Book of Common Prayer
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: “চুক্তির লিলিফুল” গানটির পর্দায় গাওয়া আসফের একটি প্রশংসা গীত।
80 হে ইস্রায়েলের মেষপালক, আমার কথা শুনুন।
আপনি যোষেফের লোকদের মেষের মত পরিচালিত করেছেন।
করূব দূতের ওপর আপনি রাজার মত বসেন।
আপনাকে আমাদের দেখতে দিন।
2 হে ইস্রায়েলের মেষপালক ইফ্রয়িম, বিন্যামীন এবং মনঃশির প্রতি আপনার মহত্ব প্রদর্শন করুন।
আপনি এসে আমাদের রক্ষা করুন।
3 ঈশ্বর, পুনর্বার আমাদের গ্রহণ করুন।
আমাদের গ্রহণ করুন, আমাদের রক্ষা করুন!
4 প্রভু, হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, কখন আপনি আমাদের প্রার্থনা শুনবেন?
আপনি কি চিরদিনের মত আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে থাকবেন?
5 খাদ্য হিসেবে আপনার লোকদের আপনি চোখের জল দিয়েছেন।
আপনার লোকদের আপনি তাদেরই চোখের জলে ভর্ত্তি গামলা দিয়েছেন।
সেটাই ছিল তাদের পানীয় জল।
6 আমাদের শত্রুদের জন্য আপনি আমাদের ঝগড়ার কারণ হবার লক্ষ্য বানিয়েছেন
এবং শত্রুরা আমাদের বিদ্রূপ করে।
7 হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, পুনরায় আমাদের গ্রহণ করুন।
আমাদের গ্রহণ করুন, আমাদের রক্ষা করুন।
8 অতীতে আপনি আমাদের প্রতি
গুরুত্বপূর্ণ চারা গাছের মতই যত্ন নিয়েছিলেন।
মিশর থেকে আপনি আপনার দ্রাক্ষালতা এনেছিলেন।
অন্যান্য লোকদের আপনি এদেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং আপনার দ্রাক্ষালতা আপনি এখানে রোপণ করেছিলেন।
9 সেই দ্রাক্ষালতার জন্য আপনি জমি তৈরী করেছিলেন।
এর শিকড়গুলোকে আপনি জমির গভীরে বাড়তে সাহায্য করেছিলেন, খুব তাড়াতাড়ি এই দ্রাক্ষালতা সারা দেশ ছেয়ে ফেলেছে।
10 এটি পর্বতকে ঢেকে দিয়েছে।
এর পাতাগুলি বৃহৎ এরস গাছকেও ছায়া দিয়েছে।
11 এই দ্রাক্ষালতা ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে।
এর লতাপাতা ফরাৎ নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
12 ঈশ্বর, যে প্রাচীর আপনার দ্রাক্ষালতাকে রক্ষা করতো, কেন তাকে ভেঙে ফেললেন?
এখন যে কোন ব্যক্তিই এর ধার দিয়ে যায়, সেই এর দ্রাক্ষা তুলে নিয়ে যায়।
13 বুনো শূকররা এসে আমাদের দ্রাক্ষাক্ষেতে ঘুরে বেড়ায়।
বুনো জন্তুরা এসে এর পাতা খায়।
14 হে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আপনি আসুন।
স্বর্গ থেকে আপনার দ্রাক্ষাক্ষেত দেখুন এবং তাকে রক্ষা করুন।
15 হে ঈশ্বর, নিজ হাতে যে দ্রাক্ষালতা আপনি লাগিয়েছিলেন, তার দিকে দেখুন।
যে চারাগাছকে[a] আপনি বড় হতে দিয়েছেন তার দিকে দেখুন।
16 শুকনো গোবরের মত আপনার দ্রাক্ষালতা পুড়ে গিয়েছিলো।
আপনি এর প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে একে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।
17 হে ঈশ্বর, যে সন্তান আপনার ডানদিকে দাঁড়িয়ে ছিল তার দিকে হাত বাড়ান।
যে সন্তানকে আপনি বড় করেছেন তার দিকে হাত বাড়ান।
18 সে আর আপনাকে ছেড়ে যাবে না।
তাকে বাঁচতে দিন, সে আপনার নামের উপাসনা করবে।
19 হে প্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, আমাদের কাছে ফিরে আসুন।
আমাদের গ্রহণ করুন। আমাদের রক্ষা করুন।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: যিদুথূনের প্রতি আসফের একটি গীত।
77 আমি ঈশ্বরের কাছে কেঁদে পড়েছিলাম এবং সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেছি।
হে ঈশ্বর, আমি উচ্চস্বরে আপনাকে ডেকেছি, আমার কথা শুনুন!
