Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Beginning

Read the Bible from start to finish, from Genesis to Revelation.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
আদি 12-15

ঈশ্বর অব্রামকে ডাক দেন

12 প্রভু অব্রামকে বললেন,

“তুমি এই দেশ, নিজের জাতিকুটুম্ব
এবং পিতার পরিবার ত্যাগ করে,
    আমি যে দেশের পথ দেখাব সেই দেশে চল।
তোমা হতে আমি এক মহাজাতি উৎপন্ন করব।
তোমাকে আশীষ দেব
    এবং তুমি বিখ্যাত হবে।
অন্যকে আশীর্বাদ জানাতে
    লোকে তোমার নাম নেবে।
যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে, সেই লোকদের আমি আশীর্বাদ করব
    এবং যারা তোমাকে অভিশাপ দেবে, সেই লোকদের আমি অভিশাপ দেব।
তোমার মাধ্যমে আমি
    পৃথিবীর সব লোকদের আশীর্বাদ করব।”

অব্রামের কনান যাত্রা

অতঃপর অব্রাম প্রভুর আজ্ঞা পালন করলেন। তিনি হারণ ত্যাগ করলেন এবং লোট তাঁর সঙ্গে গেলেন। অব্রামের বয়স তখন 75 বছর। অব্রাম সঙ্গে নিলেন স্ত্রী সারী, ভ্রাতুষ্পুত্র লোট এবং হারণে তাঁদের যা কিছু ছিল সে সবই নিয়ে গেলেন। হারণে অব্রামের যেসব দাসদাসী ছিল তাদেরও তিনি সঙ্গে নিলেন। দলবল সমেত হারণ ত্যাগ করে অব্রাম কনান দেশে যাত্রা করলেন। অব্রাম কনান দেশের মধ্য দিয়ে শিখিম শহরে গেলেন এবং তারপরে মোরিতে এক বিশাল গাছের কাছে গেলেন। সেই সময় কনানীয়রা সেখানে বাস করতো।

প্রভু অব্রামের সকাশে আত্মপ্রকাশ করলেন। প্রভু বললেন, “তোমার উত্তরপুরুষদের আমি এই দেশ দেব।”

প্রভু যেখানে অব্রামকে দর্শন দিয়েছিলেন সেখানে অব্রাম প্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ সম্পাদনের জন্য পাথরের একটা বেদী নির্মাণ করলেন। তারপর অব্রাম সেই স্থান ত্যাগ করে গেলেন বৈথেলের পূর্বদিকে অবস্থিত পর্বতে এবং সেখানে তাঁর শিবির স্থাপন করলেন। বৈথেল নগর ছিল পশ্চিম দিকে আর অয় ছিল পূর্ব দিকে। সেখানে অব্রাম আর একটি বেদী নির্মাণ করলেন এবং প্রভুর উপাসনা করলেন। অতঃপর তিনি পুনরায় তাঁর যাত্রা শুরু করলেন। তিনি নেগেভের দিকে অগ্রসর হলেন।

মিশরে অব্রাম

10 তখন দেশটা ছিল খুব শুষ্ক। অনাবৃষ্টির জন্য কোনও শস্য উৎপাদন সম্ভব ছিল না। তাই অব্রাম বসবাসের জন্য আরও দক্ষিণে মিশরে গেলেন। 11 তিনি খেয়াল করলেন যে তাঁর স্ত্রী সারী কত সুন্দরী। তাই মিশরে প্রবেশের ঠিক আগে সারীকে বললেন, “আমি জানি তুমি সুন্দরী। 12 মিশরীয় পুরুষরা তোমায় দেখবে। তারা বলবে, ‘এই মহিলা ঐ লোকটার স্ত্রী।’ তারা তখন তোমাকে পাওয়ার জন্য আমায় মেরে ফেলবে। 13 তাই সবাইকে বলবে যে তুমি আমার বোন। তাহলে তারা আর আমায় হত্যা করবে না। তারা আমায় তোমার ভাই ভাববে, আমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবে। এইভাবে তুমি আমার প্রাণ বাঁচাবে।”

