Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Beginning

Read the Bible from start to finish, from Genesis to Revelation.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 করিন্থীয় 9-11

যে সব অধিকার পৌল প্রয়োগ করেন নি

আমি কি স্বাধীন মানুষ নই? আমি কি একজন প্রেরিত নই? আমাদের প্রভু যীশুকে কি আমি দেখিনি? তোমরাই কি প্রভুতে আমার কাজের দৃষ্টান্ত নও? অন্যরা আমাকে যদি প্রেরিত বলে গ্রহণ নাও করে, তবু তোমরা নিশ্চয় আমাকে প্রেরিত বলে মেনে নেবে। প্রভুতে আমি যে প্রেরিত তোমরাই তো তার প্রমাণ।

কিছু লোক যারা আমার দোষগুণ বিচার করে, তাদের কাছে আমার উত্তর এই; আমাদের কি ভোজন পান করার অধিকার নেই? অন্যান্য প্রেরিতেরা, প্রভুর আপন ভাইরা ও কৈফা যেমন করেন তেমনভাবে আমাদের কি কোন বিশ্বাসীকে স্ত্রী হিসাবে সঙ্গে নিয়ে যাবার অধিকার নেই? বার্ণবা ও আমাকেই কি কেবল জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করতে হবে? কোন সৈনিক কি তার নিজের খরচে সৈন্যদলে থাকে? যে দ্রাক্ষা ক্ষেত প্রস্তুত করে সে কি তার ফল খায় না? যে মেষপাল চরায় সে কি মেষদের দুধ পান করে না?

আমি এসব মানুষের বিচার বুদ্ধির ওপর নির্ভর করে বলছি না। ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থায় কি একই কথা বলে না? কারণ মোশির বিধি-ব্যবস্থায় আছে, “যে বলদ শস্য মাড়ে তার মুখে জালতি বেঁধো না।”(A) ঈশ্বর কি কেবল বলদের কথা ভেবেই একথা বলেছেন? 10 তা নয়, কিন্তু আমাদের কথা চিন্তা করেই তিনি এসব কথা বলেছেন, শাস্ত্রে আমাদের জন্যই এসব লেখা হয়েছে, কারণ যে চাষ করে, সে ফসল পাবার প্রত্যাশাতেই তা করে; আর যে শস্য মাড়াই করে, সে মাড়াই করা শস্য থেকে কিছু পাবার প্রত্যাশাতেই তা করে। 11 আমরা তোমাদের মাঝে আত্মিক বীজ বুনেছি, যেন এখন ফসল হিসাবে যদি তোমাদের কাছ থেকে পার্থিব কোন কিছু পাই, তবে তা কি খুব বেশী কিছু পাওয়া হবে? 12 এই ব্যাপারে তোমাদের কাছ থেকে অন্যেরা যখন দাবী করে, তখন তা পাবার জন্য আমাদের নিশ্চয় আরও বেশী অধিকার আছে। আমরা তোমাদের ওপর এই অধিকার খাটাই না। আমরা বরং সকলই সহ্য করছি, পাছে খ্রীষ্টের সুসমাচার গ্রহণের পথে কোন বাধার সৃষ্টি হয়। 13 তোমরা তো জান, যারা মন্দিরে কাজ করে, তারা মন্দির থেকেই তাদের খাবার পায়। যারা যজ্ঞবেদীর ওপর নিয়মিত নৈবেদ্য উৎসর্গ করে, তারা তারই অংশ পায়। 14 তেমনি প্রভুও সুসমাচার প্রচারকদের জন্য এই বিধান দিয়েছেন, যেন সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমেই তাদের জীবিকা নির্বাহ হয়।

15 কিন্তু আমি এই অধিকার কখনও প্রয়োগ করিনি। আমি তোমাদের কাছ থেকে ঐরকম সাহায্য নেবার জন্যও লিখছি না। এ বিষয়ে আমার যে গর্ব আছে, তা যদি কেউ কেড়ে নেয় তবে তার থেকে আমার মরণ ভাল। 16 তবে আমি সুসমাচার প্রচার করি বলে গর্ব করছি না। সুসমাচার প্রচার করা আমার কর্তব্য, এটি আমার অবশ্য করণীয়। আমি যদি সুসমাচার প্রচার না করি তবে তা আমার পক্ষে কত দুর্ভাগ্যের বিষয় হবে! 17 যদি নিজের ইচ্ছায় সুসমাচার প্রচার করতাম তবে আমি পুরস্কার পাবার যোগ্য হতাম। কিন্তু যেখানে আমি নিজে থেকে এই কাজ করিনি কিন্তু দায়িত্ব হিসাবে আমার ওপর এই কাজ ন্যস্ত হয়েছে, 18 সেখানে আমি কি পুরস্কার পাব? এই আমার পুরস্কার; যখন আমি সুসমাচার প্রচার করি, তা বিনামূল্যে করি। এইভাবে সুসমাচার প্রচার করা কালীন আমার বেতন পাবার যে অধিকার আছে, তা আমি ব্যবহার করি না।