2 আমার প্রভু, যখনই আমি সমস্যায় পড়ি তখনই আমি আপনার কাছে আসি।
সারা রাত আমি আপনার দিকে আমার দুবাহু বাড়িয়ে দিয়েছিলাম।
আমার আত্মা আরাম পেতে অস্বীকার করেছিল।
3 আমি ঈশ্বর বিষয়ে চিন্তা করেছি এবং আমি যা অনুভব করেছি তা বলতে চেয়েছি।
কিন্তু আমি পারি নি।
4 আপনি আমাকে ঘুমাতে দেন নি।
আমি কিছু বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি এত বিচলিত ছিলাম যে কথা বলতে পারছিলাম না।
5 আমি অতীতের কথা চিন্তা করছিলাম।
বহু অতীতে যা ঘটে গেছে আমি সেই সব চিন্তা করেছিলাম।
6 রাত্রে আমি আমার গানগুলো সম্পর্কে ভাবি।
আমি নিজের সঙ্গে কথা বলি এবং বুঝতে চেষ্টা করি।
7 আমি বিস্মিত হই, “আমাদের প্রভু কি চিরদিনের মত আমাদের ত্যাগ করে চলে গেলেন?
আবার কি তিনি আমাদের চাইবেন?
8 ঈশ্বরের প্রেম কি চিরদিনের জন্য চলে গেল?
আবার কি তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন?
9 ঈশ্বর কি কৃপা দেখাতে ভুলে গেলেন?
তাঁর সহানুভূতি কি ক্রোধে রূপান্তরিত হয়েছে?”
10 তারপর আমি ভাবলাম, “যে বিষয়টা আমায় সব থেকে বেশী বিব্রত করলো তা হল:
পরাৎপর কি তাঁর ক্ষমতা হারিয়েছেন?”
11 প্রভু কি করেছেন তা আমার স্মরণে আছে।
হে ঈশ্বর, অতীতে যে সব আশ্চর্য কার্য আপনি করেছিলেন, তা আমার স্মরণে আছে।
12 আপনি যা করেছেন, তা নিয়ে আমি ভেবেছি,
সে সম্পর্কে আমি চিন্তা করেছি।
13 ঈশ্বর, আপনার পথই পবিত্র পথ।
ঈশ্বর কেউই আপনার মত মহৎ নয়।
14 আপনিই সেই ঈশ্বর, যিনি আশ্চর্য কার্য করেছেন।
আপনি লোকদের আপনার পরাক্রমের পরিচয় দিয়েছেন।
15 আপনার ক্ষমতাবলে আপনি আপনার লোকদের রক্ষা করেছেন।
যাকোব এবং যোষেফের উত্তরপুরুষদের আপনি রক্ষা করেছেন।
16 ঈশ্বর, আপনাকে দেখে জলও ভীত হয়েছিলো।
গভীর জলরাশি আপনাকে দেখে ভয়ে কেঁপে গিয়েছিলো।
17 ঘন মেঘে জল সিঞ্চন করেছিলো।
লোকে উঁচু মেঘে দারুণ বজ্র নির্ঘোষ শুনেছিলো।
তারপর আপনার বিদ্যুতের তীর সারা মেঘে ঝলক দিয়ে উঠেছিলো।
18 গুরু গুরু গর্জনের বজ্রধ্বনিতে আকাশ ভরে উঠেছিলো।
বিদ্যুৎ ঝলকে সারা পৃথিবী আলোকিত হয়ে উঠেছিলো।
পৃথিবী শিহরিত ও কম্পিত হয়েছিলো।
19 ঈশ্বর, গভীর জলের মধ্যে দিয়ে আপনি হেঁটে গেলেন, গভীর সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে হেঁটে গেলেন।
কিন্তু সেখানে আপনি কোন চরণচিহ্ন রেখে যান নি।
20 মোশি এবং হারোণের মধ্যে দিয়ে
আপনি আপনার লোকদের মেষের মত পরিচালিত করেছেন।