14 তখন অব্রাম মিশরে গেলেন। মিশরীয় পুরুষরা দেখল যে সারী কত সুন্দরী। 15 মিশরের নেতারা কেউ কেউ তাঁকে দেখলেন। সারী যে কত সুন্দরী সে কথা তাঁরা স্বয়ং ফরৌণের কানে তুললেন। তাঁরা সারীকে ফরৌণের প্রাসাদে নিয়ে গেলেন। 16 অব্রামকে সারীর ভাই মনে করে ফরৌণ অব্রামের প্রতি সদয় ব্যবহার করলেন। অব্রামকে ফরৌণ মেষ, গবাদি পশু এবং বোঝা বইবার জন্য গাধা দিলেন। সেই সঙ্গে দাসদাসী এবং উটও পেলেন অব্রাম।

17 আর ফরৌণ অব্রামের স্ত্রীকে নিলেন। এই কারণে ফরৌণ এবং তাঁর প্রাসাদের সব লোকদের প্রভু ভয়ঙ্কর অসুখ দিলেন। 18 তখন ফরৌণ অব্রামকে ডেকে বললেন, “তুমি আমার প্রতি খুব অন্যায় করেছ! সারী যে তোমার স্ত্রী সে কথা আমায় বলো নি কেন? 19 তুমি কেন বলেছিলে যে সারী তোমার বোন? তোমার বোন মনে করে আমি ওকে আমার স্ত্রী করব বলে এনেছিলাম। কিন্তু এখন তোমায় তোমার স্ত্রী ফেরত দিচ্ছি। ওকে নিয়ে তুমি চলে যাও!” 20 তারপর ফরৌণ তাঁর লোকজনদের আদেশ করলেন, “অব্রামকে মিশরের বাইরে নিয়ে যাও।” সুতরাং অব্রাম ও তার স্ত্রী সেই দেশ ত্যাগ করলেন এবং সঙ্গে তাঁদের সমস্ত জিনিসপত্রও নিয়ে গেলেন।

অব্রামের কনানে প্রত্যাবর্তন

13 অতঃপর অব্রাম মিশর ত্যাগ করলেন। তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের সমস্ত জিনিসপত্র নিয়ে অব্রাম নেগেভের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হলেন। তাঁর সঙ্গে তখন লোটও ছিল। এই সময় অব্রাম খুবই ধনী। তাঁর প্রচুর পশু এবং প্রচুর সোনা ও রূপা ছিল।

অব্রাম তাঁর যাত্রা অব্যাহত রাখলেন। নেগেভ ত্যাগ করে তিনি বৈথেলে ফিরে গেলেন। সেখান থেকে বৈথেল নগর আর অয় নগরের মধ্যবর্তী স্থানে গেলেন। এখানেই অব্রাম ও তাঁর পরিবার আগে একবার শিবির স্থাপন করেছিলেন। এই স্থানটিতেই একটি বেদী নির্মাণ করেছিলেন। তাই অব্রাম এই স্থানটিতেই প্রভুর উপাসনা করলেন।

অব্রাম আর লোটের মধ্যে ছাড়াছাড়ি

এই পর্যটনের সময় অব্রামের সঙ্গে লোটও ছিল। লোটের অনেক পশু ও তাঁবু ছিল। অব্রাম আর লোটের এত পশু ছিল যে তাদের উভয়কে খাদ্য যোগাবার জন্য সেই দেশ অসমর্থ ছিল। এই সময় কনানীয় এবং পরিষীয় জাতিরাও সে দেশে বাস করত। অব্রামের পশুপালকদের সঙ্গে লোটের পশুপালকদের বিবাদ হতে লাগল।

তখন অব্রাম লোটকে বলল, “তোমার আমার মধ্যে কোনও বিবাদ থাকতে পারে না। তোমার লোকদের সঙ্গে আমার লোকদের কোন বিবাদ হওয়া উচিত নয়। আমরা সবাই পরস্পরের আপনজন। আমাদের পৃথক হয়ে যাওয়া উচিত। তোমার যে জায়গা পছন্দ সেই জায়গাতেই যাও। তুমি বাঁ দিকে গেলে আমি ডান দিকে যাব। যদি তুমি ডান দিকে যাও, আমি বাঁ দিকে যাব।”

