েছিল।

যাকোব সাহসের পরিচয় দিলেন

33 যাকোব তাকিয়ে দেখল এষৌ আসছেন। এষৌ তাঁর সঙ্গে 400 জন লোক নিয়ে আসছিলেন। যাকোব তার পরিবারকে চারটি দলে ভাগ করল। লেয়া এবং তার সন্তানরা একটি দলে, রাহেল ও যোষেফ আর একটি দলে এবং দুই দাসী ও তাদের সন্তানরা আরও দুটি দলে ছিল। যাকোব তার দাসীদের সন্তানদের সামনে রাখল। লেয়া এবং তার সন্তানদের সে তাদের পেছনে রাখল। যাকোব রাহেল ও যোষেফকে সবশেষে রাখল।

যাকোব নিজে এষৌর দিকে এগিয়ে গেল। এর ফলে এষৌর সাথেই প্রথমে তার সাক্ষাৎ হল। যাকোব তার ভাইয়ের দিকে হেঁটে যাবার সময় সাতবার আভূমি প্রণত হল।

এষৌ যাকোবকে দেখতে পেয়ে তার সাথে দেখা করার জন্য দৌড়ে গেলেন। এষৌ যাকোবের গলা জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন। তারপর তাঁরা দুজনেই কাঁদলেন। এষৌ তাকিয়ে সেই স্ত্রীলোক ও শিশুদের দেখতে পেয়ে বললেন, “তোমার সাথে ঐ লোকজনরা কারা?”

যাকোব উত্তরে বললেন, “ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আমাকে এইসব সন্তান-সন্ততিদের দিয়েছেন।”

তারপর সন্তানদের নিয়ে দুই দাসী এষৌর সঙ্গে দেখা করতে গেল। তারা তাঁর সামনে সশ্রদ্ধ প্রণিপাত করল। এরপর লেয়া ও তার সন্তানরা এষৌর সঙ্গে দেখা করে তাঁর সামনে সশ্রদ্ধভাবে উপুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করল। শেষে রাহেল ও যোষেফ এষৌর সঙ্গে দেখা করে উপুড় হয়ে প্রণাম করল।

এষৌ বললেন, “আমি এখানে আসার সময় যে জনসমারোহ দেখতে পেলাম তা এবং এইসব পশুই বা কিসের জন্য?”

যাকোব বলল, “ঐ সব আপনার জন্য আমার উপহার। যেন আপনি আমাকে গ্রহণ করেন।”

কিন্তু এষৌ বললেন, “তোমাকে উপহার দিতে হবে না ভাই আমার যথেষ্ট রয়েছে।”

10 যাকোব বলল, “তা না, আমার মিনতি এই যদি সত্যিসত্যি আপনি আমাকে গ্রহণ করে থাকেন তবে আমি যে উপহার আপনাকে দিই তা গ্রহণ করুন। আমি আবার আপনার মুখ দেখতে পেয়ে আনন্দিত। যেন ঈশ্বরেরই মুখ দর্শন করলাম। আপনি যে আমাকে গ্রহণ করলেন এতেই আমি খুব খুশী। 11 সেইজন্য বিনয় করি আমি যে যে উপহার আপনার জন্য এনেছি তা গ্রহণ করুন। ঈশ্বর আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন তাই আমার প্রয়োজনের অতিরিক্তই রয়েছে।” এইভাবে যাকোব তার উপহারগুলি স্বীকার করার জন্য এষৌর কাছে বিনতি করল। সেইজন্য এষৌ উপহারগুলি স্বীকার করলেন।

12 তারপর এষৌ বললেন, “এবার তুমি তোমার যাত্রা পথে চলতে পার। আমি তোমার সঙ্গে যাব।”

13 কিন্তু যাকোব তাকে বলল, “আপনি জানেন যে আমার শিশুরা দুর্বল এবং আমাকে আমার পশুপাল সম্পর্কে সাবধান হতে হবে। যদি আমি তাদের একদিনে এতদূর যেতে বাধ্য করি, তবে সব পশুই মারা পড়বে। 14 সেইজন্য আপনি আগে আগে যান। গবাদিপশু এবং অন্যান্য পশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সন্তানরা যাতে খুব ক্লান্ত না হয়ে পড়ে সেই দিক দেখে আমি খুব ধীর গতিতে যাব। আমি সেয়ীরে আপনার সঙ্গে দেখা করব।”

15 তাই এষৌ বললেন, “তবে তোমাকে সাহায্য করার জন্য আমার কিছু লোক তোমার কাছে রেখে যাই।”