আসফের প্রশংসা গীতের অন্যতম।
79 হে ঈশ্বর, অন্য জাতিসমূহের কিছু লোক আপনার লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এসেছিলো।
ওই সব লোক আপনার পবিত্র মন্দির ধ্বংস করেছে।
ওরা জেরুশালেমকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
2 হিংস্র পাখীদের খাওয়ানোর জন্য ওরা আপনার সেবকদের দেহ ফেলে রেখে গেছে।
বুনো পশুদের খাওয়ানোর জন্য ওরা আপনার অনুগামীদের দেহ ফেলে রেখে গেছে।
3 হে ঈশ্বর, যতক্ষণ না জলের মত রক্ত বয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ওরা আপনার লোকদের হত্যা করেছে,
মৃতদেহগুলোকে কবর দেওয়ার মত একজনও অবশিষ্ট নেই।
4 আমাদের চারপাশের দেশগুলো আমাদের অপমান করেছে।
আমাদের চারপাশের লোকেরা আমাদের নিয়ে উপহাস করেছে এবং আমাদের নিয়ে মজা করেছে।
5 ঈশ্বর, চিরদিনই কি আপনি আমাদের প্রতি ক্রুদ্ধ থাকবেন?
আপনার তীব্র আবেগ কি আগুনের মতই জ্বলতে থাকবে?
6 হে ঈশ্বর, যে সব জাতি আপনাকে জানে না তাদের ওপর আপনার ক্রোধ দেখান।
সেই সব রাজ্য যারা আপনার নামের উপাসনা করে না, তাদের ওপর আপনার ক্রোধ উজাড় করে দিন।
7 ওইসব জাতি যাকোবকে বিনষ্ট করেছে।
ওরা যাকোবের দেশকে ধ্বংস করেছে।
8 ঈশ্বর, আমাদের পূর্বপুরুষের পাপের জন্য আমাদের শাস্তি দেবেন না।
শীঘ্রই আপনার করুণা প্রদর্শন করুন!
আমাদের ভীষণভাবে আপনাকে প্রয়োজন!
9 হে আমাদের পরিত্রাতা ঈশ্বর, আমাদের সাহায্য করুন! সাহায্য করুন! পরিত্রাণ করুন!
তা আপনার নামের মহিমা এনে দেবে।
আপনার নামের ধার্ম্মিকতার জন্য
আমাদের পাপ মুছে দিন।
10 আমাদের উদ্দেশ্যে, অন্য জাতিকে এই কথা বলতে দেবেন না,
“কোথায় তোমাদের ঈশ্বর? তিনি কি তোমাদের সাহায্য করতে পারেন না?”
ঈশ্বর, ঐ লোকদের শাস্তি দিন এবং সেই শাস্তি যেন আমরা দেখতে পাই।
আপনার সেবকদের হত্যা করার জন্য ওদের শাস্তি দিন।
11 দয়া করে বন্দীদের আর্তনাদ শুনুন!
ঈশ্বর, যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, আপনার মহৎ শক্তি ব্যবহার করে তাদের রক্ষা করুন।
12 হে ঈশ্বর, আমাদের চারপাশের লোকরা আমাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করেছে, তার জন্য ওদের আপনি সাত গুণ বেশী শাস্তি দিন।
আপনাকে অপমান করার জন্য ওদের শাস্তি দিন।
13 আমরা আপনারই লোক। আমরাই আপনার পালের মেষ।
আমরা চিরদিন আপনার প্রশংসা করবো।
ঈশ্বর, আদি অনন্তকাল ধরে আমরা আপনার প্রশংসা করবো!