10 লোট চোখ তুলে দেখল, সামনে বিস্তৃত যর্দন উপত্যকা। লোট দেখল জায়গাটা পর্যাপ্ত জলে সরস। (এটা প্রভু কর্ত্তৃক সদোম ও ঘমোরা ধ্বংস করার আগের ঘটনা। তখন সোয়র পর্যন্ত যর্দন উপত্যকা ছিল প্রভুর উদ্যানের মত। এখানকার মাটি ছিল মিশরের মাটির মত ভাল জাতের মাটি।) 11 তাই লোট যর্দন উপত্যকাতে বাস করবে বলে ঠিক করল। দুজনে পৃথক হয়ে গেল এবং লোট পূর্ব দিকে এগিয়ে চলল। 12 অব্রাম কনানেই থেকে গেলেন এবং লোট উপত্যকার জনপদগুলিতে বাস করতে লাগলেন। লোট উপত্যকার সূদুর দক্ষিণে সদোমে চলে গেলেন এবং সেখানেই তাঁবু পাতলেন। 13 প্রভু জানতেন যে সদোমের অধিবাসীরা মহাপাপী।

14 লোট চলে গেলে প্রভু অব্রামকে বললেন, “তোমার চারদিকে তাকিয়ে দেখ। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম চারদিকে তাকাও। 15 যত জমিজায়গা দেখতে পাচ্ছ, সব আমি তোমায় এবং তোমার বংশধরদের দেব। এ দেশ চিরকালের জন্যে তোমার হবে। 16 পৃথিবীর ধূলোর মত আমি তোমার উত্তরপুরুষদের সংখ্যাবৃদ্ধি করব। যদি লোকে পৃথিবীর সব ধূলো গুনতে পারে তাহলে তোমার লোকদের গোনা যাবে। 17 অতএব এগিয়ে যাও, তোমার নিজের দেশে তুমি হেঁটে বেড়াও। এই দেশ আমি তোমায় দিলাম।”

18 তখন অব্রাম তাঁর তাঁবু উঠিয়ে নিলেন। তিনি মম্রির উচ্চ বৃক্ষগুলির কাছে বাস করতে গেলেন। স্থানটি ছিল হিব্রোণ নগরের কাছে। সেখানে অব্রাম প্রভুর উদ্দেশ্যে উপাসনা করার জন্যে একটি বেদী নির্মাণ করলেন।

লোট বন্দী হল

14 শিমিয়রের রাজা ছিলেন অম্রাফল। অরিয়োক ছিলেন ইল্লাসরের রাজা। এলমের রাজা ছিলেন কদলায়োমর এবং গোয়ীমের রাজা তিদিয়ল। এইসব রাজা, সদোমের রাজা বিরা, ঘমোরার রাজা বির্শা, অদ্মার রাজা শিনাব, সবোয়িমের রাজা শিমেবর এবং বিলার (বিলা সোয়র নামেও পরিচিত ছিল) রাজার সঙ্গে যুদ্ধ করলেন।

এই সমস্ত রাজাদের সৈন্যবাহিনী সিদ্দীম উপত্যকায় মিলিত হল। (সিদ্দীম উপত্যকা বর্তমানে লবণ সমুদ্র।) এই রাজারা বারো বছর ধরে কদর্লায়োমরের অনুগত ছিল। কিন্তু 13তম বছরে তারা সবাই কদর্লায়োমরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল। সুতরাং 14তম বছরে রাজা কদর্লায়োমর ও তাঁর মিত্র রাজাদের সঙ্গে বিদ্রোহী রাজাদের যুদ্ধ হল। কদর্লায়োমর ও তাঁর মিত্র রাজারা অন্তরোৎ‌ কর্ণয়িমের অধিবাসী রফায়ীয় নামক জাতিকে পরাস্ত করলেন। তাঁরা হমের সুষীয়দেরও পরাস্ত করলেন এবং শাবি-কিরিয়াথয়িমের অধিবাসী এমীয়দের পরাস্ত করলেন। তারপর তাঁরা হোরীয়দের পরাস্ত করলেন। হোরীয়রা সেয়ীর থেকে এল-পারণ (এল-পারণ মরুভূমির কাছে অবস্থিত) পর্যন্ত পার্বত্য দেশে বাস করত। তারপর রাজা কদর্লায়োমের উত্তর দিকে গেলেন এবং ঐনমিস্পটে অর্থাৎ‌ কাদেশে গিয়ে সমস্ত অমালেকীয়দের পরাস্ত করলেন। তিনি হৎসসোন তামরের অধিবাসী ইমোরীয়দেরও পরাস্ত করলেন।