19 আমি স্বাধীন! আমি কারোর অধীনে নেই, তবু আমি সকলের দাস হলাম, যাতে অনেককে আমি খ্রীষ্টের জন্য লাভ করতে পারি। 20 ইহুদীদের জয় করার জন্য আমি ইহুদীদের কাছে ইহুদীদের মতো হলাম। যারা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবন কাটাচ্ছে, তাদের লাভ করার জন্য আমি নিজে বিধি-ব্যবস্থার অধীন না হলেও আমি তাদের মত হলাম। 21 আবার যারা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে নেই তাদের জয় করার জন্য আমি তাদের মতো হলাম। অবশ্য এর মানে এই নয় যে আমি বিধি-ব্যবস্থা মানি না, আমি তো খ্রীষ্টের বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবনযাপন করছি। 22 যারা দুর্বল, তাদের কাছে আমি দুর্বল হলাম, যেন তাদেরকে জয় করতে পারি। আমি সকলের কাছে তাদের মনের মত হলাম, যাতে সম্ভাব্য সকল উপায়ে তাদের বাঁচাতে পারি। 23 আমি এসব সুসমাচারের জন্যই করি, যেন এর আশীর্বাদের সহভাগী হই।

24 তোমরা কি জান না, যখন দৌড় প্রতিযোগিতা হয় তখন অনেকেই দৌড়ায়; কিন্তু কেবল একজনই বিজয়ী হয়ে পুরস্কার পায়। তাই এমনভাবে দৌড়োও যেন পুরস্কার পাও! 25 আবার দেখ, যে সব প্রতিযোগী খেলায় অংশগ্রহণ করে, তারা কঠিন নিয়ম পালন করে। তারা অস্থায়ী বিজয় মুকুট পাবার জন্য তা করে; কিন্তু আমরা অক্ষয় মুকুটে ভূষিত হবার জন্য করি। 26 তাই সেইভাবে একটা লক্ষ্য নিয়ে আমি দৌড়োচ্ছি। শূন্যে মুষ্ট্যাঘাত করছে, এমন লোকের মত আমি লড়াই করি না। 27 বরং আমি আমার দেহকে কঠোরতা ও সংযমের মধ্যে রেখেছি, যেন অন্য লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার পর নিজে কোনভাবে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অযোগ্য বলে বিবেচিত না হই।

ইহুদীদের মতো হোয়ো না

10 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি চাই যে তোমরা একথা জান যে আমাদের পিতৃপুরুষরা যখন মোশিকে অনুসরণ করেছিলেন তখন তাঁদের কি হয়েছিল। তাঁরা সকলে মেঘের নীচে ছিলেন, সকলেই সাগর পার হয়েছিলেন। তাঁরা সকলে মোশির অনুগামী হয়ে মেঘে ও সমুদ্রে বাপ্তাইজ হয়েছিলেন। তাঁরা সকলে একই ধরণের আত্মিক খাদ্য খেয়েছিলেন; আর একই আত্মিক পানীয় পান করেছিলেন। তাঁরা এক আত্মিক শৈল থেকে সেই পানীয় পান করতেন যা তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল, সেই শৈলই হচ্ছেন খ্রীষ্ট। কিন্তু তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ লোকের প্রতিই ঈশ্বর সন্তুষ্ট ছিলেন না, আর তাঁরা পথে প্রান্তরের মধ্যে মারা পড়েছিলেন।

এসব ঘটনা আমাদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ ঘটল, যাতে তারা যেমন মন্দ বিষয়ে অভিলাষ করেছিল আমরা তা না করি। তাদের মধ্যে কিছু লোক যেমন প্রতিমা পূজা শুরু করেছিল তেমন তোমরা প্রতিমা পূজা শুরু করো না। কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে: “লোকেরা ভোজন পান করতে বসল আর উঠে দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করল।”(B) তাদের মধ্যে যেমন কতক লোক যৌন পাপে পাপী হয়েছিল আর একদিনে তেইশ হাজার লোক তাদের পাপের জন্য মারা পড়েছিল, আমরা যেন তেমনি যৌন পাপ না করি। তাদের মধ্যে যেমন কিছু লোক প্রভুকে পরীক্ষা করে সাপের কামড়ে মারা পড়েছিল, আমরা যেন তেমন পরীক্ষা না করি। 10 আবার তাদের মধ্যে কিছু লোক যেমন অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আর ধ্বংসকারী স্বর্গদূতের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়েছিল, তোমরা তেমনি অসন্তোষ প্রকাশ করো না।