ইস্রায়েলীয়দের পাপ স্বীকার
9 ঐ মাসেরই 24 দিনের মাথায় ইস্রায়েলীয়রা উপবাসের জন্য জড়ো হল। সে সময় সকলে দুঃখ প্রকাশের জন্য চটের পোশাক পরা ছাড়াও মাথায় ছাই লাগিয়েছিল। 2 ইস্রায়েলের আদি বাসিন্দারা বিদেশীদের থেকে নিজেদের আলাদা রেখেছিল। তারা সকলে মন্দিরে দাঁড়িয়ে তাদের ও তাদের পূর্বপুরুষদের পাপ স্বীকার করল। 3 তারা সেখানে তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে প্রভু, তাদের ঈশ্বরের বিধিপুস্তক পাঠ করল। তারপর আরো তিন ঘন্টা প্রভু তাদের ঈশ্বরকে প্রার্থনা করবার জন্য এবং পাপ স্বীকার করবার জন্য মাথা নীচু করে রইল।
4 তারপর এইসব লেবীয়রা সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে রইল: যেশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, শবনিয়, বুন্নি, শেরেবিয়, বানি, কনানী। তারা উচ্চস্বরে তাদের প্রভু, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে লাগল। 5 এরপর যেশূয়, বানি, কদ্মীয়েল, বুন্নি, হশব্নির, শেরেবিয়, হোদিয়, শবনিয়, পথাহিয় প্রমুখ লেবীয়রা বলল, “উঠে দাঁড়াও এবং তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর! ঈশ্বর সর্বদা ছিলেন এবং তিনি চির দিন থাকবেনও।
“মানবজাতি তোমার মহান নামের প্রশংসা করুক!
তোমার নাম সব কিছুর ঊর্দ্ধে উঠুক এবং বন্দিত হোক্!
6 হে প্রভু,
একমাত্র তুমিই ঈশ্বর!
তুমিই সেই জন, যে আকাশ তৈরী করেছে!
তুমিই মহান স্বর্গ আর মর্ত্যে যা কিছু আছে সে সব,
পৃথিবী আর অভ্যন্তরস্থ সব কিছু
আর সমুদ্র মধ্যস্থিত সব কিছু সৃষ্টি করেছ।
সবেতে তুমিই দিয়েছো জীবনের ছোঁয়া
এবং সমস্ত স্বর্গীয় দেবদূতরা নত হয়ে তোমার উপাসনা করে!
7 হে প্রভু, তুমিই আমাদের ঈশ্বর।
তুমিই সেই জন যে অব্রামকে মনোনীত করে
বাবিলের ঊর থেকে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলে
এবং তার নাম বদলে অব্রাহাম রেখেছিলে।
8 তুমিই তার আনুগত্য এবং সততা লক্ষ্য করেছ।
তুমিই সেই জন যে তার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলে
এবং তাকে ও তার উত্তরপুরুষদের
কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, যিবূষীয় এবং গির্গাশীয়দের জমিগুলি দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে।
তুমি তোমার প্রতিশ্রুতি রেখেছো
কারণ তুমি ভাল।
9 তুমি মিশরে আমাদের পূর্বপুরুষদের দুর্গতি দেখেছিলে
ও লোহিত সাগর থেকে তাদের এন্দন শুনেছিলে।
10 তুমি ফরৌণে তার আধিকারিকদের
ও তার লোকদের কাছে নানা চিহ্ন ও অদ্ভুত কার্য দেখিয়েছিলে।
তুমি জানতে যে, মিশরীয়রা নিজেদের
আমাদের পূর্বপুরুষদের থেকে শ্রেষ্ঠতর ভাবত।
কিন্তু তুমি প্রমাণ করলে, তুমি কত মহান!