সেই সময় সদোমের রাজা, ঘমোরার রাজা, অদ্মার রাজা, সবোয়িমের রাজা এবং বিলার রাজা তাঁদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে সিদ্দীম উপত্যকায় যুদ্ধ করতে গেলেন। এই যুদ্ধে অপর পক্ষে ছিলেন এলমের রাজা কদর্লায়োমর, গোয়ীমের রাজা তিদিয়ল, শিনিয়রের রাজা অম্রাফল এবং ইলাসরের রাজা অরিয়োক। অর্থাৎ‌ যুদ্ধটা ছিল পাঁচজন রাজার বিরুদ্ধে চারজন রাজার।

10 সিদ্দীম উপত্যকায় আলকাতরায় পূর্ণ অনেক গর্ত ছিল। সদোম এবং ঘমোরার রাজা এবং তাদের সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গেল। অনেক সৈন্য ঐসব খাতে পড়ল। কিন্তু অধিকাংশই পাহাড়ে পর্বতে পালিয়ে গেল।

11 সুতরাং সদোম এবং ঘমোরার সমস্ত সরঞ্জাম, তাদের সমস্ত খাদ্যসম্ভার, বস্ত্রাদি এবং অন্যান্য সব জিনিসপত্র প্রতিপক্ষরা নিয়ে চলে গেল। 12 অব্রামের ভ্রাতুষ্পুত্র লোট তখন সদোমে বাস করছিল এবং সদোমের শত্রুরা লোটকে বন্দী করল, লোটের যা কিছু ছিল সব অধিকার করল। 13 লোটের একটি লোককে তারা বন্দী করতে পারে নি। সে পালিয়ে গিয়ে যা যা ঘটেছে সমস্ত অব্রামকে জানাল। অব্রাম তখন ইমোরীয়দের মম্রির গাছগুলির কাছে শিবিরে বাস করছিলেন। মম্রি, ইষ্কোল এবং আনেরের মধ্যে পরস্পরকে সাহায্য করার এক চুক্তি ছিল। তারা অব্রামকে সাহায্য করার একটা চুক্তিও করেছিল।

অব্রাম লোটকে উদ্ধার করলেন

14 লোট বন্দী হয়েছে জানতে পেরে অব্রাম পরিবারের সবাইকে ডেকে পাঠালেন। তাদের মধ্যে 318 জন শিক্ষিত সৈন্য ছিল। অব্রাম তাঁর লোকদের পরিচালনা করে শত্রুদের দূরে দান নগর অবধি তাড়িয়ে নিয়ে গেলেন। 15 সেই রাত্রে তিনি ও তাঁর সৈন্যরা অতর্কিতে শত্রুদের আক্রমণ করলেন। তাঁরা শত্রুদের পরাভূত করে দম্মেশকের উত্তরে হোবা পর্যন্ত বিতাড়িত করলেন। 16 তারপর শত্রুরা যা যা অধিকার করেছিল, সেই সমস্ত পুনরুদ্ধার করলেন। লোট, লোটের সমস্ত নারী ও ভৃত্যদের পর্যন্ত অব্রাম ফিরিয়ে আনলেন।

17 তারপর অব্রাম কদর্লায়োমর ও তাঁর সঙ্গে যোগদানকারী রাজাদের পরাস্ত করে তাঁর আগের জায়গায় ফিরে এলেন। তিনি ফিরে এলে সদোমের রাজা তাঁর সঙ্গে শাবী উপত্যকায় (এখন এই স্থান রাজার উপত্যকা নামে পরিচিত) দেখা করতে গেলেন।