11 তাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছিল তা দৃষ্টান্তস্বরূপ রয়ে গেছে। আমাদের সাবধান করে দেবার জন্য এসব কথা লেখা হয়েছে, কারণ আমরা শেষ যুগে এসে পৌঁছেছি। 12 তাই যে মনে করে যেন শক্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে, সে সাবধান হোক্, পাছে পড়ে মারা যায়। 13 যে প্রলোভনগুলি স্বাভাবিকভাবে লোকদের কাছে আসে তার থেকে বেশী কিছু তোমাদের কাছে আসেনি। তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বস্ত থাক, যে সব প্রলোভন প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তোমাদের নেই, তিনি তা তোমাদের জীবনে আসতে দেবেন না; কিন্তু প্রলোভনের সাথে সাথে তার থেকে উদ্ধারের পথ তিনিই করে দেবেন, যেন তোমরা সহ্য করতে পার।

14 আমার প্রিয় বন্ধুরা, সব রকম প্রতিমা পূজা থেকে দূরে থাক। 15 আমি তোমাদের বুদ্ধিমান জেনে একথা বলছি। আমি যা বলি তা তোমরা নিজেরাই বিচার করে দেখ। 16 আশীর্বাদের পানপাত্র, যা নিয়ে আমরা ধন্যবাদ দিই তা কি খ্রীষ্টের রক্তের সহভাগীতা নয়? যে রুটি ভেঙে টুকরো টুকরো করে খাওয়া হয়, তা কি খ্রীষ্টের দেহের সহভাগীতা নয়? 17 রুটি একটাই কিন্তু আমরা সকলেই সেই একটা রুটি থেকেই অংশ গ্রহণ করি। তাই আমরা অনেক হলেও আসলে আমরা এক দেহ।

18 ইস্রায়েল জাতির কথা চিন্তা কর। যারা বলির মাংস খায় তারা কি সেই যজ্ঞবেদীর নৈবেদ্যর সহভাগী হয় না? 19 তাহলে আমার কথার অর্থ কি হল? আমি কি এই কথা বলছি যে, প্রতিমার কাছে যেসব ভোগ উৎসর্গ করা হয় তার কোন তাৎপর্য আছে অথবা প্রতিমার কোন বাস্তবতা আছে? 20 কিন্তু আমার কথার অর্থ এই লোকেরা যা কিছু প্রতিমার উদ্দেশ্যে বলিদান করে, তারা তা ভূতদের উদ্দেশ্যেই করে, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নয়; আর আমি চাই না যে তোমাদের কোনভাবে ভুতদের সঙ্গে সংযোগ থাকে। 21 তোমরা প্রভুর পানপাত্র ও ভুতদের পানপাত্র, উভয় থেকে পান করতে পার না। আবার তোমরা প্রভুর টেবিল ও ভুতদের টেবিল উভয় টেবিলে অংশ নিতে পার না। 22 তোমরা কি প্রভুকে ঈর্ষান্বিত করতে চাইছ? আমরা কি তাঁর থেকে শক্তিশালী? কখনই না।

তোমাদের স্বাধীনতা ঈশ্বরের মহিমার জন্য ব্যবহার কর

23 “আমাদের সব কিছু করার স্বাধীনতা আছে।” তবে সব কিছুই যে মঙ্গলজনক তা নয়। “হ্যাঁ, যে কোন কিছু করার স্বাধীনতা আমাদের দেওয়া আছে।” তবে সব কিছুই যে গড়ে তোলে তা নয়। 24 কেউ যেন স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা না করে; বরং প্রত্যেকে যেন অপরের মঙ্গল চায়।

25 বিবেকের প্রশ্ন না তুলে যে কোন মাংস বাজারে বিক্রি হয় তা খাও। 26 কারণ শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে: “পৃথিবী ও তার মধ্যেকার সব কিছুই প্রভুর।”(C)