আজ পর্যন্ত তারা তা স্মরণ করে।
11 তুমি তাদের চোখের সামনে লোহিত সাগরকে দ্বিখণ্ডিত করলে
আর শুকনো জমির ওপর দিয়ে হেঁটে গেলে
কিন্তু তুমি তাড়া করে আসা শত্রুদের সমুদ্র ফেলে দিলে।
তারা পাথরের মতো সমুদ্রে ডুবে গেল।
12 একটি উঁচু মেঘ দিয়ে দিনের বেলা তুমি তাদের পথ দেখালে।
রাতের বেলা, একটি আলোকস্তম্ভ দিয়ে তুমি তাদের পথ দেখালে।
তুমি তাদের দেখালে কোথায় যেতে হবে।
13 এরপর সীনয় পর্বতে স্বর্গের চূড়া থেকে
তুমি স্বয়ং কথা বলে
তাদের দিলে প্রকৃত শিক্ষা, যা ভালো;
তুমি তাদের বিধিসমূহ ও আজ্ঞা দিলে যেগুলি ভালো।
14 তুমি তোমার দাস, মোশির মাধ্যমে তোমার পবিত্র বিশ্রামের দিনের কথা তাদের জানালে।
তুমি তাদের আজ্ঞা, বিধিসমূহ এবং শিক্ষামালা দিলে।
15 ওরা সকলে ক্ষুধার্ত ছিল,
তাই তুমি স্বর্গ থেকে সবাইকে খাবার দিলে।
ওরা সকলে তৃষ্ণার্ত ছিল,
তাই তুমি পাথর থেকে সবাইকে জল দিলে।
তারপর তুমি ওদের যেতে বললে
ও প্রতিশ্রুত ভূমি দখল করতে বললে।
তোমার ক্ষমতা দিয়ে তুমি সেই ভূখণ্ড
অন্যদের কাছ থেকে নিয়েছিলে।
16 কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা গর্বোদ্ধত ও জেদী হল
এবং তোমার আজ্ঞা লঙ্ঘন করল।
17 তারা শুনতে অস্বীকার করল।
তুমি যে আশ্চর্য জিনিষগুলি তাদের জন্য করেছিলে তা তারা ভুলে গেল।
তাদের জেদের কারণে
তারা আবার ক্রীতদাস হয়ে মিশরে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নিল।
“কিন্তু তুমি দয়ালু ঈশ্বর!
ক্ষমা, করুণা, ধৈর্য্য
ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ তোমার হৃদয়।
তাই তুমি তাদের পরিত্যাগ করনি।
18 এমনকি যখন তারা সোনার বাছুরের মূর্ত্তি বানিয়ে বলেছে, ‘এই মূর্ত্তিগুলোই আমাদের মিশর থেকে বাইরে এনেছে,’
তখনও তুমি তাদের বাতিল কর নি।
19 কিন্তু তোমার মহান করুণার জন্য
তুমি ওদের মরুভূমিতে পরিত্যাগ করনি।
তুমি দিনের বেলা উঁচু মেঘটিকে সরিয়ে নাওনি,
রাতেও আগুনের স্তম্ভটি সরিয়ে নাওনি।
তুমি তোমার পবিত্র আলো দিয়ে
তাদের পথ আলোকিত করা
এবং তাদের পথ দেখিয়ে চলা অব্যাহত রেখেছ।
20 তুমি তাদের বিচক্ষণ করে তোলার জন্য তোমারই ভাল আত্মা দিয়েছ।
খাদ্য হিসেবে তুমি ওদের মান্না দিয়েছ
এবং জল দিয়েছ তাদের তৃষ্ণা মেটাতে।
21 তুমি 40 বছর ধরে এদের প্রতিপালন করেছো।
তুমি মরুভূমিতে যা কিছু প্রয়োজন ছিল তা দিয়েছো।
ওদের পোশাকগুলি ছিঁড়ে যায়নি।
ওদের পা ফুলে যায়নি।
22 হে প্রভু, তুমি ওদের রাজত্ব, জাতি
এবং বহু দূরের জায়গাগুলি যেখানে অল্প কিছু লোক বাস করত, তা দিয়েছ।
তুমি ওদের সীহোনের ভূখণ্ড, হিষ্বোণের রাজা,
ওগের ভূখণ্ড এবং বাশনের রাজা দিয়েছিলে।
23 তুমি আকাশের নক্ষত্রের মতো
ওদের উত্তরপুরুষদের সংখ্যায় বাড়িয়েছো।
তুমি তাদের সেই ভুখণ্ডে বাস করতে নিয়ে গিয়েছ
যা তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুত ছিল।
24 তারা এই ভূখণ্ডে প্রবেশ করল