মল্কীষেদক

18 শালেমের রাজা মল্কীষেদকও অব্রামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেন। মল্কীষেদক ছিলেন পরাৎ‌‌পর ঈশ্বরের একজন যাজক। মল্কীষেদক নিয়ে এলেন রুটি ও দ্রাক্ষারস। 19 অব্রামকে আশীর্বাদ করে মল্কীষেদক বললেন,

“হে অব্রাম, পরাৎ‌‌পর তোমাকে আশীর্বাদ করুন।
    ঈশ্বর স্বর্গ ও মর্ত্য সৃষ্টি করেছেন।
20 আমরা পরাৎ‌‌পর ঈশ্বরের প্রশংসা করি।
    তিনি শত্রুদের পরাস্ত করতে তোমাকে সাহায্য করেছেন।”

অব্রাম যুদ্ধের সময় যা যা পেয়েছিলেন তার থেকে এক দশমাংশ মল্কীষেদককে দিলেন। 21 সদোমের রাজা বললেন, “আপনি নিজের জন্যে সব রেখে দিন। শত্রুরা যে লোকদের নিয়ে গেছে শুধু আমার সেই লোকদের আমাকে দিন।”

22 কিন্তু সদোমের রাজাকে অব্রাম বললেন, “পরাৎ‌পর ঈশ্বর, যিনি স্বর্গ মর্ত্য সৃষ্টি করেছেন সেই প্রভুর কাছে আমি শপথ করছি। 23 যা কিছু আপনার তার কিছুই আমি রাখব না। আমি প্রতিশ্রুতি করছি যে আমি কিছুই রাখব না। এমনকি একটা সুতো অথবা জুতোর ফিতেও না। আমি চাই না যে আপনি বলবেন, ‘অব্রামকে আমি বড় লোক বানিয়েছি।’ 24 আমি শুধু সেটুকুই নেব যা আমার যোদ্ধারা খেয়েছে। কিন্তু অন্যদের আপনি তাদের ভাগ দিন। যুদ্ধে যা জিতেছি তা আপনি নিয়ে যান, কিন্তু কিছু আনের, ইষ্কোল এবং মম্রিকে দিয়ে যান। এরা যুদ্ধে আমায় সাহায্য করেছে।”

অব্রামের সঙ্গে ঈশ্বরের চুক্তি

15 এইসব ঘটনাবলির পরে অব্রাম দর্শনের মধ্যে প্রভুর কথা শুনতে পেলেন। ঈশ্বর বললেন, “অব্রাম চিন্তা কোরো না। আমি তোমায় রক্ষা করব। আমি তোমায় এক মহাপুরস্কার দেব।”

কিন্তু অব্রাম বললেন, “প্রভু ঈশ্বর, আমায় খুশী করার মত আপনি কিছুই দিতে পারবেন না। কেন? কারণ আমার কোনও পুত্র নেই। তাই আমার মৃত্যুর পরে আমার দম্মেশকীয দাস ইলীয়েষর আমার সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে।” অব্রাম বললেন, “আপনি আমায় পুত্র দেননি। তাই যে দাস আমার ঘরে জন্ম লাভ করেছে সে-ই পাবে আমার সমস্ত ধনসম্পত্তি।”

তখন প্রভু অব্রামের সঙ্গে কথা বললেন। ঈশ্বর বললেন, “ঐ দাস তোমার নিজের পুত্র হবে। এবং তোমার ঔরসজাত পুত্রই তোমার সমস্ত কিছুর উত্তরাধিকার পাবে।”

তখন ঈশ্বর অব্রামকে বাইরে ডেকে নিয়ে গেলেন। ঈশ্বর বললেন, “আকাশের দিকে তাকাও। দেখ, সেখানে কত তারা। এত তারা যে তুমি গুণতেই পারবে না। ভবিষ্যতে তোমার বংশধররাও ঐরকম অগুনতি হবে।”

অব্রাম ঈশ্বরকে বিশ্বাস করলেন এবং ঈশ্বর অব্রামের বিশ্বাসকে তার ধার্মিকতা হিসেবে বিবেচনা করলেন। এবং ঈশ্বর অব্রামকে বললেন, “আমিই সেই প্রভু, যিনি তোমায় বাবিলের উর থেকে নিয়ে এসেছিলেন, যাতে এই দেশটা আমি তোমায় দিতে পারি। এই দেশ তুমি পাবে।”

কিন্তু অব্রাম বললেন, “প্রভু আমার গুরু, এই দেশ যে আমি পাব তার নিশ্চয়তা কি?”