27 যদি কোন অবিশ্বাসী ভাই তোমাকে নিমন্ত্রণ করে আর যদি তুমি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে চাও, তবে নিজের বিবেকের কাছে কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করে যে কোন খাদ্যদ্রব্য পরিবেশন করে সামনে রাখা হয়, তা খেও। 28 কিন্তু কেউ যদি বলে যে, “এ হল প্রতিমার প্রসাদ” তবে যে জানালো, তার কথা চিন্তা করে ও বিবেকের কথা মনে রেখে, তা খেও না। 29 আমি কোন ব্যক্তির নিজের বিবেকের নয়, কিন্তু অপর ব্যক্তির বিবেকের বিষয় বলছি। আমার স্বাধীনতা কেন অপরের বিবেক বিচার করবে? 30 যদি আমি ধন্যবাদ জানিয়ে খাই, তাহলে যে বিষয়ের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়েছি সে বিষয়ে আমার সমালোচনা হবে এ আমি চাই না।

31 তাই তোমরা আহার কর, কি পান কর বা যা কিছু কর, সব কিছুই ঈশ্বরের মহিমার জন্য কর। 32 কি ইহুদী, কি গ্রীক, কি ঈশ্বরের মণ্ডলী, কারো বিঘ্নের কারণ হয়ো না। 33 যেমন আমি নিজের ভাল চাই না কিন্তু অপরের ভাল চাই, যেন তারা উদ্ধার লাভ করে।

11 আমি যেমন খ্রীষ্টের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করি, তোমরাও তেমনি আমার দৃষ্টান্ত অনুসরণ কর।

কর্ত্তৃত্বের অধীনে থাকা

আমি তোমাদের প্রশংসা করছি, কারণ তোমরা সব সময় আমার কথা স্মরণ করে থাক, আর তোমাদের আমি যে শিক্ষা দিয়েছি তা তোমরা বেশ ভালভাবে পালন করছ। কিন্তু আমি চাই একথা তোমরা বোঝ যে প্রত্যেক পুরুষের মস্তক হচ্ছেন খ্রীষ্ট। স্ত্রীর মস্তক তার স্বামী, আর খ্রীষ্টের মস্তক হলেন ঈশ্বর।

যদি কোন পুরুষ তার মাথা ঢেকে রেখে প্রার্থনা করে অথবা ভাববাণী বলে তবে সে তার মাথার অসম্মান করে। কিন্তু যে স্ত্রীলোক মাথা না ঢেকে প্রার্থনা করে বা ভাববানী বলে, সে তার নিজের মাথার অপমান করে, সে মাথা মোড়ানো স্ত্রীলোকের মত হয়ে পড়ে। স্ত্রীলোক যদি তার মাথা না ঢাকে তবে তার চুল কেটে ফেলাই উচিত। কিন্তু চুল কেটে ফেলা বা মাথা নেড়া করা যদি স্ত্রীলোকের পক্ষে লজ্জার বিষয় হয়, তবে সে তার মাথা ঢেকে রাখুক।

আবার পুরুষ মানুষের মাথা ঢেকে রাখা উচিত নয়, কারণ সে ঈশ্বরের স্বরূপ ও মহিমা প্রতিফলন করে। কিন্তু স্ত্রীলোক হল পুরুষের মহিমা। কারণ স্ত্রীলোক থেকে পুরুষের সৃষ্টি হয় নি; কিন্তু পুরুষ থেকেই স্ত্রীলোক এসেছে। স্ত্রীলোকের জন্য পুরুষের সৃষ্টি হয় নি, কিন্তু পুরুষের জন্য স্ত্রীলোকের সৃষ্টি হয়েছিল। 10 এই কারণে এবং স্বর্গদূতগণের জন্য অধীনতার চিহ্ন হিসাবে একজন স্ত্রীলোক তার মাথা ঢেকে রাখবে।

11 যাই হোক্ প্রভুতে স্ত্রীলোক ছাড়া পুরুষ নয়, এবং পুরুষ ছাড়া স্ত্রীলোক নয়। 12 যেমন পুরুষ থেকে স্ত্রীলোকের সৃষ্টি হল, তেমন আবার পুরুষের জন্ম স্ত্রীলোক থেকে হল, বাস্তবে এ সবকিছুই ঈশ্বর থেকে হয়।

13 তোমরা নিজেরাই বিচার করে দেখ, মাথা না ঢেকে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা কি স্ত্রীলোকের শোভা পায়? 14 স্বাভাবিক বিবেচনাও বলে যে পুরুষ মানুষ যদি লম্বা চুল রাখে তবে তার সম্মান থাকে না। 15 কিন্তু স্ত্রীলোকের লম্বা চুল তার গৌরবের বিষয় কারণ সেই লম্বা চুল তার মাথা ঢেকে রাখার জন্য তাকে দেওয়া হয়েছে। 16 কেউ কেউ হয়তো এ নিয়ে তর্ক করতে চাইবে, কিন্তু আমরা ও ঈশ্বরের সকল মণ্ডলী, এই প্রথা মেনে চলি না।