কিন্তু যাকোব বলল, “আপনি বড়ই দয়ালু কিন্তু সেটারই বা প্রয়োজন কি?” 16 সেদিন এষৌ সেয়ীরের পথে যাত্রা শুরু করলেন। 17 কিন্তু যাকোব সুক্কোতে গেল। সেই জায়গায় সে নিজের জন্য একটা গৃহ তৈরী করল আর তার পশুপালের জন্য ছাউনি তৈরী করল। এইজন্য সেই জায়গার নাম রাখা হল সুক্কোৎ।

18 যাকোব নিরাপদে পদ্দম্-অরাম হতে যাত্রা করে কনান দেশের শিখিম নগরে এসে উপস্থিত হল। সেই শহরের কাছে এক মাঠের মধ্যে সে শিবির স্থাপন করল। 19 শিখিমের পিতা হামোরের কাছ থেকে যাকোব ঐ মাঠটি 100 রৌপ্য খণ্ড দিয়ে কিনেছিল। 20 যাকোব সেই জায়গায় ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য এক বেদী তৈরী করে তার নাম রাখল, “এল্ ইলোহে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর।”

দীণার ওপর বলাৎ‌কার

34 দীণা ছিল যাকোব এবং লেয়ার কন্যা। একদিন দীণা সেই জায়গার মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে গেল। হমোর ছিলেন সেই দেশের রাজা, তাঁর পুত্র শিখিম দীণাকে দেখতে পেলেন। শিখিম দীণাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বলাৎ‌‌কার করলেন। শিখিম দীণার প্রেমে পড়ে তাকে বিয়ে করার জন্য অনুনয় করতে লাগলেন। শিখিম তাঁর পিতাকে বললেন, “দয়া করে ওকে আমার জন্য এনে দাও যেন আমি বিয়ে করতে পারি।”

যাকোব জানতে পারল যে ছেলেটি তার কন্যার সাথে ঐ মারাত্মক খারাপ কাজটি করেছে। কিন্তু যেহেতু তার সব কটি পুত্রই মাঠে পশু চরাতে গিয়েছিল, সেই জন্য তারা ঘরে ফিরে না আসা পর্যন্ত তিনি কিছুই করলেন না। সেই সময় শিখিমের পিতা হমোর যাকোবের সঙ্গে কথা বলতে এলেন।

যাকোবের পুত্ররা মাঠেই জানতে পারল কি ঘটেছে। ঘটনা শুনে তারা খুবই রেগে গেল কারণ শিখিম যাকোবের কন্যাকে বলাৎ‌‌কার করে ইস্রায়েলকে লজ্জায় ফেলেছিলেন। শিখিমের করা এই ভয়ঙ্কর ঘটনা শুনতে পেয়েই ভাইরা ক্ষেত থেকে ফিরে এল।

কিন্তু হমোর ভাইদের বললেন, “আমার পুত্র শিখিম দীণাকে খুবই চায়। অনুগ্রহ করে ওকে বিয়ে করতে দাও। এই বিবাহ বোঝাবে যে তোমাদের সঙ্গে আমাদের এক বিশেষ চুক্তি হয়েছে। তখন আমাদের পুত্ররা তোমাদের কন্যাদের এবং তোমাদের পুত্ররা আমাদের কন্যাদের বিয়ে করতে পারবে। 10 তোমরা আমাদের সঙ্গে এই একই দেশে থাকতে পারবে। তোমরা এখানকার জমির মালিক হবে ও ব্যবসা করতে পারবে।”

11 শিখিম নিজেও যাকোব ও ভাইদের সঙ্গে কথা বললেন। শিখিম বললেন, “দয়া করে আমায় গ্রহণ কর। তোমরা আমাকে যা করতে বলবে তাই-ই করব। 12 যদি তোমরা আমায় কেবল দীণাকে বিয়ে করতে দাও, তবে তোমাদের চাওয়া যে কোন উপহার আমি তোমাদের দেব। তোমরা যা চাইবে তাই-ই দেব, কেবল দীণাকে বিয়ে করতে দাও।”