ঈশ্বর অব্রামকে বললেন, “আমরা একটা চুক্তি করব। আমায় একটা তিন বছরের বাছুর, তিন বছরের ছাগল আর তিন বছরের মেষ এনে দাও। একটা বাচ্চা পায়রা আর একটা ঘুঘুপাখীও এনে দাও।”

10 অব্রাম এই সমস্ত ঈশ্বরের কাছে এনে দিলেন। অব্রাম প্রাণীগুলি হত্যা করে এবং প্রতিটির দুটি করে খণ্ড করে ঐ খণ্ডগুলি থাক-থাক করে সাজিয়ে রাখলেন। কিন্তু পাখীগুলিকে অব্রাম দুখণ্ড করেন নি। 11 পরে ঐসব প্রাণীর মাংসখণ্ডের জন্য বড় বড় পাখী ছোঁ মেরে এলো। কিন্তু অব্রাম সেগুলি তাড়িয়ে দিলেন।

12 বেলা বাড়তে থাকল, ঢলে পড়তে লাগল সূর্য। অব্রামের ভীষণ ঘুম পেল এবং শেষ পর্যন্ত তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন নেমে এল এক ভীষণ অন্ধকার। 13 তখন প্রভু অব্রামকে বললেন, “তোমার কয়েকটা কথা জেনে রাখা উচিৎ‌। তোমার উত্তরপুরুষরা যে দেশে বাস করবে সেই দেশ তাদের নয়, সেখানে তারা বিদেশী বলে গণ্য হবে। এবং সেই দেশের অধিবাসীরা 400 বছর ধরে তোমার উত্তরপুরুষদের দাস করে রাখবে এবং তাদের উপর নানা উৎ‌পীড়ন করবে। 14 কিন্তু তারপর যে জাতি তোমার উত্তরপুরুষদের দাস করে রেখেছিল তাদের আমি শাস্তি দেব। তোমার উত্তরপুরুষরা সেই জাতি ত্যাগ করবে এবং তাদের সঙ্গে নিয়ে যাবে বহু ভাল জিনিস।

15 “তুমি নিজে বহুকাল জীবিত থাকবে। শান্তিতে তুমি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবে। তোমার সমাধি হবে তোমার পরিবারের মধ্যে। 16 চার প্রজন্ম পরে তোমার আত্মীয়স্বজনরা আবার এই দেশে আসবে। তখন তারা এখানকার অধিবাসী ইমোরীয়দের পরাস্ত করবে। তোমার আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে আমি ইমোরীয়দের শাস্তি দেব। এটা ভবিষ্যতে ঘটবে। কারণ ইমোরীয়রা এখনও আমার কাছে শাস্তি পাওয়ার মত খারাপ হয় নি।”

17 সূর্য অস্ত গেলে গাঢ় অন্ধকার ঘনাল। দুখণ্ড করা মৃত পশুগুলি তখনও মাটির উপরে পড়ে আছে। সেই সময় আগুন ও ধোঁয়ার স্তম্ভ মৃত পশুগুলির অর্ধেক খণ্ডগুলির মধ্য দিয়ে চলে গেল।[a]

18 সুতরাং ঐদিন প্রভু অব্রামকে একটা প্রতিশ্রুতি দিলেন এবং সেই অনুসারে অব্রামের সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন। প্রভু বললেন, “এই দেশ আমি তোমার উত্তরপুরুষদের দেব। মিশর নদ এবং ফরাৎ নদের মধ্যবর্তী বিশাল ভূভাগ আমি তাদের দেব। 19 এটা হল কেনীয়, কনিষীয়, কদ্মোনীয়, 20 হিত্তীয়, পরিষীয়, রফায়ীয়, 21 ইমোরীয়, কনানীয়, গির্গাশীয় এবং যিবুষীয় বংশগুলির দেশ।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International