প্রভুর ভোজ

17 কিন্তু এখন আমি যে বিষয়ে তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি সেই বিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করতে পারি না, কারণ তোমরা যখন একত্রিত হও তাতে ভাল না হয়ে শুনছি তোমাদের ক্ষতি হচ্ছে। 18 প্রথমতঃ আমি শুনেছি যে তোমরা যখন মণ্ডলীতে সমবেত হও, তখন তোমাদের মধ্যে অনেক দল থাকে, আর আমি এই ব্যাপারে কিছুটা বিশ্বাস করি। 19 তোমাদের মধ্যে ভিন্নতা অবশ্যই থাকবে, যাতে তোমাদের মধ্যে যারা যথার্থ খাঁটি তারা স্পষ্ট হয়।

20 তাই যখন তোমরা সমবেত হও, তখন তোমরা প্রকৃতপক্ষে প্রভুর ভোজ খাও না। 21 কারণ খাবার সময় প্রত্যেকে নিজের নিজের খাবার আগে খেয়ে নেয়, তাতে কেউ বা ক্ষুধার্ত থাকে; আর কেউ কেউ অতিরিক্ত পানাহার করে বেহুঁস হয়ে যায়। 22 পানাহার করার জন্য তোমাদের কি নিজেদের বাড়ীঘর নেই? তোমরা কি ঈশ্বরের মণ্ডলীকে তুচ্ছ জ্ঞান কর? আর যাদের কিছু নেই তাদের কি লজ্জায় ফেলতে চাও? আমি তোমাদের কি বলব? এমন কাজ করার জন্য আমি কি তোমাদের প্রশংসা করব? এবিষয়ে আমি তোমাদের প্রশংসা করব না।

23 আমি প্রভুর কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি তোমাদের তা দিয়েছি। যে রাত্রে প্রভু যীশুকে হত্যার জন্য শত্রুর হাতে সঁপে দেওয়া হয়, সেই রাত্রে তিনি একটি রুটি নিয়ে, 24 ধন্যবাদ দিলেন ও তা ভেঙে বললেন, “এ আমার দেহ; এ তোমাদের জন্য, আমার স্মরণে এটি করো।” 25 খাওয়া শেষ হলে, সেইভাবে তিনি পানপাত্র তুলে নিয়ে বললেন, “এই পানপাত্র হল আমার রক্তে স্থাপিত নতুন চুক্তি। তোমরা যতবার এই পানপাত্র থেকে পান করবে আমার স্মরণে তা করো।” 26 কারণ তোমরা যতবার এই রুটি খাবে ও এই পানপাত্রে পান করবে, ততবার তোমরা প্রভুর মৃত্যুর কথাই প্রচার করতে থাকবে, যতদিন পর্যন্ত না তিনি ফিরে আসেন।

27 তাই যে কেউ অযোগ্যভাবে প্রভুর এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে প্রভুর দেহের ও রক্তের জন্য দায়ী হবে। 28 এই রুটি খাওয়ার ও সেই পানপাত্রে পান করার আগে প্রত্যেকের উচিত নিজের হৃদয় পরীক্ষা করা। 29 কারণ যে অযোগ্যভাবে এই রুটি খায় ও পানপাত্রে পান করে, সে যদি দেহের অর্থ কি তা না বোঝে তবে সেই খাদ্য পানীয় ঈশ্বরের বিচারদণ্ডেই পরিণত হয়। 30 সেই জন্য তোমাদের মধ্যে অনেকে আজ দুর্বল ও অসুস্থ, অনেকে মারাও পড়েছে। 31 কিন্তু যদি নিজেদের ঠিক মতো পরীক্ষা করতাম, তাহলে ঈশ্বরকে আমাদের বিচার করতে হত না। 32 কিন্তু যখন প্রভু আমাদের বিচার করেন, তিনি আমাদের শাসনও করেন, যাতে আমরা জগতের জন্য লোকদের সঙ্গে বিচারপ্রাপ্ত না হই।

33 তাই, আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন খাওয়া-দাওয়া করার জন্য সমবেত হও, তখন একজন অন্য জনের জন্য অপেক্ষা করো। 34 যদি কারোর খিদে পায়, তবে সে তার বাড়িতে খেয়ে নিক্। এমনভাবে চল যেন তোমরা একত্রিত হলে তোমাদের ওপর ঈশ্বরের দণ্ডাজ্ঞা না আসে; আর আমি যখন যাব তখন অন্য বিষয়গুলির সমাধান করব।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International