13 যাকোবের পুত্ররা শিখিম ও তার পিতাকে মিথ্যা বলবে বলে ঠিক করল। ভাইরা তাদের রাগ সামলাতে পারছিল না কারণ শিখিম তাদের বোন দীণার প্রতি এই জঘন্য কাজ করেছিলেন। 14 তাই ভাইরা তাঁকে বলল, “আপনি সুন্নত নন বলে আপনার সঙ্গে আমাদের বোনের বিয়ে দিতে পারি না। যদি আমরা আমাদের বোনকে আপনাকে বিয়ে করতে দিই তা হবে আমাদের পক্ষে এক অপমান। 15 কিন্তু আপনি এই একটি কাজ করলে আমরা তার সঙ্গে আপনার বিয়ে দিতে পারি। আপনার শহরের প্রত্যেকটি পুরুষকে আমাদের মত সুন্নত হতে হবে। 16 তাহলে আপনাদের পুত্ররা আমাদের কন্যাদের এবং আমাদের কন্যারা আপনাদের পুত্রদের বিয়ে করতে পারবে। তাহলে আমরা এক জাতি হব। 17 যদি আপনি সুন্নত হতে অস্বীকার করেন তবে আমরা দীণাকে নিয়ে যাব।”

18 এই চুক্তি হমোর এবং শিখিমকে খুব আনন্দিত করল। 19 দীণার ভাইরা যা করতে বলল তাতে শিখিম খুশী হয়ে রাজী হলেন।

শিখিম ছিলেন তাঁর পরিবারে সবচেয়ে সম্মানীয় ব্যক্তি। 20 হমোর ও শিখিম তাঁদের শহরের সমাগম স্থানে গেলেন। তাঁরা শহরের পুরুষদের সঙ্গে কথা বললেন। 21 তাঁরা বললেন, “ইস্রায়েলের এই লোকরা আমাদের বন্ধু হতে চায়। তারা আমাদের দেশে বাস করুক ও আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করুক। আমাদের সকলের জন্য যথেষ্ট জায়গা আমাদের রয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক বিবাহও হতে পারে। আমাদের ছেলেরা তাদের মেয়েদের বিয়ে করতে পারে এবং তাদের মেয়েরা আমাদের ছেলেদের বিয়ে করতে পারে। 22 কিন্তু একটি বিষয় আমাদের সবাইকে মেনে নিতে হবে। আমাদের সব পুরুষকে সুন্নত হতে হবে, যেমনটি ইস্রায়েলের লোকরা হয়ে রয়েছে। 23 একাজ করলে আমরা তাদের গো-মেষাদির পাল ও পশুর দ্বারা এবং সম্পত্তির দ্বারা ধনী হব। সুতরাং তাদের সঙ্গে আমাদের এই চুক্তি করা উচিৎ‌, তাহলে তারা এখানে আমাদের সঙ্গে থাকবে।” 24 সমবেত সমস্ত লোক হমোর ও শিখিমের কথা শুনে সম্মতি জানাল। আর সব পুরুষরা সেই সময় সুন্নত হল।

25 তিন দিন পরেও সুন্নত হওয়া লোকরা তখনও পীড়িত ছিল। যাকোবের দুই পুত্র শিমিয়োন ও লেবি জানত যে ঐ লোকরা এই সময়ে দুর্বল থাকবে। তাই তারা শহরে ঢুকে সেখানকার সমস্ত লোককে হত্যা করল। 26 দীণার ভাই শিমিয়োন ও লেবি এই দুজনে মিলে হমোর ও তার পুত্র শিখিমকে হত্যা করল। তারা শিখিমের বাড়ী থেকে দীণাকে বার করে নিয়ে এল। 27 যাকোবের পুত্ররা শহরের সব কিছু লুঠ করল। শিখিম তাদের বোনের সঙ্গে ভ্রষ্টাচার করার জন্য তারা তখনও রেগে ছিল। 28 তাই ভাইরা সমস্ত পশু, গাধা এবং শহরে ও ক্ষেতে যা কিছু ছিল তার সবই নিয়ে নিল। 29 সেই লোকেদের সর্বস্ব এমনকি তাদের স্ত্রী ও শিশুদের অধিকার করল।

30 কিন্তু যাকোব শিমিয়োন ও লেবিকে বলল, “তোমরা আমায় অনেক বিপদে ফেলেছ। এই অঞ্চলের সমস্ত লোক এখন আমায় ঘৃণা করবে। কনানীয় ও পরিষীয় সমস্ত লোকরা আমার বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে। আমরা এখানে অল্প কয়েকজন রয়েছি। যদি এই জায়গার লোকরা একত্রে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসে, তবে আমি তো ধ্বংস হবোই, এমনকি আমার সমস্ত লোকও আমার সঙ্গে ধ্বংস হবে।”

31 কিন্তু ভাইরা বলল, “ঐ লোকরা আমাদের বোনের সঙ্গে বেশ্যার মত যে ব্যবহার করেছে সেটাও কি উচিৎ‌ ছিল? না, ঐ লোকেরা আমাদের বোনের প্রতি অন্যায় করেছে।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International