এবং কনানীয়দের পরাজিত করে সেটি অধিকার করল।
তুমি তাদের দিয়ে ঐসব লোকদের পরাজিত করিয়েছিলে।
ঐসব জাতি, তাদের রাজা এবং ঐসব লোকের প্রতি
তারা যা করতে চেয়েছিল,
তুমিই তাদের দিয়ে তাই করিয়েছিলে।
25 তারা শক্তিশালী নগরগুলি
এবং উর্বর জমি দখল করল।
তারা ভালো ভালো জিনিষে পরিপূর্ণ বাড়ীগুলি অধিকার করল।
ইতিমধ্যেই যে সব কূপগুলি খনন হয়েছিল সেগুলি, দ্রাক্ষাক্ষেত,
জলপাই গাছ এবং অনেক ফলের গাছসমূহ তারা পেয়েছিল।
তারা খেলো এবং তৃপ্ত হল।
তুমি তাদের যে ভাল জিনিসগুলি দিয়েছিলে সেগুলি তারা উপভোগ করেছিল।
বাবিল ধ্বংস হল
18 এইসব ঘটনার পর আমি আর একজন স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম। তিনি মহাপরাক্রান্ত স্বর্গদূত, তাঁর জ্যোতি সমস্ত পৃথিবীকে আলোকিত করে তুলল। 2 তিনি প্রবল শব্দে চেঁচিয়ে উঠলেন:
“পতন হল!
মহানগরী বাবিলের পতন হল!
সে ভূতের আবাসে পরিণত হয়েছে।
সেই নগরী হয়েছে সব রকমের অশুচি আত্মার আবাস।
সে যতো অশুচি পাখীদের বাসা এবং যতো নোংরা
ও ঘৃন্য পশুদের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
3 পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তার অসৎ যৌন পাপের মদিরা
ও ঈশ্বরের রোষ মদিরা পান করেছে।
পৃথিবীর রাজারা তার সঙ্গে ব্যভিচার করেছে;
আর পৃথিবীর ব্যবসায়ীরা তার অসংযত বিলাসিতার সুবাদে ধনবান হয়ে উঠেছে।”
4 এরপর আমি স্বর্গ থেকে আর একটি কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম, সে বলছে:
“হে আমার প্রজারা, ওখান থেকে বেরিয়ে এস,
তোমরা যেন ওর পাপের ভাগী না হও;
আর ওর প্রাপ্য আঘাত যেন তোমাদের ওপর না আসে।
5 কারণ ওর পাপ স্তূপীকৃত হয়ে গগণচুম্বী হয়েছে;
আর ঈশ্বর ওর সব অপরাধ স্মরণ করেছেন।
6 সে অপরের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করেছে, তোমরাও তার প্রতি সেরূপ ব্যবহার কর।
সে যেমন কাজ করেছে, তোমরা তার দ্বিগুণ প্রতিফল তাকে দাও।
অপরের জন্য পানপাত্রে সে যে পরিমাণ মেশাতো
তোমরা তার জন্য সেই পাত্রে দ্বিগুণ মেশাও।
7 সে (বাবিল) যত অহঙ্কার ও বিলাসিতায় জীবন কাটাতো
তোমরা তাকে তত যন্ত্রণা ও মনোকষ্ট দাও।
কারণ সে নিজের বিষয়ে বলত, ‘আমি রাণী, রাণীর মতোই সিংহাসনে বসে আছি।
আমি বিধবা নই,
আর আমি কখনই দুঃখ পাব না।’
8 অতএব এক দিনের মধ্যেই তার ওপর এই আঘাত আসবে;
মৃত্যু, শোক ও দুর্ভিক্ষ আর আগুনে
পুড়িয়ে তাকে ধ্বংস করা হবে।
কারণ প্রভু ঈশ্বর যিনি তার বিচার করেছেন তিনি সর্বশক্তিমান।
মানুষের তৈরী নিয়ম ও ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা
(মার্ক 7:1-23)
15 জেরুশালেম থেকে কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুর সঙ্গে দেখা করতে এলেন। তাঁরা যীশুকে বললেন, 2 “আমাদের পিতৃপুরুষরা যে নিয়ম আমাদের দিয়েছেন, আপনার অনুগামীরা কেন তা মেনে চলে না? খাওয়ার আগে তারা ঠিকমতো হাত ধোয় না!”
3 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, “তোমাদের পরম্পরাগত আচার পালনের জন্য তোমরাই বা কেন ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করো? 4 কারণ ঈশ্বর বলেছেন, ‘তোমরা বাবা-মাকে সম্মান করো।’(A) আর ‘যে কেউ তার বাবা-মার নিন্দা করবে তার মৃত্যুদণ্ড হবে।’(B) 5 কিন্তু তোমরা বলে থাকো, কেউ যদি তার বাবা কিংবা মাকে বলে, ‘আমি তোমাদের কিছুই সাহায্য করতে পারব না, কারণ তোমাদের দেবার মত যা কিছু সব আমি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে দানস্বরূপ উৎসর্গ করেছি,’ 6 তবে বাবা মায়ের প্রতি তার কর্তব্য কিছু থাকে না। তাই তোমাদের পরম্পরাগত রীতির দ্বারা তোমরা ঈশ্বরের আদেশ মূল্যহীন করেছ। 7 তোমরা হলে ভণ্ড! ভাববাদী যিশাইয় তোমাদের বিষয়ে ঠিকই ভাববাণী করেছেন:
8 ‘এই লোকগুলো মুখেই আমায় সম্মান করে,
কিন্তু তাদের অন্তর আমার থেকে অনেক দূরে থাকে।
9 এরা আমার যে উপাসনা করে তা মিথ্যা,
কারণ এরা যে শিক্ষা দেয় তা মানুষের তৈরী কতকগুলি নিয়ম মাত্র।’”(C)
10 এরপর যীশু লোকদের তাঁর কাছে ডেকে বললেন, “আমি যা বলি তা শোন ও তা বুঝে দেখ। 11 মানুষ যা খায় তা মানুষকে অশুচি করে না। কিন্তু মুখের ভেতর থেকে যা বেরিয়ে আসে, তাই মানুষকে অশুচি করে।”
12 তখন যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “আপনি কি জানেন ফরীশীরা আপনার এই কথা শুনে অপমান বোধ করছেন?”
13 এর উত্তরে যীশু বললেন, “যে চারাগুলি আমার স্বর্গের পিতা লাগাননি, সেগুলি উপড়ে ফেলা হবে। 14 তাই ওদের কথা বাদ দাও। ওরা নিজেরা অন্ধ, ওরা আবার অন্য অন্ধদের পথ দেখাচ্ছে। দেখ, অন্ধ যদি অন্ধকে পথ দেখাতে যায়, তবে দুজনেই গর্তে পড়বে।”
15 তখন পিতর যীশুকে বললেন, “আপনি যা বললেন, তার অর্থ আমাদের বুঝিয়ে দিন।”
16 যীশু বললেন, “তোমরাও কি এখনও বুঝতে পারছ না? 17 তোমরা কি বোঝ না যে, যা কিছু মুখের মধ্যে যায় তা উদরে গিয়ে পৌঁছায়় ও পরে তা বেরিয়ে পায়খানায় পড়ে? 18 কিন্তু মুখের মধ্য থেকে যা বার হয় তা মানুষের অন্তর থেকেই বার হয় আর তাই মানুষকে অশুচি করে তোলে। 19 আমি একথা বলছি কারণ মানুষের অন্তর থেকেই সমস্ত মন্দচিন্তা, নরহত্যা, ব্যভিচার, যৌনপাপ, চুরি, মিথ্যা সাক্ষ্য ও নিন্দা বার হয়। 20 এসবই মানুষকে অশুচি করে, কিন্তু হাত না ধুয়ে খেলে মানুষ অশুচি হয় না।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International